অবহেলার সংসার 🏘️,পর্ব_16,17

#অবহেলার সংসার 🏘️,পর্ব_16,17
#লেখিকা__(মায়া)
16

প্রায় মাস খানেক পার হয়ে গেছে,, মায়া আতিকের সম্পর্ক কেমন তা মায়ার জানা নেই। হয়তো সারা জীবন এই মানুষ টার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কাঙ্গাল ছিল। হ্যাঁ আতিক এখন আগের থেকে অনেক বেশীই মায়া কে চোখে হারায়। অনেক বেশি কেয়ারিং এখন।

কিন্তু কেন জানি মায়ার ভালো লাগে না মনে হয় দোয়া দেখাচ্ছে। ডাক্তার কাছে গেছিলো মায়া রক্ত চেন্জ করার জন্য। ডাক্তার যে ভাবে বলছে যে মায়ার অবস্থা আগের থেকে ভালো কিন্তু মায়ার মনে হচ্ছে না তার শরীর ভালো। জ্বর মাঝে মাঝে আসে,,কাশী টাও আগের মত।

মায়ার মাথায় এখন চুল নেই। মায়াকে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটা মজার ব্যাপার হলো মায়ার সাথে আতিক ও ন্যাড়া করছে।

আতিকের ব্যাবহার গুলো খুব অচেনা লাগে মনে হয় এটা আতিক নয় অন্য কেউ। যেই মানুষ কে সারা জীবন ধরে দেখে আসছে কেয়ার লেস হিসেবে তাকে হুট করে এত কেয়ারিং হতে দেখা বেশ অস্বাভাবিক লাগে।

মাঝে মাঝে ছোট বাচ্চাদের মত কেমন বায়না ধরে বসে। এই তো কয়েক দিন আগের কথা মাঝ রাতে হুট করে ঘুম ভেঙ্গে দেখে আতিক মায়ার দিকে চেয়ে আছে। আতিকের চোখ গুলো জলজল করছে। মায়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,,,

জেগে আছো কেন এত রাতে??? ঘুমাওনি নাকি ?? চোখ গুলো লাল হয়ে আছে।

আতিক মায়ার কথায় অগ্রাহ্য করে বলল,,ছাদে যাবে মায়া?? আজ কে থালার মত চাঁদ উঠেছে। চাঁদের আলো টাও বেশ উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে।

মায়া কঠিন মুখে বলে তোমার
কি মাঝ রাতে ভিমরতি ধরল নাকি?? কি বলছো এসব?? চোখ বন্ধ করে ঘুমাও কাল তোমার অফিস আছে।

মায়ার কোন কথা কানে না নিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো আতিক। তুমি কি যাবে?? নাকি কোলে করে নিয়ে যাবো??

আতিকের কথায় মায়া হতবাক হয়ে বলল এত রাতে ছাদে কেউ যায় নাকি।
তুমি কি যাবে?? হ্যাঁ অথবা না বল???

আতিক আর মায়া পাশাপাশি দোলনায় বসে আছে দুজনেই আকাশের দিকে মুখ করে বসে আছে।

মায়া?? হুমমম কিছু বলবে??? ভালো লাগছে?? হুমমম।

মায়া পাশে থাকা গোলাপের গাছের দিকে তাকালো। গাছ টা আগের মত শুকনো আধামরা নেই। বেশ তাজা। এখন মায়া গাছটার পরিচর্যা করে। গাছে ফুল ও ফুটেছে সাথে নতুন ফুলের কুঁড়ি ও এসেছে।
চাঁদের আলোয় ফুল টা যেন কি সুন্দর ঝলমল করছে।

আতিক মায়ার দিকে তাকিয়ে বলল আচ্ছা শুনো?? কিছু বলবে?? আমরা কয়টা বেবি নিবো বল??? বাচ্চার কথা শুনে মায়ার ভিতর টা কেমন জানি করে উঠলো। ছোট বাচ্চা মায়ার এত পছন্দ বলার মত না।

মায়া কোন উত্তর দিল না,,নির্বাক হয়ে আতিকের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আতিক বুঝতে পারছে মায়া কোন কিছু তেই বেঁচে থাকার আশ্বাস দেওয়া যাচ্ছে না। তাকে স্ট্রং বানানোও যাচ্ছে না। আগে বেবির কথা বললেই মায়া আহ্লাদী সুরে বলতো,, ২টা বেবি নিবো দুই টাই মেয়ে নিবো। ওওহহহ সো কিউট

