পদ্মিনী,পর্বঃ১২,১৩
আবির হাসান নিলয়
পর্বঃ১২
সবাই গার্ডেন থেকে বের হবার পর
একটা গাড়িতে উঠলাম।সেই আগের
মতো করেই একটা সিএনজি নিলাম।
বাসে গেলেও পারতাম তবে স্যার নিজে
একটা সিএনজি ঠিক করেছেন।ভাড়া
দিবে তিনি তাই আমার এসব ভেবে
কোনো লাভ নেই।সবার প্রথমে স্যারের
বাসা,তাই উনাদের সবাইকে নামিয়ে
দিয়ে আমরা দুজন যেতে লাগলাম।
কিছু সময় পর জান্নাত বলল,,,,,
জান্নাতঃতোমার বাসা তো রেখে আসলাম।
আমিঃসমস্যা নেই,তোমাকে নামিয়ে দিয়ে
আমার বাসায় আমি চলে যাবো।
জান্নাতঃআসবে কবে?
আমিঃচাচ্চু যেদিন ছাড়বে।
জান্নাতঃওহ
আমিঃতুমি নিয়মিত ভার্সিটি যাবে আর
একটু করে শুভাকে সময় দিবে।
জান্নাতঃকিন্তু তুমি ওখানে গিয়ে করবে কি?
আমিঃতোমাকে নিয়েই কথা বলবো।
জান্নাতঃতাহলে আমাকে নিয়ে চলো
আমিঃআমাকে ভালোবাসলে চলো।
জান্নাতঃ……
আমিঃকি হলো যাবে এখন?
জান্নাতঃআমার পরিবার…!
আমিঃতুমি এখনো তোমার পরিবার নিয়েই
আছো।যেখানে তোমার কোনো মূল্য নেয়।
জান্নাতঃকিন্তু সবার আগে আমার পরিবার
এবং পরিবারের মানুষজন নিলয়।
আমিঃতাহলে আমি কখন?
জান্নাতঃজানিনা।
আমিঃনিজেকে মায়া থেকে লুকিয়ো না।
এতে তুমি আমি দুজনেই ধ্বংস হয়ে যাবো।
জান্নাতঃসেটাতে যদি শান্তি হয় আমি সেটা
করতেই রাজি।
জান্নাতের এমন কথা শুনে আর কিছু
বললাম না।বলার কিছুই নেই,কি জবাব
দেবো ওর এমন কথার…!সব কিছু শেষ
হলেও ওর পরিবার আগে।হঠাৎ গাড়ি
থামার পর নেমে জিজ্ঞাস করলো….
জান্নাতঃকতোদূর যাবে?
আমিঃবাসস্টপ অবধি।
ড্রাইভাকে কিছু টাকা এক্সট্রা দিয়ে বলল,,,,
জান্নাতঃওকে বাসস্টপ অবধি নিয়ে যাবেন।
—ঠিক আছে।
জান্নাতঃভার্সিটি থেকে ট্যুর যাওয়ার জন্য
অপেক্ষায় থাকবো।৭ তারিখ সকাল ৮টায়।
আমিঃভাই চলেন।
গাড়ি ওখানে না থেকে মুহূর্তেই ছেড়ে দিয়ে
অনেকটা দূরে চলে আসলো।জান্নাত
এমন একটা ক্যারেক্টার,যেখানে ও আমাকে
ভালোবাসে কিনা সেটা বলবেও না অন্যদিকে
নিজের পরিবার রেখেও আমার সাথে
যাবে না।কি আছে ওর পরিবারে…!
আমিঃভাই একটা পরিবারে কি থাকে?
—আমাকে বলছেন?
আমিঃআমি আর আপনি ছাড়া তো
গাড়িতে আর কেউ নেই।
—সেটা ঠিক,তবে ভাইজান পরিবার হলো
একটা মায়া।যে মায়া থেকে কেউ সহজে
বের হতে পাড়বে না।আর যারাই বের
হয়ে যায় তারা সমাজের কাছে একটা
নির্লজ্জ,বেহায়া,কুসন্তান নামে পরিচিত।
আমিঃঠিক বুঝলাম না
—ধরুন আপনার পরিবারের সবাই আছে।
আপনি নিজেই আপনার পরিবারের মাথা
কিন্তু আপনি আপনার বাবা মাকে ভরণ
পোষণ না করে তাদের বাসা থেকে বের
করে দিলেন।যেখানে পরিবারের মায়া
থেকে আপনি বের হয়ে গেলেন।তখন যদি
এসব কথাবার্তা সবাই জানে যে আপনি
আপনার বাবা মাকে বাসা থেকে বের
করে রাস্তায় ফেলে দিছেন তখন সমাজের
সবার কাছে আপনি নির্লজ্জ,কুসন্তান।
অন্যদিকে আপনার পরিবার যদি আপনার
আর ঐ মেয়েটার ভালোবাসা মেনে না
নেয় তখন হয়তো আপনারা দুজন পালিয়ে
যাবেন।সেটাতেও কিন্তু আপনার মায়া
কাটানোর কথাই উল্লেখ্য। তখন সবাই
আপনাকে কুসন্তান না বললেও নির্লজ্জ,
বেহায়া ঠিকই বলবে।
আমিঃকিন্তু সমাজের কথা আমি কেনো
শুনতে যাবো?সমাজ কি আমাকে বোঝে?
