অন্ধকার_পল্লী,Part:১৩,১৪,১৫

অন্ধকার_পল্লী,Part:১৩,১৪,১৫
Tabassum_Riana
Part:১৩

আফিনের সামনে বসে আছে অবনী।ভীষন কাঁদছে অবনী।ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে অবনী।চোখ মুখ লাল হয়ে আছে ওর।কিছু বলার চেষ্টা করছিলো অবনী কিন্তু কান্নার জন্য পারছেনা না বলা কথা গুলো বলতে।আফিনের চোখ জোড়া ভরে এসেছে।ওর জলপরী কেন কাঁদছে?হঠাৎ অবনী কাঁদতে কাঁদতে আফিনের সামনেই পিছিয়ে যেতে থাকে।আফিন উঠে অবনীকে ধরার চেষ্টা করতে থাকে।অবনী ধরা দিচ্ছেনা।অবনী!!!!অবনী!!!!!!অবনী!!!চিৎকার করে ডাকতে থাকে আফিন।কিন্তু অবনী একসময় ধোয়ায় মিলিয়ে গেলো।শোয়া থেকে ধড়ফড় করে উঠে বসে আফিন।চোখ জোড়া বেয়ে টপটপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।এসব কি ছিলো?কি দেখলো ও এসব?ওর জলপরী কোনো বিপদে পড়েনি তো?ভাবতেই মাথা গরম হয়ে যাওয়ার জোগাড়।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো আফিন।বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরিয়ে সামনের বিল্ডিং গুলো দেখছে আফিন।রহমত সাহেব ঘরে এলেন তাড়াহুড়ো করে।আমেনা বেগমের কল পেয়ে এসেছেন।স্ত্রীর কান্নায় বুক ধড়ফড় করে উঠেছে ওনার।ফোনে কিছু বলতে পারেননি আমেনা বেগম শুধু বলেছিলেন জলদি ঘরে এসো।রহমত সাহেব ঘরে ঢুকে রুমে এসে আফসানা আর আমেনা বেগমকে দেখতে পেলেন।দুজনেই কাঁদছে। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে অবনীর কোন খবর নেই।কই গেলো মেয়েটা?ফোন ও বন্ধ বলেই কাঁদতে লাগলেন আমেনা বেগম।
,
,
,
,
অবনীকে ফ্লোরে ছুড়ে মারা হলো।জামার হাতা দুটো ছিড়ে আছে।মুখের কোনা বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।চোখ খুলতে পারছেনা অবনী।কিছু মানুষের বিকট হাসি শুনতে পাচ্ছে ও।খুব কষ্টে চোখ খুলল অবনী।সামনে মামুন আর ওর লোকেরা দাঁড়িয়ে ওকে লোলুপদৃষ্টিতে দেখছে আর হাসছে।আ আ আমি এ…….খা নে কে ক কেন?দূর্বল গলায় বলল অবনী।তোর কারনে মার খেয়েছি আমি।এ অপমান এতো সহজে ভুলবো মনে করেছিস?তোর লাভার তো তোকে ছেড়ে চলে গেছে।এখন দেখবো কে বাঁচায় তোকে?বলেই হাসতে লাগলো ওরা।মামুন এসে অবনীর হাতের ওপর জোরে পাড়া দিয়ে ধরলো আর এসব আরেকজন ভিডিও করছে।শাকিল নামের ছেলেটা ভিডিও করতে করতে বলছিলো জানিস এ ভিডিও কার কাছে যাবে?শাকিলের কথায় মাথা তুলে তাকায় অবনী।ওর হাতে ওর জোরে পাড়া দিয়ে দাঁড়ায় মামুন তোর জানের কাছে যাবে,তোর আফিনের কাছে যাবে।বলে সবাই একসাথে হেসে উঠে।না না প্লিজ ওনাকে পাঠাবেননা কাঁদতে কাঁদতে বলে অবনী।কেন তোর পেয়ারে আফিন কষ্টপাবে বলে?মামুন আরো জোরে অবনীর হাতে পাড়া দিয়ে বলে উঠে।ওদের মধ্যে কে যেন অবনীর মুখের মধ্যে গরম পানি ছুড়ে মারে।অবনীর মুখে যেন আগুন লাগিয়ে দেয়া হলো।চিৎকার করে উঠে অবনী।ওরা বেরিয়ে যায়। অবনী আধমরা অবস্থায় সেভাবে পড়ে থাকে।