কেমন যেন হয়ে গেছে মায়া। এমন হয়ে যাওয়ার কারন তো সে নিজেই। কথায় আছে না কাউকে এত টাও কষ্ট দিতে নেই,, যখন তুমি ভালোবাসতে চাইবে,, তখন তোমার ভালোবাসা ও গ্রহন করার প্রয়োজন মনে করছে না।

মায়া ভোর সন্ধ্যা বেলা শুয়ে আছে তার শরীর এক দম ভালো নেই। কেমন যেন একটা অসস্তি লাগছে। আতিক আজ বাসায় আছে কারণ আজ শুক্রবার ছুটির দিন।
ঘরে এসে এভাবে মায়াকে শুয়ে থাকতে দেখে আতিক মায়ার পাশে বসল।

মায়া!!! হুমমম বল!! আমাকে কি তোমার আর ভালো লাগে না??? হঠাৎ এই কথা বলছো যে?? তোমার আচারন খুব অস্বাভাবিক লাগে এখন!! তুমি কি আমায় ঘৃণা করো???

মায়া আচমকা হাসতে লাগল। হাসতে হাসতে বলল কি বল এসব?? পাগল হয়েছ নাকি??
পাগল নয় সিরিয়াস আমি,,

মায়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল দেখ আতিক তুমি জানো না এক জন মানুষ কে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসলে ঘৃণা করা যায় না। আর যদি ঘৃণা করতে তাহলে কি করতে হবে জানো???
মানুষ টার জন ঠিক বুকের ভিতর যতটা ভালোবাসা আছে ঠিক তার সমপরিমাণ ঘৃ ঘৃণা বুকের ভেতর জমা করতে হবে। তার প্রতি ভালোবাসা গুলো কে কবর দিতে হবে। তাকে নিজের জিবনের প্রতি টা অস্তিত্ব থেকে তাকে বহিস্কার করে দিতে হবে। এত সহজ নয় আতিক এত ভালোবাসার পর ও ভুলে যাওয়া ঘৃণা করা।
এখন এসব কথা ছাড়ো,,আর অন্য কোন কথা বল আতিক।

আতিক এত ক্ষন মায়ার কথা নির্বাক শ্রোতার মত শুনছিল,, কিছু না বলেই আতিক আলমারির দিকে চলে গেল। একটু পর আতিক হাতে একটা কার্ড নিয়ে মায়ার কাছে আসলো। মায়ার হাতে কার্ড টা ধরিয়ে দিল।

মায়া কার্ড টা হাতে নিয়ে দেখে ইনভিটেশন কার্ড আতিকের অফিস থেকে। আতিকের দিকে প্রশ্ন সূচক ভাবে তাকিয়ে বলল কিসের এটা।

আতিক হাসি মুখে বলল আমাদের অফিসের একটা পার্টি আছে সেখানে সব স্টাফদের আমন্ত্রণ করা হয়েছে সাথে তাদের হাসবেন্ড এবং ওয়াইফ কেও। আর তাই সেখানে তোমাকেও নিয়ে যাচ্ছি।

মায়া বিছানা থেকে চট করে নেমে বলে মাথা ঠিক আছে?? আমি যাবো???

হ্যাঁ তুমি যাচ্ছো। যেতে তো হবেই তোমাই। আর কাল সন্ধ্যায় পার্টি। আমি অফিস যাবো। ৫টার দিকে তোমায় নিতে আসবো। আর তুমি রেডি হয়ে থাকবে। বুঝেছো???

আতিক কি বলছো এসব আমার শরীর টা এমনিই ভালো নয়। আর এসব পার্টি তে আমি কোন দিন কম্ফোর্টেবল নয়। প্লিজ আতিক এই ধরনের জেদ করো না। আর আমায় নিয়ে যাওয়ার কথা কি ভাবে বলছো??? আনহা তো আছেই সেখানে। আমার কি প্রয়োজন???

মায়ার শেষের কথায় রয়েছে অভিমান তা খুব ভালো করেই জানে আতিক।

তুমি যাবে তো যাচ্ছোই। নো টক টু এনি মোর।

কিন্তু আতিক!!!

আতিক কিছু না বলেই বের হয়ে গেল ঘর থেকে।

মায়া জানালার পাশে দাঁড়িয়ে এক মনে ভাবতে লাগলো!!! এই কেমন জিবন তার?? কেমন ভালোবাসা এসব???

যখন এসব আতিকের থেকে আশা করেছিল তখন ভালোবাসার বদলে অবহেলা ছিল!!

