টক্কর,৪র্থ পর্ব
সাহেরা_খান
ওসি সাহেবের ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটালেন মাজেদা বেগম। তার কান্নার শব্দে তিনি বাস্তবে ফিরে এলেন। কৌতুহলের তাড়নায় তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “আপনার আরেক মেয়ের কী হয়েছে? তিনি এখন কোথায়?”
প্রশ্নগুলো ছিল আগুনে ঘি ঢালার মতো। কান্নার গতিবেগ বাড়িয়ে দিলেন মাজেদা বেগম। পরনের কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুখ মুছে তিনি বললেন,
“মেয়েটা হাসপাতালে পড়ে আছে। এক বছর হয়ে গেছে এখনো আমার মেয়ে সুস্থ হলো না।”
ওসি সাহেব ভাবনায় পড়ে গেলেন। তিনি অনুরোধ করে বললেন,
“একটু খোলাসা করুন। কী হয়েছিল আর কেনই-বা সে এখনো হাসপাতালে পড়ে আছে?”
মাজেদা বেগম ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন। তিনি নিজেকে সামলে অতীতে বিচরণ করা শুরু করেন। তিনি গুছিয়ে নিয়ে বললেন,
“আবিরার বিয়ের কিছু দিন আগে ঘটে ঘটনাটি। আমার ছোটো মেয়ের নাম কায়রা। ওরা জমজ বোন। কারা যেন ওকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর…।”
মাজেদা বেগম বলা থামিয়ে পুনরায় কাঁদতে আরম্ভ করেন। ওসি সাহেব বুঝতে পারছেন, ঘটনাটি অতিমাত্রায় জঘন্য ছিল। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা তার কাছে নেই। তিনি চুপচাপ প্রতিক্ষায় থাকলেন। কান্না শেষ হলেই নিজে থেকে বলবেন হয়তো। ওসি সাহেবের ধারণা সত্যি করে দিয়ে মাজেদা বেগম বললেন,
“মেয়েটাকে গণধর্ষণ করেছিল। ওকে বাঁচতে দিতেও চায়নি। খুন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ও প্রাণে বেঁচে গেলেও কোমায় চলে গেছে। এখন ডাক্তার কিছুই বলতে পারছে না।”
বোমা ফাটার আওয়াজের মতো ছিল কথাগুলো। মাজেদা বেগমের আহাজারি ওসি সাহেব সহ্য করতে পারছিলেন না। দুটো মেয়ের এক হাল করেছে যেহেতু, সে কোনো ছোটো অপরাধী না। পারিবারিক কোনো শত্রুতার কারণে ঘটেছে কি না তা খতিয়ে দেখার তাড়না অনুভব করলেন। তিনি দীর্ঘশ্বাস গোপন করে জিজ্ঞেস করলেন,
“পুলিশ কি কোনোকিছু জানতে পারেনি? একইরকম দুটো ঘটনা ঘটল, আপনাদের কাউকে সন্দেহ হয় না? কে বা কারা পিছনে থাকতে পারে কোনো ধারণা নেই?”
মাজেদা বেগম কিছুটা চমকে উঠলেন। তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে ওসি সাহেবের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। হতভম্ব ভাব কাটতেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
‘আবিরাকেও গণধর্ষণ করেছিল?’
ওসি সাহেবের মুখটি বাংলার পাঁচ রূপ ধারণ করে। তার মুখ দেখেই অনুমান করে নেন মাজেদা বেগম। এবার তিনি নিজেকে সামলাতে পারলেন না। কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তার থেকে আর কোনো সাহায্য না পাওয়ায় অন্যদের থেকে কায়রার ব্যাপারে খোঁজ নিলেন। তিমনদের হাসপাতালে ভর্তি বিধায় অসুবিধে হলো না ঠিকানা চিনতে। দুজনেই হাসপাতালের পথে রওনা দিলেন।
*
গাড়িতে বসে ওসি সাহেব ভাবনার গতি বাড়িয়ে দিলেন। কার সাথে এতবড়ো শত্রুতা থাকতে পারে যে দুই বোনকে একইভাবে নির্যাতন, খুন করল। একজন যদিও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে কিন্তু অন্যজন ফিরে আসার সুযোগ পায়নি। কিবরিয়া অনেক সময় ধরে কিছু বলার চেষ্টা করছে। কিন্তু সাহস হয়নি বিরক্ত করার। বেশ গভীর ভাবনায় মগ্ন আছেন ওসি সাহেব। গুরুত্বপূর্ণ খবরটা এখন দেবে কি না ভাবছে শুধু। বারবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে সে। ওসি সাহেব নিজেই বাস্তবে ফিরে আসলেন। কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে গিয়ে কিবরিয়াকে দেখে সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“আপনি কি কিছু বলতে চান? এরকম কেন করছেন? কোনো সমস্যা হয়েছে?”
