মধ্যবিত্ত পার্ট ৪ শেষ

মধ্যবিত্ত
পার্ট ৪ শেষ
লেখকঃMD_Bipul_Imran
.
.
এভাবেই আমাদের সফর শেষ করলাম
আবার চলা শুরু করতে হবে জীবনের পথে
কাল থেকে আর একটা নতুন প্রাইভেট শুরু
তাও আবার কলেজের প্রিন্সিপালের বাড়িতে
তার থেকে বড় কথা হলো ওটা সুমায়ার বাড়ি
মেয়েটে যেরকম করে কেয়ার করে মনে হয়না
যে সে শুধু বন্ধু ভাবে।ওর সাথে বেশি মিশলে নিজেও হয়তো ওর মায়ায় জড়িয়ে যাবো।তাই যতটা পাড়ি ওর থেকে দুরে থাকতে হবে।
আমার স্ট্যাটাস আর ওর স্ট্যাটাস একনা

এসব ভাবতেছি।আর ভাবনার ছেদ ঘটলো আন্টির কথায়
আন্টিঃকি বাবা গিফ্ট আনো নাই
আমিঃআন্টি কিযে বলেন।গিফ্ট আনবোনা কেন
আন্টিঃদেখি কি গিফ্ট
আমিঃ(একটা শোপিস নিছি।যেখানে ছেলে মায়ের কোলে মাথা দিয়ে আছে)এই নেনন
আন্টিঃবেশ ভালোইতো।ধন্যবাদ বাবা
আমিঃআরে আন্টি ধন্যবাদ কেন
আমাকে আপনার ২য় ছেলে ভাবেন আপনি
আর আমি আপনাকে মা ভেবে একটা কিছু দিতে পাবোনা
আন্টিঃহইছে অনেক কথা বলেছো।এখন খেতে আসো
আমিঃআচ্ছা ফ্রেস হয়ে আসতেছি।
আন্টি আজ বিকেল থেকে নতুন প্রাইভেট শুরু
আন্টিঃআচ্ছা দুপুরে খেয়ে ঘুম দিয়ে তারপর যাইয়ো
আমি গিয়ে দেখি আসিফ কি গিফ্ট আনছে
তুমি ফ্রেস হয়ে নিছে আসো
এভাবেই সকাল গড়িয়ে বিকেল চলে আসে
আমিও চলে যাই প্রাইভেট
স্যারদের বাসাটা বেশ বড়ই
উপরের তলায় ভারাটিয়া থাকে দুইটা রুমে
বাসায় এসে সুমায়াকে ফোন দিয়ে নিচে আসতে বললাম
ও নিচে এসে গেট খুলে দিয়ে আমাকে ভিতরে নিয়ে গেলো
ভিতরে গিয়ে ওর মা ভাইয়ের সাথে পরিচয় করে দিলো
আমিঃআসসালামু ওয়ালাইকুম আন্টি
সুমায়ার মাঃওয়ালাইকুম আসসালাম বাবা কেমন আছো
আমিঃআলহামদুলিল্লাহ আপনি
-আলহামদুলিল্লাহ।তো বাবা শোনো আমার ছেলেটা কিন্তু বেশ ফাকিবাজ
পড়তেই চায়না।একটু ভালো করে দেখিও কেমন
আমিঃহ্যা আন্টি

সুমায়াঃতো মিস্টার এ হচ্ছে তোমার পড়ার রুম
কিছু লাগলে আমাক বলবা
আমিঃলাগবেনা কিছু আমার
সুমায়াঃআর শোনা উপরে ভারাটিয়া আছে ভুলেও তাকাবানা উপরে
আমিঃআচ্ছা

এভাবেই কেটে গেলো ১৫ দিন
এখন সুমায়ার সাথে আরো অনেক ফ্রি হয়ে গেছি
আন্টিও এখন অনেক কেয়ার করে

সকালে ঘুমায় আছি।ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙলো
আমিঃহ্যালো কে
-সুমায়া।কলেজে আসতে পাবা একটু
আমিঃকেন।কলেজ তো বন্ধো
সুমায়াঃকথা আছে তোমার সাথে।প্লিজ আসো
আমিঃআচ্ছা