—সেটা আপনার ব্যাপার,কিন্তু একটা
সাধারণ ঘরের পিতামাতাকে জিজ্ঞাস করুণ
তারা সমাজকে ভয় পায় কিনা।ধরুন
আপনি অনেক বিত্তশালী তাই আপনার
সামনে কেউ কিছু বলতে পারবে না।
কিন্তু আপনার চোখের আড়ালে হাজারটা
নিন্দুক বের করা যাবে।হয়তো সেইসব
নিন্দুকের মধ্যে আমি নিজেও থাকবো।
আমিঃকিন্তু যখন একটা মেয়ে বিয়ে করে
অন্য একটা ছেলের সাথে সংসার শুরু
করে তখন তার পরিবারের মায়া কোথায়?
—ভাই বোকার মতো কি প্রশ্ন করেন?তখন
সবার সম্মতিতে নতুন একটা পরিবার
তৈরি করে।
আমিঃযদি বিয়েতে সেই মেয়ে কিংবা ছেলের
যেকোনো একজনের মত না থাকে।
—সেটা পরিবারকে বোঝাতে হবে।
আমিঃযদি পরিবার না মানে
—আপনার ভালোবাসার শক্তি যদি
দূর্বল হয় সে ক্ষেত্রে টিকবে না।
আমিঃওহ
—ভাইজান চলে আসছি।
আমিঃভালো লাগলো ভাই আপনার কথা।
—আপনাকেও ধন্যবাদ কথাগুলো বোঝার জন্য।
আমিঃআলবিদা
—আলবিদা।
ভাইটার কথায় লজিক ছিলো।হয়তো
তিনিও পরিবারের প্রতি অনেক দায়িত্ববান।
পরিবার বলতে যেটুকু ধারণা দিয়েছেন
সেটাই অনেক।আমি নিজেও তো আমার
পরিবারকে ছেড়ে দিতে পাড়বো না।তাহলে
জান্নাত কিভাবে ওর পরিবার ছেড়ে দিবে।
মাঝেমধ্যে জান্নাতের খালাম্মা আর উনার
হাসবেন্ডের প্রতি অনেক বেশি সন্দেহ হয়।
উনারা আমার থেকে কি চায়…!কি করাতে
চাইছে আমাকে আর জান্নাতকে মিল করিয়ে।
মানুষের লাভ ছাড়া কেউ কিছু করেনা।
হয়তো আমিও তাদের জালে পা দিতে
চলেছি।এবার গেমটা আমাকে খেলতে হবে।
এসব ভাবতে ভাবতেই বাস চলে আসলো।
বাসে উঠে একটা জানালার পাশে বসলাম।
প্রায় সন্ধ্যে হয়ে এসেছে।জানালার ফাক
দিয়ে হালকা বাতাসে শীত শীত লাগছিলো।
শীতকাল আসতে বেশি দেরি নেয়।ঘন
কুয়াশায় পরে যাবে পুরো শহরটা।সময়টাতে
যদি জান্নাত থাকে তখন বেশ ভালোই হবে।
এক চাদরের মধ্যে থেকে দুজন ভোর সকালে
হেটে যাবো আপন মনে।যখন এসব ভাবতে
ব্যস্ত তখন ভাবনার মাঝে ছেদ পড়লো
একজনের কথা শুনে।
—ভাই বসবো?
আমিঃফাকা যেহেতু আছে তাই বসো।
—ধন্যবাদ
ছেলেটাকে দেখে আমার মতোই উন্মাদ
লাগছিলো।একটা ময়লা পাঞ্জাবি,চোখে
চশমা চুলগুলো এলোমেলো হাতে কিছু
একটার ফাইল আছে।
আমিঃহাত কি?
—সার্টিফিকেট
আমিঃকোন ক্লাসের?
—উচ্চ মাধ্যমিক(এইচএসসি)।
আমিঃতো যাচ্ছো কোথায়?
—গ্রামের বাড়ি।
আমিঃছুটি কাটাতে?
—না ভাই,পুরোপুরিভাবে থাকতে।
আমিঃকেনো?
—এখানে একটা কল সেন্টারে কাজ
করতাম।সেখান থেকে যে টাকা পেতাম
সেটা দিয়ে পড়াশোনা চালাতাম।
আমিঃকাস্টোমার সার্ভিস?
—আরে না,আমাকে দেখে তেমন মনে
হয় নাকি?উনাদের চা-বিস্কুট দেয়া
কল সেন্টার পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি।
আমিঃতাহলে ছেড়ে দিলে কেন?
—তাড়িয়ে দিয়েছেন।
আমিঃকেনো?
—ভার্সিটিতে সিলেকশন এক্সাম দেয়ার
জন্য ছুটি চেয়েছিলাম সেই জন্য।
আমিঃওহ
ছেলেটা আর কিছু বলল না।হাত থেকে
সার্টিফিকেট নিয়ে দেখতে লাগলাম।
অনেক ভালোই রেজাল্ট আছে,তবে
আফসোস হচ্ছে ভালো ছাত্র হয়েও
আলোর প্রদীপ জ্বালানোর চেষ্টা করেও
জ্বালাতে পারছে না।ছেলেটার নাম
মুসা।কিছু একটা ভেবে বললাম,,,,
আমিঃছোটখাটো একটা কোম্পানিতে
জব দিলে সেটা করতে পাড়বে?
