#সভ্যতার_সভ্য
#অষ্টমাংশ [ ১৮+ কন্টেন্ট এলার্ট ]
#NishchupSpriha
==============
আমরা দু’জনে বাইকে করেই বাসার উদ্দেশ্যে বের হলাম। আমাদের একটা কাজিনের বাইক নিয়ে ফাইয়াজ ভাইয়া আর রুশাপুও আমাদের সঙ্গে এসেছে।
বাসায় আসতে আসতে রাত এগারোটা পার হয়ে গেল। ছোটমা গাড়ি পাঠাতে চেয়েছিল কিন্তু সভ্য না করে দিয়েছে।
ও ছোটমাকে বলেছে, ‘অনলি থার্টি ফাইভ কিলোমিটার যেতে গাড়ি পাঠানোর কি আছে, মামণি? আমরা যদি আস্তে ধীরে যাই তবুও সর্বোচ্চ থার্টি মিনিটস লাগবে।’
তার প্রতিউত্তরে ছোটমা বলেছে, ‘আস্তে চালাবি.. খবরদার ঘোড়ার মত রেসে যাবি না। আমার মেয়ের যেন কিছু না হয়।’
এই কথা শুনে সভ্য আহত..! ইশ্! বেচারা! নিজের মা হয়ে তার চিন্তা না করে অন্যের মেয়ের চিন্তা করছে! আহত হওয়ারই কথা।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে যে ঘুমোবো সেটারও উপায় নেই। এত করে বলার পরও মাম্মাম আর ছোটমা আমাদের চারজনকে না খেয়ে ঘুমোতে দিবে না মানে দিবেই না।
বারবার করে আমরা বললাম, ‘আমরা খেয়ে এসেছি।’
কিন্তু তাদের কথা হচ্ছে, ‘বাহিরে কি না কি খেয়েছিস, তার ঠিক আছে নাকি? কতটুকু খেয়েছিস কে জানে? রাতে খিদে পাবে।’
কে শুনে কার কথা! তারা তাদের ইচ্ছা মতো চলবে।
আজকে যে আমার কি অবস্থা সেটা শুধু আমি জানি। মনে হচ্ছে আমার উপর দিয়ে টর্নেডো বয়ে গেছে। লং জার্নি তাও আবার বাইকে তারপর রিসোর্টে সবার সাথে আড্ডা আর সব শেষে সভ্যর প্রপোজ যার ধাক্কা আমি এখন অবধি কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তখন কান্না করার কারণে মাথাটা কেমন ভারি হয়ে আছে, চোখ জ্বালা করছে। রাজ্যের ঘুম এসে আমার চোখে ভর করেছে। শরীর একদম ছেড়ে দিয়েছে, শুতে পারলে খুব ভালো হত।
আর সভ্য? ওর অবস্থা আরো বেশি খারাপ! বেচারা কতটা পথ বাইক চালিয়েছে। তখন দেখলাম হাতের তালু কেমন টকটকে লাল হয়ে আছে। নিশ্চয়ই হাত খুব ব্যথা করছে! ছেলেটা তবুও কেমন হেসে হেসে সবার সাথে কথা বলছে!
ভাইয়া-আপুর অবস্থাও প্রায় একই। সকালে সিলেট থেকে ফ্লাইটে এসেছে দু’জনেই। তারপর থেকে রিসোর্টেই ছিল সবার সাথে। রেস্ট নেয়ার সুযোগ একদমই পায়নি। সবাই কালই রিসোর্টে এসেছে, শুধু আমি-সভ্য আর ভাইয়া-আপু আজ এসেছি।
অবশেষে আমাদের খেতেই হলো। মাম্মাম আর ছোটমা নিজে খাবার নিয়ে এলো আমাদের জন্য। এত কষ্ট করে দোতলায় আমাদের জন্য খাবার বয়ে এনেছে তাই আমরা আর না করলাম না। তবে নিজেদের হাতেও খেলাম না।
ছোটমা আমাকে আর রুশাপুকে খাইয়ে দিলো আর মাম্মাম সভ্য আর ফাইয়াজ ভাইয়াকে খাইয়ে দিলো।
খাওয়ার সময় রুশাপু ছোটমাকে জড়িয়ে ধরে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো। আমরা সবাই জানি রুশাপু কেনো এভাবে কাঁদছে। মাম্মাম আর ছোটমা দুজনে মিলে আপুর গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
আর ফাইয়াজ ভাইয়া? ভাইয়া মাথা নিচু করে বসে ছিল, হয়তো নিজের অশ্রু কাউকে দেখাতে চায়নি। কিন্তু শেষ রক্ষে হয়নি, ভাইয়ারও গাল বেয়ে টপটপ করে অশ্রু ঝড়েছে…
কেনো এত কষ্ট মানুষের?