কলেজে গিয়ে দেখি সে আগেই এসে গেছে।
আমিঃকি এতো জরুরি দরকার যে এত তারাতারি আসতে বললা
সুমায়াঃদরকার আছে জন্যই তো আসছি
আমিঃহুম বলো কি দরকার
সুমায়াঃচলো আমার সাথে
আমিঃকোথায়
সুমায়াঃচলোই না। গেলে বুঝবা
তোমার কাছ থেকে একটা জিনিস চাইবো আজ দিতে পারবা কি
বন্ধু হিসেবেই চাইবো প্লিজ না কইরো না
আমিঃসসাধ্য মতো হলে দিবো
সুমায়াঃআজ সারাদিন ঘুরবা আমার সাথে
অনেক জায়গায় ঘুরবো খাবো
আমিঃতোমার ভাইকে পড়াতে যাইতে হবে
সুমায়াঃরাতে যাবা
আমিঃটাকা নাই যে আমার কাছে
সুমায়াঃআমার কাছে আছে তুমি শুধু সাথে থাকলেই হবে
আমিঃআচ্ছা চলো

চলে আসলাম নদির পাড়ে
আমিঃআচ্ছা কি তোমার কোনো বিশেষদিন
সুমায়াঃনাতো
আমিঃহঠাৎ ঘোরার ইচ্ছা হলো কি করে
সুমায়াঃএমনিতেই
আমিঃতাই
সুমায়াঃতুমি কিন্তু আর আগের তুমি নেই
হঠাৎ কি হলো যে এরকম হয়ে গেলা
আমিঃকিছুনা
প্লিজ এসব মনে করে দিও না সময় হলেই জানতে পাবা।
সুমায়াঃফুসকা খাবো চলো।আর শোনো এদিক দিয়ে সোজা আমার বাসায় যাবা তারপর পড়িয়ে খেয়ে চলে আসবা
আমিঃআচ্ছা
এভাবেই সন্ধ্যা হয় গেলো
আমরাও চলে আসলাম
এসে বাসা ঢুকতেই অবাক
বাসার লাইট সব অফ
কারো কোনো সারা নেই
বাসায় কেউ নেই নাকি সুমায়া
একথা বলতেই লাইট জ্বলে উঠলো আর সকলে এত জোরে হ্যাপিবার্থডে বলে উঠলো
হঠাৎ এত জোড়ে শব্দ শুনে আমি রিতীমত চমকে উঠেছি।অনেকে এসেছে এখানে।আমার মা ভাইয়া বন্ধুরা সবাই।আমার জন্মদিন আমিই জানিনা।অথচ মেয়েটা।হয়তো একটু বেশিই ভাবে।না আজ তাকে সব বলে দিব।এরকম করে চলা যায়না।তার জীবনের একটা ভবিষ্যত আছে।আমি বন্ধু হয়ে তা নষ্ট করে দিতে পারিনা।
এরপর কেক কেটে মা ভাইয়া সুমায়া সহ বন্ধুদের খাওয়াইলাম।
খাওয়া শেষে ভাইয়া সবাইকে বাইরে যেতে বললো।মা নাকি কি কথা বলবে আমার সাথে
সবাই চলে যাওয়ার পর ভাইয়া বলা শুরু করলো
ভাইয়াঃআশা করি ভালোই আছিস তুই।ভাই আমি জানি তুই আমাকে মাকে অনেক ভালোবাসিস।তুই পাবিনা ভাই তোর এই ভালোবাসা থেকে একটু ভালোবাসা ওই মেয়েটাকে দিতে
মেয়েটা তোকে নিয়ে একটু বেশিই ভাবে ভাই
আমায় তোর কাছে ফিরে নিয়ে এসেছে ওই মেয়েটাই।তুই পিকনিকে যাওয়ার সময় আমাকে টাকা দিতে বলেছে ওই মেয়েটাই
তুই তো মায়র সাথে কথা বলতে পারতিনা।কিন্তু ওই মেয়েটা প্রতিদিন ২-৩ বার মায়ের খোজ নিতো।আজও মাকে শাড়ি উপহার দিয়েছে ওই মেয়েটাই।আজ সব কিছুর আয়োজন করেছে ওই মেয়েটাই।মেয়েটা তোকে অনেক ভালোবাসে ভাই।তুই ফিরিয়ে দেস না তাকে।আজ ওকে ফিরিয়ে দিলে জীবনে অনেক কিছুই হারাবি তুই ভাই।
মাঃহ্যা বাবা মেয়েটা অনেক ভালোরে।ফিরিয়ে দেস না ওকে।
আমিঃনিশ্চুপ হয়ে চোখের পানি মুছতেছি।ভাইয়া মা এসব বলে চলে গেলো।আমিও চোখ মুছতে মুছতে বার হলাম রুম থেকে।বার হতেই সবাই বিস্ময়ের চোখে তাকাচ্ছে। হয়তো ভাবতেছে কি এমন হলো যার জন্য কাদতেছি আমি।
সুমায়াঃআজকের দিনে কোনো কান্না নয়।হাসবা শুধু আজ
এটা বলেই সে চোখের পানি মুছে দিতে লাগলো।
আমি তার হাতটা সরিয়ে ছাদে চলে গেলাম।আগেও এ বাসায় আসায় বেশ ভালোই জানা আছে।
উপরে গিয়ে অন্ধকার আকাশ দেখতেছি আর ভাবতেছি
