ভালোবাসার টান
part:55,56
writer:Tanzidaa Jannat
55
মিসকা ভিতরে ঢুকে নাবিলাকে বাইরে যেতে বলে,,,,
নাবিলাঃ ঠিকাছে ম্যাম আমি কাউকে পাঠাচ্ছি এগুলো পরিস্কার করার জন্য,,,,
মিসকাঃ না থাক লাগবে না আমি মেনেজ করে নিব,,,
নাবিলা কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো,,,,
ইফতি মাথা নিচু করে আছে কি বলবে মিসকাকে আর নীলাও এখন বের হলো যদি দেখা হয়ে যায়,,,,,,
মিসকা বক্সটা টেবিলের উপর রেখে ইফতির হাতে হাত রাখে,,,,
ইফতি কেপে ওঠে,,,,কেনো আজ ভয় হচ্ছে ওর,,, কিসের এতো ভয়,,,,
মিসকা ইফতির হাত ধরে টেনে সোফায় বসতে বলে ইফতি বাধ্য ছেলের মতো বসে,,,,
মিসকাঃ ইফতি আমি তোমার স্ত্রী হওয়ার আগে তোমার বন্ধু। আর বন্ধুর কাছে কিছু লুকাতে নেই,,,,আর এই খাবার গুলো কেনো ফেললে বলতো,,,,আচ্ছা বুঝলাম তোমার মোনটা ভালো নেই তাই বলে এতগুলো খাবার ফেলে দিবে,,,??ইফতি তুমি এখন জীবনের মাঝে বোঝ হয়তো আমার থেকেও বেশি কিন্তু তুমি কি এটা ভেবে দেখেছ আজ রাগে যে খাবারটুকু ফেললে এই খাবারের জন্য মানুষ দিনরাত পরিশ্রম করছে,,,,,, হাত পাতছে মানুষের কাছে,,,
ইফতিঃ ছড়ি( মাথা নিচু করে)
মিসকাঃ আমার দিকে তাকাও,,,,মিসকা দুহাতে ইফতির মুখ আবদ্ধ করে বলে
ইফতি মিসকার দিকে তাকায়,,,
মিসকাঃ মোন খারাপ তাই তো,,,,আচ্ছা ঠিকাছে আমার সাথে এসো,,,,( বলেই ইফতিকে টেনে জানালার কাছে নিয়ে যায়,,,,,) এবার চোখ বন্ধ করো আর জোরে জোরে নিশ্বাস নাও
ইফতি চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস নিচ্ছে,,,চোখ খুলে মিসকার দিকে তাকিয়ে হাসি দেয়
মিসকাঃ কেমন ফিল হচ্ছে??
ইফতিঃ ভালো লাগছে,,,,,
মিসকাঃ এবার এসো তো আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে,,,,,,
ইফতিঃ তুমি খাও নি
মিসকা ঃ ভেবেছি আজ দুজনে একসাথে লাঞ্চ করবো( খাবারগুলো প্লেটে সার্ভ করছে আর বলছে)
ইফতিঃ এই দাড়াও এক প্লেটেই নাও দুজন একসাথে খাবো,,,,
মিসকাঃ ওকে( একটু মুচকি হাসি দিয়ে)
ইফতি মিসকার পাশে এসে বসে হা করে
মিসকাঃ হাত থাকতে আমি কেন,,,,,,,
ইফতিঃ কারন তুমি আমার বউ তাই,,,,,,
মিসকাঃ একটু হেসে ইফতির মুখে খাবার তুলে নেয়,,,
ইফতিঃ ওয়াও এতো ভালো রান্না করতে পারো,,,,খাচ্ছে আর বলছে
মিসকাঃ আমি তো তোমায় এমনই দেখতে চাই ইফতি( মনে মনে)
ইফতি ঃ এই মিসকা কি ভাবছো??
মিসকাঃ তেমন কিছু না,,,
ইফতিঃ তোমার হাত তো কেটে গেছে এ অবস্থায় রান্না করতে কেন গিয়েছ??