ফাইয়াজ ভাইয়া আর রুশাপুকে আদর, স্নেহ, ভালোবাসা, মমতা দেওয়ার মতো আপনজন এই পৃথিবীতে কেউ নেই।
ফাইয়াজ ভাইয়া পাঁচ বছর বয়সেই একটা রোড এক্সিডেন্টে বাবা মা দু’জনকেই হারিয়েছে, তারপর থেকেই ভাইয়া তার মামার বাসায় থাকে।আর রুশাপু? রুশাপুর বয়স যখন আট বছর তখন আপুর মা ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে আর আপুর বাবা! উনি বেঁচে থাকার পরও রুশাপু এতিম। এমন বাবা থাকার থেকে না থাকাই জীবনের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।
এজন্য মাম্মাম আর ছোটমা, ফাইয়াজ ভাইয়া আর রুশাপু এলে যতটুকু পারে আদর, স্নেহ, মমতা, ভালোবাসা দেয়ার চেষ্টা করে।
এদের দুজনের কথা চিন্তা করলেই আমার আত্না কেঁপে উঠে! ভাইয়া আর আপুর তুলনায় আমি আর সভ্য লক্ষ কোটিগুণ ভালো আছি। আমরা দুজন ডাবল বাবা মায়ের আদর, স্নেহ, ভালোবাসা পাচ্ছি। কিন্তু আপু-ভাইয়া?
সর্বশক্তিমান কেন বাবা-মাকে আমাদের থেকে কেড়ে নেয়? বিশেষ করে মা..! নিজের পায়ে না দাঁড়ানো অবধি কারো বাবা-মাকে আর কেড়ে নিয়ো না গড!
ফাইয়াজ ভাইয়া আর রুশাপু জীবনে অনেক কষ্ট করেছে! হয়তো এই কষ্টই তাদের দুজনকে একে অপরের এতটা কাছে নিয়ে এসেছে।
===============
সকালে ঘুম থেকে জাগতে আমার দেরি হয়ে গেলো। আর জেগেই আমি হতভম্ব! একি! আমি একদম নড়চড় করতে পারছি না! নড়চড় করতে না পারার রহস্য কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্ধার করলাম, যখন নিজেকে সভ্যর বাহুডোরে আবিষ্কার করলাম।
সভ্যকে দেখেই আমি থ! গড! আমি আর সভ্য? হাউ ইজ দিস পসিবল? কেউ দেখলে কি হবে..!
আমার স্পষ্ট মনে আছে কাল রাতে আমি আর রুশাপু একসাথে ঘুমিয়েছি। সভ্য আর ফাইয়াজ ভাইয়া সভ্যর রুমে ঘুমিয়েছে।
কিন্তু এখন? রুশাপুর বদলে সভ্য কিভাবে এলো?
রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে ছোটমা আর মাম্মাম আমার আর রুশাপুর মাথায় বুলিয়ে দিয়েছিল। কখন ঘুমিয়েছি জানি না। আর এখন দেখছি সভ্য আমার সাথে! কিভাবে সম্ভব..!
আমি সভ্যকে ডাকা শুরু করলাম, কিন্তু ওর কোন হেলদোল নেই। ও নিশ্চিন্তে গভীর ঘুমে ডুবে আছে। আমি এবার ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ধীরে ধীরে আবার ডাকলাম।
এবার ও ঘুমস্বরে অস্পষ্টভাবে জবাব দিলো,
— ‘হুঁ… বলো, সুইটহার্ট… আ’ম লিসেনিং।’
আমি ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতেই বললাম,
— ‘তুমি এখানে কি করছো?’
সভ্য চোখ বন্ধ রেখে ঘুমস্বরে আগের তুলনায় স্পষ্টভাবে বললো,
— ‘দেখতেই তো পাচ্ছো যে ঘুমোচ্ছি।’
— ‘সেটাই তো.. কিন্তু আমার রুমে কেনো?’
— ‘তাহলে কোথায় থাকবো?’
— ‘অবশ্যই তোমার রুমে। এখানে কেনো?’
— ‘রুপি আছে ভাইয়ার সঙ্গে। আমি কি এখন কাবাবে হাড্ডি হবো?’
সভ্য রুশাপুকে শর্ট ফর্মে রুপি বলে।
ওর কথা শুনে আমি চমকে উঠে বললাম,
— ‘মা..নে! কি বলছো? আপু ভাইয়ার সাথে কেন?’