কেন এমন হলো আমার জীবন।আমিওতো পারতাম সুমায়া কে ভালোবাসতে। কেন পারিনা সেটা আমি।কি দোষ করছি আমি আল্লাহর কাছে তা আমি জানিনা।
এসব ভাবতেছে হঠাৎ পিছন থেকে সুমায়া বলতেছে
-আমাকে কি একটা সুযোগ দেওয়া যায়না ইমরান।তোমার জীবনটাকে আমি আমার মতো করে সাজাতে চাই।আগের সেই হাসিখুশি ইমরান ফিরিয়ে দিতে চাই।কি ন হলো তোমার জীবনে যে ১৫ দিনে ইমরানের হাসিটাই উড়ে গেলো।আমি সেই হাসিটা ফিরিয়ে আনতে চাই।আমায় কি দিবানা একটা সুযোগ
আমিঃসুমায়া তোমায় কিভাবে বলি আমার দ্বারা সম্ভবনা এসব।তুমি কেন বুঝতে চাও না তোমার জীবন আমার জীবন একনা।তুমি কতো টুকু জানো আমার বিষয়ে যেটুকু জানো তা সত্তিনা সুমায়া।জানো অনেক ভালোবাসি আমি আমার মা বাবাকে ভাইয়াকে।কিন্তু তারা আমার আসল মা বাবা ভাইয়া না সুমায়া।আমিও জানতাম না এটা আগে।৭দিন আগে একটা মেসেজ আসে ফোনে আর সাথে আসে ভাইয়া আর মায়ের রেকর্ড করা একটা কথা।হ্যা ভাইয়া বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসে।মা না।জানো সুমায়া খুব স্বপ্নন দেখতাম আমি এই মা টাকে নিয়ে কিন্তু ইনিই সহ্য করতে পারেনা আমাকে।ইনিই ভাবিকে দিয়ে বাসা থেকে বার করে দিয়েছে আমাকে
আমার মা বাবা কে তা আমি নিজেও জানিনা।তাহলে কোন অধিকারে ভালোবাসবো আমি তোমাকে।হতে পারে আমি কারো অবৈধ সন্তান।হতে পারে কারো কয়েক মহুর্তের লালসার ফসল আমি।হতে পারে আমি কোনো ধনির ছেলে মেয়েদের কিছু মহুর্তের আনন্দের ফসল
মানুষ কেন এমন করে জীবন নিয়ে তা আমি জানিনা।জানো অনেক গর্ব করতাম ভাইয়া মাকে নিয়ে। কিন্তু দেখো কি হয়ে গেলো।
আজ পর্যন্ত হোদিসেই পেলামনা মা বাবার।ঘৃণা করি আমি আমার মা বাবাকে যারা আমাকে ফেলে দিয়ে গিয়েছে ডাস্টবিনের মতো নোংরা জায়গায়
কি এমন ক্ষতি হতো আমাকে তাদের সন্তান হিসেবে সমাজে তুলে ধরতে।কিন্তু তারা তা করলোনা।এই বাবা আমাকে সেখান থেকে তুলে এনে নিজের সন্তানেরর মর্জাদা দিয়েছে।
তাই এনাকেই আমি আমার জীবন ভাবি।কিন্তু তার সেবা করার একটু সুযোগ না দিয়েই চলে গেলেনন তিনি।জানো আমারো ইচ্ছা করে কাউকে ভালোবাসতে কারো জীবনেরর সাথে নিজের জীবনকে ভালোবাসতে।কিন্তু কি করবো বলো আমি যে এতিম।আমি যে অবৈধ মেলামেসার ফল।তোমার মা বাবা সমাজ যখন জানতে পাবে তখন তারা আমার মা বাবাকে না আমায় ঘৃণা করবে।কি দোষ করেছি আমি এখানে যে আমায় ঘৃণা করবে তারা।তা আমার জানা নেই হয়তো এ প্রশ্ন সমাজের কাছেই পাওয়া যাবে।জানো আমিও তোমায় অনেক ভালোবাসি কিন্তু বলা হয়নি কখনো।হয়তো বলার সাহসটাই হারিয়ে ফেলছি আমি।তুমি সেদিন পিকনিকে আমার মাথায় বুলিয়ে দিয়েছো যখন তখন খুব ইচ্ছা করছিলো তোমায় জড়ায় ধরে ভালোবাসি বলি।কিন্তু বলতে পারিনি।কোথায় যেন বাধা পেয়েছি সেদিন।তুমি ভাবছিলা আমি ঘুমায় গেছিলাম।আমি জেগেই ছিলাম।আর ভিডিওটাও আমি করতে বলেছি।
আর কিছু বলার মত নেই আমার।এখন হয়তো সবকিছু ক্লিয়ার তোমার কাছে।তুমি ভালো মেয়ে তোমারর জন্য আমি না।
তোমার পবিত্র ভালোবাসা পবিত্র কারো জন্য।অপবিত্রতের জন্য না।তাছাড়া আমি মধ্যবিত্ত আর তুমি উচ্চবিত্ত।

