#ও_আসবেই আবার
৩য় পর্ব
চেকআপ রুমের দরজার সামনে অস্থির হয়ে উঠেছে সবাই। এক ঘন্টা কেটে গেলেও চেকআপ রুমের ভেতর থেকে কারো কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যায়নি। অথচ সবাই নিশ্চিত জানেন ওই ঘরে সেই যমজ ভ্রূণের অধিকারী ৭ বছরের মেয়েটি সহ দুজন নার্স রয়েছে। তারা ভেতর থেকে শুধু শুধু দরজা বন্ধ রাখবে কেন! তাছাড়া ক্লিনিক থেকে দুজন মানুষ নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে এই চিন্তাটি থেকেও কেউ মুক্ত হতে পারছে না। একজন বাচ্চা মেয়েটির বাবা অপর জন গতরাতে ডাক্তার আমিন যে মেয়েটার গর্ভপাত করিয়েছিল সে। ক্লিনিকে যত রকম সরঞ্জাম রয়েছে সব দিয়েই দরজার লক খোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও খুলতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। রুমটা এমন ভাবে তৈরি যে দরজা ছাড়া আর কোনো পথে ভেতরে ঢোকা কিংবা ভেতরে কী ঘটছে দেখা সম্ভব নয়। অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। ৩ জন ডাক্তার হতাশ হয়ে চেকআপ রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আশা, ভেতর থেকে কেউ দরজাটা খুলে দেবে। শুধু শুধু দুজন নার্স কেন একটা বাচ্চা মেয়েকে ভেতরে নিয়ে দরজা লক করে রাখবে কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেন না তারা। নার্স দুজন খুবই প্রফেশনাল এবং বিশ্বস্ত।
তাদের মন যখন এমনই বিক্ষিপ্ত তখন ক্লিনিকের কোনো একটা অংশে যেন প্রচুর ভাঙচুর হচ্ছে এমন একটা শব্দে চমকে উঠলেন তিনজনেই। প্রথমে তারা নিজেদের কানকে বিশ্বাস করতে পারলেন না,এমন শব্দ ক্লিনিকের ভেতরেই কোনো জায়গা থেকে আসছে। তারা দ্রুত সেদিকে এগোলেন। একজন নার্স তাদের দিকেই ছুটে আসছিল। সে থেমে গিয়ে উত্তেজিত কণ্ঠে বলল, ‘স্যার মর্গের ভেতর কারা যেন ভাঙচুর করছে।’ ডাক্তার আমিন বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘কারা যেন , মানে কী?’
‘স্যার, আমাদের সব স্টাফ, নার্সরা তো এখানেই। মর্গের ভেতরে ৪টা লাশ ছাড়া তো আর কারো থাকার কথা না। তবে কারা ভাঙচুর করছে, জিনিসপত্র? আমরা কেউই ভয়ে ভেতরে যেতে পারছি না।’
তিন ডাক্তারের মুখই ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তারা মর্গের সামনে গিয়ে হাজির হলেন। মর্গের ভেতরে যেন ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাচ্ছে। কাঁচ ভাঙার শব্দ, চেয়ার-টেবিল ভাঙার শব্দ, স্টিলের জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলার শব্দ। একেবারে কান ফেটে যাওয়ার জোগাড় হচ্ছে সবার। হ্যা, মর্গের বাইরেইতো সব নার্স, স্টাফরা দাড়িয়ে আছে। তাহলে মর্গের ভেতরে এসব ভাঙচুর করছে কারা! বহিরাগত কারো পক্ষে ক্লিনিকে ঢুকে ওই মর্গে যাওয়া অসম্ভব!
