আপনাকেই চাই
পর্ব_০৩
Sumaiya_Moni
অফিসে এসে অহানের ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যায়।সবার ওঁকে দেখে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে। যেই মেয়ে কর্মচারীদের সাথে অহান ফ্লার্ট করতো তারাও এখন ওঁকে দেখে মুখ টিপে হাসছে।সবার কাছে এখন অহান হাসির পাত্র কেবল। অহান বেচারা মুখ ভার করে নিজের স্থানে এসে বসে।
কিন্তু বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারে না। তাঁর আগেই বসের পি,এ এসে অহানকে ডাকে। অহান বসের সাথে দেখা করতে তার কেবিনে আসে। ছুটি না নিয়ে যাওয়ার ফলে প্রথমে বস ওঁকে বকাঝকা করে,পরক্ষণেই অহানের এমন নতুন পরিবর্তন দেখে হেসে দেয়। অফিসের বসও ওঁকে দেখে হেসেছে। এর চেয়ে খারাপ কিছু আর কি হতে পারে। অফিসের অহান ছিল হ্যান্ডসাম দের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যক্তি। সবার সাথে ভাব দেখিয়ে কথা বলতো। আর আজ সে অফিসের মধ্যে আনস্মার্ট দের মধ্যে একজন। অহান চুপচাপ নিজের সিটে বসে কাজ করতে থাকে। আশেপাশের কর্মচারীরা যা বলছে সব চুপচাপ শুনে যাচ্ছে। তখনি ওঁর কাছে রিফাত আসে। অহানের কাঁধে হাত রাখতেই পিছনে ফিরে তাকায় অহান। সঙ্গে সঙ্গে রিফাত চমকে যায়।
এ কাকে দেখছে সে।যে ছেলে তার স্মার্টনেস দেখিতে সবাইকে জেলাস ফিল করাতো আর আজ তাঁর এমন করুন হাল!
খুব ভাবভার বিষয়। রিফাত কিছু বলতে যাবে তখনি অহান রিফাতের কোমড় পেঁচিয়ে ধরে এমন অবস্থার জন্য কান্না করতে থাকে। সব কর্মচারীরা আরো আগ্রহ নিয়ে ওঁদের দু’জান দিকে তাকিয়ে আছে। রিফাত এটা দেখে অহানের পিঠে হাত রেখে বলে,
-“সবাই দেখছে,কান্না থামা অহান।”
অহান চট করে রিফাতের কথা শুনেই ওঁকে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে বসে বলে,
-“আমি কান্না করছিলাম না। কান্নার অভিনয় করছিলাম। ” বলেই ল্যাপটপ ঘাটতে থাকে।
-“এই ছেলে কখনো শুধরাবে না!” মনে মনে বলে রিফাত।
লাঞ্চ টাইমে…..
অহান রিফাতকে সব কিছু খুলে বলে। সাথে কালকের বলা কথার জন্য গালে একটা পাঞ্চও মেরেছে। যার কারণে রিফাতের গাল লাল হয়ে আছে। একটা বাটি আইসক্রিম কিনে গাল লাল হওয়া স্থানে লাগাতে লাগাতে বলে,
-“তার মানে তুই বলতে চাইছিস ভাবি এখন তোর বউ।”
অহান চোখ রাঙ্গিয়ে বলে,
-“তাহলে এতক্ষণ তোকে কি রবীন্দ্রনাথের কবিতা শুনিয়েছি।”
-“বুঝতে পারছি। আর বলা লাগবে না।”
কিছুক্ষণ দু’জনেই নিরব থাকে। পরক্ষণেই রিফাত নিরবতা চ্ছিন্ন করে বলে,
-“দোস্ত বিয়ে করলি ট্রিট দিলি না।”
কথাটা বলতে রিফাতের দেরি হলেও অহানের পাঞ্চ মারতে দেরি হলো না। এবার অপর গালে মেরেছে। অহান রাগে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
-“ট্টিট দিলাম। এবার ডাক্তারের কাছে কিয়ে ট্রিটমেন্ট করে নিস।”বলেই অহান রাগে সেখান থেকে চলে যায়।
রিফাত এ গাল থেকে আইসক্রিম নিয়ে অপর গালে লাগাচ্ছে।ব্যথায় কাতর মাখা কন্ঠে বলে,
-“ভাবিকে বলে তোর শাস্তি দ্বিগুণ করব দাঁড়া। অহ্!”
