#I_Love_U
#part_11,12
#sarika_Islam
11
ফ্রিজ থেকে আইস্ক্রিম বের করে একটা সুন্দর হাসি দিয়ে ফ্রিজটা আটকে পিছে ফিরে কাউকে দেখে দিলাম এক চিৎকার,,”আাাাা” হাত থেকে ঠাস করে আইস্ক্রিমের বক্সটা পরে গেল,,কেউ আমার মুখ জোরে চেপে ধরলো,,একদম দেয়ালের সাথে ঠেসে ধরলো।আমার ভয়ে জান যায় যায় অবস্থা এত রাতে কে হতে পারে?চোর নাকি?চোরের কথা ভেবে আমি আরো কাপতে লাগলাম দরদর করে ঘামতে লাগলাম,,তখন মৃদু স্বরে আমার খুব কাছে মুখটা এনে বলল,,
‘চুপ বেয়াদপ আমি,,আমি নিহান,,’
নিহান কথাটা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেল,,নিহান এত রাতে এখানে কি করছে?আমি “উমউম” করতে লাগলাম,,নিহান আমার মুখ ছেরে দিল,,আমি বুকে হাত দিয়ে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলাম,,
‘আল্লাহ!!এইভাবে কেউ এসে পিছে দারিয়ে থাকে?আর একটু হলে হার্ট অ্যাটাক করতাম,,’
ভাইয়া দুই ভ্রু কুচকে বলল,,
‘এত রাতে তুই এইখানে কি করছিস?’
‘ আইস্ক্রিম খেতে এসেছি,,হঠাৎ ঘুম ভেংগে গেল তাই,,’
‘আচ্ছা,,’
‘আপনি উঠলেন কিভাবে?’
‘ হঠাৎ চোখ খুলে তোকে পাশে না পেয়ে নিচে আসলাম,,’
নিহানের কথা শুনে আমার চোখ রসোগোল্লার মতো বড় হয়ে গেল,,
‘আমাকে না পেয়ে?’
‘বেশি বকিস না বেয়াদপ,,’
বলেই উপরে চলে গেল,,স্বীকার করলো না এখন পর্যন্ত হি লাভ মি,,উফফ কবে যে বলবে,,আমি আইস্ক্রিমের বক্স নিয়ে উপরে চলে গেলাম,,সোফার উপর আসাম দিয়ে বসে বক্স খুলে চামচ দিয়ে খেতে লাগলাম,,নিহান বিছানায় বসে হেলান দিয়ে ফোন টিপছে,,আমি নিহানের দিকে তাকিয়ে চামচটা মুখে পুরে বললাম,,
‘আপনি ঘুমাবেন না নাকি?’
নিহান ফোন থেকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘তুই ঘুমা তারপর আমিও ঘুমিয়ে যাবো,,’
আমি উঠে নিহানের সামনে গিয়ে দারিয়া হাসি মুখে বললাম,,
‘আমি ঘুমালেই ঘুমাবেন?ওয়াও সামথিং সামথিং,,’
বক্স থেকে এক চামচ আইস্ক্রিম তুলে নিহানের মুখে পুরে দিলাম,,
নিহান হঠাৎ এমন কিছু ঘটে যাওয়ায় মুখে আইস্ক্রিম নিয়ে হা হয়ে রাহার দিকে তাকিয়ে রইলো,,রাহা একটা নুরানী ভেটকি দিয়ে দারিয়ে আছে,,নিহানের আরো মিজাজ বিগরে গেল উঠে আইস্ক্রিমের বক্সটা নিয়ে ঠাস করে মেঝেতে ফেলে দিল,,
নিহান হঠাৎ আমার দিকে রাগীভাবে তাকিয়ে উঠে আমার হাত থেকে বক্সটা নিয়ে ঠাস করে ফেলে দিল,,,আমি চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম। নিহান আমার দিকে তাকিয়ে একদম জোরে চিল্লিয়ে বলল,,
‘একটা চর মারবো বেয়াদপ,তোকে না বলেছি কাছে ঘেষতে না?তাও কেন বারে বারে চোখে সামনে ঘুরঘুর করিস?আর একবারও যেন আমার সামনে না দেখি তোকে অসভ্য মেয়ে কোথাকার,,যাহ এইখান থেকে,,’
