অহংকারি চাচাতো বোন💔,সূচনা পর্ব
শাকিল দিহান😎
❤❤৯ বছর পর বাসায় যাওয়ার জন্য ট্রেনে বসে আছি।মাত্র ১০ বছর বয়সে বাসা থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসি।
সিটে বসে আছি।কিছুক্ষন পর একটা মেয়ে এসে আমার পাশে বসলো।❤❤
“হাই,আমি লিজা”
.
“আমি দিহান”
.
“ও,কোথায় যাচ্ছেন?”
.
“বাসায় যাচ্ছি চট্টগ্রামে,আপনি কই যাচ্ছেন?”
.
“আমিও চট্টগ্রাম,কি করেন পড়ালেখা নাকি চাকরি?”
.
“জেনে কি লাভ?”
.
“পুরো সফর আমার পাশেই বসে যাবেন কথা বলে সময়তো কাটাতে হবে তাই না?তাই আগেই বন্ধু বানিয়ে নিন।”
.
“ও,আমি দিহান,অনার্স ১ম বর্ষে,পড়লেখা ঠিকঠাক মতো হয়নি,আর্মি জয়েন করাই,তুমি কীসে?”
.
“আমিও অনার্স ১ম বর্ষ,আর্মিতে কখন জয়েন করলে?”
.
“এসএসসি পাশ করার পর আর্মিতে জয়েন করি,বর্তমানে মেজর পদে আছি,সিক্রেট আর্মি অফিসার,তুমি চাকরি কর নাকি?”
.
“না,চাকরি করি না,আমার বাবাও আর্মিতে কর্নেল,হোসাইন মাহমুদ চেন আমার বাবাকে?”
.
“ও তুমি কর্নেল স্যারের মেয়ে!তোমার বাবার মুখে আমার নাম শুনোনি কখনো?”
.
“বাবাতো শাকিল নামের কোনো মেজরের কথা বলতো”
.
“আরে আমিই মেজর শাকিল দিহান,আর্মি মেজর,হোসাইন মাহমুদ স্যারের আন্ডারে কাজ করি”
.
“ওয়াও,এখন তোমার পুরো বিষয়ে বলো,আমার শুনতে ইচ্ছে করছে,তোমার লাইফে নাকি অনেক রহস্য রয়েছে?”
.
“আসলে আজ ৯ বছর পর বাসায় যাচ্ছি তাই খুবই এক্সাইটেড”
.
“এত বছর পর কেন?তোমারতো ছুটির কোন আবেদনই করতে হয়না,ওয়েল ট্রেইন মেলেটারি পারসন,তোমার ছুটিতো সবসময় থাকে,তবুও এত দিন পর বাসায় যাচ্ছো?”
.
“আসলে ১০ বছর বয়সে ঢাকাই চলে আসি,দাদার ভয়ে।দাদা অনেক রাগী।আমার একটা চাচাতো বোন আছে যাকে আমি অনেক ভালোবাসি।ওর নাম তানু।একদিন ফাইজলামি করে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিই,অনেক পানি খেয়ে ফেলেছিল সেদিন,চাচা-চাচি অনেক বকেছিল,আমি মনে করছি দাদা হয়তো পিটা দিতে পারে তাই পালিয়ে চলে এসেছি ঢাকায়”
❤
আমার কথা শুনে লিজা হাঁসতে…হাঁসতে শেষ।
“কি হলো এখানে হাঁসার কি আছে?”
.
“শুধু মাত্র মারের ভয়ে বাসা থেকে পালিয়ে ছিলে বাসা থেকে,১ দিন নয় ২ দিন নয় ৯ বছর নিজের পরিবার ছেড়ে ছিলে শুধু মাত্র মারের ভয়ে,এটা হাসার কথা না?আহারে বেচারা মারকে এত ভয় পাই কেও তা জানা ছিলোনা”
.
“পরিবার বলতে আপন কেউ নাই”
.
“বুঝলাম না”
.
“আমি ছোট থাকতেই গাড়ী এক্সিডেন্ট করে বাবা মা মারা যায়,আমি ঢাকায় কেমন করে আসি আমি নিজেও জানিনা,ঢাকায় একজন ভাই পেয়েছি নয়তো কতদিন আগেই মারা যেতাম কে জানে?তারপর যখন কিছু বুঝতে শিখি তখন বাড়ী যেতে চাইলাম।পরে আবার ভাবি আমাকে ছাড়া ওরা সুখে আছে,শুধু শুধু ওদের সুখের ঘরে পানি ডালবো কেন?তাই যাওয়া হয়নি।কয়েকদিন আগে একটা সিক্রেট মিশেনের জন্য চট্টগ্রাম যায়,তখন পোষ্টার দেখি,ওরা আমাকে এখনো খুজছে,কতটা ভালোবাসে আমায়,তাই কাউকে না জানিয়ে চলে যাচ্ছি সারপ্রাইজ দিব বলে।”
.
“ও সরি হাসার জন্য”
.
“বন্ধুত্বের মধ্যে নো সরি নো থ্যাংস,ওকে?”
.
“ওকে,বাট পোষ্টার যদি অনেক আগের হয়?ওরা যদি তোমাকে ভুলে যায়?”
.
“কোনোদিনও না,কেউ ভুলবে না”
.
“এরা কিন্তু তোমার বাবা-মা না,যে সারাজীবন মনে রাখবে ও খুজবে তোমায়”
.