—জ্বি পারবো।
আমিঃঠিক আছে।অন্য সিটে থাকা
একজনের থেকে ফোনটা নিয়ে জাকির
ভাইকে কল দিয়ে ব্যাক করতে বললাম।
কল ব্যাক করার পর বলল…
জাকিরঃহ্যা বল
আমিঃএকটা ছেলেকে জব দেয়া লাগবে।
জাকিরঃযোগ্যতা কেমন?
আমিঃসেটা না হয় কাল দেখো।
জাকিরঃঠিক আছে পাঠিয়ে দে।
আমিঃওকে।
কল কেটে দিয়ে ফোনটা ফিরিয়ে দিয়ে
ছেলেটাকে একটা ঠিকানা দিলাম।
আমিঃরাতটা পার করে কাল ঠিকানায়
গিয়ে আমার কথা বলবে।
মুসাঃঠিক আছে।
আমিঃআমার নামার সময় হয়ে গেছে,
তুমি একটু পরেই নেমে যেও।
এটুকু বলে বাস থামাতে বলে নেমে গেলাম।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে,চারপাশে ল্যাম্পপোস্টের
আলোতে জ্বলজ্বল করছে শহরটা।এদিক
ওদিক না দেখে সোজা বাসার দিকে চলে
গেলাম।কিছুটা হাটার পর বাসায় আসতেই
রহিম চাচার সাথে দেখা।
আমিঃকেমন আছেন চাচা?
চাচাঃএইতো বাবা ভালো আছি।বাসায়
তো কেউ নেয়।
আমিঃকোথায় গেছেন?
চাচাঃসকালে একটা ছেলে আসছিলো
তাকে নিয়ে উনারা বাইরে গেছে।
আমিঃপিচ্চি ছেলে?
চাচাঃহুম
আমিঃআম্মুকে কল দিয়ে বলেন আমি
বাসায় আসছি।
চাচাঃঠিক আছে।
বাইরে দাঁড়িয়ে না থেকে বাসার ভিতরে
গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিলাম।হালকা ক্ষুধাও
পেয়েছে,ফ্রিজ থেকে থেকে খাবার বের
করে খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
ঘুমটা কখন চলে আসছে খেয়াল নেয়,
আম্মুর ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম।
আমিঃকখন আসলে?
আম্মুঃএইতো মাত্র আসলাম,তা আমার
ছেলেটার কি মন খারাপ?
আমিঃকই না তো
আম্মুঃতাহলে দুদিন হতে না হতেই বাসার
পথে চলে আসলি যে…!
আমিঃকাল নাকি আব্বু আর চাচ্চু আসবে।
আম্মুঃহ্যা,তোকে কে বলল?
আমিঃনিলু
আম্মুঃওহ,মেয়েটার কি খবর?
আমিঃওর কথার কিছু বুঝা যায়না।
আম্মুঃমানে?
আমিঃওর কাছে সবার আগে নিজের পরিবার।
যদি ওর পরিবার রাজি হয় তাহলেই আমার
সাথে আসবে।
আম্মুঃমানে তোকে ভালোবাসে?
আমিঃসেটাও বলে না।আজ ওর সাথে
অনেকটা সময় কাটিয়েছি। কখনো মনে
হয়েছে আমাকে ভালোবাসে আবার কখনো
মনে হয়েছে আমা প্রতি ওর কোনো প্রকার
ভালোবাসা নেয়।
আম্মুঃআমাকে বলা যাবে?
আমিঃতোমাকে না বললে কাকে বলবো?
জান্নাতের সাথে আজ যেসব কথা হয়েছে
সবটাই আম্মুকে খুলে বললাম।সবকিছু
শুনে আম্মু মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলল,,,
আম্মুঃসমস্যা নেই,কাল বা পরশু তোর
বাবাকে দিয়ে ওর বাসায় বিয়ের জন্য
প্রস্তাব দেবো।যদি পারিবারিকভাবে বিয়ে
হয় তাতেও তো সমস্যা নেয়।
আমিঃহ্যা আম্মু,কিন্তু সমস্যা আছে।
আম্মুঃকি সমস্যা?
আমিঃওর বিয়ে আগে থেকে ঠিক হয়ে আছে।
আম্মুঃতুই কিভাবে জানিস?
আমিঃওর একটা আন্টি বলেছে।
আম্মুঃতবুও গিয়ে বোঝাবো,হয়তো
তারা আমাদের বুঝবে।
আমিঃহ্যা চেষ্টা করতে পারো।
নিলুঃকি কথা হচ্ছে মা ছেলের?
আম্মুঃতুইও চলে আসছিস।
নিলুঃতোমাকে রুমে পেলাম না,আর
চাচা বললো কুত্তাটা বাসা আসছে।
আমিঃভাগ আমার রুম থেকে।
নিলুঃবড় বোনকে সম্মান দিতে শেখো বাবু।
আমিঃলাথি কুত্তী
নিলুঃআচ্ছা ভাই আমার ভাবির কি খবর?
