#I_Love_U
#part_4,5
#sarika_Islam
4
কিছুটা ডিস্টেন্স বজিয়ে ভাইয়ার চুল মুছে দিতে লাগলাম,,,এই মাহির (নিয়া নাম চেঞ্জ করে দিসি) বাচ্চাকে বললাম তুই মুছে দে না সে পারবে না,,হঠাৎ ভাইয়া আমার কোমর ধরে টান দিল,,একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নিল,,আমার বুকের মধ্যে নিহান ভাইয়ার নিশ্বাস আচরে পরছে,, কেমন এক অজানা অনুভুতি নারা দিচ্ছে,,আমার শ্বাসের গতি বেরে যাচ্ছে বুক ধকধক করছে,,আমি ঘুরে মাহির দিকে তাকালাম মাহিও হা হয়ে আছে,,নিহান ভাইয়া বলে উঠলো,,
‘নিহা,নিহা কেন দিলে আমায় ধোকা?কি এমন করেছি আমি?’
বলেই ভাইয়া আমার কোমর ছেরে দিয়ে ধপ করে বিছানায় পরে গেল,,ভাইয়ার চোখ দিয়ে গরিয়ে পানি পরতে দেখে বুকটা কেমন বিচলিত হয়ে উঠলো,,আমি মাহির কাছে গিয়ে বললাম,,
‘মাহি,, নিহা আপুর সাথে ভাইয়ার রিলেশন ছিল?’
‘হুম,,ভাইয়া অনেক ভালোবাসতো আপুকে রাহা,,কিন্তু আপু ওই নিহাল ভাইয়ার সাথে বিয়ে করে নিল,,তারপর থেকেই ভাইয়া এত্ত সিরিয়াস থাকে অনেক রাগ করে,,আব্বু আম্মু ও জানে এই কথা,,’
‘ওহ আচ্ছা,,’
আমি আর কিছু বললাম না,,বাহিরে চলে গেলাম,,নিহা আপু নিহান ভাইয়ার মন ভেংগেছে তাই সে এমন বদমেজাজী হয়ে গেছে?তাই সে রাগ চটা থাকে?
পরের দিন সকালে,,
ঘরির এলার্ম বেজ উঠলো,,এলার্ম টা বন্ধ করে দিলাম,,কাল রাত তো ঘুমুই নেই তো আর এলার্ম আমাকে কিভাবে উঠাবে?আমি উঠে বসলাম তারাতারিই ফোন করলাম মাহিকে,,অনেকক্ষন পর মাহি ফোন ধরলো,,
‘কিরে এতক্ষন ধরলি না কেন?’
‘আরে ঘুমাচ্ছিলাম,,’
‘আচ্ছা শুন নিহান ভাইয়ার এখন কি অবস্থা?’
‘আমি কিভাবে বলবো?’
‘যা উঠে দেখে আয়,,’
‘আচ্ছা,,’
মাহি উঠে নিহানের রুমে গেল,,রুমটা খোলা দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখলো নিহান রুমে নেই,,নিচে গিয়ে নিলা খানকে জিজ্ঞেস করলো,,,
‘আম্মু ভাই কই?’
‘এইতো মাত্র অফিস গেল,,’
ওপাশ থেকে আমি শুনে সাথে সাথে ফোন রেখে দিলাম,,যাক তাহলে কাল রাতের আসার কেটেছে,,আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজের জন্য বের হলাম,,মাহি আর আমি কলেজ শেষ করে একটা পার্কে গেলাম একটু খোলা হাওয়া অনেক দরকার,,জায়গাটা খুব সুন্দর,,,নৌকা চলাচল করছে পানির উপর একটু এখানে থেকে রিলেক্স হওয়া যায়,,আমি মাহিকে বললাম,,
‘এই মাহি নিহান ভাইয়াকে ফোন করে এখানে আস্তে বল,,ভাইয়া একটু প্রকৃতির হাওয়া খেলে ভালো লাগবে,,’
‘আসবে ভাই?’
‘তুই বললে অবশ্যই আসবে,,’
‘আচ্ছা দেখি বলে,,’
মাহি ভাইয়াকে ফোন করলো,,ভাইয়া সাথে সাথেই ফোন ধরলো,,মাহি স্পিকারে ফোন রাখলো আমিও শুনছি,,মাহি বলল,,
‘ভাই আমরা পার্কে আছি তুই আয়!?’
