গল্পের নামঃ- আমি_শুধুই_তোমার❤️,পর্বঃ০২,০৩
লেখিকাঃ- আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০২
খাবার টেবিল বসে পরলাম আরেক জালায়, সবার সাথে একসাথে বসে খেলেও বার বার পায়ে বারি খাচ্ছে কিছু একটা, আর আমার হুতুম পেঁচা একমনে খেয়ে চলছে, আর ভাই সরি আরে আমার পাতী হাঁস ইয়ে মানে হাসবেন্ড একটু নিজের বউয়ের দিকেও তাকা দেখ খাচ্ছে কিনা ঠিক মতো? তা না সে আনমনেই খেয়ে চলছে। তখনই আমার শাশুড়ী মা এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলে
—-কিরে মা তুই তো মুখে কিছুই তুলেছিস না, খাবার ভালো হয়নি নাকি? আমি মাথাটা নিচু করে বললাম
—-না মা,খাবার অনেক ভালো হয়েছে। শাশুড়ী মা বলে
—-তাহলে খেয়েনে জলদি, একটু পর পার্লার থেকে লোক আসবে তোকে সাজানোর জন্য। আমিও খেতে লাগলাম হুট করে আবার পায়ে এসে কিছু একটা বারি লাগে আমি চমকে যাই ফলে আমার হাতে থাকা চামচ টা নিচে পরে যায়। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছি,আমি
—-সরি, বলে নিচে থেকে চামচটা উঠাতে যাই তখনই দেখি আমার হুতুম পেঁচা নিজের পা আমার পায়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে আসছে। হটাৎই সেটা সে পাশকাটিয়ে নিয়ে যায় এর মানে উনিনা তাহলে কে করছে এমনটা? তখনই আমার ননদ ইরিন বলে
—-কি গো ভাবি কি হয়েছে? আমি উঠে বসলাম আর বললাম
—কিছু না। ইরিন বলে
—-চামচটা তো নোংরা হয়েগেছে,এক কাজ করি আমি সার্ভেন্টকে বলি। তখনই আমি বলি
—এই না থাক, আমার খাওয়া হয়েগেছে, আর খাবো না। তখনই আমার হুতুম পেঁচা আমার দিকে তাকিয়ে আবার নিজের খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। কি খারাপ বাছাধন আজকেই তো তুমি আমাদের বাড়িতে যাবে তখন দেখাবো মজা, যাই হোক তার কিছু সময় পরই আমি আমাদের রুমে চলে আসলাম। সাথে আমার ননদ ননদীরাও আসলো, ইরিন বাদে সব গুলোই বেশি বুঝে অসম্ভব পাকনা এক-একটা। তখনই রুমে প্রবেশ করে ইভান, ইভানকে দেখে ওরা সবাই চলে যায়। সেও নিজের রুমের দরজা লাগিয়ে আমার দিকে এগুতে থাকে, আল্লাহ আমার হার্ট বেচারা তো মনে মনে লন্গি ডান্স করছে, মানে লাফাতে লাফাতে বেরিয়ে আসার অপক্রম, আর আমার জানি কি হলো আমি হুট করে দাঁড়িয়ে যাই, সে আমার কাছে আসতে আসতে একবারে কাছেই চলে আসে, আর আমি তখনই বলি
—-প্লিজ, আমাকে আরেকটু টাইম দেন, আমি এখন এইসবের জন্য প্রস্তুত না। সে আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার পাশে থাকা ড্রয়োর থেকে টিভির রিমোট টা নিয়ে টিভি ওন করে, ধূর ধূর আমি কি সব ভাবছিলাম এই হুতুম পেঁচা দ্বারা কিচ্ছু সম্ভব না কিচ্ছু না, হুতুম পেঁচাটা আমার দিকে তাকিয়ে বলে
—-ফরিদা আপনি কিসের কথা বলছেন?কিসের জন্য প্রস্তুত না। তার মুখে আবার ফরিদা শুনে বলি