এটা ক্লিনিক হলেও প্রয়োজনেই শুরু থেকেই এখানে আধুনিক মর্গ চালু করা হয়েছে। ক্লিনিকের এই ৪ বছরের সময়ে মাত্র ৪ জন নারীর এখানে গর্ভপাত করাতে এসে মৃত্যু হয়েছে। অবশ্যই সবগুলো অবৈধ গর্ভপাত ছিল। তাই তারা যখন মারা গেল তখন আইনি ঝামেলায় ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে তাদের অবৈধ শয্যাসঙ্গী পুরুষ তাদের লাশ গ্রহণ করতে আপত্তি জানায়। মৃত লাশ ক্লিনিক থেকে বের করা এটাও ক্লিনিকের নিরাপত্তার জন্য বিপদজনক। তাই দুটো দলই ঝামেলা থেকে বাঁচতে এই মর্গ চালু করে। এখানে কেমিক্যাল দিয়ে এবং ফ্রিজ করে লাশগুলো দীর্ঘদিন রাখা রয়েছে। নতুন কেউ মারা না গেলে মর্গ রূমে তেমন কেউ যায় না। সেই মর্গ থেকেই তাই এমন ভয়ংকর শব্দ আসাতে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়লো। এমনিতেই সবার মনে ভয় ঢুকে আছে, কিছু একটা এলোমেলো ঘটে চলেছে আজ রাতের শুরু থেকেই।
ডাক্তার অমিত উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন, ‘দরজাটা কিছুটা ফাঁকা হয়ে আছে। মানে লক করা না। কেউ ভেতরে ঢুকেছে। আমাদের ভেতরে ঢুকে দেখা উচিত। কোনো ধারণাই পাচ্ছি না কে এমনটা করছে!’
স্টাফদের কেউই সামনে এগোবার সাহস পাচ্ছে না। এখনও সমানে ভেতর থেকে সব কিছু লণ্ডভণ্ড হওয়ার শব্দ আসছে। অবশ্য ভেতরে কোনো মানুষের সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ কী যেন হয়ে গেল ডাক্তার অমিতের। সাহস পেলেন তীব্র কৌতূহলতা থেকে। বাইরে দাঁড়িয়ে শব্দ শোনার কোনো অর্থ নেই। এগিয়ে গেলেন একাই মর্গের দরজার সামনে। ধাক্কা দিয়ে খুলে ফেললেন দরজা। আশ্চর্য্য, সাথে সাথেই থেমে গেল সব শব্দ। তার এই হঠাৎ পদক্ষেপে কিছুটা আৎকে উঠলেও মুহূর্তেই বাকি দুই ডাক্তারও তার পেছনে এসে দাঁড়ালেন। ৩ ডাক্তার প্রায় একসঙ্গেই দরজা ঠেলে মর্গের ভেতরে ঢুকলেন।
মিহি আলোয় এ যেন এক নরকে প্রবেশ! পুরো ঘরের সবকিছু এলোমেলো, তছনছ করা। টেবিল-চেয়ার ভাঙা। অপারেশনের সরঞ্জাম ছড়ানো-ছিটানো। একটু এদিক সেদিক তাকাতেই খেয়াল করলেন ৩টা লোহার রড হাতে ৩ জন মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে মর্গের একপাশে। এরাই যে ভাংচুর করছেন কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু কারা এরা! কোথা থেকে এলো! ঝাপসা অন্ধকারে প্রথম তাদের কাউকেই চিনতে পারলেন না ডাক্তাররা। অন্ধকার সয়ে এলে ধীরে ধীরে মানব মূর্তিগুলো স্পষ্ট হলো। বুঝতে পারলেন ৩ জনই মেয়ে। মেয়েগুলো নড়ে উঠলো, এরপর ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে লাগলো ডাক্তারদের দিকে। এমন ভাবে হাঁটছে যেন কবর থেকে উঠে এসেছে এরা, মৃত মানুষ! উত্তেজনা আর ভয়ে কাঁপছেন তিন ডাক্তারই। শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে। মুখ যেন কেউ চেপে ধরেছে তাদের। মেয়েগুলো কাছে আসতেই তাদের মুখ দেখে চমকে উঠলেন তিন ডাক্তার। এই ৩ জনের দুজন, চেকআপ রুমের