‘এখন তুই সেখানে কি করছিস?’
‘আরে ভাই আমি একা না রাহা ও আছে,,’
‘ওই রাহাই তোর মাথা খেয়েছে,,ওই তোকে ওখানে যাওয়ার জন্য ফোর্স করেছে তাই না?’
‘আরে নাহ ভাই,,এইসব কি বলছিস তুই?আরো ও তোকে এইখানে আস্তে বলছে তোর একটু ভালোলাগবে তাই,,’
‘আমার ভালোলাগা না লাগা রাহার ভাবতে হবে না বলে দে,,’
বলেই ফোন কেটে দিল,,আমার খুব কষ্ট লাগলো,,আমি কই চাইলাম একটু ভাইয়ার মাইন্ডটা যেন ফ্রেশ হোক আর ভাইয়া উল্টো আমাকে এতগুলো শুনালো?ভাইয়ার সাথে আর কথাই বলবো না,,তার সামনেও যাবো না,,খুব কান্না পাচ্ছে,,মাহি আমার হাত ধরে বলল,,,
‘রাহু তুই মাইন্ড করিস না ভাইয়ের কথায়,,ভাইয়ের মাথা ঠিক নেই হয়ত তাই এমন বলেছে,,’
আমি মুখে জোর করে হাসি আনার চেষ্টা করে বললাম,,
‘আরেহ নাহ আমি বুঝেছি ভাইয়ার সিচুয়েশন,,চল বাড়ি যাই,,’
‘কেন থাকি কিছুক্ষন?’
‘নাহ চল ভালোলাগছে না,,’
মাহিও আর কিছু বলল না আমরা বাড়ি চলে আসলাম,,
এক মাস পর,,
এই এক মাস আমি যত পেরেছি ভাইয়ার থেকে ডিস্টেন্স বজিয়ে চলেছি,,ভাইয়াও আমাদের বাসায় এত আসেনি আমিও যাইনি,,দরকার কি যে চায়না তার কাছে যাবো না,,আমাদের এক্সামও শেষ হয়ে গেছে আর কোন প্যারা নেই,,আজ এক্সামের লাস্ট ডে আমি আর নিয়া ডিসাইড করেছি এক্সামের শেষে কোথাও ঘুরতে যাবো,,এক্সাম শেষ করে কলেজ থেকে বের হলাম,,
‘মাহু চল সেই পার্কে যাই,,’
‘আচ্ছা চল,,’
আমরা সেখানে চলে আসলাম,,যায়গাটা বেশ সুন্দর মনোরম পরিবেশ,,আমি আর নিয়া নৌকায় উঠলাম,,কতশত ছবি তুললাম,,পাশেই রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খেয়ে নিলাম,,বিকেল দিক দিয়ে আমরা বাড়ি চলে আসলাম,,
সন্ধ্যার দিকে নিলা আন্টি আর মাহি আসলো আমাদের বাড়ি,,নিলা আন্টি আম্মুকে বলল,,
‘কলি ভাবী রাহা আর রিমাকে আমাদের বাড়ি নিয়ে যেতে এসেছি,,রাহার তো এখন আর এক্সামের প্যারাও নেই,,কিছুদিন বেড়াক আমাদের বাড়ি?’
আমি আর আপু আম্মুর মুখের দিকে তাকালাম,,,আম্মু আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘নিলা ভাবী ওর বাবার থেকে জিজ্ঞেস করলে?’
‘আরে ভাবী ভাইজান কিছু বলবে না,,আমি নিলয়কে দিয়ে বলিয়ে দিব নে,,’
‘আচ্ছা,,’
আমি আর মাহি চিল্লান দিয়ে উঠলাম,,আমরা ওদের বাড়ি যাবো কত মজা হবে,,রিমা আপু আমি আর রুহি বেরিয়ে পরলাম আন্টিদের বাসার উদ্দেশ্য,,কিছুক্ষন পর বাড়ি চলে আসলাম,,দেখলাম নিহান ভাইয়া সোফায় বসে বসে চিপ্স খাচ্ছে আর টিভি দেখছে,,আপু নিহান ভাইয়াকে দেখে বলল,,
‘কিরে নিহান কেমন আছিস?’