—-চোখে সরিষা ফুল দেখছিতো তাই, যত্তসব হুতুম পেঁচার মতো কথা বার্তা। এই বলে ব্যস্ত হয়ে পরলাম নিজের ফোন নিয়ে। ওপর দিকে ইভানের ভয়ংকর হাসি পাচ্ছে, সে আর না পেরে রুমের বাইরে চলে এসে হুহু করে হেসেদিলো, মেয়েটার বাচ্চামোর মতো কথা গুলো বেশ ভালোলাগে তার আর তাছাড়া রেগে যখন চোখগুলো ছোট করে ফেলে তখন তাকে অনেক কিউট লাগে তার কাছে। আর এখন ইভান যা করল যেনে শুনেই করেছে। ২ টার দিকে ফারিদা কে সাজাতে আসলো, আজকে ফারিদাকে পরানো হয়েছে, হুয়াট কালারের মধ্যে গোল্ডেন ইস্টন বাসানো শাড়ি, কিন্তু ইস্টনের কারণে শাড়িটা প্রচুর ভারি,কেরি করতে সমস্যা হচ্ছে ফারিদার, ঠোঁটে ডার্ক কালারের লিপস্টিক মুখে ভাড়ি মেকাপ, সম্পূর্ন ডানা কাটা পরি মতো লাগছে।
ইভানও কম না সাদা কালের পাঞ্জাবি গলার দিকে হুয়াইট + গোল্ডেনের ইস্টন দিয়ে কারুকাজ করা।চুলগুলো স্পাইক করা, হাতে ব্রেন্ডের ওয়াচ। সেই লাগছে ইভানকে ফারিদা তো শুধু ইভানকে দেখে চলেছে। ইভান কথা বলছে অনেকের সাথে হাগ করছে আর মাঝে মাঝে আর চোখে তাকিয়ে দেখছে ফারিদাকে। আর ফারিদা চরম বিরক্ত হচ্ছে কারণ সবাই তার সাথে ছবি তুলতে ব্যস্ত কখনো বলছে এইদিকে তাকাও কখনো ঐদিকে ফারিদাকে নিজেকে এখন বিশ্বের ৮ম আশ্চর্যতম বস্তু মনে হচ্ছে। একটু পর ইভান এসে বসলো তার পাশে, এখন আর তার কোনো প্রকার খারাপ লাগছেনা। ক্যামারা মেন এসে তাদের পিক তুলতে লাগলো এক এক ইস্টাইলে, তারপর তারা অনুষ্ঠান শেষে ফারিদা আর ইভান সবাইকে বিদায় দিয়ে চলে আসে, অংশ ও সাথে আসতে চেয়েছিলো কিন্তু কোনো এক কারণে তা হয়ে উঠেনি ।
ফারিদা আজকে খুব খুশি কারণ নিজের বরের সাথে সে আজ অনেক পিক তুলেছে। ফারিদা মুচকি হাসতে হাসতে ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছিলো, আর ইভান ফারিদাকে মুচকি হাসতে দেখে সে ঠিকই বুঝতে পারলো এই হাসির কারণে সে নিজে, কিন্তু ইভান তো ইভানই৷, সে লাফ দিয়ে খাটের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়তে লাগে
—-লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ, আমি তো আজকের কথাগুলো ভেবে ব্লাসিং করছিলাম, ঠিক তখনই আমার হুতুম পেঁচা বিছানার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়তে লাগে লা হাউলা, কি হলো আবার উনার, আমি বললাম
—-কি হয়েছে এমন করছেন কেনো? নিচে নামেন। সে এমন একটা কথা বলে যা শুনে আমি অবাক না হয়ে পারলাম না সে বলে
—–এই দুষ্ট পত্নী দূরে হয়ে যা,আর আমার ফরিদাকে রেখে যা। কি সব বলছে? আমি বললাম
—-কি বলছেন আপনি? আজব!!!ভূত পেত্নী কি বলছেন। উনি একটু চুপ করে থেকে বললো
—-ওও এর মানে ফরিদা আপনাকে পেত্নী তে ধরেনি?তাহলে ওয়াশরুম থেকে আসার সময় হাসছিলেন কেনো? এবার আমি বুঝতে পারলাম সে কেনো এমন রিয়াক্ট করছে। আমি আস্তে করে সফায় গিয় বসে বলি
