মিঠে আলোয়,পর্ব_৮ শেষ
ফায়জা_করিম
রিসোর্টের সুইমিংপুলে পা ভিজিয়ে বসে ছিল মিঠাই। অনন্য একটা হাওয়াই মিঠাই এনে ওর হাতে ধরিয়ে দিতেই, মিঠাই জানতে চাইল, ” বাবা তোমার কাছে আমার জন্য চিঠি দিয়েছে?”
“হ্যাঁ ”
“তুমি সেটা আমাকে দাওনি কেন?”
“ইচ্ছে করে দেইনি। মনে করলাম দেখি আঙ্কেলের সুপারিশ ছাড়াই তার মেয়ে আমার প্রেমে মজে কিনা? ” পকেট থেকে একটা খয়েরি রঙের খাম বের করে দিল অনন্য।
বাবার চিঠিটায় যে অনন্যকে নিয়ে সুখি হবার অ্যাডভাইস থাকবে জানে মিঠাই.. তবু ওর হাতটা কাঁপল। বাবার হাতে লেখা চিঠি পড়ার সৌভাগ্য খুব একটা হয়নি ওর.. এতোদিনও ফোনেই কথা হয়েছে… সেখানে হঠাত একেবারে চিঠি। খুলতেই চোখ ভিজে এল মিঠাইর…..
আমার জানের টুকরা মিঠাই কে,
আমি জানি আজ তুই মন খারাপ নিয়ে আমার বাড়ি ছাড়ছিস। সব মেয়েই হয়তো এমন করেই.. মন খারাপ করে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি যায়.. তবু তোর মন খারাপের কারনটা খুব ভিন্ন। তোর হয়তো না চাইতেও আমার উপর খুব রাগ, তাই না রে মা? আমি তোকে একসময় তোর খুব কাছের একটা মানুষ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি। আমি জানি অভ্র আর তুই খুব ভাল বন্ধু ছিলি.. কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই বন্ধুত্ব যে এক সময় ভিন্ন দিকে মোড় নিবে সেটা আমি তোকে দেখলেই টের পেতাম। অভ্রর গল্প করার সময় তোর চোখে মুখে একটা আলাদা আলো খেলা করত। আর আমার ভয় ছিল সময়ের সাথে তোরা দুজন বন্ধুত্বের বেড়াজাল না পার করে ফেলিস, এমনকি হয়তো সম্পর্কেরও। তুই হয়তো বলবি, আমরা এটা কখনোই করতাম না বাবা। তোমার মেয়ে ওরকম দুর্বল মনের না। কিন্তু ভেবে দেখ ভুলগুলো যারা করে তারাও কারো ছেলে মেয়ে। ওদের প্রতিও ওদের বাবা-মা বিশ্বাস করতো। আমি চাইনি আমার মেয়ে বয়সের দোষে কোন ভুল মানুষকে জীবনে বেছে নিতে বাধ্য হোক। তাই তোদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি করেছি। তুই স্বীকার করিস বা না করিস এর ফলে একটা জিনিস খুব ভালো হয়েছে। তোর একাকীত্ব আর জেদ তোকে তোর ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করেছে.. তুই আমার সাহায্য না নিয়ে নিজে নিজে স্কালরশিপ জোগাড় করে বাইরে পড়তে চলে গিয়েছিস, এমনকি তোর খাওয়া পড়ার টাকাও তুই তোর মামার কাছ থেকে ধার নিয়েছিস। আমি জানি এগুলো তোর অভিমান আমার প্রতি কিন্তু আমি এগুলোর সব গুলোকে পজেটিভলি নিয়েছি। তোর দেয়া অপমানগুলোকে গায়ে পড়তে দেইনি,ঝেড়ে ফেলেছি হাসি মুখে।
তোর মামার কাছ থেকে নেয়া টাকা গুলোও আমিই তাকে দিয়েছি। আমার মেয়ের ছোট থেকে ছোট… প্রয়োজনগুলোতে আমি তোর বাবা রেজওয়ান আহমেদ তোর বাবা হয়েই থাকতে চাই।
তুই হয়তো ভাবছিস বাবা এসব কেন লিখেছে? আমি আজকে তোর কাছে একটা অপরাধের স্বীকারোক্তি করতে চাই। আমি অভ্রকে ডেকেছিলাম আমার কাছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ও তোকে মনে মনে চায় কিনা? আমি অবাক হয়েছিলাম যখন সে দৃঢ়তার সাথে হ্যাঁ বলেছিল। আমি একদম আশা করিনি এই উত্তর.. তাই তোর জীবন থেকে ওকে দূরে সরিয়ে দিলাম।
মিঠাই মুচড়ে ফেলল চিঠিটা.. ও জানত.. ওর মন বলছিল অভ্র ওকে ভালবাসে। কিন্তু বাবা… শুধু বাবার জন্য ও অভ্রকে হারিয়ে ফেলল! বাবা এটা কী করে পারল! বাবার কী একবারও ওর জন্য করুনা হয়নি? ওকে তাহলে বাবা সত্যি ই ভালোবাসেনা?
