পদ্মিনী,পর্বঃ১৪,১৫
আবির হাসান নিলয়
গাড়িতে বসে কম বেশি সবাই মজা
করছিলাম।বাসের শেষের সিটটাতে
আমি আর বন্ধুরা।সবাই গান বলছিলো
তবে তাদের এই গানে নিজেকে খুঁজে
পাচ্ছিলাম না।তাই চুপচাপ বসে আছি।
কিছু সময় পর নিলু ইশারা করে বলল,
নিলুঃকি হয়েছে?
আমিঃকিছু না।
জান্নাত আর নিলু এক সিটে বসছে তাই
হয়তো ভালোই আড্ডা দিচ্ছে দুজন।হঠাৎ
জান্নাত নিজের সিট থেকে উঠে আমাদের
কাছে এসে দাঁড়ালো। দেখেও কিছু বললাম না।
জান্নাতঃতোমরা একটু আমাদের একা
ছেড়ে দিবে?
জয় রাহুল কিছু না বলে উঠে চলে গেলো।
জান্নাত নিজেও কিছু না বলে আমাকে
ঘেসে বসলো।
জান্নাতঃকি হয়েছে?
আমিঃকি হবে?
জান্নাতঃতো এমন মনমরা হয়ে আছো কেন?
আমিঃআমার আব্বু চাচ্চু জীবনে প্রথমবার
অপমানিত হয়েছে সেটাও আমার জন্য।
জান্নাতঃআমি তোমাকে আগেই বলছিলাম
আমার ফ্যামিলি কেমন।
আমিঃতাহলে আমার সাথে কথা বলছো
কেন?তোমার ফ্যামিলির ভালোবাসা ঠিক
আর আমার ভালোবাসার সেটার কি?
জান্নাতঃনিলয় তোমাকে আমি আগেই
বলেছিলাম আমি আমার ফ্যামিলির
কথার বাইরে যেতে পারবো না।
আমিঃতোমার ফ্যামিলি কখনো চাইবে
না আমার সাথে বন্ধুত্ব করার।কিন্তু তুমি
আমার সাথে বন্ধুত্ব করছো কেন?কেনো
এতো মায়া দেখাচ্ছো?
জান্নাতঃজানা নেই আমার এসব প্রশ্নের উত্তর
আমিঃতো চলে যা এখান থেকে।
জান্নাতঃতোকে বিয়ে করলে তুই খুশি?
আমিঃহ্যা আমি খুশি হবো।
জান্নাতঃতাহলে চল,আজ এখনি বিয়ে করবো।
আমার জীবনটাকে বিসর্জন দিয়ে তোকে
যদি হ্যাপি রাখতে পারি তাহলে চল তোকে
বিয়েই করে নেয়।
আমিঃ……..
জান্নাতঃকি হলো চল।
আমিঃচল,তোকে বিয়ে করার জন্য দুবার
ভাবার আমার দরকার নেই।তোকে ভালোবাসি
আর সারাজীবন ভালোবাসবো।তোকে ছোঁয়ার
সাধ্য আমার নেই।কিন্তু তুই যদি আমাকে
এমন করে কথা বলিস আমার কিছু করার
নেই।কিন্তু তুই আমাকে যেভাবেই বিয়ে করতে
বলবি আমি তোকে সেভাবেই করবো।
আমার এমন কথা শুনে কিছু না বলে
জানালার দিকে মুখ ফিরিয়ে কান্না
করতে লাগলো।বিরক্তি লাগছিলো
অনেক বেশি বিরক্তি লাগছিলো কিন্তু
তার থেকেও বেশি কষ্ট হচ্ছিলো।জান্নাত
যতোই এমন ব্যবহার করুক কিন্তু ওকে
তো ভালোবাসি।জান্নাতকে কিছু না বলে
অন্যপাশে গিয়ে বসলাম।
দুজনের মধ্যে নিরবতা বিরাজ করছিলো।
এমন করে কতোটা সময় বসে ছিলাম
খেয়াল নেই।হঠাৎ জান্নাত এসে কাদে
মাথা রেখে বলল,,,,
জান্নাতঃসরি
আমিঃ….
জান্নাতঃআমি জানিনা তোমার জন্য
আমার ভিতরে কি কাজ করে।তবে
ছেড়ে যাওয়ার কথা উঠলেই ভয় লাগে।
আমিঃএমন ভয় করলে অনেক আগেই
দুজন পালিয়ে যেতাম।
জান্নাতঃপালানোর কথা কেনো উঠছে?
যদি উনাদের রাজি করাতে পারি তাহলে
পালিয়ে গিয়ে কি হবে?
আমিঃতুই রাজি করবি তোর ফ্যামিলিকে?
আর শোন আমার ফ্যামিলি থেকে আর
কেউ তোর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে
যাবে না।
জান্নাতঃআমি নিজেই বলবো।
আমি;তোর সাহস আছে?