নিহানের মুখে এত কথা শুনে আমার চোখ ভরে এলো,,আমি ছলছল চোখে বললাম,,
‘নি,,,নিহান এইসব কি বলছেন আপনি?আপনি তো,,’
নিহান আমার খুব কাছে এসে আগের মতোই চেতে বলল,,
‘আমি তো কি?হ্যা?নিজেকে আমার কাছে ইম্পর্টেন্ট ভাবা বন্ধ কর,,অনেকদিন ধরেই তোর এইসব ফালতু কাজ কর্ম সহ্য করছি কিন্তু আর নয়,,আমার কাছে আসার চেষ্টা করবি না লাস্ট বার বললাম,,’
লাস্টের কথাটা আমার মুখের সামনে এক আঙ্গুল উচু করে বলল,,লাস্টের কথা শুনে আমার চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো,,নিহান আমার সামনের থেকে সরে জিদ্দে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে জোরে টানটুন দিয়ে চাদর গায়ে দিল,,লাইটটা অফ করে দিল,,আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি নিহান কেমন করছে?আজ একটু বেশিই রুড হয়ে গেল,,নিহানের যখন পছন্দ না আমাকে তার আশেপাশে ওকেহ ঠিকআছে আমিও আর আসবো না তার আশেপাশে,,ডান!!চোখের পানি মুছে বিছানার একদম কর্নারে গিয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পরলাম,,
সকালে নিহানের আগে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম,,ওর সামনে আসার আমারও কোন শখ নেই,,আন্টি ব্রেকফাস্ট বানাচ্ছে,,আন্টি আমাকে দেখে বলল,,
‘বাচ্চা এত জলদি উঠে গেলি?’
‘ঘুম ভেংগে গেল তাই,,দাও আমিও হেল্প করি?’
‘নাহ,,দরকার নেই,’
‘তুমি না আমাকে কাজই করতে দাও না,,আচ্ছা আন্টি,,আমি আমার আম্মুর বাসায় যাই কয়েকদিনের জন্য? ‘
‘কেন?’
‘এভাবেই অনেকদিন হলো যাওয়া হয়না,,!’
‘আচ্ছা,,’
আমি খুশি হয়ে আন্টিকে হাগ করলাম,,আমি মাহির রুমে গেলাম,,একদম ছরিয়েছিটিয়ে শুয়ে আছে বেয়াদপটা,,আমার সাথে মজা করেছিল না?এইবার আমার পালা,,আমিও আস্তে আস্তে করে ওর পা টানতে লাগলাম,,মাহি উঠেই এক চিৎকার করল,,
‘ভুত,,’
আমি হাসতে হাসতে বিছানায় বসে পরলাম,,মাহি আমাকে দেখে একটা কুসুন মেরে বলল,,
‘শয়তান এইভাবে কেউ পা টানে?’
‘তুই আমার টা টেনেছিলি আমিও তোর টা হিসাব বরাবর,,’
নিহান ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনের মতো আজ রাহাকে পাশে পেল না,,উঠে বারান্দায় গেল নাহ রাহা সেখানেও নেই,,ওয়াশ্রুমের দরজাও খোলা,,নিহানের মনে পরলো কাল রাতের কাহিনি ভিতর থেকে নিশ্বাস ছারলো,,রাহা যতক্ষন না আমার সামনে আসবে আমিও ওকে খুজবো না,,নিহান ওয়াশ্রুমে চলে গেল ফ্রেশ হয়ে এসে আয়নায় দারিয়ে টাই বাধতে লাগলো,,নিচে গেল ব্রেকফাস্ট করতে ব্রেকফাস্ট করে অফিসের জন্য বের হয়ে গেল,,রাহার কথা এক বারের জন্য জিজ্ঞেসও করলো না,,
রাহা আর মাহি নিচে নেমে ব্রেকফাস্ট করে নিল,,আন্টি আমাকে বলল,,
‘কিরে বাচ্চা তোর আর নিহানের কিছু হয়েছে?’
