বর্ষার এক রাতে,পর্ব-১
(১৮+ সর্তকতা)
সাদিয়া
“নিজের সবটা বিলিয়ে দিতে নিজেকেই যেতে হচ্ছে আমার। আহ কি নির্মম ভাগ্য নিয়ে জন্মেছিলাম। মা সেদিন মরার আগে আমার মুখে একটু লবণ দিয়ে মরতে পারল না? তবে হয়তো এমন দিন দেখতে হতো না আমার। কোন দুঃখে যে বাবা আমার নাম রেখে ছিল তূবা কে জানে। অর্থ সুসংবাদ হলে কি হবে যেদিক দিয়ে যাই সেদিকেই খারাপ সংবাদ নিয়ে আসি। হায় কপাল আমার! কোন না কোন লোকের কাছে যাচ্ছি নিজের সতীত্ব কে তার কাছে শপে দিতে। বিনিময়ে তো টাকা পাবো। আর আমার আবার কিসের সতীত্ব। ধর্ষিতার কি সতীত্ব হয়?”
ভেবেই তূবার বুক ভারি হয়ে উঠে। চোখ উপচে কান্না আসে। গলি দিয়ে একা হেটে চলছে। রাত ১১টা বেজে ১৭ মিনিট। গলির মুখে হয়তো গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করবে। তূবা রাতের অন্ধকার রাস্তায় এগিয়ে যায় অন্ধকার জীবনের অতলে পাড়ি দিতে। সেদিনের মতো আজও দিন গুড়গুড় করে ডাকছে। বৃষ্টি আসবে। আহহ অন্ধকার জীবনে ঢুকার পথ একটার সাথে আরেকটা কতটা যোগসূত্র!
গলির মুখে গিয়ে তূবা কোনো গাড়িই পেল না। দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে দিল তূবা। আজ তো যেতেই হবে।
ব্যাগ থেকে তূবা লিলার দেওয়া ঠিকানাটা দেখে নিল। এখান থেকে তার যেতেও ৪০ মিনিটের মতো লাগবে। তূবা আরেকটু এগুলো যদি যাওয়ার মতো কিছু পেয়ে যায়।
তূবার আসতে একটু দেরি হয়ে গেল। ঘড়িতে ১২ টা ২৩ বাজে। তিন/চার তালা বাড়ির গেইট দারোয়ান খুলে দিল। ভয় ভয়ে তূবা এগিয়ে গেল। ভেতরটা ছারখার হয়ে যাচ্ছে। ছিন্নভিন্ন মন নিয়ে তূবা একটু একটু করে এগিয়েই গেল। বুকের ভেতর মনে হচ্ছে হাজার মণ ভারি বস্তু চেঁপে আছে। পা গুলি চলছে না। ইচ্ছা হচ্ছে এখানে বসে চিৎকার করে কাঁদুক। কেন এমন ভাগ্য হলো তার?
তূবা কলিংবেল চেঁপে দাঁড়িয়ে আছে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল। কেউ এলো না। তূবা দরজা ধাক্কা দিতে গিয়ে দেখল দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকে তূবা চারপাশ দেখল। কেউ নেই। কি করবে তূবা বুঝতে পারছে না। নিজের বাটন ফোন টা নিয়ে লিলা কে কল দিতে যাবে তখন উপর থেকে কেউ একজন এলো।
সিঁড়ি দিয়ে লোকটা নামল। হাতে ড্রিংকের একটা গ্লাস। শরীরে কোনো কাপড় নেই। প্যান্ট অনেক নিচে নেমে আছে। অদ্ভুত রকম লাগছে দেখতে। তূবা মাথা নিচু করে নিল। ভেতর থেকে আড়ষ্ট হয়ে আছে সে।
আহফিন তূবা কে ভালো করে পরখ করল। চোখ গুলি তূবা কে দেখছে। সাধারণ একটা থ্রীপিজে কত অসাধারণ লাগছে। মুখটা মায়াবী। কি ভেবে আহফিন অন্য দিকে তাকিয়ে বাঁকা ঠোঁটে হাসল।
“মেয়ে উপরের বাম দিকের কর্ণারের রুমে যাও। ওয়াশরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে নাও। এমনিতেই অনেক দেরি করেছো। আমার এত সময় নেই। যাও।”
কথা গুলি শুনতে তূবার বিচ্ছিরি লাগলেও সে তাই করল। কারণ সে বুঝে গেছে এই নশ্বর স্বার্থপর দুনিয়াতে টাকার উর্ধ্বে কিছু নেই।
আহফিন কয়েক গ্লাস মদ খেয়ে উপরে গেল। আজ সে উন্মাদ হিংস্র।
