মধ্যবিত্ত
পর্ব ৩
লেখকঃMD_Bipul_Imran
.
.
কলেজে এসে দেখি আমাদের ব্যাচের সকলে রেডি
আজ একটু অন্যরকম প্রশান্তি লাগতেছে
হয়তো ভাইকে কাছে পাওয়ার আনন্দদ
নয়তো মায়ের মত আর একজন মাকে কাছে পাওয়ার আনন্দ
।
আসিফঃদোস্ত একটা ডিএসএলআর হলে সেই হতো
আমিঃহুম তা ঠিক
তুই ব্যাস্ত থাকতি ময়দা মাখা গুলোদের নিয়ে
আর আমরা ব্যাস্ত থাকতাম তোর গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে
কিরকম হতো তখন বলতো
রাফিদঃসেই হতো
আমিঃআরে আরে এটা কে
দাড়া দেখি আগে
আসিফ তুই দেখতো চিনতে পারিস কিনা
রাফিদঃহইছে হইছে আর ঠং করতে হবে না
এখানে থাকবি নাকি গাড়িতে উঠবি
আসিফঃদাড়া না
মেয়ে গুলোরে দেখি
রাফিদঃমেয়ে গুলোরে দেখবি নাকি নিরাকে খুজবি
সত্যি বলতে সমস্যা কি মামা
লজ্জা পাও নাকি।এতো লজ্জা পাইতে হবেনা
পরে আবার গর্বপতি হইয়া যাবা
আমিঃদোস্ত দেখতো কে ওটা
রাফিদঃমাই গড।ক্রাশ
আসিফ আমি প্রোপোস করবো রে
আসিফঃদেখ তোরা বেশি হচ্ছে কিন্তু
আমিঃহইছে থাম এখন নিরা এদিকেই আসছে
নিরাঃহ্যালো কেমন আছো তোমরা
আমিঃআমরা কেমন আছি জানতে চাচ্ছো নাকি
আসিফ কেমন আছে সেটা জানতে চাচ্ছো
নিরাঃইমরান তুমিও না।বাদ দাও ওসব
আমার একটা রিকুয়েস্ট আছে ইমরান তোমার কাছে
আমিঃআমার কাছে আর দেওয়ার কি আছে
তুমি তো চাইবা আসিফের কাছে।দেখ আগেই বলতেছি কিছু কিনে চাইলে দিতে পাবোনা
নিরাঃআরে শুনবাতো আগে।তোমার ছিট টা আমাক দিবা
মানে আসিফের সাথে বসবো
আমিঃআমাক বলছো কেন।আসিফকে বলো
নিরাঃওকে বলছি কিন্তু ও তোমার কথা বলেছে
আমিঃআচ্ছা দিবো তবে আমাদের খাওয়াতে হবে
নিরাঃওক্কে
।
পিছন থেকে কে যেন ডাকতেছে
পিছনে ঘুরতেই রিতিমত ক্রাশ খাইলাম।
সুমায়া কে অনেক সুন্দর লাগতেছে
সুমায়াঃকেমন আছো ইমরান
আমিঃআলহামদুলিল্লাহ তুমি
সুমায়াঃআমিও আলহামদুলিল্লাহ
আসিফঃতুমি কি শুধু ইমরানের বন্ধু নাকি যে শুধু ওকেই জিজ্ঞেস করলা কেমন আছো
আমরা আরো ৩টা মাথা এখানে দুপায়ে দাড়িয়ে
আমাদের কি চোখে পড়ে নাই
নাকি আমরা তোমার বন্ধুই না
সুমায়াঃআরে সেটা না
অনেক দ্রুত চলে এসেছিতো।দেখো এখনো হাপাচ্ছি
নিরাঃকুত্তা তোর কেমন আছি শোনার ইচ্ছা জাগছে তাই না
শোনাচ্ছি তোকে আজ। শুধু বাসে ওঠ দেখাবো মজা
আসিফঃ(ধ্যাত এ যে এখানে তা জানাই ছিলোনা.।কি নাতে কি বললাম)
দেখো আমরা বন্ধু আমাদের মাঝে অনেক কথাই হতে পারে
তা নিয়ে তোমার রাগ করলে হবে নাকি
নিরাঃতুই চুপ কর কুত্তা।তোর সাথে কথা নাই আর
আসিফঃধ্যাত সব কিছুতেই শুধু কথা বলবোনা কথা বলবোনা
কথা বলবানা তাইতো।যাও আর কখনো কথা বলতে হবেনা
আমিও আর বলবোনা।তবুও আমাদের বন্ধুদের মাঝে আসবানা বলে দিলাম
তোমার মত মেয়েদের জন্য বন্ধুদের সাথে মজাও করতে পারিনা
কেন পারবোনা হ্যা আমার কি সে অধিকার নেই নাকি
অনেক হয়েছে আর না।সেদিন সকলের সামনে থাপ্পর দিলা কিছু বলি নাই
আর না
ভালো থাকো তুমি।তুমি তোমার রাস্তা দেখো আমি আমার রাস্তা
আমিঃআরে আরে রাগ করিস কেন
যারা ভালোবাসে বেশি তারা সন্দেহ করে বেশি
