যাত্রাশেষে (পর্ব-১০)

যাত্রাশেষে (পর্ব-১০)
হালিমা রহমান

মৃত্তিকা খাট ধরে দাঁড়িয়ে আছে।সে এখনো পুরোপুরি হাঁটতে পারে না।কোনো কিছু ধরে দাঁড়ায় ঠিকই, কিন্তু তা বেশিক্ষণের জন্য না।একটু দাঁড়ায়,কিছুক্ষণ পর আবার ধপ করে পরে যায়।মৃত্তিকাকে দাঁড় করিয়ে রেখে তুষার হাত-মুখ ধুতে গেছে।মেয়েটাকে রেখে কোথাও যেয়ে একটু শান্তি পায় না তুষার।সবসময় চিন্তায় থাকে।মৃত্তিকা বেশ দুষ্ট।স্থিরভাবে বসে থাকতেই পারে না।খালামনি ওকে সামলাতে পারল কি না,ঠিকমতো খাচ্ছে কি না,দাঁড়াতে যেয়ে পরে যাচ্ছে কি না–এসব চিন্তা করতে করতে একেবারে পাগল হয়ে যায় সে।বেশ কিছুক্ষণ মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিলো তুষার।রোদ তার সহ্য হয় না।অনেক্ষন রোদে থাকলেই চেহারা লাল হয়ে জ্বলতে থাকে।আজ সারাদিন মহুয়ার সাথে পার্কে বসা ছিল।কথায় কথায় যন্ত্রণা টের না পেলেও এখন বুঝতে পারছে।তুষার আরো কয়েকবার মুখে পানি দিয়ে বেড়িয়ে এলো।কিন্তু ঘরে এসেই তার চক্ষু চড়কগাছ।কোথায় মৃত্তিকা!যেখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল সেখানে পানিতে ভরে আছে।অবশ্য এগুলো যে পানি না তা বেশ বুঝতে পারছে তুষার।নিশ্চয়ই মৃত্তিকা প্রস্রাব করে, সরে গেছে।মেয়েটা ভেজা জায়গায় থাকতেই পারে না।তুষার একটা কাপড় দিয়ে জায়গাটা মুছে ফেললো।তারপর রান্নাঘরের দিকে গেল।সে নিশ্চিত মেয়ে এখন সেখানেই আছে।
তুষারের ভাবনাই ঠিক।মৃত্তিকা ঠিকই রান্নাঘরের ফ্লোরে বসে আছে।শুধু বসে নেই।রান্নাঘরে রাখা আলুর ঝুড়ি উল্টে ফেলে দিয়েছে।ফলস্বরূপ, সব আলু নিচে গড়াগড়ি খাচ্ছে।মৃত্তিকার হাতে একটা আলু।সে সবে একবার সেটাতে দাঁত বসিয়েছে।এখনই থেমে যাবে না।আলুর পুরো গায়ে দাঁত বসাবে মৃত্তিকা।তুষারের নজরে এসব আসতেই, সে তাড়াতাড়ি মেয়ের কাছে বসে পড়লো।মৃত্তিকার হাত থেকে আলু কেড়ে নিয়ে চোখ পাকিয়ে ধমক দিলো।

—” এই মেয়ে,এই এতো দুষ্ট কেন তুই?এটার গায়ে ময়লা নেই?তোর পেটে যাবে না।পেট খারাপ হলে কষ্ট কার হবে? আমার?ফাজিল মেয়ে।সবসময় দুষ্টামি।”

