#Gangster_Husband
#Part_19 (LastPart)
#Writer_Fariha_Jannat_Oriddhi
উপর ওয়ালার কাছে কেউ মন থেকে কিছু চাইলে তিনি কখনো নিরাশ করেন না। ঠিক তেমনি আল্লাহ বর্ণের ইচ্ছাও পূরণ করেছেন। বর্ণের একটাই ইচ্ছা ছিলো বিন্দুকে তার বুকে ফিরিয়ে দিতে। তাই ত মহান আল্লাহ!! বর্ণের মোনাজাত কবুল করেছেন। বিন্দু মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। বর্ণের করা পাপের জন্য বর্ণ বেশ অনুতপ্ত
বর্ণ বার বার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ক্ষমা করা মহৎ গুন। আর বর্ণ ত জেনে বুজে অপরাধ করে নি। প্রতিশধের নেশা মানুষকে অন্ধ করে দেয়।বর্ণ প্রতিশধের নেশায় বিন্দু ও বিন্দুর পরিবারের সাথে অন্যয় করেছে। বর্ণ এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। পাঞ্জাবি পরিধান করে এমনকি বিন্দুর বাবার নামে বর্ণ একটি এতিম খানা ও মাদ্রাসা তৈরি করেছে। কেউ পাপ কাজ করে অনুতপ্ত হলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন আর হাদিসে লিখা আছে –আল্লাহ ক্ষমাশীল কে পছন্দ করেন।
সেজন্যই ত বিন্দু বর্ণকে ক্ষমা করেছিলো।
সকালের মিষ্টি রোদ সব কুয়াশা কেটে যাচ্ছে। এখন বেশ শীত পরেছে। শীতের সময় ছোট বাচ্চাদের খুব সমস্যা হয় কারণ ওদের ত্বক হয় খুব কমল। আর শীতে ত বাচ্চাদের অসুখ বিসুখের কোন শেষ নেই।তাই ত মনিমার কঠর নির্দেশ রিদ্ধি ও অন্তুকে এই শীতে বাহিরে জেন বের না করে।
রিদ্ধি হলো বিন্দু ও বর্ণের মেয়ে আজ তার একবছর পূর্ণ হলো আর অন্তু হলো বর্ষা ও শ্রাবণের ছেলে ওর বয়স চার মাস।
এই একবছরে চৌধুরী মঞ্জিল এর অনেক কিছুই চেঞ্জ হয়ে গেছে। প্রতিশধের নেশায় বাড়িটি যখন প্রাণহীন হয়ে উঠেছিলো ঠিক তখনি বর্ণ বিন্দুর বাচ্চাটি সব ঠিক করে দেয়। একবছর আগে এই দিনে বিন্দু যখন মৃত্যুর সঙে লড়ছিলো তখন বর্ণের ফোন আসে পুলিশ স্টেশন থেকে। বর্ণ কে যেতে বলে। বর্ণ কথা অনুযায়ী চলে যায় যেয়ে দেখে পুলিশ আলতাফ মির্জাকে আটক করেছে। আলতাফ র্মিজা নিজের দোষ শিকার করে নেয়। আলতাফ র্মিজাই বিন্দুকে চার মাস তার আস্তানায় আটক করে রেখে দেয়। আলতাফ মির্জা যেদিন র্বণকে ফোন করে তার বাচ্চা ও বিন্দুর ক্ষতি করার কথা বলে তখন বিন্দু আড়াল থেকে সব শুনতে পারে ঠিক তখনি সে আলতাফ মির্জা ও তার দলের লোকেদের চোখ এড়িয়ে বেড়িয়ে পরে। অনেকটা পথ আসার পরে বিন্দুর চোখে অন্ধকার দেখে সে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে যায়।পিয়াস নামের ছেলেটি রাস্তায় একটা মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে ড্রাইভার কে গাড়ি থামাতে বলে। পিয়াস মেয়েটির দিকে এগিয়ে যায় ও তার পার্লস চেক করে বুজতে পারে সে এখনো বেচে আছে। পিয়াস তখন তাকে গাড়িতে তোলে এবং পরবর্তী ছয় মাস তাকে আগলে রাখে আর সে মেয়েটিই হলো বিন্দু। তারপরের ঘটনা আপনারা সবাই জানেন।
আজ চৌধুরী বাড়ি নানার রঙে লাইটিং এ সেজে উঠেছে ।আজ যে চৌধুরী বাড়ির উত্তরাধিকারীর একবছর পূর্ণ হলো। বিন্দু আজকে নীল রঙে সেজেছে বর্ণের পছন্দ অনুযায়ী। নীল বেনারসী শাড়ি, ভারী গহনা, হালকা মেকআপ ,খোপায় বেলি ফুল, সব মিলিয়ে বিন্দুকে খুব সুন্দর দেখতে লাগছে ।বিন্দু রিদ্ধিকে সাদা রঙের ড্রেস পরে দিয়ে মা মেয়ে নিচে নামে ঠিক তখনি তাদের উপর পুষ্প বৃষ্টি হয়। বিন্দু অবাক চোখে সাবার দিকে তাকায়।
–কি মতা কি মতা [রিদ্ধি কি মজা বলে হাত তালি দিচ্ছে ]
–বর্ণ আজকে একটা নীল রঙের পাঞ্জাবি পরেছে, সে এগিয়ে এসে রিদ্ধিকে কোলে নিয়ে বলে- কি আমার প্রিন্সেসটার পছন্দ হয়েছে?