,
,
,
,
রহমত সাহেব পুলিশ সুপারটির দিকে
অবাক চোখে চেয়ে আছেন।এরা কি মানুষ?২৪ঘন্টা হওয়ার আগে নাকি কোন জিডি লেখবো না।কি হলো রহমত মেয়া বেরিয়ে যান।আপনার মেয়ের কিছু হয়নি। দেখেন নিজের আশিকের সাথে কোন আবাসিক হোটেলে মজা করছে পান চিবোতে চিবোতে বললে পুলিশ সুপার তারেক মিনহাজ।জিডি লেখবেননা ভালো কথা আমার মেয়েকে নিয়ে এসব কথা বলার অধিকার কাউকে দেইনি।দাঁতে দাঁত চেপে বললেন রহমত সাহেব।এহ চোরের মার বড় কথা!! মেয়েকে তো ঠিকমতো সামলাতে পারেননা আবার শাসাচ্ছেন আমাদের?রহমত সাহেবের দিকে রাগী গলায় বললেন তারেক মিনহাজ।কমিশনার কে বলবো আমি কথা টা বলে উঠে বেরিয়ে গেলেন রহমত সাহেব।বাহিরে এসে গেট ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন তিনি।দারোয়ান এসে ধরলেন রহমত সাহেবকে।স্যার কাঁদবেননা বলে উঠলো দারোয়ান। আমার মেয়েকে নিয়ে কি কি আবোলতাবোল বলছিলো কাঁদতে কাঁদতে বললেন রহমত সাহেব।সকাল থেকেই অবনীর নম্বরে কল দিয়ে দিয়ে পাগল হচ্ছে আফিন।ফোন বন্ধ রেখেছে কেন এই মেয়ে?মাথাটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে আফিনের।শব ধ্বংস করতে পারলে ভালো লাগতো ওর।অফিসের কাজে ও ঠিক মতো মন বসাতে পারলোনা আফিন।কোন এক অজানা ভয় ওর ভিতরটাকে কুরেকুরে খাচ্ছে।কারোর চোখে ঘুম নেই বাসার।কান্নার রোল পড়ে গেছে রহমত সাহেবের বাসায়।ঘুম নিদ্রা খাবার নেই কারোর।মা থেকে থেকে কেঁদে উঠছে মেয়ের জন্য।বাবা কিছুক্ষন পর পর দরজার দিকে তাকাচ্ছে আর অবনীর নম্বরে কল দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু ফোন বন্ধ আসছে।
,
,
,
,
অবনীকে কিছু খেতে দেয়নি ওরা।শুধু টর্চার করে গেছে ওকে।ওর সামনে খাবার এনে মুখের সামনে ফেলে দেয়া।পানি মুখের সামনে এনে ফেলে দেয়া এবং ওকে জোর করে নিচ থেকে খাবার উঠিয়ে খেতে বাধ্য করা হচ্ছিলো।অবনী ক্ষুধার জ্বালায় খাবার গুলো খাচ্ছিলো আর বখাটে গুলো ওর পিঠে বেল্ট দিয়ে মারছিলো।কাঁদছিলো অবনী গুমরে গুমরে।ওর মুখ থেকে খাবার গুলো পড়ে যাচ্ছিলো।খাবার শেষে ওরা অবনীর পায়ে সিগারেটের ছেকা দিয়েছে।চিৎকার করে কাঁদছিলো অবনী।এভাবে দুইদিন কেঁটে গেলো।রহমত সাহেব আর আমেনা বেগম মেয়েকে পেতে জানপ্রান লাগিয়ে দিচ্ছিলো কিন্তু কোন ভাবেই অবনীর খোঁজ পেলোনা।
আফিন ও অবনীকে কন্টাক্ট করার অনেক চেষ্টা করেছে কিনৃতু পারেনি।তাহলে কি সত্যিই জলপরীকে হারিয়ে ফেলল আফিন?