তুষার রান্নাঘর থেকে মেয়েকে বের করে দিলো।একটা একটা করে আলু তুলে রাখলো।শরীরটা ভেঙে আসছে তার।সারা বিকাল মহুয়ার সাথে কথা বলার পর সন্ধ্যার দিকে আবার দোকানে গিয়েছিল।সেখানে ঘন্টাখানেক কাজ-কর্ম দেখার পর আবার রুবিনা বেগমের বাসায় যেতে হয়েছে।সেখানে আধঘন্টা থাকার পর মৃত্তিকাকে নিয়ে বাড়ি আসতে হয়েছে।দু-দন্ড জিরিয়ে নেওয়ার ফুরসত মেলে নি।রান্নাঘর গুছিয়ে বেরিয়ে এলো তুষার।আজকে আর রান্নাবান্নার ঝামেলা নেই।রুবিনা বেগম খাবার দিয়ে দিয়েছেন।একটু পর মৃত্তিকাকে খাবার গরম করে খাইয়ে দিলেই হবে।তুষার এখন একটু বসতে চায়।রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে আবারো এদিক-ওদিক তাকালো তুষার। মেয়েটা আবার কোথায় গেল?এদিক-ওদিক চোখ বুলাতেই মৃত্তিকাকে নজরে এলো।ফ্রিজের পাশে বসে কি যেন করছে সে।তুষার কপাল কুঁচকে সেদিকে গেল।এই মেয়েতো এরকম চুপচাপ বসে থাকার মেয়ে না।আবার কি করছে সে?মৃত্তিকা ফ্রিজের পাশে থাকা তারের দিকে তাকিয়ে আছে।তার চাহনী দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় সে এটা ধরতে চাইছে।হাত বাড়িয়ে যেই না ধরতে যাবে ওমনি মেয়ের হাত ধরে ফেললো তুষার।মেয়েকে কোলে নিয়েই আলতো হাতে চড় দিলো পিঠে।মুখে বললঃ”এতো ফাজিল কেন, মিত্তি তুই?এটায় কারেন্ট আছে না?কারেন্টের কাছে কি এতো?যদি শক করতো কেমন লাগতো তখন?”

বাবার কথা মৃত্তিকা কি বুঝলো কে জানে!তূষারের মতো সেও কিছুক্ষণ কপাল কুঁচকে তাকিয়ে রইলো।কিছুক্ষণ মাত্র।তারপর বাবার গালের উপর ঝাপিয়ে পরে কুট করে কামড় বসিয়ে দিলো।একটা মিষ্টি যন্ত্রণা। এই কাজটা মৃত্তিকা খুব ভালো পারে।তুষারের কোনো কথা বা কাজ অপছন্দ হলেই তুষারকে কামড়ে দেয়।তুষার মেয়েকে নিয়ে বিছানার কাছে এসে বিছানায় বসিয়ে দিলো।তারপর নিজেও মেয়ের মুখোমুখি বসলো।মেয়েকে কোলের কাছে টেনে এনে আহ্লাদী সুরে বললঃ”আমার মা কবে বড় হবে?মা এতো দুষ্টামি কেন করে? মা কি পচা?”

মৃত্তিকা হয়তো তুষারের আদর বুঝতে পেরেছে।সে বাবার দিকে আরো এগিয়ে যায়।বাবার কথার বিপরীতে ঠোঁট বাকা করে হাসে।মৃত্তিকা হাসলে দুই গালে টোল পরে।মহিমা হাসলেও গালে গর্ত হয়ে যেত।মায়ের এই বৈশিষ্ট্য প্রাকৃতিকভাবেই পেয়েছে মৃত্তিকা।তুষার মেয়ের দিকে একমনে চেয়ে থাকে।মহিমার এই সৌন্দর্যে বারবার মুগ্ধ হতো তুষার।মনে হতো যেন পৃথিবীর সকল সৌন্দর্য আল্লাহ মহিমার হাসিতেই ঢেলে দিয়েছেন।মেয়েটাও একই রকম হয়েছে।হাসিটা তো পুরোই মায়ের।মৃত্তিকার চোখ দুটো শুধু তুষারের মতো।বাকি সবই মহিমার।

—” বা বা,বা বা,বা,বা।”

মেয়ের ডাকে সচেতন হয় তুষার।মৃত্তিকা তাকে এভাবেই ডাকে।তুষার মেয়েকে একদম কাছে টেনে আনে।হাসিমুখে প্রশ্ন করেঃ”কি হয়েছে আমার বাবার?তার কি কিছু লাগবে?আরো খেলনা লাগবে?”
মৃত্তিকা তুষারের উপর ভর দিয়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতে আবারো বলেঃ”বা বা,বা বা।”
তুষার দীর্ঘশ্বাস ফেলে।মেয়েকে পুরোপুরি দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলেঃ” কবে বড় হবি মা তুই?একটু তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যা তো।আমি দেখে চোখ জুড়াই।”

