#মেঘ_বসন্তের_মায়া💛,পর্ব:০২,৩,৪
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💛
পর্ব:০২
“অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তিথি আকাশের দিকে!’তার বিশ্বাসই হচ্ছে না এত বড় বিজনেস ম্যান কারো হাত ধরে উল্টোদিক ফিরে কাঁদছে!’ছেলেরা নাকি সহজে কাঁদে না,,কথাটা মাথায় আসতেই ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলো তিথি আকাশের দিকে..
“এদিকে…
“আকাশকে উল্টোদিক ফিরে থাকতে দেখে বলে উঠল আকাশের গ্রেন্ডমাঃ
—“কি হলো নাতি ওদিক ফিরে আছো কেন?’
“আকাশ চটজলদি তার চোখের পানি মুছে হাসি মুখে তার গ্রেন্ডমার দিকে তাকিয়ে বললোঃ
—“না তেমন কিছু নয় গ্রেন্ডমা..
—“তুমি কি কাঁদছো?’
—“আরে না কি সব বলো তুমি গ্রেন্ডমা কাঁদবো কেন?’
—“তারপর তুমি যে বলে ছিলে তোমার গার্লফ্রেন্ডকে দেখাবে কই নিয়ে আসলে না তো?’
—“আসলে গ্রেন্ডমা ও একটু ঢাকার বাহিরে আছে তাই….
—“ওহ…
—“হুম তবে তুমি চিন্তা করো না আমি যখন তোমায় কথা দিয়েছি তখন খুব তাড়াতাড়ি ওকে তোমায় দেখিয়ে বিয়ে করে নিবো….
“উওরে হাল্কা হাসলেন রাশেদা বেগম!’এমন সময় ওদের কেভিনে ঢুকলো ডাক্তার!’আকাশের গ্রেন্ডমাকে দেখলেন উনি,রাশেদা বেগম ডাক্তারকে দেখে বলে উঠলঃ
—“ডক্টর আমি বাড়ি কবে যেতে পারবো,আমার নাতির বিয়ে খেতে…
—“সেটা তো তোমার নাতি জানে,যেদিন বিয়ে করবে সেদিনই ছেড়ে দিবো তবে হ্যাঁ তুমি চাইলে তার আগেও ছেড়ে দিবো!’
—“হসপিটালে যে আর ভালো লাগে না হৃদ!’…
—“এই তো গ্রেন্ডমা তুমি আর একটু সুস্থ হলেই ছেড়ে দিবো!’…
—“আমি তো সুস্থই তাই না আকাশ…
“গ্রেন্ডমার কথা শুনে আকাশ বিচলিত কন্ঠে বলে উঠলঃ
—“হুম গ্রেন্ডমা, শুধু আর একটু সুস্থ হলেই হয়ে যাবে!’
….
“এদিকে তিথি তাকিয়ে আছে এখনও কেভিনের দিকে যদিও সে ভিতরে কি কথা হচ্ছে তার কিছুই শুনতে পারছে না!’এমন সময় তিথির ফোনটা বেজে উঠল উপরে ছোট বোন সাথীর নাম্বার দেখে তাড়াতাড়ি ফোনটা তুলে একবার আকাশদের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলে উঠলঃ
—“হ্যালো কই তুই?’
—“আমরা তো হসপিটালেই তুমি কই আপু…
—“আমিও তো হসপিটালের ভিতরই,,সাথী এদিক-সেদিক খুঁজে বলে উঠলঃ
—“তুমি কোথায় বলো তো আপু…
—“আমি তো এমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে…
“বোনের কথা শুনে হঠাৎই চোখ যায় সাথীর তিথির দিকে!’সে হাত উঠিয়ে নাড়াতে নাড়াতে হাল্কা চেঁচিয়ে বলে উঠলঃ
—“এই যে আপি আমি এখানে…
“বোনের আওয়াজ কানে আসতেই তিথি আশেপাশে তাকিয়ে সামনেই তার বোনকে দেখে ফোনটা কেটে মোবাইলটা পকেটে রাখতে রাখতে এগিয়ে গেল সাথীর দিকে তারপর বললোঃ
—“এবার এখানে কেন এসেছিস আগের বার তো ডাক্তারের চেম্বার এখানে ছিলো না..
—“আসলে আপু এবার ডাক্তার কোনো কারনে এই হসপিটালে বসেছে তাই এখানে নিয়ে আসলাম…
—“ওহ ওকে চল মা কই…?
—“ওই তো ওখানে বসে আছে!’