চলবে

#অন্ধকার_পল্লী
#Tabassum_Riana
Part:১৪_১৫
,
,
,
,
প্লেন বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলো।আফিন প্লেন থেকে নেমে আসে।আজ প্রথমেই অবনীর বাসায় যাবে ও।এ কয়দিন থেকে মনটা বড় অস্থির হয়ে আছে জলপরীকে একনজর দেখার জন্য।থানা থেকে মাত্রই ঘরে এসে পৌছালো রহমত সাহেব।রুমাল দিয়ে কপাল মুছার নামে চোখ জোড়াও মুছে নিলো।আমেনা বেগম ভীষন অসুস্থ হয়ে পড়েছে।আফসানা মায়ের মাথার কাছে এসে বসে আছে।মা কিছু তো খাও।এমন কেন করছো?আপু ফিরে আসবে তুমি দেইখো।কান্না জড়িত কন্ঠে মায়ের চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলল আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,আমার অবনীরে আইনা দে।আল্লাহর কসম লাগছে মাইয়াডারে আইনা দে কেউ।বলেই কাঁদতে লাগলেন আমেনা বেগম।আফসানা নিজেকে সামলাতে পারছেনা।বড় বোনটাকে ভীষন মিস করছে ও।কই আছে বোনটা কে জানে?হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে চোখ মুছে পিছনে ফিরলো আফসানা।রহমত সাহেব দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছেন।আফসানা বাবার কাছে এসে দাঁড়ালো।বাবা পুলিশ আপুকে পেয়েছে?কোথায় আপু?বলোনা বাবা।আফসানা বলতে থাকলো।
ঐ তারেক মিনহাজের বিরুদ্ধে কম্পলেইন লেটার লিখে পাঠাইছি কমিশনারের কাছে।আমার অবনীর নামে যা তা বলে।বেডার সাহস কম না।আমার মাইয়া স্বর্নের টুকরা আছিলো।কে জানি কই আছে মাইয়াডা?কথা গুলো বলে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন রহমত সাহেব।
বাবা!!! আফসানা চিৎকার করে রহমত সাহেবের পাশে বসে পড়লো।রহমত সাহেবের ফোন থেকে আমীন কে
কল দিলো আফসানা ডাক্তারকে নিয়ে আসার জন্য।
খাওয়ার পানি এনে রহমত সাহেবের মুখে ছিটালো আফসানা।রহমত সাহেব পিটপিট করে তাকালেন।আফসানা বাবার হাত ধরে খাটে এনে মায়ের পাশে শুইয়ে দিলো।বাবা শুয়ে থাকো,তোমার জন্য পানি আনছি।বলেই আফসানা পাকঘরের দিকে পা বাড়ালো।
,
,
,
,
রহমত সাহেবকে পানি দিয়ে চেয়ারে বসলো অাফসানা।হঠাৎ কলিংবেলের শব্দে দরজার কাছে দৌড়ে গেলো অাফসানা।ডাক্তার এসেছে ভেবে দরজা খুলে দিলো অবনী।আফিন তড়িঘড়ি করপ ভিতরে ঢুকে পড়লো।অবনী কই?জোরে বলল আফিন।আফিনের চেহারা দেখে অাফসানার বুঝতে দেরি হলো না এই কয়টা দিন কতোটা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে কাঁটিয়েছে আফিন।আপনি বসুন সোফা দেখিয়ে বলল আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আমি বসবোনা। বলো অবনী কই?ওর ফোন বন্ধ কেন?একনাগাড়ে জিজ্ঞেস করতে থাকলো আফিন।
আফিনকে ধরে সোফায় বসালো অাফসানা।অবনীর গায়েব হওয়া থেকে রহমত সাহেবের থানায় চক্কর কাঁটা সবই আফিনকে বলল আফসানা।আফিনের মাথা কাজ করছেনা।অবনী নেই ভাবতেই পারছেনা আফিন।বুকে চিনচিনে ব্যাথা অনূভব করছে আফিনের।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে?আস্তে করে প্রশ্ন করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,মা ভালো নেই।বাবা থানা থেকে এসেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।আমাদের দারোয়ান কে কল দিলাম।ডাক্তার এনে দেয়ার জন্য।বলে উঠলো আফসানা।আফিন সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে রহমত সাহেবের রুমের দিকে এগোলো।