হঠাৎ খাওয়ার মাঝে এইটা বলায় আমার মুখের সামনে পরোটা আটকে গেল,,তার দিকে তাকিয়ে বললাম,,
‘কেন আন্টি এমনটা মনে হলো?’
‘নাহ এভাবেই,,’
‘ওহ,,’
আমি আর কিছু বললাম না,,ব্রেকফাস্ট করে নিজের রুমে এসে ব্যাগ প্যাক করে নিচে নামলাম,,আমার লাকেজ দেখে আন্টি বলল,,
‘কিরে এত বড় লাকেজ?আর আসবি না নাকি?’
‘হুম এসে পরবো,,’
আন্টি আর মাহির থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরলাম,,আন্টিদের ড্রাইভার আমাকে দিয়ে আসলো,,বাড়ির কলিং বেল বাজালাম আম্মু দরজা খুলে দিল,,আমাকে দেখে খুশি হয়ে জরিয়ে ধরলো আমিও ধরলাম,,কতদিন পর আম্মুকে দেখলাম,,আম্মু আমাকে সোফায় বসিয়ে লেবু পানি নিয়ে আসল,,খেয়ে কিছুটা রিলেক্স হলাম,,আম্মু আমার পাশে এসে বসে বলল,,
‘কিরে আজ হঠাৎ?তাও না বলে?’
‘কেন?বাবা বাড়িকি না বলে আশা যায় না?’
‘আমি কি সেটা বলেছি?’
‘আচ্ছা এটাসেটা বাদ দাও আপুকে আজকে আসতে বলো ও তো কতদিন ধরে আসেনা?’
‘আচ্ছা আমি এখনি ফোন করে বলছি,,’
আমি আমার রুমে গেলাম,,জামা কাপর আলমারিতে সেট করে রেখে দিলাম,,আজ কতদিন বাদ নিজের রুমে এসেছি,,নিজের রুমে আসার আনন্দই আলাদা,,বারান্দায় গেলাম হঠাৎ নিহানের কথা মনে পরলো,,আচ্ছা আমাকে বাসায় না দেখে কি নিহান কোন রিয়েক্ট করবে?নাকি আমি নেই বলে খুশি হবে?হয়ত খুশিই হবে,,এইসব ভেবেই চোখ দিয়ে একফোটা পানি গরিয়ে পরলো,,
বিকেলে আপু এসেছে সাথে দুলাভাইও,,আমি পিচ্চিটাকে কোলে নিলাম,,
‘পিচ্চি কোথায় এসেছ?’
‘নানু বাসা,,’
পিচ্চিকে কোলে নিয়েই আপুর পাশে বসলাম,,আপু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘তোর সংসার কেমন যাচ্ছে?নিহান ঠিক হয়েছে?নাকি সেই রাগ চটাই?’
‘আপু তোমরা তো জানোই নিহান কেমন তাও জিজ্ঞেস করছো কেন?’
রেগে বললাম,,আমার রাগ দেখে দুলাভাই বলল,,
‘এই ছারো তো আমার মিষ্টি শালিটাকে রাগিও না,,আচ্ছা তুমি ওর কথা ছারো,,,বলো আজ কোথায় যাবা ঘুরতে?’
‘আজ না বরং কাল যাবো,,’
‘আচ্ছা শালী যা বলবে,,,’
আমি হেসে দিলাম,,রীমা উঠে কলি বেগমের কাছে গিয়ে বলল,,,
‘আম্মু হয়তো ওদের মধ্যে কিছু হয়েছে?তাই ও চলে এসেছে?’