ও চোখ বন্ধ রেখেই বললো,
— ‘সবাই কি তোমার মতো বয়ফ্রেন্ডকে কষ্ট দেয়? কাল ওদের দুজনের দুজনকে প্রয়োজন ছিল।’
— ‘ওউফ! যাস্ট শাট আপ, সভ্য। আ’ম সিরিয়াস… রুশাপু ভাইয়ার সাথে থাকলে বাসার কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলে কি হবে?’
— ‘কাম’ন সুইটহার্ট… দ্যা দ্যোড় ইজ লকড… ডোন্ট ওয়্যারি সুইটহার্ট… কিছুই হবে না।’
— ‘ওহ্! আচ্ছা দেখি সরো… আমি এখন উঠবো।’
— ‘নো ওয়ে.. আমার ঘুম এখনো শেষ হয়নি।’
— ‘তোহ্! আমি কি করবো? তোমার ঘুম হয়নি তুমি ঘুমোও।’
— ‘তুমিও এখন আমার সঙ্গে ঘুমোবে।’
— ‘কখনোই না। দেখি সরো…’
সভ্য বাচ্চাদের মতো জেদি গলায় বললো,
— ‘না মানে না।’
এবার আমার বিরক্ত লাগলো। বিরক্ত হয়ে বললাম,
— ‘সভ্য! বাচ্চাদের মতো জেদ কোরো না তো। ঘড়িতে তাকিয়ে দ্যাখো কয়টা বাজে। অনেক দেরি হয়ে গেছে।’
ও চোখ বন্ধ রেখেই বললো,
— ‘টাইম প্লিজ!’
— ‘সাড়ে দশটা পার হয়েছে, এখন দশটা সাঁইত্রিশ।’
আমার বলতে দেরি কিন্তু সভ্যর উঠতে দেরি হয়নি।
ও উঠেই ব্যস্তভাবে বললো,
— ‘ওহ্ শিট! আ’ম লেট! দশটা পঞ্চান্নতে আমার ম্যাচ আছে। তুমি আমাকে আগে ডেকে দাওনি কেনো?’
আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম,
— ‘মানে? আমি জানি নাকি? তুমি তো বলোনি আমাকে…’
সভ্য আর কিছু না বলে বারান্দা দিয়ে দৌড়ে ওর রুমে চলে গেলো। আর আমি আহাম্মক হয়ে বিছানায় বসে ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছি। কি পাগল একটা ছেলে!
রুশাপু রুমে এসে বললো,
— ‘কিরে ঘুম কেমন হল?’
আমি মাথা নেড়ে বুঝালাম ঠিকঠাক।
আপু আবার বললো,
— ‘তোদের আরো আগেই ডেকে দিতাম, কিন্তু দুজনেই এত সুন্দরভাবে ঘুমোচ্ছিলি যে ডাকতেই মন চাইলো না।’
এরপর আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আমি আর রুশাপু মিলে ব্রেকফাস্ট করলাম। সভ্যর সাথে ফাইয়াজ ভাইয়াও বাহিরে গেছে। তাই সারাদিন আমি আর রুশাপু, মাম্মাম আর ছোটমার বিভিন্ন রান্না টেস্ট করে, গল্প করে, হাসি-ঠাট্টায় দিন কাটালাম।
সারাদিন বাহিরে থেকে সভ্য আর ফাইয়াজ ভাইয়া বাসায় এলো চারটার পরে। দুজনের অবস্থাই দেখার মত। দুজনের শার্ট-প্যান্ট ধুলোতে ভর্তি আর মুখের অবস্থা নাই বা বলি! দুজনের ফর্সা মুখ লাল টকটকে হয়ে আছে, মনে হচ্ছে টোকা দিলেই রক্ত বের হয়ে যাবে। ওদের এই অবস্থা দেখে ছোটমা পারলে সভ্যকে কেটে টুকরা টুকরা করে।
সারাদিন দুজনে ক্রিকেট খেলেছে। মানুষ ড্রাগ অ্যাডিক্টেড থাকে আর আমার সভ্য ক্রিকেট অ্যাডিক্টেড।
ছোটমার গালি খেয়ে ওরা দু’জনেই ফ্রেশ হয়ে খেয়েদেয়ে ঘুম!
