Three Gangsters_💕,Part-22

Three Gangsters_💕,Part-22
Sumaiya_Moni

ওমর, নীল,রাফি এই কথা শুনা মাএই ওদের বুকের মধ্যে ধুক করে উঠলো। ওদের মনের মধ্যে এক রাশ ভয় এসে বাসা বাঁধল। ওমর রাগি ভাব নিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে সাব্বিরের গালে “ঠসসস” করে‌ একটা চড় বসিয়ে দিল।

সাব্বির ‌অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিচের দিকে।
ওর বলার মত কিছুই নেই।

ওমর: বার বার নিষেদ করার পরও তোর পাগলামির কারনে আজ এইখানে এসেছি আমরা। যেই ভয়টা মনের মধ্যে গেথে ছিল সেই ভয়টাই আজ বাস্তবরূপ ধারন করলো।………[ কর্কশ কন্ঠে ]

নীল: তোর কারনে এই সব হয়েছে । যদি না এখানে আসতাম তাহলে এই সব কিছুই হত না।……[ রেগে ]

রাফি: ওমর,নীল‌ এখন রাগ করার সময় নয় । আর সাব্বিরের একার দোষ নেই এখানে। মিশু,নিশু,কথা ওদের জেদের কারনে আজ আমাদের এখান আসা । এখন আমাদের করনিও কাজ হচ্ছে জাহিদের লোকেশন ট্রেস করা।

ওমর: বাট কিভাবে?…… [ হতাশ কন্ঠে ]

রাফি: এখানে এই সব আলাপ করার বিষয় নয়। আগে এখান থেকে চল। সাব্বির বডিগার্ড দের alert থাকতে বল।

সাব্বির: জ্বী ভাই।

ওরা এখান থেকে চলে আসে ওদের বাসায়। হল রুম ভেদ করে হেঁটে বাড়ির পিছনের রুমে যেতে লাগলো‌ ওরা সবাই । বড় একটা প্রেন্টিংয়ে রাফি হাত দিয়ে সরাবার সাথে সাথে দেয়ালে কোড ডিবাইস দেখা যায়। রাফি পাসওয়ার্ড কোড বসিয়ে দেবার পর সুরঙ্গের মত একটা দরজা‌ আপনা আপনি খুলে যায়। ওরা ভিতরে প্রবেশ করে । ভিতরে ছিল নানান ধরনের বৈদ্যুতিক কম্পিউটার ও লেপটপ । সেগুলো চালাবার জন্য কিছু হ্যাকার ও ভিন্ন ধরনের লোক সেখানে রয়েছে। এই সিক্রেট রুমের ব্যাপারে ওরা ৫ জন ছাড়া আর কেউ যানে না। ওমর,রাফি, নীল ভিতরে প্রবেশ করে একটা সোফায় গিয়ে বসে ।

সাব্বির ও ফাহিম দাঁড়িয়ে ছিল।

রাফি: জাহিদের লোকেশন ট্রেস করেছ?….[ ওইখানে থাকা একজন বালকের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলো ]

বালটি কম্পিউটার থেকে ওর ধ্যান সরিয়ে রাফির প্রতি উওরে বলে উঠলো ।

বালকটি: জ্বী স্যার! জাহিদের লোকেশন এখন গুলশানের একটা চক্রের মধ্যে দেখাচ্ছে।

রাফি: সেটা এখান থেকে কত কিলোমিটার দূর?

