#পিচ্চি বউ
পর্বঃ০২
#লেখকঃ রাইসার আব্বু
.
জান্নাতের ডাকে ঘুম ভাঙতেই চেয়ে দেখি সকাল হয়ে গেছে। তাই তাড়াহুড়া করে বালিশটা নিয়ে বিছানায় রাখতেই দেখি কথার কাপড় নিচে পড়ে আছে! আল্লাহ এ কেমন বউ কপালে জুটালে, শাড়ি পড়ে ঘুমাতে পারেনা।এই উঠো অন্য দিকে তাকিয়ে! ( আমি)
!
— ওহ! কি হয়েছে মা!? ( কথা)
!
— ওই আমি তোর মা! এই বলে জোরে ধাক্কা দিতেই কথার ঘুম ভেঙ্গে যায়!
!
— কি হয়েছে?( কথা)
!
— কাপড় পড়ে নাও! এখন আবার বলোনা আমি কাপড় পড়তে পারিনা ( আমি)
!
–অ্যা – অ্যা আমি সত্যিই কাপড় পড়তে পারিনা! আপনি পড়িয়ে দেন (কথা)
!
— আমি পড়াতে পারিনা। বড় বড় কথা বলতে তো পারো আমি ছোট না। কাপড় টাই পড়তে পারো না। আর হ্যা কাপড় পড়াতে পারলেও আমি তোমাকে কাপড় পড়িয়ে দিবো না। নিজে পড়ে নাও( আমি)
!
— বাবা, ও বাবা আপনার ছেলে আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দেয় না! (কথা)
.
-ওই চুপ করবি তুই! চুপ কর।
.
— অ্যা – অ্যা – অ্যা,,, আমি বাবা’কে বলবো তুমি রাতে শাড়ী টেনে হিঁচড়ে খুলে এখন পড়িয়ে দিচ্ছো না! ( কথা)
.
— মেয়েটার কথা শুনে মনে হচ্ছে সেভেন আপকে বিষ ভেবে খেয়ে মরে যায়!
.
— অ্যা- অ্যা তুমি মরার কথা বলো কেন! আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবোনা। প্লিজ মরার কথা বলো না।যেদিন কালেমা পড়েছি সেদিন থেকেই তোমাকে স্বামী বলে গ্রহণ করেছি,। তোমার পায়ে যদি একটা কাঁটা ফুটে সেটা আমার কলিজাতে ফুটে! আমি কি করবো আমি শাড়ি পড়তে পারিনা! আচ্ছা আমি পড়তেছি।তাও তুমি অলক্ষণে কথা মুখে এনো না।কথাটা করুণ সুরে বললো( কথা)
.
.
মেয়েটার দিকে তাকাতেই বুকটা কেমন করে ওঠলো, পিচ্চিটা চোখে পানি চিকচিক করছে।
-তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, আচ্ছা মনে থাকে যেন নিজে শাড়ি পড়া শিখো। (আমি)
.
— আচ্ছা আমি পড়তেছি। পিচ্চি মেয়েটা শাড়ি পড়ছে, একি শাড়ি পড়ছে নাকি শরীলে কাপড় পেচাচ্ছে নিজের অজান্তেই হেসে ফেললাম।
..
আমি পড়তে পারি না। এভাবে হাসার কি হলো, কথাটা বলার সাথে সাথে শাড়িটা খুলে গেল।
.
আমি অন্যদিকে তাকিয়ে বললাম” কি লজ্জা সরম কিছু মা-বাবা শিক্ষা দেয়নি?”
ফেসবুক পেজ : নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
.
“আপনি কি কুরআন পড়তে জানেন ননা? ”
.
পিচ্চি মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে ক্ষানিকটা বিস্মিত হলাম!
” কি বলছো এসব শাড়ি পড়ার সাথে কুরআনের কী সম্পর্ক?”
.
আপনি কি জানেন না? ” আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন, স্বামী -স্ত্রী একে অন্যের পোষাক স্বরূপ “অামি ছোট মানুষ শাড়ি পড়তে পারি না, কোথায় আপনি পড়িয়ে দিবেন তা না করে,অন্য দিকে ফিরে আছেন। আমার শরীরের প্রতিটা অঙ্গ বৈধ ভাবে দেখতে পারবেন আপনি,এখানে অন্য দিকে ফিরে থাকায় কি আছে! দেন না আমাকে শাড়ি পড়িয়ে।( কাঁদো কাঁদো ভাব নিয়ে কথাটা বললো কথা)
.
পিচ্চিটার কথা শুনে পিচ্চির দিকে তাকালাম।পিচ্চিটা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। চোখ বুজে আছে আবার খুলে, সুন্দর করে কুঁচি দিয়ে পড়িয়ে দিচ্ছি মেয়েটা চোখ বন্ধ করে আছে। লজ্জার সুন্দর মুখটা লাল হয়ে গেছে।লজ্জা পেলে যে পিচ্চিটাকে এতো সুন্দর লাগে না দেখলে অজানায় থেকে যেতো। ফ্লোতে পড়ে থাকা শাড়িটা হাতে সম্পূর্ণ কুঁচি দেওয়ার পর নাভির কাছে গুজে দেওয়ার সময় কেমন যেন কেঁপে ওঠলো! পিচ্চির নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে।ঠোঁট দুটি কাঁপছে।পিচ্চির ঠোঁট দুইটা হঠাৎ,আমার ঠোঁঠের সাথে মিশে যাওয়ার আগেই আমার হাতটা ধঁরে ফেললো।
.
