এলাকার বড় আপু_২ #পার্ট: ১০ শেষ

#নাম: এলাকার বড় আপু_২
#পার্ট: ১০ শেষ
#লেখক: Osman

👉আমি ফ্রেশ হয়ে খেয়ে অফিসে চলে আসলাম। একটু পর একজন এসে বলল। তানিয়া ম্যাডাম ডাকে। আমি অফিসের সামনে আসলে একজন বলল । ভিতরে গিয়ে বসতে। ম্যাডাম আসবে। আমি ভিতরে ঢুকে দেখি এক চেয়ারে একটা মেয়ে বসে আছে। আমি মেয়েটার দিকে না তাকিয়ে চুপ চাপ বসে পড়লাম। অনেক ক্ষন হয়ে গেলো ম্যাডাম আসছে না। কিন্তু কেমন যেনো একটা ঘ্রান আমার নাকে আসছে। কেনো জানি মনে হচ্ছে এটা নিলার শরীরের ঘ্রাণ। তারমানে পাশের মেয়েটা নিলা। আমি তাকাতে যাবো । কিন্তু ততক্ষণে মেয়েটা মুরাদ বলে ডাক দিলো। আমি তাকিয়ে দেখি আসলেই নিলা।
আমি যেনো একটা শকড খেলাম। আমি কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছি না। শুধু তাকিয়ে রইলাম।
নিলাও আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কিছু বলছে না। অনেকক্ষন পার হয়ে গেলো। আমি খেয়াল করলাম নিলার মুখের রং পাল্টে যাচ্ছে। নিলা চেয়ার থেকে উঠে আমার শার্টের কলার ধরে কষিয়ে দুইটা চড় দিলো। আমি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম। মুখে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেললাম। নিলা অফিসের দরজা আটকে দেয়। বুঝতে পারছি আজকে আমার খবর আছে। দীর্ঘ এক মাস পর আমাকে পেয়েছে হাতে নাতে এতো সহজে আমাকে ছাড়বে না। নিলা লাফ দিয়ে আমার মাথার চুল ধরে টেনে নিচে নামালো । আমাকে নুইয়ে আমার পিঠে মারতে থাকে আর বলতে থাকে।

নিলা: বল বল কেনো আমাকে ছেড়ে চলে আসলি। বল বল কেনো আমাকে ছেড়ে চলে আসলি। আমি কি দোষ করছিলাম?

আমি: বলছি বলছি প্লিজ আর মেরো না।

নিলা: তুই না আমাকে ছেড়ে চলে আসছত। তাহলে বেঁচে আছত কেনো?

আমি: তোমার কারনে।

নিলা: মিথ্যা কথা। তাহলে এতো দিন আসছ নাই কেনো?

আমি: কারন তুমি আমার কথা শুন নাই।

নিলা: সে জন্য চলে আসবি তুই?

👉 পিঠে আরেকটি কিল দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আর কাঁদতে লাগলো আমি বললাম‌

আমি: কাঁদছো কেনো এখনতো আমাকে পেয়ে গেছো।

নিলা: এটাতো সুখের কান্না।

আমি: আমি ভাবতে পারি নাই। আমি চলে যাবার পর তুমি এতোটা কষ্টে থাকবে। আমি ভাবছিলাম তুমি আরো হাঁসি খুশি ভাবে নির্বাচন কম্লিট করবে। আর আমাকে সারাজীবনের জন্য হারাবে।

নিলা: আসলে তুই চলে যাওয়ার পর তর মর্যাদা বুঝতে পারি। মুরাদ তুই আমাকে ক্ষমা করে দে। আমি তকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। (নিলা কাঁদতে থাকে)

আমি: তুমি যদি প্রথমে আমার কথা শুনতে তাহলে হয়তো এতটা কষ্ট করতে হতো না।

নিলা: তুই আমাকে আবার ছেড়ে চলে যাবি।

আমি: হুম । যদি আমার কথা না শুনো।

নিলা: ওকে ।

আমি: এখন আর কেঁদো না।

নিলা: হুম।

আমি: তোমার শরীরের কি অবস্থা? কি সুন্দর পরীর মতো ছিলো আমার নিলা। এখন শুকিয়ে কি হয়েছো?