‘হয়ত!!কিন্তু আমাদের তো বলতেই চায় না,,ওদের টা তাহলে ওরাই বুঝুক,,’
রাতে নিহান বাড়ি ফিরে নিজের রুমে গেল ফ্রেশ হতে,,টাওয়াল পেচিয়ে বাহিরে এসে কাবার্ড খুলে টিশার্ট বের করলো,,পুরো কাবার্ড ফাকা,,শুধু নিহানের জামা কাপর গুলো আছে তাহলে রাহার গুলো কই?নিহান টি-শার্ট আর টাউজার পরে নিচে গেল,,মাহি সোফায় বসে একা একা টিভি দেখছে আম্মু রান্নাঘরে আব্বুও সোফায় তাহলে রাহা কই?নিহানের জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে রাহা কই?কিন্তু ইগোর চটে বলতেই পারছে না,,রাহার কথা আমি জিজ্ঞেস করবো কেন?আমাকে বলে গিয়েছিল নাকি?আমাকে বলতেও পারতো?আমি জিজ্ঞেস করবো না,,
সবাই খেতে বসলো।খাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে গেল,,নিহানের মাথায় এখনও আসছে না কেউ রাহাকে না দেখে কোন রিয়েক্ট করলো না কেন?জিজ্ঞেস করবো?নাহ থাক,,গিয়েও আটকে যায়,,নিজের রুমে চলে গেল,,বারান্দায় গিয়েছে,,,রাহা নেই আমার তো আরো শান্তি হওয়ার কথা?মেয়েটা আমার চোখর সামনে ঘুরঘুর করছে না এতে আরো ভালো?কিন্তু আমার এমন লাগছে কেন?এই এক মাসে কি আমার অনেকটাই আপন হয়ে গেছে?নাহ,,নাহ এইসব আমি কি ভাবছি?মাথা ফেটে যাচ্ছে আমার,,উফফফ মেয়েটা আমার পুরোটা মাথা জুরে বসেছে,,
আমি আসায় আবার আপু আসায় আব্বু খুব খুশি হয়েছে,,নিহানের কথা জিজ্ঞেস করায় আম্মু থামিয়ে দিয়েছে,,আর কিছু জিজ্ঞেস করেনি,,আমরা রাতের খাবার খেয়ে কিছুক্ষন কথা বলে ঘুমাতে যাবো,,আমি আপুকে নিয়ে একসাথে ঘুমাতাম কিন্তু ভাইয়া আসায় সব গন্ডগোল করে দিল,,আমি আপু ভাইয়া আর রুহি আমার রুমে কিছুক্ষন গল্প করার পর আপু আর ভাইয়া তাদের রুমে চলে গেল,,রুহি আমার সাথে নাকি আজকে ঘুমাবে আমিও পিচ্চিটাকে নিয়ে ঘুমালাম,,রুহি ঘুমিয়ে গেল একদম আমাকে পেচিয়ে ধরে,, কিন্তু আমার চোখে এক ফোটাও ঘুম নেই ঘুম আসবেই বা কিভাবে শান্তিই আসছে না মনে,,রুহিকে আস্তে করে সরিয়ে আমি উঠে বারান্দায় গেলাম,,একটু ঠান্ডা বাতাস আসছে ভালোলাগবে,,
নিহান কি আমাকে একটুও মনে করছে না?আমাকে কি মিস করছে না?এই এক মাসে কি আমি একটুও তার মনে নিজের জন্য জায়গা করে নিতে পারিনি?কিভাবেই নিব সে তো আমাকে সহ্যই করতে পারে না তার সবটা জুরে তো শুধু নিহা বিরাজ করে,,যদি মিস করতো তাহলে একটু হলেও ফোন করতো,,
এইসব ভেবেই আমার চোখে থেকে পানি গরিয়ে পরলো,,
চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🖤)
#I_Love_U
#part_12
#sarika_Islam
নিহান আর পারছে না এভাবে নিজের মনকে সে কোনভাবেই শান্ত করতে পারছে না,,রাহা কোথায় জানতেই হবে,,,সে বারান্দা থেকে বের হয়ে দরজার কাছে গেল তার হঠাৎ মনে পরলো,,রাহা তার বাবা বাড়ি নয়ত?আংকেলকে একবার ফোন করে দেখবো?যদি না হয় তাহলে?নাহ আগে মাহিকেই জিজ্ঞেস করে আসি,,দরজা খুলে মাহির রুমে গেল,,রাত 2টা বাজে তখন,,মাহি ঘুম ঘুম চোখে এসে দরজা খুলল,ভাইকে দেখে চোখ কচলাতে কচলাতে বলল,,
‘কিরে ভাই এত্ত রাতে?কিছু হয়েছে?’