—-আপনাকে ডক্টর কে বানিয়েছে? আমাকে একটু বলবেন? সে একটু ভাব নিয়ে বললো
—–ডক্টর হতে গেলে অনেক পড়তে হয় বুঝছেন। আমি বললাম
—পড়তে পড়তেন আপনার ব্রেনের ৪২০ নম্বর তাড়টা ছিড়ে গেছে, আপনাকে ডক্টর দেখানো উচিত,কালই আপনাকে নিয়ে পাবনা মেন্টাল হসপিটালে যাবো। ইভান বুঝতে পারেনি ফারিদা এমন কিছু বলবে। ইভান কিছু বলতে যাবে তখনই ফারিদার ছোট বোন ওদের রুমে নক করে নিচে খেতে যেতে বলে। খাওয়ার মাঝখানে ইভান ফরিদাকে বলে (মানে ফারিদা না, কাজের মেয়ে)
—-ফরিদা তোমার হাতের রান্নাটা খুব ভালো। ফারিদা বলে
—-আমি কখন রান্না করলাম। ফারিদার ছোট বোন ফারিন পানি খাচ্ছিল ফারিদার কথা শুনে সব পানি মুখ থেকে ছিটে গিয়ে পরলো ফারিদার মুখে আর জামায়। কারণ সে বসেছিলা ফারিদার বরাবর। আর খাবার গুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম। আর সবাই আমার মুখের দিকে একবার আর একবার তাকাচ্ছে ফারিনের দিকে। ফারিন আমাকে বলে
—-সরি,ফরিদা। আর সবাই একসাথে জোরে হেসে দেয় আমার এতটাই খারাপ লাগেছে খাবার ছেড়ে চলে
এলাম, আর এভাবেও আসতে হতো আমার জামা কাপড় চেন্জ করতে হবে। তাই সেটা পাল্টে নিলাম দেখি ইভান বিছানায় শুয়ে আছে আর গেমস খেলছে আমি তার দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে এলাম বেলকনিতে, যদিও গাড়ির আওয়াজে ভরপুর তাও ভালোই লাগছে পরিবেশটা, যাই হোক আমি আর তাকে জালাবো না। রুমে গিয়ে আলমারি থেকে আরেকটা ব্লাইনকেট আর একটা বালিশ নিয়ে সোফায় গিয়ে শুয়ে পরলাম, সে কিছু বলতে যাবে তখনই আমি রুমের লাইট ওফ করে দেই। কথাই বলবো না তোর সাথে হুতুম পেঁচা। ইভান বুঝতে পারলো বেশি বেশি হয়েগেছে বউ তার রাগ করছে। সকালে যখন আমার গুম ভাঙে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করলাম। কিন্তু আমারতো মনে আছে আমি সোফায় শুয়ে ছিলাম। এখানে কিভাবে এলাম আর এটা আমি কি জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি চোখ খুলে দেখি আমি আমার পাতি হাঁস মানে আমার হুতুম পেঁচাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি। আমার মতে এই নিরামিষ নামক প্রানী তো ইহোজন্দীগিতে আমাকে এখানে আনবে না তাহলে কি আমি একাই চলে আসছি রাতে…. যাই হোক এখন আমাকে উঠতে হবে এই হুতুম পেঁচা উঠার আগে….আমি ওঠতে যাবো তখনই…
চলবে
❤️❤️ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে❤️❤️
গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার 🍂❤️
লেখিকাঃ-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ-০৩