“তারপর সাথী আর তিথি চললো তাদের মায়ের কাছে!’সাথী আর তিথি দুই বোন ওদের বাবা নেই,,আজ থেকে ঠিক দু’বছর আগে ওদের বাবা মারা যায়!’বাবা মারা যাওয়ায় আর পরিবারের বড় মেয়ে হওয়ায় তিথি সংসারের হাল ধরে!’প্রথমে তাদের চলতে একটু কষ্ট হলেও ধীরে ধীরে তিথি সবটা সামলে নেয়!’সবই ঠিক ছিল কিন্তু হঠাৎ একদিন ওদের মা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে,,পরে ডাক্তার দেখিয়ে পরিক্ষা নিরীক্ষা করে জানা যায় ওদের মায়ের মাথায় টিউমার হয়েছে!’বর্তমানে কিছুটা ছোট আছে কিন্তু ডাক্তার বলেছে খুব তাড়াতাড়ি অপারেশন না করলে এর পরিনতি ভয়ংকর হতে পারে!’তিথি আপ্রান চেষ্টা করছে তার মায়ের অপারেশনটা খুব তাড়াতাড়ি করিয়ে নিতে!’কিন্তু টাকার জন্য যেন কিছুই হচ্ছে না!’এই জিনিসটা তিথির মা জানে না!’…..
_____
“ডাক্তারের রুমে বসে আছে আকাশ!’মুখে কোনো কথা নেই তাঁর,আকাশকে চুপ থাকতে দেখে বলে উঠল ডাক্তার!’ডাক্তারের নাম হৃদ,,আকাশের ছোট বেলার বন্ধু সে!’
—“চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে…
—“কি করে ঠিক হবো তুই তো জানিস গ্রেন্ডমা ছাড়া আমার আর কেউ নেই আজ সেই গ্রেন্ডমাই যদি আমায় ছেড়ে চলে যায়…
—“আমি বুঝতে পারছি তোর মনের অবস্থা কিন্তু কি করার গ্রেন্ডমার রোগটাই যে অনেক বড়,,তাই বলবো ভেঙে পরিস না সব সময়ের উপরে ছেড়ে দে!’আর গ্রেন্ডমার শেষ ইচ্ছে পূরণ করার চেষ্টা কর!’তারপর তার কি ব্যবস্থা করলি?’
—“তোকে আর কি বলবো গ্রেন্ডমা এমন একটা ইচ্ছের কথা বললো যে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না তুই তো জানিস বিয়ে আর মেয়ে কোনোটাকেই আমার ভালো লাগে না!’
—“কিন্তু কি করার গ্রেন্ডমার জন্য যে তোকে বিয়ে করতেই হবে আকাশ…
—“হুম,,তা ঠিক আছে…
—“যাই কর একটু তাড়াতাড়ি করিস আমার বলতে খারাপ লাগছে তারপরও বলবো তোর কাছে কিন্তু সময় খুব কম আছে…
“হৃদের কথা শুনে আকাশ মাথা নিচু করেই ছলছল চোখে বলে উঠলঃ
—“আমাদের হাতে আর কতদিন টাইম আছে হৃদ…
“আকাশের কথা শুনে হৃদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে উঠলঃ
—“বড় জোর এক থেকে দু’মাস বা তার থেকেও কম….
“উওরে আকাশ কিছু বলে না প্রচন্ড খারাপ লাগছে তাঁর!’আকাশের অবস্থা বুঝতে পেরে হৃদ আকাশের কাঁধে হাত রেখে বললোঃ
—“আমি জানি তোর ভিতর দিয়ে কি যাচ্ছে শুধু বলবো ভেঙে পরিস না,,
“এমন সময় একজন নার্স এসে বললো হৃদকেঃ
—“ডক্টর ২০৩ নাম্বার রুমের পেসেন্ট কেমন করছে..?
“নার্সের কথা শুনে হৃদ বলে উঠলঃ
—“ঠিক আছে চলুন…
“এতটুকু নার্সকে বলে আর আকাশকে “বসতে বলে” দ্রুত বেরিয়ে যায় সে!’আর আকাশ নীরবে বসে রয় কিছুক্ষন কিছুই ভালো লাগছে না তাঁর!’ব্লাড ক্যান্সারের মতো এক ভয়ানক রোগে আক্রান্ত আকাশের গ্রেন্ডমা!’এমন নয় আকাশ বড় বড় ডাক্তারদের দেখায় নি বিদেশেও গিয়ে ছিল সে তার গ্রেন্ডমাকে নিয়ে!’কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় নি!’গ্রেন্ডমার শেষ ইচ্ছে হলো আকাশের বিয়েটা দেখা আর সেই জন্যই আকাশ তখন তিথিকে বিয়ের অফার দিয়েছিল!’আকাশ ছোট বেলা থেকেই এক গ্রেন্ডমা ছাড়া অন্য কোনো মেয়েদের বেশি পছন্দ করে না!’আর বিয়ে করার তো প্রশ্নই আসে না!’কিন্তু আজ এমন একটা পরিস্থিতিতে বসে আছে সে যে ভাবতেই খারাপ লাগছে আকাশের!’…
“এসব ভাবতে ভাবতে আস্তে আস্তে ডাক্তারের রুম থেকে বের হয় আকাশ!’তাকে যে অফিস যেতে হবে,,আর একবার গ্রেন্ডমার সাথে দেখা করেই যাবে আকাশ অফিসের দিকে….
