একটু_একটু_ভালোবাসি
পর্বঃ১৫,১৬
লেখিকাঃ শাদিয়া_চৌধুরী_নোন
পর্বঃ১৫
সাবিরের মা চলে যাওয়ার পরও সিরাত একইভাবে বসে রইলো। ঐ লোকটা সাথে নেই। হয়তো চলে গেছে। রেস্টুরেন্টে তেমন ভীড় নেই। কয়েকজন ওয়েটারের হাঁটা-চলার আওয়াজ আর ডিশের টুংটাং আওয়াজ ছাড়া কোনো শব্দ নেই। এমন একটা পরিবেশে কান্নারত সিরাতকে বড্ড বেমানান লাগলো। দূর থেকে সাবিরকে আসতে দেখে সিরাত তাড়াতাড়ি টিস্যু দিয়ে চোখের পানি মুছে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলো। তার কানে সাবিরের মা আইভির কথা বাজছে। তিনি ভুল কিছু বলেননি।
সাবির পাশে এসে বসলেও সিরাত মাথা নিচু করে রইলো। সাবির ইতস্তত করছে। একবার টেবিলের উপর হাত রাখছে আরেকবার হাত নামিয়ে আশেপাশে তাকাচ্ছে। খানিকক্ষণ পর বসানো গলায় বললো,
—- আম্মু কোথায়?
সিরাত এবার মুখ তুলে সাবিরের চোখে সরাসরি তাকালো। চোখের পাপড়িগুলো এখানো ভেজা। ফোলা গালদুটোয় লাল লালনআভা।
—- উনি একটু কাজে গেছে। কোথায় বলে যাননি। কাজ শেষ হলে চলে আসবেন।
সাবির চমকে গেলো। নিজেদের দুরত্ব কমিয়ে হুড়মুড় করে সিরাতের পাশের চেয়ারে এসে বসলো সে। উত্তেজিত গলায় বললো,
—– তুমি কাঁদছো কেনো? কেউ কিছু বলেছে রাত?
সিরাত কিছু না বলে নিশ্চুপ নয়নে তাকিয়ে রইলো। এতে যেন সাবিরের উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলো।
—- বলো কি হয়েছে?
সিরাত এবারও নিশ্চুপ থাকায় সাবিরের চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো। দাঁড়িয়ে গলা স্বর উঁচু করে বলতে লাগলো,
—- ওকে কে কি করেছো বলো? কে টিজ করেছে? আমি ছাড়বো না কাউকে, সময় থাকতে বলে দাও। আমার সম্পর্কে আশা করি খুব ভালো ধারণা আছে সবার।
দূর থেকে ম্যানেজার হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসছে এদিকে। সিরাত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সামান্য একটা বিষয়ে সাবিরের এহেন আচরণ তাকে বিস্মিত করেছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সাবিরকে বললো,
—- এখানে আমার ভালো লাগছে না। বাইরে যাবো।
সাবির কঠোর কণ্ঠে বললো,
—- কি হয়েছে না জানা পর্যন্ত যাবো না।
—- কিছু হয়নি। বাইরে যাবো বলেছি না!
সাবিরকে কিছুটা অবাক হতে দেখা গেলো। সিরাত এই প্রথমবার বড় গলায় কিছু বললো। কথা না বাড়িয়ে সে সিরাতকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো। পাশের পার্কে বসলো দু’জনে। দুপুরের কড়া রোদটা আস্তে আস্তে মিইয়ে আসছে। বড় বড় গাছের পাতার কারণে তারা নিজের দখলদারিত্ব বজায় রাখতে পারছে না। কয়েকটা শহুরে কাক বেসুরা গলায় ডাকতে ডাকতে ক্ষান্ত হয়ে চুপচাপ বসে আছে। সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো বেঞ্চে বেশ দূরত্ব রেখে বসে সাবির আর সিরাত। তাদের সামনে একটা ছোটখাটো পুকুর। মনোরম পরিবেশে দুজন মানব-মানবীর মস্তিষ্কে দু রকমের চিন্তা ভর করেছে। একজন সংকোচে আরেকজন অস্বস্তিতে। সাবির সামনে চোখ রেখে হুট করে বলে বসলো,
—- আমি কি সবকিছু তোমার উপর চাপিয়ে দিয়েছি রাত?
সিরাত প্রশ্নবোধক চোখে বললো,
—- মানে?
সাবির একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো,
—- এইযে, হুট করে তোমার সাথে পাগলামি করা, জড়িয়ে ধরা,হুটহাট তোমার সামনে হাজির হওয়া, ভালোবাসার কথা বলা সবকিছু। তারপর আমার মা তোমার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া, তোমার মা-বাবার রাজি হয়ে যাওয়া, আর কয়েকদিন পর বিয়ে সবকিছু তোমার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তাইনা? তুমি হুট করে এতকিছু সামলাতে পারছো না। ‘বিয়ে’ নামক একটা ভারী বিষয়, যা কয়েকদিন পর তোমার সাথে হতে যাচ্ছে তা তুমি মানতে পারছো না। এসব কিছু তোমাকে অনেক প্রেশার দেয় তাইনা রাত?