কি হলো?
.
— প্লিজ আর না আমি আর পারছিনা।শরীরটা থরথর করে কাঁপছে। ( কথা)
.
— কেন কী হয়েছে শরীর খারাপ করলো নাকি?
.
— নাহ্ এই বলে শাড়ীর কুঁচিটা হাতে নিয়ে নিজেই গুজে দিয়ে বললো।
“হাদারাম, কিছুই বুঝেনা, কোথায় হাত দিলে কি হয় বলে বেরিয়ে গেলো কথা।”
.
পিচ্চিটার কথা শুনে ফ্লরে বসে পড়লাম।
.
— রুম থেকে বের হতেই সবাই হা করে তাকিয়ে আছে!
.
— আমি কি চিড়িয়াখানার বান্দর যে এভাবে সবার তাকায় থাকা লাগবে? মনে মনে ভাবছি হিটলার টা আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়ে কিভাবে হা করে তাকিয়ে আছে।
.
— আমার কথা শুনে সবাই এক সাথে হেসে দিলো!
.
– পিচ্চিটা মুখ ধরে হাসতে, মনে হয় সব দাঁত ভেঙ্গে দেয় কীভাবে হাসছে। সত্যি কী বিয়ে করে চিড়িয়াখানার বান্দর হয়ে গেলাম! কি হলো সবাই হাসছো কেনো? বলবে তো!
.
— ভাইয়া তুমি ঠিক মতো লিপিস্টিক দিতে পারো না, ভাবী তুমি ভাইয়াকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়ো!( জান্নাত)
.
— সব মাথার উপর দিয়ে সবাই হাসতেছে। কেন হাসে তা তো একবার বলবে! বুঝতেছিনা।ওই জান্নাত ফাইজলামি না করে বল কি হয়েছে।
আমি কি বিয়ে করে ঝুকার হয়ে গেলাম।
তোরা যেভাবে হাসছিস মনে হচ্ছে আমি চিড়িয়াখানা থেকে বের হয়ে আসলাম!
.
— ভাইয়া তোমার মুখে লিপিস্টিক লেগে আছে যাও ফ্রেশ হয়ে আছে।( জান্নাত)
.
— মানে, রাতে পিচ্চিটা এমন কাজ করেছে। নিজের ওপর নিজেরই রাগ হচ্ছে। পিচ্চিটাকে দেখি মিটি মিটি হাসছে।
.
ফেসবুক পেজ : নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
আর মনে মনে ভাবছে এখন কেমন লাগে, রাতে আমাকে ঠকানোর ফল। পিচ্চিকে ঠকালে আল্লাহ বিচার করে।
.
দৌঁড়ে চলে গেলাম ওয়াশরুমে! ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম।
.
– সন্ধ্যা বেলায় ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বাজছে!
.
ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে চাপা কান্নায় আওয়াজ।
.
ফোনের ওপাশ থেকে কোন কথা আসছে না, শুধু চাপা কান্নার আওয়াজ ছাড়া! বুকের ভেতরটা হাহাকার করছে। কলিজাটা ক্ষত বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে,কারণ ফোনের ওপাশে যে মানুষটি কান্না করতেছে,সে আর কেউ নয় ‘আমার ভালবাসার মানুষ সাথী! নিজের অজান্তেই চোখ থেকে টুপটাপ করে পানি পড়ছে।
.
প্রায় পাঁচমিনিট পর ওপাশ থেকে সাথী বলল” কি অপরাধ করেছিলাম? কেন করলে আমার সাথে এমন? আমি তো তোমার পায়ের নিচে একটুকরো জায়গা চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমার কলিজাতে ছুরি চালিয়ে দিয়ে, বিয়ে করে নিলে। তিনবছরের মেমরিস কি ভাবে ভুলব! তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি সুসাইড করবো। যে জীবনে আমার ভালবাসার মানুষকে পাবো না সে জীবন রেখে কী করবো! ( সাথি)
.
সাথীর মুখে সুসাইডের কথা শুনে, থমকে গেলাম! মনে হচ্ছে কেউ যেন আমার বুক থেকে কলিজাটা বের করে নিচ্ছে। কি বলব কিছু ভাবতে পারছি না। সাথীকে বললাম কীভাবে কথার সাথে বিয়ে হয়েছে আমার! সাথীকে বললাম ওই মেয়েকে কাবিনের ছয়লক্ষ টাকা দিয়ে আগামী ছয়মাসের মাঝেই ডির্ভোস দিয়ে দিব বলে সাথীকে একটা পাপ্পি দিয়ে ফোনটা রেখে দিলাম।
.
পিছন দিকে তাকাতেই দেখি, পিচ্চিটা আমার পিছনে দাঁড়ানো! চোখ থেকে অশ্রু গাল গড়িয়ে পড়ছে। আমি ফিরে তাকাতেই দৌড়ে রুমে গিয়ে দরজা লক করে দিল! যাবার আগে বলে গেল সে এ জীবন রাখবে না!
‘ আমি যাওয়ার আগেই দরজা লক করে দিল পিচ্চিটা,
চলবে