জান্নাতঃসহসটাকে সঞ্চায় করবো।
আমিঃভালো
জান্নাতঃতোকেও আমি ভালোবাসি,তোকে
ছাড়া আমি যেমন কিছুই না। তেমনি
আমি আমার ফ্যামিলি ছাড়া আমি
নিজেও একটা পথিকমাত্র।
আমিঃসেই পথিককে যদি একটা সন্নেসী
আশ্রয় দেয় তাহলে?
জান্নাতঃপাগল সন্নেসীরা বিয়ে করে না।
আমিঃকে বলছে?
জান্নাতঃআমি জানি।
দুজন কথা বলছিলাম,হয়তো এই কথা
কখনো শেষ হবার না।যদি বাস এমন
করে সারাজীবন চলতো তাহলে অন্তত
জান্নাতকে নিজের কাছে রাখতে পারতাম।
নিলু আমাদের দিকে ফিরে মুচকি হাসি
দিয়ে সামনে ঘুরে সবার সাথে কথা
বলার চেষ্টা করছিলো।
হঠাৎ করে জান্নাত কাদ থেকে মাথা
তুলে স্বাভাবিকভাবে বসলো।খেয়াল
করলাম শুভা আসছে।জান্নাতের কাছে
বসে কিছু একটা বলছিলো।।কথা বলার
মাঝে একটু অন্যপাশে গিয়ে বসে দুজন
কথা বলতে লাগলো।হাসাহাসি করেই
কথা বলছিলো কিন্তু কেমন জানি
ওদের একাকী কথা শুনে নিজেকে
একা লাগছিলো।এক মুহূর্ত দেরি না
করে নিলুর কাছে গিয়ে বসলাম।
নিলুঃকি হলো ভাই?
আমিঃকি হবে?
নিলুঃচলে আসলি কেন?
আমিঃএমনি,ওরা কথা বলছে তাই
ভাবলাম ওদের একা ছেড়ে দেয়।
নিলুঃওহ,ভাই মেয়েটা তোকে অনেক
ভালোবাসে।হয়তো পরিবারের জন্য
বলতে পারে না।কিন্তু ওর কথা শুনে
আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি
ও তোকে কতোটা ভালোবাসে।
আমিঃযে ভালোবাসার সমাপ্তি বেদনার্ত
সে ভালোবাসা দেখিয়ে কি লাভ?
নিলুঃতুই সব সময় বেশি বুঝোস।
আমিঃকিন্তু বড় তো তুই।
————————————————————–
দীর্ঘ সময় পর বাস গন্তব্য আসতেই
যে যার মতো নামতে শুরু করলো।
সবার সাথে আমিও বাস থেকে নেমে
বাইরে দাঁড়ালাম। বলে রাখা ভালো
মাঝ রাস্তায় আমাদের হালকা খাওয়ার
একটা ব্যবস্থা ছিলো।সে যাই হোক,বাস
থেকে নেমে বাইরে দাঁড়াতেই সবার উদ্দেশ্য
করে প্রিন্সিপাল বললেন….
স্যারঃতোমরা তোমাদের ইচ্ছামতো চলাফেরা
করো সমস্যা নেই।কিন্তু সেটা সন্ধ্যার আগে
সবাইকে জেনো আমি সবাইকে এখানে
পায়।আর তোমাদের কাছে একটাই অনুরোধ
সবার সাথে ভালো ব্যবহার করবে।
সবাই স্যারের সাথে এক মত হয়ে হ্যা বলল।
স্যারের কথা শেষ হতেই একাকী চলে
আসলাম।।জান্নাত দেখলেই পিছু লাগবে
তাই সবার আড়ালে একাকী চলে আসাই
সব থেকে ভালো।।হেটে অনেকটা ভিতরে
আসার পর বসলাম।এতো মায়া কোনো
মানুষের জন্যই ভালো না।
সারাটা দিন এদিক সেদিক প্রকৃতি দেখে
কাটিয়ে দিয়ে সন্ধ্যার দিকে সবার দিকে
ফিরে যেতে লাগলাম।নিলুকেও বলিনি
আমি কোথায় থাকবো। হয়তো টেনশন
করবে কিন্তু ওকে বললে আমি শিওর
ও জান্নাতকে বলে দিতে একটুও ভাববে না।
সবার মিল হওয়ার জায়গাটাতে গিয়ে
দেখলাম অনেক স্টুডেন্ট আগে থেকে
হাজির আছে আবার কেউ কেউ আমার
মতো এসে হাজির হচ্ছে।
আমাকে দেখে নিলু এসে পাশে দাঁড়ালো।
নিলুঃকই ছিলি?
আমিঃএমনিই দেখছিলাম ওসব।
নিলুঃওহ
আমিঃহুম
নিলুঃজান্নাত খুজলো তোকে
আমিঃতোকে কিছু বলছে?
নিলুঃজিজ্ঞাস করলো কোথায়,কিন্তু
আমি নিজেই জানিনা ওকে কি বলবো।
আমিঃভালো করছিস
নিলুঃওকে একটু সময় দেয়া যায় না?