সুমায়াঃআমি কি তোমার মা বাবাকে ভালোবাসি,আমি কি তোমার অতিতকে ভালোবাসি।আমি তোমার মনটাকে ভালোবাসি ইমরান।অন্য কিছুকে না।আর সমাজের কথা বলছো।আজ তোমার কিছু হলে তোমার মা বাবা তোমার বন্ধুরা কষ্ট পাবে সমাজ না।আর আমার কথা নাহয় বাদেই দিলাম
তুমি যদি আজ আমাকে ফিরিয়ে দাও তাহলে আমি এখনি এ বিল্ডিং থেকে লাফ দিবো
আমিঃপাগলামি করোনা সুমায়া।তোমার বোঝার বয়স হয়েছে।এখনো যদি অবুঝের মতো করো তাহলে তো হয়না।
সুমায়াঃআমি অত বুঝিনা।তুমি আমায় ভালোবাসবা কিনা বলো।নাহলে আমি চরলাম রোলিংয়ে
আমিঃতোমার মা বাবা যদি বলে কি আমার ফেমেলি কি আমার স্ট্যাটাস।তখন কি বলবা।কেউ মেনে নিবে আমাকে এসব শুনে
সুমায়াঃনা বাবা মা মানবে কিনা সেটা আমি দেখবো।তুমি বলো রাজি কিনা।
আমিঃব্লাকমেইল তো ভালোই করতে পারো
সুমায়াঃব্লাকমেইলের দেখেছো কি
উঠলাম আমি ভালো থেকো তুমি।
আমিঃআচ্ছা বাই
এটা বলতে দেরি কিন্তু সুমায়া উঠতে দেরি নেই।
লাফ দিবে এমন সময় হাত টান দিয়ে বুকে নিয়ে আসলাম
আমিঃপাগলি পাগলামি করো কেন।
আমি কি বলছি তোমায় ভালোবাসিনা
সুমায়াঃআটকাইলা কেন।তারমানেরর মরতেও দিবানা আর ভালোও বাসবানা।
আমিঃবাসিতো
সুমায়াঃতোমার বুকে ঠাই দিবা আমাক একটু
আমিঃনা বুকের ভিতর যাবা কেমনে তুমি।বুকেরর ভিতর ঢুকলে তো আমিই মরে যাবো।তখন কি করবা