সিরাত কি বলবে খুঁজে পেলো না। সাবির যা বলেছে তার একটা অক্ষরও মিথ্যা নয়। তার মাথায় এলোনা, এইসব কথা সাবির কিভাবে জানতে পেরেছে। তার মন আর মস্তিষ্ক ভাবতে লাগলো, তার জীবনে আসলে নিজস্ব কোনো মতামত নেই। বিয়ের মতো এতো বড় একটা সিদ্ধান্তে কেউ তার মতামত চায়নি। শুধু বিয়ে না জীবনের কোনো সিদ্ধান্তই সে নিতে পারেনি। নিজের আবদ্ধ পৃথিবীতেই সে সীমাবদ্ধ। জীবনের এতোগুলো বছর পেরিয়ে গেলো অথচ সে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। আর পাচঁটা মেয়ের মতো সে না। যেখানে নিজের কোনো মতামত নেই সেখানে এই সম্পর্কটাকে জোড়ালো করার ইচ্ছেটাও কেন যেন মরে যাচ্ছে।
—– আমাকে কি বলবে বুঝতে পারছো না তাইনা?
সিরাত উপরনিচ মাথা নাড়লো। তারপর হুট করে কেঁদে দিলো। সাবির আরেকটু ঘনিষ্ঠ হয়ে সিরাতের হাতে হাত রাখলো,
—- জীবন এতো সহজ না রাত। আমি তোমাকে সম্মান করি। এইযে, এতোকিছুর পরও তুমি আমাকে হুট করে ভালোবাসছো না এজন্যও আমি তোমাকে ভালোবাসি। মেয়েদের এমনই হওয়া উচিত। অন্তত আজকাল যুগের মেয়েদের মতো অতি আপডেট না হওয়া, বোকাসোকা, মিষ্টি এই সিরাত নামের মেয়েটাকে আমি ভালোবাসি। এইদিক দিয়ে তুমি বেশ স্ট্রং একটা মেয়ে যে, যেকেউ হুট করেই তোমার মনে ভালোবাসা সৃষ্টি করতে পারবে না।
সিরাত ফুপাতে ফুপাতে বললো,
— তারমানে আপনি বলতে চাইছেন, আমি স্ট্রং?
— হুম, অবশ্যই তুমি স্ট্রং গার্ল। শুনো, নিজেকে নিয়ে কখনো হীনমন্যতায় ভুগবে না। মনে করবে নিজের সিদ্ধান্তই বেস্ট ডিসিশন। নিজের জীবন নিয়ে কক্ষনও আফসোস করবে না। মনেআমি তোমার পাশে সবসময় থাকতে চাই রাত। তুমি পরিপূর্ণ স্বাধীনতা পাবে। আমি কখনোই তোমাকে পিছু ডাকবো না। জীবনটা অনেক সুন্দর হবে, যদি তুমি তাকে উপভোগ করতে জানতে পারো। মা-বাবার প্রতি নিরাশ হয়ো না। একদিন তুমি নিজেই বলবে, তাদের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না।
—- আপনি এতো ভালো কেনো?
—- কারণ তুমি ভালো তাই!
—- সত্যি আমি স্বাধীনতা পাবো?
—- পাবে। তবে তোমাকে নিজের কাছে রাখার দায়িত্বও আমার।
সিরাতের মন এখন অনেকটা হালকা লাগছে। একটু আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল না। এখন মনে হচ্ছে, সবকিছু নির্মল, স্বচ্ছ, পরিষ্কার। আশেপাশের সবকিছু সুন্দর। সাবিরের হাতের বাঁধন আরেকটু শক্ত হলো। সিরাত অস্বস্তি লাগলো না। মুচকি হাসলো সে।
— আমাকে একটু সুযোগ দেবে রাত নিজেকে প্রমাণ করার?
চলবে….