মোটা কালো মহিলাটার কাছে এসে দাঁড়ালো মামুন।আমি যেই মেয়েটাকে এনেছি।ওকে এখন যেন কেউ স্পর্শ না করে।দুদিন পর যাকে ইচ্ছা পাঠাবেন ওর কাছে।বলে উঠলো মামুন।অবনী সেন্সলেস অবস্থায় পড়ে আছে ফ্লোরে।শরীরের প্রতিটি অংশ যন্ত্রনায় ভরে আছে।এ কয়টাদিন ওকে পশুর মতো অত্যাচার করেছে।চোখ বন্ধ করতেই মা বাবা আফসানা আর যাকে মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছে সেই আফিনের চেহারা ভেসে উঠছে।প্রত্যেকটা সময় মৃত্যুর রাস্তা থেকে ফিরে এসেছে অবনী।মনে মনে শুধু আফিনকে ডেকেছে অবনী।আফিন ওকে মনে নিতে পারবেনা।আর কখনো কাছে ও টানবেনা।যে মেয়েটা দিনের পর দিন এভাবে অত্যাচারিত হয়েছে সে কারোর ভালোবাসার যোগ্য না।
,
,
,
,
রহমত সাহেব পাশে তাকিয়ে আফিনকে দেখতে পেলেন।আমেনা বেগম বিছানার সাথে লেগে গেছেন।আফিন রুমে ঢুকতেই মাথা তুলে আফিনকে দেখেই ভেজা চোখ জোড়া আবার ও ভিজে গেলো আমেনা বেগমের।হুহু করে কেঁদে উঠলেন ওনি।আফিন খাটের পাশে এসে বসলো।রহমত সাহেব আফিনের হাত চেপে ধরলো।আমার মাইয়াডারে ফিরাইয়া আইনা দেও বাবা।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রহমত সাহেব।আফিনের চোখ জোড়া ভিজে এলো।
আফিন কিছু বলতে যাবে তখনই ওর ফোনে ভাইবারে মেসেজের রিংটোন বেজে উঠে।আফিন ফোন বের করে মেসেজ চেক করে দেখলো আননোন নম্বর থেকে ভিডিও মেসেজ পাঠালো কে যেন।
ভিডিও অন করতেই আফিনের মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার যোগাড়।অবনীকে অত্যাচারের ভিডিও পাঠিয়েছে কে যেন।ভিডিওর ভলিউম বাড়াতেই কে যেন বলছিলো “মিঃ আফিন খান তোমার পেয়ারে অবনীকে দেখো।কতোটা কষ্ট পাচ্ছে ও?;বাঁচাবানা ওকে?এখন ও ছুই নাই ওকে আমরা।তোকে আটচল্লিশ ঘন্টার সময় দিলাম।এ সময়ের মধ্যে অবনীকে খুঁজে নে।আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে না এলে ওকে নিয়ে আমরা আনন্দ করবো তারপর বেঁচে দিবো চড়া দামে।কথা গুলো বলে ওদের মধ্যে একজন অবনীর পিঠে চাবুক দিয়ে বাড়ি মারলো।অবনী চিৎকার করে কাঁদছে।অবনীরচিৎকার শুনে রহমত সাহেব আর আমেনা বেগমের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেলো।চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন ওনারা।এরই মধ্যে আমীন ডাক্তার নিয়ে এসেছে।আফিন ড্রইং রুমে এসে বসলো।বডিগার্ডরা কোথায় ছিলো?ওদের উপস্থিতিতে অবনীকে কি করে নিয়ে গেলো?ভাবতে ভাবতে ড্রাইভার কে কল দিলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো স্যার।অপর পাশ থেকে বলে উঠলো ড্রাইভার।
,,,,,,,,,,,,,,,,বডিগার্ডরা কই?প্রশ্ন করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,স্যার ওনারা হাসপাতালে ভর্তি।যেদিন অবনী ম্যাম গায়েব হইলো ঐদিনই কে জানি বডিগার্ডদের মাইরা রাস্তায় ফালায় রাখছিলো।
,
,
,
,
কান থেকে ফোন সরালো আফিন।চোখ লাল হয়ে গেছে ওর।রক্তবর্ণ চোখ জোড়া দিয়ে আগুনের ফুলকি উঠছে ওর।ডাক্তারের বিল মিটিয়ে বেরিয়ে গেলো আফিন।ভাইবারে যে নম্বর থেকে ভিডি ও এসেছিলো সে নম্বরটি বন্ধ।কই খুঁজবে আফিন এখন ওর জলপরীকে।তবে এই তারেক মিনহাজের খবর নিতে হবে।ফোন বের করে আফিন তার একজন লোককে তারেক মিনহাজের সব ডিটেইলস ওকে দেয়ার জন্য।আফিন হাসপাতালে ছুটে গেলো ওর বডিগার্ড দের কাছে।এখন যেকোন তথ্য ওর জন্য ইম্পরট্যান্ট,,,,,,,