আমিঃসেটাই আম্মুকে বললাম।
নিলুঃরাজি হয়েছে?
আম্মুঃহাহা,সেটা ও নিজেও জানে না।
নিলুঃমানে?
আম্মুঃ….(নিলুকে বলল)
নিলুঃওলে আমার ভাইটার তো অনেক
কষ্ট।তুই চাইলে আমি হেল্প করতে পারি।
আমিঃতোর হেল্প লাগলে অনেক আগেই
নিতাম।যেখানে জান্নাত নিজেই বাকা হয়ে
আছে সেখানে আমি তুই কি করবো।
নিলুঃওর বাসায় কথা বলে দেখি।
আম্মুঃহুম,এখন নিচে আয় সবাই।
নিলুঃএখানেই থাকি,ভালো লাগছে মেয়েটার
কথা শুনে।
আমিঃতোর কথা বল এখন।
নিলুঃআমার আবার কিসের কথা..?
আমিঃঐ ছেলেটার
আম্মুঃকোন ছেলে?
নিলুঃকোনো ছেলেই না,ও এমনি ঢপ
মারছে আমাদের।
আমিঃনা মামুন,তোমার মেয়েটা তাকে সেই
লেভেলের ভালোবাসে।
আম্মুঃবাসা কোথায় রে মা?
নিলুঃওটা ভালোবাসা না আম্মু,শুধু কথা
বলি।এখনো জানিনা ওর প্রতি আমার
সেটা ভালোবাসা নাকি ভালো লাগা।আর
যদি ওর সাথে ভালোবাসার মায়াতে যায়
তাহলে সবার আগে তোমাদেরই বলবো।
তোমরা আমার পরিবার।
আম্মুঃহুম
আমিঃআচ্ছা আম্মু পরিবারের কি অনেক
বেশি শক্তি?
আম্মুঃহঠাৎ এই প্রশ্ন?
আমিঃএকজন বলল
আম্মুঃহ্যা,তবে সেসব নিয়ে তোদের দুজনের
কারো ভাবতে হবে না।তোরা দুজন নিজেরা
নিজদের জীবনসঙ্গী বেছে নিয়ে সংসার
কর আর তোর বাবাকে রিটায়ার্ড হতে দে।
নিলুঃআমার বিয়ে করা দেরি আছে।।
আমিঃতুই না করলে আমি কিভাবে করবো?
নিলুঃতুই আগে করবি।
আমিঃএকটু আগে কি বললি?
নিলুঃকি বলছি?
আমিঃবড়দের সম্মান করতে শেখো বাবু,
এখন যদি বড় বোনকে ছাড়া ছোট ভাই
আগে বিয়ে করে তাহলে কেমন দেখায়😁
নিলুঃহারামি ভালোই হয়েছো
আমিঃতোমারই শীর্ষ
আম্মুঃবাদর দুটো
তিনজন মিলে অনেক আড্ডা দেয়ার পর
আম্মু নিচে গিয়ে রাতের খাবার রেডি করার
জন্য গেলে নিলু আর আমি কিছু সময়
কথা বলছিলাম।তখনো আজানা ছিলো
আমাদের মাঝের সব থেকে বড় কথাটা।
কেউ তখনো জানতামই না আমাদের
অজানাতেই কি হচ্ছে।যদিও এটা আমাদের
কোনো সমস্যা না,কিন্তু আমাদের দুজনের
ভালোবাসার মানুষদের জন্য ভালোর
এবং মন্দ দুটোই ছিলো।হয়তো দুজন
জেনে গেলে অনেকটা ভালো হতো কিন্তু
অজানাতে পরে যাওয়া কথাগুলো দুজনের
কেউ আন্দাজ করতে পারছিলাম না।
কিছু সময় পর আম্মু খাওয়ার জন্য ডাকতে
দুজন নিচে গিয়ে রাতের খাবার শেষ করি।
চলবে………..
পদ্মিনী
পর্বঃ১৩
#আবির হাসান নিলয়
পরেরদিন ঘুম থেকে উঠার সময় অলসতা
করে দেরি করেই উঠলাম।অনেকট সকাল
হয়ে গেছে।বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে
নিচে আসতেই দেখলাম আম্মু আব্বু বসে
আছেন।আমাকে দেখে আব্বু মুচকি হেসে
নিজের কাছে বসালেন।
আমিঃকখন আসছেন?
আব্বুঃভোর রাতে,তোর কি খবর?
আমিঃএইতো আব্বু চলছে।একটা কাজ
করতে হবে আপনাকে আর চাচ্চুকে।
আব্বুঃকি কাজ?
আমিঃজান্নাতের বাসায় বিয়ের সম্বোধন
নিয়ে যেতে হবে।
আব্বুঃআমরা এটা নিয়েই কথা বলছিলাম।
কাল দুইভাগ যাবো ওখানে।
আমিঃকাল কেনো,আজ কোনো সমস্যা কি?
আব্বুঃজার্নি করে আবার আজকেই যাবো?
আমিঃমাত্র ঘণ্টা দুয়েকের পথ।
আব্বুঃছেলে দেখছি,ভালোবাসার মায়াতে
হাবুডুবু খাচ্ছে।
আমিঃআপনি যাবেন কিনা বলেন?
