ঘৃণার মেরিন
part : 17
season : 2
writer : Mohona
.
মেরিন তো নীড়কে দেখেই যাচ্ছে।
নীড় : জন।
জন: জী স্যার।
নীড়: cold drinks হবে?
জন: জী স্যার।
নীড় : দাও।
জন দিলো।
নীড় খেতে খেতে মেরিনক্ বলল: আমায় দেখা হয়ে গেলে বলে দিও। বাড়ি ফিরতে হবে।
.
কথাটা শুনে জন একটু শব্দ করে হেসে উঠলো। মেরিন প্রথমবার confused ….
ও জানতো যে নীড় রাগী। কিন্তু dangerous সেটা জানতোনা। মেরিন ধামধুম করে গিয়ে ১টা হুইসকির বোতল হাতে নিলো। কেবল ওটার মাথা খুলবে তখনই নীড় পেছন থেকে এসে ওটা নিয়ে নিলো। জায়গা মতো রাখলো। এরপর মেরিনের কানে ফিসফিস করে
বলল: এর থেকেও আমার ভালোবাসার নেশা বেশি।
বলেই চোখ মারলো। এরপর মেরিনকে কোলে করে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি start দিলো। কিছুক্ষন পর মেরিন খেয়াল করলো যে এটা অন্যরাস্তা।
নীড়: অবাক হওয়ার কিছু নেই । long drive এ যাচ্ছি ।
মেরিন: কিন্তু কেন? কয়টা বাজে দেখেছেন? আপনার শরীর খারাপ করবেনা। বাসায় চলুন।
নীড় fulll sound এ গান ছেরে
বলল: কিছু বললে?
মেরিন: 😒।
মেরিন বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলো।
নীড় ১হাত দিয়ে মেরিনের হাত ধরলো। মেরিন অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো।
নীড় : এটা আমার বউর হাত।
মেরিন: আপনার কি মনে হয়না যে আপনি বারাবারি করছেন? যাকে বলে নেকামো…
drive এ concentrate করুন।
নীড়: না করলে কি হবে? accident ….? who cares?
মেরিন: i care… আমি মরে গেলেও আপনার কিছু না হলেও আপনি চুল পরিমান আঘাত পেলে আমার অনেক কিছু…
মেরিনের কথা শুনে নীড়ের রাগ উঠলো। ১দিকে ব্রেক মারলো অন্যদিকে ১টানে মেরিনকে কাছে এনে ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো। শেষে জোরে সোরে ১টা কামড় দিয়ে ছেরে দিলো।
নীড় : বেশি কথা বলবা আর কামড় খাবা।
বলেই আবার গাড়ি start দিলো।
.
একটুপর….
আবার ব্রেক মারলো । এরপর নামলো।
মেরিন: একি নামছেন কেন?
নীড় চুপচাপ ১টা দোকানের ভেতর ঢুকে কিছু নিয়ে আবার গাড়ি start দিলো।
.
৩০মিনিটপর….
নীড় আবার ব্রেক মারলো। নামলো। মেরিনকে কোলে করে মেরিনকেও নামিয়ে গাড়ির ওপরে বসালো। এরপর সেই ব্যাগটা নিয়ে এসে মেরিনের পাশে বসলো। এরপর ওটা untie করার পর মেরিন দেখলও যে এটা ১টা বড়সরো ice bag…
মেরিন: কি হয়েছে আপনার ? আপনি ঠিক আছেন তো?
নীড় কিছু না বলে ২টা কুলফি বের করলো।
নীড়: নাও ধরো। খাও।
মেরিন: what? এতো রাতে ice cream ? আপনার যে ঠান্ডা লেগে যাবে? জ্বর চলে আসবে যে।
নীড়: আসবেনা। আর এটাকে কুলফি বলে। আমার অভ্যাস আছে। আর আসলেও ২জনেরই আসবে।
মেরিন : আমার আসলে আসুক…. আপ.
নীড় মেরিনের মুখে কুলফি ঢুকিয়ে দিলো।
নীড় : কোনো কথানা। খাও।
মেরিন: আপনি always এই ice cream খান? এই down market? অসুস্থ হয়ে যাবেন তো…
নীড় কিছু না বলে গাড়ির ওপর শুয়ে পরলো। এরপর ১টানে মেরিনকে বুকে জরিয়ে নিলো।
নীড়:কোনো কথা না। চুপচাপ কুলফি খাও আর তারা দেখো।
মেরিন: ….