রাতে……
সারাদিন ইহিতার বদ্ধ রুমেই একা একা সময় কাঁটিয়ে দেয়। অনেকক্ষণ পর্যন্ত হামিদা বানুর সাথে কথা বলেও সময় যেন কাঁটছে না। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দশটা বাজতে দশ মিনিট বাকি। ইহিতা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পায়চারী করছে। দশটা নয় মিনিট হতেই কলিং বেল বেজে উঠে। ইহিতা তড়িঘড়ি করে দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলতেই ইহিতা অহানের ক্লান্তি মাখা চেহারা দেখতে পায়। সাথে চেহারায় ফুটে আছে রাগের ছটা। ইহিতা পাশে সরে দাঁড়ায়। অহান ইহিতার দিকে না তাকিয়েই হনহনিয়ে রুমে চলে যায়।
ইহিতা দরজা লাগিয়ে মনে মনে বলে,
-“মনে হয় অহান রেগে আছে। আজ একটু বেশি হয়ে গেছে। কিন্তু তোমার জন্য এটা পারফেক্ট অহান।”
ইহিতা কিচেনে আসে। খাবার টেবিলে বেড়ে অহানকে ডাকতে থাকে। অহান তখন বাথরুমে শাওয়ার নিচ্ছিল। বাথরুমে বসে ইহিতার কন্ঠের স্বর শুনে অহানের মন চাইছে গলা টিপে দিতে। আজ তার জন্যই সবার সামনে ইনসাল্ট হয়েছে।
সবাই তাঁকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছে। কিভাবে ভুলে যাবে অহান এসব। চোখ বন্ধ করলেই তাঁদের বলা কথা কানে বিষের মতো বাজছে। অহান ফুল শাওয়ার ছেড়ে মাথা ঠান্ডা করে। কিছুক্ষণ পর বাথরুম থেকে বের হয়ে জামা কাপড় পড়ে বাহিরে আসে। ইহিতা তখন টেবিলের পাশেই খাবার নিয়ে বসে ছিল। অহান কোনো কথা না বলেই খাবার খেতে শুরু করে। ইহিতা অহানের চেহারায় রাগ দেখে বিভিন্নভাবে ওঁর সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু অহান কথা বলে না। ইহিতা এবার মুচকি হাসে। উঠে দাঁড়িয়ে অহানের পাশে বসে। অহান ঘাড় ঘুরিয়ে ভ্রু কুঁচকে ইহিতার দিকে তাকায়। ইহিতা সুইট স্মাইল দিয়ে অহানের গাল টেনে দিয়ে বলে,
-“রাগ করে না অহান বাবু,কিনে দেবো কমলালেবু। অহান বাবু রাগ ফেলে হেসেছে,আকাশে চাঁদ উঠেছে। ”
অহান ইহিতার এমন কবিতা শুনে বিরক্ত হয়ে ওঁর গাল থেকে হাত সরিয়ে বসা থেকে উঠে রুমে গিয়ে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়। ইহিতা অহানের এমন ব্যবহারে মৃদ হাসে। অহানের এমন রাগের সাথে ইহিতা অনেক আগে থেকেই পরিচিত। তাই ওর কাছে এগুলো কোনো ব্যাপার না। বার্তি খাবার গুলো ফ্রিজে রেখে থালাবাসন নিজেই ধুয়ে রাখে। তারপর ড্রইংরুমের লাইট নিভিয়ে রুমে চলে আসে। বিছানায় বসে বালিশের নিচ থেকে সেই ফটো ফ্রেমটি বের করে। গলায় হাত দিয়ে চেইন সহ লকেটটি দেখতে থাকে। এটা আরমান ওঁকে বাসর ঘরে দিয়েছিল। আরমারের মৃত্যুর পর খুলে রেখেছিল। কিন্তু সেদিন প্লেনে বসে এটা গলায় পড়ে নেয়। কেন জানি খুব পড়তে মন চাইছিল। টেবিল লাইট নিভিয়ে ফটো ফ্রেমটি বুকের সাথে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে ইহিতা।
.
.
.