আমি আর রুশাপু বিকেলে বের হলাম ঘুরাঘুরির জন্য। ওরা দুজন ক্লান্ত হয়ে ঘুমোচ্ছিলো, তাই আমরা আর ওদের বিরক্ত করিনি। এজন্য আমি আর আপু শুধু বের হয়েছি।
আজ নাইটেই ভাইয়া আর আপু চলে যাবে। ভাইয়ার কি যেন জরুরি কাজ আছে। কথা দিলো পরে আবার আসবে।
ভাইয়া আপুকে বাসে তুলে দেয়ার জন্য আমি আর সভ্য সাথে গেলাম।
রুশাপুর জন্য অনেক খারাপ লাগছে। আপু যাওয়ার সময় মাম্মাম আর ছোটমাকে জরিয়ে অনেক কান্না করেছে।
রাতে ডিনার শেষে সবাই যে যার যার রুমে। তারপরই আমার আর সভ্যর গল্প শুরু। বারান্দার মেঝেতে যে বিছানা পাতানো আছে আমি আর সভ্য সেখানে বসেই গল্প করছিলাম। আমাদের কথা বলার নির্দিষ্ট কোন বিষয়বস্তু নেই। আমরা নিজেদের নিয়ে কথা বলতে গেলে, সেটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেয়ে থামে।
যখন আমরা ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলছি, তখন কথার মাঝেই সভ্য হঠাৎ বলে উঠলো,
— ‘আই ওয়ান্ট সামথিং.. ‘
আমি বললাম,
— ‘কি চাও?’
— ‘আই ওয়ান্ট টু কিস ইউ।’
সভ্যর কথা শুনে আমি হতভম্ব হয়ে বললাম,
— ‘হোয়াট?’
— ‘আই ওয়ান্না কিস ইউ রাইট নাউ।’
— ‘মানে? কি আবোলতাবোল বকছো? তুমি ঠিক আছো তো, সভ্য?’
সভ্য আর কিছু না বলে আচমকা আমার ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াল।
ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব! কি হলো এটা?
কিছু বোঝার আগেই সবকিছু এত দ্রুত হলো যে আমি কিছুই বলতে পারলাম না। আহাম্মকের মতো সভ্যর মুখের দিকে তাকালাম! এত দিন সভ্য শুধু মুখে বলেছে, রাগ দেখিয়েছে কিন্তু কখনো আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এমন কাজ করেনি। কিন্তু আজ…!
আমি হতভম্ব গলায় বললাম,
— ‘এটা কি ছিল?’
অসভ্যটা হেসে বললো,
— ‘চুমু।’
সভ্য শব্দহীনভাবে হেসে যাচ্ছে। আর আমি হতভম্ব হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি! কি হলো এটা?
হঠাৎ করেই সভ্য আমার একদম কাছে চলে এলো। ওকে নিজের এতটা কাছে দেখে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার জোগাড়! আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে হয়তো আমি অক্সিজেনের অভাবে মারা যাব।
আকস্মিক ও আমার কোমড়ে দুহাত রেখে টেনে ওর নিজের কোলে বসালো। তারপর ওর একহাত দিয়ে আমার চুল গুলো আমার কানের পিছনে গুজে দিলো।
ওর এহেন আচরণে আমি স্তব্ধ হয়ে, বড় বড় চোখে ওর দিকে তাকালাম। কিছু বলার জন্য মুখ খুললাম… কিন্তু হায়!! কোন আওয়াজ বের হলো না। কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে ওর হাতটা আমার ঘাড়ের কাছে নিয়ে চুলের মধ্যে গুঁজে দিল।
আমি যে ওকে ধমক দিবো, রাগ হবো বা ওর থেকে সরে যাবো অথবা ওকে নিজের থেকে সরিয়ে দিবো, এত সব কিছুর কিছুই করতে পারলাম না। এসব কিছু করার সেই শক্তিটাই পেলাম না। পুরো শরীর কেমন অসাড় হয়ে আসছে।
বহু কষ্টে ফ্যাসফ্যাসে গলায় কোন রকমে বললাম,
— ‘কি করছিস সভ্য? ছাড় আমাকে। কেউ দেখে ফেললে সর্বনাশ হয়ে যাবে..!’