বালকটি: প্রায় ৩ কিলোমিটার হবে।

রাফি: ওকে….চল তোরা জাহিদ নামক প্যারা শেষ করে আসি ।……[ গম্ভীর কন্ঠে ]

রাফি‌ আর ওই বালকটির কথা এতক্ষন নীল,ওমর,সাব্বির, ফাহিম ওরা মন দিয়ে শুনছিল। ওরা এখনো ঠিক বুঝতে পারে নি রাফি এতো কিছু কিভাবে জানলো। প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাফির দিকে।

নীল: তুই এত কিছু কিভাবে জানলি?…….[ ভ্রু কুঁচকে ]

ওমর: আর জাহিদের লোকেশন ট্রেস কিভাবে করলি?……[ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ]

রাফি প্রতি উওরে বাঁকা হেসে জবাব দেয়।

রাফি: আমি বলে ছিলাম তোদের কে জাহিদের উপর নজর রাখার জন্য লোক ঠিক করে রেখেছি। আমার লোক জাহিদের দলের সাথে মিশে আছে। সেটা হয়তো জাহিদ জানে না। ওদের ফোনের লোকেশন অন করা আছে । যার কারনে সহজেই জাহিদের লোকেশন ট্রেস করতে পেরেছে আমাদের লোকেরা।

এতক্ষন পর ওদের মনের ডাউট ক্লিয়ার হল।

নীল: গুড জব…।

ওমন: চল তাহলে জাহির ওদের ক্ষতি করার আগে আমাদের সেখানে যাওয়া উচিত।

রাফি: হুমমম….।

ওমর, নীল,রাফি,সাব্বির, ফাহিম সিক্রেট রুম ত্যাক করলো। রুমটি আবার আগের মত বন্ধ হয়ে গেল। ওরা গাড়িতে বসে বডিগার্ড দের সাথে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো জাহিদের লোকেশনের উদ্দেশ্যে…… ।

পানির ছিটায় মিশু,নিশু, কথা দের জ্ঞ্যান ফিরে আসলো। আধো আধো চোখ মেলে চার দিক তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে ওরা এখন কোথায় আছে। হুট করেই সামনে থাকা কয়েক জন কালো পোশাক পড়া লোক ও সাদা পোশাক পড়া‌ সোফায় বসা লোকটিকে দেখে ওরা অনেকটা ভয় পেয়ে যায়। এক সাথে তিন জন জড়োসড়ো হয়ে বসে রইলো।

জাহিদের নজর ছিল অন্য দিকে। ওদের জ্ঞ্যান ফিরাতে চোখের সানগ্লাসটা খুলে ওদের দিকে তাকিয়ে ওদের তিন জনের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো।

জাহিদ: হাই গার্লস? আমি জাহিদ! আমাকে তোমরা চিনবে না। ওয়েট আমি তোমাদের নতুন পরিচয় দিচ্ছি । ওই যে তোমার বান্ধবি মিশু কে দেখতে পাচ্ছো ওর হবু হাসবেন্ড । মানে তোমাদের দু জনের দুলাভাই ।……[ বাঁকা হেসে ]

জাহিদের কথা ওরা ঠিক বুঝতে পারছে না লোকটি ওদের কী বুঝাতে চাচ্ছে সব ওদের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। মিশু অনেকটা অবাক ও ভয়ের মধ্যে আছে। কেননা হবু হাসবেন্ড বলার কারনটা ঠিক বুঝতে পারছে না।

জাহিদ: এই তোরা কে কোথায় আছিস মিশু কে নিয়ে গিয়ে রেডি করিয়ে নিয়ে আয়! আজ ওর সাথে আমার বিয়ে হবে?….[ বলেই হাসতে লাগলো ]

মিশু এবার আরো ভয় পেয়ে যায় সাথে নিশু,কথাও। ওরা ভয় ও‌ আতংঙ্কের মাঝে আছে । এতক্ষনে ওরা জাহিদের কথার মানেটা বুঝতে পেরেছে ।
একজন বডিগার্ড এসে মিশুর হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। মিশুর হাত কথা,নিশু ধরে রেখেছে।‌এক পর্যায় ওদের হাত ছাড়িয়ে ন্যায় বডিগার্ড, মিশু কে জোরে জোরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো ।

মিশু: আমাকে ছেড়ে দেও আমি কোথাও যাবো না। প্লিজ আমাকে ছেড়ে দেও।‌……….[ কান্না স্বুরে ]

