শ্রাবণের শেষ সন্ধ্যা
২য়_পর্ব
মুশফিকা রহমান মৈথি
স্নেহা পুনরায় ঘাড় কাত করে ছোটে ভেতরে। মিনিট দশেক বাদে তার ছোট চাচা শান্তকে নিয়ে হাজির হয় সে। নবনীতা স্নেহার নালিশ করতেই যাবে অমনি তার চোখ খিঁচিয়ে আসে। রাগে শরীর জ্বলতে থাকে। হিনহিনে স্বরে বলে,
“আপনি? আপনি কি আমার পিছু করছেন নাকি?”
স্নেহার এই ছোট চাচা অন্য কেউ নয় বরং সেই নীল শার্ট যুবক যাকে বাসে ঠাটিয়ে থাপ্পড় বসিয়েছিলো নবনীতা। এই ইভটিজারটিকে আবারো চোখের সামনে দেখবে এটা কখনোই ভাবে নি সে। ভেবেছিলো আপদকে বিআরটিসি বাসেই রেখে এসেছিলো সে। তখনের ঘটনা মনে পড়তেই রাগে দ্বিতীয়বার গা জ্বলে উঠলো তার। অগ্নিদৃষ্টি প্রয়োগ করলো সে শান্তের দিকে। দৃষ্টিতে যদি কাউকে ভস্ম করা যেতো বেশ ভালো হতো। তাহলে শান্তকে এখনি ভস্ম করে দিতো নবনীতা। শান্ত প্রথমে শান্ত থাকলেও নবনীতার আরোপের প্রতিবাদ না করে থাকতে পারলো না। তীব্র কন্ঠে বললো,
“আমি আপনার পিছু নিতে যাবো কেনো? এটা আমার ভাইয়ের বাসা। বাস থেকে দেখছি, অকারনে আপনি আমাকে অপমান করেই যাচ্ছেন। আমার ও একটা সহ্য সীমা আছে বলছি।“
“সহ্য সীমা? একে তো পথে ঘাটে মানুষকে হ্যারাস করেন আবার সহ্যসীমার জ্ঞান দিচ্ছেন? বাহ মজা তো!“
নির্লিপ্তভাবে কথাটা অকপটে বলে দেয় নবনীতা। শান্ত স্নেহার দিকে তাকিয়ে বলে,
“আম্মু তুমি একটু ভেতরে যাও তো।“
শান্তের শান্ত কন্ঠে খানিকটা থতমত খেয়ে যায় নবনীতা। ব্যস্ত কন্ঠে বলে,
“কেনো? ও ভেতরে যাবে কেনো শুনি? এই স্নেহা তুমি এখানেই বসে থাকবে।“
শান্ত এবার কন্ঠ স্বাভাবিক করে বলে,
“ও থাকবে কেনো? একটা বাচ্চা মেয়ের সামনে আপনি লাগাম ছাড়া কথা বলছেন। মাথার স্ক্রু কি সব গুলো গেছে নাকি?”