____
“ডাক্তার দেখিয়ে মাকে নিয়ে ডাক্তারের রুম থেকে বের হয় সাথী!’কিন্তু তিথি বের হয় নি তখনও,,তিথি বের না হতে বলে উঠল সাথীর মাঃ
—“ও এখনো বের হচ্ছে না কেন?’
—“তুমি আমার সাথে চলো আপু এখনই চলে আসবে,,আর আপু তো এখন বাড়ি যাবে না…
—“ওহ..
—“হুম…
“বলেই মাকে নিয়ে হসপিটাল থেকে বের হয় সাথী!’অন্যদিকে সেই মুহূর্তেই বের হয় তিথি ডাক্তারের রুম থেকে মনটা তার ভিষন খারাপ!’কারন ডাক্তার বলেছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওর মায়ের অপারেশনটা করিয়ে নিতে!’মনখারাপ করেই হেঁটে যাচ্ছে তিথি,,সময়টা যেন একটু বেশি বেমানান লাগছে তিথির কাছে!’সবই তো ঠিক বাবাকে হারিয়ে সবেমাত্র একটু ঠিকভাবে চলতে শুরু করেছিল তাঁরা এর মধ্যে আবার,,ভাবতেই দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো তিথির!’…..
______
“হসপিটালের করিডোরে বসে আছে আকাশ!’প্রচন্ড খারাপ লাগছে তার,গ্রেন্ডমার মুখটা দেখলেই কষ্ট হয় আকাশের!’সে এখনো মানতে পারছে না কিছুদিন পর তার গ্রেন্ডমা তাকে ছেড়ে চলে যাবে!’এমন সময় আকাশের পাশে এসে বসলো তিথি,এখান থেকেই যাচ্ছিল তিথি সামনেই আকাশকে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে বললো সেঃ
—“কি হয়েছে বস ওনার?’
“আচমকা কারো কন্ঠ কানে আসতেই চমকে উঠলো আকাশ সামনেই তিথিকে দেখে বলে উঠল সেঃ
—“তুমি….
—“হুম আমি, কি হয় উনি আপনার?’
—“কে…
—“ওই যে কেভিনের ভিতর আপনি যার হাত ধরে বসে ছিলেন…
—“ওহ উনি আমার গ্রেন্ডমা…
—“কি হয়েছে ওনার…?’
!
!
!
#চলবে…..
#মেঘ_বসন্তের_মায়া💛
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💛
— পর্বঃ০৩
‘ আমি আপনাকে বিয়ে করতে রাজি বস।’
কিছুটা মিন মিন কন্ঠে হাত কচলাতে কচলাতে কথাটা বলে উঠল তিথি আকাশকে।’
অন্যদিকে…
অফিসে নিজের রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল আকাশ। এমন সময় হুট করেই তিথি তার রুমে ঢুকে কথাটা বলে উঠল। তিথির কথা শুনে আকাশ তার ল্যাপটপটাকে সরিয়ে বললো,
‘ আর ইউ শিওর তিথি?’
কাল রাত থেকেই এই বিষয়টা নিয়ে ভেবেছে তিথি। কারন কাল হসপিটালেই আকাশ তাকে বলেছিল কেন সে তার সাথে এগ্রিমেন্টের বিয়ে করতে চায়। তিথি শুরুতে না করার কথা ভাবলেও পরক্ষণেই নিজের পরিস্থিতির কথা সাথে আকাশের দিকটাও ভেবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এক বছরেই তো ব্যাপার দেখতে দেখতে কেটে যাবে। তিথির ভাবনার মাঝে আবারো বলে উঠল আকাশ,
‘ তিথি।’
আকাশের ডাক শুনে তিথি তার ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে এসে বললো,
‘ জ্বী বস বলুন?’
‘ তুমি কি সবকিছু ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছো,মানে আর ইউ শিওর?’
‘ ইয়েস বস,আমি একশো পারসেন্ট শিওর।’
‘ ভেবে বলছো তো তিথি তুমি এক বছরের এগ্রিমেন্টে রাজি?’