কিবরিয়া হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। সে হাসিমুখে বলল,
“স্যার, রানার খোঁজ পেয়ে গেছে। ওর সাথে কখন দেখা করবেন? আমি কি আমাদের থানায় নিয়ে আসতে বলব?”
ওসি সাহেব খবরটি পেয়ে কিছুটা চমকে উঠেছেন। রানার মাধ্যমে যদি কোনো ক্লু পাওয়া যায় তাতেই মামলার সমাধান হবে। তিনি কিবরিয়াকে বললেন,
“খুব দ্রুত কাজ করেছে তো দেখছি। আপনি এখানেই আনার ব্যবস্থা করেন। আয়েশ করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই।”
মুখের হাসি চওড়া করে কিবরিয়া কাউকে কল দিয়ে নির্দেশ দিলো।
হাসপাতালে পৌঁছেই ডাক্তারের খোঁজ করলেন দুজনে। ডাক্তার রঞ্জনকে পেয়েই প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে মারেন। ডাক্তার ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। তিমনের অবস্থা না জানতে চেয়ে কায়রার বিষয় তোলায় তিনি বেশ বিস্মিত হলেন। হাসপাতালে মাত্র ৬ মাস হলো যোগ দিয়েছেন। বছর খানেক আগের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করায় তিনি হিমশিম খেলেন উত্তর দিতে। দুজনকে আন্তরিকভাবে আপ্যায়ন করে আগে বসতে বললেন। এটাও জানালেন সব তথ্য সংগ্রহ করে তাদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। কায়রার সব রিপোর্ট আগে খুঁজে দেখতে হবে। হয়তো পুরোনো কর্মকর্তারা জানবেন এই বিষয়ে। ওসি সাহেব হতাশ হলেন যখন জানতে পারলেন পুরোনো ডাক্তার বদলি হয়ে অন্যখানে চলে গেছে। সে কোথায় আছে এই ব্যাপারেও কেউ ঠিক খবর দিতে পারল না। দেরি সহ্য না করতে পেরে পুরোনো কর্মকর্তাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। তারা বললেন সব তথ্য শুধু তিমনের কাছে রয়েছে। কম্পিউটারে পুরোনো কোনো কিছুই রাখা হয় না বছর পেরোলেই। এবার তিনি আরো বেশি হতাশ হয়ে পড়লেন। তিমন যতক্ষণ না সুস্থ হচ্ছে ততক্ষণ বসে থাকতে হবে তথ্যের আশায়। কিন্তু কতদিন এভাবে চলবে! ওসি সাহেব কিবরিয়াকে খোঁজ নিতে বললেন কোন থানায় মামলা করা হয়েছিল তা জানতে। সেসব রিপোর্ট যেন দ্রুত সংগ্রহ করা হয়। দুজনে সেখানে দেরি না করে বেরিয়ে আসেন। থানায় ফিরে গিয়ে রানার ব্যাপারে ফয়সালা করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
*
তেজগাঁও থানায় ফিরে আসলেন দুজনে। আসার সাথেই বেশ চমক পেলেন। বাকি সিসিটিভি ফুটেজ খুব দ্রুতই পাঠিয়ে দিয়েছে। এছাড়া আবিরার গাড়ির বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্টও পাঠিয়ে দিয়েছে। হাতে অনেকগুলো কাজ এসে যাওয়ায় দুজনে সমানতালে হাত লাগালেন। প্রথমেই তদন্ত রিপোর্টের দিকে চোখ ফেরালেন ওসি সাহেব। গাড়ির ভিতর যা কিছু ছিল তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস পাওয়া গেছে। বিবেচনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে এটা হয়তো অপহরণকারীর হবে। একটা কার্ড ছিল যেখানে একটি ফোন নাম্বার ও ঠিকানা দেওয়া আছে। মূলত ঠিকানার নামটাই নজরকাড়া। ওসি সাহেব মুখে হাসি টেনে আনলেন। তিনি যদি ঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারেন তাহলে খুব দ্রুতই আসামি ধরা পড়ে যাবে। কিবরিয়াকে তাড়া দিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বললেন। এক এক করে প্রতিটি ফুটেজ পরীক্ষা করলেন। ফুটেজগুলো মনোযোগ সহকারে দেখায় হতাশ হলেন না। গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস চোখে পড়েছে তাদের। ওসি সাহেব খুশি হয়ে কিবরিয়াকে কিছু নির্দেশ দিলেন। কিবরিয়া সন্তুষ্টির হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেল।