আর এখন যখন এসব আমি চাচ্ছি না তখন আতিক আবারো জরিয়ে যাচ্ছে।

সে বরাবরই এমন ছিল,,, যখন ভালোবাসা দরকার তখন দেয়নি। যখন তার ইচ্ছে করেছে তখন শুধু সময় কাটানোর জন্য ভালোবাসার অভিনয় করেছে। তবে এত কিছুর পরও তাকে ঘৃণা করা যায় না কেন??? দুনিয়া কে যদি এই ভালোবাসার কাহিনী বলা হয় তবে মায়া কে এক জন বোকা নারী ছাড়া কিছুই বলা হবে না। মায়া নির্বোধ ছাড়া কিছুই নয়। সেই মানুষ টা সারা জীবন ঠোকে আসলো তাকে এত সহজে মাফ করে দেওয়া উচিত কি???

পরেরদিন মায়ার শরীর টা কেন জানি আরো খারাপ হয়ে গেল। শুয়ে থাকতে তার ভালো লাগছে না তাই নিজের ঘর পরিষ্কার করছে সে। আলমারির কাপড় গুছাচ্ছে মায়া। হঠাৎ কাপড়ের ভাঁজ থেকে কি যেন একটা নিচে পড়ার শব্দ হলো। মায়া নিচে তাকিয়ে দেখে মেডিকেল রিপোর্ট।

মায়া রিপোর্ট টা হাতে নিল,, তার নিজের দ্বিতীয় রিপোর্ট এটা। মায়া রিপোর্ট টা খুলে দেখতে লাগলো। কিন্তু সে তো রিপোর্টের কিছু বুঝতে পারছে না। একটা কাজ করি সামনে একটা ডাক্তার চেম্বার আছে। সেখানে গিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে দেখে নিয়ে আসি রিপোর্টে কি বলছে। কেন জানি মনে হচ্ছে আতিক মিথ্যা বলছে। আমাকে জানতে হবে কি এসেছে রিপোর্টে। আতিক অফিসে,, এখুনি যেতে হবে তাকে। ৪টা বাজে। ১ঘন্টা সময় আছে তার হাতে। তার পর আতিক আসবে তাকে নিতে।

আসমা কে বুঝিয়ে মায়া ডাক্তারের চেম্বারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কেন জানি তার বুক টা ধুক ধুক করছে।

ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছে মায়া। ডাক্তার রিপোর্ট দেখছেন। মায়ার দিকে এক বার আড় চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল। এটা তো আপনার রিপোর্ট তাই না???

হ্যাঁ আমার। বলুন ডাক্তার রিপোর্ট কেমন আমি জানি আমার ক্যান্সার। এখন কমায় বলুন কেমন শরীর এখন আমার??
ডাক্তার একটু অন্যমনস্ক হয়ে বললেন আপনাকে তো লাইফ ওয়ারনিং দেওয়া হয়েছে।

মায়া চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে??? যা ভেবেছে তাই। আতিক খুব বড় মিথ্যা নাটক করেছে তার সাথে।

চলবে____????

ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃ
#পর্ব__17
#অবহেলার সংসার 🏘️
#লেখিকা__(মায়া)

আতিক অফিস থেকে এসে দেখে মায়া ঘরে নেই। ফোন দিচ্ছে,, ফোন ও পিক করছে না। কোথায় গেল???

মা মা মা??? কি হলো এত ষাঁড়ের মত চিৎকার চেঁচামেচি করছিস কেন???

মা মায়া কোথায়?? মায়া তো ঘরেই ছিল বাহিরে গেছিল এই কিছু ক্ষণ আগে ফিরেছে।

বাহিরে গেছিল মানে?? কোথায় গেছিল?? বলল কি যেন দরকার আছে আমি তেমন আর কিছু ঘাটায়নি। ওমমম একটা কাজ কর ছাদে দেখ আছে কি না?? ফুলের পরিচর্যা করতে বসেছে হয়তো।

আতিক দৌড়ে গেল ছাদের দিকে গেল,, গিয়ে দেখে মায়া ছাদেই আছে,, দোলনায় পা তুলে বসে আরামে চকলেট খাচ্ছে। চেহারাই এক অন্য রকম হাসি ঝুলিয়ে রেখেছে।

আতিক মায়ার কাছে গেল,, মায়া তুমি এখানে কি করছ??? তোমায় আমি কি বলেছিলাম?? কয়টা বাজে খেয়াল আছে তোমার??