নীড় : আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিলো এভাবে কিছু মুহুর্ত পার করার । নীরাকে নিয়ে আসতে ভয় করতো। ওর সাথে একটু close হয়ে বসা মানেই ওর উটকো romance এর প্যারা উঠতো । মামনির করা নির্দেশ ছিলো যেন বিয়ের আগে লিমিটে থাকি। যদি এ সময়ে ওর সাথে time spend করতে আসতাম তাহলে হয়তো ও situationটা negative বানিয়ে দিতো।
মেরিন : অবাক হলোম… আপনার কাছেও তাহলে নীরা কখনো negative হয়? strange ….😱…
মেরিনের কথা শুনে নীড় মুচকি হাসি দিলো। মেরিন বুঝতে পারলো নীড় ওর কথায় একটু কষ্ট পেয়েছে…
মেরিন: নীড়…
নীড় : বলো…
মেরিন: কিছুনা।
বলেই নীড়কে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
নীড়: কি হলো?
মেরিন: ঘুম পাচ্ছে।
নীড়: তাহলে চলো বাসায়….
মেরিন: উহু… এখানেই এভাবে ঘুমাবো।
.
পরদিন…
নীড় মেরিনকে খাইয়ে
দিচ্ছে।
নীলিমা মনে মনে: যাক আমার ছেলেটার তবে আক্কেল হয়েছে।
নিহাল; ওই মহিলা আমার মামনি-বাবার দিকে নজর দিচ্ছো কেন?
নীলিমা: huh… তুমি জীবনে আমাকে খাইয়ে দিয়েছো?
নিহাল : তুমি কখনো আমাকে এতো ভালোবেসেছো?
নীলিমা: না। এতোদিন তো পর পুরুষের সাথে সংসার করলাম।
নিহাল: তাই ই মনে হয়…🙃😜😏
নীড়-মেরিন হেসে দিলো ।
দাদুভাই: আমরাও কি একটু join করতে পারি….
সবাই ঘুরে দেখলো দাদুভাই আর কবির দারিয়ে আছে। মেরিন দাদুভাই বলে দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন: দাদুভাই তুমি কেমন আছো?
দাদুভাই: ভালো। আমার দিদিভাইটা কেমন আছে?
মেরিন: ভালো। ☺️।
কবির:ভালো আছো মামনি?
মেরিন: excuse me… কে আপনার মামনি? আপনার মামনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লরছে। no worry মরবে না। i guarantee ….
কবির: ….
নীড়: বাবা ভালো আছো?
কবির: হামম ।
মেরিন: দাদুভাই চলো ওপরে চলো।
নীলিমা: কেনরে?বোস এখানে…
মেরিন: না গো মামনি… পবিত্র যমযম পানির ধারে কাছে কি আর নর্দমার পানি থাকতে পারে? চলো দাদুভাই…
মেরিন দাদুভাইকে নিয়ে ওপরে গেলো।
.
নিজের রুমে নিয়ে দাদুভাইকে বসিয়ে তার কোলে মাথা রাখলো । আর দাদুভাই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
দাদুভাই: দিদিভাই….
মেরিন: হামম।
দাদুভাই: অনেক তো হলো বদলা বদলা খেলা…
মেরিন: তুমিও কি এখন বারন করবে?
দাদুভাই: না দিদিভাই। আমি তো বলছিলাম এই এদের জগত থেকে অনেক দূরে চলে যাই। যেখানে কেবল তুমি আর আমি থাকবো । আর বাকী সবাই হবে অচেনা।
মেরিন: যাবো দাদুভাই…. ১বার আম্মুকে আর দীদাকে খুজে পাই… এরপর যাবো । নীড়কে আরেকটু ভালোবেসে নেই। এরপর তুমি আমি দীদা আম্মু …. আমরা ৪জন অননননেক দূরে চলে যাবো। যাওয়ার আগে যে আমার মায়ের গায়ের দাগ মুছতে হবে। সেটাই তো প্রধান কাজ।
আরো ১টা আবদার আছে আমার, আমারই ভাগ্যের কাছে। যাওয়ার আগে নীড়ের নিশান নিয়ে যাওয়ার। যা নিয়ে আমি আমার বাকী জীবন পার করতে পারবো।।
দাদুভাই: ততোদিনে দেরি না হয়ে যায়।
.