আব্বুঃযাবো তবে তোর চাচ্চুকে বলতে হবে।
আমিঃচাচ্চু এখনো ওঠেনি?
চাচিঃফ্রেশ হচ্ছে।
আমিঃছোট মা,তুমিও আসছো?
চাচিঃকেনো আমার আসা বারণ নাকি?
আমিঃতুমি তো আসোই না
চাচিঃকিন্তু তুই নিজেও তো ওখান থেকে
আসার পর খোজ নিস না।
আমিঃঅনেক মিস করতাম তোমাদের।
চাচিঃপাগল ছেলেকে আমিও মিস করি।
শুরু হলো আমাদের আড্ডা।ছোট মা
অনেক সুন্দর করে কথা বলেন। কখন
কি বলে সবাইকে ম্যানেজ করতে হয়
সেটা আমার আম্মুর চাইতেও ছোট মা
অনেক ভালো জানেন।সবার কথা বলার
মাঝে চাচ্চু এসেই আমাকে বাহুডোরে
চেপে ধরলো।
চাচ্চুঃকেমন আছিস পালোয়ান?
আমিঃআর পালোয়ান নেই চাচ্চু,এখন
সন্নেসী ব্যসে ঘুরতে হয়।
চাচ্চুঃহাহা,কেনো?
আমিঃবিয়ে করার জন্য😁
চাচ্চুঃচল আজকেই বিয়ে করাবো।
আমিঃএকটু পর আব্বুর সাথে এমনিতেও
যেতে হবে।তখন দেখবো কেমন ম্যানেজ
করতে পারো সব।
চাচ্চুঃকোথায় যাচ্ছি?
আম্মুঃছেলের পছন্দের মেয়ের বাসায়।
চাচ্চুঃএটা ব্যাপার হলো নাকি।
আমিঃপরে বুঝবে ঠ্যালা চাচ্চু।
চাচ্চুঃসেসব আমাদের উপর ছেড়ে দে।
চাচ্চু সবার থেকে আলাদা,অনেক হাস্যকর,
মিশুক এবং চঞ্চল প্রকৃতির একজন মানুষ।
খুব সহজেই একজনকে আপন করে নিতে
উনার সময় লাগবে না।উনাদের একটা
মেয়ে আছে নাম মেরি।মেরি সবেমাত্র লেভেল
টেন-এ পড়াশোনা করে।সেই যায় হোক
সবাই মিলে আড্ডা দেয়ার পাশাপাশি
সকালের নাস্তা শেষ হতেই আব্বু আর
চাচ্চু জান্নাতদের বাসার উদ্দেশ্য রওনা
দিলেন।যদিও আমাকেও যেতে বলছিলো
তবে কোনো একটা কারণের জন্য যায়নি।
ছোট মা,আমি এবং আম্মু মিলে যখন কথা
বলছিলাম তখন নিলু ওর ফোনটা নিয়ে
এসে আমাকে দিলো।
আমিঃকি হয়েছে?
নিলুঃতোর কথা বলল
আমিঃহ্যালো(ফোনটা হাতে নিয়ে)
রাফিঃএটা কার নাম্বার?
আমিঃআমার আপুর,কেনো?
রাফিঃতোর কোনো খোজ নাই,তাই
খোজ নেয়ার জন্য কল করলাম।
আমিঃওহ
রাফিঃজান্নাত কথা বলবে তোর সাথে।
আমিঃতোমাদের সাথে একটু পরে কথা
বলছি(ওখান থেকে উঠে বাসার বাইরে
এসে বললাম)
আমিঃকেনো?
রাফিঃসেটা ওর থেকেই জিজ্ঞাস কর
জান্নাতঃকেমন আছো?
আমিঃহুম ভালো,তুমি?
জান্নাতঃভালো,রাগ কমেছে?
আমিঃরাগ দেখানোর অধিকারটা
এখনো পায়নি।
জান্নাতঃকি করছো?
আমিঃসবার সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
জান্নাতঃতাহলে কি আমি বিরক্তি করলাম?
আমিঃসেটা তো বলিনি
জান্নাতঃকে কে ছিলে?
আমিঃছোট মা,আম্মু আর আমি।
জান্নাতঃওহ
আমিঃতোমাদের বাসায় আমার আব্বু
আর চাচ্চু গেছে বিয়ের সম্বোধন নিয়ে।
জান্নাতঃকিহ?
আমিঃঅবাক হওয়ার কি আছে?
জান্নাতঃএমন করার সময় আমাকে একবার
জিজ্ঞাস করার প্রয়োজন মনে করলে না?
আমিঃএতে জিজ্ঞাস করার কি আছে?
জান্নাতঃনিলয় আমার পরিবার তেমন
সুবিধার না।আমি নিশ্চিত উনাদের আমার
চাচ্চু অপমানিত করবে।
আমিঃসেরকম কথাবার্তা আমি আগেই
বলে দিয়েছি উনাদের।আর শোনো জান্নাত,
তোমার পরিবার যদি আমাদের মেনে নাও
নেয় তাহলে তোমার পরিবারকে মেরে
তোমাকে তুলে আনতেও আমি ভাববো না।
জান্নাতঃজোর করে ভালোবাসা আদায়
করা যায়না।হয়তো তুমি সেটা ভালো করেই
জানো কিভাবে ভালোবাসা পাওয়া যায়।
আমিঃতুমি আমাকে বলো কিভাবে তোমাকে
আমার করে পাবো?