আসিফঃচলো তোমরা বাস ছাড়বে।ইমরান আয়
আমিঃদ্বারা অয়ন আসুক।ওকে গিটার নিয়ে আসতে বলছি
রাফিদঃঐযে আসছে ও। চল এখন বাসে উঠি
আমিঃআরে দাড়া না।দেখিসনা আসিফ রেগে আছে
ওকে বাসে তুলে দিয়ে আয়
আমি গেলে আমার সাথে বসবে আবার
ওকে তুলে দিয়ে বলে আয় যে আমরা পান কিনে নিয়ে আসতেছি
তুই বসে থাক তারপর নিরা গিয়ে ওর পাসে বসবে(কানে কানে বললাম)
রাফিদ সেরকম করেই বসায় দিলো ওকে
নিরাকে ইশারা দিয়ে বসতে বললাম ভিতরে
সেও গিয়ে বসে পড়লো
আমরা গিয়ে ১০ টা পান কিনলাম
৪বন্ধুর জন্য ৮ টা আর সুমায়ার জন্য ২
নিরা পান খায়না তাই নেই নাই।
পান কিনে ভিতরে গিয়ে দেখি মাঝের ৪ টা ছিট বাদে সব পুরন
সুমায়াকে এক মেয়ের সাথে বসাতে চাইলাম কিন্তু সে বায়না জুরছে আমার সাথে বসবে আর গান শুনবে
আমিঃআমি বমি করবো এটা শিওর।তাই বলতেছি তুমি ওখানে বসো
সুমায়াঃনা এখানেই বসবো আমি
আমিঃআচ্ছা
।
সবাই বসে পড়েছে
বাসও তার আপন গতিতে চলছে
মাথায় একটু শয়তানি বুদ্ধি চাপলো
তাই প্রেমিক প্রমিকা যেখাসে এক সাথে বসেছে তাদের একটু জোড়া লাগানোর ব্যাবস্থা করলাম
বুঝলেন নাতো।অপেক্ষা করেন বোঝাচ্ছি
গ্রামে হয়তো অনেকে একজনের জামা আর একজনের জামার সাথে জোড়া লাগিয়ে দিয়েছিলেন তাই না
সেটাই করতে চাচ্ছি
এখনো মনে আছে আমার
কোনো এক শবে বরাতের রাতে গ্রামের কিছু ছেলে রাত জাগার নাম করি মসজিদে গিয়ে সুন্দর নাক ডেকে ঘুম দিচ্ছিলো
তো এক বড় ভাই করছে কি
একজনের পা বেধে রাখছে সিড়ির সাথে একজনের লুঙ্গি খুলে নিয়ে ছাদে রেখে দিছে
আর দুইজনের মাথা একসাথে বেধে রাখছে
সকালে উঠে যার পরনে লুঙ্গি নাই সে বেশি আহাম্মক হইছে
সকালে উঠে সে গা মোরা দিতেছে
হঠাৎ দেখে তার নিছটা খালি খালি লাগতেছে
বাতাসো লাগতেছে
নিচে তাকায় দেখে তার সব দেখা যাচ্ছে
এটা দেখে সে দৌড়ে গিয়ে হুজুর কে জড়ায় ধরে বলতেছে হুজুর আমার ইজ্জত শেষ হওয়ার আগে বাচান আমাক
হুজুরঃআরে বাবা সারারাত দেখায় আসলি তাতে কিছু নাই আর এখন তোর ইজ্জত শেষ
আমাক একটা কথা বল তুই এত বড় হইছিস তারপরো খৎনা করাস নাই কেন
তোর বাপটার দেখা পাই আগে
তারপর থেকে ১ মাস তাকে আর মসজিদে দেখা যায় নাই
এখন আর কেউ মসজিদে ঘুমায় না এরকম করে।
যাক সেসব কথা গল্পে ফিরি এখন
.।
এক প্লান করলাম রাফিদ কে নিয়ে
টোটাল আটটা কাপল আছে
আমি ৪ টায় বাধবো আর রাফিদ ৪ টায়
কাপলদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করতেছি কেমন চলতেছে প্রেম আর কৌশলে জোড়া লাগাচ্ছি
১০ মিনিটের মধ্যে কাজ শেষ
আবার নিজের সিটে বসলাম।
গান বাজতেছে সবাই শুনতেছে
আর আমার চাপ দিলো বমির
দিলাম ছেড়ে প্লাসটিকের মধ্যে সুমায়া টিস্যু বার করে মুখটা মুছে দিলো
বেশ ভালোই লাগছে
এরকমম ১ ঘন্টায় ৩ বাম বমি করে শেষ আমি
না আর থাকা যাবেনা বসে
পান খেয়ে উঠে পরলাম
আমায় দেখে রাফিদ ও উঠে গেলো
শুরু হলো ড্যান্স
২ ঘন্টায় সুমায়া আর কাপল গুলো বাদে স্যারসহ সকলকে নাচিয়েছি
আর নাচতে ইচ্ছা করছেনা