নীড় ওদের সব কথা শুনে নিলো। আসলে ও ওদেরকে ডাকতে এসেছিলো। এসে এগুলো শুনে ফেলল।
নীড় মনে মনে: কোথাও যেতে দিবোনা তোমাকে…. আমার ভালোবাসার বাধনে বেধে রাখবো তোমায় আজীবন। আমি নিজেকে নিজে কথা দিলাম.. যতোদিন বেচে আছি ততোদিন তোমাকে নিজের থেকে দূরে করবো না । আর না তোমাকে দূরে যেতে দিবো কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি। তোমার মাকে তো পাতাল থেকে হলেও আমি খুজে আনবো। তবে তার আগে আমার তোমার সত্য জানা জরূরী….
.
কিছুদিনপর…
নীড় : hello দাদুভাই…
দাদুভাই: বলো ।
নীড় : ভালো আছো?
দাদুভাই: হামম।
নীড়: তুমি কি এখনো আমার ওপর রেগে আছো?
দাদুভাই: রাগ না করার মতো মহান কোনো কাজ তো করোনি। করেছো?
নীড়: sorry দাদুভাই….. তবে এরপর থেকে চেষ্টা করবে যেন আমার জন্য তুমি আর hurt না হও…..
দাদুভাই: দেখা যাবে।
নীড় : দাদুভাই… আমি কি তোমার সাথে একটু দেখা করতে পারি?
দাদুভাই: কেন?
নীড়: please দাদুভাই….
দাদুভাই: হামম। কবে?
নীড় : কাল….?
দাদুভাই: হামম। কোথায়?
নীড় : আমি কালকে তোমাকে পিক করে নিবো।
দাদুভাই: হামম।
.
পরদিন…
নীড় দাদুভাইকে নিয়ে ১টা নিরিবিলি জায়গায় গেলো। যেখানে কেউ নেই।
দাদুভাই : এখানে আমাকে নিয়ে এলে যে… আমাকে আটকে রেখে মেরিনের কাছে divorce নেবে?
নীড়: ….
দাদুভাই: কি হলো? বলো…
নীড়: না।
দাদুভাই: তাহলে?
নীড়: জানতে চাই….
দাদুভাই : কি?
নীড়: মেরিনের অতীত….
দাদুভাই: কেন?
নীড় : বলোনা….
দাদুভাই : যেদিন জানার যোগ্যতা অর্জন করবে সেদিন বলবো।
নীড় : দাদুভাই please ….
দাদুভাই: বললাম তো.. যেদিন যোগ্যতা অর্জন করবে সেদিন বলবো ।
নীড় : যদি বলি আমি মেরিনকে ভালোবাসি তবুও বলবেনা…
দাদুভাই: ভালোবাসো? তুমি না নীরাকে ভালোবাসতে…. নীরা ধোকা দিয়েছে বলে মন মেরিনে এলো। যদি আবার নীরা ফিরে আসে ক্ষমা চায় তবে তো আবার মেরিনকে ফেলে নীরার কাছে চলে যাবে….
নীড় : যদি বলি সারাজীবন মেরিনকেই ভালোবাসবো….
দাদভাই : impossible ….
নীড় : তোমাকে যদি বলি সেদিন নীরার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করতে গিয়েছিলাম মানবে?
দাদুভাই : না…
নীড়: ভালো। যাই হোক । শেষবারের মতো ভালোভাবে জিজ্ঞেস করছি… মেরিনের অতীত বলবে কি বলবে না?
দাদুভাই: না….
নীড় : মেরিন ঠিকই বলে। ভালো ভাবে বলা কথা কারো মাথাতেই ঢোকেনা।
বলেই নীড় গান বের করে দাদুভাইয়ের মাথায় ঠেকালো। এরপর ১টা বাকা হাসি দিলো ।
.
দাদুভাই : তুমি যেটা করছো ভেবে করছো? মেরিন তোমাকে যতোটা ভালোইবাসুক না কেন তোমার এই কাজ কখনোই মেনে নেবেনা। তোমার কপালে কি আছে সেটা তুমি জানোনা…
নীড়: আমার কথা তোমার ভাবতে হবেনা। তুমি নিজের কথা ভাবো। যে তুমি মেরিনকে কি জবাব দিবে।
দাদুভাই: মানে?
নীড় : মানে…..
বলেই নীড় গানটা নিজের মাথায় ঠেকালো।
নীড় : কি ভেবেছিলে? তোমাকে shoot করবো? না…
নিজেকে করবো। মেরিন নিঃসন্দেহে তোমাকেই বেশি ভালোবাসে। কিন্তু ঘটনার জন্য তো জবাব তোমায় দিতেই হবে । good bye..