নিহান কোন ধরনের ভনিতা ছারাই বলে দিল,,
‘রাহা কই?’
রাহার কথা শুনে মাহির ঘুম উড়ে গেল,,
‘কেন?’
নিহান একটা ধমক দিয়ে বলল,,,
‘তোকে যেটা জিজ্ঞেস করেছি তুই সেটার উত্তর দে,,’
‘রাহা তো ওর বাবা বাড়ি,,কেন?’
নিহান শুনে আবার তার রুমে চলে আসলো,,মাহির “কেন” এর আর উত্তর দিল না,,রুমে এসে দরজা লাগিয়ে বিছানায় বসে নিজে নিজেই বলতে লাগলো,,
তাহলে রাহা বাবা বাড়ি গিয়েছে,,আমাকে বলেও গেল না?ওর খবর আছে,,কালকেই আনাচ্ছি ওকে,,বেরানো বের করছি,,আচ্ছা আমি কেন এইসব বলছি?কেন কেন ছারি আগে ওকে নিয়ে আসি,,বলেই বিছানায় শুয়ে পরলো,,
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নিচে গেলাম,,দেখলাম নিলা আন্টি আর মাহি এসেছে,,কি ব্যাপার তারা?কিছু কি হয়েছে?তাদের সামনে গিয়ে বসলাম,,আন্টি একটা হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘চল তোকে নিতে এসেছি,,’
‘সেকি কালই তো এলাম,,’
‘হুম,,জানি নিহান যেতে বলেছে,,’
‘তাহলে সে আসেনি কেন নিতে?’
‘ওর অফিস আছে তাই আমাদের বলল,,আর না নিয়ে গেলে খবর আছে,,’
আমি একটা ভেংচি কাটলাম,,হুহহ খবর আছে,,আমাকে নিজের আশেপাশে চান না আবার আলগা ঢং দেখান,,আমি আন্টিকে বললাম,,
‘আমি এসে কাল আপুকে এনিয়েছি,,আমি যেতে পারবো না আন্টি তুমি একটু বইলো,প্লিজ!!’
মাঝদিয়ে আপু বলে উঠলো,,
‘নাহ এভাবে বলে না,, যা তুই যখন নিহান যেতে বলেছে,,জামাইর কথা সবসময় শুনতে হয়,,’
‘হুহ কচু শুনতে হয়,,’
মাহি বলে উঠলো,,
‘আম্মু রীমা আপুকেও নিয়ে চলি আমাদের সাথে?’
নিলা আন্টি বলল,,
‘হুম,, ভালো বুদ্ধি চল রীমা তুইও?’