–পাপা তুব [খুব ]
–বর্ণ বিন্দুর কানে কানে যেয়ে বলে আমার রাণীর কি পছন্দ হয়েছে?
বর্ণের কথায় বিন্দু বেশ লজ্জা পেয়ে সামনে তাকায় দেখে সবাই তাদের দেখে হাসছে। শ্রাবণ, বর্ষা ও পিয়াশ এগিয়ে এসে বলছে –তোমাদের প্রেম পর্ব কি শেষ, না হলে বলো আমার আর কিছুখন ওয়েট করি ।
–পিয়াশ সব দোষ তোমার বোনের। “বর্ণ”
–কি বললেন? রেগে যেয়ে
–হয়ছে তোরা এবার থামবি। সুযোগ পেলেই ঝগড়া করিস, ভুলে যাস না তোরা এখন ছোট বাচ্চা না। বরং তোদের এক বছরের একটা বাচ্চা আছে। “মনিমা”
সবাই হেসে উঠে। সবাই মিলে কেক কাটা হয়। সবাই ডিনার সেরে যে যার মতো চলে আসে।
বিন্দু রিদ্ধিকে ফিডিং করছে। বাবু ঘুমাও তুমি দুষ্টুমি করছো কেন?
বর্ণ পাশে এসে শুয়ে পড়ে –আমার মামনীটা ঘুমাচ্ছে না কেন?
-পাপা আমি অতুকে তেক খাওবো। রিদ্ধি [ অন্তুকে কেক খায়াবো]
–না মা, অনেক রাত হয়েছে ঘুমাও।
–লা।
এরমধ্যে বর্ষা নক করে রুমে আসে রিদ্ধিকে নিতে। রিদ্ধিও ফুফির সাথে চলে যায় আজ ওখানেই থাকবে।
বর্ণ দরজা লাগিয়ে লাইট অফ করে এসে দেখে বিন্দু উঠছে।
–কি হলো উঠছো কেন?
–এসব ভারী শাড়ি পড়ে শুবো নাকি? চেঞ্জ করতে যাচ্ছি।
–কোথাও যাবে না এখানে থাকো। কে বলেছে ভারী শাড়ি পরে শুতে?
–বাহ্ রে আপনি ত যেতে দিচ্ছেন না। না গেলে কিভাবে চেন্জ করবো?
–আমার কাছে আসো আমি বলছি কিভাবে চেন্জ করতে হবে।
বিন্দু বর্ণে দিকে এগিয়ে যায়। বর্ণ বিন্দুকে বেডে বসিয়ে একে একে বিন্দুর সব গহনা গুলো খুলে বেড সাইডে রেখে দেয়। চুল থেকে বেলি ফুল নিয়ে খোপা খুলে চুল গুলো কমরে ছড়িয়ে দেয়। বর্ণ যখনি বিন্দুর কাধ থেকে আচলের পিন খুলতে নিবে বিন্দু তখন বাধা দেয়।
–কি হলো? নেশা ধরানো কন্ঠে।
–এসব কি করছেন? চোখ বন্ধ করে।
–আজ আমি তোমার মাঝে ডুবতে চাই।
–তোমার ভালবাসার গহীণে যেতে চাই
–তোমার মাঝে সাঁতার কাটতে চাই।
–আমার রঙে তোমাকে রাঙাতে চাই।
প্রিয়তমা আমি তোমায় খুব ভালোবাসি। তুমি আমায় ফিরিয়ে দিয়ো না।
ভালোবাসার মানুষের এমন ডাক কি কেউ ফিরিয়ে দিতে পারে? বিন্দুও পারে নি।
বর্ণ আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি। আমি ও আপনার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিতে চাই। যেখানে থাকবেনা কোন প্রতিশধ শুধু থাকবে বর্ণ বিন্দুর ভালোবাসা।।।।
বর্ণ অনুমতি পেয়ে তার প্রিয়তমাকে নিয়ে পাড়ি জমায় ভালোবার অন্য জগতে। বিন্দুও বেশ সাড়া দেয়।
সব বাধা পেরিয়ে বর্ণ আর বিন্দু আবার এক হয়ে যায়।তারা ভালোবাসার অতলে ডুবতে থাকে। এ জেন এক সুখের ইই অন্য ভুবন।
“সমাপ্ত”