আমিঃতোর ভাবতে হবে না।
অনেকটা ইগনোর করেই ট্যুর শেষ করলাম।
দুদিনে জান্নাতের সাথে তেমন কথা বলা
হয়নি।আমি ইচ্ছা করেই বলিনি,কারণ অনেক
কিছু সাজানো বাকি আছে।
———————————————————-
ট্যুর থেকে ফিরে এসে ভাইবোন সোজা
বাসায় চলে আসছি।ওখানে থাকলে শিওর
জান্নাত প্যানপ্যান করতো।আর জান্নাতকে
কষ্ট দেয়ার সাধ্য আমার নেই।নিলুর রুমে
শুয়ে আছি তখন ছোট মা আসলো।
চাচিঃতুই এই রুমে যে?
আমিঃতাতে কি?
নিলুঃওকে নিয়ে যাও তো ছোট মা
চাচিঃচুপ,আমি নিলয়কে খুজতেছিলাম।
আমিঃকেনো?
চাচিঃজান্নাতের বাসার ঠিকানা দে।
আমিঃকি করবে তুমি?
চাচিঃওখানে যাবো আমি।
আমিঃসেটার দরকার নেই ছোট মা।
চাচিঃআমি গিয়ে সব ম্যানেজ করবো।
আমিঃছোট মা,উনারা মানুষ হলে তো
তুমি ম্যানেজ করবে।
চাচিঃমজা বাদ দে
আমিঃসত্যি বলছি।
চাচিঃআমি গেলে সত্যি ভালো হবে।
আমিঃযাওয়া লাগবে না কিউটি মা
চাচিঃছবি থাকলে দেখা
নিলুঃআমার কাছে আছে।
চাচিঃতোর কাছে কিভাবে থাকে?
নিলুঃট্যুরে গিয়ে তুলেছিলাম।
চাচিঃকই দেখা তো।
নিলু ওর ল্যাপটপ থেকে অনেকগুলো
ছবির মধ্যে জান্নাতের কিছু ছবি বের
করে দেখালো।ছোট মা ছবিগুলো দেখে
বলল…..
চাচিঃমাশআল্লাহ,ছেলের পছন্দ আছে।
নিলুঃঅনেক সুন্দর করে কথাও বলে।
তুমি ওর সাথে কিছু সময় থাকলেই ওর
মাঝে একটা মায়া খুঁজে পাবে।
আমিঃহো তুই তো মহাজ্ঞানী তুই জানিস।
নিলুঃআমার ভাইয়ের বউ আমি না
জানলে কে জানবে বল….!
আমিঃএখনো কিছুই হয়নি।
নিলুঃখুব তাড়াতাড়ি হয়েও যাবে।
আমিঃছোট মা আমি কাল যাবো।
চাচিঃথাকবি কয়দিন?
আমিঃদুদিন,তবে একটা সমস্যা আছে।
চাচিঃকি সমস্যা?
আমিঃপ্রথমদিন গিয়েই ওকে কিডন্যাপ
করে এই বাসায় পাঠিয়ে দেবো।তোমরা
প্লিজ ঐ একদিন ওকে ম্যানেজ করবে।
আর আমি আসলে তো হয়েও গেলো।
নিলুঃনিলয় প্লিজ এমনটা করিস না।তুই
যেমন ওকে ভালোবাসিস তেমনি জান্নাত
নিজেও তোকে ভালোবাসে।কিন্তু এই
পালানোর বিষয়টা ওর একদম পছন্দ
না।প্লিজ এমন করিস না।
আমিঃপালাচ্ছি কোথায়?
নিলুঃকিন্তু এটা ঠিক হবে না ভাই।ছোট মা
তুমি ওকে কিছু বলছো না কেনো?
চাচিঃনিলু ঠিকই বলছে,এসব কিডন্যাপের
ব্যাপার আমার নিজেরও পছন্দ না।
আমিঃসরি ছোট মা,আমি তোমাদের জিজ্ঞাস
করিনি আমার কি উচিৎ।আমি আমার
মতামত তোমাদের জানিয়ে দিলাম আর
জান্নাতকে তোমরা শুধু কিছু সময়ের জন্য
ম্যানেজ করবে।
নিলুঃকি ম্যানেজ করবো?জান্নাত ছোট
বাচ্চা?যে ওকে যা বলবো তাই শুনবে?
আমিঃবাচ্চা না,তবে ওর সাথে সুন্দর করে
কথা বললে যে কারো কথা শুনবে।
নিলুঃআমি পারবোনা
চাচিঃনিলয়,বাবা এটা সম্ভব না।জোর
করে ভালোবাসা আদায় করা যায়না।
আমিঃতো কি করবো আমি? ওকে ছেরে
দিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবো?