‘ভালোই তুই?’
‘হুম ভালোই,,’
আপু আর নিহান ভাইয়া বেশি বড় না তাই তারা তুই করেই সমোন্ধন করে,,,নিহান ভাইয়ার সবে পচিশ আর আপু তেইশ,,এদের তুলনায় আমরা অনেকটাই ছোট মাত্র উনিশ,,ভেবেই হেসে দিলাম,,
আমরা সবাইও সোফায় গিয়ে বসলাম,,নিহান ভাইয়ার দিকে আমি ভুলেও তাকাচ্ছি না সেদিন আমাকে কইকিছুই না বলল,,,কিন্তু না তাকিয়েও পারছি না কালো একটা টি-শার্ট পরেছে আর হাফ পেন্ট,,উফফফ কতই না কিউট লাগছে,,,চুলগুলো বারবার হাত দিয়ে নেড়ে দিচ্ছে,,আমি আর তাকালামই না,,হঠাৎ ভাইয়া সবার সামনে বলল,,
‘রাহা রুমে আয়,,’
বলেই ধপাধপ পা ফেলে রুমে চলে গেল,,হায় আল্লাহ আমাকে ডাকলো কেন ভাইয়া?তাও আবার সবার সামনে?কি বলবে?আমি উঠতেও চাইছিনা তখন নিলা আন্টি বলল,,
‘রাহা তোকে না নিহান ডাকলো গিয়ে দেখ?’
‘আন্টি কেন ডেকেছে?’
‘সেতো গেলেই জানতে পারবি,,’
আমি মাহিকে নিয়ে উপরে গেলাম,,ভাইয়ার রুমের দরজা নক করতেই ভাইয়া বলল,,
‘আয়,,’
মাহিকে সাথে দেখে বলল,,
‘তোকে আস্তে বলেছি?’
মাহি মাথা ঝাকিয়ে বাহিরে চলে গেল,,আমি ভয়ে হাল্কাহাল্কা কাপছি ভাইয়ার কি হলো?আমাকে একা ডেকেছে কেন?কি ব্যাপার হতে পারে?
চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🖤)
#I_Love_U
#part_5
#sarika_Islam
ভাইয়া হঠাৎ আমাকে একা কেন ডাকলো এইসব ভাবতে ভাবতে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে,,ভাইয়া বলে উঠলো,,
‘আসলে সরি,,’
আমি হঠাৎ ভাইয়ার এমন কথায় শকড হয়ে গেলাম,,সরি বলল কেন?ভাইয়া আবার বলল,,
‘ওইদিন ফোনে আমি যা বলেছি আসলে আমি নিজে বলিনি,,’
‘অন্য কেউ বলেছে?'(ভ্রু কুচকে)
‘নাহ আমিই বলেছি কিন্তু,,মানি কিভাবে বলবো?’
‘কেন লজ্জা লাগছে?’
আমার এই কথায় হঠাৎ ভাইয়া চিৎকার করে উঠলো,,
‘চুপ বেয়াদপ,,যাহ এইখান থেকে,,’
আমি ভাইয়ার ধমকে কেপে উঠলাম,,উল্টো দিকে ঘুরেই বেরিয়ে পরলাম,,আল্লাহ সাইকো নাকি লোকটা?কখনো ভালো কখনো রাগী কখনো নরম কখনো কঠোর,,আমি আজ পর্যন্ত বুঝতে পারলাম না,,সরিই যখন বলেছেন সুন্দরভাবে নরমভাবে বলুক না হুংকার করতেই হবে,,বাদর কোথাকার,,
মনে মনে বকতে বকতে মাহির রুমে ঢুকলাম,,আপু আর মাহি বসে বসে কথা বলছে আর হাসছে,,এইখানে যে আমার কি অবস্থা তার দিকে খেয়াল নেই,,,আমি তাদের সামনে গিয়ে বললাম,,
‘এই এভাবে দাত কেলাচ্ছিস কেন তোরা?’
