টক্কর,৩য় পর্ব
সাহেরা_খান
আবিরার কল লিস্টের একটি নাম্বারে অসংখ্যবার কথা হয়েছে। কিন্তু নাম্বারটি অচেনা। ডিটেইলস কিছুই নেই। মনে হচ্ছে ভুয়া নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে নাম্বারটি অপলক দেখে যাচ্ছেন। তিনি কিবরিয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন,
“নাম্বারটিতে কল দেন। দেখুন সে কে। এত কথা তিনি কার সাথে বলেছিলেন।”
কিবরিয়া দ্রুত নাম্বারটিতে কল দিলো। ওপাশ থেকে কল রিসিভ হওয়ায় এস আই কিবরিয়া কথা বলতে শুরু করে।
“হ্যালো, কে বলছেন আপনি? আমি কার সাথে কথা বলছি তা কি জানতে পারি?”
ওপাশ থেকে একটি ছেলে কণ্ঠস্বর ভেসে আসে। সে বলল,
“জি, আমি রানা বলছি। আপনি কে আর কাকে চান?”
কিবরিয়া প্রশ্ন শুনে বলল,
“আমি রাকিব বলছি। আপনি কি বলবেন আমি কোথায় কল দিয়েছি? আসলে যাকে খুঁজছি মনে হচ্ছে, আপনি সে না। ভুল নাম্বারে কল দিলাম কি না শিওর হতে চাই।”
রানা নামের ছেলেটি হেসে আন্তরিকভাবে বলল, “আমার মনে হয়, আপনি ভুল নাম্বারেই কল দিয়েছেন। আপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না। আমি ঢাকায় থাকি।”
“ঢাকার কোথায় তা বলা যাবে? আমিও যাকে খুঁজছি সে ঢাকা থাকে।”
রানা প্রশ্নকর্তাকে বলল, “আমি বাড্ডা থাকি। আপনি কাকে খুঁজছেন? সে কোথায় থাকে?”
কিবরিয়া হেসে বলল, “আপনি কি আমাকে সাহায্য করবেন? সে আপনার আশেপাশেই থাকে। মাত্রই নাম্বারটা চেক করে দেখলাম একটা ডিজিট ভুল করে ফেলেছি।”
রানা কিবরিয়াকে আশ্বস্ত করল সাহায্য করার জন্য। ঠিকানা দিতেই কিবরিয়া তা টুকে রাখল। ফাঁদে পা দিয়েছে দেখে কিবরিয়া হেসে ওসি সাহেবকে জানাল।
ওসি সাহেব ভাবনায় পড়ে গেলেন। তিনি বললেন, “খোঁজ নেন ছেলেটি কে। পরকীয়া না বের হয় আবার। এত বার এই ছেলের সাথে কথা বলার মানে কী! তাকে তুলে আনার ব্যবস্থা করেন।”
কিছু সময় পরে আবার বললেন, ” ভুয়া সিম ব্যবহার করার কারণ কী? আবার কত সহজে আপনাকে ঠিকানা দিয়ে দিলো। অদ্ভুত লাগছে না বিষয়টি? আপনি লোকেশান ট্রাকিং এর ব্যবস্থা করেন তো। আর এই নাম্বারের ডিটেইলস বের করেন।”
কিবরিয়া নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে উঠে চলে যায়। সে নাম্বারটি লোকেশান ট্রাকিং এর ব্যবস্থা করতে দিলো। সিম কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে ডিটেইলস জানার জন্যও নির্দেশ দিলো।
*
পরের দিন সিসিটিভি ফুটেজ হাতে এসে পৌঁছল। কিবরিয়া তৎক্ষনাৎ ফুটেজ নিয়ে ওসি সাহেবের নিকট হাজির হলো।
ফুটেজগুলো দেখার জন্য দুজনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ওসি সাহেবের কাছে একটি কল আসতেই, তিনি নাম্বার দেখে উত্তেজিত হয়ে যান। কোনো সুসংবাদ পাওয়ার আশায় তড়িঘড়ি রিসিভ করে কানে দিলেন। ওপাশ থেকে খবরটি পেতেই মুখের হাসি চওড়া হয়ে গেল তাঁর।
ফোন কাটতেই কিবরিয়ার প্রশ্নবোধক চাহনি টের পেলেন। হাসিমুখে তিনি বললেন,