চাচিঃসেটা বলিনি,কিন্তু ওকে মানিয়ে নিয়ে
দুজন বিয়ে করে নে।
আমিঃনিলু তো বলেই দিছে,জান্নাত ঐ
ধরনের মেয়ে না,যে পালিয়ে বিয়ে করবে।
চাচিঃতবুও বোঝাবি।
আমিঃবুঝেছি।
উনাদের সাথে আর কথা না বলে আমি
আমার রুমে চলে আসলাম।বাসা থেকে
এমনটাই আশা করেছিলাম।কারণ উনারা
কখনোই এমন বাজে কাজ করতে দিবে
না।সে যাই হোক আমি তো আর ভালোনা।
পরেরদিন……….
১০টার দিকে ভার্সিটির দিকে যেতে মনে
হলো জান্নাতের আঙ্কেলের কথা।ভার্সিটি
না গিয়ে সোজা পুলিশ স্টেশন চলে আসলাম।
থানায় নিয়ে একটা কনস্টেবলের থেকে
জিজ্ঞাস করে জান্নাতের আঙ্কেলের কাছে
গেলাম।আমাকে দেখে বলল,,,,,,
আঙ্কেলঃকি অবস্থা?কি মনে করে?
আমিঃআসলে স্যার আমি চলে যাচ্ছি।
আঙ্কেলঃকোথায় যাবে?
আমিঃএখান থেকে দূরে।
আঙ্কেলঃআর জান্নাত?
আমিঃসেটাও বাদ
আঙ্কেলঃমজা নিচ্ছো?
আমিঃনা স্যার।জান্নাত কখনো আমার
সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে না।আর
আপনি জানেন ওর ফ্যামিলি আমাকে
কখনো মানবে না।তাই চলে যাচ্ছি।
আমাকে কিছু বলতে যাবে তখন উনার
ফোনে কল আসতে রিসিভ করলো।
আঙ্কেলঃবলো
—………
আঙ্কেলঃকিহ? তুমি কোথায় আছো এখন?
—………..
আঙ্কেলঃগাড়ির নাম্বার বলো
—…………
আঙ্কেলঃশিট,হাবিল গাড়ি বের করো।
আমিঃস্যার কিছু বললেন না?
আঙ্কেলঃবলার মুড নেই
আমিঃমানে?
আঙ্কেলঃজান্নাতকে কিডন্যাপ করেছে।
আমিঃহোয়াট?কে করেছে?
আঙ্কেলঃওর খালাম্মা সাথে ছিলো আমি
তোমার সাথে পরে কথা বলবো।এখন
আমাকে যেতে হবে।
আর একটু দেরি না করে দ্রুত থানা থেকে
বের হয়ে চলে গেলো।আমিও আর বসে না
থেকে রাস্তায় এসে ভার্সিটির দিকে আসতে
লাগলাম।
মাথার মধ্যে কিছু কথা ভাবতে ভাবতে
ভার্সিটি চলে আসলাম।ভার্সিটি আসার
পর বুঝতে পারলাম ক্লাস শুরু হয়ে গেছে।
তাই বাইরে না থেকে সোজা ক্লাসের দিকে
চলে গেলাম।আমাকে দেখে স্যার কিছুটা
অবাক হয়ে দেখার পর ভিতরে আসতে
বলল।তবে আজ ক্লাসের বেঞ্চে বসার জন্য
ভার্সিটি আসিনি।সামনে দাঁড়াতে স্যার
আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন….
স্যারঃসিটে বসবে না?
আমিঃনা স্যার,আজ সবার থেকে বিদায়
নেয়ার জন্য এসেছি।আজকের পর থেকে
আমাকে এই ভার্সিটিতে কেউ পাবেন না।
রাফিঃকেনো?
আমিঃআমি চলে যাচ্ছি
জয়ঃকিন্তু?
আমিঃওটা সম্ভব না,তাই থেকে লাভ নেই।
সবাই ভালো থেকো টেক কেয়ার।স্যার যদি
আপনি একটু বাইরে আসতেম…!
স্যারঃসমস্যা নেই চলো।
আমার সাথে স্যার বাইরে আসার পর উনার
থেকে উনার ফোন নাম্বার নিয়ে বিদায় নিয়ে
বাগানবাড়ির থেকে রওনা দিলাম।সেখানে
নিজেকে হাল্কা করে বাসায় ফিরবো তার
আগে বাসায় ফিরবো না।
চলবে…………
পদ্মিনী
পর্বঃ১৫
#আবির হাসান নিলয়
বাগানবাড়িতে কোনো কাজের লোক রাখা
নেই।যদিও ছিলো কিন্তু গত পরশু কল দিয়ে
সবাইকে অন্য জায়গা পাঠিয়ে দিছি।বাসার
ভিতরে যেতেই দেখলাম জান্নাত মনমরা হয়ে
বসে আছে।নড়াচড়ার আওয়াজ পেয়ে জান্নাত
মাথা উঁচু করে দেখতেই দাঁড়িয়ে গেলো।
জান্নাতঃনিলয় আমাকে এখান থেকে প্লিজ
নিয়ে চলো।উনারা কিসব বলছে আমি উনাদের
কথার কিছুই বুঝতেছি না।
আবরাবঃআমাদের কাজ শেষ,এখন যায়।
জান্নাতঃকাজ শেষ মানে?
