রোমান্টিক বুড়ো 😜বর,২য় পর্ব,পর্ব-৩
Mitu Jahan Mituuu
২য় পর্ব
সকালে ঘুম ভাঙ্গালো ছোট বিচ্ছু ননদ এর কারনে ।
বিছানার থেকে উঠে দেখি আমার বুড়ো বড় সোফায় ঘুঁটি সুটি হয়ে ঘুমাচ্ছে,
রাতে ভালো করে দেখতে ও পাইনি তাই এখন দেখছি ।
বয়স ৩৯হলে উনার মুখ দেখে সবাই বলবে ৩০/৩৫ বছর এর স্মার্ট পুরুষ।
উচা লম্বা আর অনেক কিউট লাগছে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা আমার বুড়ো বরটাকে,
,
হঠাৎ আমার ধ্যান ভাঙলো আমার ছোট ননদের ডাকে তাই তাড়াতাড়ি উনাকে উঠিয়ে দিলাম,
,
নিসু:ভাবি কই ,ঘুম থেকো উঠো যলদি
,
পারভেজ:নিসু আমরা আসছি তুই নিচে যা ( আমার স্বামী)
,
নিসু:ওকে ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে যলদি নিচে আয়তো , আমরা অপেক্ষা করছি
,
পারভেজ:হুম আসছি ।তা ঘুম কেমন হলো
,
আমি:জি মোটামুটি ভালো
,
পারভেজ: ওকে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো আর হে আমাদের বিষয়টা যাতে না জানে ওকে
,
আমি: হুম
,
(এই বলে আমার বুড়ো বরটা ওয়াশ রুমে চলে গেলো,
ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে এসে
,
পারভেজ:যাও ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো ওকে
,
আমি: আচ্ছা, আপনি যান।
( এই বলো উনি চলে গেলেন ,
আর আমিও ওয়াশ রুমে গিয়ে সাওয়ার টা করে নিচে গিয়ে দেখি আমার দুই নদদ আর তাদের জামাই সাথে আমার বুড়ো বরটা খাবার টেবিলে আমার জন্য অপেক্ষা করছে,
একটু সরম😐😶 পেয়ে গেলাম দেত একটু যলদি আসলে পারতাম
,
,
,
মিসু:গুড মর্নিং ভাবি☺️
,
আমি:গুড মর্নিং☺️
,
নিসু: কেমন ঘুম হলো ভাবি😜😝(মুখ চেপে হেসে)
,
মিসু: এই চুপ করবি তুই সব সময় ফাজলামো,
এতো বড় হলো তবুও দুষ্টুমি একটু ও গেলো না।
,
(আমরা এতো কথা বলছি ,
কিন্তু আমার বুড়ো বরটা কখন থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে খাবার খেয়েই যাচ্ছে তো খেয়েয় যাচ্ছে মনে হয় কত বছর যেনো কিছু খায়নি তাই শুধু গিলছেই😤)
,
নিসুর স্বামী: দুষ্টুমি যাবে কি করে আমার জীবন তেজপাতা😓😓 না করা পর্যন্ত ওর শান্তি নেই
,
নিসু:কি বললা😠😠 তুমি আমি তোমার জীবন তেজপাতা করে দিচ্ছি ,
এতবড় কথা তাও আবার নতুন ভাবির সামনে,
দাঁড়াও বাসায় যেয়ে নি 😤😤দেখাবো তোমার মজা আমি।
,
পারভেজ:নিসু কি হচ্ছে কি😒😒 এসব ,খাবার টেবিলে এতো কথা আমি পছন্দ করি না
,
মিসু:সরি ভাইয়া,এই নিসু থামবি 👿
,
(ওদের কথা শুনে আমার এতো হাসি 🤣🤣পাচ্ছে তা বলার মতো না বেচারা নিসুর হাজব্যান্ড এর মুখ টা দেখার মতো হয়েছে।😁
বউ এর ভয়ে😕😖😵 মুখটাকে বাংলার পাঁচ করে রেখেছে ।
আর নিসু গজগজ 👿করে খাচ্ছে আর বরের দিকে খিটখিট করে তাকাচ্ছে।
আর এসব দেখেই হাসিতে আমার পেট ফেটে যাচ্ছে,🤣🤣🤣
বাসায় গেলে কি হাল হবে এই চিন্তায় বেচারা এখনি খেতে পারছে না
অন্য দিকে আমার ননদ মিসু তার হাজবেন্ড এর সাথে রোমান্টিকতা করছে।
,
অনেক কষ্টে হাসি চেপে, সকালে নাস্তা শেষ হলে আমার বুড়ো বরটা আর ননদাইরা বাইরে চলে যায়।
,
,
দুপুরে ছোট আয়োজনে আমার বউভাত শেষ হলো ।
তেমন কেউই আসলো না শুধু পারভেজ (আমার বুড়ো স্বামী)এর কয়েক জন বন্ধু ছাড়া।
আর আমার বাবা-মা আসেনি কারণ আজি আমরা যাবে আমাদের বাড়িতে,
কিন্তু আমার কোনো ইচ্ছা নেই বাবার বাড়িতে যাবার।
আজ বাবার কারণেই আমার এতো কিছু সহ্য করতে হচ্ছে তাই।