“মিঠাই প্লিজ কেঁদনা।” পাশে থেকে চোখ মুছিয়ে দিল অনন্য।
মিঠাইর হুঁশ হলো। অনন্য যে ওর পাশ ঘেষেই বসে আছে ওর হাওয়াই মিঠাই ধরে ভুলে গিয়েছিল মিঠাই। কিন্তু বাবা এই চিঠি ওকে এখন কেন দিল? তাও আবার অনন্যর হাত দিয়ে! এখন তো মিঠাই আরো বিপাকে পড়ল, সত্যটা জানার পর ও তো অনন্যকেও ভালোবাসতে পারবে না। এ কোন ঝড়ের মুখোমুখি ফেলল বাবা ওকে?
মিঠাই কাগজটা ছিড়ে ফেলতে যাচ্ছিল কিন্তু অনন্যর কথায় থেমে গেল।
অনন্য বলল ” পুরো না পরে চিঠিটা ছেড়া বোধহয় ঠিক হবে না মিঠাই।”
“তুমি কী করে জানলে আমি পুরোটা পড়িনি!”
“কারন ওখানে আমার নামে শ্বশুরমশাই উইলের কিছু বরাদ্দ করেছে.. আই মিন চিঠিটা আমি পড়েছি, তোমারও মনে হয় একবার ওটা পড়ে দেখা উচিত। ”
কড়া চাউনিতে অনন্যকে একবার দেখল মিঠাই। এসব কী সৃষ্টিছাড়া আচরন.. ওর চিঠি অথচ ওর আগেই সে পড়ে ফেলেছে। খুব কড়া করে বকতে ইচ্ছে করল অনন্যকে… বিরক্তির সাথে আবার চিঠিটা আবার খুলল মিঠাই।
🌿🌿🌿🌿🌿
আমি তোর এম এস শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। আমার তোর সাথে অনন্যকে দেখা করিয়ে দেয়াটা দায়িত্ব ছিল। ছেলেটা খুবই সৎ, কর্মঠ, ব্রিলিয়ান্ট। আমার মনে হয়েছে হ্যাঁ.. ঠিক এই ছেলেটার মতো কাউকে পেলে আমি আমার মিঠাইকে তার হাতে দিতে পারি। সেই থেকে আমার চেষ্টা শুরু হলো.. তোর হয়তো মনে হবে অনন্য আমার কথায় নেচেছে। ব্যাপারটা মোটেই তা নয়। বরং আমি অনন্যর কথা মেনে চলেছি। তোর মনে প্রশ্ন আসতে পারে এর কারন কী বাবা, তুমি কেন অনন্যর কথায় নাচবে?
