ঘৃণার মেরিন season : 2,part : 3,4

ঘৃণার মেরিন season : 2,part : 3,4
writer : Mohona
part : 3

বেরিয়ে দেখলো যে বাসার বাইরে ভীর জমে গেছে। আর ১টা গাড়ির ওপর দারিয়ে আছে। যেটা ধীরে ধীরে ওদের বাড়ির সামনে আছে মেরিন মাইক্রোফোন নিয়ে বলছে:
নীড় নীড় নীড়… where you… i love you….
মাইক্রোফোন টা বড় সরো ১টা স্পিকারে সাথে join করা। স্পিকারটাতে মেরিনের কথা বাজছে। যা শুনে কানে তালা লাগার উপক্রম…

.

নীড় : 😱।
নিহাল : এই মেয়ে এখানে এভাবে নীড়ের নাম নিচ্ছে কেন?
নীলিমা মনে মনে: মেরিন….
মেরিন নীড়কে দেখ খুশি হলো। নীড় রেগে মেরিনের দিকে গেলো। মেরিন লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নামলো।
নীড় : এসবের মানে কি?
মেরিন : ৩দিনধরে office না আসার মানে কি?
নীড় : অসহ্য….. তুমি কি পাগল?
মেরিন : হামম। আপনার জন্য….. because i love you….
নিহাল-নীলিমা: 😱।
নীড় : & i hate you…. আমার চোখের সামনে থেকে দুর হও তো।
মেরিন : সেটা আপনাকে বলতে হবেনা। এমনিতেও চলে যাবো। আপনাকে দেখা হয়ে গেছে । আমার কাজ শেষ। আসছি। আর হ্যা আজকে থেকে না হলেও কালকে থেকে office এ চলে আসবেন। bye…
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নিহাল : oh my goodness…. এটা আমার মাথাতেই আসেনি। আসলে মেরিনের উদ্দেশ্য তুমি?
নীড় কোনোকিছু না বলে ready হয়ে office এ গেলো। এদিকে সকালে মেরিন যে কান্ড ঘটিয়েছে সে কান্ডের জন্য প্রেস মিডিয়ায় ঝড় উঠে গেছে।

.

২দিনপর….
নীড় ফোনে কথা বলছে। আর মেরিন কফি খেতে নীড়কে দেখছে। ঠিক তখনই কোথায় থেকে নীরা দৌড়ের এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো।
নীরা : missed you জান…
নীড় : জান…
নীড় ফোন রেখে নীরাকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : i also missed you… but তুমি আসবে আমাকে বলোনি কেন?
নীরা : বললে surprise দিতাম কিভাবে?
নীড় : হামম তাও ঠিক। you know what?
নীরা : what?
নীড় : i love you…..
নীরা : i love you 2…
বলেই নীরা নীড়ের বুকে মুখ লুকালো। তখন নীড়ের চোখ মেরিনের দিকে পরলো। চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে আর হাত দিয়ে রক্ত।
নীড় মনে মনে : আমি তো এই ডাকাতের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। আল্লাহই জানে এখন কি করবে?
নীড়কে অবাক করে মেরিন ওখান থেকে চলে গেলো। গিয়ে গাড়িতে বসলো ।
জন : ম্যাম… আপনার হাত দিয়ে তো অনেক রক্ত পরছে। দেখি ব্যান্ডেজ করে দেই…
মেরিন রেগে জনের দিকে তাকালো।
জন : ম্যাম… সেপটিক হয়ে যাবে…
মেরিন : ….
জন : ম্যাম আপনি যদি বলেন ওই নীরাকে এখনই… ২মিনিটও লাগবেনা নীড় স্যারের কাছে থেকে ওকে সরাতে।
মেরিন : আপাদত নীড়ের ওপর মেরিনের কোন অধিকার নেই। তাই নীড়ের বুকে ও এখনো safe আছে….
বলেই মেরিন চলে গেলো।

.