সকাল থেকে হামিদা বানু আজমল রহমানের সাথে চিল্লাচিল্লি করছে। এত করে তাকে চিনি কম খেতে বললেও কথা শুনানো যায় না তাকে। আজমল রহমানের ডায়াবেটিস। তাই হামিদা বানু তাকে চিনি কম খেতে বললেও সে তার বারন শুনে না। এই জন্য সকাল থেকেই চিল্লাচিল্লি শুরু করেছে সে। আজমল রহমান বেশ আরামে কানে তুলো গুঁজে ইজি চেয়ারে বসে পেপার পড়ছে। হামিদা বানুর কথা সে কিছু শুনছে না।
_________________________
সকালে অহানের ডাকে ইহিতার ঘুম ভাঙে। বিছানা থেকে উঠতেই মাথাটা চক্কর দেয়। কিছুক্ষণ বসে থেকে তারপর ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসে। আজ বেশ লেট হয়ে গেছে অহানের। তাই ইহিতাকে রেখেই নাস্তা খাচ্ছে অহান। ইহিতা নাস্তা খেতে বসার আগেই অহান পানি খেয়ে দরজা খুলে বের হতে নেয়। কিন্তু পিছন থেকে ইহিতার ডাকে থেমে যায়। অহান প্রচুর বিরক্ত হচ্ছে। সে জানে ইহিতা কেন তাকে ডেকেছে। আবার কালকের মতো ক্ষেত বানাবে।
কিন্তু ইহিতা এমন কিছু করে না আজ। অহানের সামনে এসে চুল গুলো হাত দিয়ে ঠিক করে দেয়। শার্টের কলার নামিয়ে হাতার বোতাম লাগিয়ে দেয়। তারপর অহানের কাছ থেকে দূরে সরে চোখের ইশারায় যেতে বলে। অহান দ্রুত চলে যায়।
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে অহান হাত ঘড়ি দেখতে থাকে।
আজ অনেক লেট সে। টেক্সি করে কোনোমতে অফিসে পৌঁছেই কারো সাথে কথা না বলে নিজের কাজ করতে থাকে। আজকে আর কেউ অহানকে দেখে হাসাহাসি করেনি।
সব কিছু স্বাভাবিকই ছিল।
.
.
ইহিতা ফ্ল্যাট থেকে নিচে নেমে বাহিরের পরিবেশটা দেখছে। সব কিছুই ভিন্ন। হতেই হবে। কারণ এটা তো আর বাংলাদেশ নয়। পাশের বিল্ডিংয়ের কিছু বাচ্চারা বল নিয়ে খেলছে।
ইহিতা বাচ্চাদের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে তাঁকে। তখনি একজন যুবক ও যুবতী তাদের দু’জনকে কথা কাটাকাটি করতে দেখে। তাঁদের মধ্যে কেনো বিষয় নিয়ে ঝগড়া লেগেছে। ছেলেটি মেয়েটিকে মানানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মেয়েটি গাল ফুলিয়ে অভিমান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁদেরকে দেখে ইহিতার বুক চিঁড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। ঠোঁটে বিষাদময় হাসি ফুটিয়ে বাসার ভেতরে চলে যায়। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে ইহিতার চোখ থেকে পানি ঝড়তে থাকে। কিন্তু ইহিতা তোয়াক্কা করে না। এক পর্যায় ইহিতা সিঁড়িতে বসে পড়ে হো হো করে কেঁদে দেয়। চাপা কান্না যে আর বুকের মাঝে দমিয়ে রাখতে পারছে না। খুব মনে পড়ছে আরমানের কথা। তাঁর সাথে কাঁটানো মুহূর্তের কথা। এখন নিজেকে বড্ড একা মনে হচ্ছে। তাঁকে সামলানোর মতো এখানে কেউ নেই। সে একা।
.
.