রাফিদঃহইছে আর কাউকে মরা লাগবেনা।অনেক রোমাঞ্চ করেছো।নিচে চলো সেই কখন থেকে তোমাদের গল্প শুনতেছি।ইমরান কি আজব ভাই তুই।চোখে পানি এনে দিছিস সবাইরে।
সুমায়াঃওই তোদের আসতে বলছি এখানে আমি।তোদের না নিচে সব রেডি করে রাখতে বলছি।যাতে আমি লাফ দিলেও আমার কিছু না হয়।
আমিঃমানে তুমি একটিং করছো এতক্ষন
সুমায়াঃওমা আমি মারা গেলে ইমরান বাবুটারর কি হবে।তোমায় ছেড়ে আমি মরতে পারি।চলো এখন নিচে সবাই অপেক্ষা করছে

এসব বলেই নিচে চলে আসলাম।
খেয়ে দেয়ে বাসায় এসেই আসিফ সুমায়ারর কাজ সব বললো আন্টিকে
আন্টি শুনে হেসে হেসে শেষ।মেয়েটা কি চালাকিটাই না করেছে
এরপর যখন আমার জীবনের ঘটনা শুনলো তখন মুখটা অন্ধকিারে ছেয়ে গেছে
আন্টিঃবাবা তুই আমায় মা ডাকতে পাবিনা।তোকে তো আমি কবেই আমার ছেলে হিসেবে মেনে নিয়েছি।তুই পাবিনা মেনে নিতে আমাকে
আমিঃকেন পাবোনা আমি।আজ থেকে মা এ ডাকবো।এখন ঘুমাই মা
মাঃআচ্ছা

এখন সুমমায়ার সাথে আরো বেশি কথা হয়
বাসায় গেলে নানা কারনে কথা বলতে আসে আর কতইনা বায়নো জোরে।
এদিকে খবর পেলাম ভাইয়া নাকি অসুস্থ।

ডাক্তার দেখিয়েছে কি যে রিপোর্ট আসে তা জানা নেই।প্রাইভেটে গিয়ে চিন্তা করতেছি কি হবে
.
-কি এতো ভাবছো?(সুমায়া)
-কিছু না।
-বলবে না আমাকে?
-কিছু না।ভাইয়ার শরীরটা নাকি ভাল না।এই নিয়েই একটু..
-চিন্তা করোনা কমে যাবে।
-হুমম(আমি)
প্রাইভেট শেষ করে নিজে পড়তে বসসাম