খান বাড়িতে…
মেরিন বাসায় ঢুকছে। তখন কবিরের সাথে মেরিনের চোখাচোখি হলো। যতোযাইই হোক সন্তানের আঘাতে তো বাবাদের হৃদয় ঠিকই পুরে। তাই কবিরেরও বুকটা মোচর দিলো। কিন্তু মেরিনকে ignore করে চলে গেলো। এতে মেরিনের কিছুই যায় আসেনা… মেরিন রক্তাত্ব হাত নিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠছে। তখন ওর ফুপ্পি সেতু
বলল: কিরে অনামুখী কাকে খুন করে এলি?
মেরিন : আপনার অকর্মা বরটাকে….
বলেই মেরিন সোজা দাদুভাইয়ের রুমে গিয়ে দাদুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো। দাদুভাইও first aid box নিয়ে ready ছিলো। কারন জন আগেই ফোন করে সব বলেছে।
দাদুভাই: দেখি দিদিভাই… হাতটা দেখি….
দাদুভাই পরম যত্নে মেরিনের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
মেরিন : আমি নীড়কে বিয়ে করবো।
দাদুভাই : হামম করবে। কবে করবে তারিখ ঠিক করেছো?
তখনই ২জন শুনতে
পেলো : নানু…
২জন সামনে তাকালো । দেখলো নীরা দারিয়ে আছে।
নীরা: নানু নানু নানু….
মেরিন : ওখানেই দারাও… আর এক পাও যেন আগে না বারে …
নীরা : তোকে বলে আগে বারবো…
নীরা তাও আগে আসতে নিলে দাদুভাই থামিয়ে দিলো।
দাদুভাই: যা বলার ওখান থেকেই বলো।
নীরা : নানু আমি এতোদিন পরে এসেছি তাও তুমি..
দাদুভাই : তুমি কোনো জাতীয় সম্মাননা পাওয়ার মতো কাজ করে আসোনি। নিজের দোষ ঢেকে এসেছো।
নীরা : তোমার এই নাতনি বুঝি পুরস্কার পাওয়ার মতো কাজ করে?
দাদুভাই : তোমার মতো ছলনা করে না। now out…
নীরা : মাম্মি … মাম্মি…
মাকে ডাকতে ডাকতে আর ন্যাকা কান্না কাদতে কাদতে নীরা বেরিয়ে গেলো।

.

রাতে…
নীড় : মেরিন ওভাবে চলে গেলো কেন? কিছুই বললনা। নীড়… তুই কি চাস যে মেরিন react করুক…?

.

পরদিন….
নীড় office এ গেলো। দেখলো মেরিনের গাড়ি নেই।
নীড় : আজকে এখনো আসেনি… কখনো তো late করেনা….
তখনই মেরিনের গাড়ি এসে হাজির। মেরিন আজকে নেভি ব্লু লেডিস কোট পরেছে। ডান হাতে ব্যান্ডেজ। মেরিনকে দেখে কেন যেন নীড়ের মনে হলো যে মেরিনের শরীরটা ভালোনা। তবুও নীড় মেরিনকে ignore করে চলে গেলো। গিয়ে নিজের চেয়ারে বসলো।
৫মিনিটপর… মেরিন কেবিনে ঢুকলো। ঢুকে চুপচাপ নিজের চেয়ারে বসলো। নীড় আরো অবাক হলো।
নীড় মনে মনে : কেন যেন এর নীরবতা ঝড়ের পূর্বাভাসের মতো লাগছে।

.

মেরিন ল্যাপটপ খুলে কাজ করতে বসলো।
মেরিন: বিয়ে করবেন আমাকে?
কথাটা শুনে অবাক হয়ে তাকালো মেরিনের দিকে । যাকে ভালোইবাসেনা তাকে বিয়ে?
মেরিন ল্যাপটপে কাজ করতে করতে
বলল : কি হলো বলুন….
নীড় : আমি নীরাকে ভালোবাসি…. আর ওকেই বিয়ে করবো। বুঝেছো?
মেরিন : ভালোমতো জিজ্ঞেস করছি তাই ভালোমতো বলুন যে বিয়ে করবেন কি না?
নীড় : না….
মেরিন : হামম। ভালোমতো বললাম ভালো লাগলো না। এরপর কি হবে বা হতে পারে সেটা আমি নিজেও জানিনা ।
নীড় : যা মন চায় করো।…

.