রাত ১০ টার দিকে রানাকে নিয়ে হাজির হলো ধানমন্ডি থানার কর্মকর্তা ইজাজুল আহসান। তিনি সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বন্দিকে হস্তান্তর করে ফিরে গেলেন। ওসি সাহেব বেশ ক্লান্তবোধ করছেন তাই তিনি আজকের মতো সব কাজ বাদ দিলেন।
*
সকাল হতেই থানায় এসে ওসি সাহেব কিবরিয়াকে ডেকে পাঠালেন। তিনি রানাকে দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু করতে চান। কিবরিয়া বাধ্য ছেলের মতো হাসিমুখে উপস্থিত হয়। তার হাস্যরত মুখাবয়ব দেখে খোঁচা মারলেন তিনি। ওসি সাহেব হেসে বললেন,
“নতুন জামাই মনে হচ্ছে দেখে। বিয়ের পরের দিনের ফিল পাচ্ছি আপনাকে দেখে।”
কিবরিয়া লজ্জাবনত মুখে বলল,
“আসলে স্যার, বাড়ি থেকে বিয়ের কথাবার্তা চলছে। তমার কথা বলে দিয়েছি বাড়িতে। সবাই রাজি হয়েছে। তাই আরকি মনটা খুশি।”
ওসি সাহেব ভীষণ আনন্দিত হলেন বাচ্চাদের মতো হাতে তালি দিয়ে বললেন,
“এই মামলাটা শেষ হলেই মজা করে বিয়ে খাব তাহলে। বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেন। আমরাও যথাসম্ভব দ্রুত কাজ গুছিয়ে নিই।”
কিবরিয়া লজ্জায় মেয়েদের মতো কুঁকড়ে গেল। সে প্রসঙ্গ পরিবর্তনের জন্য বলল,
‘স্যার, রানার সাথে দেখা করলে ভালো হতো না?’
ওসি সাহেব হাসতে হাসতে উঠে পড়লেন। তাড়া দিয়ে বললেন,
“আমিও আপনার জন্য বসে ছিলাম। চলেন গিয়ে জামাই আদর করে আসি তাকে। দেখি মুখ খোলে কি না।”
দুজনে কথা বলতে বলতে সেলের মধ্যে হাজির হয়। ওসি সাহেবকে দেখে গরাদের মধ্যে থাকা ছেলেটি ভয়ে ঢোক গিলতে শুরু করে। সে যে ভীষণ ফেঁসেছে তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
ওসি সাহেব ভালো করে রানাকে পর্যবেক্ষণ করলেন। রানার চারপাশে চক্কর কেটে মুখোমুখি দাঁড়ালেন। ছেলেটা দেখতে বেশ সুদর্শন। ভদ্র ঘরের ছেলে হিসেবে অনুমান করে ভাবলেন, কেন সে এরকম টাউট হয়েছে। তিনি বেশ সময় তীক্ষ্ণ চোখে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
‘আসল নাম কী তোর?’
রানা ঘাবড়ে গিয়ে ইতি-উতি তাকাচ্ছে। সে আমতাআমতা করে পালটা জিজ্ঞেস করল,
“স্যার, আমি কী অপরাধ করেছি যার জন্য আমাকে ধরে আনলেন? আমি কিছুই করিনি বিশ্বাস করেন।”
কেঁদে ফেলে মিনতি করতে শুরু করে সে। ওসি সাহেব একটা চেয়ার আনার নির্দেশ দিলেন। হাবিলদার দ্রুত চেয়ার আনতেই তিনি আরাম করে বসে পড়লেন। রসিকতার ঢঙে তিনি বললেন,
“আমিও জানি বাপ তুই কিছু করিসনি। আমি তো তোকে কোনো অপরাধের জন্য ধরে আনিনি। এনেছি তোর থেকে গল্প শুনব বলে। এখন বল কেন তুই সেদিন মিথ্যে বলেছিলি?”
রানা ঘামতে শুরু করেছে। সে মুখ মুছে জিজ্ঞেস করল,
“কোনদিনের কথা বলছেন স্যার? আমি কবে কাকে মিথ্যে বলেছি?”
ওসি সাহেব কিবরিয়ার দিকে চোখ ফেরাতেই সে জিজ্ঞেস করল,
“আরে আপনি না বাড্ডা থাকেন? ধানমন্ডি গেলেন কীভাবে?”
মুখ শুকিয়ে গেল রানা নামের ছেলেটির। সে মিনমিন করে বলল,
“আসলে স্যার, আমি বুঝতে পারিনি। অচেনা নাম্বার থেকে কল আসায় মজা করেছিলাম।”
ওসি সাহেব ঠান্ডা মাথায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন,
‘আবিরা ম্যাডামের সাথে কীসের মজা করতি তুই, যে তাকে খুন করে দিলি?’