তবুও নিয়ম নাকি বিয়ের পরে বরকে নিয়ে নিজের বাড়িতে যেতে হয়।
আর আমাকে বিদায় করে পরে আমার দুই ননদি যাবে তাদের শশুর বাড়ি।
,
,
তাই বিকেলে বের হয়ে গেলাম ওদের থেকে বিদায় নিয়ে।
,
,
গাড়িতে আমি একটা কথাও বলিনি ,
এবং আমার বুড়ো বরটাও ,
উনাকে দেখলে মনে হবে কথা না বলার ভৌত পালন করছে।
,
আড়চোখে যতোবার দেখছি রাগে আমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে,
যেখানে আমার মতো কিউট আর অল্প বয়সী মেয়ে বসে আছে সেইদিকে উনার কোনোই লক্ষ নেই ,
এমনি এমনি তো বুড়ো বর বলি না।
,
,
,
হঠাৎ গাড়ির হর্ন এ আমার হুশ ফিরল,
,
আমি:কি হয়েছে কি এতো হর্ন বাজাচ্ছেন কেনো😠😡
,
পারভেজ: কখন থেকে চেয়ে আছো আমার দিকে জীবনে ও পুরুষ মানুষ দেখোনি নাকি,
আমি দেখতে স্মার্ট এটা আমি জানি,
,
আমি:(উনার কথায় আমি একটু লজ্জা পেলাম দেত কেনো যে চেয়ে থাকতে গেলাম ,
তবুও বলে উঠলাম —
কি আপনি স্মার্ট 🤣🤣🤣🤣 বুড়ো একটা ,
আর আমি আপনার দিকে চেয়ে থাকিনি বাইরে চেয়ে ছিলাম বুঝলেন।
,
পারভেজ: এখানে হাসার কি হলো ,
আর আমি বুড়ো মানে ,
বয়স না হয় একটু বেশি তোমার থেকে,
তাই বলে বুড়ো না।
আর তুমি যদি আমার দিকে চেয়ে নাই থাকো তাহলে কখন থেকে তোমার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি তার হুঁশ কেনো নেই😎
,
আমি:ইস আল্লাহ আমি তো সত্যিই খেয়ালি করি নি,
কখন আমাদের বাসার সামনে আসলাম ছিঃ ছিঃ ছিঃ কি লজ্জার একটা কাজ করলাম,
আর এই বুড়ো বরটাও না যেখানে সেখানে লজ্জা দিচ্ছে।
তবুও কথায় হারলে তো আমার হবে না তাই বলে উঠলাম,
আপনি মোটেও একটু বয়সে বড়ো না আমার দ্বিগুন বড়ো ,বুড়ো বর কোথাকার
(এই বলে হাসতে হাসতে গাড়ি থেকে নেমে বাসাই চলে গেলাম,
একবার ও পিছন দিকে তাকায়নি,
নিশ্চয় রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে না হয় আবাল বনে গেছেন হা হা হা হা হা)
,
চলবে
,
#রোমান্টিক বুড়ো 😜 বর
#৩য় পর্ব
#Mitu jahan Mitu
,
,
ঘরে ঢুকেই দেখলাম আব্বু সোফায় বসে পত্রিকা পড়ছে , আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে–
,
আব্বু:কিরে তুলিমনি জামাই কয়,?
,
(আব্বুর প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা রান্না ঘরে চলে গেলাম ,
জানি আম্মু এখন রান্না ঘরেই থাকবে,
আর এটাও জানি এখন আব্বু খুব কষ্ট পেয়েছে আমার আচরনে,
পেলে পাক কষ্ট ,
আমাকে কষ্ট দেওয়ার সময় কি আব্বু একবারও চিন্তা করেছে যে আমি কতো কষ্ট পাবো)
,
আমি: আম্মু-ও-ও , আম্মু-ও-ও
,
আম্মু: আরে আমার তুলি মনি এসে গেছে , কেমন আছিস লক্ষি মা আমার।
,
আমি: যেমন তোমরা রেখেছো , তেমনি আছি
,
আম্মু:এখনোও আমাদের উপর রাগ করে আছিস মা,তা জামাই কোথায়
,
আমি: বাহ আসতে না আসতেই জামাইর খবর নেওয়া হচ্ছে খুব ,
তুমিও আমাকে ভালবাস না আব্বুর মতো 😢😢
,
আম্মু:কি সব বলে আমার পাগলি মেয়েটা,
তুই আমাদের একমাত্র মেয়ে আমাদের চোখের মনি।
আর দেখ মা জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে এগুলো খোদার হাতে,
মানুষের কোনো সাধ্য নেই তা পরিবর্তন করার।
আর মেয়ে মানুষ এর বিয়ে বার বার নয় একবারি হয় ,
তাই পারভেজ এর সাথে তুই যতো নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবি ততোই তোর মঙ্গল ।
আর ছেলেটাও এতিম আমরা না ভালোবাসলে কে ভালোবাসবে শুনি?