রাতে খবর পেলাম ভাইয়ার
টেষ্টের রিপোর্টে দেখা গেছে ভাইয়ার দুটো কিডনিই নষ্ট। ডাক্তার বলেছে তারাতারি
অপারেশন করতে হবে।নাহলে সমস্যা হবে। এটা
শোনার পর মা ভাবি খুব কেদেছে।আমারো ভালো লাগছেনা। কিছু একটা করতেই হবে আমাকে।ভাইয়াই আমার সব কিছুর অনুপ্ররনা তারর জীবন যে করেই হোক বাচাতে হবে আমাকে।
কিডনি কোথা থেকে আসবে।আর যদিও বা পাওয়া যায়য় সেটার
অনেক দাম হবে।কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।
.
নিজের ঘরে ভাবছি কি করবো।কিন্তু কিছুই ঠিক করতে পারলামম না। চিন্তা ভাবনার পর একটা
ডিসিশন নিলাম যে নিজেই একটা কিডনি তার ভাইকে
দিয়ে দেবো।একটা কিডনি নিয়েও তো বাঁচা যায়।হ্যাঁ এই ডিসিশনটাই ঠিক করলাম। পরেরদিন ঐ হাসপাতালে যোগাযোগ করে ডাক্তারকে বিস্তারিত বললাম।ডাক্তার রাজি হচ্ছিলেন না।অনেক কষ্টে ডাক্তারকে বুঝালাম যে একটা কিডনি ও দিলে তেমন ক্ষতি হবে না।শেষে ডাক্তার বললেন ঠিক আছে কাল আসেন।কিছু টেষ্ট করতে হবে।
রাতে নিজের ঘরে শুয়ে আছে আছি।সারাদিন এখানে ওখানে ঘুরতে আজ অনেক ক্লান্ত লাগছে ।তারপরেও একটা খুঁশির আভা মুখে। কেননা ভাইয়াকে একটা কিডনি দিয়ে বাঁচাবো। এসব ভাবছে তারমধ্যে সুমায়ার ফোন।
-খাইছো?(সুমায়া)
-খেতে ইচ্ছে করছে না(আমি)
-কেন কি হয়েছে? শরীর ভাল আছে তো(সুমায়া)
-না না শরীর ভাল আছে
-তা হলে খেতে যাও।
-হুম।তুমি খাইছো(আমি)
-হ্যা।খাও তুমি
.
পরের দিন সকালে আমার টেস্টর রিপোর্ট নিয়ে গেলামম ডাক্তারের কাছে।ডাক্তার রিপোর্টটা কিছু সময় দেখে বললেন, –
আপনার কিডনী নিতে পারবো না(ডাক্তার)
-কেন?(আমি)
-আপনার একটা কিডনী নষ্ট।আপনি একটা কিডনী দিয়ে দিলে আপনি মারা যাবেন তাই আমি আপনার কিডনী নিতে পারবো না। একথা শোনার পর আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিনা। প্রায় দুই মিনিট পর ডাক্তারকে বললামম
-আমি কিডনী দিব(আমি)
-কি বলছেন আপনি?(ডাক্তার)
-ঠিকই বলছি।আপনি না করবেন না তারপর ডাক্তার আর কিছু বললেন না। .
মাকে ফোন দিয়ে সব বললাম।আর আন্টিকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব আসিফকে দিলাম।নিজের ছেলেই ভাবে আমাকে।জানিনা মারা গেলে কতটা কাদবে।আর আসিফ কে বলে দিয়েছে মারা গেলে আমাকে যেন তার বাসায় কবর দেয়।সেও আপওি করেছিল অনেক কান্নাকাটি করেছে কিন্তু আমিও নাছোড়বান্দা।সুমায়কে বলতেও বারন করেছি।আগামীকাল অপারেশন। .
-কি হলো আজ পড়াতে এলে না যে।কখনো তো এরকম হয়নি।(সুমায়া)
-এমনি(আমি)
-কি হয়েছে বল?
-আচ্ছা সুমায়া আমি যদি কখনো হারিয়ে যাই তুমি কি খুব কষ্ট পাবে?
-হঠাৎ এই কথা বলছো কেন? তুমি কোথায় হারাবে?
-কোথায়না।এমনি বললাম
-আর কখনও এমন কথাথা বলবে না। তোমাকে কোথাও হারাতে দেব না
-আমাকে খুব ভালবাসো তাই না?
-হুমম।অনেক বেশি।বলে শেষ করা যাবে না।(সুমায়া)
এটাই হয়তো শেষ কথা আর হয়তো কথা হবেনা কখনো।এসব ভাবতেছি আর কাদতেছি
রাতে আন্টিকে জড়িয়ে ধরে অনেকটা কেদেছি।উনি বার বার জিজ্ঞেস করলে বলছি কিছু হয়নি মা এমনিতেই
সকাল ঘুম থেকে উঠে দুটো চিঠি লিখলাম।একটা সুমায়ার জন্য আর একটা ওর মায়ের জন্য।তারপর বের হয়ে গেলাম। দুপুরে বাড়িতে আসতাম কিন্তু আজকে আসছি না দেখে আন্টির চিন্তা হচ্ছে। ফোন ও অফ আমার।কি মনে করে আন্টি আমার ঘরে গেল।গিয়ে দেখে টেবিলে দুইটি চিঠি। একটার মধ্যে লেখা সুমায়া আর একটার মধ্যে লেখা মা।আন্টি এসব আসিফকে বললে আসিফ চুপ করে থাকে।তখন মা বুঝতে পারে যে আসিফ সব জানে আগে থেকেই।আজ রাতে অপারেশন
তার আগে আন্টি কষ্ট করে একটা চিঠি মায়ের হাতে আর একটা সুমায়ার হাতে। সুমায়া চিঠিটা নিয়ে পড়া শুরু করে
“”
আমায় ক্ষমা করে দিও।অনেক আশা ছিল তোমার সাথে অনেকটা সময় কাটাবো,অনেকটা পথ একসাথে হাটবো। তোমায় নিয়ে ছোট্র একটা সংসার গড়বো। কিন্তু নিয়তি হয়তো আমাদের হতে দেয় নি। কিছুদিন আগে তোমায় বলেছিলাম ভাইয়ার শরীরটা ভাল নেই।টেষ্ট করিয়ে জানা গেলো যে দুটো কিডনীই নষ্ট হয়ে গেছে। আমি ভাবলাম আমার একটা কিডনী দিয়ে দেবো।কিন্তু টেষ্ট করার পর জানতে পারি আমার একটা কিডনী নষ্ট।অনেক ভেবেচিন্তেই ডিসিশন নিলাম কিডনী দেবোই।ভাইয়ার জন্য তো আর জীবনে কিছু করতে পারলাম না।হোক আমার সৎ ভাই। কিন্তু আমি তো ভাই বলেই জানি।তুমি আমার জন্য কষ্ট পেয়ো না।জানি তুমি ভাল থাকবে না।তবুও বলছি ভাল থেকো।আর আমাকে শেষ বারেরর মতো দেখে যেয়ো।
তোমার শুভ।
চিঠিটা পড়ে সুমায়া চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো তারপর হাসপাতালের দিকে রওনা হল।ওখানে গিয়ে চিৎকার করে ডাক্তারকে ডাকছে সে
ডাক্তারঃকি হয়েছে
সুমায়াঃকিডনি ডোনেট পেসেন্ট ইমরান কোথায়
আমি ওকে মরতে দিবোনা।আপনার দুইটা পায়ে পড়ি
আপনি প্লিজ আমার কিডনি নিয়ে বাচান
না হলে এখানেই আমি আত্মহত্যা করবো।মরতে দিবোনা আমার ইমরানকে
ডাক্তারঃদেখেন আপনি বললেই তো নিতে পারিনা।আমাদের রুলস আছে কিছু টেস্ট আছে
সুমায়াঃযা করা লাগে করেন তবুও ওকে বাচান প্লিজ
ডাক্তারঃরক্তের গ্রুপ কি আপনার
সুমায়াঃএ নেগেটিভ
ডাক্তারঃআপনি তারাতারি টেস্ট গুলো করেন
পজেটিভ পেলে রাতেই অপারেশন হবে আপনার
সুমায়াঃনা না পজেটিভ কেন।নেগটিভ পেলেও অপারেশন করবেন।আমরা বাচলে একসাথে বাচবো না বাচলে না
ডাক্তারঃআচ্ছা আপনি টেস্ট করেন
এদিকে ভাবিকে চিঠি দিয়ে মা পড়তে বললো