আমিঃতোমাকে আমি বলবো।
আবরাবঃখেয়াল রাখিস
আমিঃহুম,সবধানে যাস
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে সবাই চলে গেলো।
সবাইকে যেতে দেখে জান্নাত কেমন একটা সন্দেহর
দৃষ্টিতে দেখলো।
আমিঃফ্রেস হয়ে নাও তোমার সাথে পরে
কথা বলছি।
জান্নাতঃআমি এখানে কেনো?
আমিঃপরে বলছি তুমি ফ্রেস হয়ে নাও।
জান্নাতঃআমাকে এখন বলো নিলয়
আমিঃবলছিনা ফ্রেস হয়ে আসতে,এতো
কথা বলার কি আছে?
জান্নাতঃপ্লিজ একবার বলো তুমি এসব
কিডন্যাপের পেছনে নেই।
আমিঃ………
জান্নাতঃপ্লিজ নিলয় 🙏
জান্নাতকে কোনোক কথা না বলে ইশারা
করে ওর রুম দেখিয়ে আমার একটা রুমে
এসে ফ্রেস হয়ে নিলাম।বাথরুম থেকে
বের হয়ে রুমে আসতেই দেখলাম জান্নাত
আমার রুমে এসে দাড়িয়ে আছে।
আমিঃতুমি এখানে?
জান্নাতঃআমার প্রশ্নের জবাব চাইছি
আমিঃকি জানতে চাও?
জান্নাতঃআমি এখানে কেনো?
আমিঃতোমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে।
জান্নাতঃওরা সবাই কারা ছিলো?
আমিঃআমার বন্ধু আর বড় ভাই।
জান্নাতঃমানে তুমি….
এটুকু বলেই নিজের মুখ চেপে ধরে পিছুপা
হয়ে গিয়ে দেয়ালের সাথে লাগলো।
জান্নাতঃআমার ধারণা তাহলে কি সব মিথ্যা?
আমিঃহ্যা
জান্নাতঃতোমাকে আমি বিশ্বাস করতাম।কিন্তু
সেই বিশ্বাসটাকে তুমি এভাবে ভেঙে দিবে
বুঝতেই পারিনি।
আমিঃএছারা আমার কোনো অপশন ছিলো
না,তাই বাধ্য হয়ে এটাই করতে হয়েছে।
জান্নাতঃঅপশন দুটো ছিলো।
আমিঃআরেকটা কি শুনি?
জান্নাতঃআমার ফ্যামিলিকে মানানো।
আমিঃতোর ফ্যামিলি আমাকে মানতো?
জান্নাতঃআমিও তো তোমাকে আগে মেনে
নেয়নি,তবে এখন কেনো মেনে নিছি?
আমিঃসেটা তুই ভালো জানিস।তবে আমার
কাছে যেটা ভালো মনে হয়েছে আমি সেটাই
করেছি।আর আমি সব ভুলে গেলেও তোর
বাবা চাচাকে কষ্ট দিতে ভুলবো না।
জান্নাতঃঠাসসস,তুই আমার জন্য না বরং
উনাদের কষ্ট দেয়ার জন্য আমাকে কিডন্যাপ
করেছিস?
কিছু না বলে গালে হাত দিয়ে জান্নাতের
চোখের দিকে তাকাতেই দেখলাম চোখ দিয়ে
নোনাজল গড়িয়ে পড়ছে।দাঁড়িয়ে না থেকে
চোখেরজল মুছে দেয়ার জন্য এগুতেই ঝাড়ি
দিয়ে হাত দূরে ঠেলে দিলো।
জান্নাতঃতুই আমাকে স্পর্শ করবি না।তোকে
যতোটা ভালো ভাবতাম তার থেকেও তুই
অনেক বেশি জঘন্য। তোর মতো একটা ছেলে
আমার মনে আছে সেটা ভেবেও লজ্জা লাগছে।
আমিঃএতো চিল্লাচিল্লি করার কি আছে?