রীমা আপু প্রথমে না করলেও পরে রাজি হয়ে যায়,,আমরা সবাই আম্মুকে বিদায় দিয়ে বিকেলের দিকে বের হলাম,,কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসলাম,,রুমে এসে জামা কাপর আর কাবার্ডে রাখলাম না একদমি মন চাইছে না ওই খারুস টার সাথে আমার জামা থাকুক,মাহির রুমে আমি আর আপু বসে বসে আড্ডা দিচ্ছি,,
সন্ধ্যার দিক দিয়ে নিহান বাসায় আসলো,,নিজের রুমে গিয়ে কাবার্ড খুলে আবার শুধু নিজের কাপরগুলোই দেখে মিজাজ গরম হয়ে গেল,,নিচে গিয়ে আম্মুকে বলল,
‘আম্মু রাহাকে না আনতে বলেছিলাম?কই ও?আসেনি নাকি?’
নিলা খান নুডলস বানাতে বানাতে বলল,,
‘এভাবে গরুর মতো চেচাচ্ছিস কেন?এসেছে তো রাহা রীমাও এসেছে,,মাহির রুমে বসে গল্প করছে,,বউ পাগল ছেলেরে বাবা,,’
বলেই হাল্কা হাসলো,,নিহান কোন কেয়ার করলো না মায়ের কথায়,,সে পুনরায় নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মাহির রুমে গেল,,দেখলো শুধু রিমা রুহি আর মাহি বসা,,দরজা নক করে রুমে ঢুকল,,রীমাকে দেখে বলল,,
‘কিরে কেমন আছিস?’
‘ভালোই তুই?’
‘আছি কোনরকম,,’
‘কেন বউকে ছাড়া একদিনও টিকে না নাকি?’
বলেই মাহি আর রিমা হাসতে লাগল,,নিহান বেশ লজ্জায় পরে গেল,,কি দরকার ছিল এমনটা উত্তর দেওয়ার?তারপর তার চোখ শুধু একজনকেই খুজছে,,সে কোথায়?তার খোজা দেখে রীমা বলল,,
‘তোর অর্ধাঙ্গিনী বারান্দায় আছে কথা বলছে,,’
নিহান কিছুটা ঠিক হয়ে বসে বলল,,
‘আমি কাউকে খুজছি না,,’
মাহি আর রিমা তাদের মতো কথা বলে যাচ্ছে,,নিহান উঠে বারান্দার দরজার সামনে আসলো আর রাহা বের হতে নিল দুইজন খেল এক ধাক্কা রাহা মাথায় হাত দিয়ে বলল,,
‘আউচচ,,কেরে দেখে চলতে পারে না?’
মাথা তুলে দেখলো নিহান তার দিকে তাকিয়ে আছে,,নিহান কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলল,,
‘আমাকে না বলে কোথায় গিয়েছিলি?’
‘আপনিই তো বলেছিলেন চোখের সামনে যেন ঘুরঘুর না করি তাই চলে গিয়েছিলাম,,’
নিহান চোখ দুটো ছোট ছোট করে বলল,,
‘আমি যা বলি তাই শুনবি?এখন দেখি কোনটা শুনিস,,’
বলেই বের হয়ে গেল রুম থেকে,,ধুর বাবা কিছুই বলে না নিজের মুখে,,সব তার বিহেব দেখে বুঝতে হবে,,কেন ভাই?বললে কি মুখ ক্ষয় হয়ে যাবে?হুহহ,,আমিও রুমে চলে আসলাম,,রাতের খাবার খেয়ে গল্প করতে লাগলাম,,নিহান খাবার খেয়ে রুমে চলেও গেল,,আমরা গল্প করতে করতে 1টা বেজে গেল,,নিহান সিড়ির সামনে এসে জোরে বলল,,
‘তোরা কি ঘুমাবি না নাকি?তারাতারি যাহ,,’
সবাই আমরা উঠে পরলাম তখন রুহি আমার কোলে এসে ঘুমের চোখে বলল,,
‘মাম্মাম আমি তোমার সাথে ঘুমাবো,,’
আমি পিচ্চিটাকে কোলে নিয়ে উপরে চলে গেলাম আপু আর মাহিও চলে গেল ঘুমাতে,,আমার কোলে রুহিকে দেখে নিহান আমার দিকে কিছুটা আজবভাবে তাকালো,,
‘রুহি?’