তাই গান বন্ধ করে শুরু করলাম গিটার বাজানো
আমি বাজাচ্ছি আর আসিফ আমি অয়ন গান গাচ্ছে আর রাফিদ তবলা
ওর এই স্কিলটা বেশ ভালোই
সুন্দর একটা আড্ডা জমে গেছে
৫ ঘন্টার জার্নি।বাস চলছে আপন মনে
স্যারর ব্রেক করে একটু নাস্তা খাওয়ার সময় দিলেন
নাস্তা শেষ যখন উঠতে যাবে তখন হয়েছে আরেক বিপদ
এক স্যার তার স্ত্রিকে নিয়ে এসেছে
রাফিদ বেটা টা সেই স্যারকেও ছাড়েনি
৫ টা কাপল উঠতে গিয়ে ধুপুস ধপাস করে আবার সেই সিটে পড়ে গেছে
আর আমাদের স্যার সোজা গিয়ে পড়েছে হেল্পারের বুকে।বুকে পড়েছে তো পড়েছে কিস করতেও ভোলেনি।
।
কি মজা টাই না হচ্ছে এখানে
।
সুমায়াঃদেখেছো তুমি না আসলে এরকম মজা হতো
জানিনা কার মনে কি কষ্ট আছে
কষ্ট থাকলেও তবুও তোমার কাজে একটু হলেও হেসেছে।আর তুমিই কিনা আসতে চাওনা।সত্যি তুমি এক অন্যরকমের মানু্ষ।
(আমার পাঠক রা কিরকম হেসেছে তা আমি জানিনা।
পূর্বের পার্ট গুলোতে অনেকে কমেন্ট করেছেন যে চোখের পানি এসে গেছে।তাই হাসানোর একটু বৃথা চেষ্টা করলাম আর কি)
এভাবেই মজা করে কেটে গেছে ৫ ঘন্টা আমাদের বাসও এসে পৌছে গেছে চা বাগানে
অনেক সুন্দর জায়গা
কেউ আলাদা হয়নি।
সবাই একসাথেই।বেশ সুন্দর দেখা যাচ্ছে সবাইকে
এরপর শুরু হলো গান
একে একে সবাই গান গাচ্ছে
একটু পর সুমায়া গিটার টা চাইলো
আমিও দিয়ে দিলাম
খুব সুন্দর ভাবে বাজিয়ে চিকন গলায় গান গাইলো সে
এভাবেই ভ্রমনের শেষ পর্যায়ে এসে গেছি।গিফ্ট কিনে
চললাম আবার বাসে
সকলকে দুই ঘন্টা ঘুমানোর জন্য বলা হলো
দুই ঘন্টা পড় আবার আড্ডা শুরু হবে
আমিও ঘুমায় গেলাম
ঘুমিয়ে কখন যে সুমায়ার কাধে মাথা রাখছি বুঝতেই পারিনি
এদিকে সুমায়া আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেছিলো
বেশ আরামে চোখটা বন্ধ হয়ে গেছে একদম
রাফিদ ডাকায় উঠে গেলাম
একটু পর রাফিদ ঘোষনা দিলো যে সকলকে তিনটা সিন দেখাবে
দুইটা হচ্ছে ফানি আর একটা হচ্ছে রোমান্টিক
আগে ফানি টাই চালু করা হলো
দেখে তো আমি অবাক
এটা ভিডিও করলো কখন
আমি করতে বলছি সেজন্য আমার ভিডিওটাই বার করবে ও
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে সুমায়া মাথা টিপে দিচ্ছে আর আমি ওর কাধে মাথে দিয়ে ঘুমায় আছি
আমিঃতুমি না ঘুমিয়ে এসব করছো
সুমায়া লজ্জায় চুপ হয়ে আছে
এটা দেখে সবাই হাতে তালি দিচ্ছে
তবে কেউ বন্ধু ছাড়া অন্য কিছু ভাবেনি তাই অতটা চিন্তা নেই
এখন আসলো ফানি
প্রথমেই আসলো স্যারের কিস করার বিষয়টা।রাফিদ এটা তো করেছেই সাথে স্যার যে আট বার মুখ ধুইছে পানি দিয়ে সেটাও করে রেখেছে
এরপর এক বন্ধুর পিছনে কুকুর দৌড় দিছে তো সেও দৌড় দিয়ে গাছে উঠছে
জীবনের তাগিদে উঠে পড়লেও
নামার সময় বিপদ দেখা দিছে
এত স্পিডে নামছে যে আর এক বন্ধু গিয়ে তার পিছনে ফু দিচ্ছে আগুন ধরেছে ভেবে
এসব দেখে সবাই গড়াগড়ি খাচ্ছে
এরপর আড্ডা দিয়ে সকলে এসে পৌছে গেছি কলেজে
কলেজ থেকে সকলকে বাসায় পৌছে দেওয়া হলো
আমরাও চলে আসলাম
.
.
.
চলবে……..