ও নিচুস্বরে বললো,
— ‘উঁহু! কেউ দেখবে না! আশেপাশে কেনো বহুদূরেও কেউ নেই দেখার মতো।’
এরপর আমি কিছু বলার আগেই ঝট করে আমার মুখটা ওর কাছে নিয়ে যেয়ে অধরবন্দি করে ফেললো।
আমি কিছু বুঝে ওঠার আগে সব কিছু এত দ্রুত হলো যে আমি বাঁধা দেয়ার সুযোগই পেলাম না। বিস্ময় কাটিয়ে উঠতেই সভ্যকে সরানোর জন্য আমি ওর দুই কাঁধে দুই হাত দিয়ে ধাক্কা দিলাম। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে, সভ্য নিবিড়ভাবে চুমু খাচ্ছে। সভ্য আমার নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে সব সুধা শুষে নিতে লাগলো।
সভ্যর প্রতিটা নিঃশ্বাসে আমি শিউরে উঠলাম। আমার বুকের ভেতরে কেমন কেঁপে কেঁপে উঠছিল। কেমন একটা সুখ সুখ অনুভূতি হচ্ছে, আবেশে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। এতক্ষণ যে হাত দিয়ে ওকে সরানোর জন্য ধাক্কা দিচ্ছিলাম, সেই হাত দিয়েই ওর গলা জড়িয়ে ধরলাম।
আমিও এবার ওর আহ্বানে সাড়া দিতে লাগলাম। মনে হচ্ছে আমি প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াচ্ছি! এত ভালো এর আগে কখনো লেগেছে কি না আমি মনে করতে পারছি না। কিছুক্ষণ পর যখন সভ্য সরে যেতে চাইলো আমিই নির্লজ্জ, বেহায়ার মতো ওকে ছাড়লাম না।
কতক্ষণ এভাবে চুমু খেয়েছি জানি না, আমার দম প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। আমি নিজে থেকেই ঠোঁট সরিয়ে ফেললাম। আমি ঠোঁট সরাতেই সভ্য তা নেয়ার জন্য পাগল প্রায়!
সভ্যর এই অবস্থা দেখে আমি ফিসফিসিয়ে বললাম,
— ‘দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মরে যাবো আমি।’
আমার কথা শুনে সভ্যও আমাকে ছেড়ে দিলো। হাত দিয়ে ঠোঁট মুছে লম্বা করে শ্বাস নিলো। আমি লজ্জায় সভ্যর দিকে তাকাতেই পারছি না। আমার সারা শরীর কাঁপছে!
অসভ্যটা হাসতে হাসতে নিচু স্বরে বললো,
— ‘জআয়ায়ায়া—-ন!!’
কি অসভ্য ছেলে! এখন আবার আমাকে টিজ করছে ফাজিলটা! অসভ্যটার সাথে যে রাগ হবো সেটাও পারছি না। লজ্জায় তাকাতেই পারছি না ওর দিকে।
সভ্য ভারীকন্ঠে নিচুস্বরে বললো,
— ‘লুক অ্যাট মি, সুইটহার্ট!’
আমি ওর দিকে তাকালাম না, নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।
ও আবার বললো,
— ‘সুইটহার্ট! আই নো তোমার ভালো লেগেছে। প্লিইইজ এভাবে লজ্জা পেয়ো না! তাহলে এর থেকেও অনেক বেশি কিছু হয়ে যাবে!’
সভ্যর কথা শুনে আমি ফিসফিসিয়ে বললাম,
— ‘চুপ কর অসভ্য! লজ্জায় আমি মরে যাবো!’
আমার কথা শুনে সভ্য কিছু না বলে নিঃশব্দে হাসলো শুধু।
কিছুক্ষণ পর আবার ওর একটা হাত ও আমার পিঠে রাখলো আর অপর হাত দিয়ে আমার কোমর জড়িয়ে ধরলো। আমি বুঝতে পারলাম এরপর কি হবে, কিন্তু বাঁধা দিলাম না। কারণ ভালো লাগায় আমার মন এলোমেলো হয়ে আছে।
সভ্য আবার আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো। কিন্তু এবারের চুমুগুলো আগের মতো সফট্ না। কেমন হিংস্র! ও এবার কামড়ও দিচ্ছিলো। আমি ওকে সরিয়ে দেয়ার জন্য ধাক্কানো শুরু করলাম। আমার মনে হচ্ছিলো আমার ঠোঁট গুলো ছিঁড়ে ফেলবে অসভ্যটা। কিন্তু হায়! ওকে নিজের থেকে এক ইঞ্চিও সরাতে পারলাম না।
কিছুক্ষণ পর সভ্য একটু শান্ত হতেই আমি কোন রকমে ঠোঁট আলগা করে ফেললাম। ঠোঁট সরাতেই সভ্য তা নেয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠলো। আমি সাথে সাথে মুখ ঘুড়িয়ে ফেললাম।
আমাকে এমন করতে দেখে সভ্য মরিয়া হয়ে প্রশ্ন করলো,
— ‘কি হলো, জান? এনিথিং রং?’
আমি নিচু স্বরে জবাব দিলাম,
— ‘লাগছে সভ্য! তুমি আমার ঠোঁট কামড়ে শেষ করে দিচ্ছো।’
আমার কথা শুনে ও ব্যস্ত হয়ে বললো,
— ‘আ’ম স্যরি জান! আর এমন হবে না!’