মায়া কে দেখে মনে হচ্ছে আতিকের কোন কথা তার কানে যায়নি। নিজের মনে চকলেট খাচ্ছে।

আমি কিছু বলছি মায়া??? রেডি কেন হওনি তুমি?? মায়া ৬টা বাজবে

মায়া শান্ত স্বরে উত্তর দেয়। আমি যাবো না। তুমি যাও। ভালো লাগছে না আমার!!

ভালো লাগছে না মানে?? তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে না যে তোমার মন খারাপ। চেহারাই কিন্তু মন খারাপের কোন ছাপ নেই। আর যদি খারাপ লেগেই থাকে তাহলে তো আরো ভালো। পার্টিতে গেলে ভালো লাগবে।

আতিক প্লিজ আমার ভালো লাগছে না তুমি যাও। যাও মানে টা কি তোমায় নিতে আসছি সকালে তো ভালো করেই বললাম তোমায়, তুমিও রাজি ছিলে। এখন কেন এমন করছো??

আতিক হাটু গেড়ে মায়ার সামনে বসলো অসহায় মুখ করে বলল তোমার কি আমার সাথে কোথাও যেতে ভালো লাগে না???

আতিক তা নয়। তাহলে কি??? আচ্ছা চল যাবো আমি।

মায়া আর আতিক ছাদ থেকে নেমে আসল।

আতিক বসার ঘরে বসে চা খাচ্ছে,, মায়া রেডি হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসল। সামনে থাকাতেই চোখ জোড়া যেন আটকে গেল তার। কালো রঙের শাড়ি তে বেশ মানিয়েছে,,সাথে কালো হিজাব পড়েছে।
হাতে রেশমি চুড়ি। কিছু সাধারণের মাঝেও যেন অসাধারণ কিছু।

আতিক মায়ার কাছে গিয়ে বলল সেই সুন্দর লাগছে আমার বউকে। কারো নজর যেন না লাগে। মায়া হাসছে। একটা কমতি আছে!! কি আবার কম পরল??? চোখে কাজল দেওয়া লাগতো। নো থ্যাংক্স চোখে কাজল দিলে সবাই কে যে ভালো লাগে এমন নয়। আমার চোখে কাজল দিলে কিছু ক্ষনের মধ্যে পেত্নি হয়ে যাবো। আতিক মায়ার কথায় হাসছে। আচ্ছা ঠিক আছে দিতে হবে না।

পার্টি কে মায়া যেমন বেহায়াপনা মনে করেছিল তেমন নয়। তবে মায়ার সাথে আতিক কে দেখে আনহা যেন জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে ‌। তার রাগ তরতর করে বাড়ছে শুধু। একটা জিনিষ মায়ার মাথায় ঢুকছে না। আনহা আর আতিক কেমন যেন দূরত্ব বজায় রাখছে দুজন আতিক ফিরেও তাকাচ্ছে না আনহার দিকে। মায়া ভাবছে ঝগড়া হয়েছে মনে হয়,,তাই আনহা কে জ্বালানোর জন্য মায়াকে নিয়ে এসেছে এখানে।

কিন্তু সব থেকে বেশি খুশি হয়েছে রিফাত।
রিফাতের চেহারায় তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
আতিকে তার বস ডেকেছে,,মায়া পার্টি থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে হাতে জুসের গ্লাস নিয়ে।

ভাবী!!! কারো ভাবী ডাকে পিছন ফিরে মায়া,, দেখে রিফাত দাঁড়িয়ে আছে।
হাসি মুখে রিফাত বলল। শরীর এখন কেমন ভাবী আপনার???
মায়া মুচকি হেসে বলল হ্যাঁ এখন একটু ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন??? আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি খুব খুশি হয়েছি তোমাদের এক সাথে দেখে‌। আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। আমার বন্ধু টা এবার সঠিক মানুষ কে চিনেছে।
তুমি জানো কি যেদিন তোমাকে হসপিটালের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল,, সেদিন আতিক সঠিক সিদ্ধান্ত টা নেই। আনহার সাথে ওর সম্পর্ক টা সেদিনই শেষ হয়ে যায়। শুধু মাত্র তোমার নামে বাজে মন্তব্য করার জন্য ওদের সম্পর্ক টা শেষ হয়ে গেছে। আতিক কে মাফ করে দিও ভাবী। আতিক হয়তো আনহার সংস্পর্শে গেছিল। কিন্তু সত্যি বলতে ভালোবাসা টা কিন্তু তুমিই ছিলে। আনহা বহু বার আতিকের সাথে কথা বলতে চেয়েছিল কিন্তু সে কি বলেছিল জানো???
অনেক হয়েছে আনহা আমি এখন আমার পিছু ছেড়ে দাও,,, আমি মায়াকে আর কষ্ট দিতে চাচ্ছি না। দয়া করে আর আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করো না। পারলে আমার নজর থেকেও দূরে থাকো।