চোখ খুলে দেখি আমি আমার পাতি হাঁস মানে আমার হুতুম পেঁচাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি। আমার মতে এই নিরামিষ নামক প্রানী তো ইহোজন্দীগিতে আমাকে এখানে আনবে না তাহলে কি আমি একাই চলে আসছি রাতে…. যাই হোক এখন আমাকে উঠতে হবে এই হুতুম পেঁচা উঠার আগে….আমি ওঠতে যাবো তখনই…আমার পাতী হাঁস মানে আমার হাসবেন্ড ফাজিল হতুম পেঁচা টা আমাকে জড়িয়ে ধরে, ঘুমের ঘোরে তাই এমন করছে নয়তো এই নিরামিষ আমাকে জড়িয়ে ধরবে, জীবনেও না। যাই হোক এখন আমাকে উঠতে হবে, তাকে হালকা ধাক্কা দেয়াতেই সে জেগে যায় এইরে, এখন আমার কি হবে? আমাকে তো জ্বালিয়ে মারবে। সে দেখে আমি তার দিকে ঝুকে আছি। হুতুম পেঁচা টা সেটা দেখে ধরপরিয়ে ওঠে বসে, আর আমার দিকে তাকিয়ে বলে
—–আমার মতো নীরহ অবলা একটা ছেলেকে পেয়ে আপনি এর সুযোগ নিবেন ভাবিনি আমি, কি করে পারলেন এমনটা করতে, আমি এখন সমাজে মুখ দেখাবো কি করে? ইভানের কথা শুনে আমি আমার মধ্যে নেই এইটা কি আদেও পুরুষ নাকি? আমি উনাকে থামিয়ে বলি
—–wait wait বাজে বোকা বন্ধ করেন, কিছু করেনি আমি, ওল্টো আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন,তাই আপনাকে সড়াতে গিয়ে এমনটা হয়েছে। ইভান আমার দিকে ছোট ছোট চোখ করে বলে
—–সত্যি তো? আপনি আমার ভার্জিনিটি লুটে নেননি? আমি এবার রেগে গিয়ে পাশে থাকা বালিশটা নিয়ে ইচ্ছে মতো উনাকে মেরে বললাম
—–তোকে আমি মেরেই ফেলবো, হাঁদারাম, হুতুম পেচাঁ তুই জীবনে ভালো হবি না। এক চোট বকে ব্লাইনকেট তার মুখে ছুরে দিয়ে চলেগেলাম ফ্রেশ হতে। আর ঐদিকে ইভান কিছু সময় চুপ করে থেকে হেসে দিল আর বলতে লাগলো
—-কি পাঁজি, যাই হোক, আমারই তো বউ,কিন্তু আমি ডক্টর না হয়ে এক্টিং করলে বেশি ফেমাস হতাম। বলে আবার শুয়ে পড়লো আর রাতের কথা ভাবতে লাগলো।
রাতে ফারিদার ঘুমানোর পর ইভান গিয়ে ফারিদাকে কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে আসে, সারা রাত একপ্রকার নির্ঘুমে কাটিয়ে দেয়। কারন সে শুধু দেখেছে তার ফারিদাকে। এক পর্যায়ে সেও ঘুমিয়ে পরে। সকালেও ইভান ফারিদার আগেই ওঠে ওকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা ভালোবাসর পরশ একে দেয়। তারপর নিজের হাতের আঙ্গুল দিয়ে ফারিদার গালে আঁকিবুঁকি করতে থাকে, আর তখনই ফারিদা জেগে যায়, আর ইভান ঘুমের ভাঙ করে, ফারিদার সব কথাই সে শুনেছে আর নিজের হাসিটাও অনেক কষ্ট চেপে রেখেছিল সে। কিছু সময়ের মধ্যেই ফারিদা ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসে, পরনে তার লাল টুকটুকে শাড়ি গলায় আর কানে ইভানের দেয়া দুল আর চেন,আর ভেজা চুলে অসম্ভব ভয়ংকার রকম সুন্দর লাগছে ফারিদাকে। ইভান ওয়াশরুমের দরজা খুলার আওয়াজে উঠে বসে আর ফারিদাকে এই রূপে দেখে, মনে মনে বলে
—-রেড রোজ। ইভানকে এমন তাকিয়ে থাকতে দেখে ফারিদা বলে
—-কি হয়েছে? ইভান চোখের ইশারায় না করে, তারপর নিজেকে সামলে ওয়াশরুমে চলে যায়। আর ঐদিকে চলছে ফারিদার মাথায় অন্য চিন্তা। সে নিচে চলে যায় দেখে ফরিদা আর তার মা সব প্রায় করেই ফেলেছে, ফারিদা বলে,
