পদ্মিনী,পর্বঃ১৭ শেষ
আবির হাসান নিলয়
খালাম্মার বাসার সামনে গাড়ি থামিয়ে দুজন
গাড়ি থেকে নেমে বাসার ভিতরে গেলাম।
আগে থেকে সবাই বসে থাকলেও নিলুকে
দেখছিলাম না।হয়তো আমি আসবো বলে
আগে থেকেই নেই।তবে সেসব ভেবে লাভ
নেই।নিলু আমার উপর খুব বেশি টাইম
রাগ করে থাকবে না সেটা আমি জানি।দুজন
সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই সবাই আমাদের
দিকে অবাক হয়ে দেখতে লাগলো।সব থেকে
বেশি অবাক হয়েছে আম্মু।আম্মুকে আগে
থেকে জান্নাতের ব্যাপারে সব খুঁটিনাটি বলে
রেখেছি।উনাদের কাছে যেতেই আম্মু বলল…
আম্মুঃজান্নাত তুমি এখানে..?
জান্নাতঃআসলে আন্টি….
আম্মুঃতুমি তো আমাদের সবাইকে সারপ্রাইজ
দিয়ে দিলে।আমি বুঝতেও পারিনি নিলয়
আমাদের এতো বড় সারপ্রাইজ দিবে।
চাচ্চুঃতুমি কি সেই জান্নাত?
জান্নাতঃজ্বি আঙ্কেল।
চাচ্চুঃতোমার বাবা আসতে দিলো?
মেরিঃকেনো আসতে দিবে না?তুমি তো সব
জায়গাতে আমাকে যেতে দাও।
চাচ্চুঃহ্যা বাট জান্নাতের বাসা এসব নাকি
পছন্দ করে না।
আমিঃচাচ্চু,ভুলটা ও করেনি।তাই ওকে এসব
না বলাই ভালো হবে।
চাচিঃহ্যা সেটাই,জান্নাত মা আমার সাথে চলো
আমিঃএসব ব্যাপারে সবাইকে না বললে
হ্যাপি হবো(ফিসফিস করে বললাম)
জান্নাত কোনো উত্তর না দিয়ে ছোট মার
সাথে চলে গেলো।
আব্বুঃজান্নাত এখানে কিভাবে?
আমিঃসেসব অনেক কথা আব্বু।
আব্বুঃবল আমাদের
আমিঃপরে আপনাদের বলবো।
আব্বুঃঠিক আছে।
আমিঃনিলু কোথায়?
আম্মুঃওর একটা ফ্রেন্ডের সাথে আছে।
আমিঃআজ আসবে না এখানে?
আম্মুঃআসছিলো,তবে রাতে আর আসবে
না।একদম কাল রাতে পার্টির সময় আসবে।
আমিঃতাহলে আমাকে এতো জোর কেনো
করছিলে খালাম্মা?
খালাম্মাঃকারণ দায়িত্বটা তোকে দেবো।
আমিঃআমি মোটেও কাজের না।
খালুজানঃতবুও তোকেই করতে হবে।
আমিঃসে যায় হোক,রুহি কোথায়?
খালাম্মাঃনিজের রুমে।
আমিঃওহ
মেরিঃভাইয়া চল রুমে যায়।
আমিঃউল্টাপাল্টা কথা বলবি না তাহলে
মেরিঃআরে না,চল।
আমিঃজান্নাত আমার কথা জিজ্ঞাস করলে
রুম দেখিয়ে দিও।
—ঠিক আছে।
নিচে না থেকে দুজন একটা রুমে আসলাম।
হয়তো মেরি এই রুমেই থাকবে।
মেরিঃভাইয়া একটা রিকুয়েস্ট করি
আমিঃবল
মেরিঃআমাদের সাথে চলো
আমিঃকি করবো ওখানে গিয়ে?
মেরিঃথাকবে আমাদের ওখানে,জান্নাত
আপুকেও নিয়ে চলো।
আমিঃও যাবে না
মেরিঃতাহলে তুই নিজেই চল।
আমিঃযাবো সময় হলে।
মেরিঃএখন গেলে কি?
আমিঃতোর আসল মতলব কি সেটা বল
মেরিঃকিছুই না,তুই ওখানে থাকলে দুজন
অনেক চিল করতাম।
আমিঃতোর ফ্রেন্ডস তো আছেই।
মেরিঃবাট সব কয়েজটা ভিতুর ডিম।কিছু
করতে গেলেও করে না।
আমিঃআচ্ছা যাবো সময় করে।
মেরিঃএবারই চ….জান্নাত আপু আসো।
জান্নাতঃহুম
মেরিঃবসো এখানে।
জান্নাতঃকি বলছিলে দুজন?