এরপর আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে আবার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবালো।
এবার সভ্য ধীরে ধীরে গভীরভাবে চুমু খাচ্ছিলো। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তা কামড়ে রূপান্তর হলো। এবার আর আমি সভ্যকে নিজের থেকে সরানোর চেষ্টা করলাম না। বরং দুইহাতে ওর চুল আঁকড়ে ধরলাম।
মনে হচ্ছে মরে যাই! এতটা ভালোলাগা কি কোন কিছুতে থাকতে পারে!
===============
বর্তমানে আমি সিংহের সাথে তার খাঁচায় বন্দি হয়ে আছি। না মানে তার খাঁচা না, খাঁচাটা আমার। আর সিংহটা হচ্ছে আমার ওয়ান এন্ড অনলি বয়ফ্রেন্ড দ্যি গ্রেট অসভ্য ‘‘সভ্য’’ । আজ আমার কপালে যে শনি আছে সেটা ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। সভ্য চোখ মুখ শক্ত করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
সেদিনের পর আজ নয়দিন আমি সভ্যর সামনে যাইনি। ইভেন নো ফোন কল, নো কন্টাক্ট… নাথিং। আমার ভীষণ লজ্জা লাগছিলো। আর মোস্ট ইম্পরট্যান্ট থিংগ যেটা সেটা হল আমার ঠোঁট! সেদিন রাতে আমার ঠোঁটের ব্যান্ড বেজে গেছে! এই ঠোঁট নিয়ে আমি সবার সামনে কিভাবে যাবো সেই চিন্তায় আমার প্রেশার লো হয়ে যাচ্ছিলো।
মাম্মাম আর ছোটমার থেকে কিছুই লুকানো যায় না। ওরা দেখলে কি ভাববে? তখন আমার অতীতের একটা স্বভাব কাজে লাগালাম। আগে আমি প্রায়ই বাহিরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সব কিছু রুমেই করতাম। রুমের বাহিরে বের হতাম না। মাম্মাম বা ছোটমা অথবা ছুফি আন্টি আমার রুমেই খাবার দিয়ে যেত। এটা আমার একটা অভ্যাস যা বাসার সবার জানা। তাই এটা নিয়ে কেউ তেমন কিছু বলতো না। এই অভ্যাসের কারণে সবার সামনে যাওয়া থেকে বেঁচে গেলাম। মাম্মাম বা ছোটমা খাবার নিয়ে এলে তাদের সাথে তেমন কথা বলতাম না। ফোন নিয়ে অথবা বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে থাকতাম।
কিন্তু সভ্য? ওর থেকে রেহাই পাচ্ছিলাম না। দিনের বেলা ও বাহিরে থাকলেও, রাতে সবাই ঘুমোনোর পর আমার দরজায় নক করতো। ওর সামনে যেতে আমার প্রচুর লজ্জা লাগতো। ওর ভয়ে আমি সন্ধ্যার মধ্যে আমার রুমের দরজা, বারান্দার গ্লাস লক করে রাখতাম। তার ঠিক দুই দিন পরেই আমি সভ্যর ভয় থেকে মুক্তি পেলাম।
দুইদিন পর ও ওর ক্যাডেট কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে সাত দিনের জন্য ট্যুরে গেলো।
পাঁচ দিনের মধ্যে আমার ঠোঁট অনেকটা ঠিক হয়ে গেলো। তারপর থেকেই আমি স্বাভাবিকভাবে বাহিরে বের হওয়া শুরু করলাম। যেহেতু সভ্য নেই তাই নিশ্চিন্তে ছিলাম।
এর মধ্যেই আমি একটা ভুল করলাম আর সেটা হল সভ্য যেদিন আসবে সেই ডেট ভুলে যেয়ে।
আজকের দিনটা ভুলে যাওয়া আমার একদম উচিত হয়নি। আজ বিকেলে আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে বেরিয়েছিলাম। সন্ধ্যা সাতটার পর বাসায় এসেছি, এসে ফ্রেশ হয়ে রুমেই ছিলাম। ডিনারে টেবিলে যেয়ে হতভম্ব হয়ে গেলাম! সভ্য বসে আছে ওর চেয়ারে। বাপি আর ছোটবাবার সাথে ওর ট্যুর নিয়ে গল্প করছে। আমি কিছু না বলে চুপচাপ খেতে লাগলাম।
ও সবার আগে খাওয়া শেষ করে উঠে গেলো। আমিও দ্রুত উঠে পড়লাম, আমি ওর মুখোমুখি হতে চাচ্ছিলাম না।
দ্রুত রুমে এসে সবার আগে দরজা লক করে দিলাম। তারপর বারান্দার গ্লাস লক করে পিছনে ঘুরতেই চমকে উঠলাম। সভ্য আমার থেকে কিছুটা দূরে চোখ, মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। আমি যা ভয় পাচ্ছিলাম সেটাই হল। আমার উচিত ছিল ওর আগেই দো’তলায় আসা।
ওকে দেখেই হতভম্ব হয়ে প্রশ্ন করলাম,
— ‘হোয়াট আর ইউ ডুয়িং হিয়ার?’