—-মা আজ কফিটা আমি বানাবো। ফারিদা কফি বরাবরই ভালো বানায় টুকটাক রান্নাও পারে। তাই আর তার মা আপত্তি জানালো না। আর ফারিদা বাঁকা হাসি দেয়, খাওয়া শেষ সবাই যে যার মতো, ফারিদার মা গেছে তার বাবাকে ভার্সিটির জন্য তৈরি হতে সাহায্য করতে। আর ফারিন ব্রেকফাস্ট করেই স্কুলের জন্য বেরিয়ে গেছে। আর ফরিদাকে পাঠিয়েছে বাগানে পানি দিতে। আর ফারিদা কিচেনে যায় কফি বনাতে, সে আগেই ফ্রিজ থেকে করল্লা বের করে সেটা ব্লান্ডারে ফিটে নিলো, তার সেটার জুসটাকে অনেক সুন্দর ভাবে মিশিয়ে দিলে ইভানের কফির গ্লাসে। আর তার বাবারটা দিয়ে আসে তাদের রুম।
ফারিদা ইভানের সামনে গিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে কফির মগটা বারিয়ে দেয়৷ ইভানের কেনো যেনো এই হাসিটা ভালো ঠেকছে না। সে সটা নিলেও খেতে চায় না, ফারিদা বলে
—-ভয় লাগছে? তাহলে আমারটা নিন। নিজের কফির মগ এগিয়ে দিয়ে। ইভান কিছু বললো না তার কফির মগটা মুখে দিতেই, ফেলে দিলো ফ্লোরে, আর মগটা রেখে দৌড়ে গেলো ওয়াশরুমে, মুখ সম্পূর্ণ তিতাতে ভরে গেছে, আর ঐদিকে ফারিদা বিজয়ের হাসি দিয়ে মনে সুখে কফি খেতে খেতে নিচে গিয়ে ফরিদাকে বলে রুমটা পরিষ্কার করে দিতে। আর ইভান বেচারার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যাবার উপক্রম, সেও বললো এর
—পরিনাম, তোমাকে ভুগতে হবে। কিছু সময় পর ইভান নিচে নামতে নামতে ফারিদার আম্মু কে দেখে বললো
—-আম্মু আমি বাহিরে যাচ্ছি দুপুরে এসে লান্ঞ্চ করব। আর ফারিদা কোথায়? ফারিদার আম্মু বলে
—–হয়তো ওর বাবার লাইব্রেরিতে, তুমি যাও বাবা আমি বলে দিব। ইভান চলে যায় তার প্লান মোতাবেক ঠিক ঘন্টা ২য়েক পর ফিরে আসে কিন্তু ফারিদা এখনো তার বাবার লাইব্রেরিতেই বই পরছে, অনেক গল্প প্রমিক সে। ইভান এসে রুমে চলে এলো। মূলত সে গিয়েছিল বাজারে ডার্ক ব্লু রং কিনতে,আর জামাই হিসেবে কিছু বাজারও করেছে, আর সেটা তার শাশুড়ী মার হাতে ধরিয়ে দিয়ে এসেছে। এসে সে ফারিদার তাওয়ালেতে রংটা লাগিয়ে দেয় আর তোয়ালেটাও ব্লু কালারের কারো বুঝার সাধ্য নাই, ইভান ঐটাকে অনেক সুন্দর করে নিয়ে রেখে দেয়। আর মনের সুখে চলে যায় গোসল করতে যা আজকে হুটকরেই গরম পরেছে । ফারিদা ২টার দিকে লাইব্রেরি থেকে বেড়িয়ে আসে। আর গরমের কারণে সে আবার হাত মুখ ধূয়ে আসে। আর ইভান বিছানায় শুয়ে শুয়ে ললিপোপ খাচ্ছে আর ফোন টিপছে মাঝে মাঝে ফারিদাকে দেখছে। ফারিদা তো অবাক সকালের জন্য সে সরি বলেনি তাও ইভান কিছু বললোনা আর এতোটা সময় হওয়ার পরও তার খুঁজ নেয়নি,হয়তো রেগে আছে। হয়তো একটু বেশি বেশি করে ফেলেছে, এগুলো ভাবতে ভাবতে সে তোয়ালে দিয়ে নিজের মুখ মুছতে লাগলো, আর ইভানের হাসি চওড়া হতে লাগলো। এক সময় ফারিদা ড্রেসিল টেবিলের সামনে আসে মাঝাঘসি করার জন্য, প্রথমে সে খেয়াল না করলেও একটু পর যখন আয়নায় নিজের মুখের এমন অবস্থা দেখে, সে জোরে চিৎকার দেয়, কিন্তু রুম সাউন্ড প্রুফ হওয়াতে সেটা বাইরে যায়না। আর ঐদিকে ইভানা বিছানয় গড়াগড়ি খাচ্ছে আর বাচ্চা দের মতো হাসছে। ফারিদা বলে