আপু মাঝদিয়ে বলল,,
‘তুই কেলা কে না করেছে?’
আমি কিছু না বলে বিরক্তি হয়ে বসে পরলাম, আপু আর মাহি আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘কিরে রাহু ভাই কি বলল?’
‘সরি,,’
‘কিহ,,’
‘জি,,’
‘কেন?’
পরে আমি তাদের ঘটনা টা খুলে বললাম,,ভাইয়ার চিৎকারের কথা শুনে দুইটায় হাসতে হাসতে কাত,,আমি মুখ ফুলিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম,,সবাই আমরা সোফায় বসে আছি,,তখন নিহান ভাইয়া সিড়ি দিয়ে নামছে নিহান ভাইয়াকে দেখে রিমা আপু বলল,,
‘নিহান চল বাহিরে যাই,,আগের মতো আর একসাথে হই না,অনেক দিন বাদ হলাম,,,’
নিহান ভাইয়া শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বলল,,
‘কই যাবি?’
‘চল কোথা থেকে ফুচকা আইস্ক্রিম খেয়ে আসি,,’
ফুচকা আইস্ক্রিমের কথা শুনে আমি দিলাম লাফ,,আমার এইগুলো অনেক ফেবারিট,,আমি আর মাহি বললাম,,
‘আমরাও যাবো কিন্তু!!’
‘আচ্ছা চল,,’
বলেই নিহান ভাইয়া আমাদের নিয়ে গেল,,রুহি কেও সাথে নিল,,পিচ্চিটা একা থাকেই না,,বাহিরে ঘুরার নামে একদম পাকা,,আমরা খালি রাস্তায় হাটছি,,লেম্পপোস্টের আলো পরছে রাস্তার মধ্যে,,ভাইয়া রুহিকে কোলে নিয়ে একেক কথা বলছে আর হাটছে,,,লেম্প পোস্টর আলোতে ভাইয়ার মুখটা আরো মায়াবী আরো সুন্দর দেখাচ্ছে,,আমি এক ধ্যানে তাকিয়েই আছি,,যেন পলক পরলেই কোন এক জিনিস মিস হয়ে যাবে,,কিছুক্ষন হাটার পর একটা ফুচকার স্টোরে আসলাম,,আমরা ভিতরে বসে ফুচকা অর্ডার দিলাম,,,ফুচকা খেয়ে বেশ ভালো লাগলো,,এখন আইস্ক্রিম টাইম,,বাহিরে এসে দোকান থেকে ভাইয়া সবাইকে আইস্ক্রিম কিনে দিল,,আমরা খাচ্ছি আর হাটছি,,এখন রুহি আমার কোলে পিচ্চিটা আইস্ক্রিম খেতে খেতে আমার ওড়নায় ফালিয়ে দিয়েছে,,রিমা আপু আর মাহি একটু আগে হাটায় খেয়াল করেনি,,কিন্তু নিহান ভাইয়া আমার পিছে ছিল সে এসে একটা টিস্যু বের করে হাতে দিল,,এখন আমি কিভাবে মুছবো?এক হাতে আইস্ক্রিম আরেকহাতে রুহি,,
আমি অসহায়ভাবে ভাইয়ার দিকে তাকালাম,,ভাইয়া ফাস্টে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিলেও পরে এসে ঠিকি মুছে দিয়ে গেল,,আমি এক গাল হাসলাম,,রুহি ঘুমিয়ে গেছে আমি আপুর কোলে ওকে দিয়ে দিলাম,,মাহি আর আমি কথা বলতে বলতে হাটছি,,,তখনি কতগুলো কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো,,আমার কুকুর অনেক ভয় লাগে,,ইভেন আমার একা না আপু আর মাহি ও,,তারা দুইজন যে যেজায়গায় পারলো দিল দৌড় আমি বোকার মতো দারিয়ে আছি,,ভয়ে আমার দ্বারা দৌড়ও হচ্ছে না,,আর কুকুর গুলো তেড়ে আমার দিকেই আসছে,,,আমি “আয়ায়া” করে জোরে একটা চিৎকার দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম,,চোখ বন্ধ হতেই কেউ আমার হাত ধরে টান মারলো,,আমি আরো জোরে চিৎকার করলাম,,