“হয়তো ভুলে যেতে পারে,তবে দাদাভাইয়ের মনে থাকবে,যতই রাগী হোক না কেন ওনার সবচেয়ে প্রিয় ছিলাম আমি”
.
“ভালো,আচ্ছা সামনের স্টেশনে আমি নেমে যাবো”
.
“ও আচ্ছা তুমি চট্টগ্রাম কেন আসলে?”
.
“নানুরবাড়ী ঘুরতে আসলাম,আচ্ছা আসি,দেখা হবে পরে,বাই”
.
“ওকে বাই”
.
❤লিজা স্টেশনে নেমে গেলো।সামনের স্টেশনে আমি নেমে গেলাম।
.
বাসার সামনে এসে কলিং বেল বাজালাম।অনেক সুন্দর একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিলো,আমি হা করে চেয়ে রইলাম তার দিকে।
ভেতর থেকে কে যেন বলে উঠল~”কে এসেছে মামনি?”
.
“না বাবা,কোনো ফকির হবে মনে হয়”
.
“আমি একটু বাড়ীর মালিকের সাথে কথা বলতে পারি?”
.
“কেন?”
.
“একটু..প্রয়োজন আছে।
.
“বাড়ীর মালিক আমি বল কি বলবি?”(মেয়েটা)
.
আমরা কথা বলতে বলতে একজন মধ্যবয়সি লোক সেখানে আসলো।
“বলো বাবা আমিই বাড়ীর মালিক”
.
“জ্বী,আমিকি একটু ভেতরে আসতে পারি?”
.
“হুম আসো”
.
ভেতরে গেলাম।মেয়েটা সেখান থেকে সরে গেল।
.
“হুম,এবার বলো”-(লোকটা)
.
“আপনি কি আবির রহমান?”
.
“হুম,কেন?”
.
“চাচা আমি দিহান”
.
“দিহান!দিহানতো বাসা থেকে পালিয়েছে ১১ বছর আগে,এখন বেঁচে আছে কিনা আল্লাহই জানে,তুমি কেমন করে দিহান হবে,দিহানতো আরো ফর্সা ছিল দেখতে”
.
“কে দিহান!কোথায় ও?”~(কোথা থেকে একটা মহিলা এসে,আমার চাচিই হবে)
.
“আস্সালামুআলাইকুম চাচি,আমি দিহান”~(আমি)
.
“আচ্ছা তুমি যদি দিহান হও একটা প্রমান দিতে হবে,এমন একটা কথা বলো যেটা তুমি ছোটবেলায় আমাকে করতে দেখেছো”
.
“ওকে,সবার সামনে বলবো?”
.
“হুম বলো”
.
“আমি আর তানু একসাথে তোমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে বিড়ি খেতে দেখি,চাচিকে বলে দেই বলে তুমি আমাদের অনেক চকলেট কিনে দিয়েছিলে মনে আছে?”~(চাচির কারনে চাচা সিগারেট খেতে পারে না)
.
“হ্যা হ্যা তুমিই আমার ভাতিজা,আমার একমাত্র ভাতিজা”
.
“বাবা তোর জন্য আমরা অনেক দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে আছি,তুই আমাদের ছেড়ে কেন চলে গেছিলি?”~(চাচি)
.
“সরি চাচি,দাদা তানু কই?”
.
এটা বলার পর যে মেয়েটা দরজা খুলছিল সে সেখান থেকে চলে গেলো।চাচি ইশারা করে দেখিয়ে দিল এটাই তানু।
.
“মনে হয় তোর উপর রাগ করে আছে,রাগ ভাঙাস, আগে তোর দাদার কাছে চল,তোর জন্য প্রায় পাগল হয়ে আছে”~(চাচি)
.
দাদাভাইয়ের কাছে আসলাম,দাদা আমার দিকে তাকায়ও না।
.
“বাবা দিহান”~(চাচি)
.
“দাদা কোনো কথা বলছেনা”
.
“বাবা আপনার দিহান এসেছে,আপনি দিহানের দিকে তাকান,এত বছর পর আসলো,কথা বলবেন না?”
.
“আমি ওকে ৯ বছর পর্যন্ত খুজে চলছি।ওর একটা বারও কি আমার কথা মনে পড়লো না!”~(দাদা)
.
“দাদা”~(আমি)
.
.”দেখে মনে হচ্ছে অনেক জার্নি করে এসেছে,প্রথমে ওকে কিছু খেতে দাও,বিকালে কথা বলবো”
.
তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষন রেস্ট করলাম।
কিছুক্ষন পর কর্নেল স্যারের ফোন আসলো,
.
“হ্যালো স্যার আস্সালামুআলাইকুম”
.
“ওয়ালাইকুমআস্সালাম,দিহান চট্টগ্রামে ঠিকঠাক মতো পৌচেছোতো?”
.
“জ্বী,স্যার লিজার সাথে দেখা হয়েছিল,ও নাকি চট্টগ্রামে আসছে”
.
“ও হ্যা তোমাকে বলতেই ভুলে গেছিলাম,যাক দেখা হয়ে ভালোই হলো,আচ্ছা যেটা বলার জন্য ফোন দিলাম”
.
“বলেন”
.
“চট্টগ্রামে যখন আছো,সেখানে দুই একটা মিশন কম্পিলিট করতে হবে পারবেতো”
.
“জ্বী স্যার বলেন কোথায়?”
.
“আচ্ছা সময় মতো বলবো,এখন তোমার পরিবারকে মানাও”
.
“ওকে স্যার”
চলবে