জাহিদ: আহা না গেলে বিয়ে হবে কী করে? এই কয়দিন তোমার জন্য অনেক অপেক্ষা করেছি। এখন যে আর তর শইছে না। এই তাড়াতারি নিয়ে যা ওকে ।…..[ ন্যাকা কন্ঠে ]

মিশু: আমি যাবো না আমার হাত ছাড় বলছি ।…….[ হাত‌‌ ছাড়ানোর চেষ্টায় ]

নিশু, কথা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে ভয়তে মুখ থেকে কথাও‌ বের হচ্ছে না। বডিগার্ড রা মিশু কে নিয়ে একটা রুমে রেখে আসলো। সেখানে আগে থেকেই দু জন মেয়ে ছিল। মিশুকে সাজাবার জন্য মেয়ে দু জন কে আনা হয়েছে ।

জাহিদ: এবার বল কে আগে মরবে তুমি নাকি তুমি?…….[ গান হতে নিয়ে একবার নিশুর দিকে আরেক বার কথার দিকে তাক করলো ]

নিশু, কথা ভয়তে কোন কথা বলছে না। হাত-পা ওদের ঠান্ডা হয়ে গেছে গান দেখে ।

জাহিদ: আগে তুমিই মর তাহলে……[ কথার দিকে গান তাক করে ]. ওয়েট ! তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডের বিয়ে দেখবে না। ওকে! আগে তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে নিক আমার সাথে, তারপর খুশি খুশি তোমাদের মেরে দেবো ঠিক আছে!……. [ শয়তানি‌ হাসি দিয়ে ]

নিশু, কথা চুপ করে আছে। এই লোকটার সাথে মিশুর বিয়ে হবে সেটা ভাবতেই ওদের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। এদিকে মিশু কোন ভাবেই সাজতে চাইছে না ঘরের সব কিছু ভেঙে চুড়মার করে দিচ্ছে। মেয়ে দুইটা সাজাতে আসলেই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। ভাঙচুড়ের আওয়াজ শুনতে পেয়ে একজন গার্ড ভিতরে এসে দেখে মিশু সব ভেঙে তচনচ করে দিয়েছে । গার্ড রুম থেকে বেরিয়ে জাহিদের কানে কানে গিয়ে এটা বলার সাথে সাথে জাহিদ রাগি ভাব নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ওই রুমের উদ্দেশ্যে যেতে লাগলো । রুমের ভিতরে প্রবেশ করেই মিশুর সামনে গিয়ে ওর চুলের মুঠি ধরে বললো।

জাহিদ: অনেক ধেমাগ তোর তাই না। ভালোই ভালোই বলছি তাড়াতারি বিয়ের জন্য রেডি হয়ে নে,আর না হলে তোর ওই দু জন বান্ধবির লাশ দেখতে পাবি।……[ ঝাড়ি দিয়ে বললো ]

মিশু এই কথা শুনে ভয় পেয়ে যায়। চোখ বড় বড় করে জাহিদের দিকে তাকিয়ে আছে ।

মিশু: আমি রেডি হচ্ছি ওদের কোন ক্ষতি‌ করবেন না প্লিজ! ওদের কে ছেড়ে দিন……. [ কান্না ও মিনতির স্বুরে ]

জাহিদ: that’s good…..কিচ্ছু করবো না যদি তুমি আমাকে খুশি খুশি বিয়ে করে নেও তাহলে।……[ স্লো ভয়েজে ]

মিশু: আ..আমি রাজি আছি তারপর ও ওদের কে ছেড়ে দিন ,ওদের কোন ক্ষতি করবেন না।……[ রান্না স্বুরে ]

জাহিদ: গুড……এই ওকে তাড়াতারি রেডি করিয়ে নিয়ে আসো…….[ বলেই মিশুর চুল ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ]