‘আয়ায়ায়ায়া,,,বাচাও,,,’
কেউ আমার মুখ চেপে ধরলো,,আমি এখন না পারছি চিল্লাতে না পারছি নড়তে,, এমনভাবে ধরে রেখেছে আমাকে আমি এক ফোটাও নড়তে পারছি না,,আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখি নিহান ভাইয়া!!!নিহান ভাইয়া আমাকে বাচালো?থেংক গড,,নিহান ভাইয়া এক হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে আছে আরেকহাত আমার পিছে রাখা,,আমার মুখ একদম তার মুখের নিকটে,,আমি মুখটা হাল্কা উচু করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম,চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকালাম একটা চিপা গল্লি পুরো অন্ধকারে ভরা,,বাহিরের লেম্প পোস্টের হাল্কা আলোতে ভাইয়াকে একটু বুঝা যাচ্ছে,,
নিহান রাহার মুখ চেপে ধরায় রাহা ভয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে রাখাটা বেশ ভালো লাগলো,,কেন জানি এই প্রথম কোন ফিলিং হলো রাহাকে এত কাছে পেয়ে,,এক ধ্যানে রাহার দিকে তাকিয়ে আছে,,
আমার এদিকে দম যায় যায় অবস্থা,, সেই কখন থেকে মুখটা চেপে ধরেছে ছারার নামই নেই,,আমি আমার হাত দিয়ে ভাইয়ার হাত সরিয়ে দিলাম,,
‘এভাবে কেউ ধরে রাখে আর একটু হলে মরেই যেতাম,,’
জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে বললাম,,ভাইয়া আমাকে রেখেই চিপা গল্লিটার থেকে বের হয়ে গেল,,আমি দৌড় দিলাম ভাইয়ার পিছু,,যদি আবার এসে পরে?বাহির হয়ে দেখলাম আপু আর মাহি দারিয়ে আছে,,,আমি তাদের কাছে গিয়ে বললাম,,
‘তোরা এত খারাপ কেন?আমাকে রেখেই দৌড় দিলি?’
আপু তাড়া দিয়ে বলল,,
‘হয়েছে তোর বাকুয়াস?এখন চল,,’
আমরা সবাই বাড়ির দিকে হাটা ধরলাম,,বাসায় চলে আসলাম,,
সকালে আন্টির ডাকে ঘুম ভাংগলো,,
‘এই মাহি রাহা উঠ তোরা আর কত ঘুমাবি?’
মোচরামুচরি করতে করতে উঠলাম,,ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম নাস্তা করতে,,নাস্তা শেষে আন্টি বলল,,,
‘আজ তোরা কি খাবি?’
আমি আর আপু বললাম,,
‘আন্টি বিরিয়ানি,,তোমার হাতের বিরিয়ানি যা জোস না,,’
আন্টি হাল্কা হেসে “আচ্ছা” বলে রান্নাঘরে চলে গেল রান্না করতে,,আমরা সোফায় বসে বসে গল্প করছি,,তখনি সিড়ি বেয়ে নিহান ভাইয়া নামছে,,নীল টি-শার্ট তার উপর জেকেট আর সাদা পেন্ট,,,উফফফ কাতিল ওয়ালা লুক,,ভাইয়া কি আমাকে মারার প্লানিং করছে নাকি?আচ্ছা আমি যে ভাইয়াকে নিয়ে এত ভাবী এত ভালোবাসি ভাইয়াও কি সেম?নাকি আমাকে নিয়ে তার কোন অনুভুতিই নেই?এইসব ভাবছি তখন বাড়িতে একটা লোক আসলো,,ভাইয়া লোকটাকে দেখে বসতে বলল,,হয়ত অফিসের কেউ হবে,,লোকটা বলল,,
‘স্যার নিহা ম্যাম আমাকে ফোন করে আপনার কথা জিজ্ঞেস করেছে,,আপনি নাকি…….’