#একটু_একটু_ভালোবাসি
#পর্বঃ১৬
লেখিকাঃ #শাদিয়া_চৌধুরী_নোন
সেদিন থেকে সিরাত অনেক পাল্টে গেলো। কথায় কথায় উপচে পড়া হাসি, অনর্গল কথা বলা, হালকা খুনশুঁটি এইসব ছাড়াও আরও ছোটখাটো ব্যাপার বেশ লক্ষনীয়। আগে সাবিরের কল দেখলেই এড়িয়ে যেতো কিন্তু এখন সারাদিন সাবিরের কলের অপেক্ষায় থাকে। সাবিরের কথা বলার ধরণ, হাসি, প্রতিটা কথায় রাত!রাত শব্দ উচ্চারণ করা সবকিছু সিরাত লক্ষ্য করে। কথার মাঝে হুট করে সাবির যখন বলে, ‘রাত! ভালোবাসি। প্লিজ আমাকেও একটু একটু ভালোবাসো’, সিরাত তখন লজ্জায় হাজারবার মরে যায়। সাবিরকে তার অদ্ভুত ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, ভীনদেশী কোনো প্রাণীর সাথে তার ভুল করে পরিচয় হয়ে গেলো। আগে মনে হতো, এই পৃথিবীতে সিরাত কিচ্ছু না। তার কোনো মূল্যই নেই। সে মরে গেছে, বেঁচে আছে এতে কারো কিছু যায় আসে না। এই জীবন সংসারে তার কোনো অবদানই নেই। এইসব বিষয় নিয়ে হুট করে তার মন খারাপ হতো। কিন্তু এখন মনে হয়, সে কারো কাছে খুব বিশেষ কেউ। ভীষণ স্পেশাল সে সাবিরের কাছে। তার মন খারাপে সাবিরের মন খারাপ হয়, হাসলে সাবিরের নিষ্পলক তাকিয়ে থাকা, খুঁটিনাটি বিষয়ে খেয়াল রাখা সবকিছু! সবকিছুই মনে করিয়ে দেয়, এই পৃথিবীতে তারও মূল্য আছে। নিজস্ব পৃথিবীর বাইরে কেউ তাকে খুব করে চাই। সেই ভুল করে পরিচিত হওয়া ভীনদেশী প্রাণীটা তাকে আস্তে আস্তে জীবনের মানে শেখাচ্ছে। শেখাচ্ছে, কীভাবে একটু একটু ভালোবাসতে হয়। পৃথিবীতে সব মানুষই কেউ কারো না কারো কাছে খুব স্পেশাল। শুধু সঠিক মানুষকে নির্বাচন করতে জানতে হয়। একে অন্যকে সময় দিয়ে দু’টো পৃথিবীকে একে রূপান্তর করে জীবনকে উপভোগ করতে। এইতো সেদিনের কথা, রাতে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সিরাত সাবিরের সাথে কথা বলছিলো। এমন সব কথা যার কোনো মানেই হয় না। কিন্তু এই সাধারণ কথাগুলোর দ্বারাই এক অদৃশ্য কঠিন মায়াজালে সিরাত আটকা পড়ছিলো। কথা বলার মাঝেই সাবির হুট করে বললো,
—– রাত! দেখো আমার আকাশে এক মস্ত বড় চাঁদ উঠেছে। একটা গোলাকার থালার মতো ইয়া বড় চাঁদ। তার আশেপাশে কয়েকটা মেঘ চাঁদটাকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। আরো অনেক তারা ঝিকিমিকি করছে। তোমার আকাশেও এমন হচ্ছে রাত?
সিরাত সাবিরের কথায় ভ্রু কুঁচকে ফেললো। মানে? আমার আকাশ-তোমার আকাশ মানে কি? আকাশ আবার দুটো হয় নাকি? কিসব আজগুবি কথা! কৌতূহল দমন করতে না পেরে সে প্রশ্নটা করেই ফেললো,
—- আকাশ তো একটা তাইনা? চাঁদও একটা। তাহলে আমার আর আপনার হবে কেনো? এগুলো তো সবার, সব মানুষের।
সাবির খুব হাসলো এমন কথা শুনে। তারপর নরম কণ্ঠে বললো,
—- ভেবে নিতে দোষ কি বলো? ধরে নাও, তোমার সামনে যে আকাশটা দেখছো ওটা তোমার আর আমার সামনে যে আকাশ আছে, এটা আমার। হয়ে গেলো না, তোমার আর আমার আকাশ? খুব কি ক্ষতি হয়ে যাবে এটা ভাবলে?