উওরে মাথা নাড়িয়ে বলে উঠল তিথি,
‘ জ্বী স্যার।’
তিথির কথা শুনে আকাশ কিছুক্ষন চুপ থেকে জোরে শ্বাস ফেলে বললো,
‘ ঠিক আছে।’
এতটুকু বলে আকাশ তার টেবিলের উপর থাকা ফোনটা তুলে কল করলো তারপর তিথিকে বললো সে,
‘ চলো আমার সাথে বাকি কথা গাড়িতে বসে হবে।’
উওরে তিথি কিছু না বলে মাথা নাড়ালো।’
____
ব্যস্তহীন রাস্তায় গাড়ি ড্রাইভ করছে আকাশ আর ওর পাশেই বসে আছে তিথি। তিথিকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বলে উঠল আকাশ,
‘ তোমায় তো কালকেই সব বলেছি তিথি কেন বা কি কারনে আমি তোমায় বিয়ে করতে চাই।’
‘ হুম।’
‘ তুমি তো জানোই গ্র্যান্ডমার জন্য সবটা করা তাই সবার আগে তোমাকে আমার গার্লফ্রেন্ড সেজে গ্র্যান্ডমার কাছে যেতে হবে।’
‘ ওকে বস।’
‘ হুম তবে হ্যাঁ গ্র্যান্ডমার সামনে আবার বস বলো না।’
‘ ওকে।’
‘ হুম আর শোনো গ্র্যান্ডমা প্রশ্ন করলে তুমি বেশি কিছু বলবে না যা বলার আমিই বলবো।’
‘ ঠিক আছে।’
উওরে আকাশ আর কিছু না বলে তার ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিলো। হঠাৎই তিথি বলে উঠল,
‘ আমি কি একটা কথা বলতে পারি বস?’
‘ হুম বলো।’
‘ না মানে আমরা যে এক বছরের জন্য বিয়ে করবো এটা এক বছরের জন্য আপনার আর আমার মধ্যেই যদি থাকে। না মানে আমার মা আর বোন যেন এক বছরের বিয়ে এটা এখনই না জানে তাই আর কি?’
‘ ওকে আমার কোনো সমস্যা নেই।’
‘ থ্যাংক ইউ বস।’
‘ ইট’স ওকে!’
উওরে আর তিথি কিছু বলে না। নীরবতার মাঝেই চলে যায় আকাশ আর তিথি। বেশ কিছুক্ষন পর আকাশ একটা বড় শপিং মলের সামনে তাদের গাড়িটা থামায়। তিথি যতদূর বুঝেছিল তাঁরা এখন হসপিটালে যাবে কিন্তু হসপিটালে না গিয়ে শপিং মলের সামনে গাড়ি থামাতে দেখে অবাক হয়ে বললো,
‘ আমরা এখানে কেন আসলাম বস,আমাদের তো হসপিটালে যাওয়ার কথা?’
‘ হুম যাবো তবে তোমাকে এভাবে নেওয়া যাবে না।’
আকাশের কথা শুনে তিথি নিজের দিকে তাকিয়ে বললোঃ
‘ কোনভাবে?’
তিথির কথা শুনে আকাশ কিছুটা বিরক্তির স্বরে বললো,
‘ তুমি না বড্ড বেশি কথা বলো,চলো আমার সাথে গেলেই দেখতে পাবে।’আর এমনিতেও তুমি কি এই ডেলিভারি গার্ল এর পোশাক পড়ে আমার গ্র্যান্ডমার কাছে যাবে।’
এতটুকু বলে গাড়ি থেকে নামায় আকাশ তিথিকে। আকাশের কথা শুনে তিথিও আর কিছু বললো না কারন সত্যি তো সে কি এইভাবে যেতে পারে আকাশের গ্র্যান্ডমার কাছে। এসব ভাবতে ভাবতে আকাশ-তিথি দু’জনেই চললো শপিং মলের ভিতরে। শপিং মলের ভিতরে ঢুকেই আকাশ পর পর কয়েকটা দোকান ঘুরে তিথির জন্য কিছু ড্রেস, ব্যাগ,জুয়েলারি, সাথে একটু সামান্য উঁচুর হিল জুতো কিনে নিল। আকাশকে এত এত শপিং করতে দেখে তিথির চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। তবে সে কিছু বললো না চুপচাপ আকাশের পিছন পিছন হাঁটতে লাগলো সে। অবশেষে আকাশ তিথির জন্য কিছু ড্রেস কিনে তার মধ্যে একটা ড্রেস তিথির হাতে দিয়ে বলে উঠল,
‘ এটা পড়ে আসো।’
উওরে তিথি কিছু বলতে চেয়েও বলতে না পেরে ড্রেস হাতে নিয়ে চলে যায়।’