কারন আছে.. অনন্য তোকে আমার চাইতে ভাল করে চেনে৷ কারন ও এমন একটা মানুষ যার সামনে তুই তোর মনের আর্গল খুলে দিয়েছিস। যার সামনে অভ্রকে নিয়ে কথা বলতে তুই দ্বিধা বোধ করিসনি।
এই কারনেই আমি মনে করি অনন্য তোর জন্য বেস্ট অপশন। কিন্তু তারপরও তোর আমার উপর অভিমান কমবে না, আমি জানি। আমি সেই লোক যে তোকে তোর ভালবাসার মানুষ থেকে যোজন যোজন মাইল দূরে সরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আসলেই কী তাই? তুই কী খুব ভাল করে অনন্যকে লক্ষ করেছিস কখনো ? আমার ধারনা…. না। তুই শুধু অভ্র নামটার পিছে পিছে ছুটেছিস। তোর ভালবাসাটা ব্যাক্তির চেয়ে বেশি নাম নির্ভর হয়ে গিয়েছে। তা না হলে তুই ঠিক তোর অভ্রকে চিনে নিতে পারতি, তোর প্রতি তার কেয়ারগুলোকে আইডেন্টিফাই করতে পারতি। কিন্তু তুই তো নামের পিছে পড়েছিলি।
আমার কথাগুলো বোধহয় এখন তোর গোলমেলে লাগছে। কিন্তু আমি খারাপ হলেও তোরই বাবা৷ দিনশেষে তোর হাসিমাখা মুখটাই আমার বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল। সেই আমি তোকে এতো দুঃখ দেই কী করে বল? তাই আমি তোর অভ্রকে, অনন্যর বেশে ফিরিয়ে দিয়েছি। হ্যাঁ.. অভ্রকে আমি একটা অফার দিয়েছিলাম, আমার মেয়েকে পেতে হলে শুধু নওঃস্বার্থ ভালেবাসা যথেষ্ট না। তাকে আমার মেয়ের যোগ্য হতে হবে সামাজিক ভাবে, শিক্ষাগত দিক থেকে। আমার মেয়ে যেন তাকে নিয়ে বুক ফুলিয়ে পরিচয় দিতে পারে। কিন্তু আর তার আগে পর্যন্ত তোর সাথে তার কোন রকম যোগাযোগ রাখা চলবে না। অভ্র এই ডীলে রাজি হয়েছিল। তারপরও আমার নজর ছিল ওর উপর। বছরের পর বছর বাইরে কাটানো ছেলে অর্থবিত্ত আর অগনিত নারীর মাঝখানে আমার মেয়েকে কতোটা কেয়ার করে দেখার প্রয়োজন ছিল আমার। ভেবেই রেখেছিলাম একদিন হয়তো কোন বিদেশিনী নিয়ে হাজির হবে আমার দরজায়। কিন্তু অভ্র সেটা না করে পিএইচডির কাগজ নিয়ে দেখা করেছিল। জিজ্ঞেস করেছিল এটা শেষ করলে কী আমি আপনার মেয়ের উপযুক্ত হবো? এখন কী আমাকে মিঠাইর সাথে দেখা করার অনুমতি দিবেন? আমি এবার আর অভ্রর অনুরোধ ফেলতে পারিনি। তবে তার জন্য তার এতোদূর চলার সব রাস্তা আমি মসৃন করে দিয়েছি শুধু তোর কথা ভেবে। তুই খুব ভালো করে জানিস মনিরুলের অভ্রর জন্য এতোটা করা কখনো সম্ভব ছিল না। সে খুব অল্প মাইনে পেত।
এখন সব সিদ্ধান্ত তোর। তুই চাইলে আমাকে ক্ষমা করতে পারিস আবার নাও পারিস। তুই তোর এতো বছরের না পাওয়ার হিসেবের বাক্স খুলে বসতে পারিস। কিন্তু আমি অসহায় ছিলাম। একজন বাবা তার আদরের মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর সেই মেয়ে সমাজে কষ্ট করে বেঁচে থাকবে, দুয়ারে দুয়ারে আঘাত পাবে এটা ভাবতেই পারেনা। আমি যদি তখন না আটকাতাম তাহলে তোর অভ্র আজ তোর যোগ্য হতো কিনা.. আজ বলা মুশকিল। হয়তো হতো হয়তো না। তুই ভালোবাসা টিকাতে অভ্রর হাত ধরতি এটা আজ নিশ্চিত… ফলাফলটা বোধহয় খুব বেশি সুখকর হতো না। অবশ্য এটা আমার ক্যালকুলেশন। ভুলও হতে পারে। তবে যাই করি আমি তোর ভাল চাই, চাইব। আর অভ্রকে অনন্য হিসেবে উপস্থাপন করার পিছনে অভ্রর নিজেরও কিছু হাত আছে, সেটা ওর কাছ থেকে শুনে নিলেই বোধহয় তোর ভাল লাগবে। তোদের দুজনের নতুন জীবনের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা, পারলে বাবার অপরাধটা ক্ষমা করিস।
ইতি-
বাবা।
*** অভ্রর পিছনে এতোবছর যে টাকা খরচ হয়েছে সেটার একটা লিস্ট এতে পিনআপ করা আছে, এই টাকার একমাত্র মালিক তুই। কাজেই তুই চাইলে তা নিতে পারিস অথবা মাফ করতে পারিস, তোর মর্জি।
🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺
মিঠাইর মাথা এবার পুরো নাগরদোলার মতো চক্কর খেতে লাগল। এ সব কী লিখেছে বাবা? আর অভ্রই, অনন্য.. তারমানে কী? এই যে অনন্য ওর সামনে বসে মনের সুখে ওর হাওয়াই মিঠাই গিলছে এটা ওর অভ্র! কিন্তু তা কী করে হয়!
