#Gangster_Husband
#Part_13,14
#Writer_Fariha_Jannat_Oriddhi
13
বর্ণ, বিন্দু, বর্ষা ও শ্রাবণ একসাথে নদীর পাড়ে এসেছিলো ঘুড়তে বিশেষ করে বর্ণের আচরণে বিন্দুর মন ভীষণ খারাপ সেজন্য বর্ণ বিন্দুকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে এসেছিলো যাতে করে বিন্দুর মন ভালো হয়ে যায় কারণ বিন্দু নদী ভীষণ পছন্দ করে।
.
বর্ণ বিন্দুর দিকে তাকিয়ে থাকতে হঠাৎ চোখ পরে পাশ দিয়ে যাওয়া বৃদ্ধ লোকের দিকে যে কি না সাত তালি দেওয়া ড্রেস পরে একটা থালা হাতে নিয়ে ভিক্ষা করছে। লোকটা তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে কিন্তু বর্ণের কেন জানি লোকটাকে খুব চেনা চেনা লাগছে। লোকটা লাঠি ধরে হাটছে সম্ভবত একটা পায়ের সমস্যা !!চোখেও ঠিক মতো দেখতে পারছে না। মাথার চুল গুলো বড় অনেক দিন ধরে না কাটলে যেমন হয়। তাছাড়া লোকটার দাড়িও অনেক বড়। লোকটি বর্ণের কাছে এসে কাপা কাপা কন্ঠে বললো—
“সাহেব একটু টাকা দেন না সাহেব অনেক দিন ধরে কিছু খাই নি।
বর্ণ ৫০০ টাকার একটা নোট বের করে তার সামনে ধরে তাকে এক ধ্যানে দেখছে। চোখ দুটো খুব চিনা চিনা লগছে তার। আমি কি লোকটাকে চিনি!!
হঠাৎ করে বর্ণ বলে উঠলো আপনি আকবর চাচা না?
লোকটি বর্ণের কথা শুনা মাত্রই হাতের টাকা নিচে ফেলে দিয়ে ঐ নেংরা পা নিয়ে খুঁড়তে খুঁড়তে দৌড় দেয়। যদিও বেশি দূর যেতে পারে নি কারণ ওর দৌড় আর স্বাভাবিক মানুষের হাটা একি কথা। বর্ণ তার আগেই লোকটিকে ধরে ফেলে। লোকটি কিছু একটা বলতে চাইছিলো বর্ণকে তার আগেই পাশে থেকে কেউ গুলি করে পালিয়ে যায়,,,,
বর্ণ চিল্লিয়ে উঠে নাহহহহহহহহহহহহ্!!
বর্ণ দেখে একটা ছেলে বাইক নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। বর্ণ জনিকে ফোন দিয়ে বাইকের নাম্বার দেয় এবং ধরার জন্য ঠিকানা দেয়।
.
এদিকে শ্রাবণ ও বর্ষা দুজন পাশাপাশি হাটছিলো যদিও হাত ধরে না তবুও অনেক কাছে। হঠাৎ করে গুলির আওয়াজ ও বর্ণের চিৎকার শুনতে পেরে দৌড়ে সেদিকে যায়। বিন্দুর ও একি অবস্থা।
তারা এসে দেখে, একটি অচেনা বৃদ্ধ লোক গলি খাওয়া অবস্থায় নিচে পড়ে আছে তার পাশে বর্ণ লোকটিকে ধরে আছে। লোকটি বর্ণকে কিছু বলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।
শ্রাবণ বলে,
-“কে ইনি,, আর এই অবস্থা কি করে হলো বর্ণ?
-“শ্রাবণ এখন এসব বলার সময় নেই। তুই চাচাকে ধর হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে নয়তো বাচানো যাবে না!
বর্ণ ও শ্রাবণ দুজন লোকটিকে গাড়িতে নিয়ে যেয়ে বসিয়ে দেয়। শ্রাবণ ড্রাইভিং সিটে পিছনে লোকটি ও বর্ণ। বর্ণ বিন্দু ও বর্ষাকে ড্রাইভার এর সাথে অন্য গাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিন্দু ও বর্ষা ভয়ে অন্যরকম হয়ে গেছে। বর্ণ হেসে মনে মনে বলে gangster এর বউ এর এমন অবস্থা!!!
কিন্তু আকবর চাচা কে যে করেই হোক সুস্থ করতে হবে এনি চৌধুরী মঞ্জিল এর পুরোনো চাকর ।সব বলতে পারে এই লোক সব খুনের সাক্ষী সে। সব পাপের সাক্ষী!!
শ্রাবণ তুই তখন বলছিলি না লোকটি কে? দেখ ভালো করে ইনি আকবর চাচা যিনি আমাদের স্কুলে দিয়ে আসতো ও নিয়ে আসতো।
শ্রাবণ অবাক হয়ে বর্ণের দিকে তাকায় ও বলে তাহলে আমরা আরো একধাপ এগিয়ে গেলাম শত্রু দের ধরতে।
–“তুই আমায় সাহায্য না করলে আমি কিছুতে এতো দূর এগিয়ে আসতে পারতাম না।
–“শালা চুপ কর। বেশি কথা সবসময়!!