“ওর শোনার উচিত। যাকে গার্ডিয়ান ভাবছে লোকটা কেমন? ওরও একটা সেফটি আছে।“
“উফফফফফ, আর কতবার বলবো বলুন তো, আমি আপনাকে ইচ্ছে করে ছুই নি। আমি তো শুধু ব্যালেন্স হারিয়েছিলাম।“
“ওহ আর আমার পিঠে যে শুরশুরি দিচ্ছিলেন তার বেলায়? আপনাকে একটা নয় একশটা থাপ্পড় মারা উচিত। পুলিশে দেওয়া উচিত।”
“হ্যা?? পাগল নাকি??? এই এখন ই বের হন আমার বাসা থেকে। এখন বের হবেন। আমি স্নেহার জন্য নতুন টিচার রাখবো। আপনাকে ওকে পড়াতে হবে না।“
শান্তের কথায় আতে ঘা লাগে নবনীতার। চোরের মার বড় গলা— শুনেছিলো। এটা চোরের চাচার বড় গলা। তার আত্নসম্মান এতো ঠুঙ্কো নয়। মধ্যবিত্তদের বিত্ত না থাকলেও আত্নসম্মানটা বেশ কড়া ভাবেই থাকে। সেও দমে যাবার পাত্রী নয়, স্পষ্ট কড়া কন্ঠে বললো,
“আমার ও ইচ্ছে নেই আপনার গাধা ভাতিজিকে পড়ানোর। যাকে তিন মাস ধরে আমি সরল শেখাতে পারি নি। আমি কাল থেকে ওকে পরাবো না। আর আমার যে বেতনটা হয়েছে সেটা মসজিদে দান করে দিয়েন। আপনাদের ওই টাকা ছুলে আমার গা গুলাবে।“
বলেই ব্যাগটা ঘাড়ে নিয়ে নিলো। হনহন করে বেড়িয়ে গেলো সে। শান্ত দাঁতে দাঁত কটমট করতে লাগলো। একটা সামান্য মেয়ের এতো দাম্ভিকতার কি আছে! নবনীতার শেষ বাক্যটি তার পুরুষ আহমিকায় পুনরায় আঘাত হানলো। একেই তো বাসে ঘটে যাওয়া কাহিনীটা মাথায় খোদাই হয়ে আছে। মনে পড়লেই রা জ্বলে উঠছে। শেষ পর্যন্ত তাকে হ্যারাসার উপাধি পেতে হলো? এমন হতো মেয়েটি বিশ্বের সবথেকে সুন্দরী কেউ; তাও নয়। শ্যামলা মধ্যবিত্ত মেয়ে, পরণের জামাটাও অতি সাধারণ। কোনো কারুকার্য নেই, নেই কোনো সাজের ঘটা। চুল বেনুনি করে এক পাশে ঝুলিয়ে রেখেছে। এমন মেয়েকে সে কখনোই পছন্দ করবে না। ইভটিজিং বা হ্যারাস তো বহু দূরের কথা। চোয়াল শক্ত করে বললো,
“যতসব, আজাইরা”
বলেই নিজ রুমে চলে গেলো শান্ত। মাঝখান থেকে চেয়ারে বসে পা ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে রঙ্গ দেখলো স্নেহা। ক্ষণিকের জন্য মনটায় আষাঢ়ের মেঘ ভিড় করলেও চাচুর বদৌলতে আবারো অগ্রহায়নের কোমল সূর্য খিলে গেলো। পা দোলাতে দোলাতে গুনগুন করতে লাগলো,
“আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে–
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?।
আমরা সবাই রাজা”
নবনীতার ঘুম ভাঙলো ফযরের আযানে। চোখখুলে কিছুক্ষণ শূন্য দৃষ্টিতে তাকালো সিলিং এর দিকে। এখনো অন্ধকার কাটে নি। রাতের আধার চিরে সূর্যের কিরণ পৌছায় নি পৃথিবীতে। আকাশের তীব্র গর্জন শোনা যাচ্ছে। সানসিটের বৃষ্টির শব্দ কানে আসছে। হিম বাতাস লোমে শীতের অনুভূতি দিচ্ছে। গতরাতে ঘুমটা ভালো হয় নি নবনীতার। অবশ্য ঘুমের কি দোষ, আত্নসম্মান দেখাতে যেয়ে টিউশনটা ছেড়ে দিয়েছে সে। এখন এই বেগ পেতে হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক যাবৎ এই প্যারাটাই বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাকে। হাতে মাত্র তিনশ টাকা রয়েছে। মাত্র মাসের শুরু, কিভাবে বাকি মাসটা চালাবে সেই হিসেব মিলিয়ে পারছে না। মার কাছে চাইলে হয়তো পাওয়া যেতো কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। মাকে বলাই হয় নি তার টিউশনটা আর নেই। জানতে পারলে গুষ্টির তুষ্টি করে দিবেন শারমিন বেগম। সেটা বেশ ভালো করেই জানে নবনীতা। বুকে চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো তার। আপাতত আল্লাহ তাআলা ই ভরসা। যদি তার করুণা দৃষ্টিপাত হয় নবনীতার উপর।
নামায পড়ে তার তিনফিট বাই তিনফিটের বারান্দায় দাঁড়ায় নবনীতা। সূর্যের উদয়মান দৃশ্য যদিও তার বারান্দা থেকে, তবুও প্রতি ভোরে এখানে দাঁড়াবে নবনীতা। এই সময়টা তার একান্ত সময়। কোনো চিৎকার চেচাঁমেচি নেই। শান্ত পরিবেশ, যেখানে শুধু সে এবং তার ভাবনার শঙ্গমালা। একাকীত্ব সময় নিজের ভেতরটাকে ভালো করে বুঝে নেবার সময়। নবনীতাও এখন সেটাই করবে। এই একটা সপ্তাহ একটা চিন্তা তাকে ভুগাচ্ছে। আচ্ছা সেদিন কি সে ভুল ছিলো? আত্নসম্মানের পরোয়া না করে যদি সেদিন মাথা নুয়ে নিতো তবে কি ফলাফল তৃপ্তিময় হতো! কে জানে হয়তো হতো! ফলাফল তৃপ্তিময় না হলেও টিউশনটা তো যেতো না। তখন টাকার এতো চিন্তা হয়তো করতে হতো না। নবনীতা হাসে, আর ভাবে এই ফিনফিনে কাগজটার কি দাম! এই কাগজটার জন্য আজ সে নিজের সম্মান হারানোর কথা চিন্তা করছে।
সকাল ৯টা,
শারমিন বেগমের হিনহিনে কন্ঠে শোনা যাচ্ছে। জসীম সাহেব নাকে মুখে পাউরুটি খাচ্ছেন। বাস ধরতে হবে, দশটায় অফিস। মিনিট দুই দেরীও বসের সহ্য হয় না। শারমিন বেগম রান্নাঘর থেকে চেচিয়ে বললেন,
“আজ অন্তত বাজারটা করো”
“সেদিন না করলাম?”
“সেদিন পাড় হয়েছে দু সপ্তাহ। সেই তো এনেছিলে একটা ছোট রুই মাছ। শেষ সেটা। কম তো খাওয়া হয় না। চার জন মানুষ। আজকে আধা কেজি চিংড়ী এনো। সকালে লাউটা কচি আছে। খোকা লাউ চিংড়ী খাবে বলেছে।“
“আচ্ছা, আমি আসলাম।“
“টিফিনটা নাও।“
রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে টিফিন ধরালেন জসীম সাহেবের হাতে। জসিম সাহেব পানিটা ঢকঢক করে খেয়েই ছুট লাগালেন। বাবা বেড়িয়ে যেতেই নবনীতাও বের হবার জন্য পা বাড়ালো। সাথে সাথে শারমিন বেগম বললেন,
“খাবি না?”
“আমাকে একটা বক্সে দিয়ে দাও। আসতে আসতে দেরি হবে।“
“আচ্ছা দিচ্ছি।“
মিনিট পাঁচেক পর, পাউরুটি এবং ভাজি পুরে একটা বক্স দিলেন তিনি নবনীতার হাতে। নবনীতা তখন ধীর গলায় বললো,
“মা, কিছু টাকা হবে?”
“কত?”
“দু তিনশ?”
“হ্যা, হবে। তা হঠাৎ আমার কাছে চাইলি?”
“আসলে বেতনটা পেতে দেরি হবে, কিছু বই কেনা লাগতো। নীলখেতে যাবো।“
“এই বড়লোকদের এতো ঢং, পনেরোদিন হয়ে গেছে এখনো বেতন দিচ্ছে না। এ কেমন কথা? আর তুই মুখে কুলুপ এটে আছিস কেনো? কিছু বলতে পারিস না?”