“গাড়ির খোঁজ মিলেছে। কাজ আরো বেড়ে গেল। ধানমণ্ডি ২২ নাম্বার সড়কে পাওয়া গেছে। থানার লোক গাড়ি পরীক্ষা করে দেখছে। তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি।
ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। পেয়ে গেলেই পাঠিয়ে দেবে আমাদের। চলেন আগে এগুলো চেক করে দেখি।”
সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে দুজনেই মশগুল হয়ে আছে। যে সময়টাতে আবিরা উপস্থিত ছিল সেই সময়ের ভিডিয়োগুলো এক এক করে চালিয়ে দেখা হচ্ছে। আশেপাশে কোনো সন্দেহজনক কিছু চোখে না পড়লেও শপিংমল থেকে বের হওয়ার পরে একটি কালো গাড়ি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের।
দুজনেই চমকে গাড়ির নাম্বার বোঝার চেষ্টা করে। গাড়ির নাম্বার প্লেট না থাকায় সন্দেহ বাড়তে থাকে। ফুটেজ অনুসরণ করে গাড়িটির গন্তব্য নির্ধারণ করার চেষ্টা করে দুজনে। কিন্তু ফুটেজ শেষ হয়ে যেতেই বিরক্ত প্রকাশ করলেন ওসি সাহেব। তিনি মুখটা বাংলার পাঁচ বানিয়ে বললেন,
“এটা কী হলো! আর ভিডিয়ো নেই কেন? সিসি ক্যামেরা কি ওই রোডে নেই? খোঁজ নিয়ে দেখেন তো। আর এই গাড়ির ব্যাপারে তথ্য বের করেন।”
কিবরিয়ারও মেজাজ খারাপ হলো। এতটা কাছে এসে এভাবে ছ্যাঁকা খাবে বুঝতে পারেনি। গাড়ির ব্যাপারে খোঁজ না পেলে মামলাটি জটিল হয়ে দাঁড়াবে। কিবরিয়া উঠে দাঁড়ায়। অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে যায় সাথে সাথে।
প্রায় আধা ঘণ্টা কেটে গেলে হাতে কিছু কাগজপত্র নিয়ে পুনরায় ওসি সাহেবের কেবিনে প্রবেশ করে। ওসি সাহেব কিবরিয়াকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
“কী ব্যাপার কিবরিয়া সাহেব? মুখটা এত হাসি হাসি কেন? আপনার প্রেমের প্রস্তাব কি মেয়েটি গ্রহণ করে নিয়েছে? কী নাম যেন মেয়েটির?”
কিবরিয়া থতমত খেয়ে যায় প্রশ্নগুলো শুনে। সে ভাবতেই পারেনি তার স্যার সব জেনে বসে আছে। নিরাশ হয়ে সে বলল,
“ওর নাম তমা। এখনো প্রস্তাব দেইনি স্যার। সেরকম কোনো ব্যাপার না।”
প্রসঙ্গ পালটে সে বলল,
“রানা নামের ছেলেটির লোকেশান আর কল লিস্ট হাতে পেয়েছি তাই খুশি লাগছে।”
ওসি সাহেব অবাক হলেও রানার বিষয় বাদ দিয়ে, কিবরিয়ার হবু প্রেমিকার গল্প নিয়ে মেতে উঠলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“আপনি এখনো প্রস্তাব দেননি? কীসের আশায় সেই মেয়ের পিছনে সময় নষ্ট করছেন? শুধু কি দেখেই মনের শান্তি মেটাবেন?”
কিবরিয়া মাথা নিচু করে মিনমিনিয়ে বলল,
“আসলে স্যার, হয়েছি কী, আমি সাহস পাচ্ছি না তাকে কিছু বলার।”
ওসি সাহেব হাসতে শুরু করলেন হো হো করে। হাসির তোড়ে তার সারা দেহ কাঁপছে। তিনি এত মজা পেয়েছেন যে, হাসতে হাসতে চোখের কোণে পানি জমতে শুরু করেছে। লজ্জায় কিবরিয়া মাথা আরো খানিক নিচু করে রাখল। হাসি থামিয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“পুলিশের চাকরি করতে এসেছেন কী খেয়ে? অপরাধীর সামনে তো আপনি বাঘ বনে যান; তাহলে মেয়েটির সামনে কেন বিড়াল?”