জ্ঞান হবার পর থেকেই তোমাদের বাবা মা বলে জেনে এসেছি।আমার আসল বাবা মা কে আমি জানি না।আর জানতেও চাই না।আমি শুধু জানি তোমরাই আমার বাবা মা। প্রতিটা মুহুর্ত তোমাদের খবর নিতাম কেমন আছো তোমরা।
একদিন জানতে পারলাম ভাইয়ার অসুখ এবং পড়ে জানতে পারলাম তার দুইটি কিডনী নষ্ট।ডাক্তারের সাথে কথা বলে আমার একটা কিডনী দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।কিন্তু আমার ভাগ্যটাই খারাপ।আমার একটা কিডনী আগেই নাকি নষ্ট।তারপর অনেক চিন্তাভাবনা করলাম।তোমরা আমার জন্য অনেক করেছো কিন্তু আমি কিছুই করতে পারলাম না।তাই এই সিন্ধান্তটা নিলাম।ভেবোনা আমি তোমাদেরকে করুনা করছি।ভাইয়া তোর মনে পড়ে একদিন আমি পুকুরে পরে ছিলাম সেদিন তুই আমাকে বাচিয়েছিলি।পরে জ্ঞান ফিরের পর অনেক কান্না করছিলি আমায় জড়িয়ে ধরে।ভাইয়া মনে পড়ে তোর আমাকে একদিন ব্যাট দিয়ে মারছিস পড়ি নাই জন্য।ভাই তোর মাইরটার জন্যই আজ আমি এতদুর আসতে পেরেছি।আমার স্বপ্ন তুই।অনুপ্ররনা তুই।নিজের চোখে কিভাবে আমার স্বপ্নকে নষ্ট হতে দেই বল ভাই।ক্ষমা করিস আমাক।আর ভাবি তোমাকে বলে।সব কিছুকে নিজের মনে করে দেখবা অনেক ভালো লাগবে।আমরা মধ্যবিত্ত হলেও আমাদের মনে ভালোবাসা আছে ঘরে শান্তি আছে।জানো ভাবি ভাইয়া আমি কতো স্বপ্ন দেখতাম তোমায় নিয়।কিন্তু কিছুই হলোনা
ভাইয়াকে বলতাম ভাইয়া দেখিস ভাবি আমাক অনেক ভালোবাসবে।টাকা দিবে ঘুরতে নিয়ে যাবে ফুসকা খাওয়াবে।আমাকে অনেক মজার মজার খাবার রান্না করে খাওয়াবে।কিন্তু কিছুই হলোনা।তুমিতো আমাকে ভাই এ মনে করো না ভাবি।জানো যখন তুমি তোমার ভাইকে খাওয়াতে টাকা দিতে তখন খুব খারাপ লাগতো আমার। তোমার ভাইয়ের সাথে এরকম হলে তোমার কেমন লাগতো ভাবি।
আশা করি পৃথিবির কোনো ভাইয়ের স্বপ্ন গুলো যেন ভাবি গুলো এসে শেষ করে না দেয়
চিঠিটা পড়ে মা ভাবি কাঁদতে লাগলেন। সবাই কাঁদতে লাগলো।
ভাবিঃভাই আমার।আমাক ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দে একটা ভাই প্লিজ।অনেক ভালোবাসবো তোকে আমি।আর বকবোনা কখনো