___
সোফার উপর বসে আছে আকাশ এবার একটু নিঃশ্বাস নিতে পারছে আকাশ। কিছুদিন থেকেই এই বিষয়টা নিয়ে আকাশ খুব ডিপ্রেশনে ছিল,কি করবে না করবে কিছুই যেন মাথায় আসছিল তার। এসব ভাবনা নিয়েই সেদিন ড্রাইভ করছিল আকাশ আর সেই মুহূর্তেই তার গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগে তিথির স্কুটির যদিও সেদিন আকাশ তিথিকে নিয়ে এসব কিছুই ভাবে নি। সেদিন তো তিথির ওপর চরম রেগে যায় আকাশ তখন ডাক্তারের ফোন না আসলে আকাশ যে কি করতো নিজেও জানে না,তবে একদিক দিয়ে ভালো হয়েছে আকাশ কিছু করে নি। এরপরের দিনই আকাশ তিথিকে আবার দেখে তারই অফিসে খাবার ডেলিভারি করতে সেদিন রেগে গেলেও কেন যেন হুট করেই তার গ্র্যান্ডমার কথা মনে করে কিছু বলে নি আকাশ তারপর লোক দিয়ে তিথির খোঁজ খবর নেয় আকাশ আর তখনই জানে সে তিথির মায়ের অসুখ সম্পর্কে সাথে টাকার অভাবে মায়ের চিকিৎসা করতে পারছে না এটাও। আকাশ না চাইতেও তিথির এই দারিদ্র্যতার সুযোগ নিয়ে তিথিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে জানে সে যেটা করেছে সেটা হয়তো ঠিক না কিন্তু গ্র্যান্ডমার ইচ্ছে পূরণ করতে আকাশ বেঠিক করতেও রাজি।কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ছোট্ট দীর্ঘ শ্বাস ফেললো আকাশ। এমন সময় চেঞ্জিং রুম থেকে বের হয় তিথি পরনে তার আকাশের দেওয়া ওয়াইট লং ফ্রক সাথে মিষ্টি কালার গর্জিয়াস কটি চুলগুলো জুটি করা আগের মতোই,আকাশ তিথিকে এক পলক দেখে বলে উঠল,
‘ পারফেক্ট এখন চলো।’
বলেই তিথিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তিথির হাত ধরে চললো আকাশ। আকাশের কাজে প্রথমে একটু অবাক হলেও পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নেয় তিথি।’
___
হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে আকাশের গ্র্যান্ডমা রাশেদা বেগম। পাশেই একজন নার্স দাঁড়ানো কিছুটা হতাশ উনি, এমন সময় তার রুমে প্রবেশ করলো আকাশ আর ওর পাশেই তিথি প্রচন্ড ঘাবড়ে আছে সে না জানি তাকে দেখে আকাশের গ্র্যান্ডমা কি বলে?’আকাশ তিথির হাত ছেড়ে দিয়ে চলে যায় গ্র্যান্ডমার কাছে তারপর খুশি মনে বলে,
‘ গ্র্যান্ডমা।’
হঠাৎই আকাশের ভয়েস কানে আসতেই রাশেদা বেগম তাকায় আকাশের দিকে তারপর একটু অভিমানে স্বরে বলে,
‘ আকাশ তুমি এসেছো আজ এত দেরি করে কেন এলে?’
‘ আসলে গ্র্যান্ডমা অফিসে একটু কাজ ছিল।’
‘ আমার চেয়েও অফিসে কাজটা বেশি হয়ে গেল।’
‘ কি যে বলো তুমি গ্র্যান্ডমা তোমার চেয়ে কোনোকিছুই আমার কাছে বেশি নয়।’
এরই মধ্যে নার্স বলে উঠলঃ
‘ দেখুন না স্যার আপনার গ্র্যান্ডমা কিছুতেই খাবার খেতে চাইছে না।’
নার্সের কথা শুনে আকাশ তার গ্র্যান্ডমার দিকে তাকিয়ে বললোঃ
‘ এসব কি তুমি খাবার কেন খাচ্ছো না গ্র্যান্ডমা?’
‘ তুমি আজ এত দেরি করে কেন আসলে?’
‘ এর জন্য তুমি খাবার খাবে না। আচ্ছা ঠিক আছে আজ আমি তোমায় খাইয়ে দিবো গ্র্যান্ডমা?’
এতটুকু বলে আকাশ তার গ্র্যান্ডমাকে শোয়া থেকে উঠে বসালো। তারপর আকাশ নিজেই তার গ্র্যান্ডমার খাবার হাতে নিয়ে খাওয়াতে শুরু করে দেয়। আকাশের কাজে খুশি হয়ে যায় রাশেদা বেগম আর আকাশ সে তো তার গ্র্যান্ডমাকে নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সে ভুলেই গেছে তিথি নামক কাউকে সে নিয়ে এসেছে এখানে।’
অন্যদিকে তিথি নাতি আর দাদির ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ সে। সে খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছে আকাশ তার গ্র্যান্ডমাকে খুব ভালোবাসে হয়তো নিজের চেয়েও বেশি অবশ্য তিথি এই বিষয়টা কালকেই বুঝতে পেরেছিল। আনমনেই মুচকি হাসলো সে সত্যি বলতে কি ‘ভালোবাসা দেখতেও ভালো লাগে।’
___
আকাশের গ্র্যান্ডমা আকাশের হাত থেকে খাবার খেতে খেতে হঠাৎই চোখ যায় তার তিথির দিকে। তিথির দিকে তাকিয়েই বলে উঠলেন উনি,
‘ ও কে আকাশ?’