এক রকম ধাক্কা দিয়ে অনন্যকে ফেলে দিল মিঠাই সিমেন্টের উপর ” অ্যাই বাবা চিঠিতে এসব কী লিখেছে?”
” কী লিখেছে?”
“তুমিই নাকি অভ্র”
“হুমম মিঠি” হাওয়াই মিঠাইর গোলাপি রঙে লোকটার মুখ তখন মেজেন্টা রঙ ধরেছে।
মিঠাইর এবার সত্যি চোয়াল ঝুলে পড়ল। মিঠি.. এই ডাকটা ও কত বছর পর শুনল!
“কিন্তু তুমি যদি অভ্র হও তাহলে তোমাদের বাসায় দেখলাম ওটা কে? আর.. আর ওই মেয়েটাই বা কে? আর তোমরা সবাই মিলে আমাকে মিথ্যে কেন বললে? তুমি নিজেকে অনন্য বলে কেন পরিচয় দিলে? তোমরা কী আসলে তখন নাটক করছিলে না এখন নাটক করছ? উফফ আমি.. আমি পাগল হয়ে যাব।”
“সরি আসলে তোমায় একটু পরীক্ষা করলাম। রিভেঞ্জ বলতে পারো। তোমার বাবা আমার এক্সাম খুব রসিয়ে রসিয়ে নিয়েছে… একটা বার দেখা করতে দেয়নি তোমার সাথে, কত কাকুতিমিনতি করেছি। এবার তাই বাগে পেয়ে তারও একটু এক্সাম নিলাম। দেখ ব্যাটা ভালোবাসার মানুষ ছটফট করছে অথচ মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে কেমন লাগে।”
“অ্যাই খবরদার আমার বাবাকে একটাও বাজে কথা বলবেনা বলে দিলাম.. ”
” আরে বাজে কথা কখন বললাম?”
“এইমাত্রই তো বললে ব্যাটা.. কী বাজে শব্দ!”
” আরে ওতো ভালোবেসে বলেছি।”
” আর তোমার ভালোবাসা.. কিন্তু আমি তো কিছুতেই হিসাব মিলাতে পারছিনা, সব গোলমাল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তুমি যদি আসল অভ্র না হও তাহলে আমাকে মিঠি বলে ডাকলেই বা কি করে.. ওটাতো মাঝে মাঝে অভ্রি আমাকে ডাকত।”
“আমি তো সেটাই প্রমান করছি… এখন আগে তুমি হাওয়াই মিঠাইটা খাও তো দেখি, জমে একদম শক্ত বল হয়ে গেল.. এতো ভালোবেসে আনলাম।”
” আরে ধ্যাতেরিকা.. কোথায় আমি সব গুলিয়ে ফেলছি আর তুমি আছ হাওয়াই মিঠাই নিয়ে।”
“একদম না আমি আমার মিঠাইর চিন্তা করছি, হাওয়াই মিঠাই আমার মিঠাইর খুব পছন্দ ছিল তো।”
“আমি এখন বড়ো হয়ে গেছ”
“তাতে কী আমার কাছে এখনও ছোট.. নাও।”
অনন্য.. ধুর অনন্যরূপী অভ্রর আহ্লাদীপনা এবার মিঠাইর মাথা খাচ্ছিল। সত্যি কী অভ্র এটা, না কী বাবার নতুন কোন চাল।
কিন্তু এবার আর খুব বেশি দেরী করতে হলো না মিঠাইকে। হুড়মুড় করে অভ্রর পরিবারের লোক এসে ঘিরে ধরল ওদের। সবাই মিঠাইকে অভ্র আর রেজওয়ান সাহেবের গোপন কাহিনী বলতে লাগল।
মিঠাই সব বুঝল কিন্তু তাহলে সেদিনের অভ্রটা কে? ওর যে তাকে অভ্রর মতোই লাগছিল?