সভ্য আমার প্রশ্ন শুনে কিছুই বললো না। আমার দিকে এগিয়ে এলো, ওকে এগিয়ে আসতে দেখে আমি পিছিয়ে গেলাম। কিন্তু কপাল খারাপ থাকলে যা হয়! বারান্দার গ্লাসে আমার পিঠ ঠেকে গেলো।
সভ্য আমার কাছে এসে আমার দু’পাশে গ্লাসের উপর হাত রেখে আমাকে ওর হাতের ফাঁকে বন্দি করে ফেললো।
আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আবার প্রশ্ন করলাম,
— ‘সওওভ্য, কিইইই করছো তুমি?’
আমার প্রশ্ন শুনে ও চিবিয়ে চিবিয়ে জবাব দিলো,
— ‘কেনো তুমি মনে করেছো আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? এই নয় দিন আমাকে কষ্ট দেয়ার ফল হারে হারে টের পাবে তুমি।’
আমি কিছুই বলতে পারলাম না, শুধু শুকনো ঢোক গিললাম।
সভ্য আবার বললো,
— ‘কি হলো? সব হাওয়া বেরিয়ে গেলো? কেনো এমন করো, জান? আমি প্রচুর কষ্ট পেয়েছি।’
ওর কথা শুনে আমি বললাম,
— ‘কষ্ট কেনো পাবে? তুমি তো ট্যুরে ছিলে। ফ্রেন্ডদের সাথে ইঞ্জয় করেছো।’
— ‘আমি মিথ্যে বলছি তাহলে? আমার কষ্ট হয়নি?’
চোখ মুখ শক্ত করে বললো সভ্য।
আমার যে কি হল জানি না, লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে টুপ করে সভ্যর নাকে উপরে চুমু খেয়ে ফেললাম। ওর নাকের উপরটা কেমন লোভনীয় লাগছিল। লাইক অ্যা মিল্ক চকলেট…! মন চাচ্ছিলো কামড়ে খেয়ে ফেলি।
আমার এহেন কর্মে সভ্য রসগোল্লার মতো বড় বড় চোখে আমার দিকে তাকালো। ওকে এভাবে তাকাতে দেখে, ওকে আরেক দফায় অবাক করে দিয়ে ঝট করে ওর ঠোঁটের উপরে চুমু খেলাম।
এবার ওকে দেখে মনে হচ্ছিলো ওর চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসবে। ওর এমন অবস্থা দেখে আমার প্রচুর হাসি পেলো, ফিক করে হেসে ফেললাম। আমাকে হাসতে দেখে কিছুক্ষণ পর সভ্যও হেসে ফেললো।
হাসতে হাসতে বললো,
— ‘ওহ্, গড! সুইটহার্ট.. ইউ আর স্যো ফাস্ট..! কিন্তু কিভাবে?’
আমি কিছু না বলে দুই হাতে সভ্যর গলা জড়িয়ে ধরলাম আর বললাম,
— ‘আ’ম স্যরি সোনা। আ’ম রিয়্যালি স্যরি।’
আমার কথা শুনে সভ্য দুইহাতে আমার কোমর জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নিলো।
নিচুস্বরে বললো,
— ‘ইট’স ওকে, সুইটহার্ট… আই মিসড ইউ… আই মিসড ইউ স্যো মাচ..’ বলেই আমার কপালে চুমু খেলো।
এবার আমি আমার পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে উঁচু হয়ে দাঁড়ালাম।
দুইহাতে ওর মুখ আঁজলা করে ধরে বললাম,
— ‘আই মিসড ইউ টু।’
বলেই ওর দুই চোখের পাতার উপর, নাকের উপর আলতো করে চুমু খেলাম।
ওর দিকে তাকাতেই দেখলাম ও আমাকেই দেখছে। তারপর চট করে ওর ঠোঁটে চুমু খেয়ে সরে যাওয়ার আগেই, ও জোর করে বারান্দার গ্লাসের সাথে চেপে ধরে আরো নিবিড়ভাবে চুমু খেতে লাগলো।
আবেশে আমি চোখ বন্ধ করে, ওর পায়ের উপর পা রেখে দাঁড়িয়ে, দুহাতে শক্ত করে ওর কাঁধ জড়িয়ে ধরলাম। সভ্য সেভাবেই গ্লাস থেকে সরিয়ে বিছানায় এনে বসালো। ঠোঁট ছেড়ে এবার কপালে, গালে, চোখে, গলায় চুমু খাওয়া শুরু করলো।
একসময় আমি আমার টপসের ভিতরে সভ্যর হাত আবিষ্কার করলাম। সাথে সাথেই আমার বোধ শক্তি ফিরে এলো। কি করতে যাচ্ছি আমি? আমাদের দুজনেরই জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধি সব লোপ পেয়েছে।
কি করছি আমরা এসব! এটা ভুল! চমর ভুল.. যা নিয়ে এক সময় আমাদের দুজনকেই পস্তাতে হবে। বিপদসীমা অতিক্রমের আগেই আমি সভ্যকে থামিয়ে দিলাম।
ওকে থামিয়ে দিতেই ও মরিয়া হয়ে বললো,
— ‘হোয়াট হ্যাপেন্ড?’