‘রুহি আজ এখানেই ঘুমাবে,,,’
বলেই আমি ওকে বিছানার মাঝে ঘুম পারিয়ে দিলাম,,নিহান কিছু বলল না আরেক সাইডে গিয়ে ঘুমিয়ে গেল,,আমিও আরেক সাইডে ঘুমিয়ে গেলাম,,
ফজরের আজান দিচ্ছে আজানের ধ্বনিতে ঘুম ভেংগে গেল,, শরিরে কারো হাতের ভর পেয়ে আস্তে আস্তে চোখ খুললাম,,উঠে দেখলাম আমি মাঝে শুয়ে আছি আর রুহি আমার জায়গায়,,আর নিহান আমার উপর তার একশ কেজির হাতটা দিয়ে আছে,,একশ কেজি হাত দেওয়ায় রাগ করবো নাকি আমাকে মাঝে নিয়ে তার সাথে ঘুমানোর জন্য খুশি হবো?হাল্কা হেসে নিহানের হাতটা নিজের উপর থেকে সরিয়ে উঠে বসলাম,,ওযু করে নামাজ পরে নিলাম,,নামাজ পরে বারান্দায় দারালাম হাল্কা হাল্কা আলো ফুটতে লাগলো,,নিরব প্রকৃতি পাখিদের কিচিরমিচিরের শব্দ আসছে,,হঠাৎ পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখি নিহান দারিয়ে আছে,,আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম,,
‘উঠে গেলেন যে?’
‘তুই উঠেছিস ঘুম ভেংগে গেছে,,’
‘নামাজ পরেছেন?’
‘হুম,,’
‘তাহলে যান ঘুমিয়ে পরুন,,’
‘তুই চল নাহলে ঘুম আসবে না,,’
নিহানের মুখে এই কথা শুনায় আমি তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি,,আমাকে ছাড়া ঘুম আসবে না?একি আমি সত্যি শুনলাম?আমি তার কিছুটা কাছে গিয়ে বললাম,,
‘ভালোবাসা নাকি প্রয়োজন?’
নিহান আমার দিকে ঘুরে আমার গালে এক হাত দিয়ে বলল,,
‘অভ্যাস,,অভ্যাস হয়ে গেছিস তুই,,তুই আমার সেই অভ্যাস যা আমি কখনোই সেখান থেকে বের হতে চাই না,,এখন এই অভ্যাস কে বাজে বল বা ভালো,,আমার অভ্যাস কখনোই পাল্টাবে না,,’
নিহানের কথা শুনে আমার মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠল,,নিহানকে জরিয়ে ধরলাম সেও আমাকে জরিয়ে নিল,,আর তখনি রুহি কান্না করে উঠলো,,আমি তারাতারি নিহানকে ছেরে রুহির কাছে গেলাম,,ওকে কোলে নিয়ে কান্না থামালাম আমার কোলেই আবার ঘুমিয়ে গেল,,নিহান আমার সামনে দারিয়ে বলল,,
‘আমাদের বাচ্চা লাগবে না আমরাই যথেষ্ট,,’
‘কেন?’
‘এইযে এভাবে জালাবে,,মোমেন্ট নষ্ট করে দেয়,,’
আমি এক গাল হাসলাম,,নিহানও শুয়ে পরলো,,আমার চোখে আর ঘুম আসছে না,,সাতটা বেজে গেছে,,রুহিকে আস্তে করে নিহানের পাশে রেখে আমি ওয়াশ্রুমে গেলাম,,ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে গেলাম সবার জন্য নাস্তা বানালাম আজ নিজের হাতে,,আন্টি এখনো উঠেনি,,নয়টা বাজে সব উঠলো আমাকে এভাবে একা একা সোফায় বসে থাকতে দেখে মাহি এসে জিজ্ঞেস করলো,,
‘কিরে তুই এইখানে কি করছিস?’