এতক্ষণ পর গ্র্যান্ডমার কথা শুনে তাকালো আকাশ তিথির দিকে সে তো প্রায় ভুলেই গিয়েছিল তিথির কথা। গ্র্যান্ডমার কথা শুনে তিথি মুচকি হেঁসে এগিয়ে এসে বলে রাশেদা বেগমকে,
‘আসসালামু আলাইকুম গ্র্যান্ডমা।’
“তিথির কথা শুনে গ্র্যান্ডমা মুচকি হেঁসে বললোঃ
‘ ওলাইকুম আসসালাম তুমি কে?’
‘ আমি তিথি।’
তিথি কিছু বলবে তার আগেই আকাশ বলে উঠল,,
!
!
!
#চলবে…..
#মেঘ_বসন্তের_মায়া💛
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💛
— পর্বঃ০৪
‘ ও আমার গার্লফ্রেন্ড গ্র্যান্ডমা,তোমায় বলেছিলাম না,ওই হচ্ছে সে।’
কিছুটা হতভম্ব কন্ঠ নিয়ে দ্রুত গতিতে কথাটা বলে উঠল আকাশ তার গ্র্যান্ডমাকে। আর আকাশের কথা শুনে কিছুটা বিস্ময় ভরা মুখ নিয়ে তাকিয়ে রইলেন উনি তিথির দিকে। গ্র্যান্ডমাকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে হাল্কা হাসলো তিথি। সে বুঝতে পারছে না তাকে দেখে ঠিক কেমন রিয়েকশন দিলো আকাশের গ্র্যান্ডমা। গ্র্যান্ডমাকে চুপ থাকতে দেখে বলে উঠল আকাশ,
‘ কি হলো গ্র্যান্ডমা? তুমি কিছু বলছো না কেন? তিথিকে ভালো লাগে নি তোমার?’
আকাশের কথা শুনে রাশেদা বেগম কিছুটা গম্ভীর মুড নিয়ে বলে উঠল তিথিকে,
‘ এদিকে আসো?’
হুট করে গ্র্যান্ডমার গম্ভীর কন্ঠ শুনে হাল্কা কেঁপে উঠল তিথি পরক্ষণেই আকাশের দিকে তাকালো সে। তিথিকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে আকাশ চোখের ইশারায় তিথিকে গ্র্যান্ডমার কাছে যেতে বললো। তিথিও আকাশের চোখের ইশারা বুঝতে পেরে আর দেরি না করে চটজলদি এগিয়ে যায় সে গ্র্যান্ডমার দিকে। তারপর চুপটি করে বসে পড়ে গ্র্যান্ডমার পাশ দিয়ে। তিথিকে বসতে দেখে রাশেদা বেগম কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো তিথির মুখের দিকে তারপর তিথির থুতনিতে হাত দিয়ে খুশি মনে বললো,
‘ কে বলেছে তোমায় ওকে আমার পছন্দ হয়নি খুব পছন্দ হয়েছে দাদুভাই।’
গ্র্যান্ডমার কথা শুনে আকাশ তিথি দুজনেই যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলো। তিথি তো প্রথমে অনেকটাই ঘাবড়ে গিয়েছিল। গ্র্যান্ডমার কথা শুনে তিথি বলে উঠল,
‘ সত্যি আপনার আমাকে ভালো লেগেছে গ্র্যান্ডমা।’
উওরে হাসলেন রাশেদা বেগম। রাশেদা বেগমের হাসি দেখে তিথি আকাশ দুজনেই খুশি হলো। এরই মধ্যে রাশেদা বেগম বলে উঠল আকাশকে,
‘ তাহলে দাদুভাই তোমরা বিয়ে কবে করছো?’
‘ কালকেই গ্র্যান্ডমা।’
আকাশের কথা শুনে তিথি গ্র্যান্ডমা দুজনেই চোখ বড় বড় করে একসাথে বলে উঠল,
‘ কি?’
এভাবে দুজনের একসাথে ‘কি’ শুনে আকাশ কিছুটা বিব্রত ফিল করে বললো,
‘ না মানে তুমি চাইলে দু’দিন পর করবো গ্র্যান্ডমা।’
‘ দু’দিন নয় আমার নাতির বিয়ে আমি খুব ধুমধাম করে দিবো।’
গ্র্যান্ডমার কথা শুনে আকাশ কিছুটা হতাশ হয়ে বললো,
‘ এসবের কি দরকার গ্র্যান্ডমা? এমনিতেও তোমার শরীরটা খুব ভালো নেই তাই এসবের কোনো দরকার নেই আমরা ছোট্ট করেই বিয়ে করবো বেশি ঘটা করে বিয়ে করার দরকার নেই।’
‘ এমনটা কি করে হয় দাদুভাই রাশেদা বেগমের নাতির বিয়ে আর ধুমধাম করে হবে না এটা লোকে শুনলে কি বলবে? আর আমার শরীরের কি হয়েছে আমি একদম ঠিক আছি আমি কালই বাড়ি যাবো তোমাদের বিয়ের সব গোছগাছ করতে হবে তো?’