মিসকাঃ রুমা সবকিছু জোগাড় করে দিয়েছে আর আমি শুধু রান্না করেছি,,,,কষ্ট হয় নি,,,( তোমার জন্য তো আমি আমার জীবনটাও হাসতে হাসতে দিতে পারি মনে মনে)
ইফতিঃ আচ্ছা তুমি আমার জন্য খাবার এনেছ তাহলে নাবিলাকে কেন পাঠাইছ??
মিসকাঃ সারপ্রাইজ দিবো ভেবেছি কিন্তু তুমি যেমন বিহেভ করলে আমিই সারপ্রাইজ হয়ে গেলাম,,,,😂
ইফতিঃ আসলে মাথাটা ঠিক কাজ করছিলো না,,,
মিসকাঃহুম টেনশন করছিলে,,,এতো কিসের চিন্তা বলতো,,,, তোমার মোন যা চায় যে টাতে সায় দেয় তুমি শুধু সেই কাজটা করবে পিছনে ঘুরে তাকাবে না,,,,,তাহলে দেখবে সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে৷ হবে,,,,
ইফতিঃ হুম,,,,,এখন তুমিও হা করো তো
মিসকা হা করতেই ইফতি মিসকাকে খাইয়ে দিচ্ছে,,,, মিসকার চোখ ভরে অাসছে পানিতে,,,,মিসকা চেয়েও পারছে না চোখের পানি ধরে রাখতে,,,
ইফতিঃ কি হলো এভাবে কাঁদছ কেন??
মিসকাঃ না এমনি,,,
ইফতিঃ আমি জানি তুমি আমার ব্যবহারে কষ্ট পেয়েছ,,,
মিসকাঃ উফফ ইফতি তুমিও না,,,,, সবসময় সবার মুড এক থাকে না এরকম মাঝে মাঝে হয়,,,,আমি একদম ঠিক আছি
ইফতিঃ যাক তাহলে৷ মিসকার সাথে নীলার দেখা হয় নি,,,,কিন্তু আমার উচিত সবকিছু ওকে জানিয়ে দেওয়া,,,,,(মনে মনে)
মিসকাঃ কি হলো কি ভাবছো,,
ইফতিঃ না কিছু না,,,,
মিসকা ঃ নাও পানি খেয়ে নাও আমাকে এবার যেতে হবে
ইফতিঃ আরেকটু বসলে হতো না,,,?
মিসকাঃ অনেক্ষন হলো এসেছি,,, হিয়াকে নিয়ে বাসায় ফিরবো,,,,,,,
ইফতিঃ আচ্ছা কিন্তু সন্ধ্যার দিকে রেডি থেকো আমরা ঘুরবো আজকে,,,,
মিসকাঃ আচ্ছা ( মিসকা নিচে পরে থাকা খাবার গুলো পরিস্কার করছে,,,,,,
ইফতিঃ এগুলো আমি কাউকে বলে পরিস্কার করিয়ে নেব
মিসকাঃ এইতো হয়ে গেছে,,,,হাত ধুয়ে মিসকা চলে যেতে নেয়,,,,
ইফতিঃ মিসকা,,,,
মিসকাঃ হুম কিছু বলবে??
ইফতিঃ মিসকার দিকে এগিয়ে ওর কপালে একটা চুমু একে দিয়ে,,,,,,বললো এটা বাকি ছিল,,,
মিসকা ইফতিকে জড়িয়ে ধরে বললো ইফতি আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি,,,,,,, 😭আমি জানি এটা ঠিক না আমি তোমাকে ওয়াদা করেছিলাম আমি তোমার সামনে কোনো দিন ভালোবাসার অধিকার নিয়ে দাড়াবো না। বন্ধু হয়ে থাকবো সবসময়,,,,😭কিন্তু ইফতি আমিও তো মানুষ বলো আমারও মোন আছে বলো আমি কখন তোমায় এতোটা ভালোবেসে ফেলেছি তা নিজেও জানি না,,, প্লিজ ইফতি আমাকে ছেড়ে দিও না ইফতি,,,,,আমি তোমার সাথে থাকতে চাই,,,তোমার হাত ধরে সারাজীবন বাঁচতে চাই,,,,,😭😭
ইফতিঃ এই মিসকা কি হলো এভাবে তাকিয়ে কি ভাবছ??