“ওটা হায়দার.. আমার চাচাত ভাই আর ওর বউ তন্বী। বাসার মধ্যে ওর চেহারার সাথেই আমার চেহারা সবচেয়ে বেশি মিলে। কিন্তু আফসোস তোমার ওকে অভ্র বলে বিশ্বাস হলো কিন্তু আমাকে না।”
মিঠাইর অবাক হওয়ার চাইতেও এখন রাগ বেশি হচ্ছিল। কী আশ্চর্য.. যে অন্তরা সেদিন ওকে ইগনোর করলো সেও আজ হেসে হেসে বলছে.. অভ্রর কথাতেই নাকি সেদিন ও মিঠাইকে এভোয়েড করেছে। অন্তরা নাকি এতো কথা বলে যে গল্প করতে দিলে মিঠাইকে ও সব কিছু উগলে দিতো, তাই ওর কথা বলা বারন ছিল।
“তাই না? দেখাচ্ছি মজা.. আমাকে ক্লাউন বানানো!” দাঁতে দাঁত ঘষল মিঠাই।
“আরে তুমি এতো রাগ হবে আমি বুঝতে পারিনি মিঠি, মনে করেছি তুমিও আমার ফান করাটা ফান হিসেবেই নিবে।”
মিঠাইর মুডে এবার ভয় পেল অভ্র।
“ফান! কাল রাতে যা হলো সব ফান! তুমি অনন্য না অভ্র এটা আমার জন্য কী.. তুমি একবার ভাবলে না?”
” মিঠি আসলে আমি একটু দেখতে চাচ্ছিলাম উইথাউট লাভ ব্যাপারটা কেমন.. মানে সমাজে মহিলারা এরকম অনেক ভিকটিম হচ্ছে। তোমাকে বললে তো ব্যাপারটা একদম কেচে যেত।”
“কী!!!!! আমাকে তোমার গিনিপিগ মনে হয়?”
“আরে ধুর কী যে বলো.. তুমি গিনিপিগ হবে কেন? আর এক্সপেরিমেন্ট তো শেষ। তুমি হচ্ছো আমার জান।”
“না ”
“কী না? ”
” এক্সপেরিমেন্ট শেষ না… মাত্র শুরু হলো.. উইথ আউট লভ ব্যাপারটা কেমন আজ থেকে টের পাবে তুমি।”
“অ্যা… না প্লিজ”
“কোন প্লিজ অ্যালাও না,” দড়াম করে রিসোর্টে ওদের বুক করা ঘরের দরজাটা অভ্রর মুখের উপর বন্ধ করল মিঠাই।
“মিঠি.. মিঠাই এই আমি কান ধরছি, আর কখনো এক্সপেরিমেন্ট করবো না, প্লিজ।”
“তুমি সামনের এক বছর আমাকে ছোঁবে না। ”
” মাথা খারাপ নাকি.. এক বছর কী করে তোমাকে না ছুঁয়ে থাকব, তোমাকে না দেখে একবেলা আমি থাকতে পারিনা এখন, প্রান মরি মরি করে।”
পারবে.. আমি ঘরের ভিতরে তুমি বাইরে
মানুষ তাহলে আমাকে চোর ভাববে
তাহলে আমি খাটে আর তুমি সোফায়
আমি সোফায় ঘুমালে তোমার একা একা লাগব, তোমার ভূতের ভয় করবে।
করবেনা
করবে আমি জানি
আমার সাথে কথা না বাড়িয়ে এখান থেকে যাও অভ্র
দরজা না খুললে আমি এখানে দরজা ধরেই ঝুলতে থাকব..
ঠিক আছে…. ঝুল।
আমি তো ঝুলছি কিন্তু তোমার মাথার কাছে কোন মাকড়সা ঝুলছে কিনা দেখো..
মাকড়সা!
হমম.. আমার মিঠি মাকড়স খুব ভয় পায়, ভয় পেয় না মিঠি। আমি দরজার সামনেই আছি।
অতপর তাহারা দরজা কোনদিন খুলল কী না দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি.. আপনারা কেউ কী দেখেছেন? 😝
🌷ময়ূরকণ্ঠী রাতেরও নীলে
আকাশে তারাদের ঐ মিছিলে
তুমি আমি আজ
চল চলে যাই
শুধু দু’জনে মিলে।
💖হয়তো পাবো না
পথের ঠিকানা
তবু যাব আজ ছাড়িয়ে সীমানা
সাথী যদি হও পাশে থেকে মোর
করিনা ভয় নিখিলে!!
সমাপ্ত