মেরিঃভাইয়াকে ইস্তানবুল যেতে বলছি
জান্নাতঃকেনো?
মেরিঃকারণ ওখানে আমরা থাকি
জান্নাতঃওহ,তুমিও চলো।ওখানে অনেক
মজা করবে।তোমার ফ্যামিলি বুঝতেও
পারবে না।
মেরির কথা শুনে জান্নাত কিছুটা স্তম্ভিত
হয়ে গেলো।হয়তো আন্দাজ করছিলো,ওর
ফ্যামিলির জন্য সে নিজে থেকে কিছু করতে
চাইলেও করতে পারছে না।জান্নাতকে এমন
দেখে তখন বললাম….
আমিঃএসব বাদ দে
মেরিঃঠিক আছে।
জান্নাত যদিও আমার সাথে কথা বলছিলো
না।তবে মেরির সাথে খুব ভালো করেই কথা
বলছিলো।হয়তো সবার কাছে আমাকে
খারাপ দেখাতে চায় না।ওদের সাথে আমি
নিজেও টুকটাক কথা বলতে লাগলাম।
পরেরদিন……..
ঘুম থেকে উঠে সবাই মিলে সকালের নাস্তা
করে নিলাম।জান্নাত এখনো কাউকে কিছুই
বলেনি।আর জান্নাত এসব বলবে না সেটা
আমার বিশ্বাস ছিলো।তাই ওকে একা রেখে
পার্টির সব কাজ করছিলাম।সব কিছু
ঠিকঠাক করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে
গেছে।খালাম্মা এসে বলল….
খালাম্মাঃতুই এখনো রেডি হোস নাই?
আমিঃহ্যা হবো এখন
খালাম্মাঃযা রেডি হো
আমিঃহুম
সেখানে না থেকে রেডি হওয়ার জন্য রুমে
যাবো তখন মেরির রুমে গেলাম।কারণ
গতকাল কথা বলার মাঝে জান্নাত আর
মেরির মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক তৈরি
হয়েছে।রুমে গিয়ে দেখলাম দুজন বসে
আড্ডা দিচ্ছে।
আমিঃরেডি হওয়া শেষ?
মেরিঃকার?
আমিঃতোদের দুজনেরই
মেরিঃআমার শেষ, বাট জান্নাত আপু নাকি
রেডি হবে না।
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃকোনো ড্রেস আনিনি।
আমিঃমেরির ড্রেস নাও
জান্নাতঃআমার ফিট হবে না।
আমিঃমেরি এক কাপ কফি আনবি?
মেরিঃঠিক আছে আনছি।
মেরি উঠে চলে যেতেই জান্নাতের গলা ধরে
কাছে এনে বললাম….
আমিঃযেটা করতে বলছি সেটা কর।মেরির
ড্রেস ফিট হতে হবে কেন?সবাইকে নিজের
শরীর দেখাবি,যে ফিট হতে হবে?
জান্নাতঃআমি এ ধরনের ড্রেস পড়ি না।
আমিঃসেটা সোজাভাবে বলতে কি হয়?
জান্নাতঃছাড় আমাকে,আর আমি কে এই
বাসার?যার জন্য সবার সাথে আমাকেও
তাদের মতো সাজতে হবে?
আমিঃতুই এই বাসার না,তবে আমাদের
বাসার হবু বউ।
জান্নাতঃতোর মতো মিথ্যাবাদীকে বিয়ে
করার থেকে মরে যাওয়া শতগুনে ভালো।
আমিঃতো মরে যা,আটকিয়ে রাখছে কে??
জান্নাতঃযেতে দে আমাকে এখান থেকে।
আমিঃবেধে রেখেছি?সারাদিন তুই একাই
ছিলি চাইলে পালিয়ে গেলেই পারতি।
জান্নাতঃহ্যা পারতাম,তবে তো….
আমিঃতবে কি বল?