মিসকাঃ হুম( তাহলে এতক্ষন আমি কপ্লনায় ডুবে ছিলাম)
ইফতিঃ কি হলো,,,,,,
মিসকা ইফতির গালে হাত দিয়ে বললো কিছু না 😊,,,,,বায়
মিসকা চলে যায় ইফতি মিসকার যাওয়ার দিক তাকিয়ে আছে,,,,,
ইফতিঃ ভালোবাসি মিসকা তোমায় খুব ভালোবাসি,,,,, কিন্তু আমার ভয় হয় মিসকা খুব ভয় হয় আমি যাকে ভালোবাসি সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যায়,,,, আমার জীবনটা তুমি পাল্টে দিয়েছ,,,তোমাকে আমি কিছুতেই হারাতে পারবো না মিসকা কিছুতেই না,,,,
মিসকাঃ গাড়িতে বসে কাঁদছে,,,,
সিফাতঃ বউমনি কাঁদছ কেন??
মিসকাঃ কিছু না সিফাত ভাই
সিফাতঃ ভাই বলছ আবার লুকাচ্ছ
মিসকাঃ আজকে আমি নীলাকে ইফতির অফিস থেকে বের হতে দেখেছি
সিফাতঃ কি বলো তুমি??
মিসকাঃ হ্যা সিফাত ভাই
সিফাতঃ আমি কি সাহেবকে ব্যাপারটা জানাবো??
মিসকাঃ না না এই কাজটা ভুলেও করবেন না আমি বাবাকে এই মুহূর্তে কিছু জানাতে চাই না,,,,,
সিফাতঃ আচ্ছা,,,,,
মিসকা গাড়ি থেকে নেমে হিয়াকে আনার জন্য স্কুলের ভিতর গেলো,,
হিয়াঃ মাম্মাম,,,,,,, বলেই দৌড়ে আসলো,,
মিসকাঃ হিয়াকো কোলে নিয়ে,,,,,সবকিছু ঠিকতো
হিয়াঃ হুম
মিসকাঃ আচ্ছা চলো,,,,,
হিয়াঃ মাম্মাম তুমি কেঁদেছ?
মিসকাঃ না তো
হিয়াঃ ও
হিয়াকে কোলে নিয়ে মিসকা গাড়িতে উঠলো সিফাত গাড়ি স্টার্ট দিলো বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে,,,,,, কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ি পৌছে গেলো,,,
মিসকা হিয়াকে নিয়ে রুমে গিয়ে হিয়াকে ফ্রেস করে দিয়ে বসতে বললো
হিয়াঃ টিভিতে কার্টুন দেখছে
মিসকাঃ সারপ্রাইজ,,,,,, দেখ কি এনেছি তোমার জন্য,,,
হিয়াঃ বিরিয়ানী!!!😍! মাম্মাম,,,,,, আমার তো এটা প্রিয় খাবার
মিসকাঃ হুম জানি তো,,,, মিসকা হিয়াকে খাওয়াতে গিয়ে বলে হিয়া তোমায় একটা কথা বলি,,,
হিয়াঃ হু বলো
মিসকাঃ ধরো কেউ এসে বললো তোমার মাম্মাম একদম ভালো না,,,,, আমি তোমার ভালো মাম্মাম তখন তুমি কি করবে??