জান্নাতঃআমি এখনি চলে যাচ্ছি,আর কখনো
আমার সামনে আসবি না।
আমিঃযেতে পারবে না।
জান্নাতঃআমাকে বাধা দেয়ার তোর সাধ্য নেয়
আমিঃতোমাকে ছোঁয়া অনুমতি দাওনি আর
বাধা দেয়া সেটা তো অনেক দূরে।
জান্নাতঃতুই আসলে বিশ্বাসের জায়গায়……
আর কথা না বলে দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে
চলে যেতে লাগলো।জান্নাতের পিছু পিছু
আমি নিজেও রুমের বাইরে আসলাম। উপর
থেকে দেখছিলাম জান্নাত কি করে।নিচে
এসে টেবিলে থাকা কাচের সেটগুলোকে
ফেলে দিয়ে ভেঙে দিলো।
আমিঃবাসায় কেউ নেই,তাই পরিষ্কার করার
জন্য আমাদেরই কাজ করতে হবে।
আমাকে কোনো উত্তর না দিয়ে রাগ দেখিয়ে
বাইরে যাওয়ার জন্য দরজার কাছে গিয়ে
লক খুলতে চেষ্টা করছিলো।কিন্তু বেচারি
জানেই না বাসার সব দরজাতেই লক দেয়া।
আর বাসার ভিতরে বাইরে যাওয়ার জন্য
ফিনগারপ্রিন্ট করা।যদিও প্রতিটা রুমেই
আগে ফিনগারপ্রিন্ট করা ছিলো কিন্তু ওর
সুবিধার জন্য সব গুলো বাদ দিয়ে মেইনটা
বন্ধ করে দিছি।অনেকটা সময় চেষ্টা করার
পরেও যখন পারলো না তখন রাগি মুড
নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল….
জান্নাতঃকি হচ্ছে এসব?
আমিঃকি হবে?
জান্নাতঃখুলা যাচ্ছে না কেনো?
আমিঃফিনগারপ্রিন্ট দেয়া
জান্নাতঃএই মুহূর্তে নিচে এসে লক খুলে দে।
আমিঃছেরে দেয়ার জন্য তো কিডন্যাপ
করিনি।আর ছেড়ে দেয়ার হলে এসব কিছুই
করতাম না।
জান্নাতঃআমার এসব বিরক্তি লাগছে
আমিঃআমার তো ভালোই লাগছে।
(কথা বলতে বলতে নিচে আসলাম)
জান্নাতঃবাবা ঠিকই করছে,তোর মতো
ছেলের সাথে কোনো বাবাই তার মেয়েকে
বিয়ে দিবে না।
আমিঃহো,তোর বাবা তো তোকে একটা
বিত্তশালী বুইড়া সালার সাথে বিয়ে দিয়ে
তার সম্পত্তি নেয়ার চেষ্টা করছিলো।
জান্নাতঃঠাসস„বাবার নামে একটাও বাজে
কথা বলবি না।
আমিঃকথাই কথাই হাত না তুললে ভাত
হজম হয় না?
জান্নাতঃতুই আমাকে বাইরে যেতে দিবি কিনা
সেটা বল?
আমিঃদেবো না।
জান্নাতঃতুই ভাবতে পারছিস না এসব যদি
আমার খালুজান জানতে পারে তাহলে তোকে
উনি কি করবে উনিই ভালো জানেন।
আমিঃউনি তোকে ভালোবাসে?
জান্নাতঃহ্যা অনেক।
জান্নাতের এমন কথা শুনে না হেসে পারলাম
না।আমাকে হাসতে দেখে ঝাড়ি মেরে বলল…
জান্নাতঃমেজাজ খারাপ করবি না বলে দিলাম
আমিঃআচ্ছা সরি,তবে তুই এটা জেনে নে
তোর খালাম্মা আর খালুজান তোকে না
বরং তোর প্রোপার্টিকে ভালোবাসে।
জান্নাতঃএকদম বাজে কথা বলবি না।
আমিঃবিশ্বাস হয় না?
জান্নাতঃনা,আর তোকে আমি কখনো বিশ্বাস
করবো না জেনে রাখ।
আমিঃতোমার ইচ্ছা থাক আর না থাক
সেটা পরে।তবে তোমার খালাম্মা উনি শুধুমাত্র
তোর প্রোপার্টি ভাগিয়ে নেয়ার জন্য তোর
সাথে আমাকে পালিয়ে যেতে বলছে।
জান্নাতঃএকদম চুপ,তোর মিথ্যা কথায়
আমি জড়াতে চাইনা।
আমিঃএটা মোটেও মিথ্যা না প্রিয়।
জান্নাতঃতুই আমাকে যেতে দিবি কিনা বল?