আহফিন রুমে বসে আছে মেয়েটার অপেক্ষা করছে। কিন্তু তূবা এখনো বের হয় নি। বাথরুমে গিয়ে আফসোসের শেষ কান্নাটুক করে সে বের হলো। চুল হাত খোঁপা করতে করতে রুমে ঢুকল সে। পাতলা লাল টকটকে শাড়ি। সাদা শরীর তো স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে। তারউপর হাত উঁচু করার মেদহীন পেট একদম উন্মুক্ত। এমন দৃশ্য দেখে আহফিন বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। গোলগোল নেশাভরা চোখ নিয়ে সে তূবার পানে তাকিয়ে রইল। ভেতরের আদীম মানব জেগে উঠেছে। সাথে হিংসাত্বক মানবটাও।
আহফিন তূবার দিকে এগিয়ে গেল। তূবার কাছে গিয়ে কয়েক সেকেন্ড নিয়ে তাকে দেখল। মুখে কিছুই নেই। সাদা শরীরে লাল শাড়ীটা ফুটে উঠেছে। আহফিন তূবার হাত খোঁপা খুলে দিল। ব্যালকুনি থেকে আসা দমকা হাওয়া তূবার লম্বা চুল গুলি কে দুলিয়ে গেল। আহফিনের চোখ মুখ ঢেকে গেল তূবার চুলে। আহফিন সে চুল গুলি মুখ থেকে সরিয়ে আরো কিছুক্ষণ দেখল তূবা কে। মুগ্ধতাকে বিদায় করে সে বাস্তবতাকে নিজের মাঝে স্থান দিল।
তূবার কামোরের পাশে এক হাত নিয়ে টেনে নিজের কাছে আনল। শক্ত করে চেঁপে ধরে আহফিন তূবার চোখের দিকে তাকাল।
লোকটার স্পর্শে তূবা দাঁত কিটমিট করে চোখ বন্ধ করে আনল। নিজের উপরই ঘৃণায় শরীর টা ঘিনঘিন করে উঠছে। এমন না যে এটাই তার শরীরে কারো প্রথম স্পর্শ। নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করল সে। ভেতর থেকে একটা লম্বা শ্বাস ফেলে দিল। আহফিন তখনো ভ্রুকুটি করে তূবার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল।
আহফিন আরেকটু কাছে টেনে আনল তূবা কে। তূবা চোখ খুলল। গাম্ভীর্য মুখের লোকটা বলে উঠল
“এই মুহূর্তে তোমাকে আমার প্রেমিকা ভাববে। সহজ হয়ে তৈরি হয়ে নাও। মনে রেখে হেরফের হলে টাকা পাবে না।”
কিছুই বলল না তূবা। তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে খানিক হাসল।
আহফিন তাকে কোলে তুলে নিয়েছে। বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে তূবার গালের পাশের হাত রাখল। তার ঠোঁটে নিজেকে ডুবিয়ে দিল। চিৎকার করে কাঁদতে চেয়েও তূবা পারছে না। ভেতরটা মরুভূমির মতো হাহাকার করছে।
তূবা নিজের ঠোঁটে লোকটার ধারালো দাঁতের আঁচড় পাচ্ছে। লোকটা তার ঠোঁটে পিঁপড়ের মতো দাঁত ফুটাতে চাইছে। আহফিন তূবার গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। অনবরত ঘাড়ে একটা একটা ঠোঁটের চিহ্ন এঁকে দেয়। আস্তেআস্তে তার স্পর্শ গাঢ় হতে থাকে। আহফিনের কালো মনের কথায় সে তূবার ঘাড়ের পাশে জোড়ে কামোড় বসিয়ে দেয়। ইচ্ছা করছে প্রেমিকা বানানো মেয়েটাকেই ছিন্নভিন্ন করে দিতে। ক্রশম তার ছুঁয়ায় হিংস্রতা ফুটিয়ে তুলছে আহফিন।
তূবার চোখ দিয়ে এবার গড়গড়িয়ে পানি পড়ে গেল। চোখ মুখ খিঁচে রেখেছে মনের যন্ত্রণায়। দেহের যন্ত্রণা তার কাছে কিছুই না। ভোগের বস্তু তো সে আগেও হয়েছে কিন্তু অন্য ভাবে। স্বেচ্ছায় না।
লোকটার হিংস্রতা তূবা আর সহ্য করতে পারছে না। কেন মনে হচ্ছে লোকটা তার প্রতি রাগ ঝাড়ছে। তাদের এই প্রথমই দেখা এটা সম্ভব কি করে? তাছাড়া রাগ হবেই বা কিসের?