জান্নাতঃ……
আমিঃতুমি আসলে আমাকে ভালোই বাসোনা
তাই এমন প্রশ্নের উত্তর তোমার কাছে নেই।
এটা আমার আপুর ফোন তাই ওকে কল
দিয়ে বিরক্তি করো না।
কল কেটে দিয়ে বাসায় ভিতরে গিয়ে
নিলুকে ফোন দিয়ে রুমে চলে গেলাম।
******আব্বু-চাচ্চুর কথা*****
নিলয়ের দেয়া ঠিকানার সামনে গাড়ি
থামিয়ে বাসার কলিংবেল বাজানোর
পর একটা ছেলে দরজা খুলে দিলো।
ছেলেঃকাকে চায়?(সালাম দিয়ে)
চাচ্চুঃবাসার বড়দের।(উত্তর দিয়ে)
ছেলেঃভিতরে আসুন।
বাসার ভিতরে গিয়ে উনারা বেশ
অবাক হলেন।পুরো বাসা অনেক সুন্দর
করে সাজানো। প্রতিটা দেয়ালে অনেক
সুন্দর করে আর্ট করা।চাচ্চু এমন
দেখে ছেলেটাকে জিজ্ঞাস করলো…
চাচ্চুঃএগুলো কোথায় থেকে করিয়েছো?
ছেলেঃএগুলো জান্নাত নিজের হাতে করেছে।
চাচ্চুঃঅনেক সুন্দর।
উনাদের কথার মাঝে একজন মধ্যবয়সী
লোক এসে সামনে বসলো।তিনি আর
কেউ নয় স্বয়ং জান্নাতের বাবা।
আঙ্কেলঃবলেন কি দরকার
চাচ্চুঃআসলে আমরা আপনার মেয়েকে
আমাদের মেয়ে করে নিয়ে যেতে চায়।
আঙ্কেলঃআমার মেয়েকে আপনাদের
দান করে দিতে হবে নাকি?
চাচ্চুঃনা মানে তেমন না,আমরা আসছি
আমাদের ছেলের সাথে আপনার মেয়ের
সম্বোধন নিয়ে।
আঙ্কেলঃছেলে কি করে?
আব্বুঃআমার বিজনেস আছে,আমি
রিটায়ার্ড নেয়ার পর সবকিছু আমার
ছেলেই সামলাবে।
আঙ্কেলঃমানে ছেলে বেকার।
—আর বেকার ছেলের সাথে আমাদের
মেয়ের বিয়ে দেবো না।তাছাড়া আমাদের
মেয়ের বিয়ে অলরেডি ঠিক হয়ে আছে।
আব্বুঃজ্বি আমরা জানি,কিন্তু আমার
ছেলে আপনার মেয়েকে অনেক ভালোবাসে।
হয়তো আপনার মেয়েও আমার ছেলেকে
পছন্দ করে।
জান্নাতের চাচাঃআমাদের মেয়ের কাকে পছন্দ
কার সাথে বিয়ে দেবো সেটা আমরা ঠিক
করবো।জান্নাত বা বাইরের কেউ না।
ছেলেঃআব্বু উনাদের কথাটা শোনো,হয়তো
জান্নাত নিজেও উনাদের ছেলেকে পেলে
হ্যাপী হবে।
জান্নাতের চাচাঃতুই এখান থেকে যা,আর
বললাম তো আমাদের মেয়েদের বিয়ে ঠিক
হয়ে আছে।ওর কাছে দুটো অপশন আছে
হয়তো পালিয়ে যাক না হলে কিডন্যাপ
করে আপনারা নিয়ে যান।তবে আপনাদের
দেখে তো ভদ্র মনে হচ্ছে।তাই হয়তো
কিডন্যাপ করার মতো বাজে কাজ করতে
যাবেন না।
উনার কথা শুনে চাচ্চু আব্বু দুজনেই
হতাশ হয়ে চুপ করে গেলো।
আঙ্কেলঃগ্লাসে জল আছে,খেয়ে নিন।
আব্বুঃআমরা এমনি ঠিক আছি।
আঙ্কেলঃআর কিছু বলার আছে?
চাচ্চুঃআপনাদের মেয়েকে দিলে অনেক
খুশি হতাম,আপনারা যেটা বলবেন
আমরা সেটা করতেই রাজি।
জান্নাতের চাচ্চুঃআপনাদের সব সম্পত্তি
আমাদের নামে লিখে দিবেন।
আব্বুঃনিজের মেয়েকে বিক্রি করতে চান?