সিরাত ভাবতে লাগলো। আমার আকাশ! শুধুই আমার! এই চাঁদ আমার। ঐ তারা আমার। আমার আকাশে চাঁদ উঠেছে। আমার আকাশে মেঘও আছে। সত্যি তো! ভেবে নিতে দোষের কিছু নেই। অদ্ভুত ভালো লাগে।
সাবিরের প্রতি ভালোলাগাটা দিনদিন যেন বেড়েই চলেছে। সাবিরের সাথে কথা বললে সময়গুলো হুট করে শেষ হয়ে যায়। কখন যে সময়গুলো পালিয়ে যায় ঠাহর করতে পারে না সিরাত। তার মা-বাবাও সাবির বলতে পাগল। সাবির পুরো পরিবারকে শপিং করে দিয়েছে কিছুদিন আগে। তারা যখন সাবিরের নাম করে, সিরাত কান লাগিয়ে শোনার চেষ্টা করে। এমন একটা ছেলেকে কার-না ভালো লাগে! কিন্তু বিয়ের কথা মনে পড়লেই লজ্জায় আটখানা হয়ে যায়। উফফ! বিয়ের পর কি হবে? সাবির তো অনেককিছু বলে। তখন তো একসাথে থাকতে হবে। এসব ভাবলে সিরাতের গাল বাদে কান পর্যন্ত গরম হয়ে যায়। সাবির প্রায়ই বলে,
— এতো লজ্জা কোথা থেকে আসে তোমার? এই লজ্জার গোপন রহস্য কি বলোতো? তোমার এই লজ্জার কারণে আমার ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছি৷
সিরাতের লজ্জা তখন আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
এইযে, আজ সকালে সাবির সিরাতের মা-বাবার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বাইরে ঘুরতে বের হবে এটা নিয়েও সিরাত লজ্জা পেলো। ছিহ্! ছিহ্! বাবা কি ভাবলো? মা কি ভাবছে! তানিশা আন্টি তো আজ আমাকে প্রশ্ন করতে করতে শহীদ হয়ে যাবে। এতো লজ্জার মাঝেও সিরাত সাবিরের কাছে একটা আবদার করলো। ফোন করে মিষ্টি কণ্ঠে বললো,
—– শুনুন না! আমি না কোনোদিন বাইকে চড়িনি। আপনার বাইক আছে? থাকলে আজ আমরা বাইকে যাবো ঠিক আছে?
সাবির না করলো না। সিরাতের আবদার রেখে একটা বাইক নিয়ে হাজির হলো। সিরাত কখনো ভাবতে পারেনি, তার জীবনেও এমন সুন্দর কিছু মুহূর্ত অপেক্ষা করছিল। তাকেও কেউ এতোটা গুরুত্ব দেবে। বাইকে চড়ার স্বপ্নটা আজ পূরণ হলো। হাজারো অস্বস্তি নিয়ে সে কাঁধের ব্যাগটাকে তাদের মাঝখান বরাবর রাখলো। তারপর দুইপা সমান করে সাবিরের পেছনে বসলো।
তখন খেয়াল করলো, তার হাত থরথর করে কাঁপছে। এ কেমন অনুভূতি! এ কেমন ভালোলাগা! সামনের মানুষটা কি সত্যিই এতো ভালো? সিরাত বাইকের গ্লাসে স্পষ্ট লক্ষ্য করলো, সে যখন সাবিরের কাঁধে হাত রাখলো, সাবিরের চিবুক কাঁপছিল। বারবার ঠোঁট ভিজিয়ে চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে কি যেন বলছে আর বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলছে। এসবের মানে সিরাত জানে না। কিন্তু সাবির তো জানে! তার স্বপ্ন প্রেয়সী আজ নিজ থেকে ভরসা করে তার কাঁধে হাত রাখলো। তার পাশে বসলো। শুধুমাত্র সে-ই জানে, তার মনে কেমন করে উথাল-পাতাল করছে। প্রেয়সীর মন জেতা, একটুখানি অধিকার পাওয়াটাও প্রেমিকের অনেক বড় জয়।
সেদিন সাবিরের অস্থিরতা সিরাত টের পেলো আরো কিছুক্ষণ পর। যখন সাবির কাউকে কল করতে পকেটে হাত দিলো, মোবাইলের বদলে বেরিয়ে এলো টিভির রিমোট। অন্য পকেটে হাত দিতেই বেরিয়ে এলো চাবির রিংয়ের জায়গায় বেরিয়ে এলো ইনহেলার। টাকা ছাড়া শূন্য মানিব্যাগ নিয়ে সে চলে এসেছে। এতকিছুর পর তার মুখটা দেখার মতো হলো। রাগ নিয়ে পানি খেতে গিয়ে পুরো গলা থেকে বুক পর্যন্ত ভিজিয়ে ফেললো। গলায় পানি আটকে কাশতে কাশতে হাঁপানি রোগীর মতো অবস্থা হলো। সাবির নিজেকে গালি দিলো না। কিন্তু নিজের বোকামির জন্য হালকা হাসলো। অনুভব করলো, সিরাত তার জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই মেয়ের কথা ভাবতে ভাবতে, দেখার করবে বলে উত্তেজনায়, সে আজ এতোগুলো ভুল একসাথে করে ফেললো। অন্যদিকে সাবিরের এহেন কান্ডে সিরাত অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো। একে পাগল না বলে আর কাকে বলবে সে? বলেই ফেললো,
—- আপনি আসলেই একটা পাগল।
সাবির মাথার চুলগুলোকে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে বিড়বিড় করলো,
—- যদি তুমি জানতে রাত! যদি একটু বুঝতে……
চলবে