মায়া এক মনে কথা গুলো শুনছিল। একটা হিসাবে খটকা শেষ হলো মায়ার। আতিক ক্যান্সারের কথা জেনে যাওয়ার আমার প্রতি ভালোবাসা দেখাইনি। আর এত কি ভাবতাম আমি?? যে ক্যান্সারের কথা জেনে আতিক আমার প্রতি দয়া দেখিয়েছিল। মায়া কপালে এক হাত দিয়ে স্লাইড করছে। বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে সে শুধু। আতিক তাহলে সত্যি আতিক নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমাকে ভালোবাসছিল।

রিফাত বুঝতে পারছে না হঠাৎ করে মায়াকে এত চিন্তিত হয়ে পড়ল কেন??? ভাবী তুমি ঠিক আছো???

হ্যাঁ আমি ঠিক আছি। থ্যাংক ইউ সো মাচ। কেন??? অন্য কোন দিন বলবো।

আতিক মায়ার কাছে আসে। মায়া অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এই ভালোবাসা এমন কেন?? আমি যখন ভালোবাসা চাইলাম তখন আতিক আমাকে ইগনর করল। যখন আতিক আমাকে সত্যি ভালোবাসতে চাইল আমি তাকে ইগনর করছি। কিন্তু আর নয়।

রিফাত বলল ওকে ভাই আমি যায় তোমরা টাইম স্পেন্ড করো।

আতিক মায়াকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকাতে দেখে বলল। কি হয়েছে কোন সমস্যা?? শরীর খারাপ লাগছে তোমার?? মায়া শুধু মাথা নাড়িয়ে না বলল আতিক কে। কোন কথা না বলে আতিক জরিয়ে ধরলো। মায়া এমন ভাবে জরিয়ে ধরাই আতিকের সব মাথার উপর দিয়ে গেল।

পার্টি শেষ হতে হতে রাত সাড়ে ১২টা বেজে গেছে। যে যার মতো সবাই বাসাতে চলে যাচ্ছে। মায়া আর আতিক ও বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। মায়া মনে মনে ভাবছে,, জিবন যে তার সাথে যে গেম খেলছে এখন সেও জিবনের সাথে গেম খেলবে। বাইকের পিছনে মায়া আতিক কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।

ওয়েদার টাও খুব একটা ভালো নয়,, আকাশে কালো মেঘে ছেয়ে গেছে,, হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে,,আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে,, কখন যেন আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামবে। আতিক দ্রুত বাইক চালাচ্ছে। হেডলাইনের আলোই রাস্তায় মাঝখানে কয়েক জন মানুষ কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছে আতিক।

এত রাতে রাস্তার মাঝখানে এই মানুষ জন কারা??? মায়া আর আতিকের মনে একি প্রশ্ন। আতিক জোরে গাড়ি টানো। গাড়ি তাদের পাশ কেটে যেতে নিলে। সেই লোক জনের মধ্যে থেকে এক জন লোক আতিকের মাথায় রোড দিয়ে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে বাইক সহকারে মায়া আর আতিক রাস্তায় পড়ে যায়। আতিক মাথা চেপে আহ্ করছে। মায়া ছিটকে পড়ে যায় একটু দূরে।

মায়া আত্মা পুরি শুকিয়ে গেছে,,, কিছু ক্ষণ আগের ঘটনা তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত মায়া আতিকের কাছে আসে। আতিক এই আতিক,,, আতিক চোখ মুখ খিচে রেখেছে,, ব্যাথায় কঁকিয়ে গেছে সে।

মায়া সামনে তাকিয়ে ঝাঁঝালো কন্ঠে চিৎকার দিয়ে বলে। ঐ কি সমস্যা আপনাদের??কে আপনারা?? মারলেন কেন আমাদের। গুন্ডা টাইপ ছেলে গুলো আতিক আর মায়া কে ঘিরে রেখেছে।

মায়ার কথায় বিদঘুটে হাসি দিল ছেলে গুলো,, তাদের হাসি পিছন থেকে একটা মেয়েলি কণ্ঠ ভেসে আসল।

তোমাদের মারার জন্য তো দাঁড়িয়ে আছি আমরা। মেয়েটা সামনে আসল। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকানোর আলোই দেখতে পায় সামনে থাকা মেয়েটিকে আতিক আর মায়া চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।

চলবে_____????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here