***

মহুয়া খাবার টেবিলে বসে আছে।খাচ্ছে না,খাওয়ার ভান করছে।খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে মহুয়া খুবই অলস।একই সাথে খুতখুতেও খুব।এটা খেতে পারে না, ওটা খেতে পারে না।যেদিন সাবিনা বেগম শুধু সবজি রান্না করেন,সেদিন আর মহুয়া খেতে পারে না।শুধু সবজি দিয়ে আবার খাওয়া যায় নাকি?আবার স্কুল থেকে এসে যদি কিছু হালকা খাবার খায়, তখন আর দুপুরে ভাত খায় না।এই মেয়েকে নিয়ে সাবিনা বেগমের যন্ত্রণার শেষ নেই।তিনি মাঝেই মাঝেই ভাবেন,যদি তিনি বেঁচে না থাকতেন তবে হয়তো মহুয়া অনাহারেই মরে যেত।খাবারের সাথে আবার এতো ঢং কীসের?যা পাবি তাই খাবি।সব খাবারই আল্লাহর নেয়ামত।তাহলে আবার এটা খাব না,ওটা খাব না–এসব কথা বলার কী মানে?প্রায় বেলাই খেতে বসে মহুয়া মায়ের বকুনি অথবা চড় খায়।তবুও শুধরায় না।এই মেয়ের শরীরে কি লজ্জা-শরম কিছু নেই নাকি?এতো বড় হওয়ার পরেও মায়ের হাতে মার খায়,তবুও কোনো হেলদোল নেই।আশ্চর্য একটা মেয়ে!
সাবিনা বেগম খাবার খাওয়ার ফাঁকে মেয়েকে একমনে দেখছিলেন।মেয়ের খাবার খাওয়ার ধরন দেখে তিনি গর্জে উঠলেন।

—” মহুয়া,একটু ভাত যদি নষ্ট করেছিস তবে খবর আছে তোর।প্রতি বেলায় বেলায় ঢং করতে লজ্জা করে না তোর?রান্না করতে কষ্ট হয়।আমি কষ্ট করে রান্না করব আর তুমি ফেলে দিবে, তা কখনোই হবে না।চাল-ডাল কিনতে টাকা লাগে।তোমার বাবা কষ্ট করে এগুলো কিনে ফেলে দেওয়ার জন্য না।বুঝেছিস?”

মহুয়া অসহায় ভঙ্গিতে মাথা নাড়ে।মা যে এখন প্রচন্ড রেগে আছে, তা তার কথা শুনেই বুঝা যাচ্ছে।সাবিনা বেগম যখন খুব রেগে থাকেন তখন তুই-তুমি একসাথে মিলিয়ে কথা বলেন।মহুয়া একটু পানি খেয়ে আবারো ভাত মুখে দিলো।একেবারেই খেতে ইচ্ছা করছে না।প্রতিদিন তিনবেলাই কি খাওয়া লাগে?দু-একবেলা না খেলে কি হয়?মানুষ মরে যায়?এরকম হলে তো দুর্ভিক্ষের দেশের সব কবেই মানুষ মরে যেত।মা যে কেন এতো অত্যাচার করে!