এদিকে ডাক্তার সুমায়ার অপারেশনের ব্যবস্থা করেছে।হয়তো আল্লাও চেয়েছেন ইমরান আবার তার সুমায়ার কাছে ফিরে আসুক। হয়তোবা সুমায়ার ভালোবাসা পবিত্র ছিলো।তাই অপারেশনের ১৫ দিন পরেই সুস্থ হয়ে যায় সবাই
ইমরান আমার ফিরে যায় তার বন্ধুদের বুকে আন্টি নামক মায়ের বুকে।
এখন ভালোই চলছে ইমরানের জীবন সুমায়ার জীবন।সামনে তাদের এইচএসসি পরিক্ষা তাই তাদের প্রেম বর্তমান কিছুদিনের জন্য বন্ধ আছে।এখন যা কথা হয় তা কেমন আছে নাই এটুকু আর পড়া লেখা নিয়ে
যেহেতু বর্তমান প্রেম করছেনা তারা তাই সেসব নিয়ে না লেখাই ভাল।

এই পৃথিবিতে সুমায়ার মত মেয়ে,রাফিদ,আসিফের মত বন্ধু,আসিফের মায়ের মত আন্টির অভাব থাকলেও অভাব নেই ইমরানের ভাবির মতো ভাবির
যারা তাদের বিষাক্ত সোবলে নষ্ট করে দেয় সুখের সংসার
নষ্ট করে দেয় ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের ভালোবাসসা।অবশেষে ছোট ভাইটা গভির রাতে জায়নামাজে সিজদায় পড়ে বলে আল্লাহ ফিরিয়ে দাওনা আমার ভাইটাকে
কতদিন ধরে একসাথে বসে এক টেবিলে খাবার খাইনা
খেতে বসলে ভাইয়া ভালো মাংসের পিসটা আমায় দিতো স্বাদের মাছটা আমায় দিতো এখন ওসব কিছুই হয়না।
মা গুলোয় মনে হয়ে অপেক্ষায় থাকে এই বুঝি তাদের ছেলে আসবে এই বুঝি আবার ঘরটা আলোকিত হবে।ডাল ভাত খেলেও তাতে শান্তি থাকবে
এটাইতো মধ্যবিত্তের সংসার।যেখানে ডাল ভাত খেলেও তার প্রশান্তি মাংসের মতো মাছের মতো হবে।
.
.
.
.
……..সমাপ্ত…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here