২জন ২জনের কাজ করছে। হঠাৎ মেরিনের হাতের সাথে নীড়ের হাত ছোয়া লাগলো। মেরিন সাথে সাথে হাতটা সরিয়ে নিলো। কিন্তু নীড় বুঝতে পারলো যে পারলো মেরিনের শরীর অনেক গরম। মানে ভীষন জ্বর। এখন নীড় বুঝতে পারলো মেরিন কেন এসেই আজকে ওকে জরিয়ে ধরেনি। তখনই নীরা রুমে ঢুকলো।
নীরা : জান… একি তুই?
মেরিন জবাব দিলোনা।
নীরা : কি রে তুই এখানে কেন?
বলতে বলতে নীরা আগে বারতে লাগলো। মেরিন গানটা বের করে নীরার পা বরাবর ফাকা গুলি করলো ১টা। এরপর হাত দিয়েই ইশারা করলো চলে যেতে।
নীরা : তোর কি মনে হয় যে আমি ভয়ে চলে যাবো?
নীড় : জান চলো… আমরা অন্য কোথাও যাই।

.

নীড় নীরাকে নিয়ে office থেকে বেরিয়ে গেলো।
নীরা : আরে তুমি কি ওকে ভয় পাও নাকি? ওই বেয়াদবটার ভয়ে …
নীড় : তুমি ওকে চেনো?
নীরা : চিনবো না কেন ? ও তো মেরিন। মেরিন বন্যা খান। মামার মেয়ে।
নীড় : what? ও তোমার মামাতো বোন?
নীরা : হ্যা। ও এখানে কেন ? তাও তোমার কেবিনে? তোমার পাশে। তুমি আমাকে বলোনি কেন?
নীড় : শান্ত হও জান… আমি তোমাকে সব বলছি….
নীড় নীরাকে সব বলল।
নীরা : what? এতোকিছু তুমি আমাকে বলোনি কেন?
নীড় : তুমি কষ্ট পাবে বলে…
নীরা : তুমি জানোনা ও কতো dangerous … এখনি চলো।
নীড় : কোথায়?
নীরা : marriage registry office …
নীড় : what? কি বলছো কি?
নীরা : তা না হলে তুমি জানোনা ও যখন বলেছে যে তোমাকে বিয়ে করবে তখন করবেই।
নীড় : কিন্তু এখন কিভাবে সম্ভব।
নীরা : এখন না হলে কখনোই না… তুমি uncle-aunty কে ডেকে আসতে বলো। আর আমি মাম্মি-পাপা আর মামাকে আসতে বলি।
নীড় : কিন্তু এখনই কিভাবে সম্ভব?
নীরা : তারমানে তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাওনা?
নীড় : আরে কি বলো কি?
নীরা : তাহলে চলো?
নীড় : ok চলো।
ওরা marriage registry office এ রওনা হলো।

.