আহফিন নিজের ইচ্ছা পূরণ করে তূবার পাশে শুয়ে পরল। বলিষ্ঠ শরীর দিয়ে তার ঘাম ঝরছে। লম্বা লম্বা কয়েকটা নিশ্বাস ফেলে দিয়ে সিগারেট জ্বালালো। নিকোটিনের ধোঁয়া উর্ধ্বে উড়িয়ে দিতে লাগল।
তূবা চোখের কুর্নিশে আসা পানিটা মুছে চাদর টেনে ধরল। হঠাৎ লোকটা বলে উঠল।
“ভার্জিন হয়েও এই পথে যে?”
লোকটার কথায় তূবা চমকে তাকাল। কপালের চমড়া এক হয়ে আসছে। লোকটার বলা কথাটা বারবার কানে লাগছে। মাথাটা এখন ঘুরছে শুধু।
আহফিন সিগারেট টা ফেলে দিয়ে তূবার দিকে তাকাল।
“চমকালে মনে হচ্ছে। জানতে না বুঝি?”
“…
তূবা কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। আর আহফিন বিছানা ছেড়ে উঠে বলল “আমার সাথে শাওয়ার নিবে তুমি। চলো।”
তূবা নিজের চাদর টা কে একদম মিশিয়ে নিল শরীরে। আহফিন তা দেখে মুখ ঘুরিয়ে হাসল।
“এতক্ষণ আমি তোমার দেহের মাঝেই ডুবে ছিলাম। আর তুমি এখন..”
তারপর চাদর সহমেত তূবা কে কোলে করে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল। বাথটাবে তূবা কে রেখে নিজেও বসে পরল। শাওয়ার ছেড়ে দিয়েছে। আহফিন তূবা কে কাছে টেনে আনল। বুকের উপর টেনে চোখ বন্ধ করে ফেলল।
অনেকক্ষণ নীরবতা চলল। হঠাৎ আহফিন তূবা কে ধাক্কা মেরে সরাল। এতে তূবা পিঠে খানিক ব্যথা পেয়ে মুখ কুঁচকে আনে। আহফিন বাথটাব থেকে উঠে বলল
“চেঞ্জ করে তাড়াতাড়ি এসো।”
আহফিন একটারপর পর একটা সিগারেট জ্বালাচ্ছে। ভেতরটা অস্থিরতায় পুড়ে যাচ্ছে। আগের কিছু ঘটনা মনে হতেই সে জোরে চিৎকার করে দেওয়ালে ঘুষি মারল। আগের অস্থিরতা চেয়ে এখন সে আরে অস্থিরতার আগুনে পুড়ছে। ভেতরে জ্বালাপুড়া শুরু হয়েছে তার।
তূবা ওয়াশরুমে থেকে নিজের আনা কাপড় পরে বের হলো। তূবা কে আসতে দেখে আহফিন হাতের সিগারেট ফেলে দিয়ে তাকে টেনে বিছানায় নিয়ে গেল। তূবা কিছুই বলল না। নিজে শুয়ে আহফিন তাকে টেনে শুয়িয়ে দিল। তূবা কে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করল সে। খুব ঘুম পাচ্ছে তার।
তূবা খাম্বার মতে শুয়ে আছে মুখ ফিরিয়ে। লোকটাকে তার একদম সুস্থ মনে হলো না। খুব অদ্ভুত।
ভোরের পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে তূবার ঘুম ভেঙ্গে গেল। সবেমাত্রই চোখটা লেগে গিয়েছিল তার। পাশ ফিরে দেখতে পেল তার গলায় মুখ দিয়ে লোকটা ঘুমিয়ে গেছে। হাল্কা আলোয় তূবা লোকটার মুখ দেখল। মুখের মাঝে যেন ইন্দ্রজাল লুকায়িত। তূবা বিছানার পাশের টেবিলে চোখ দিল। একটা খাম দেখতে পেল। ঘুমের ঘোরে লোকটা বলেছিল এটা তারই প্রাপ্য। তূবা খামের দিকে তাকিয়ে অন্যরকম ভাবে হাসল।
আহফিনের ঘুমটা হঠাৎ করেই ভেঙ্গে গেল। বিছানায় তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখতে পেল না। সারা ঘরে চোখ বুলিয়েও পেল না। মেয়েটার আনা ব্যাগ আর টেবিলের উপর রাখা খাম কিছুই নেই। চলে গিয়েছে সে। আহফিন দ্রুত নিজের ফোন বের করল। লিলার নাম্বারটা ডায়ল করল অস্থির হয়ে।
চলবে♥
(সতর্কতা আগেই দিয়ে রেখেছি তবুও যদি একদল লোক এসে অযথা তর্কে জড়াতে চায় তবে কিছু বলার নেই। আমার যেটা দরকার ছিল আমি করেছি😊)