কে_তুমি,পর্ব:৩
Tahmina_Akhter
ওইদিন বিকেলে আব্দুল আঙ্কেল সাথে একজন রাক্বী নিয়ে আসে। কিন্তু, কায়নাত সেই রাক্বীর সঙ্গে দেখা করতে রাজী হচ্ছে না। তার মন শুধু চাইছে একটিবার ছাদে যেয়ে সাদ’কে একনজর দেখে আসতে।
কোনোভাবে যখন সে যেতে পারছে না তখন সে তার মা’কে বলল
– মা আমি একটু ছাদ যাব, বেশিক্ষন দাড়াবো না। তুমি একটু এদিকে বোঝাও ততক্ষনে আমি চলে আসব।
– আচ্ছা, আমি তাদের নাস্তা দিচ্ছি, তুই তাড়াতাড়ি চলে আসিস।
কি জানি ছাদে কি আছে?আজকেই যেতে দিলাম। নয়তো ও রাক্বীর সামনেই যেত না , মনে মনে বললেন শাহানা।
আমি খুশিতে মাথায় ওড়না পেচিয়ে একদৌড়ে চলে এলাম ছাদে।ছাদের এককোনায় দাড়িয়ে আছে সাদ। আমার উপস্থিতি হয়তো সে অনুভব করতে পেরেছে তাই সে আমার দিকে ঘুরে দাড়ালো।
– কি ম্যাডাম, আজ এত দেরি কেন? অন্য দিন তো আমার আগেই দাড়িয়ে থাকেন।
এই তোমাকে দেখতে এইরকম অসুস্থ লাগছে কেন?
– আসলে আমি নিজেও বুঝতে পারছি না আমার কি হয়েছে? তবে আমি বেশ কিছুদিন ধরে প্যারানরমাল কিছু অনুভব করছি আমার আশেপাশে। হয়তো এরকম ভাবার কারনে একটু ভীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।
– আচ্ছা, তুমি কি এসবে বিশ্বাস করো? একজন শিক্ষিত মানুষের কাছে এইসব শুনতে পাওয়া আসলেই অনেক লজ্জাজনক ব্যাপার।
– শুনুন, কুরআনে আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন, (আমি মানুষ এবং জ্বীনকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদত করার জন্য) সূরা যারিয়াত, আয়াত:৫৬।
আর এখন আমি যদি বলি অদৃশ্য কিছু অথবা জ্বীন বলতে কিছু নেই। তাহলে আমি আমার আল্লাহর কথার অমান্য করবো, বুঝলেন।
– আসলে, আমি জানতাম না কায়নাত।
এরই মাঝে শাহানার ডাক শুনতে পেলো কায়নাত, তাই সাদের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু, সাদ তাকে পিছু ডাকে, কায়নাত পিছনে তাকিয়ে বলল,
-কি?
– আচ্ছা, তুমি কি ডাক্তার দেখিয়েছো?
– না, এইসব বদনজর টাইপ ব্যাপারে হুজুর বা রাক্বীর পরামর্শ মেনে চলতে হয়।আল্লাহ চাইলে সমস্যা দূর হতে পারে। কিন্তু, কেন আপনি জানেন না এই সব ব্যাপার?
– আসলে, তুমি তো জানোই আমি দেশের বাইরে ছিলাম, তাই এইসব বিষয়ে তেমন ধারনা নেই,আল্লাহ মাফ করুন আমায়। উপরের দিকে তাকিয়ে দু’হাত তুলে বলল সাদ।
– আপনার ভুল ধারনা ভেঙেছে এতেই চলবে, আমি যাই। বাসায় আব্দুল আঙ্কেল একজন রাক্বী নিয়ে এসেছেন। দোয়া করবেন যাতে আমার উপর বদনজর কেটে যায়।
বলেই হেটে ছাদ থেকে নেমে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় কায়নাতের কানে কেউ বলল,
– এত সহজে আমার নজর তোমার উপর থেকে সড়বে না, হুমায়ারা।
কায়নাত এই কথা শুনতেই আশেপাশে তাকালো কে বলেছে কথাগুলো দেখার জন্য। কিন্তু, যখন দেখলো কেউ নেই তখন ভয়ে সে ওখানেই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়।
চলবে