‘সেই কখন উঠেছি সব রেডি ও করে ফেলেছি আর তোরা এখন উঠলি?’
সবাই আসলো নাস্তার টেবিলে বসলো,,নিহান রুহিকে কোলে নিয়ে আসলো,,নিহান আমাকে বলল,,
‘রাহা তুইও বস খা,,’
‘তোমরা খাও তারপর আমি খাই,,’
‘বস,,’
চোখ রাঙ্গিয়ে আমার দিকে তাকালো আমি চুপচাপ বসে পরলাম,,সবাই নিহানের এমন কাজ দেখে মিটিমিটি হাসছে,,নিহানও না এমন করে কেউ বলে?খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই সোফায় বসলো আংকেল আর নিহান অফিসে যাওয়ার জন্য বের হলো,, আমি দরজার সামনে গেলাম দরজা আটকাতে নিহান গিয়েও আবার ফিরে এসে আমার সামনে দারালো,,আমি দরজা আটকাতে গিয়েও তাকে দেখে থেমে গেলাম,,আমি নিহানের দিকে তাকিয়ে ভ্রু উঠিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “কি” নিহান মাথা ঝাকিয়ে “কিছু না” বলল,,হুট করে আমার গালে একটা চুমু দিয়ে উলটো হয়ে চলে গেল,,আমার হাত গালে চলে গেল,,চোখ গুলো রসোগোল্লার মতো বড় হয়ে গেল,,কিছুক্ষনের জন্য শকড হয়ে গেলাম,,নিহান কিস ও করতে পারে?ওয়াও!!ভেবেই হেসে দিলাম,,মাহি আমার কাছে এসে বলল,,
‘কিরে এখানেই দারিয়ে থাকবি?’
‘নাহ নাহ চল,,’
দরজা আটকে ভিতরে গেলাম,,আপু নাকি আজ চলে যাবে দুপুরে অনেক হাসি ঠাট্টা করলাম,,আন্টি এসে বলল,,
‘যাহ তোরা গোসল সেরে আয়,,’
আমরা সবাই গোসল করতে গেলাম,,শাওয়ার নিয়ে বের হলাম,,আজ আমি নীল কালারের একটা শারি পরলাম নীল চুরি চুলে বেলী ফুলের মালা পরলাম সম্পুর্ন রেডি হয়ে নিচে নামলাম,,আমাকে এভাবে সাজগুজ করে আস্তে দেখে আপু বলল,,
‘কিরে আজ কি কিছু আছে?’
‘নাহ,,’
দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে বিকেল দিকে আপু চলে গেল,,সন্ধ্যা হয়ে আসছে কিন্তু নিহানের আসার কোন খবর নেই,,কই গেল?চিন্তায় পরে গেলাম আমি কোথায় সে?রাত নয়টা বেজে গেল আংকেল চলে এসেছে কিন্তু নিহান আসছে না,,আংকেলকে জিজ্ঞেস করলাম,,
‘আংকেল নিহান কই?’
‘ওর কিছু কাজ আছে অফিসে আজ নতুন পিএ এসেছে তো ওর,,’
‘ওহ,,’
আন্টি মাহি আর আংকেল খেতে খেতে আমাকে বলল,,
‘আয় বাচ্চা তুইও খা,,’
‘নাহ নিহান আসুক,,’
রাত 11টা বেজে গেল সবাই ঘুমাতেও চলে গেল,,আমাকেও যেতে বলেছে আমি সোফায় বসে আছি নিহানের অপেক্ষার,,কিছুক্ষন পর দরজায় কলিং বেল বাজলো,,মুখে হাসি ফুটিয়ে দরজা খুলে নিহানের পাশে তাকিয়ে আমি স্তব্দ হয়ে গেলাম,,এই ছিল নিহানের ইম্পর্ট্যান্ট কাজ?
চলবে,,