মিশুর চোখ থেকে অঝোরে পানি ঝড়তে লাগলো । সত্যিই কী এই লোকটাকে বিয়ে করতে হবে। নীল কী আমাকে বাঁচাতে আসবে না। নীলের কথা খুব বেশিই মনে পড়ছে‌ মিশুর। মেয়ে দুইটা মিশু কে সাজাতে লাগলো। আর মিশু স্ট্যাচুর মত বসে আছে । কিছুক্ষন পর মিশুকে রেডি করিয়ে মেয়ে দুইটা জাহিদের কাছে নিয়ে আসে।

জাহিদ: wow..You looking so sweet mishu….[ নেসাক্ত কন্ঠে ]

জাহিদ কী বলছে সেটা মিশুর কানে যাচ্ছে না। স্ট্যাচুর মত দাঁড়িয়ে আছে । জাহিদ মিশুর হাত ধরে ওর পাশে বসিয়ে দেয়।

জাহিদ: কাজী বিয়ে পড়ান……।

কাজী সাহেব বিয়ে পড়াতে শুরু করে। জাহিদ কবুল বলে কাগজে সাইন করে দিয়েছে। মিশুকে কবুল বলতে বললে ওর কোন রিসপন্স পায় না। ও সেই স্ট্যাচুর মত বসে আছে।

জাহিদ: মিশু কবুল বলে কাগজে সাইন করে দেও….[ কিছুটা রাগি কন্ঠে বললো ]

মিশু: ………………

জাহিদ: মিশু আমার কিন্তু ভিশন রাগ হচ্ছে। আমি কিন্তু তোমার বান্ধবি দুই জন কে মেরে দিবো……..[ চিল্লিয়ে বললো ]

মিশু: ……………….

জাহিদ: মিশুউউউউ……[ বলেই জোরে থাপ্পর লাগিয়ে দিল মিশুর গালে ]

মিশু তাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ে যায় ।
জাহিদ মিশুকে তুলে সোফায় বসিয়ে বলতে লাগলো।

জাহিদ: সাইন করবি কী না…..বল….[ রাগি কন্ঠে ]

মিশু: ক…ক…করবো না….[ কাঁপা কাঁপা স্বুরে ]

জাহিদ: তাহলে তোর বান্ধবিদের…….[ বাকি কথা বলার আগেই ওদের রুমে ওমর, রাফি,নীর,সাব্বির,ফাহিম সাথে ওদের বডিগার্ড দের নিয়ে প্রবেশ করলো ]

ওমর,নীল,রাফি খুব সান্ত ভাবে সোফাত উপরে বসে পা উপর পা তুলে বসলো। জাহিদ ওদের কে দেখে রেগে ফায়ার হয়ে যায়। গান বের করে ওদের দিকে তাক করে বললো।

জাহিদ: তাহলে তোরা তিন জন চলেই আসলি কুকুরের মত নাক দিয়ে শুকতে শুকতে…….[ রাগি কন্ঠে ]

নীল: আরে তোর বিয়ে আর আমরা আসবো না…..শত হলেও তুই আমাদের শক্র। তাই বলে কী তোর বিয়েতে আসতে বাঁধা আছে নাকি আমাদের?…… [ মুচকি হেসে ]

ওমর: তোর বিয়ে দেখতেই তো এসেছি আমরা ।…..[ মুচকি হেসে ]

রাফি: তাড়াতারি বিয়ে করে নে! যতক্ষন না বিয়ে হচ্ছে ততক্ষন আমরা এখানেই বসে আছি । ……….[ মুচকি হেসে ]

মিশু,নিশু,কথা ওদের কথার আগা মাথা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। ওরা কী করতে চাইছে সেটাও বুঝতে পারছে না। ওরা হা করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে । হাজারটা প্রশ্ন এসে ওদের মাথায় বারি খাচ্ছে।
.
.
.
.
.
.
Continue To…….😥