হিয়াঃ খাবো না,,,বলেই দৌড়ে চলে গেলো,,,
মিসকাঃ কি হলো হিয়া,,, আচ্ছা ছড়ি বাবু রাগ করে না হিয়া(৷ মিসকাও ওর পিছনে পিছনে গেলো)
হিয়াঃ ওর রুমে গিয়ে মুখ গোমড়া করে বসে আছে
মিসকাঃ আই এম ছড়ি,,,,, দেখ আমি কান ধরে উঠবস করছি,,, এমন আর কখনও হবে না,,,,,
হিয়াঃ মাম্মাম বলেই মিসকার গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদছে,,,,,
মিসকাঃ কাদে না মাম্মাম তুমি কাঁদলে আমার ভালো লাগে না,,,,,আমি প্রমিস করছি কখনও আর বলবো না
হিয়াঃ মাম্মাম তুমিই আমার ভালো মাম্মাম,,, আমার আর কাউকে চাই না,,,, তুমি আমায় প্রমিস করো তুমি আমাকে রেখে কোথাও যাবে না
মিসকাঃআচ্ছা বাবা প্রমিস,,,,😊
হিয়ার কপালে গালে চুমু একে দেয়,,,,,তোমায় ছেড়ে আমি বাঁচতেই পারবো না,,,,
হিয়াকে কোলে নিয়ে রুমে এসে খাবার খাইয়ে দেয়,,,,মিসকা হিয়াকে নিয়ে সুয়ে পরে,,,,হিয়াকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে কখন ও ঘুমিয়ে পরে টেরও পায় না,,,,
মিসেস নিলুফা ঃ রুমে এসে দেখে দুই মা মেয়ে ঘুমুচ্ছে,,, মিসকার পাশে বসে ওর কপালে একটা চুমু দেয়,,,,,(তোরা সুখি থাক মা আমি চাই তোদের মাঝে কেউ৷ কখনও না আসুক,,,,তোর ভালোবাসার কাছে যে সবকিছু হার মানায়,,,, ইফতিকেও পাল্টে যেতে হয়েছে,,,,,তুই পারবি সবকিছু ঠিক করতে,,,,আল্লাহ তোকে শক্তি দিক এসব ভাবতে ভাবতে দুচোখ থেকে পানি ঝরে পড়ে) মিসেস নিলুফা চলে যায়,,,
মোবাইলের রিংটোনের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় মিসকার,,,
ঘুম ঘুম চোখে ফোন রিসিভ করে,,,
মিসকাঃ আসসালামু আলাইকুম,,,, কে বলছেন
ইফতি ঃ কি ম্যাডাম নাম্বার টা কি এখনও চিনতে পারছ না??
মিসকাঃ ও আচ্ছা তুমি
ইফতিঃ জ্বি,,,,, ঘুমাচ্ছিলেন মনে হচ্ছে
মিসকাঃ হ্যা,,,একটু ঘুমিয়েছিলাম
ইফতিঃ তো ঘুম ভাঙলে রেডি হয়ে নিন
মিসকাঃ কেনো??
ইফতিঃ কেনো মানে বললাম না আজ ঘুরবো,,,,
মিসকা কিছু বলতে গিয়ে চুপ করে গেলো
ইফতিঃ কি হলো??
মিসকাঃ না কিছু না,,,, আচ্ছা ফোন রাখ আমরা রেডি হচ্ছি,,,,
ইফতিঃ ওকে,,,,,,
মিসকা পাশে তাকিয়ে দেখে হিয়া এখনও ঘুমাচ্ছে। মিসকা হিয়ার কপালে চুমু দিয়ে ওকে ডাকে
হিয়াঃ মাম্মাম আরেকটু ঘুৃমাই না??
মিসকাঃ তাহলে তো আমাদের সাথে তোমার ঘুরতে যাওয়া হবে না,,,
হিয়া লাফ দিয়ে উঠে,,,,
হিয়াঃ সত্যি মাম্মাম আমরা ঘুরতে যাবো??