নীড় just trigger press করবে তখনই দাদুভাই
বলল: থামো… তোমার কিছু হলে মেরিন মরে যাবে। বলছি আমি….
নীড় : সত্যি?
দাদুভাই: হামম।
নীড় বাকা হাসি দিলো। আর দাদুভাইকে জরিয়ে ধরলো।
দাদুভাই : বসো….
নীড় বসলো।
.
দাদুভাই: আজকের মেরিন আর ১২ – ১৩
বছর আগের মেরিনের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য… সেই মেরিন যতোটা হাসতে পারতো ততোটা হয়তো আর কেউ পারতো না…. সেই সাথে ভীতুও ছিলো প্রচুর। সকলের আদরের সকলের ভালোবাসার মেরিন ছিলো। মা-বাবার ১টা ছোট্ট পরী ছিলো। বাবার princess মায়ের দুষ্টু পরী ছিলো।কবির তো মেয়ের মুখ দেখে সকালে চোখ মেলতো। আর কবির-কনিকার ভালোবাসা তো ছিলো উদাহরন দেয়ার মতো। কবিরের মা কনিকাকে ভীষন আদর করতো। আমিও। সেতু আর কনা মায়ের মধ্যে কখনো কোনো ভেদাভেদ করিনি। আর কনা? ও তো ছিলো মাটির মেয়ে। আল্লাহ হয়তো ওকে নিজের হাতে বানিয়ে ছিলো। মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর। আর আচার-ব্যাবহার… ওর মতো অমায়িক খুব কম মানুষই হয়ে থাকে। এমন কোনো ভালো গুন অবশিষ্ট নেই যা কনার মধ্যে ছিলোনা। আর অন্যদিকে সেতু। এমন কোনো খারাপ গুন নেই যা ওর মধ্যে ছিলো না। infact এখনো আছে। অথচ কনা-সেতু ২জনকে কিন্তু একই শিক্ষা দিয়েছি। কনা সেতুর থেকে ৫-৭ বছরের ছোট ছিলো। সেতু ছিলো চালাক আর কনা ছিলো বুদ্ধিমতী।
.
সেতু কনাকে বরাবরই হিংসা করতো। যেটা আমাদের অজানা ছিলো। ও লুকিয়ে কনাকে অনেক torture করতো। কিন্তু কনা আমাদের কাউকে কিছু না বলে সব মুখ বুঝে মেনে নিতো। ১দিন কবির দেখে ফেলে। কবির অন্যায় সহ্য করতে পারতোনা। তাই আদরের ছোটবোনকে শ্বাসন করে। এতে সেতুর রাগ আরো বেরে যায়। তবুও নিজের রাগটাকে চেপে রাখে। মেরিন হওয়ার আগে নীরা বাড়ির একমাত্র মেয়ে বাবু ছিলো। আমাদের খান বাড়িতে মেয়েদেরকে বেশি আদর করা হয়। নিলয়ও আদর পেয়েছে। কিন্তু নীরা বেশি। মেরিন হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা ভালোবাসা ওর ঝুলিতে যেতো । এমনটা নয়যে নীরাকে কম আদর করা হতো । কিন্তু ওদের এটা মনে হতো যে নীরাকে কম আর মেরিনকে বেশি ভালোবাসা হয়। ১দিন কিছু official কাজে আমি দেশের বাইরে যাই। ১টা বড় সরো project এর জন্য। আর এসে দেখি আমার সাজানো সংসার তছনছ।
.
শুনেছি কনা নাকি কোথাও লুকিয়ে যেতো। কবির জিজ্ঞেস করলে বলতো সময় এলে বলবো। একটুকু বিশ্বাস রাখো। কবির কনাকে অনেক ভালোবাসতো। তাই কিছু মনে করেনি। কিন্তু হঠাৎ ই ১দিন কনার সাথে রনক নামের ১জনের সাথে কিছু আপত্তিকর ছবি ভাইরাল হয়।
রনক এটাও দাবি করে যে মেরিন ওর সন্তান। রনক আরো বলেছে যে কনার সাথে আরো অনেকের অবৈধ সম্পর্ক আছে। এসব কথার সত্যমিথ্যা যাচাই কবির করেনি। যা নয় তাই বলে কনিকাকে । কনিকা বারবার কেবল এটাই বলেছিলো আমি নির্দোষ। বিশ্বাস করো আমি নির্দোষ। কিন্তু কবির এমন সব কথা বলে যে কনা বাধ্য হয় বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। যখন এসব ঘটছিলো তখন কবিরের মা নাসিম ( নাসিমা) নাকি বাসায় ছিলোনা। মাজারে গিয়েছিলো।
.