Part:১৫
,
,
,
,
রক্তাক্ত অবস্থায় বসে আছে তারেক মিনহাজ।তার চোখজোড়া ভয়ে ছেয়ে গেছে।ঠোঁটের কোনা বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।গাল দুটো লাল হয়ে আছে।ইউনিফর্ম এর কলারের আর হাতার অংশটুকু ছিড়ে গেছে।ভয়ে ঢোক গিলো দুবার। আমি করিয়েছি ওকে কিডন্যাপ আমি করিয়েছি।কাঁপা কাঁপা গলায় বলল তাডেক মিনহাজ।সাথে সাথে তার বুকে জোরে লাথি এসে পড়লো।তারেক মিনহাজ নিচে পড়ে গেলেন।আফিন তারেকের সামনে এসে দাঁড়ালো।শুয়োরের বাচ্চা তোদের জনগনের কল্যানে যোগ দেওয়া হয়েছে। আর তোরা এসব করে বেড়াস?নিজের মা বোনের সাথে এমন করতে পারবি?চিৎকার করে বলল আফিন।তারেকের শার্টের কলার ধরে আরো দুতিনটে ঘুষি লাগালো আফিন ওর মুখে।
,
,
,
তোদের জন্য একটা মেয়ে কতোটা নির্যাতিত হচ্ছে।নিজেদের কিভাবে পুলিশ বলিস? তোদের মতো অমানুষদের জন্য মেয়েরা স্বাধীন জীবন যাপন করতে পারেনা।কেন করলি এসব?অবনী কি দোষ করেছিলো?চিৎকার করে বলতে লাগলো আফিন আর সেই সাথে ঘুষি মারলো তারেক মিনহাজ কে।
,
,
,
,
কয়েকঘন্টা আগে
বডিগার্ড দের কাছে ছুটে এসেছে আফিন।ওদের কারোর হাত ভাঙ্গা আর কারোর পা ভাঙ্গা।আফিনকে দেখে তারা ভয়ে চুপসে গেলো।স্যরি স্যার ম্যামকে বাঁচাতে পারলামনা।বলে উঠলো বডিগার্ডরা।সরি বলতে হবেনা, শুধু বল কি হয়েছিলো আমার অবনী কই?প্রশ্ন করলো আফিন।ঐদিনের পুরো কাহিমী আফিনকে খুলে বলল বডিগার্ড রা।আফিন যেন নিজের ওপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেছে।ওদের পাশের একটা চেয়ারে বসে পড়লো আফিন।স্যার আমরা খবর পেয়েছিলাম এখানে শুধু বখাটেরা না অন্য একজনের হাত ও আছে।বলে উঠলো বডিগার্ডরা।
অশ্রু ভরা রক্তবর্ন চোখজোড়া দিয়ে তাকালো আফিন।কে সে?রাগী গলায় জিজ্ঞেস করলো আফিন
,
,
,
,,,,,,,,,,,,,,,,স্যার সে তারেক মিনহাজ পুলিশ সুপার।
,
,
,
,
হাত মুঠ করে আফিন।চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।নিজেদের খেয়াল রাখবি।বলে আর একমিনিট ও দাঁড়ায় না।বাহিরে বের হয়ে আসে।হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ফোন বের করে একটা নম্বরে কল দেয় আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো স্যার!!!আসিফ (আফিনের পিএ)
,,,,,,,,,,,,,,একটা কাজ করতে হবে।রাগী গলায় বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,জি স্যার কি কাজ?
,,,,,,,,,,,,,,,,,তারেক মিনহাজ।পুলিশ সুপার সে।তাকে নিয়ে আমার বনানীর পোড়া বাড়িতে চলে আয়।গম্ভীর গলায় বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,প প পোড়া বাড়ি!!!!কে ক কেন স্যার?পোড়া বাড়ির কথা খানিকটা ভয় পেয়ে গেলো আসিফ।
,,,,,,,,,,,,,,Don’t Question me.Its urgent.Do that quickly. I need him right now.(চিৎকার করে বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,ok sir.
,
,
,
,
ফোন কেঁটে পকেটে রাখলো আফিন।
গাড়ি নিয়ে রওনা হলো পোড়া বাড়ির উদ্দেশ্যে।পোড়া বাড়ির সামনে আসতেই আসিফের গাড়ি দেখতে পেলো আফিন।ঠোঁটের কোনায় হিংস্রতা ফুঁটে উঠলো আফিনের।পোড়া বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই আসিফ সামনে এলো আফিনের।
,,,,,,,,,,, স্যার এনেছি।বলে উঠলো আসিফ।
হুম।আসিফের কথায় পাত্তা না দিয়ে তারেকের সামনে এসে দাঁড়ায় আফিন।প্যান্টের বেল্ট খুলে খানিকটা হাতে পেচিয়ে নিলো আফিন।আমাকে তুলে আনিয়েছেন কেন?জানেন কে আমি?পুলিশ সুপার।এক্ষুনি তোকে এ্যারেস্ট করাতে পারি।চিনিস আমাকে?এক্ষুনি ছেড়ে দে।চেঁচাতে লাগলো তারেক মিনহাজ।
অবনী কই?তারেক মিনহাজের সামনে টেবিলে জোরে হাত রেখে বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,কে অবনী?চিনিনা তাকে।ছেড়ে দে আমাকে।একজন পুলিশের সাথে দুর্ব্যাবহার করার পরিনাম ভয়াবহ হয়।বলে উঠলো তারেক।
,,,,,,,,,,আমি ভদ্রভাবে কথা বলছি এখনো।জলদি বল অবনী কে কই রেখেছিস?চিৎকার করে বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,আরে সেই কতক্ষণ ধরে অবনী অবনী লাগিয়ে রেখেছিস। আমি কি করে জানবো তোর অবনী কই?চেঁচিয়ে উঠলো তারেক।
,,,,,,,,,,,,,আর সহ্য হলো না আফিনের বেধড়ম মারতে লাগলো তারেককে বেল্ট দিয়ে।
,
,
,
ব্যাথায় চিৎকার করছে তারেক।জানটা যেন কেউ টেনে ছিড়ে নিচ্ছে।আফিনের প্রত্যেকটা আঘাতে বাবা গো মাগো বলে চিৎকার করছে তারেক মিনহাজ।
,
,
,
,
ভবিষ্যৎ মার থেকে নিজেকে বাঁচাতে তারেক মিনহাজ সত্য টা বলে দিলো।অবনীকে কই রেখেছিস তোরা?রাগী গলায় বলল আফিন।
স্যার জানিনা।বলে উঠলো তারেক।আফিন আবার মারতে আসলে তারেক বলল স্যার জানিনা সত্যি।ওদের কাউকে কল দিয়ে জান কই ওরা।বলে উঠলো আফিন।তারেক মামুনের নম্বরে কল দিলো।
স্যার নম্বর তো বন্ধ।বলে উঠলো তারেক।এতো সতো বুঝিনা আমি।কল দিয়ে জানা আমাকে। চিৎকার করে বলল আফিন।তারেক একে একে সবার নম্বরে কল দিলো।শেষমেষ নাহিদ কল উঠালো।
,,,,,,,,,বস তোরে কল করতে মানা করছিলো না?অপর পাশ থেকে বলল নাহিদ।