,
আমি: হয়েছে হয়েছে যাও ভালোবাসো গিয়ে তোমাদের বুড়ো জামাই কে
,
আম্মু: ছিঃ এসব বলতে নেই পাগলি মেয়ে,
তা এই টেএ টা একটু নিয়ে বসার ঘরে যা তো ,
জামাই কখন থেকে বসে আছে ।
,
আমি; আমি পারবো না, তোমাদের জামাই তোমরাই আপপায়ন করো গিয়ে।
,
আম্মু:লক্ষি মা নিয়ে আয় ,আমি সাথে কয়টা নিয়ে যাব বল
,
আমি:আসছি আসছি😡
,
আম্মু: পাগলি একটা😊
,
(বসার রুমে গিয়ে মাথাটা আবার গরম হয়ে গেলো ,
কি মজা করে গল্প করছে বুড়োটা😠 আব্বুর সাথে। আম্মু কে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিলো)
পারভেজ: আসসালামুয়ালাইকুম আম্মি, কেমন আছেন?
,
আম্মু: ওয়ালাইকুম আসসালাম,আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি বাবা , তুমি কেমন আছো।
,
পারভেজ: আছি আপনাদের দোয়ায় ভালো,
,
আম্মু;কিরে তুলি মা টেএ টা রাখ জামাইর সামনে,আর জামাই খাও তো তুমি।
,
আমি;(রাগে 😠আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে,
আমার চেয়ে এই বুড়োর প্রতি বাবা মায়ের ভালোবাসা,💕 বেশি তাই ট্রে টা রেখে চলে আসতেই মায়ের প্রশ্ন–
,
আম্মু:কিরে কোথায় যাচ্ছিস তুলিমনি ,
,
আমি:আমার ক্লান্ত লাগছে তাই ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নেবে,
,
আব্বু আম্মু: জামাই কে নিয়ে একবারে যাস
,
আমি: পারবো না আমি , তোমাদের জামাইকে তোমরাই নিয়ে যেও(এই বলে চলে আসলাম আমার ঘরে)
,
,
,
আব্বু:বাবা পারভেজ, আমার মেয়ের আচরনে তুমি কষ্ট পেও না বাবা ।
ও একদমি আমার মতো বাইরে রাগি হলেও ভিতরে অনেক ভালো।
,
পারভেজ:না আব্বু রাগ করবো কেনো ও এখনোও বাচ্চা মেয়ে।
,
আম্মু:তা বাবা যাও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নাও
,
পারভেজ: আচ্ছা আম্মু।
,
,
এইদিকে আমি রুমে এসে মুখ ঘোমরা করে বসে আছি,
আর আমার বুড়ো বরটা মাএ আমার ঘরে এসে ঢুকেছে,
,,
,
,
পারভেজ:মন খারাপ নাকি শরীর খারাপ,🤔
,
আমি:যাই খারাপ হোক তাতে আপনার কি হে😒
,
পারভেজ: আমার কি মানে, আমার সামনে একটা ছোট বেবির মন খারাপ করে বসে আছে ,
আর আমি চুপ করে তা দেখবো তা কি হয়।
,
আমি: ওই আপনি কাকে বেবি বললেন ,
আমার বয়স কতো জানেন ১৯ বছর আর আমি অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি।বুঝলেন😏
,
পারভেজ:তাই নাকি, আমি তো মনে করেছি তুমি ক্লাস সিক্সে😉 পড়ো ,হা হা হা হা
,
আমি:এই একদম হাসবেন না কিন্তু বুড়ো বর একটা।
আর আমাকে কোন এংগেল দিয়ে সিক্সে পড়া মেয়ে মনে হয়।
,
পারভেজ: তাহলে আমাকে তোমার কোন এংগেল দিয়ে বুড়ো মনে হয়।
,
আমি: আপনার বয়সের দিক দিয়ে , আপনি বুড়ো🤣🤣
,
পারভেজ:তাহলে তোমার আচরনের দিক দিয়ে ক্লাস সিক্সের পড়ুয়া মেয়ে মনে হয় ,
আর তোমার ধারনা আছে আমার অফিসের মেয়েরা আমার জন্য পাগল😏😏
,
আমি: হা হা হা হা হা🗣️🗣️ , আপনার মতো বুড়োর জন্য পাগল,
তাহলে শুনে রাখুন আমার ভার্সিটিতে সব ছেলেরা আমার জন্য পাগল (চুলে একটা ঝাপটা দিয়ে বললাম)
,
পারভেজ : হাস্যকর কথা হলেও বিশ্বাস করলাম (মুখ চেপে হেসে☺️)
,
আমি: হাস্যকর মানে,আর আপনি–(কিছু বলার আগেই বুড়ো বর টা ওয়াশ রুমে চলে গেলো,
রাগে😠 ইচ্ছা করছে উনার সব জামা কেটে ফেলি কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই
,
আমার বুড়ো বরটা ব্যাগে লক করে রেখেছে।
তাই ঘাপটি মেরে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই।
,
চলবে