কে তুমি?,পর্ব:১
Tahmina_Akther
হঠাৎ করেই শরীরে ঠান্ডা হীম শীতল বাতাস ছুয়ে দিল। আমার পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পিছনে ঘুরতেই দেখতে পেলাম সাদ কে।
সে প্রতিদিন বিকেলে ঠিক এইভাবে কোনো সাড়াশব্দ না করেই আমার পিছনে দারিয়ে পরে।
– আচ্ছা, সাদ আপনি প্রতিদিন কেন এরকম করেন আমি বুঝতে পারিনা?
কতবার বলেছি আমার ভয় করে হুট করে সাড়াশব্দহীন ভাবে পিছনে দাড়িয়ে থাকলে।
আর আপনি বিল্ডিং এর রেলিং টপকে এত তাড়াতাড়ি আসেন কি ভাবে?
সাদ আমার কথা শুনে অট্টহাসিতে মেতে উঠলো, আর আমি রেগে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
কিন্তু, আমার রাগ বেশিক্ষণ টিকেনি, কারন সাদের হাসি অনেক সুন্দর, সে হাসলে তার বা গালে টোল পরে ।
চোখের সামনে কারো এত মনোমুগ্ধকর হাসি দেখলে কেউ রেগে থাকতে পারে না কি?
সাদ কোনো রকম হাসি থামিয়ে আমাকে বলছে,
– কায়নাত,তুমি না অনেক ভীতু। এভাবে ভয় পাবার কি আছে? তুমি তো জানোই আমি প্রতিদিন এইসময় তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসি।
– বলা নেই কওয়া নেই হুট করে আপনার পিছে এভাবে কেউ দাড়িয়ে থাকলে বুঝতেন?
আর কখনো এইরকম করবেন না বুঝলেন।
– হুম, বুঝতে পেরেছি ম্যাম।
এবার আমি আসি, কে যেন তোমাকে ডাকতে আসছে ? ভালো থেকো,
আল্লাহ হাফেজ।
আমি সাদকে কিছু বলতে যাব তখন ছাদের দরজার সামনে আম্মুকে দেখতে পেলাম।
সাদের দাঁড়ানো জায়গায় তাকিয়ে দেখি ও নেই চলে গেছে।
আমাদের পাশের বাড়ির ছাদে তাকাতেই সাদকে দেখতে পেলাম।
মনে মনে এক স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম।
কিন্তু, আমার মনে প্রশ্ন জাগ্রত হলো,
সাদ জানলো কিভাবে যে ছাদে কেউ আসছে?
আর ও এত তাড়াতাড়ি পলকহীনভাবে এই ছাদ থেকে ওই ছাদে আসা যাওয়া কিভাবে করে?
অদ্ভুত তো,
পরের বার ওর সঙ্গে দেখা হলে জিজ্ঞেস করব।
আম্মুর সঙ্গে ছাদ থেকে নেমে পরলাম। রুমে আসতেই মাগরিবের আজান শুনতে পেলাম, তাই ওযু করে নামায পরলাম।
নামায শেষ করতেই আব্বুর ডাক শুনতে পেলাম।
আব্বু প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে এসে আগে আমাকে ডেকে নিয়ে দেখা করেন, কারন
আমি আমার আম্মু আব্বুর একমাত্র মেয়ে, আমার আর কোনো ভাইবোন নেই।
আব্বুর কাছে যাওয়ার আগে চা বানিয়ে নিলাম, এখন আব্বুর চা খাওয়ার সময় তাও আবার আমার হাতের।
আব্বুর হাতে চায়ের কাপটি দিয়ে বিপরীত পাশের সোফায় বসে পরলাম।
আব্বু আমাকে বলছেন
– কি রে এখন তোর শরীরটা কেমন, রাতে কি ঘুমোতে বেশি অসুবিধা হয়? তোর আব্দুল আঙ্কেলকে বলব এসে তোকে দেখে যেতে।
– আহ, আব্বু আপনি বেশি চিন্তিত হবেন না আমি ঠিক আছি।
রাতে আমার সাথে আম্মু থাকলেই হবে।
মারে, তুই যদি জানতি রাতে ঘুমের ঘোরে তুই কি করিস তাহলে বলতি না তুই ঠিক আছিস।
মনে মনে বললেন কায়নাতের আব্বু।
– আচ্ছা, তাহলে এবার গিয়ে পড়তে বস।
কায়নাত উঠে তার রুমে এসে পড়তে বসলো। পড়তে পড়তে কখন যেন টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরে।
হঠাৎ করেই কায়নাতের চিৎকার শুনে তার রুমে দৌড়ে আসে কায়নাতের মা বাবা।
এসে যা দেখলো এতে তাদের দুজনকে নিশ্প্রান দেখালো
চলবে