নার্স। যারা বাচ্চা মেয়েটা সহ চেকআপ রুমের ভেতরে আটকা পড়েছেন ভেবে এতক্ষণ সবাই ওই রুমের দরজা খোলার জন্য এত চেঁচামেচি আর চেষ্টা করলেন। আশ্চর্য্য এরা এখানে এলো কী করে! কেউ তাদের দেখলো না! আর চেকআপ রুমের দরজাইবা ভেতর থেকে বন্ধ করলো কে! ৩য় মেয়েটিকে একটু ভালো করে দেখেই ডাক্তার আমিন চিনতে পারলেন। গত রাত ১১টায় এই মেয়েটার গর্ভপাতই তিনি করেছিলেন। যে একটু আগে ৫ নং ওয়ার্ড থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। মেয়েটার পরনেও নার্সদের পোশাক। এদের তিনজনকে একসাথে এখানে দেখার জন্য তারা কেউই মানসিকভাবে তৈরি ছিলেন না। তাই কয়েক মুহূর্ত স্তব্দ হয়ে রইলেন। ভাবনা চিন্তার তেমন সময় পাচ্ছেন না কেউই। মেয়েগুলোর মুখ ফ্যাকাশে লাগছে। কেমন উদ্ভ্রান্তের মতো দৃষ্টি। তারা কী করছে নিজেরাই যেন জানে না।
মেয়েদের হাতে লোহার রডগুলো দেখে তাদের শরীরের রক্ত জমে যেতে লাগলো। এরা যদি এখন তাদের উপর আক্রমণ করে বসে, তাহলে তাদের চেঁচানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না। দৌড়ে মর্গ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার শক্তিও এখন তাদের পা আর যোগাচ্ছে না। কিন্তু কাছে এসেই মেয়েগুলো মূর্তির মতো থমকে দাড়িয়ে রয়েছে। বেশ কিছুটা সময় কেটে গেল এভাবেই নীরবতায়। ডাক্তার মামুন কাঁপা কণ্ঠে বললেন, ‘সাবিনা, আবিদা! তোমরা এখানে কী করছো? তোমাদের তো চেকআপ রুমে ওই বাচ্চা মেয়েটার সাথে থাকার কথা। আর শুধু শুধু সব ভাঙচুর করছো কেন?’
এইবার তাদের শরীরকে বরফ জমা করতেই যেন আরেকটু কাছে চলে এলো মেয়ে তিনজন। উদ্ভ্রান্তের মতো চোখ-মুখ এদিক সেদিক নাড়ছে, ঘনঘন নিঃস্বাস নিচ্ছে, নাক কুচকাচ্ছে। এদের কেউই যে সুস্থ নেই যে কেউ দেখলেই বলতে পারবে। তার উপর তাদের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে চেপে রয়েছে লোহার রডগুলো। তারা কোনো উত্তরই দিচ্ছে না। মর্গে হালকা আলোর ডিম লাইটের বদলে বড় লাইট জ্বালানো হলে হয়তো তাদের ভয়ের কিছুটা হলেও কাটতো। ঝাপসা অন্ধকার ভয়টাকে মহাবিপদ সংকেতে রূপান্তর করছে। ডাক্তার আমিন, মামুন এবং অমিতের বুকও ঘনঘন উঠানামা করছে। কিছুতেই নার্ভ শান্ত হচ্ছে না। ডাক্তার আমিন অনেক কষ্টে উচ্চারণ করলেন ‘তোমরা এখানে, বাচ্চা মেয়েটা কোথায়? চেকআপ রুম ভেতর থেকে বন্ধ কেন? ওর অপারেশন করাটা জরুরী!’ এইবার ৩জন মেয়েই চমকে উঠে কয়েক পা পিছিয়ে গেল। এতক্ষণে যেন হুস ফিরলো তাদের। মানুষের গলা চেপে ধরলে যেরকম শব্দ বের হয় অনেকটা সেরকম শব্দই বেরিয়ে এলো নার্সদের একজন সাবিনার কন্ঠ থেকে। তবুও উন্মাদই মনে হলো তাকে। ‘ও আসবে!ওর জন্যই সমস্ত কিছুর আয়োজন। তোমরা ওকে বিরক্ত করো না। মেয়েটার ভেতর আছে ও। ওকে ওর মতো থাকতে দাও। আমাদের , আমাদের মতো কাজ করতে দাও। সব নিয়তি! হ্যা, হ্যা। ও আসবেই! ও আসবেই! আমাদের সৌভাগ্য এখানেই জন্ম নেবেন তিনি। আমরা তাকে সাহায্য করবো!’