নিলা: তর জন্য। আমার এ অবস্থা হয়েছে।

আমি: তোমার ফ্রাস্ট কাজ হলো আমার মা বাবার কাছে ক্ষমা চাওয়া।

নিলা: সরি মুরাদ তর মা বাবাকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি। বল কবে তর গ্রামের বাড়িতে যাবি ।

আমি: সামনে সপ্তাহ।

নিলা: আমার গ্রাম অনেক ভালো লাগে।

আমি: গিয়ে আমরা অনেক দিন থাকবো।

নিলা: হুম।

আমি: আমি সরি । ঐদিন রাতে আমি তোমার ডাক শুনিনি। (বললাম কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)

নিলা: ঐদিন যদি তুই না থাকতি তাহলে হয়তো আর আমাকে পেতি না।

আমি: এখন তোমাকেও আমি পেয়েছি । তুমিও আমাকে পেয়েছো । আর কোনো কষ্ট নেই।

👉আমি আমার কপাল নিলার কপাল এক সাথে করলাম। নিলার চোখে পানি আমার চোখেও পানি।
আমি নিলার মাথায় ধরে আবার আমার বুকে টেনে নিলাম। নিলা ও আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।
আবার নিলা কেঁদে দেয়।

নিলা: আবার যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাস । তাহলে আমাকে আর জীবন্ত পাবি না।

আমি: ওকে আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো না। কিন্তু তুমি আমাকে তোমাকে মারার অনুমতি দেও।

নিলা: তুই আমাকে মেরে ফেলিস তবুও আমাকে ছেড়ে চলে যাস না। প্রিয় জন পাশে না থাকার বেদনা আমি বুঝতে পেরেছি।

আমি: এইতো লক্ষী মেয়ে।

👉আমি নিলার চোখ মুছে দিলাম। চেয়ারে বসালাম।
দরজা খুলে দিলাম। একটু পর তানিয়া প্রবেশ করলো । আমি বুঝতে পারছি এসব তানিয়ার কাজ ছিলো। মনে মনে তানিয়াকে অনেক ধন্যবাদ। তানিয়া এসে বলল।

তানিয়া: আপু আমাকে আর তোমার সাথে থাকতে হবে নাতো।

নিলা হেসে বলল।

নিলা: আপাতত না। সময় হলে বলবো।

তানিয়া: সময়টা কখন‌ পেটে বাচ্চা হলে।

নিলা: যা‌ শয়তান।

আমি: ম্যাডাম আপনিতো কিছু দিন আগে বলেছিলেন বউকে নিয়ে কোথাও ঘুরে আসতে সেই ছুটিটা আমি আগামী সপ্তাহ চাই।