আমি বাড়ি ফিরে কনাকে পাইনি। দেখি নাসিম কবিরকে অনেক বকছে। নাসিম বলছিলো যে
: আমি জানি কনামা কেমন … ওর সত্যতার প্রমান আমি দিবো। ও আমার শিক্ষায় শিক্ষিত। ওর ওপর আমি নিজের থেকে বেশি বিশ্বাস করি। ওর সত্যতার প্রমান আর ওকে না নিয়ে আমি নাসিমা খান এই খান বাড়িতে ফিরবোনা।
এই বলে সকল বাধা উপেক্ষা করে নাসিম বেরিয়ে যায়। আর ফেরেনি….. আর মেরিনের ওপর শুরু হয় সেতু-নিলয়-নীরা আর নীরার বাবার অমানবিক অত্যাচার। সেই সাথে কবিরের অবহেলা। বাবা বলে কবিরের কাছে যেতো। কবির মেরে ধরে সরিয়ে দিতো তবুও বাবা বলতে পাগল মেরিন বারবার কবিরের কাছে যেতো। কতো বলতাম যেওনা যেওনা তবুও যেতো।
.
দেখতে দেখতে মেরিন ১৩ বছরের হয়ে গেলো। নিলয় ছিলো তখন ২৩ বছরের। রোজ রাতেই মেরিন মা-বাবার ছবি বুকে জরিয়ে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পরতো। এমনই ১দিন মেরিন ঘুমিয়েছিলো । তখন নিলয় মেরিনের সাথে ….
ছোট্ট মেরিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিলয় বেশ এগিয়ে যায়। কোনো রকমে মেরিন ১টা চিৎকার দেয়। আমি পাশের রুমেই ছিলাম। ছুটে যাই। বাচাই মেরিনকে। এতো বড় অন্যায় করেছিলো নিলয়। তবুও দোষ হয়েছিলো ছোট্ট মেরিনের। ও নাকি উষ্কেছিলো নিলয়কে। ওরা কেউ নিলয়কে কিছুই বলেনি। কবিরও মেরিনকেই কথা শোনায়। আমি নিলয়কে পুলিশে দেই। কিন্তু কবির বের করিয়ে আনে। সেদিনের আগে তো মেরিন তবু ঘুমাতো। কিন্তু সেদিনের পর থেকে মেরিন রাতে ঘুমাতে ভুলে যায়।
ভয় পায় ঘুমাতে…
সারাক্ষন ভয়ে ভয়ে থাকতো। নিলয়কে তো দেখলে ভয় পেতোই। এমনকি ওর নাম শুনলে, ওর ছায়া দেখলেও ভয় পেতো। infact আজকের মেরিনও নিলয়ের উপস্থিতিতে ভয় পায়। কারন কাচা বয়সে যে ভয়টা ওর মধ্যে ঢুকেছিলো সেটা আজও রয়ে গেছে।
যাই হোক ওকে নিয়ে আমি নিউইয়র্ক চলে যাই। ভেঙে আবার নতুন করে গরে তুলি। ওর যখন ১৯বছর বয়স তখন আসি। কিন্তু সেই ১৩ বছসের মেরিন আর ১৯বছরের মেরিনের মধ্যে ছিলো আকাশ পাতাল পার্থক্য। নতুন মেরিন ভালোবাসার না ঘৃণার। যার কোনো ভয় নেই। যার অপর নাম ভয় আর ঘৃণা।
এতোকিছুর পরও আজকের মেরিন রাতে ঘুমাতে ভয় পায়। কারন নিলয় আর সেদিনের সেই রাত। যেদিন আমার কোলে মাথা রাখতো সেদিন হয়তো ২-১ ঘন্টার জন্য ঘুমাতো। তোমার সাথে বিয়ের পর হাজার অপমানিতো হলেও ১টা বিষয় ভালো হয়েছে। সেটা হলো ও রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে….
এই মেরিনের অতীত….
নীড় :দাদুভাই… তোমাকে আজকে কথা দিলাম যে #ঘৃণার_মেরিন কে আমি আবার #ভালোবাসার_মেরিন বানাবো….
.
চলবে…