জান্নাতঃকিছু না।
আমিঃআমি খালাম্মাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি,
উনার থেকে একটা শাড়ি নিয়ে সেটা পড়বি।
যদি আমার কথা না শুনিস তাহলে আমার
থেকে খারাপ আর কেউ হবে না।
জান্নাতঃযে ভালোবাসার মানুষকে কিডন্যাপ
করে মানসিক টর্চার করে সে আর যাই হোক
কোনো ভালো মানুষ না।
আমিঃধন্যবাদ প্রশংসা করার জন্য।
জান্নাতঃশুয়োর।
আমিঃযেটা মন চায় সেটাই বলিস।
জান্নাত কিছু বুঝে উঠার আগেই গাল ধরে
কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে
রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।নিচে এসে
খালাম্মাকে উপরে পাঠিয়ে দিয়ে মেরির
থেকে কফি নিয়ে রুমে গেলাম।।
রুমে কিছু সময় ভাবার পর ফ্রেস হয়ে
একটা পাঞ্জাবি পড়ে বাইরে আসলাম।
মেহমান এখনো তেমন আসা শুরু করেনি।
তবে যারা আসছে তাদের সবার সাথে
টুকটাক কথা বলে ম্যানেজ করার চেষ্টা
করছিলাম।হঠাৎ চাচ্চু আর আব্বু কিছু
কাজের জন্য বাইরে গেলো।ওদিকে না
ভেবে সবার সাথে মিশতে লাগলাম।হঠাৎ
লক্ষ্য করলাম নিলু এসেছে,সাথে একটা
ছেলেও আছে বটে।হয়তো বয়ফ্রেন্ড।নিলুর
সাথে চোখাচোখি হতেই মুচকি একটা হাসি
দিলাম।ছেলেটাকে নিলু কিছু একটা বলার
পর দুজন আমার কাছে আসলো।
—হাই
আমিঃহাই
মামুনঃআমি মামুন
আমিঃনিলয়,আপু তোমার ব্যাপারে সব
আমাকে বলেছেন।
মামুনঃতোমার ব্যাপারেও বলেছে,তবে তুমি
নাকি অনেক চঞ্চল।
আমিঃহয়তো,তবে নিজের জীবনে কিছু
উপলব্ধি করতে পেরেছি সেটাই অনেক।
মামুনঃসেটা ঠিক বলছো
আমিঃবসুন এখানে
নিলুঃসমস্যা নেই,আমরা ঠিক আছি।
ওদের সাথে টুকটাক কথা বলছি তখন
খেয়াল করলাম জান্নাত নীল শাড়ি পরে
নিচে আসছে।খুব একটা সাজগোজ করেনি,
আর জান্নাতকে দেখতে হুর বা পরির মতোও
লাগছে না।একটা সাধারণ মেয়েকে যেমন
লাগে ঠিক তেমন।তবে ওর মাঝে অনেক
মায়া লুকিয়ে আছে।যে কাউকে হয়তো
নিজের মায়াতে বস করিয়ে নিতে পারবে।
হঠাৎ খেয়াল করলাম মামুন জান্নাতকে
দেখে এগিয়ে যাচ্ছে।তখনি মামুনের হাত
ধরে জিজ্ঞাস করলাম…
আমিঃকি হলো?
মামুনঃওর সাথে কথা আছে।
আমিঃকেনো?
মামুনঃতোমাকে একটু পরে বলছি।
আমার থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে জান্নাতের
কাছে গিয়ে কোনো কথাবার্তা না বলেই
থাপ্পড় দিলো।মামুনের এমন স্বভাব দেখে
নিলু হতবম্ব হলেও আমার প্রচুর রাগ হচ্ছিলো
এক মুহূর্ত দেরি না করে মামুনের কলার
ধরে আমার দিকে করলাম।
আমিঃতুই ওকে মারার সাহস কোথায় পাস?
মামুনঃনিলয় তুমি আমাদের ফ্যামিলি থেকে
দূরে থাকো।
আমিঃফ্যামিলি মানে?
আব্বুঃতুমি এখানে?
মামুনঃআঙ্কেল আপনারা..!
আমিঃআপনি এই ছেলেকে চেনেন?
আব্বুঃহ্যা,এই তো জান্নাতের কাজিন।নিজের
ফ্যামিলির মানুষদের থেকে একদম ভিন্ন।
সেদিন একমাত্র এই ছেলেটাই আমাদের
সাথে ভালো করে কথা বলছিলো।কিন্তু
তোমার নামটা মনে নেই।
মামুনঃমামুন।
আমিঃকিন্তু তুমি জান্নাতের গায়ে হাত তুললে
কেনো?সেটাও সবার মাঝে।
আব্বুঃতুমি জান্নাত মাকে মেরেছো?