মহুয়া খাবার শেষ করে সবে ঘরে এসে বসেছে।কেন যেন ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না আজ।মাঝে মাঝেই এরকম হয় মহুয়ার।তখন সে সিনেমা দেখে রাত কাটিয়ে দেয়।অথবা কখনো কখনো তার প্রিয় লেখক শরৎচন্দ্রের বই পড়ে।আজ এগুলো কিছুই করতে ইচ্ছে করছে না।মহুয়া মাথায় ওড়না দিয়ে বারান্দায় গেল।তার বারান্দাটা ছোট।তাদের পুরো ফ্ল্যাটে শুধু মহুয়ার ঘরেই বারান্দা আছে।তাই সাবিনা বেগম এখানে কাপড় শুকাতে দেন।এটা খুবই অপছন্দ মহুয়ার।মায়ের জন্য মহুয়া বারান্দাটা মনমতো সাজাতে পারে না।এমাথা-ওমাথা দড়ি টাঙানো থাকে। ঘরের হাজারটা কাপড় মেলে দেওয়া থাকে বারান্দায়।সূর্যের আলো আসে নাকি ঘরে?আলোর অভাবে মহুয়া কয়েকটা গাছও লাগাতে পারে না।মহুয়া বারান্দায় যেয়ে রেলিং ধরে দাঁড়ালো।আকাশে আজ চাঁদ উঠেছে।ভরাট চাঁদ না।বাকানো একটুখানি চাঁদ।মহুয়ার পূর্ণিমা খুব পছন্দ।জ্যোৎস্না রাতে থালার মতো চাঁদটাকে কি সুন্দরই না দেখা যায়!মহুয়ার শৈশব কেটেছে মফস্বল একটা শহরে।আফজাল সাহেব দেশে ছিলেন না বলে, সাবিনা বেগম বেশিরভাগ সময় বাবার বাড়িতেই ছিলেন।মহুয়ার নানাবাড়ি বিশাল।আশেপাশে দৈত্যের মতো কোনো দালান নেই।তাই উঠোনে দাঁড়িয়ে সহজেই আকাশ দেখা যায়।ছোটবেলা থেকেই চাঁদ দেখার খুব শখ মহুয়ার।নানাবাড়ির বিশাল উঠোনে দাঁড়িয়ে আগে সবসময় সে চাঁদ দেখতো।এখন আর এসব হয় না।কবে পূর্ণিমা হয়, কবে অমাবস্যা হয়,কবে চাঁদ বাকা হয়ে যায়–এসব খবর এখন আর রাখা হয় না।মহুয়া এখন খুব ব্যস্ত।নিজের খবর রাখারই সময় হয় না আবার দূর আকাশের চাঁদের খবর! মহুয়া নিস্তব্ধ রাতে ছোট্ট বারান্দায় দাঁড়িয়ে, প্রাণভরে শ্বাস নেয়।শৈশব যদি সবসময় থাকতো!

—“মহুয়া, কোথায় তুই?”

আফজাল সাহেবের কন্ঠ শুনে মহুয়ার মুখে হাসি ফুটে।বাবার সঙ্গ তার খুব প্রিয়।সময়টা এখন বেশ ভালো যাবে।মহুয়া বারান্দা থেকে ঘরে এসে দাঁড়ায়।

—” এই তো, বাবা।ঘুম আসেনি তোমার?”
—“নারে মা।ইদানিং খুব কম ঘুম হয়।তুই এতো রাতে ওখানে কি করছিলি?”
—” ঘুম আসছিল না, তাই দাঁড়িয়ে ছিলাম।বসো তুমি।”

আফজাল সাহেব মেয়ের খাটের এককোনে পা তুলে বসেন।মহুয়া এসে তার বাবার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে।আফজাল সাহেবের হাত টেনে নিজের মাথার চুলের উপর রাখে।আফজাল সাহেব মৃদু হাসেন।মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলেনঃ” এটা কি আমার চাকরি?”
—” হুম।চুলগুলো একটু টেনে দেও না, বাবা।তুমি চুল টেনে দিলে অনেক আরাম লাগে।”
—” তুই আমার মেয়ে।কোথায় তুই আমার সেবা করবি তা না।বুড়ো বয়সে আমাকে মেয়ের সেবা করতে হয়।হাহ! কপাল।”
—” তোমার জন্য দোয়া করব, বাবা”

আফজাল সাহেব কোমল হাতে মেয়ের চুল টেনে দেন।আরামে মহুয়ার চোখ বন্ধ হয়ে আসে।

—” হ্যাঁ রে মহুয়া,তুষারের সাথে কি এতো কথা বললি আজ।সেই দুপুরে গেলি,সন্ধ্যায় আসলি।”

মহুয়া চোখ বন্ধ করেই বলেঃ”তিনি আমার বিয়ের আগের ঘটনাগুলো জানতে চেয়েছেন।তাই বলেছি।”
—” শুনে কি বলল?”
—” কিছুই না।তাছাড়া,একটা ছোট-খাটো বোঝাপড়া হয়েছে আমাদের।এই।”
—” ওহ।”