আঙ্কেলঃআমাদের ভিখারি মনে হয়?যার
জন্য বলছেন সব করতে রাজি।
আব্বুঃদেখুন আমার ভাইয়ের তেমন কোনো
উদ্দেশ্য ছিলো না।
জান্নাতের চাচ্চুঃকিন্তু আমরা তো সেটাই জানি।
আর কথা বলা শেষ হলে আসতে পারেন।
আর কোনো না বলে উনারা উঠে বাসার
বাইরে আসতেই ছেলেটা আসলো।
ছেলেঃআঙ্কেল আপনারা প্লিজ উনাদের
কথায় কিছু মনে করবেন না।আসলে
উনাদের মাথায় একটু সমস্যা।কখন কি
বলতে হয়তো সেটা জানে না,উনাদের
হয়ে আমি আপনাদেত কাছে ক্ষমা চাইছি।
আর আপনাদের ছেলে অন্য কোথাও বিয়ে
দেয়ার ব্যবস্থা নেন।কারণ উনারা কখনো
আপনাদের কাছে মেয়ে দিবে না।।
চাচ্চুঃআমরা এই মেয়েকেই আমাদের
বাড়ির বউ করে নিয়ে যাবো।ভালো থেকো।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে উনারা গাড়িতে
উঠে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
*******নিলয়ের কথা********
চাচ্চু,ছোট মা আসার কথা শুনে খালাম্মা
রুহিকে সাথে নিয়ে আসছে।সবাই মিলে
প্ল্যান করছিলাম কিভাবে বার্থডে পালন
করবো।তখন দেখলাম আব্বু আর চাচ্চু
আসলো।তবে দেখে অনেকটা হতাশ
দেখাচ্ছিলো,তাই কিছু বলার সাহস পেলাম
না।চুপ করে তাদের সাথে কথা বলতে
লাগলাম।ছোট মা নিজেই তখন বলল…..
চাচিঃকি বলল?
আব্বুঃওসব না শোনায় ভালো।
চাচিঃভাইজান আমাকেও বলবেন না?
আব্বুঃবলার মতো কথা মোটেও না।
চাচিঃতবুও বলেন।
চাচ্চুঃউনারা একদম সাইকো,কোথায়
কিভাবে কথা বলতে হয় কিছুই জানে না।
(সব খুলে বলল)
উনাদের থেকে এমন কথা শুনে মাথায়
একদম রক্ত উঠে গেলো।বিয়ে দিবে না
ঠিক আছে কিন্তু এমন অপমান করার
কি আছে।বসা না থেকে উঠে বাসার
বাইরে যাবো তখন আব্বু ডাকলো।
আব্বুঃমাথা গরম করে কিছু করলে
খারাপ ছাড়া ভালো হবে না।
আমিঃকিন্তু উনারা আপনাদের কিভাবে
অপমান করার সাহস পেলো।
চাচ্চুঃসেসব আমরা দেখবো,তুই মাথা
ঠাণ্ডা রাখ।
আর কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম।
মাথাটা কোনো ভাবেই শান্ত হচ্ছে না।
ইচ্ছা করছে এখনি গিয়ে মেরে দেয়।
ভেবেছিলাম পারিবারিক ভাবে বিয়ে
হবে কিন্তু এখন আর না।তোকে তো
কিডন্যাপ করেই নিয়ে আসবো।
————————————————————–
বাসায় সবার সবাই কিছুদিন কাটিয়ে
দিলাম।আজ ৬তারিখ,কাল সবাই ট্যুরে
যাবে।তাই কাল কোনোভাবেই জান্নাতকে
কিডন্যাপ করা যাবে না।আর এটার জন্যও
সুক্ষ্ম প্ল্যান দরকার। ল্যাপটপ অন করে
সবাইকে বলতে লাগলাম কখন কি করতে
হবে।জিহাদ ভাইকেও বলে দিলাম কখন
কি করতে হবে।সব কিছু শেষ করে তাড়াতাড়ি
ঘুমিয়ে গেলাম।
পরেরদিন……..
ভোর সকালে উঠে আম্মু-আব্বুর রুমে গিয়ে
নক করতেই দরজা খুলে দিলো।
আব্বুঃএতো সকালে কি মনে করে?
আমিঃকিছু টাকা লাগবে,ভার্সিটি থেকে
আজ ট্যুরে যাচ্ছি।
আব্বুঃএখনো ৬টাও বাজেনি।
আমিঃএখান থেকে যেতে ২ঘণ্টা লাগবে।
আর ৮টায় বাসে উঠতে হবে।
আব্বুঃনিলুর মা,ওকে কিছু টাকা দাও।
আমিঃনিলুর মা কিভাবে হয়?আমার আম্মু না?
নিলুঃহয়,উনি আমার আম্মু।
আমিঃতুই এতো সকালে কি করিস?
নিলুঃতোর সাথে যাবো।
আমিঃস্টুডেন্ট ছাড়া বহিরাগত এলাও নাই।
নিলুঃচলনা ভাই,অনেকদিন কোথাও যায়নি।
আর তুই তো থাকবিই।
আব্বুঃনিয়ে যাও
আমিঃকিন্তু আব্বু
নিলুঃকোনো কিন্তু না,আম্মু টাকাটা দাও।
আমিঃআব্বু আম্মু আসছি,ছোট মা আর
চাচ্চু ঘুম থেকে উঠলে উনাদের বলবেন।
এখন ঘুমাচ্ছে তাই ডিস্টার্ব করবো না।
আম্মুঃঠিক আছে
উনাদের বিদায় দিয়ে বাইরে আসতেই
আজিম ভাই দেখলাম গাড়ি নিয়ে বাইরে
দাঁড়িয়ে আছে।
আমিঃতুমি এতো সকালে ভাই?