.
শ্রাবণ ও বর্ণ মিলে আকবরকে হসপিটালে এডমিট করায় যদিও তারা বলছিলো এটা পুলিশ কেচ তবুও বর্ণকে এদেশের এমন কেউ নাই যে চিনে না। বর্ণের ভয়ে লোকটিকে এডমিট করায়। তারা ওটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বর্ণ তার মনিমাকে ফোন করে সব জানায়।
মনিমা ও অবাক হয়ে যায় কারণ এতো বছর পর আকবর যাকে ঘিরে রয়েছে দুই পরিবারের সব শান্তির বানী।
মনিমার চোখে পানি আসে তিনি চোখ মুছে হসপিটাল এর ঠিকানা নিয়ে চলে যায়। কারণ তাকে যে জানতেই হবে সেইদিন কি এমন হয়েছিলো। আর তা একমাত্র বলতে পারবে আকবর!
–“হ্যাঁ আকবর ইই বলতে পারবে।।।।।
.
এদিকে বেলাল জামানের অবস্থা খুব খারাপ। মেয়ের চিন্তা ত আছেই তারমধ্যে বর্ণ তার সমস্ত ফ্যাক্টরি ব্যাবসা যাবতীয় সবকিছু নিজের নামে লেখে নিয়েছে। আর হুমকি দিয়েছে যদি পুলিশের কাছে মুখ খুলে তার নয়নের মনি বিন্দু কে খুন করবে। বেলাল জামানের কাছে তার মেয়ের চেয়ে কোন কিছুই বড় না। কিন্তু বর্ণকে এর শাস্তি পেতেই হবে উপরে একজন রয়েছে তিনি দিবেন এ অপরাধের শাস্তি।
বেলাল জামানের পেশার, সুগার সবকিছু বেরে গেছে ডক্টর খুব খারাপ অবস্থার কথা বলে গেছে কিন্তু বর্গ যে তার কাছে থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছে শুধু বাকি আছে এই বাড়িটা। এটাও বলেছে এই বাড়িও নিয়ে নিবে এসব ভাবতে ভাবতে বেলাল জামানের চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরে।।।
.
এদিকে হসপিটালে ডক্টর বলছে 72 ঘন্ট না যাওয়া অবধি পেশেন্ট এর অবস্থা বলা যাবে না ।বর্ণ ডক্টরের সাথে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে দেন শ্রাবণ ও মনিমাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
.
বর্ষা ও বিন্দু খুব ভয় পেয়েছে তারা দুজন একসাথে বর্ষার রুমে ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু বিন্দুর মনে উকি দিচ্ছে নানা অজানা রহস্য যার সমাধান আছে মনিমার কাছে।।।
.
.
.
চলবে…………
#Gangster_Husband
#Part_14
#Writer_Fariha_Jannat_Oriddhi
সত্য কখনো চাপা থাকে না। তাই চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেও লাভ নেই। সত্য ত একদিন সময়ের সাথে সাথে সবাই জানবেই ,হয়ত কিছছু সময় পর ।ঠিক তেমনি দুই পরিবারে খুনের পিছনে ঘটে যাওয়া ঘটনাটাও সবাই জানবে। তার আগেই বর্ণ বিন্দুদের পরিবারে প্রতিশোধ নিতে শুরু করে দেয় যা দু পরিবারে মাঝে নিয়ে আসে শোকের ছায়া।
.
বর্ণ যদি আর একটু সময় ওয়েট করতো তাহলে হয়তো এতো বড় সর্বনাশ হতো না কিন্ত বর্ণ সেটা করে ও বেলাল জামানের থেকে সর্বশেষ আশ্রয় স্থলটুকু ও কেড়ে নেয়। তাকে রাস্তায় নেমে দেয়।
বেলাম জামান যাবার আগে বলে যায়
“–সত্যটা জানলে তুমি আফসোস করবে। তুমি যতোই ক্ষমা চাবার চেষ্টা করো না কেন তোমায় কেউ ক্ষমা করবে না। তুমি একা হয়ে যাবে। তোমার চারেদিকে অন্ধকার দেখবে তুমি। তুমি আমার কাছে থেকে আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছ ঠিক তেমনি তুমি একদিন আমার জায়গায় আসবে সেদিন হাজার চেষ্টা করলেও পথ খুঁজে পাবে না। একদিন তুমি আমার বুক থেকে আমার সন্তান কে কেড়ে নিয়েছ ঠিক তেমনি তোমার কাছে থেকেও তোমার সন্তাকে কেড়ে নিবে। উপরে একজন আছে বর্ণ তাকে অন্তত ভয় করে ।
বলে বেলাল জামান বেড়িয়ে যায় বর্ণ শুধু চোখের পানি ফেলছে আর বেলাল জামানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে আটকাতে চেয়েও পারি নি কারণ সে যে তার পরিবারে খুনী কিন্ত আজ বেলাল জামানের কথা গুলো অদ্ভুত এবং কেমন জানি ছিলো বার বার মনে হয়ছে মানুষটি কথা গুলো সত্য বলছে কিন্তু এতোদিন ত আমি জেনে এসেছি যে উনি খুনী।
আমি কোন ভুল করছি না ত।
“হ্যালো জনি
“…..