আর কিছু বলতে পারলো না বেচারা,,ভাইয়া বাঘের মতো গর্জন করে উঠলো,,
‘নিহা আপনাকে ফোন করলে আপনি ধরবেন কেন?আমি না বলেছি নিহা রিলেটেড কিছু হলে বা থাকলে আমাকে না জানাতে?আমার জাস্ট সহ্য হয় না ওর নাম,,’
চিৎকার করে বলে সামনে থাকা কাচের টি-টেবিলটা হাত দিয়ে বারি বারলো টেবিলটা ভেংগে চুরচুর হয়ে গেল,,উপস্থিত আমরা সবাই ভাইয়ার এই ভয়ংকর রুপ দেখে ভয়ে কুকরে গেছি,,রুহি তো ভয়ে কেদেই দিল,,নিলা আন্টি দৌড়ে রান্নাঘর থেকে আসলো,,এসে এইসব দেখে নিহান ভাইয়াকে ধমকিয়ে বলল,,
‘এইসব কেমন বিহেব নিহান?দেখ পিচ্চিটা কান্না করছে!!দিন দিন আরো রাগ চটা হয়ে যাচ্ছিস,,’
নিহান ভাইয়া হাত উচু করে আঙ্গুল দেখিয়ে লোকটাকে বলল,,
‘আমি লাস্ট বারের মতো বলছি নিহার কথা আমার সামনে বলবে না একদম,,’
লোকটা ভয়ে মাথা ঝাকালো,,নিলা আন্টি ইশারায় তাকে চলে যেতে বলল,,লোকটা চলে গেল,,আন্টি ভাইয়াকে বলল,,
‘নিহান বিহেবে থাকো,,এইসব কেমন ব্যাবহার?বড় হয় সে তোমার থেকে,,আর নিহার কথা বললেই কি হয়?’
নিহান ভাইয়া কিছু বলল না হাত ঝারা দিয়ে উপরে চলে গেল,,আমি হঠাৎ খেয়াল করলাম ভাইয়ার হাত কেটে রক্ত বের হচ্ছে,,নিলা আন্টিকে বললাম,,,
‘আন্টি ভাইয়ার হাত কেটে গেছে,,’
আন্টি ভাইয়াকে থামালেও ভাইয়া থামলো না,,আমার এখন কেমন জানি লাগছে ভাইয়ার হাত কেটে গেছে বেন্ডেজ তো করতে হবে,,না হলে যদি কিছু হয়ে যায়?আমি উসখুস করতে লাগলাম,,নিলা আন্টি বেন্ডেজ বক্স আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,,
‘বাচ্চা একটু বেন্ডেজ করে দিয়ে আয়,,’
আমি ভয় চোখে আন্টির দিকে তাকিয়ে বললাম,,
‘আন্টি ভাইয়া বকবে আপনি বরং যান,,’
‘আরে নাহ তোকে কিছুই বলবে না,,’
কোনমতে সাহস জুগিয়ে মাহিকে সাথে নিয়ে ভাইয়ার রুমে গেলাম,,দরজা খুললাম ভাইয়া এক হাত মাথায় দিয়ে বসে আছে,,আমরা ভিতরে ঢুকলাম,,ভাইয়া মাথা তুলে আমাদের দেখে বলল,,
‘দেখ তোরা এখন যা নাহয় উল্টা পালটা কিছু বলে দিব তারপর খারাপ লাগবে,,’
আমার তার কথায় কোন ধ্যায়ান নেই এখন শুধু এক্টাই কাজ আগে তার হাতে বেন্ডেজ করতে হবে,,আমি ভাইয়ার কাছে বসে বললাম,,
‘হাতটা দেন দেখি,,’
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে কিছুটা চিল্লিয়ে বলল,,
‘আমার হাতে কি মধু আছে যে দেখবি?যা এইখান থেকে,,’
আমি শান্ত দৃষ্টিতে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি,,মাহিকে আন্টি ডাক দেওয়ায় সে চলে গেল,,এখন তো আমি একা যদি ভাইয়া আমাকে এই সুযুগে মেরে দেয়?এইসব ভাবনা সাইডে রেখে ভাইয়াকে বললাম,,
‘নিহা আপুকে আজও ভালোবাসেন?’
ভাইয়া আমার কথা শুনে আমার মুখের দিকে আজবভাবে তাকালো,,হয়ত ভাবার চেষ্টা করছে আমি কিভাবে জানলাম?
চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🖤)