মাঝপথে….
নীড় বাধ্য হয়ে গাড়িতে break মারলো। কারন মেরিন পথ আটকে দারিয়ে আছে। নীড়-নীরা গাড়ি থেকে নামলো।
নীরা : তুই? সামনে থেকে সর…
মেরিন : মেরিন নিজের অনুযায়ী চলে। অন্যকারো না । তোমার মতো কোনো কীটপতঙ্গ তো আমার পায়ের ধুলা।
নীরা : 😤।
মেরিন গানটা আঙ্গুলে ঘোরাতে ঘোরাতে নীড়ের সামনে এলো।
গানটা নীড়ের গালে আলতো করে ধরে
বলল : জীবনে শেষবারের মতো আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। বিয়ে করবেন আমাকে?
নীড় : না….
মেরিন : ভেবে বলছেন?
নীড় : হামম।
জবাবে মেরিন ১টা রহস্যময়ী হাসি দিলো। নীরার ভয় লাগলো মেরিনের হাসিটা দেখে ভয় লাগলো।
মেরিন : জীবনে আর ভালোভাবে ভালোবাসা পাওয়া হলোনা। আর না মনের আশা পূরন হলো। এটাই হয়তো “মেরিন বন্যা খানের” সাথে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের শেষ দেখা।
“শেষ দেখা” কথাটা শুনেই নীড়ের বুক কেপে উঠলো।
তবে নীড় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেরিন নীড়ের ঠোটে হালকা ১টা কিস করে চলে গেলো। নীড় অবাক চোখে মেরিনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
নীরা : তারাতারি চলো…
নীড় : এখন বিয়ে না করলেই না… মনে তো হয়না যে ও আর ফিরবে…
নীরা : ও ফিরবে কি ফিরবে জানিনা… কিন্তু নানু আর ওর চামচা জন কি না কি বাগরা দেয় তার ঠিক নেই।
নীড় : কিন্তু…
নীরা : ও তো তুমিও ওর রূপের জ্বালে আটকে গেলে…
নীড় : কি যা তা বলছো?
নীরা : তাহলে চলো। registry marriage টা করে নেই। বিয়েটা ১বার হয়ে গেলে আর কেউ কিছুই করতে পারবেনা। পরে না হয় ধুমধাম করে program হবে। চলোনা…
নীড় : হামম।
মনে মনে : মেয়েটা না কিছু করে ফেলে….
নীড়-নীরার বিয়েটা সম্পুর্ন হলো।

.

registry office থেকে বেরিয়েই নীরার ১টা ফোন এলো। ১টা বড় মডেলিং এর। নীরা তো খুশিতে আত্মহারা। লাফাতে লাফাতে চলে গেলো।
আর নীড় ডুবে গেলো ভাবনার জগতে।
নীড় মনে মনে : সত্যিই কি তবে এটা শেষ দেখা ছিলো? ও কি নিজেকে কিছু করে ফেলবে? যা মন চায় করুক। আমার কি….

.

২মাসপর….
কালকে নীড়ের গায়ে হলুদ।
নীড় চাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ১৫-২০দিনের মতো মেরিনের সংস্পর্শে ছিলো। তবুও কেন যেন রোজ ভীষন ভাবে ওকে মনে পরে। ওর কথা , ওর কাজ। মেরিন নীড়কে ২দিন না দেখলে কেমন করতো সেই মেরিন….
নীড় : আমার জন্য কি তবে মেরিন কিছু উল্টা পাল্টা করলো? যদি সত্যি এমনটা হয় তবে এই পাপ আমি কোথায় রাখবো? কিচ্ছু জানিনা…

.

পরদিন…
সন্ধ্যায়…
আজকে নীড়-নীরার গায়ে হলুদ…
নীড় নিজেই ready হচ্ছে। হলুদ রঙের পাঞ্জাবি আর কালো রঙের ধুতি পরেছে নীড়। সিল্কি চুলগুলোতে আজকে জেল দেয়নি। আজও নীড় না চাইতেও মেরিনকে ভাবছে। হঠাৎ ই কারেন্ট চলে গেলো। তখন কেউ ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : আহ নী…
পরক্ষনেই নীড়ের বোধ হলো যে এটা নীরার ছোয়ানা। মেরিনের। নীড় ঝড়ের বেগে পিছে ঘুরলো। লাইট নেই। চাদও অনেকটা মেঘে ঢাকা। তবুও নীড় মেরিনকে স্পষ্ট দেখলো। দেখলো মেরিন হলুদ রঙের ১টা শাড়ি পরে আছে। যার মধ্যে কালো পাথর বসানো। খুবই সাধারন কিন্তু দারুন ১টা শাড়ি। অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে মেরিনকে। না চাইতেও মেরিনকে দেখে নীড় টা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো।
নীড় : ত…
মেরিন নীড়কে কথা বলতে না দিয়ে ওর ঠোটে মাঝে আঙ্গুল রাখলো।
এরপর নীড়কে বসিয়ে ওর কোলে চরে বসলো। এরপর নীড়ের ২ গালে হলুদ লাগিয়ে দিলো। এরপর নীড়ের গালের সাথে নিজের গাল ঘষে নিজেও হলুদ রাঙা হলো। এরপর নীড়ের ঠোটে ১টা হালকা কিস করে চলে গেলো। আর লাইট জ্বলে উঠলো। নীড় সাথে সাথে মেরিনকে খুজতে বের হলো। কিন্তু কোথাও পেলোনা।
নীড় : তুমি স্বপ্ন নাকি সত্যি …..