“আসলে চাইতে লজ্জা করে তো। তাই চাওয়া হয় না।“
নবনীতার ধীর গলার উক্তি শুনেই একটা রাগ টানলেন শারমিন বেগম। হিনহিন কন্ঠে বললেন,
“আহ, ঢং! বাপের মতো হইছো? শোনো এমন দিল দরিয়ে হলে না ওই বাপের মতোই থেকে যেতে হবে। পনেরো বছর ধরে সেকেন্ড ম্যানেজার হয়েই বসে আছে। তার জুনিয়াররা ম্যানেজার, এজিএম, ডিজিএম হচ্ছেন আর উনি সেই মিরপুর ব্রাঞ্চ এ পড়ে আছেন। সে তো গোনা টাকা, তাতে সংসার চলে? এখনো খোকার টিউশনের টাকা দেওয়া হয় নি। ছেলেটা এখন ইন্টারে। ভালো না করলে এডমিশনে ডাব্বা দিবে। তোর বাপের হুশ আছে? আর তুই হয়েছিস একেবারে বাপের মত।“
শারমিন বেগমের কথা শুনে টাকা চাওয়াটা সবচেয়ে বড় ভুল মনে হচ্ছে নবনীতার। এখন এই আলাপ চলবে আধা ঘন্টা। অবশ্য শারমিন বেগমের ও দোষ নেই। বেঁচারি বিগত পঁচিশটা বছর এভাবেই সংসার করছেন। উনি বলেই হয়তো এই গোনা টাকায় সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন। ছোট মুরগীর খোঁপের মত বাসায় থাকছেন। দুই ছেলে মেয়েকে নিজ সাধ্য অনুযায়ী পড়াচ্ছেন। মাস শেষে কারোর কাছে হাত ও পাততে হচ্ছে না। এর মধ্যে টাকা জমানোর ও চেষ্টা করেন তিনি। হয়তো এই চিৎকার চেঁচামেচি গুলো না করলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারতেন না তিনি। নবনীতার হাতে টাকা
গুজে বললেন,
“আজ যেনো ভুল না হয়। আজ বেতন চাইবা।“
নবনীতা মুখে মলিন হাসি একে ঘাড় কাত করে। সে তো জানে সেই টাকাটা আর পাওয়া হবে না তার।
_________________________________________________________________
কদম ফুলের বেড়ি দেওয়া পাকাতে বসে আছে নবনীতা। অপেক্ষা করছে এক বিশেষ লোকের। সূর্যের অবস্থান পশ্চিমে হেলে গেছে। পড়ন্ত বিকেলের এই সময়টা নবনীতার জন্য বেশ বিশেষ। প্রতিদিন এই সময়টাতেই সে অপেক্ষা করে সেই বিশেষ ব্যাক্তির। হঠাৎ এক রাশ কদম ফুল এগিয়ে কেউ বলে,
“দেরি করে ফেললাম বুঝি?”
ঘাড় ফিরিয়ে দেখে কালো গেঞ্জি পরিহিত এক যুবক হাস্যজ্জ্বল চেহারায় কদম ফুল এগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার দিকে। ফুলগুলো হাতে নিতেই হাসি বিস্তৃত হয় তার। নবনীতা ঠেস দিয়ে বলে,
“এ তো রোজের কথা নতুন কি?”
“কদম পেতেই দেরি হয়ে গিয়েছিলো, নীতু“
“বাবুর বাহানার তো অভাব নেই, এখন আমার কদমের দোষ?”
“আচ্ছা বাবা, সরি।“
যুবক সরি বললেই হেসে উঠে নবনীতা। যুবকটির নাম নীলয়। নবনীতার ভার্সিটির মাস্টার্সের ছাত্র, তাদের এই প্রনয় বেশ কিছু মাস চলছে। নীলয়ের মনে আছে গত শ্রাবণেই প্রথম দেখা হয়েছিলো নবনীতার সাথে। তখন সে মাত্র ভর্তি হয়েছে। কলেজের গেটে তাদের প্রথম দৃষ্টি বিনিময়। শ্যামলী মেয়েদের সাধারণের মাঝে অতিঅসাধারণত্বের প্রেমে পড়েছিলো নীলয়। তবে কম ঘুরতে হয় নি শ্যামলীর মতো পেতে। এখন অপেক্ষা একটা চাকরির। চাকরিটা পেলেই মেয়েটির বাসায় বুক ফুলিয়ে যেতে পারবে সে। নবনীতা উৎফুল্ল কন্ঠে বলে,
“চাকরির ইন্টারভিউ কেমন হলো?”