মিসকাঃ হুম,,,,এখন চলো রেডি হতে হবে তো,,,,,
দুজনে রেডি হয়ে নেয়,,,,,,
ইফতি প্রায় ৫ টার দিকে আসে,,,
মিসকা হিয়াকে নিয়ে নামছে,,,,
মুফতিউর রহমানঃ তোমরা কোথায়ও যাচ্ছ? ইফতিকে দেখলাম বাইরে অপেক্ষা করছে,,,,
মিসকাঃ বাবা আমরা একটু ঘুরতে বের হবো,,,
মুফতিউর রহমানঃ ওয়েল ডান মাই ডিয়ার,,,,,যাও সাবধানে থেকো,,,,
মিসকাঃ আচ্ছা আসছি মিসকা হিয়াকে নিয়ে বাইরে গিয়ে দেখে ইফতি দাড়িয়ে আছে,,,,
ইফতিঃ তো হলো আপনাদের?? আমি তো ভাবলাম আজ রাত পার হয়ে যাবে,,,,সাজগোজ করতে করতে,,,,
মিসকাঃ 😒😒😒
মিসকা কোনো কথা না বলে গাড়িতে উঠে বসে হিয়াকে কোলে নিয়ে,,,,
ইফতি ঃ গাড়ি স্টার্ট দেয়,,,,,,বার বার মিসকার দিকে তাকায়,,,
মিসকাঃ বাইরে তাকিয়ে আছে,,,,
হিয়াঃ বাবাই মাম্মাম আজকে বিরিয়ানী রান্না করেছে,,,,
ইফতিঃ ও তাই,,,,
মিসকাঃ ইফতির দিকে ভ্রু কুচকে তাকায়,,,
মিসকার ফেইসের অবস্থা দেখে ইফতি হেসে দেয়,,,
হিয়াঃ বাবাই আমরা কোথায় যাচ্ছি,,,,
ইফতিঃ এমন একটা জায়গায় যাবো যেখানে শুধু আমরা তিনজন থাকবো আর কেউ না,,,,,
মিসকাঃ হাহা,,,,ঢাকায় আবার এমন জায়গা আছে নাকি??
ইফতিঃ দেখা যাক,,,,,,,
ইফতি একটু ভিন্ন পথ ধরে যাচ্ছে,,,,
অনেক্ষণ লং ড্রাইভের পর একটা জায়গায় গাড়ি থামায়,,,
মিসকাঃ এখানে কি কোনো অনুষ্ঠান ??
ইফতিঃ আগে চলো তাহলে তো দেখতে পাবে
মিসকা হিয়ার হাত ধরে ভিতরের দিকে এগলো,,,,মিসকা তো পুরো অবাক চারদিকে লাইটিং,,,,বিশাল জায়গা জুড়ে ফুলের বাগান,,,,, ফুলের ঘ্রানে চারোদিক ভরে উঠেছে,,,,,, হিয়া তো খুশিতে ছোটাছুটি করছে,,,,,কোনো গাড়ির শব্দ মানুষের কোলাহল নেই,,, একদম নিরিবিলি একটা জায়গা,,,,,
মিসকাঃ চারো দিক ঘুরে ঘুরে দেখছে,,,,
ইফতিঃ কি পছন্দ হয়েছে??
মিসকাঃ ইফতির দিকে তাকিয়ে মাথা নেরে সায় দেয়,,,,,,
ইফতিঃ আরো একটা সারপ্রাইজ আছে,,,,,
মিসকাঃ কি??
ইফতিঃ ওদিকটা তাকায়,,,
মিসকাঃতাকিয়ে দেখে বিশাল একটা বাড়ির মতো,,,কিন্তু ঠিক বাড়ি মনে হচ্ছে না,,,,,,,
ইফতিঃ যাবে,,,,,
মিসকা ইফতির দিকে তাকায়,,,,,
ইফতিঃ মিসকাকে একটা চোখ মেরে কোলে তুলে নেয়,,,
হিয়াঃ ইয়ে বাবাই মাম্মাম কে কোলে তুলে নিয়েছে,,,,
মিসকাঃ কি হচ্ছে হিয়ার সামনে কি করছেন নামান বলছি,,,,
ইফতিঃ চোখ বন্ধ কর,,,
মিসকাঃ কেন??