রানা চমকে তাকায়। ও তো কোনো আবিরাকে চেনে না। মাথার মগজের মধ্যে উত্তাল ঢেউ শুরু হয় তার। আবিরা নামের কাউকে চেনে না তাহলে তাকে খুন করবে কীভাবে! আর ও তো কোনোদিন খুন তো দূর কাউকে হুমকি পর্যন্ত দেয়নি। গলা শুকিয়ে যাওয়ায় সে কথাই বলতে পারল না। বিদঘুটে আওয়াজ বের হওয়ায় হাবিলদারকে ডেকে পানি দিতে বললেন ওসি সাহেব। ঢকঢক করে পুরো গ্লাস শেষ করে ও আর্তনাদ করে ওঠে। প্রায় চিৎকারের মতো শোনা যায় ওর স্বর। সে অনুনয় করে বলল,
“স্যার, আপনাদের কোথাও অনেক বড়ো ভুল হচ্ছে। আমি কাউকে খুন করিনি। কেনই বা আমি খুন করতে যাব? আমি তো ভালো ঘরের ছেলে।”
ওসি সাহেব টিটকারি করে শেষের বাক্য পুনরাবৃত্তি করে বললেন,
“আমি তো ভালো ঘরের ছেলে! যদি ভালো হোস তাহলে বিবাহিতা নারীর সাথে তোর এত কীসের কথা ছিল?”
রানা মুষড়ে পড়ে বলল,
“কার কথা বলছেন স্যার? আমি তো আবিরা নামের কাউকে চিনি না।”
ওসি সাহেব বিরক্তি প্রকাশ করে কিবরিয়াকে বললেন,
“কিবরিয়া সাহেব একে একটু আদর করার ব্যবস্থা করেন তো। কিছুতেই মুখ খুলবে না বুঝতে পারছি। শুধু শুধু সময় নষ্ট করে লাভ আছে!”
পা জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে রানা। সে কাকুতি মিনতি করে বলল,
“স্যার, প্লিজ আমাকে মারবেন না। আমি সত্যি কথাই বলছি। বিশ্বাস করেন আমি আবিরা নামের কাউকে চিনি না।”
ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে কিবরিয়াকে বললেন,
‘ওকে আবিরা ম্যাডামের ছবি আর নাম্বার দেখান তো।’
পকেট থেকে ফোন বের করে কিবরিয়া রানার সামনে ধরল। নাম্বারটা দেখে রানা বলল,
“এই নাম্বার তো আমার গার্লফ্রেন্ডের। আবিরা নামে কারোর না।”
কিবরিয়া ভ্রু কুঁচকে ফেলল এবার। সে ফোনের গ্যালারি খুঁজে একটা ছবি বের করে দেখাতেই ছেলেটা চোখ কপালে তুলে ফেলে। সে হতভম্ব হয়ে যায় দেখে। মুখটা হাঁ হয়ে থাকে। ওসি সাহেব খোঁচা মেরে বললেন,
“হাঁ-টা বন্ধ কর। সব মশা ঢুকে যাবে মুখে। এখন বল এর সাথে তোর কী সম্পর্ক ছিল? কেন তাকে খুন করেছিস তুই?”
রানা তখনও বাকরুদ্ধ হয়ে আছে। সে কিছু বলার আগেই হাবিলদার এসে বলল,
“স্যার, বনানী থানার কর্মকর্তারা এসেছেন। আপনার সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন।”
ওসি সাহেব কথাটি শুনে ফিরে তাকালেন। জরুরি কাজ রয়েছে তাদের সাথে সেকথা মনে পড়তেই তিনি হাবিলদারকে বললেন,
“তাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন দ্রুত। বলেন যে ৫ মিনিটের মধ্যে আসতেছি আমি।”
হাবিলদার চলে যেতেই রানার দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন,
“দ্রুত বলবি যা বলার। মাত্র ৫ মিনিট সময় আছে তোর কাছে।”
রানা কেঁদে বলল,
“স্যার, বিশ্বাস করেন এ যে আবিরা তা আমি জানিই না। আমার তো আবিরা নামের কারো সাথে সম্পর্কই ছিল না।”
ওসি সাহেব বিরক্ত হয়ে বললেন,
“তাহলে কার সাথে সম্পর্ক ছিল সেটা তো বল। এক কথা বারবার কেন বলছিস। ক্লিয়ার করে বল নইলে এমন আদর দেবো না বাপ-দাদার নাম ভুলে যাবি।”
রানা বেশ শান্তস্বরে বলল,
‘আমার প্রেমিকার নাম সাহেলা আরমিন।’
ওসি সাহেব আর কিবরিয়া দুজনেই একে অন্যের দিকে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছেন।
চলবে…