“মোটামুটি, তবে মনে হচ্ছে হবে না।“
“কেনো? হবে না কেনো?”
“ওখানে আমার থেকেও ভালো ক্যান্ডিডেট ছিলেন। তবে হয়ে গেলে ভালো হতো বুঝলে।“
“ভালো তো হতোই। মাকে আমাদের কথাটা বলতে পারতাম। আমার খালা উঠে পড়ে লেগেছেন বিয়ের জন্য।“
“সেটা কি আমার চিন্তায় নেই? কিন্তু তোমার বাবার সামনে দাঁড়াবোটা কি নিয়ে? তোমার বাবা জিজ্ঞেস করলে কি বলবো? টিউশনি করাই?”
নবনীতা উত্তর দেয় না, ছয়মাস যাবৎ চাকরি চাকরি করে হন্নে হয়ে আছে নীলয়। কিন্তু একটা সুবিধা করে উঠতে পারছে না। কথা ঘুরানোর জন্য নবনীতা তাকে বলে,
“ভালো মনে করেছো, আমাকে একটা টিউশন ম্যানেজ করে দাও তো। স্নেহাকে পরানো ছেড়ে দিয়েছি।“
“কেনো? ভালোই তো ছিলো!”
“ও অনেক কথা। হিস্টোরি বলতে গেলে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। এর থেকে তুমি বরং নতুন কোনো টিউশন পেলে বলো।“
নীলয় কথা বাড়ায় না। আলতো হাতে ধরে নবনীতার কোমল হাত। অজানা কারণে মেয়েটাকে খুব ভালো লাগে তার। মায়ার এক অপরূপ ভাস্কর্্য সে। আল্লাহ তাআলা তার রং চাঁপা দিলেও মায়া দিয়েছেন ভরপুর। তার সুগাঢ় নয়নে ডুবে যেতে ইচ্ছে করে নীলয়ের। সময়ের স্রোত যেনো থেমে যায় এই সুগাঢ় নয়নে। নবনীতা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,
“কি দেখছো?”
“আমার মায়াবতীকে।“
“প্রতিদিন ই তো দেখো।“
“তবুও যে এ মায়া কাটে না। আমাকে আরো গহীনে নিয়ে যায়। তোমার এই চোখের অথৈ সাগরে আমি তলিয়ে যাই।“
নবনীতা হাসে। লোকটা সত্যি ই পাগল। তাইতো এই শ্যামলীর মাঝে সৌন্দর্য খুজে_______________
নবনীতা যখন বাড়ি পৌছে তখন মাগরিবের ওয়াক্ত হয়ে এসেছে। মাথায় ওড়নাটা দিয়েই ঘরের কলিংবেল বাজায় সে। আযানের সময় আপনাআপনি তার মাথায় ওড়না ওঠে। এ যেনো তার স্বভাব। দরজা খুলেন শারমিন বেগম। তার মুখে হাসি আর ঠেকে না। নবনীতাকে দেখেই বলে,
“এতো দেরি করলি কেনো মা। তোর জন্য তারা বসে আছেন।“
শারমিন বেগমের কথায় আকাশ থেকে পড়ে নবনীতা। কারা বসে আছেন? কে এসেছে বাসায়। সে জুতো খুলতে খুলতে বলে,
“কারা আসছেন?”
“আয় তো আগে।”
শারমিন বেগমের হেয়ালী কথা বুঝতে না পারলেও ভেতরে প্রবেশ করতেই থমকে যায় নবনীতা। স্নেহার মা, একজন বৃদ্ধা, সে এবং তার ছোট চাচু বসে আছে বসার ঘরে। তখনই শারমিন বেগম বলে,
“ভেতরে যেয়ে জামাটা বদলে আয়, ভালো জামা পড়িস। উনারা তোকে দেখতে এসেছেন……………………
চলবে