মামুনঃজ্বি
আব্বুঃকেনো?বাসায় বলে আসিনি তাই?
মামুনঃনা
আব্বুঃতাহলে?
যেটার ভয় পাচ্ছিলাম ঠিক সেটাই হয়ে
গেলো।ভেবেছিলাম নিলু কিংবা জান্নাত
নিজেই সবাইকে এসব বলে দিবে।কিন্তু
এখন দেখছি সব কিছু জগাখিচুড়ি হয়ে
গেলো।মামুন জান্নাতের কিডন্যাপের কথা
সব আব্বুকে বলে দিতে লাগলো।আব্বুর
সাথে চাচ্চু,খালুজান থাকলেও আব্বু নিজে
থেকে মামুনের থেকে সব শুনলো।
মামুনঃআমরা সবাই জানি ওর কিডন্যাপ
হয়েছে কিন্তু এখন দেখছি ও নিজ ইচ্ছায়
এখানে আছে।ওর জন্য বড় বাবা ঠিকমতো
খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিছে।
আব্বুঃতুমি জানো ওর কিডন্যাপ কে করেছে?
মামুনঃওকে দেখে মোটেও মনে হচ্ছে না
ওর কিডন্যাপ হয়েছে।
আব্বুঃএই মিথ্যা কাহিনী সাজিয়ে কি লাভ
হয়েছে?সবাই তোমার জন্য কতো চিন্তা
করছে ভেবে দেখেছো?
চাচ্চুঃমানলাম তোমার বাবা,চাচা আমাদের
সাথে সম্পর্ক বানাতে চান না।তবে তুমি
একবার বলতে পাড়তে। কেনো এমন
মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সবাইকে কষ্ট দিলে।
মামুনকেই দেখো,তোমাকে দেখা অবধি
কেমন করছে।
জান্নাত কিছু না বলে মাথা নিচু করে আছে।
চোখ দিয়ে জল অনবরত পড়তেই আছে।
নিলুকে খেয়াল করলাম,ও নিজেও মেয়েটার
দিকে মায়া নিয়ে তাকিয়ে আছে।জান্নাতের
এমন কান্না কোনো ভাবেই সহ্য হচ্ছিলো না।
তাই বাধ্য হয়ে নিজে থেকে সব বলতে
শুরু করে দিলাম।
আমিঃজান্নাতের কিডন্যাপ হয়েছিলো,তবে
সেই কিডন্যাপ আমি নিজে করিয়েছি।
মামুনঃপ্লিজ ওকে বাচানোর জন্য মিথ্যা
বলো না।
আমিঃসত্যি বলছি,জানিনা জান্নাত আমাকে
ভালোবাসে কিনা।তবে ও নিজের চাইতেও
নিজের ফ্যামিলিকে বেশি ভালোবাসে।
জান্নাতের সাথে আমি বেশি কিছু না,শুধু
একটা ছোট পরিবার করার স্বপ্ন দেখছিলাম।
সেটা কি আমার ভুল ছিলো?যখন দাদু
জান্নাতকে আমাকে দেখিয়েছিলো তখন
থেকেই ওর প্রতি আমার ভালোলাগা কাজ
করতে শুরু করে।পরে সেটা ভালোবাসাতে
রুপ নেয়।কিন্তু তোমাদের ফ্যামিলি আমাকে
মানবে না।আর জান্নাত ফ্যামিলির বাইরে
গিয়ে আমার সাথে থাকতে পারবে না।ভাই
জান্নাত তো একটা মানুষ তাই না।কেনো
ওকে ওর ভালোবাসা থেকে দূর করে রাখছো?
মানলাম আমি ওকে কিডন্যাপ করে ভুল
করেছি।কিন্তু কিছু সময় আগেও ওর চোখে
মুখে একটা হাসি ছিলো।যেটা তোমাদের
বাসায় কখনো ছিলো না।জন্মের সময়
ওর মা মারা গেছে সেটার জন্য ও কেনো
দোষী হবে?জীবন মরণের লীলাখেলা
সৃষ্টিকর্তার হাতে।উনাকে গিয়ে জিজ্ঞাস
করো কেনো ওর জন্মের সময় ওর মাকে
মেরে ফেলা হয়েছে?যখন জান্নাত ওখানে
ছিলো তখন কেউ ওকে বুঝতে চাওনি।কিন্তু
এখন যখন দূরে চলে আসছে এখন সবার
ভালোবাসা প্রকাশ পাচ্ছে।কেউ খাওয়া
দাওয়া করছে না ঠিক মতো।
কথাগুলো শেষ করতে না করতেই মামুন
জান্নাতকে বলল….