কিবরিয়া মুহূর্তেই রোমাঞ্চিত হয়ে গেল। ভালোবাসার মানুষটির কথা মনে পড়তেই চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। সে বলল,
“মেয়ে হলে কী হবে স্যার, সে তো ভীষণ ডেঞ্জারাস। ছেলেরা তার আশেপাশে ভীড়তেই পারে না।”
ওসি সাহেব আবারও হেসে ফেললেন। তিনি পরামর্শের ভঙ্গিতে বললেন,
“হাতে তো পিস্তল থাকেই। মাথায় ঠেকিয়ে বলবেন হয় মরো নয় বিয়ে করো। দেখবেন সুড়-সুড় করে রাজি হয়ে গেছে। খাকি পোশাক গায়ে থাকলে তো ভয় পালানোর কথা। তবে আপনার পছন্দ বলতে হবে। সত্যি মেয়েটা খুব মায়াবী। আপনি না পারলে বলেন, আমিই সাহায্য করি।”
ওসি সাহেবের আন্তরিকতা ওকে বরাবরই মুগ্ধ করে। এবারেও কৃতজ্ঞতার চোখে তাকিয়ে মুচকি হেসে সায় জানাল।
হাতের কাগজ বিছিয়ে দিয়ে সে বলল,
“স্যার, রানা নামের ছেলেটি মিথ্যে বলেছে। সে বাড্ডা থাকে না। তার লোকেশন পাওয়া গেছে ধানমণ্ডিতেই। কল রেকর্ড পাঠানোর অনুরোধ করেছি। আর একটা কথা হচ্ছে, সে হুট করে ফোন সুইচ অফ করে দিয়েছে।”
কল লিস্ট দেখে ওসি সাহেব বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকলেন। কিবরিয়ার দিকে তাকাতেই সে হেসে দেয়। রানা নামের ছেলেটি সিমটি আবিরার সাথে কথা বলার জন্য ব্যবহার করেছে। দুটো নাম্বার লিস্টে দেখে যারপরনাই হতাশ হলেন। দ্বিতীয় নাম্বারটি কিবরিয়ার ছিল। কল রেকর্ড হাতে আসলে বিস্তারিত জানা যায় কি না সেই আশায় থাকলেন।
*
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই ওসি সাহেব সিদ্ধান্ত নিলেন তিমনের পরিবারের সাথে দেখা করার। শোকের মাতম চললেও তদন্তের স্বার্থে তাদের সাথে কথা বলা জরুরি। কিবরিয়াকে সাথে করে ছুটলেন দেখা করার উদ্দেশ্যে।
হাসপাতালে ভীড় করার অনুমতি নেই বিধায় সবাই বাড়িতে ফিরে এসেছে। তিমনের বাবা-মা ছাড়াও শ্বশুর-শাশুড়ি রয়েছে। সবাইকে একসাথে পেয়ে ওসি সাহেবের বেশ সুবিধে হলো। তিনি বাড়িতে এসেই সবাইকে ডেকে জড়ো করলেন। আত্মীয় স্বজনদের সাধারণ কিছু প্রশ্ন করে তাদেরকে সরিয়ে দিলেন। তিমনের বাবার সাথে আলাদা কথা বলার অনুমতি চাইলেন। সবাইকে আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য যাচাই করে দেখতে চান।
তিমনের বাবা মাহবুবুর রহমানকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“আপনাদের কাউকে সন্দেহ হয়? এসবের পিছনে কার হাত থাকতে পারে? আবিরা ম্যাডামকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। মনে হয়েছে তার সাথে কারো গভীর শত্রুতা ছিল। আপনাদের কোনো ধারণা আছে এই ব্যাপারে?”
মাহবুব সাহেব চমকে তাকিয়ে থাকলেন। তিনি হতবিহ্বল হয়ে গেলেন। ভেবেই পাচ্ছেন না তার একমাত্র ছেলের বউয়ের সাথে কার এরকম শত্রুতা থাকতে পারে। তিনি মাথা নাড়িয়ে বললেন,
“কারো কথাই জানি না। বলতে পারব না কে জড়িত এর পিছনে। তিমন সুস্থ থাকলে হয়তো বলতে পারত।”
তিমনের বাবার থেকে কোনো সাহায্য না পেয়ে আবিরার বাবার সাথে কথা বলতে গেলেন। তিনি আবিরার বাবাকে দেখে বিষণ্ণতা অনুভব করলেন। পিতার কাধে সন্তানের লাশ যে কতটা যন্ত্রণার তা সেই পিতাই অনুভব করতে পারে শুধু। মন খারাপ থাকায় আদ্র গলায় তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“আপনি কি কাউকে সন্দেহ করেন? আপনার মেয়ে হয়তো ফিরে আসবে না, কিন্তু যে এই জঘন্য কাজটি করেছে তাকে তো শাস্তি দিতে পারি।”
আবিরার বাবা চোখের জল মুছে বললেন,
“মেয়েটা আমার ভীষণ ভালো ছিল। তার সাথে কে এরকম শত্রুতা করল কে জানে! ও তো কারো পাঁকা ধানে মই দেয়নি কোনোদিন।”
ওসি সাহেব বুঝলেন আবিরার বাবাও অন্ধকারে আছেন। তবুও তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“আপনার জামাই মানে তিমন সাহেব কেমন ছিলেন? আর তার বাবা-মা কেমন?”