চলবে…

ঘৃণার মেরিন
part : 4
season : 2
writer : Mohona

.

নীড় : তুমি স্বপ্ন নাকি সত্যি…. নাকি দুঃস্বপ্ন…..
নীড়কে নিচে নিয়ে যাওয়া হলো…. হলুদ সন্ধ্যা শুরু হলো। অনেক আনন্দ উৎসব হলো কিন্তু নীড় সত্যি নামক স্বপ্নটার রহস্য ভেদ করতে ব্যাস্ত। ও বুঝতে পারছেনা যে ওটা সত্যি সত্যি কি মেরিন ছিলো?

.

পরদিন….
আজকে নীড়ের বিয়ে।

নীড় : স্বপ্ন কিভাবে হতে পারে? মেরিন তো সত্যিই ছিলো। আমি তো feel করেছি। feel করেছি…. নীড় তুই কি করছিস? কি ভাবছিস ? তুই মেরিনকে কিভাবে মেরিনকে feel করতে পারিস…. তুই নীরাকে ভালোবাসিস…. নীরা তোকে ভালোবাসে। নীরা তোর বিয়ে করা বউ। তোর মনের মালিক কেবল আর কেবল নীরা। মেরিন কেবল ভেসে আসা কালো মেঘ। আজকের পর থেকে আর ওকে নিজের কল্পনায় আনবোনা……
আমার
ভালোবাসার সাথে অন্যায় করতে পারবোনা আমি।

.

রাতে….
চারদিকে মানুষ ভরপুর। রমরম করছে। প্রেস-মিডিয়া সবাই উপস্থিত। কাজী সাহেব এলো। কারন registry marriage করা হলেও কবুল পরিয়ে তো আর বিয়ে হয়নি….. ঠিক তখনই সাইরেন বাজাতে বাজাতে ১ডজন পুলিশের গাড়ি হাজির হলো। সবাই তো অবাক। আইজি, ডিআইজি… কমিশনার সব এসে হাজির। সবাই তো মহা অবাক। কবির-নিহাল দৌড়ে গেলো।
কবির : কি ব্যাপার আপনারা এখানে?
নিহাল : কোনো সমস্যা? আপনারা হঠাৎ এখানে?
কমিশনার : হাজার শুকরিয়া করুন যে হোমমিনিস্টার আসেনি। আচ্ছা আপনারা এতো বড় এবং উচ্চশিক্ষিত মানুষ হয়ে এমন বেআইনি কাজ করতে আপনাদের লজ্জা করছেনা?
কবির : বেআইনি কাজ? কি বেআইনি কাজ করছি?
ডিআইজি: বিবাহিত ছেলের আবার বিয়ে দিচ্ছেন তাও divorce না করিয়ে…. তাও জোর করে…. আবার বলছেন কি বেআইনি কাজ।
নিহাল: what? বিবাহিত ছেলে মানে?
কমিশনার : বিবাহিত ছেলে মানে বোঝেন না? নাকি নাটক করছেন? সবার কোমড়ে দরি বেধে নিয়ে যাবো থানায়।
নীড় আর বসে থাকতে পারলোনা। কি হয়েছে জানার জন্য উঠে এলো।
নীড় : কি হয়েছে?
কমিশনার : এই যে আপনি…. ২মাস আগে বিয়ে করা বউ রেখে নতুন করে বিয়ে করতে লজ্জা করছেনা?
নীড় : কি আবোল তাবোল কথা বলছেন? বউ রেখে নতুন বিয়ে করবো কেন?আমার wife নীরা। আর নীরাকেই ২মাস আগে বিয়ে করেছি। তখন registry marriage ছিলো। আর এখন ইসলামিক ভাবে….
আইজি : shut up…. লজ্জা করছেনা মিথ্যা বলতে। সবাই কে ধরে নিয়ে যাবো থানায়। থার্ড ডিগ্রি দিলে মজা বুঝবেন। আমাদেরকে মিথ্যা বলছেন? আপনার wife আপনাদের marriage registry paper আমাদেরকে দেখিয়েছে। আমরা সেটা ভালোভাবে চেক করে দেখেছি। সবটা সত্যি ছিলো।
নীড় : oh really ? তো কোথায় , কে আমার #wife …🤬….