—-এটা আপনার কাজ তাই না? ইভান কোনো মতে বলে
—-ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়, বলেই হসতে লাগলো ফািরদা বলে
—-আপনি একটা অজগন্য। বলেই আবার পা বাড়ালো ওয়াশরুমের দিকে আর ঐদিকে ইভানের হাসি তো থামছে না। কোনো রকম রং গুলো উঠেছে মুখে এখনো নীলচে ভাবটা আছে,যাই হোক এখন আর কিছু বলবো না পরে শোধ তুলবো তোমার থেকে হুতুম পেচাঁ এইটার। আজ বিকেলে আবার আমারা ফিরে যবো। দুপুরের খাওয়া দাওয়া পর একটু ঘুমাই, আম্মু আর ফারিন অনেক জিঙ্গেস করেছিলো মুখ এমন নীল কেন,আমি কথা ঘুরিয়ে ফেলেছি। এবার অবশ্য আমি বিছানায়ই শুই, সেও এসে আমার পাশে শুয়, তাই দেখে আমুি আমার পাশবালিশ টা মাঝখানে রেখে দেই। যাই হোক বিকেলের দিকে নামলো ঝুম বৃষ্টি হয়তো সকালে এর জন্যই এত গরম ছিল। বৃষ্টিকারণে তাই আর আজ আমাদের যাওয়া হলো না। রুমে এসে দেখি ইভানমুখ ভারি করে বসে আছে। আমি তার পাশে গিয়ে বসে বললাম
—-কি হয়েছে? সে আমার দিকে তাকিয়ে বলে
—-ভালো লাগছেনা মাথাটা প্রচুর ধরেছে। আমি বললাম
—কেনো মাত্রই তো ঘুম থেকে উঠলেন। ইভান এখন কিভাবে বলে রাতে তার ঘুম হয়নি আর এখন ফারিদার রুমে পায়চারি করতাতেও তার ঘুম ভেঙে গেছে। ইভান কিছু বলে না ফারিদা বলে
—-আপনি যদি চান আমি আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে পারি। ইভান যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেলো সে ফারিদার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো ফারিদাও খুব যত্নে নিজের হুতুম পেঁচার সেবা করতে লাগলে। প্রায় ঘন্টা খানিক পর। সে জোরে জোরে ইভানের মাথার চুল ধরে টান দিলো ইভান
—-আম্মু বলে ওঠে বসে। ফারিদা ৩২ পাটি দাঁত বের করে বলে,
—-Revange নিলাম। ইভান বলে
—-তারপরেও ধন্যবাদ। তখনই দরজায় নক করে ফারিন ফারিদা গিয়ে দেখে ফারিন এসেছে পিছনে ফরিদা ফরিদার হাতে ট্রে সেখানে বিকেলের নাশতা আর চিপস আর চকলেট, আর ফারিনের হাতে লুডু। ফারিদার আর বুঝতে বাকি রইলো না ফারিন এখন লুডু খেলতে এসেছে। ইভানেরও এখন ভালোলাগছে সেও এড হলো, ইভান অনেকবার ফারিদাকে ছাড় দিয়েছে, আর শেষে ফারিদা জিতে যায়। আর সেই খুশিতে সে ইভানকে জড়িয়ে ধরে কিস করে দেয়। আর ফারিন লজ্জায় দৌড় দিয়ে বাইরে চলে যায়। ফারিদা যখন বুঝতে পারলো এইদিক ঐদিক তাকিয়ে
—-সরি বলে সেও দৌড়। ইভান কিছু সময় চুপ করে থেকে মুচকি হাসি দিল, আর বললো
—-ফারিদার ফার্স্ট কিস ইভানের নামে লেখা হয়ে গেলো।।
চলবে
❤️❤️ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে❤️❤️