আমি ফিসফিসিয়ে বললাম,
— ‘উই শুড স্টপ হিয়ার…’
আমার কথা শুনে সভ্য অস্থির হয়ে বললো,
— ‘হোয়াই? হোয়াট’স দ্যা ম্যাটার?’
আমি বললাম,
— ‘কজ উই আর স্টিল আনম্যারিড…’
সভ্য উত্তেজিত হয়ে বললো,
— ‘স্যো হোয়াট?’
ওর কথা শুনে এবার আমি রেগে গেলাম।
রেগে যেয়ে বললাম,
— ‘হোয়াট ডু ইউ মিন বাই ‘‘স্যো হোয়াট?’’? হ্যাভ ইউ গন ম্যাড? তুমি কি তোমার জ্ঞান, বুদ্ধি একদম হারিয়ে ফেলেছো? কি বলছো এসব? বুঝতে পারছো তো? সভ্য ওয়েক আপ… উই আর নট ম্যারিড ইয়েট… স্টিল আনম্যারিড… ভাবতে পারছো আমরা কি করতে যাচ্ছিলাম?’
আমার কথা শুনে সভ্য কিছু না বলে দ্রুত উঠে সরে গেলো, একহাত নিজের কোমরে রেখে অপর হাত দিয়ে নিজের চুল খামচে ধরে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সারা ঘরে কয়েকবার চক্কর কাটলো। আমি ওকেই দেখছি।
কিছুক্ষণ পর আমার কাছে এসে আমার দুই হাত ওর হাতের মাঝে নিয়ে করুণ সুরে বললো,
— ‘স্যরি, সুইটহার্ট.. আ’ম রিয়্যালি স্যরি, জান.. ওহ্! গড! কি করতে যাচ্ছিলাম আমি..! সিলি মি..! আ’ম স্যো স্যরি.. আই ম্যাসড আপ..! আমি ক্ষমা চাইছি.. পারডন মি প্লিজ.. আই রিগ্রেট… আ’ম রিয়্যালি মোস্ট টেরিব্যালি স্যরি… প্লিজ ফরগিভ মি..! বিশ্বাস কর আমি এমনটা করতে চাইনি। কিভাবে যে কি হয়ে গেলো… আমি সব তালগোল পাকিয়ে ফেলেছিলাম। আ’ম এক্সট্রিমলি স্যরি.. ‘
বলেই সভ্য কেঁদে ফেললো।
আমি ওর থেকে হাত ছাড়িয়ে দুই হাতে আঁজলা করে ওর মুখটা ধরে বললাম,
— ‘হুস! সভ্য, প্লিজ স্টপ.. ইট’স ওকে সভ্য.. তেমন কিছুই হয়নি.. এখানে তোমার কোন দোষ নেই… আমার দোষ বেশি… আজ আমার তরফ থেকে এমন হয়েছে। আমার আরো সাবধান থাকা উচিত ছিল। প্লিজ ডোন্ট ক্রাই সোনা.. আ’ম অলসো স্যরি। আমিও সমান অপরাধী.. ইভেন তোমার থেকে অনেক বেশি.. তুমি নিজেকে দোষারোপ করো না প্লিজ..!’ বলেই ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর কপালে আলতো করে চুমু খেলাম।
সভ্য আমার দিকে তাকিয়ে একটু উঁচু হয়ে আমাকে অধরচুম্বন করলো।
তারপর বললো,
— ‘গুড নাইট সুইটহার্ট.. আ’ম স্যরি অ্যাগেইন.. ‘
বলেই আমার কপালে চুমু খেয়ে চলে গেলো।
ওর যাওয়ার পানে আমি তাকিয়ে রইলাম। কি হতে যাচ্ছিলো আজ…!
………………………..
(চলব)