‘কে আসবে? কিসব আবোল তাবোল বলছ তোমরা! আর এসব এভাবে ভাঙার মানে কী?’ ডাক্তার মামুন বিস্মিত হয়ে বললেন।
‘ওই মেয়েটার গর্ভে ও ঘুমোচ্ছে। ওকে বিরক্ত করো না। ওকে আসতে সাহায্য করো। তোমাদের ভালোই হবে। সব বদলে দেবে ও। তোমরা এখন এই ঘর থেকে যাও। কাজ করতে দাও আমাদের।’
‘তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়েছ। আমি অনুরোধ করছি ওই লোহাগুলো ফেলে দাও। আমাদের সাথে মর্গের বাইরে বেরিয়ে এসো। একটু বিশ্রাম নিলেই তোমরা ঠিক হয়ে যাবে। তারপর তোমাদের সব কথা শুনছি।’ হতভম্ব চিত্ত কিছুটা শান্ত করে বললেন ডাক্তার অমিত। এই তিন মেয়ের কর্মকাণ্ড, উদ্দেশ্য কিছুই কারো মাথায় ঢুকছে না।
মেয়েগুলো এবার যেন আবার ক্ষেপে উঠলো। উল্টো দিকে ঘুরে যা সামনে পাচ্ছে তাই লোহার রড দিয়ে আঘাত করে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। আর একত্রে ভাঙা গলায় চেঁচিয়ে বলছে, ‘ ও আসবে। আমাদের বিরক্ত করো না! চলে যাও এখান থেকে। আমাদের কাজ করতে দাও! ওর পথ আমরাই তৈরি করবো।’
উৎসুক এবং একই সাথে বিরক্ত হয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন ডাক্তার আমিন, ‘তোমরা কী কাজ করছো বলবে?’
‘আমরা পথ খুঁজছি। যে পথ দিয়ে ‘ও’ আসবে। সহস্র মৃত ভ্রুণ দিয়ে যে পথ তৈরি। তোমরা চলে যাও সবাই এই জায়গা ছেড়ে। এখানেই জন্মাবে ও। এই ঘরে। হাজারো মৃত ভ্রূণের ভেতরে। মেয়েটার দেখাশোনা করো গিয়ে। ওই ওর মা! ওর আসার সময় হলে আমরা গিয়ে তাকে নিয়ে আসবো। সময় খুব কম, আমাদের লোকও কম। আমাদের আরো লোক লাগবে কাজটা করতে! তবে তোমাদের দিয়ে কোনো কাজ হবে না। চলে যাও,ভয় পাবে।’ গতরাতে গর্ভপাত করানো সেই মেয়েটা উত্তর দিল।
তিন ডাক্তারই হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। এই তিন জন যে উন্মাদ হয়ে গিয়েছে এতে তাদের মনে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু হঠাৎ করে একসঙ্গে তিনজন মেয়ে কী করে মানসিক ভারসাম্য হারালো! আর কার আসার কথা বলছে ওরা। তারা যাই বলুক আর করুক না কেন তারা তিনজনেই এই মুহূর্তে বিপদজনক। এখন আপাতত মর্গ থেকে তাদের বেরিয়ে যাওয়াই ভালো ভাবলেন তিন ডাক্তার। ধীরে ধীরে পিছু হটতে শুরু করলেন তারা। মেয়েগুলো এখনো উন্মাদের মতো সবকিছু ভাঙচুর করে যাচ্ছে।