আমিঃবলছি তো দেবো না।ঐটা তোর রুম
ওখানে গিয়ে বিশ্রাম নে।
জান্নাতঃবা***
রেগে গিয়ে জান্নাতের ব্যাগ দিয়ে আমাকে
ছুরে মেরে একটা রুমে চলে গেলো।দাঁড়িয়ে
না থেকে সোফার উপরে বসে জান্নাতের
ব্যাগের সব কিছু দেখছিলাম।সব দেখে
মনে হলো ভালোই হয়েছে।ফোন হয়তো
আবরাব অনেক আগেই সরিয়ে ফেলেছে।
কিছু সময় বসে থাকার পর কিচেনে গিয়ে
নাস্তা বানাতে শুরু করলাম।খুব বেশি যে
রান্না করা সেটা পারিনা।নিজের খাওয়ার
জন্য করতে পারি বাট অন্যদের জন্য করা
হয়।আজ প্রথম জান্নাতের জন্য করতে হচ্ছে।
————————————————————হালকা নাস্তা করে সেগুলো জান্নাতের রুমে
নিয়ে গেলাম।রুমে গিয়ে জান্নাতকে না পেয়ে
ভাবলাম এই মেয়ে আবার কই গেলো।হঠাৎ
বাথরুম থেকে শব্দ পেয়ে বুঝলাম জান্নাত
রুমের ভিতরে আছে।
আমিঃখাবার রেখে গেলাম।যদিও ভালো
করে নাস্তা বানাতে পারিনি।তবে ক্ষুধা
মিটে যাবে।আর আমি আমার রুমে ঘুমাচ্ছি
অনেক ক্লান্ত লাগছে।
খাবার রেখে আমার রুমে এসে শরিরটা
এলিয়ে দিলাম।অনেক ক্লান্ত লাগছে নিজেকে
গত কয়েকদিন ঠিকঠাকভাবে ঘুম হয়না।
হবেই কি করে…ঘুম না হওয়ার কারণটাই তো
জান্নাত ছিলো এখন সাথে আছে তাই ঘুমটাও
খুব ভালো করেই হবে।এসব ভাবতে ভাবতে
কখন ঘুমিয়ে গেছি খেয়ালি নেয়।
অনেকটা সময় ঘুম থেকে উঠে বুঝতে পারছি
বিকেলে হয়ে গেছে।ফ্রেস হয়ে রুমের বাইরে
এসে জান্নাতের কাছে গেলাম।বেলকোনিতে
দাঁড়িয়ে কিছু একটা দেখছিলো।কিছু না বলে
খাবারের দিকে তাকিয়ে দেখলাম কিছুই
মুখে দেয়নি।হয়তো আমার রান্না ভালো
লাগেনি।তাই জান্নাতকে না ডেকে বাসার
বাইরে এসে গাড়ি নিয়ে বাজারে গেলাম।
বাগানবাড়ি শহর থেকে অনেকটাই দূরে।
আশেপাশে তেমন কোনো লোকালয় নেয়।
বাজারে এসে কিছু কাঁচামাল এবং রাতের
খাবার নিয়ে আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা
নেমে গেছে।বাসার ভিতরে গিয়ে দেখলাম
জান্নাত সেই কাচগুকো পরিষ্কার করছে।
আমিঃরেখে দাও আমি করে নেবো।
জান্নাতঃ……
আমিঃরেখে দাও উঠো
জান্নাতঃবলছি না আমাকে ধরবি না😤
আমিঃওকে ধরছি না,বাট এসব ওমনি
রেখে দাও আমি ক্লিন করে নেবো।
জান্নাতঃআমি করেছি তাই আমি নিজেই
ক্লিন করবো।
আমিঃএতো রাগ ভালো না জান্নাত।
জান্নাতঃসেটা একটা কিডন্যাপড মেয়েই ভালো
জানে কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ।
আমিঃহো জানে।
আমাকে আর কিছু না বলে কাচগুলো নিয়ে
চলে গেলো।জানিনা জান্নাত আমাকে মেনে
নিবে কিনা,হয়তো ভাবছে আমি ওর সাথে
খারাপ করেছি কিন্তু ওর ফ্যামিলির থেকে
জান্নাতকে আপন করার একটামাত্র অপশন
আর সেটা হলো কিডন্যাপ।হ্যা জোর করে
ভালোবাসা আদায় করা হয় না।কিন্তু যদি
জান্নাত আমার সাথে থাকতে থাকতে নিজেকে
আমার সাথে মানিয়ে নিতে পারে তার থেকে
বেশি আর কিছুই চাই না।
চলছিলো আমাদের এভাবে জীবনযাপন।আমি
কথা বলতে চাইলেও জান্নাত কথা একদম
বলতো না।কিছু বললেও ঝগড়া শুরু করবে
না হলে থাপ্পড় দিবে।সোফার উপরে বসে
তখন জান্নাত কফি নিয়ে আমার সামনে
বসে খেতে লাগলো।
আমিঃআমার জন্য একটা করলেও পারতে
জান্নাতঃতোর হাত নেই?
আমিঃআছে,তবে তুমি বানালে তাই বললাম।
জান্নাতঃআমাকে এখান থেকে বের কর,
তারপর যতো খুশি কফি খাওয়াবো।
আমিঃসেটা তো সম্ভব না
জান্নাতঃআমার দ্বারাও সেটা সম্ভব না।
আমিঃতোমা……
কিছু একটা বলতে যাবো তখন আমার ফোনে
কল আসায় ফোনটা রিসিভ করলাম।
আমিঃহ্যা বল
নিলুঃকই তুই?
আমিঃবাগানবাড়ি
নিলুঃওখানে তুই কি করোস?
আমিঃএমনি চিল করি
নিলুঃ৭দিন ধরে এতো কিসের চিল হু?
আমিঃএমনি বোনু
নিলুঃকাল খালাম্মার বাসায় যাচ্ছি
আমিঃকেনো?