ইফতিঃ আহ করো না
মিসকা চোখ বন্ধ করে মিসকাকে একটা জায়গায় দাড় করায়,,,,
ইফতিঃ এবার চোখ খুলে দেখ,,,
মিসকাঃ চোখ খোলার সাথে সাথে মিশকা দেখলো চারদিক থেকে ফুল পরছে মিসকার মনে হচ্ছে ফুলের বৃষ্টি হচ্ছে,,,,,, মিসকা ইফতির দিকে তাকায়,,,,, ইফতি হাসছে,,,,,
হিয়াঃ ওয়াও বাবাই এত্ত সুন্দর জায়গাটা,,,,,,মাম্মাম দেখ রাস্তাটা সম্পুর্ণ ফুল দেওয়া,,,,,,,,, মনে হচ্ছে ফুলের রাস্তা,,,,,,
ইফতিঃ মিসকার সামনে হাটু গিরে বসে,,,,,একটা আংটি বের করে,,,,,
ইফতিঃ হবে কি আমার মনের রানী,,,,হবে কি আমার নিসঙ্গতার সঙ্গী,,,,,,, যখন বুড়ো হয়ে যাবো,,,,, হবে কি সেই বুড়োটার বুড়ি,,,,,,দিবে কি তোমার মুখের হাসির কারন হতে আমায়,,,,,দেবে কি আমায় তোমার চোখের পানির মুছে দেওয়ার অধিকার,,,,, ইফতি মিসকার দিকে হাতটা বাড়ায়,,,
মিসকাঃ মিসকা কাঁদছে তবে এটা খুশির কান্না,,,,
হিয়াঃ হিয়া মাম্মাম দেওনা হাতটা,,,
মিসকাঃ মাথা ঝুকিয়ে হ্যা বলে,,,ইফতির হাতে হাত রাখে,,,,,
ইফতিঃ হেসে মিসকাকে আংটি পরিয়ে দেয়,,,,,
হিয়াঃ ইয়ে,,,,,,,,,😍খুশিতে নাচানাচি করছে,,,
ইফতি দাড়াতেই মিসকা ইফতিকে জড়িয়ে ধরে,,,,,
চারোদিকে নানা ধরনের আতসবাজি ফুটে,,,,,পুরো আকাশটা আলোকিত হয়ে আছে,,,,,
ইফতিঃ মিসকার হাত ধরে ফুলের উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছে,,,,,,, মিসকার হাত ধরে আছে ওদের ছোট্ট পরী হিয়া,,,,
মিসকার মনে হচ্ছে ইফতি যদি এই হাতটা না ছাড়তো সারাজীবন যদি এই হাত ধরে পার করে দেওয়া যেত,,,,,সময়টা যদি এখানেই থমকে যেত,,,,,,
ইফতিঃ মিসকার দিকে তাকিয়ে বলে সারপ্রাইজ,,,,
মিসকাঃ তাকিয়ে দেখে ছোট্ট একটা টেবিল সেখানে গোলাপের পাঁপড়ি আর কেন্ডেল লাইট দিয়ে সাজানো,,,,,, চারোপাশে হোয়াইট আর পিঙ্ক কালারের কাপড়, বেলুন দিয়ে জায়গাটা সাজানো,,,,,
হিয়াঃ বাবাই তুমি তো সুপারহিরো,,,, এতোকিছু করেছ,,,,
মিসকাঃ ইফতি এসব??
ইফতিঃ হুম,,,,তোর জন্য হিয়ার জন্য,,, আমাদের জন্য,,,,,,ভালো লেগেছে তোমার??
মিসকাঃ খুব,,,,,,
ইফতিঃ একটা চেয়ার টেনে ইসারায় মিসকাকে বসতে বলে,,,,,
মিসকা একটু মুচকি হেসে বসে পরে,,,ইফতি হিয়াকে কোলে নিয়ে পাশের চেয়ার টায় বসায়,,,,,,
মিসকাঃ তুমি বসবে না??