তানিয়া: মুরাদ ভাই এটা কিন্তু ঠিক না ।

নিলা: দিয়ে দেস না।

তানিয়া: আগামী সপ্তাহ কিন্তু এখন না।

আমি: হুম।

তানিয়া: যান এখন মন দিয়ে কাজ করেন।

👉আমি চলে আসলাম আমি অফিস শেষ করে। নিলাকে নিয়ে শপিং মলে গিয়ে তার জন্য বোরকা কিনলাম। সেখান থেকে বোরকা পরিয়ে । আমার মেসে গেলাম। গিয়ে নিলাকে সাজ্জাদ ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। সাজ্জাদ ভাই নিলাকে কতগুলো উপদেশ দিয়ে দেয়। (পরে এক সময় সেগুলো বলবো আপনাদের)। আমি আমার জরুরি জিনিস পত্র নিয়ে বাসায় আসলাম। নিলা কে বোরকা অবস্থায় আরো বেশি সুন্দরী লাগে।নিলাকে বললাম বোরকা পরে ঘর থেকে বের হতে। আর আগের সব কিছু ভুলে যেতে সামনে ফোকাস করতে। সে আমার কথায় সায় দেয়। বাসায় আসলে নিলা আমাকে রান্না করে খাবার দেয়। আমি খেয়ে দেয়ে আমি রুমটা গোছালাম যেভাবে আগের মতো ছিলো। আমি রাতে নিলা বিছানায় শুইলাম। যেহেতু অনেক দিন পর তাই নিলাকে শরীরে ধরতে কেমন যেনো লজ্জা লাগে। আমি ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে সব লজ্জা চলে যায়। দেখি নিলা আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে। তার মিষ্টি মুখটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি নিলাকে ডাক দিলে সে ওঠে ফ্রেশ হয়ে রান্না করে। আমি খাওয়া দাওয়া করে অফিসে চলে গেলাম। অফিস থেকে এসে দেখি নিলা একটা গোলাপী কালার শাড়ি পরেছে। যেটা দেখে আমার মাথা এমনি ঠিক নেই তাও আবার তার শরীর থেকে মিস্টি একটা গন্ধ আসছে। আর তার একাংশ দেখা যাচ্ছে। আমি কোনো চিন্তা না‌ করেই তার কোমরে ধরে তাকে টান দিয়ে বুকে আনলাম।
তার মিষ্টি গোলাপি ঠোঁটে চুমুর প্রলেপ একে দিলাম অনেকক্ষন । নিলা আমাকে টেনে নিয়ে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় বলে ।

নিলা: তুই না আমাকে অন্য একটা জগত থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবি। আমার শরীর আন চান সেখানে যাওয়ার জন্য।

👉আমি বুঝতে পারছি নিলা কিসের কথা বলছে। আমিও এতো দিন সেটার জন্য অপেক্ষা করছি।
আমি নিশার ঘাড়ে চুমু খেতে থাকি । আমি আস্তে আস্তে নিচে……….বাকি কাজটুকু নিলা সেরে ফেলে। ভাবলাম এতো ফেতনার ভিতরেও নিলা নিজেকে সম্পূর্ণ ঠিক রেখেছে। আমরা সন্ধ্যা সময় শুইলাম ওঠলাম পরের দিন সকালে নিলা বলল।

নিলা: এই জিনিসটা এতো মজা এতো সুখ আগে যদি জানতাম তাহলে আমি তর কথার কক্ষনো অবাধ্য হতাম না। আমি আরো ১০ৎবছর আগে বিয়ে করে ফেলতাম।

আমি: তখন কিন্তু তুমি আমাকে পেতে না।

নিলা: তা ঠিক। এখন বলো কি খাবে?

আমি: সেটাও বলে দিতে হবে।

নিলা: না এখন আর না । আমি নাস্তা তৈরি করছি খেয়ে দেয়ে অফিসে অফিসে যাও‌।

আমি: ওকে।

👉আমি অফিসে চলে আসি । পরের সপ্তাহ আমরা গ্রামের বাড়ি আসি । সেখানে এক সপ্তাহ থাকি। নিলা মা বাবার পায়ে ধরে মাফ চায়। নিলা কে ক্ষমা করে দেয়। সপ্তাহে একটা পরিক্ষা তাই ভার্সিটি পরিক্ষা দিয়ে শেষ করলাম। আরো ভালো কোম্পানিতে চাকরির আবেদন করলাম। কিন্তু তানিয়ার রিকোয়েস্টে সেই অফিসে থেকে গেলাম কিন্তু আমার প্রমোশন হয়। আশা যাওয়ার জন্য নিলা নিলার বাবার কাছ থেকে একটা গাড়ি নেয় আমার জন্য।
দেড় বছর পর আমাদের একটা মেয়ে হয়। দেখতে নিলার মতো হয়েছে। আসলে “ভালোবাসা চেয়ে পাওয়া যায় না ভালোবাসা দিতে হয় । ভালোবাসা দিলেয় তুমিও ভালোবাসা পাবে”

#End🥰

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here