নিলুঃপাকন বুড়ির বার্থডে
আমিঃওহ
নিলুঃতুই কখন আসবি?
আমিঃআগের দিন যাবো
নিলুঃআর কাজ করবে কে?
আমিঃতুই তো থাকবি
নিলুঃআমার সাথে মামুন থাকবে
আমিঃতোর ঐ ছ্যাঁচড়া বিএফ?
নিলুঃকুত্তা লাথি মারবো
আমিঃআব্বু আম্মু জানে?
নিলুঃজানে না বলেই তো তোকে বলছি।
আমিঃতোর বিএফ বলবো নাকি আমার
ফ্রেন্ড বলে পরিচয় দেবো।
নিলুঃযেটা তোর ভালো মনে হয়,তবে সবাই
জেনো নিজের করে নেয় ওকে।
আমিঃঠিক আছে।
নিলুঃরাখছি ভাই,সাবধানে থাকিস
আমিঃবাই
কথা বলা শেষ করে কল কেটে দিয়ে জান্নাতকে
দেখে মুচকি হেসে কিচেনে গিয়ে কফি বানাতে
গেলাম।
*******জান্নাতের ফ্যামিলির কথা*******
(জান্নাতেরও চাচাতো ভাইয়ের নাম মামুন & জান্নাতের চাচাকে ছোট করে চাচ্চু আর জান্নাতের
ছোট মাকে আন্টি বললাম)
জান্নাতের বাবা একটা চেয়ারে বসে মাথাটা
উপরের দিকে করে বসে আছে।পাশেই অন্যরা
বসে থাকলেও তাদের মাঝে কোনো ভ্রুক্ষেপ
নেয়।হঠাৎ মামুন বাসায় আসতেই জান্নাতের
বাবা দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাস করলো…
আঙ্কেলঃখোজ পেলি?
মামুনঃনা জেঠু,পুলিশ বলল জান্নাতের ফোন
ড্রেনে পেয়েছে।
আঙ্কেলঃওর বন্ধুদের থেকে জিজ্ঞাস করে
দেখ ওর সাথে কারো শত্রুতা আছে কিনা।
মামুনঃনেই
আন্টিঃভাইজান,জান্নাত তো আর ছোট না।
একটু ভালো করে খোজ নিয়ে দেখেন কারো
সাথে পালিয়ে গেছে কিনা।মুনার মা বলছিলো
জান্নাত নাকি এর আগে একটা ছেলের সাথে
গাড়ি করে আসছিলো।ছেলেটা বাসার সামনে
নামিয়ে দিয়ে চলে গেছিলো।
মামুনঃমা,তোমার মাথায় কি সব সময় এসব
বাজে কথা ঘুরপাক খায়?
আন্টিঃএটা মোটেও বাজে কথা না।
মামুনঃজান্নাত পালিয়ে গেলে মোবাইল ড্রেনে
কিভাবে থাকবে?
আন্টিঃসবার কাছে ভালো হবার জন্য।
মামুনঃআর জান্নাতের খালাম্মার নিজের
চোখে দেখা সেটার কি?
আন্টিঃনাটক হতেও পারে
মামুনঃতুমি এমন একটা মা,যাকে নিজের
মা হিসাবে মানতেও ঘৃণা করে।
আঙ্কেলঃবড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে
হয় জানিস না তুই?সরি বল তোর মাকে।
মামুনঃকিন্তু জেঠু…
আঙ্কেলঃযেটা বললাম সেটা আগে কর।
মামুনঃসরি,আর প্লিজ তুমি জান্নাতকে নিয়ে
এসব বাজে কথা বলো না।জান্নাতে ওমন
মেয়ে না।ও অনেক ভালো একটা মেয়ে।
চাচ্চুঃজানা আছে কতো ভালো(ফিসফিস করে)
আঙ্কেলঃকিছু বললি?
চাচ্চুঃবলছিলাম ভাইজান অনেক রাত হয়েছে
তাই রুমে যাওয়ার কথা ভাবছি।
আঙ্কেলঃহ্যা হ্যা তাই ভালো,সবাই ঘুমিয়ে পড়ো।
আঙ্কেল কথাটা বলতে না বলতেই জান্নাতের চাচা, চাচি রুমে চলে গেলো।যদিও জান্নাতের
বাবাও এখন বুঝতে পারছে মা মরা মেয়েটা
তার কাছে কতো আপন ছিলো।মামুনের সাথে
আরো কিছু সময় কথা বলে নিজেকে একটু
হালকা করার চেষ্টা করছিলো।
********নিলয়ের কথা********
রাতে খাবার টেবিলে বসে জান্নাতকে কথা
বলানোর জন্য চেষ্টা করাচ্ছি তখন কলিংবেল
বাজার শব্দ পেয়ে অবাক হয়ে গেলাম।এই
রাতে এই বাসায় কে আসলো।বসে না থেকে
উঠে দরজা খুলে দিতে দেখলাম……।।
চলবে…………