ইফতিঃ চুপচাপ দেখে যাও,,,,,,,
কয়েকজন এসে খাবার রেখে চলে যায়,,,,,
মিসকাঃ এরা এখানে??
ইফতিঃ চলে গেছে,,,,,আর আসবে না,,,,
ইফতিঃ মিসকা আর হিয়ার প্লেটে খাবার সার্ভ করছে,,,,,
ইফতিঃ এবার শুরু করো,,,,
মিসকা উঠে ইফতিকে চেয়ারে বসিয়ে,,,,চামচ ইফতির সামনে ধরে বলে তুমি হা করো,,,,
ইফতি কিছু বলতে নিলে,,, মিসকা চামচ দিয়ে ইফতির মুখে খাবার পুরে দেয়,,,,,
ইফতি অবাক হয়ে হেসে দেয়,,,,,
ইফতি মিসকাকেও খাইয়ে দেয়,,,
হিয়াঃ বারে আমি কি করলাম,,,,আমাকে কেনো খাওয়াচ্ছ না??
ইফতি মিসকা দুজনের দিকে দুজন তাকিয়ে হেসে দেয়,,,,,
ইফতিঃ ওকে মাই ডিয়ার তুমি আমার কোলে বসো,,,,
হিয়াকে ইফতি, মিসকা দুজনেই খাইয়ে দিচ্ছে তিনজন মিলে হাসি মজার ছলে খাওয়ার পর্ব শেষ করে,,,,,
কিছু সময় ওরা আরো মজা করে কাটায়,,,,,
ইফতিঃ চলো তোমাদের জন্য আরো একটা সারপ্রাইজ আছে,,,,,
মিসকাঃ কি??
ইফতিঃ সেটার জন্য তো গাড়ির সামনে যেতে হবে,,,,
হিয়াঃ ওয়াও আরেকটা সারপ্রাইজ,,,,
ইফতি হিয়াকে কোলে নিয়ে সামনে হাটছে আর মিসকা একটু পেছনে হাটছে,,,,,
গাড়ির সামনে যেতেই ইফতি বলে তোমরা দাড়াও আমি আসছি,,,,,
মিসকা দেখলো ইফতি একটা বক্স এনেছে,,,, খুলতেই একটা কেক,,,,কেকের উপরে ওদের তিনজনের ছবি,,,,,মিসকা তো অবাক এটা সেই ছবি যটা হিয়া গতকাল সকালে তুলেছে,,,,মিসকা ইফতিকে জড়িয়ে আছে আর হিয়া মিসকার পিঠের উপর সুয়ে সেলফি তুলেছিল,,,,,
ইফতিঃ মিসকাকে চোখ দিয়ে ইশারা করে বলে কেমন হয়েছে??
মিসকা লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখে,,,,
ইফতিঃ এই নাও এই বেলুন গুলো উড়িয়ে দাও,,,,,
হিয়াঃ বাবাই এতোগুলো বেলুন,,,,
তিনজন মিলে বেলুনগুলো উড়িয়ে দেয়,,,,,
মিসকার কাছে সবকিছু কেমন জানি সপ্নের মতো লাগছে,,,,মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছে,,,,,
ইফতিঃ মিসকা কি হলো কি ভাবছ??
মিসকা ঃ হুম কিছু না,,,,
ইফতিঃ নাও এবার কেকটা কাটো??