মামুনঃবাসায় চল
জান্নাত কিছু না বলে ওর কাছে গেলো।
বুঝতে বাকি রইলো না,ও আমাকে ছেরে
চলে যাচ্ছে।এই মুহূর্তটা আমি কখনো
ভুলতে পারবো না।চোখের সামনে নিজের
ভালোবাসা চলে যাচ্ছিলো।জান্নাতের হাত
ধরে বললাম…..
আমিঃপ্লিজ আমাকে ছেড়ে যাস না,তুই
তো জানিস তোকে আমি কতোটা ভালোবাসি
তোর জন্য কতো কি করছি একবারও মনে
পড়ছে না সেসব?
জান্নাত কিছু বলছিলো না।মেয়েটা শুধু
কান্না করেই যাচ্ছিলো।
আমিঃপ্লিজ জান্নাত,ছেড়ে যাস না।
জান্নাতঃভাইয়া চল
মামুনঃআসছি আঙ্কেল
মামুনের সাথে চলে যাবে তখন দৌড়ে গিয়ে
জান্নাতের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম….
আমিঃতোর ফ্যামিলির ভালোবাসা সব,
কিন্তু আমার ভালোবাসা কি?আমার এই
ভালোবাসার কি একটুও মূল্য নেই?
জান্নাতঃভালো থেকো।
আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে চলে যেতে
লাগলো।সামনে গিয়ে বাধা দেবো তার আগেই
নিলু আমাকে ধরে নিলো।জান্নাত চলে গেলো
আমার চোখের সামনে দিয়ে।কিন্তু আমি
ওকে আটকাতে পারলাম না।
আমিঃতুই তো আমার বোন,কিন্তু তুই ওর
থেকে আমাকে কিভাবে আলাদা করলি?
ওকে আমি বড্ড ভালোবাসি রে।তুই যেমন
মামুনকে ভালোবাসিস তার থেকেও অনেক
বেশি আমি জান্নাতকে ভালোবাসি।হ্যা,ওকে
অনেক কষ্ট দিয়েছি,বকা দিয়েছে,মেরেছি
কিন্তু সবটাই আমার কাছে রাখার জন্য।
কখনো ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবতেও পারিনি।
কিন্তু তুই আমার বোন হয়ে আমার থেকে
আমার সুখটাকে কেরে নিলি?
নিলুঃভাই আমি জানতাম না মামুন আর
জান্নাত দুজন কাজিন।জানলে ওকে কখনো
এখানে আনতাম না।
আমিঃবাহ,খুব ভালো।এখন তো তুই হ্যাপী,
জান্নাত আমাকে ছেড়ে দিয়েছে।আব্বু আম্মু
জেনে গেছে জান্নাতকে আমি কিডন্যাপ
করেছিলাম।হ্যা আব্বু আমি জান্নাতকে
কিডন্যাপ করেছিলাম,এখন আপনার শাস্তি
দেয়ার পালা।তবে শাস্তি হিসাবে আপনার
কাছে একটা জিনিস চাই,সেটা হলো আমাকে
বাসা থেকে বের করে দিবেন।কারণ এই
আপুর সাথে আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে
পারবো না।ওকে দেখলেই আমার জান্নাতের
কথা মনে পড়বে।আপনি আমাকে যে শাস্তি
দিবেন আমি সেটাই এখন মাথা পেতে নেবো।
আব্বুর সামনে গিয়ে বসে কথাগুলো বলার
সাথে সাথে নিজের চোখ দিয়ে জল পরছিলো
আব্বু আমাকে দাড় করিয়ে জড়িয়ে ধরে
শান্তনার দেয়ার চেষ্টা করছিলো।কিন্তু তিনি
তো আর বুঝতে পারবে না,আমার মনের
সুখটা একটু আগেই হারিয়ে গেছে।আব্বুকে
আর কিছু না বলে জড়িয়ে ধরে কান্না করে
বলছিলাম…
আমিঃ অনেক ভালোবাসি “পদ্মিনী”কে।
~~~~~~~~~সমাপ্ত~~~~~~~
(সব গল্পের শেষ হ্যাপী হয় না।কিছু মানুষের গল্পগুলো মাঝপথে এসে এমন হারিয়ে যায়।পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।)