গ্র্যান্ডমার কথা শুনে আরো হতাশ হয়ে বললো আকাশ,
‘ কিন্তু গ্র্যান্ডমা?’
আকাশের কথা শুনে গ্র্যান্ডমা অভিমানী স্বরে বলে উঠল,
‘ আমি আর কিছু শুনতে চাই না আকাশ আর এমনিতেও বিয়ে তো আর তুমি রোজ রোজ করবে না।’
এবারের কথা শুনে আকাশের চেয়ে বেশি খারাপ লাগে তিথির তবে সে কিছু বলে না কারন এখানে তার কিছু বলার নেই।’শেষমেশ গ্র্যান্ডমার অভিমানের কাছে হার মেনে বলে উঠল আকাশ,
‘ ঠিক আছে গ্র্যান্ডমা তুমি যা বলবে তাই হবে।’
আকাশের কথা শুনে খুশি হয়ে যায় রাশেদা বেগম। তারপর বলে,
‘ এই না হলে আমার নাতি।’
উওরে হাল্কা হাসলো আকাশ।
____
রাত_৮ঃ০০টা….
গাড়ি করে বাড়ি ফিরছে আকাশ আর তিথি। কিছুক্ষন আগেই হসপিটাল থেকে বেরিয়েছে আকাশ তিথি। হঠাৎই তিথি বলে উঠল,
‘ আপনি আপনার গ্র্যান্ডমাকে খুব ভালোবাসেন তাই না বস?’
তিথির কথা শুনে আকাশ তিথির দিকে তাকিয়েই গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে বলেঃ
‘ হুম খুব।
উওরে হাল্কা মুচকি হাসলো তিথি। তারপর আবারো বলে উঠল সে,
‘ একটা কথা বলবো বস আপনি যদি কিছু মনে না করেন?’
‘ হুম বলো।’
‘ না মানে আপনি আমায় বিয়ে করবেন এটা কি শুধু আপনার গ্র্যান্ডমাকেই বলবেন আপনার বাবা মাকে বলবেন না ওনাদেরও একটা মতামত নেওয়া উচিত তাই না?’
তিথির কথা শুনে আকাশ তেমন কোনো রিয়েকশন না দিয়েই বলে উঠল,
‘ বাবা মা থাকলে তো বলবো।’
আকাশের কথা শুনে তিথি অবাক হয়ে বললো,
‘ মানে?’
‘ মানে আমি যখন খুব ছোট তখনই আমার বাবা মা মারা যায় আর তখন থেকেই আমার দুনিয়াতে সবচেয়ে আপন বলতে আমার এই গ্র্যান্ডমা।’
আকাশের কথা শুনে কিছুটা খারাপ লাগে তিথির মাথা নিচু করেই বলে সে,
‘ আই এক্সট্রিমলি সরি বস আমি আসলে…
তিথি আর কিছু বলার আগেই আকাশ বলে উঠল,
‘ ইট’স ওকে।’
উওরে তিথি আর কিছু বললো না চুপচাপ তাকিয়ে রইলো সে আকাশের দিকে তার সত্যি খারাপ লাগছে খুব। তিথিকে চুপ থাকতে দেখে আকাশও আর কিছু বললো না চুপচাপ গাড়ি চালাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো সে।’
ব্যস্তহীন রাস্তার পেরিয়ে আলোকিত ল্যামপোস্টের ভিড়েই এগিয়ে চলছে আকাশ তিথি। কারো মুখেই কোনো কথা নেই। সবকিছু যেন হুট করেই হয়ে গেল আকাশ-তিথির।’
___
সকাল_৭ঃ০০টা….
ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে তিথি আর ওর পাশেই সাথী আর ওদের দুজনের সামনেই ওদের মা। হঠাৎই তিথি বলে উঠল,
‘ আমি বিয়ে করছি মা।’
আচমকা খাওয়ার মাঝখানে তিথির এমন কথা শুনে তিথির মা চরম অবাক হয়ে বললো,
‘ কি?’
‘ তুমি কি আমার কথা শোনো নি?’
‘ সকাল সকাল মজা করছিস আমার সাথে।’
‘ তোমার মনে হয় আমি এই সময়ে তোমার সাথে মজা করবো?’
এবারের কথা শুনে তিথির মা সিরিয়াসভাবেই বলে উঠল,
‘ তার মানে তুই?’
‘ হুম যা শুনেছো তাই আমি কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে করছি মা।’
‘ কিন্তু হুট করে এমন কথা আর ছেলেটাই বা কে?’