মিসকাঃ কাটবো তবে সবাই একসাথে,,,,,,
তিনজন মিলে কেক কাটে,,,,,
মিসকা ইফতি দুজনকে হিয়া কেক খাইয়ে দেয়,,,,,,
হিয়াকেও ওরা দুজন কেক খাইয়ে দেয়,,,,,,,,,
ইফতি মিসকার সামনে কেক ধরতেই মিসকা হা করে কেক খাওয়ার জন্য কিন্তু ইফতি মিসকার গালে লাগিয়ে দেয়,,,,,,
মিসকাঃ তবেরে,,,দাড়াও দেখাচ্ছি মজা,,,বলেই দুজনে গাড়ির চারোপাশে দৌড়াতে থাকে,,,,,,,
হিয়াতো হাসতে থাকে ওদের কান্ড দেখে এক পর্যায়ে দুজন গাড়ির সামনে দাড়িয়ে হাপাতে থাকে,,,,
ইফতি পকেট থেকে রুমাল বের করে মিসকার গাল পরিস্কার করতে থাকে,,,,মিসকা ইফতির চোখের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,জোসনা রাত ইফতিকে দারুন লাগছে,,,,,,
হিয়ার কথায় দুজনে বাস্তবে ফিরে আসে,,,,
হিয়াঃ বাবাই চলো না আমরা গাড়ির উপরে সুয়ে চাঁদ দেখি,,,,
মিসকাঃ ওরে বাবা হিয়াও তো রোমান্টিক হয়ে গেছে,,,
ইফতিঃ দেখতে হবে না কার মেয়ে,,,,,
মিসকা ঃ রাক্ষস ও যে রোমান্টিক হয় তা আজ দেখলাম😜
ইফতিঃ কি বললে
মিসকাঃকোথায় কিছু বলি নি তো,,,😰,
তিনজন মিলে গাড়ির উপর সুয়ে আছে,,,,,,তিনজন গল্পে মেতে আছে,,,,কিছুক্ষণের মধ্যে দেখল হিয়া ঘুমিয়ে আছে,,,,
ইফতি হিয়াকে গাড়িতে সুয়ে দেয়,,,,,মিসকা তখনও গাড়ির উপর সুয়ে,,,,
ইফতি মিসকার হাতের উপর মাথা রাখে,,,,মিসকা প্রান ভরে চাদ দেখছে আকাশের মেঘের আনাগোনা চলছে,,,,,
ইফতি তাকিয়ে আছে,,,,মিসকার দিকে,,,,,
মিসকাঃ ওভাবে কি দেখছ??
ইফতিঃ কিছু না,,,,,,,,মিসকার হাত নিজের হাতে আবদ্ধ করে বুকে রেখেছে,,,,,,
মিসকাঃ আমার না সব কিছু কেমন স্বপ্ন মনে হচ্ছে,,,,,, মনে হচ্ছে ঘুম ভাঙলে সব হারিয়ে যাবে,,,,,,,,,,
ইফতিঃ মিসকার হাতে জোরে চিমটি কাটে,,,,
মিসকাঃ আউ কি করলা এটা,,,,,,,,,
ইফতিঃ তুমি যে স্বপ্ন দেখছ না এটা প্রমান করলাম,,,,,
মিসকাঃ তাই বলে এভাবে কেউ চিমটি কাটে?? 😏
ইফতিঃ বেশি কথা বললে গালে কামড় বসিয়ে দিবো
মিসকাঃ কি!!!😱
ইফতি মিসকার দিকে তাকায় দুজনে দুজনের দিক তাকিয়ে হেসে দেয়,,,,,,,,,,
এভাবে কতোটা সময়৷ পার৷ করলো নিজেরাও জানে না,,,,
মিসকাঃ ইফতি
ইফতিঃ হুম বলো
মিসকাঃ কতো বাজে খেয়াল আছে??
ইফতিঃ ১১ টা,,,,,বাজে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে,,,
মিসকাঃ ১১টা,,,,,, তাড়াতাড়ি বাসায় চলো,,,,
ইফতি গাড়ি স্টার্ট দিলো,,,,,,
মিসকা ঃ থ্যাংকস,,,
ইফতিঃ কেনো??
মিসকাঃ আজকের এই মুহুর্ত গুলো উপহার দেওয়ার জন্য,,,,,
ইফতিঃ মিসকার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো,,,
মিসকা ঃ ইফতি আস্তে( চিৎকার দিয়ে বললো)
চলবে,,,,,,
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,,,,