.

মেরিন : আমি…..
সবাই দরজার দিকে তাকালো। দেখলো সাদা লেহেঙ্গা আর গা ভরতি গহনা পরে দারিয়ে আছে মেরিন।
দেখে মনে হচ্ছে স্বর্গ থেকে কোনো অপ্সরী। style মেরে হেটে আসলো।
নীড়: তুমি?
মেরিন : yes honey ….
কমিশনার : চিনলেন তাহলে…..
নীড় : চিনবোনা কেন? the মেরিন বন্যা খান।
মেরিন : উহু… একটু ভুল হলো। মেরিন বন্যা খান নয়…. মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী…
নীড় : shut up… officer she is not my wife….
আইজি: তাই?
তখন আইজি নীড়-মেরিনের marriage registry paper টা বের করে
বলল : তাহলে এটা কি?
নীড় কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলো তাতে বরের নাম বরের মা-বাবার নাম তো ঠিকই আছে চৌধুরী চৌধুরী…. কিন্তু কনের নামের জায়গায় সব খান খান…. মেরিন বন্যা খান , কনিকা খান , কবির ফয়সাল খান…
নীড় : এগুলো সব ফালতু… ভুয়া….
বলেই নীড় কাগজটা ছিরতে গেলো। কিন্তু পারলোনা। কমিশনার নিয়ে নিলো।
কমিশনার : মিস্টার নীড়….
আপনার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি…. আপনি আমাদের সামনে…
নীড় : দেখুন….
নিহাল : দারাও নীড়… officers..এই paper কি না কি জানিনা…. তবে আমাদের কাছেও ১টা পেপার আছে। দারান। দেখাচ্ছি….
বলেই নিহাল আরেকটা পেপার নিয়ে এলো…. সেটা আইজির হাতে দিলো।

.

নিহাল : পড়ে দেখুন।
আইজি পড়তে লাগলো।
নিহাল : এটাই আসল। এই কারনেই কপি। মেজিস্ট্রেট বলেছিলো এখন নাকি নতুন rules… তাই সাথে সাথে আসল পেপারটা পাওয়া যাবেনা। আর এই মেয়েটা আসল পেপার নিয়ে এসেছে। তাহলেই বুঝুন….
আইজি : এমন new rules এর কথা কখনো শুনিনি মিস্টার চৌধুরী….
বলেই আইজি সাহেব পেপারটা নিহালের চোখের সামনে তুলে ধরলো।
বলল: i think আপনার এটা পড়ে দেখা দরকার আমার না।
নিহাল পেপারটা হাতে নিলো । পড়লো। আর পড়ে আরেক দফা ঝটকা খেলো। কারন এটাতো মেরিনের কাগজেরই কপি। মানে নীড়-মেরিনের marriage registry এর। নীড় হাতে নিলো। নীড়ও অবাক।
নীড় : এটা কি করে সম্ভব… signature করার সময় তো ঠিক দেখেছিলাম। তা….
তখন নীড়ের মনে পরলো যে সেদিন নীরা sign করার পর হঠাৎ বাইরে শোরগোল হয়েছিলো। হঠাৎ করে এমন হওয়াতে সবাই বেশ চমকে গিয়ে পেছনে ঘুরেছিলো…. আর বিয়ের ১০মিনিট পরেই নীরা সকল বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে মডেলিং করতে চলে যায়। আর আকস্মিকভাবে বিয়েটা হওয়াতে পেপারটা আর পড়াই হয়নি।

.