লাঞ্চ টাইমে অহান একা বসে কিছু একটা ভাবতে থাকে। রিফাত পাশে বসেই নিরবে কফি খেয়ে যাচ্ছে।
আমার ভালো দিন গুলোকে সে মাটি করে দিয়েছে। না পারি মেয়েদের সাথে ঠিক করে কথা বলতে। না পারবো ফুর্তি করতে। কয়দিন ধরে নেশাও করতে পারছি না। ইয়াবার প্যাকেট কাল রাতে রুমে খুঁজে পাইনি। নিশ্চয়ই ইহিতা ভাবি ফেলে দিয়েছে। এমন ভাবে চলতে দিলে হবে না। আমি পুরো বরবাদ হয়ে যাব। আমাকে কিছু করতে হবে। আজকে থেকে সে নয়,বরং আমি তাকে জ্বালাবো। কিভাবে সেটা সে বুঝতেই পারবে না। অহানের ভাবনার ছেদ ঘটে রিফাতের ডাকে। অহান ভাবনাকে পাশে ফেলে কফি খেতে থাকে।
আজ অহান আর রিফাত বাসায় তাড়াতাড়ি ফিরেছে। অহান ফ্রেশ হয়ে ওর প্রথম কাজ আইডিয়া কাজে লাগায়। ড্রইংরুমে লম্বা করে সয়াবিন তেল ফেলে রাখে। মনে মনে অহান ইহিতার পড়ে যাওয়ার দৃশ্যের কথা ভেবে বেশ খুশি হয়। তেলের বোতল জাগা মতো রেখে শয়তানি হাসি দিয়ে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। ইহিতা বাহিরে এসে ড্রইং রুমের ফ্লোরে পা রাখতে যাবে তখনি কিছু একটা দেখতে পায়। বসে হাত দিয়ে দেখে এটা তেল। ইহিতা মুচকি হাসে। ভালো করেই বুঝতে পারে এটা কার কাজ,আর কেন করেছে। ইহিতা অহানের আইডিয়াকে একটু ভিন্ন দিকে মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ওঁর রুমে সামনে তেল ফেলে রাখে। তারপর রুমে চলে আসে।
অনেকক্ষণ পরও অহান ইহিতার চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে না দেখে রেগে যাচ্ছে। দরজা খুলে এক পা বাহিরে রাখতেই ধপাস পরে চিৎ হয়ে পড়ে যায় অহান। কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনে ইহিতা রুম থেকে বের হয়। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ইহিতা অহানের দিকে গম্ভীর মুডে তাকিয়ে থাকে।
অহান কোমড়ে হাত রেখে ওর আম্মুকে ডাকছে। ইহিতাকে দেখে শান্ত ভঙ্গিতে বলে,
-“পানি ছিল তাই স্লিপ কেটে পড়ে গেছি।”
শুনেই ইহিতা রুমে চলে আসে। রুমে এসে মুখে হাত দিয়ে হাতে। অহান চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে। মনে মনে বলে,
-“কে পরার কথা ছিল। আর কে পরে গেল। এই আইডিয়া ক্যান্সেল। ও মা।”
সকালে…
ইহিতা আজ তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠেছে। অহান ইহিতাকে উঠতে দেখে ওঁর নতুন প্লান শুরু করে। ফ্রিজের লাইনের তাড়ের সাথে কিছু একটা করে লাইন অর করে দেয়। ইহিতা যখন কিচেনে আসছিল তখন অহানকে ফ্রিজের কাছে বসে থাকতে দেখে আড়ালে লুকিয়ে যায়। ইহিতা বুঝতে পারে অহান ওঁকে নতুন কোনো ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। ইহিতা হাসে। অহান ওঁর কাজ সেরে ডিম অমলের বানাতে শুরু করে। এখন অহান ইহিতার কিচেনে আসার অপেক্ষা করছে। অহানের অপেক্ষা অবসান ঘটে। ইহিতা কিচেনে এসে অহানের দিকে তাকিয়ে ফ্রিজ থেকে একটি ঠান্ডা পানির বোতল বের করে নিয়ে চলে যায়। অহান বোকা হয়ে যায়। এতক্ষণে তো ইহিতার কারেন্টের শক খাওয়ার কথা। খেল না কেন?ফ্রিজের সামনে এসে বিষয়টা ভালো করে পর্যবেক্ষণ। তারপর এক হাত দিয়ে ফ্রিজ খুলতে নিলেই চড়ম ভাবে শক খায়। শখ খেয়ে কাঁপছে অহান। একটু পরেই আপনা আপনি শক খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। হাত সরিয়ে নিয়ে অহান জোরে জোরে নিশ্বাস নেয়।
-“ইহিতা ধরলো তখন কিছু হলো না,আর আমি ধরলাম তখনি শক।” রেগে কথাটা বলেই যে তাড় গুলো লাগিয়েছিল সেগুলো ছিঁড়ে ফেলে অহান। রাগে কিচেন থেকে বের হয়ে যায়। ইহিতা কিচেনে এসে অহানের এমন অবস্থা দেখে অনেক মজা পায়। কিচেন থেকে বেরিয়ে রুমে চলে যায়। আসলে ইহিতা যখন পানি নিতে ফ্রিজের কাছে আসবে,তার আগেই মেইন সুইচ অফ করে দেয়। তাই নিঃসংকোচে ফ্রিজ থেকে পানি নিয়ে চলে যায়। এবং মেইন সুইচ অন করে দেয়।
যখনি অহান ফ্রিজ খোলার জন্য হাত বাড়ায় তখন সে শক খায়। বেচারা অহান তার কাছে এসব বেমালুম।
.
.
.
.
.
.
Continue To………..