জামাইয়ের পরিবারের কথা শুনে তিনি অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন। এরকম চিন্তা তিনি ভুলেও করতে পারেন না। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বললেন,
“জামাই আমার লাখে একটা। আর তার পরিবারও খুব ভালো। মেয়ে আমার অনেক সুখে ছিল।”
কিবরিয়ার দিকে তাকিয়ে হতাশ দৃষ্টিতে ইশারা করলেন আবিরার বাবাকে নিয়ে যেতে। ওসি সাহেব কিবরিয়াকে ফিরে আসতে দেখে বললেন,
“সবই তো দুধে ধোয়া তুলসীপাতা মনে হচ্ছে। কেউ-ই কাউকে সন্দেহ করছে না। তিমনের মাকে ডেকে নিয়ে আসেন দেখি। তিনি যদি কিছু বলতে পারেন।”
কিবরিয়া উঠে গিয়ে তিমনের মা’কে নিয়ে হাজির হলো। সোফায় বসতেই ওসি সাহেব আস্তে জিজ্ঞেস করলেন,
“আপনার বউমা কেমন মেয়ে ছিল? আপনার ছেলের সাথে সব ঠিক চলছিল তো? কারো সাথে কোনো শত্রুতা ছিল?”
তিমন এর মা মুখ কালো করে ফেললেন। তিনি আফসোসের সুরে বললেন,
“বিয়ের আগে তো মেয়েটা খুবই ভালো ছিল। বিয়ের পরেও ভালো ছিল। কিন্তু কিছু একটা কমতি ছিল তার ভিতর। তবে আমার ছেলের সাথে তার কোনো সমস্যা ছিল না। আসলে নতুন বিয়ে হয়েছিল। মাত্র তো বছর খানেক সংসার করল। তাই আর ধরছি না ব্যাপারটা। ছেলে তাকে ভালোবেসে ঘরে তুলেছে। একমাত্র ছেলের বউকে কীভাবে খারাপ বলব?”
ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন,
“একটু পরিষ্কার করে বলেন। তার আচরণ কেমন ছিল? সে কোন দিক দিয়ে খারাপ ছিল?”
তিমনের মা আমতা আমতা করে বললেন, “না, মানে সেরকম খারাপ ছিল না। সারাদিন কাজকর্ম না করে বেশিরভাগ সময় ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে থাকত। নতুন বউ তাই কিছু বলতেও পারতাম না।”
“আপনার কি সন্দেহ হয় তাকে? কারো সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল কি না? পরকীয়ার কারণে হয়তো আপনার ছেলেই খুন করেছে।”
আঁতকে ওঠেন রুপালি বেগম। তিনি ছেলেকে খুনি হিসেবে ভাবতেই পারবেন না। জোর গলায় ওসি সাহেবের কথার তীব্র প্রতিবাদ করেন। ছেলে তার হীরের টুকরো। বউয়ের জন্য সে আজ হাসপাতালে মৃত্যু মুখে আছে। তিনি বললেন,
“সব দেখেও আপনার মনে হয়, আমার ছেলে এরকম কিছু করেছে? আবিরার কারো সাথে সম্পর্ক ছিল কি না জানি না। আমার ছেলের সাথেই ৮ বছর প্রেম করেছে। এত সুখের সংসার রেখে সে কেন এরকম অঘটন ঘটাবে?”
ওসি সাহেব মাথা নেড়ে বললেন,
“তা ঠিক। তবে আপনি কি রানা নামের কোনো ছেলের নাম শুনেছেন? অথবা তার কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছে কি না?”
রুপালি বেগম সন্দেহের দোলাচালে দুললেও তিনি বললেন, “নাহ্, এরকম কারো কথা শুনিনি। এত বছরে আবিরাকে কারো সাথে এত ঘনিষ্ঠ হতে দেখিনি। ও তো আমাদের পরিচিতই।”
ওসি সাহেব তাকে চলে যেতে বললে তিনি উঠে পড়েন। আবিরার মাকে ডেকে পাঠালে তৎক্ষনাৎ এসে সামনে উপস্থিত হন।
ওসি সাহেব সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেন। আবিরার মা শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তাকে জিজ্ঞেস করলেন ওসি সাহেব খুনের ব্যাপারে তার কোনো ধারণা আছে কি না। কিন্তু তিনি কথার উত্তর না দিয়ে বিলাপ শুরু করেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বললেন,
“আল্লাহর কেমন বিচার বলেন তো? এক মেয়েকে আগেই কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছে। আরেক মেয়েকে কেড়ে নিয়েই গেল।”
আবিরার মা মাজেদা বেগমের মুখে আরেক মেয়ের কথা শুনে চমকে ওঠেন ওসি সাহেব। তিনি ভাবছেন, কী হয়েছে সেই মেয়ের?
চলবে…