আজিমঃনিলু তো বলল কোথায় নাকি
যেতে হবে।তাই সকালে আসছি।
আমিঃসেটা তো অন্য কাউকে নিয়ে যেতাম।
এতো সকালে ঘুম থেকে উঠে আসতে হবে…
আজিমঃসমস্যা নেই
নিলুঃগাড়িতে উঠ,আমি আজিম ভাইকে
বিশ্বাস পায়।তাই ভাইকে আসতে বলছি।
আমিঃহুম
গাড়িতে উঠে আজিম ভাইকে বললাম
কোথায় যেতে হবে।হঠাৎ খেয়াল করলাম
নিলুর সাথে ব্যাগ রয়েছে।
আমিঃব্যাগে কি?
নিলুঃক্যামেরা,কেনো?
আমিঃবোইন তুই কি আমার পিছু
ছাড়বি না কখনো?
নিলুঃতুই নিজেই আমার পিছু পরে
আছিস।আমার হওয়ার কিছু সময়
পর আমার দেখাদেখি তুই হয়েছিস।
আমিঃএই কথাটা না বললে ভালো
লাগে না তাই না😣
নিলুঃএকদমই না ভাই।আচ্ছা ভাই
তোকে একটা হেল্প করাতে পারি।
তুই আমাকে পদ্মিনিকে দেখাবি ওর
সাথে তোর যদি কিছু একটা করাতে
পারি তাহলে কিন্তু ভালোই হবে।
আমিঃতুই ওকে দেখলেই চিনতে পারবি।
বাট ওখানে গিয়ে বলবি তুই বিবাহিতা।
নিলুঃহোয়াট দ্যা কথাবার্তা ভাই।এখনো
প্রেম হলো না আর তুই বিয়ে দিয়ে দিলি?
কেমন ভাই তুই হ্যা😥
আমিঃঢং বাদ দে
নিলুঃভাই খাবি কেক?
আমিঃধন্যবাদ
দুই ভাইবোন কেক খাওয়ার সাথে সাথে
আজিম ভাইকে দিয়ে কথা বলতে
লাগলাম।
ভার্সিটি এসে দেখলাম অনেক স্টুডেন্টস
এসে হাজির।গাড়ি থেকে নেমে আজিম
ভাইকে বিদায় দিয়ে নিলুকে সাথে নিয়ে
ক্যাম্পাসের দিকে এগিয়ে যেতেই জয়,
রাফি আসলো।কোনো কথা না বলে
ধুরুম ধুরুম আমাকে মারতে শুরু করলো।
মার শেষ হতেই বলল,,,
জয়ঃএতোদিন ছিলি কোথায়?
আমিঃবলছিলাম তো বাসায়।
রাফিঃকল দিয়ে খোজ নেয়া যেতো না?
তোর জন্য স্যার নিজেও চিন্তা করতো।
আমিঃসালা মারার পর মায়া দেখাচ্ছিস।
জয়ঃআপনাকে ঠিক চিনলাম না।
নিলুঃআমি নিলয়ের বোন,তোমাদের
সাথে ট্যুরে যাচ্ছি।
জয়ঃআপনি ওর গার্জিয়ান হয়ে যাবেন?
নিলুঃহ্যা অনেকটা তেমনি,ভাইটাকে
সবাই যে হারে বোকা বানাই।
—হাহাহা
সবাই মিলে টুকটাক কথা বলার সময়
জান্নাত আমাদের দেখে এগিয়ে আসলো।
জান্নাতঃকেমন আছো?
আমিঃহুম ভালো,তুমি?
জান্নাতঃভালো
আমিঃনিলু ও পদ্মিনী আর পদ্মিনী ও
আমার বোন।
নিলুঃহ্যালো পদ্মিনী
জান্নাতঃহাই
আমিঃওকে তোমার সাথে রেখো
জান্নাতঃহুম সমস্যা নেই।কিন্তু এতোদিন
খোজ নিলে না কেনো?
আমিঃযেভাবে আমার আব্বু চাচ্চুকে
অপমানিত হতে হয়েছে তারপরেও
কিভাবে খোজ নেয় বলো।
জান্নাতঃআমি আগেই বলেছিলাম আমার
ফ্যামিলি কেমন।
নিলুঃআমরা কি এসব কথা বাদ দিতে
পারি?আসলে আমরা চিল মারতে যাচ্ছি
বিয়ে করতে না।ডোন্ট মাইন্ড,কারণ এটা
পারিবারিক কথা বাট তোমরা পাবলিকলি
কথা বলছো।
জান্নাতঃঠিক বলছো আপু
নিলুঃওরা থাক আমরা আলাদা যায় চলো।
জান্নাতঃঠিক আছে চলো।
নিলুঃব্যাগটা রাখ তোর কাছে।
ব্যাগ আমার কাছে দিয়ে কিছু না শুনেই
চলে গেলো।সালার কুত্তীটার জন্য কথাও
বলতে পারলাম না।বোন হয়ে শত্রুতা করলি।
চলবে………….