“বেলাল জামান এইমাত্র এখান থেকে বেরিয়ে গেলো তোমরা নজর রাখো ওনার উপর
“…….
“সকল ইনফরমেশন আমার চাই।
“…..
বর্ণ কথা বলে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে গেলো হসপিটালের উদ্দেশ্যে যেখানে আছে আকবর চাচা। সময় মনে হয় যেতে চায় না এমন অবস্থা বর্ণের আর মাত্র 24 ঘন্ট বাকি আকবর চাচার জ্ঞান ফেরার। বর্ণের যে সকল রহস্যের সমাধান চাই কারণ ওর ধারণা মিথ্যা হলে নির্দশ একটা ফ্যামিলির উপর অবিচার করা হবে যা বর্ণ কিছুতেই মেনে নিতে পারবে না আর নিজেকেও ক্ষমা করতে পারবে।
আকবর চাচাকে দেখে ডক্টরের সাথে কথা বলে বর্ণ রাতে বাসাই আসে ।এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে যায় সেখানে মনিমা,বিন্দু,শ্রাবণ ও বর্ষা বসে থেকে গল্প করছিলো ।বর্ণ ও সেখানে যেয়ে এড হয়। একবার বিন্দুর দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয় বিন্দুকে আজ বউ বউ লাগছে ফিরোজ রঙের একটা সুতি শাড়ি পরেছে মাছখানে সিঁথি করা আর কিছু স্বর্ণের অলংকার সব মিলিয়ে তার পিচ্চি বউ মনে হচ্ছে !
মনিমা বলে “–আকবর এর অবস্থা এখন কেমন ?
–” হুম কাল অবধি ওয়েট করতে হবে ।
–“শ্রাবণ বলল–টেনশন নিস না কাল সব রহস্যের সমাধান হবে।
–“ভাইয়া কিসের রহস্য রে “বর্ষা”
মনিমা বর্ষাকে ধমক দিয়ে উপরে যেতে বলে সাথে বিন্দু কেও নিয়ে যেতে বলে।
বিন্দুর আজকে কেন জানি খুব খারাপ লাগছে মনে হচ্ছে কাছের মানুষ খুব আপন জন তার থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে কিন্তু কেন এমন মনে হচ্ছে তার! সে নিজেও জানে না! তাহলে কি বাবাইয়ের কিছু হলো না ত? বাবাই কি ঠিক আছে?
আজকে কেন জানি বাবাইয়ের কথা মনে পড়ছে। আমায় ত ঐ গুন্ডাটা যেতেও দিবে না।
.
রাত 10 টা সবাই ডিনার করে যে যার মতো বেড রুমে যায়।
বর্ণ ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে। বিন্দু বর্ণের পাশে গিয়ে ভয়ে ভয়ে বসে কিছু বলতে চায় বাট বলতে পারে না। সে নিচের দিকে তাকিয়ে শাড়ির আচলা হাতে নিয়ে খেলতে থাকে।
বর্ণ বিন্দুর দিকে তাকিয়ে বলে, কিছু বলবে?
বিন্দু আমতা আমতা করে বলে একটা কথা বলার ছিলো।
:”ত বলে ফেলো
“বলছিলাম যে…..
তার আগেই বর্ণের ফোন আসে–
জনির ফোন সেজন্য বর্ণ রিসিভ করে কারণ জনি দরকার ছাড়া ফোন করে না।
“–হ্যালো জনি
“…..
” হোয়াট,,,, কোন হসপিটালে?
“….
“আমি এখনি আসছি সবাইকে নিয়ে তুমি সব রকম ব্যবস্থা করো।
বর্ণ ফোনটা রেখে বিন্দুকে বলে তার সাথে যেতে হবে এখনি সাথে মনিমা সহ সবাইকে বলে তার সাথে যেতে।
সবাই গাড়িতে বসে।
মনিমা বর্ণকে বলে তারা কোথায় যাচ্ছে।
” আমরা হসপিটালে যাচ্ছি।
“কিন্তু কার কি হয়ছে দা?”বর্ষা”
“আকবর চাচার জ্ঞান ফিরছে? শ্রাবণ বলে
“নাহ্
“তো
“বর্ণ কি হয়ছে আমার কেন যাচ্ছি বলো, মনিমা বলে
বর্ণ বিন্দুর অস্থির চাহনি দেখে বলে তাহলে শোন,,,,,,,,
.
.
.
চলবে,,,,,,,,,,,,,