এই মর্গেরই একপাশে বড় দেয়াল। সেখানে পুরো দেয়াল জুড়ে ২০টি ড্রয়ারের মুখ দেখা যায়। এর প্রতিটি ড্রয়ার মৃত লাশ রাখার উপযুক্ত। নিচ থেকে ৩য় লাইনের পাশাপাশি ৪টি ড্রয়ারে এই ক্লিনিকে এখন পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে এসে মারা যাওয়া ৪জন নারীর লাশ রাখা রয়েছে। হঠাৎ করেই ওগুলো কাঁপতে শুরু করলো। তিনজন ডাক্তারই চমকে সেদিকে তাকালেন। ৩ জন উন্মাদ মেয়েও ভাঙচুর থামিয়ে সেদিকে তাকালো। হচ্ছেটা কী! মনে হচ্ছে ভেতরে লাশগুলো নড়া-চড়া করছে। বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে! দম বন্ধ করে সবাই সেদিকে তাকিয়ে আছে। এমন সময় ধীরে ধীরে নিজে থেকেই একটা একটা করে চারটি ড্রয়েরই খুলে গেল। এখনো কাঁপছে ড্রয়েরগুলো। তিন ডাক্তারই ভয়ে আর্তনাদ করে উঠলো। তবে মেয়েগুলো আনন্দে চিৎকার করে হেসে উঠলো। ধীরে ধীরে ড্রয়ের থেকে একটা একটা করে মাথা বেরিয়ে আসতে লাগলো। লাশগুলো কফিন থেকে উঠে বসেছে। অবিশ্বাস্য! লাশগুলো নিজ থেকে নড়াচড়া করছে। আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালো লাশ ৪টি। ওদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে গোঙানি। ৪টি লাশের দৃষ্টি তিন ডাক্তারের উপর স্থির হয়ে আছে। তাদের মাথা ঘুরতে লাগলো। কফিন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে লাফ দিয়ে মেঝেতে নামলো ওরা। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল বাকি তিন মেয়ের কাছে। মেয়েগুলো হাত ইশারা করলো মর্গের এক অন্ধকার কোণের দিকে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নগ্ন ৪টি মেয়ে সেই অন্ধকারে ডুবে গেল। পরমুহূর্তেই ৪টি লোহার রড হাতে বেরিয়ে এলো ওরা। ওদের পরনেও নার্সদের পোশাক। ৭জন মেয়ে একত্রিত হলো।
৪টি লাশের জেগে ওঠার মতো দৃশ্য দেখে ডাক্তার আমিন , ডাক্তার মামুন এবং ডাক্তার অমিত তিন জনেই প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ৭ জন মেয়েই এবার হুঙ্কার ছাড়লো। ‘ও আসবে। তোমরা চলে যাও।’ আৎকে উঠলেও সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করলেন না। উল্টো ঘুরেই ছুটে বেরিয়ে গেলেন মর্গ থেকে। মর্গের দরজা প্রচুর শব্দ তুলে বন্ধ হয়ে গেল। আবার ভেসে আসতে লাগলো সেই ভয়াবহ ভাংচুরের শব্দ।
উত্তেজনায় জোরে দ্রুত শ্বাস নিচ্ছেন তিনজন, হাপাচ্ছেন। তাদের এভাবে দেখে বাইরের সবাইও আরো মুষড়ে গেল। এমন সময় আরেকজন নার্স তাদের কাছে এসে জানালো, ‘চেকআপ রুমের দরজা খুলে গেছে একাই, স্যার। মেয়েটা ভেতরে আছে। কিন্তু মেয়েটার……!’
‘কী হয়েছে মেয়েটার?’ উদ্বিগ্ন ডাক্তার আমিন।
‘আপনারা চলুন স্যার, নিজের চোখেই দেখবেন।’ এতটুকু বলেই অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে গেল নার্স মেয়েটি। তিন ডাক্তার তাকে পাশ কাটিয়ে ছুটলেন চেকআপ রুমের দিকে।………………………….
.
.
. . . চলবে . . .
.
.
লেখা: #Masud_Rana