‘ সব পরে বলবো।’
এতটুকু বলেই তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায় তিথি।অনেকক্ষণ যাবৎই সে ভাবছিল কি করে সে তার বিয়ের কথা তার মাকে বলবে। যতই হোক মেয়ে কি এইভাবে তার মাকে বিয়ের কথা বলতে পারে কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে না চাইতেও কথাটা বলা লাগলো তিথির। তাই তো বেশি কিছু না বলে দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় তিথি।’
অন্যদিকে তিথির হুট করে এমন কথা শুনে কিছুটা নয় বেশই অবাক হয় তিথির মা সাথে সাথীও।’
___
মাঝখানে কাটে দু’দিন।’
এই দুইদিনে সবটা ঠিক না হলেও কিছুটা বিয়ে নিয়ে এগিয়েছে তিথি আর আকাশ। যেমন তিথি তার মায়ের সাথে আকাশকে পরিচয় করিয়ে দেয়, তিথির মাও আকাশকে দেখে পছন্দ করে যদিও হুট করে তার মেয়ে বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইছে কেন কারনটা অজানা তাঁর। কারন এর আগে যতবারই বিয়ে নিয়ে কিছু বলেছে তিথির মা তখনই কিছু না কিছু বাহানা দিয়ে এড়িয়ে গেছে তিথি। তবে বেশি কিছু ভাবলো না তিথির মা সেও বিয়ের কথা শুনে খুশি।
”
আজ হসপিটাল থেকে গ্র্যান্ডমাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’ উনি তো আরো আগেই চেয়েছিল হসপিটাল থেকে বের হতে কিন্তু হৃদের জন্য আর হলো কই শেষমেশ জোর জবরদস্তি করে বের হলো সে হসপিটাল থেকে। হসপিটালে গ্র্যান্ডমার কেভিনের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে তিথি আর ওর সামনেই আকাশ গোছগাছ করছে। তিথিও কিছু করতে চেয়েছিল কিন্তু আকাশ বারন করে। তাই তিথিও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আর একটা বিষয় এই দু’দিনে তিথি আর গ্র্যান্ডমার মধ্যেও ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। গ্র্যান্ডমা তো খুব খুশি তিথির মতো নাতবউ পেয়ে আর তিথিও খুশি রাশেদা বেগমের মতো এত ভালো আর মিশুক টাইপের একজন গ্র্যান্ডমা পেয়ে।’
অবশেষে আকাশ তার গ্র্যান্ডমার জরুরি কাগজপত্র ডাক্তারি ডকুমেন্টসহ ব্যাগপত্র সব গুছিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিল। এরই মধ্যে হৃদসহ তিথি আর গ্র্যান্ডমাও চলে আসলো বাহিরে। আকাশ বেশি কিছু না ভেবে চলে যায় গ্র্যান্ডমার কাছে তারপর তিথিসহ গ্র্যান্ডমাকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে চলে যায় সে হৃদের কাছ তারপর বলে,
‘ তাহলে যাচ্ছি বন্ধু।’
‘ হুম যা আর শোন গ্র্যান্ডমার খেয়াল রাখিস ঔষধগুলো ঠিক মতো খাওয়াস আর কোনো সমস্যা হলেই আমায় ফোন করিস কিন্তু?’
‘ হুম।’
‘ আর লাস্ট ভেঙে পরিস না দোস্ত আগামীদিনগুলো কিন্তু খুবই ক্রিটিকাল এটা মাথায় রাখিস আর বিয়ের দিন দেখা হবে যদি মাঝখানে কোনো সমস্যা না হয়।’
‘ ওকে তাহলে আসি।’
‘ হুম।’
উওরে আকাশ আর কিছু না বলে চললো তার গাড়ির কাছে। গাড়ির কাছে আসতেই গ্র্যান্ডমা বলে উঠল,
‘ এতক্ষন কি কথা বলছিলি হৃদের সাথে দাদুভাই?’
গ্র্যান্ডমার কথা শুনে কিছুটা বিষন্নতা নিয়েই বললো আকাশ,
‘ তেমন কিছু না ওই বিয়েতে আসার কথাই বলছিলাম।’
‘ ওহ?’
‘ হুম।’
এতটুকু বলে আকাশও গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাতে শুরু করলো। জীবনটা একটু বেশি খাপছাড়া লাগছে তাঁর কাছে,ছোট্ট এক দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসলো আকাশের।’
অন্যদিকে,,
তিথি তাকিয়ে রইলো আকাশের মুখের দিকে কারন সে বুঝতে পেরেছে আকাশের অবস্থাটা। তবে এই মুহূর্তে তার কিছু বলার নেই। সময় আর তাদের গন্তব্য যেন একটু দ্রুতই চলছে। এরই মাঝে আকাশ গাড়ি চালাতে শুরু করলো চললো তারা নিজেদের গন্তব্যের দিকে….
!
!
!
#চলবে…..