আফজাল সাহেব মেয়ের চুলে হাত বুলাতে বুলাতে আবারো বললেনঃ” বিয়ের পরে কি তুই চাকরি করবি না?”
মহুয়া এক মুহূর্ত ভেবে বললঃ” না,বাবা।”
—” কেন?”
—” স্কুলের চাকরিটা ছেড় দেব, বাবা।তুমি তো জানোই আমার কম্পিউটারে ঝোক বেশি।ইচ্ছে আছে,বিয়ের পর আউটসোর্সিং এর চেষ্টা করব।আমার অনেক দিনের শখ এইটা।”

আফজাল সাহেব একমুহূর্ত ভাবলেন।তারপর বললেনঃ” আমার না বিলকিস বেগমকে বেগমকে দাওয়াত করতে মন চায়।”
চমকে উঠে বসে মহুয়া।অবাক গলায় বলেঃ” কেন?”
—” ওনার জন্য আমার খুব কষ্ট হয় বুঝলি।ওনাকে দেখলেই বুঝা যায়, ছেলের আচরণে খুব লজ্জিত তিনি।জানিস পৃথিবীতে সবচেয়ে হতভাগা কারা?যাদেরকে কুলাঙ্গার সন্তানের জন্য পদে পদে অপমানিত হতে হয়।”

মহুয়ারও মাঝে মাঝে ওই মানুষটার জন্য কষ্ট হয়।তিনি অনেক স্নেহ করতেন মহুয়াকে।মহুয়া মন খারাপ করে বললঃ” দরকার নেই, বাবা।ওই বাড়ির কারো সাথে যেন আর কখনো আমার দেখা না হয়।”
—” কেন?”
—” এমনিতেই। আমার ভালো লাগে না।”
—” কিন্তু আমি চাই,ওদের সাথে তোর আবার দেখা হোক।তুই সুখী হ।তোর সুখ দেখে আবরার হিংসায় জ্বলেপুড়ে মরে যায়।”

মহুয়া হাসে।বাবা কি পাগল! আবরারের হিংসা কেন হবে?মহুয়ার প্রতি তো তার কোনো আকাঙ্খা ছিল না।সে মৃদু হেসে বলেঃ”আবরারের কেন হিংসা হবে বাবা?সে অনন্যার সাথে সুখে আছে।”
—” শোন মা,কর্মফল বলেও একটা কথা আছে। কর্মফল কখনো পিছু ছাড়ে না।”
মহুয়া প্রসঙ্গ বদলে ফেলতে চাইলো।তাই শান্ত গলায় বললঃ” জানো বাবা আজ আমি তুষার সাহেবকে বলেছি,তাকে আমার স্বার্থপর লাগে।”
—“তারপর? ”
—” তারপর অবশ্য আমার নিজেরই খারাপ লেগেছে।সেও তো আমার মতো একই পরিস্থিতির শিকার।”
—” কিন্তু,তোর মনের কথা বলে ভালো করেছিস।কারো সম্পর্কে কিছু ভাবলে, তা মনে মনে রাখবি না।তাকে বলে দিবি।”
মহুয়া ভ্রু কুঁচকে বললঃ” তাহলে মাকে যেয়ে বলি,মা আমার উপর খুবই অত্যাচার করে।তাই মায়ের উপর আমি খুবই বিরক্ত।আমি তাকে বয়কট করতে চাই।”
মেয়ের কথার বিপরীতে কুটিল হাসেন আফজাল সাহেব।মাথা নেড়ে বলেনঃ”ঠিক আছে।তোর মনের কথা যেয়ে তোর মাকে বল।কিন্তু এরপর যদি তোর মায়ের জুতো তোর শরীরের দিকে উড়ে আসে,তবে তার দায়ভার কিন্তু আমি নেব না।”
আফজাল সাহেবের কথায় মহুয়া খিলখিলিয়ে হাসে।গল্প-কথায় অলস সময় কোথা দিয়ে কেটে যায় তার খবর কেউ রাখে না।

চলবে….
বি.দ্রঃ(ভুল -ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here