,,,,,,,,,,,,,,,,হ করছিলো তো।আমি একখান কামে কল দিছিলাম।

,,,,,,,,,,,,,,,,কি কাম?ভ্রু কুঁচকালো নাহিদ।

,,,,,,,,,,, নতুন দুইডা মাইয়া পাইছি।বসের পছন্দ হইবো।তোরা কই জানলে পাঠাইতে পারতাম।বলে আফিনের দিয়ে ভয়ার্ত চোখে তাকালো তারেক।

,,,,,,,,,কাউরে কইয়া দেস নাই তো?কিছুটা সন্দেহ নিয়ে বলল নাহিদ।

,,,,,,,,,,,,,আরে না না কারে কমু?

,,,,,,,,,,,,,,,,আমরা আছি গাজীপুরের পতিতা পল্লী।বলেই হালকা কাশলো নাহিদ।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,নাম কি পতিতা পল্লীর?তারেকের মুখে পতিতা পল্লীর নাম শুনে মুখ শুকিয়ে গেলো আফিনের।ওর জলপরীর কতোটা নির্যাতন হচ্ছে ভাবতেই বুক ফেঁটে যাচ্ছে আফিনের।

,,,,,,,,,,,,,,অন্ধকার পল্লী।বলে উঠলো নাহিদ।
,
,
তারেকের হাত থেকে ফোন নিলো আফিন।কই আমার অবনী?প্রশ্ন করলো আফিন।
গাজীপুরের অন্ধকার পল্লী পতিতাপল্লীতে।বলে উঠলো তারেক।আসিফ!!!! চিৎকার করে উঠলো আফিন।
জি স্যার!!!আফিনের পাশে এসে দাঁড়ালো আসিফ।ওকে তোর সাথে রাখ।যেন কোন চালাকি করতে না পারে।দাঁতে দাঁত চেপে বলল আফিন।ওকে স্যার বলে উঠলো আসিফ।
আফিন তৎখনাৎ বেরিয়ে পড়লো অন্ধকার পল্লীর উদ্দেশ্যে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here