নীড় : oh god…. officers is a cheating…. বিশ্বাস করুন…
আইজি : shut up…
নীড় : ok fine… বিয়ে যখন আছে তখন divorceও আছে। এই ম….
আইজি: জানতাম… আপনি এই contract পেপারটাও হয়তো ভুলে গেছেন।

বলেই তিনি আরো ১টা পেপার বের করে দিলো। যেটাতে লেখা মেরিনের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মেরিনই নীড়ের বউ থাকবে । নীড়ের তো কথা বলার ভাষাই নেই।
নিহাল: এসব আমরা মানিনা….
ডিআইজি: কিছু করার নেই…. না মানলে আপনাদের সবাইকে জেলে পচে মরতে হবে….
উনারা অনেক অপমান করলো সবাইকে।
নীরা : এটা কোন ধরনের কথা? আপনারা নিশ্চয়ই ঘুষ খেয়েছেন….
মেরিন : officers… আপনাদের ঘুষখোর বলছে… আর তারথেকেও বড় কথা,,, আসল কালপ্রিট তো এই মেয়েটা…. ওই নিজে সব plan করেছে। আমার স্বামীকে ফাসিয়েছে…. arrest her….
কমিশনার : এমন মেয়েকে তো আসলেই …. arrest her….
কবির : ১মিনিট…. নীরার মামা কবির ফয়সাল খান এখনো জীবীত। আমি কবির ফয়সাল খান বলছি যে আপনারা চলে যান। আর আমার ভাগনীর দিকে ভুলেও পা বারাবেন না। আমার পাওয়ার তো জানেন….
তখন দাদুভাই পেছন থেকে
বলল :আর মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর পাওয়ারটাও তো জানেন। মেরিন বন্যা মানেই শাহজাহান খান…. so arrest her….
নীড় : ১মিনিট… সন্ধ্যা ৬টার পর কোনো মেয়েকে arrest করা যায়না। নিশ্চয়ই ভুলে যাননি….
আইজি : না যাইনি…. তবে এনাকে আপনি বাচাতে পারবেন না…
বলেই ওনারা চলে গেলো।

.

আর তখন ধাধা করে গুলি চলতে লাগলো। না না কারো ওপরে না। শূন্যে…
কারন এটা মেরিন বন্যার বিয়ে । এখানে বাদ্যযন্ত্রের শব্দ না , গুলির শব্দ পাওয়া যাবে। বাদ্যযন্ত্রতো সব বিয়েতেই বাজে। তাই মেরিন ওর বিয়েতে ২১ ধরনের gunএর গুলি আওয়াজ দিয়ে মিউজিক বাজাচ্ছে।
কবির : তোমাকে তো মেয়ে আমি….
মেরিন : জন…. এই লোকটাকে ১মিনিটের মধ্যে আমার চোখের সামনে থেকে সরাও….
জন নিয়ে গেলো।

মেরিন নীড়ের সামনে গিয়ে
বলল: ভালোভাবে সেদিন বলেছিলাম না বিয়ে করতে…. করলেন না…. তাইজন্যেই তো এতোকিছু করতে হলো । এই বাদরমুখীকে অতো বড় মডেলিং এর offer দিতে হলো। সেদিন বলেছিলামনা … ” মেরিন বন্যা খানের সাথে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের এটাই শেষ দেখা। ”
এখন আপনার সামনে মেরিন বন্যা খান না, মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী দারিয়ে আছে। চলুন ইসলামিক নিয়মে কবুল বলে বিয়ে করি।

নীড় ঠাস করে নীড়ক থাপ্পর মারলো। জন আর মেরিনের বাকি লোকজন তেরে আসতে নিলে মেরিন থামিয়ে দিলো। মেরিন ২হাত দিয়ে নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : কেন খামােখা ঝামেলা করছেন? আপনি কি চাইছেন উপস্থিত সবার মাথার ঘিলু উরে যাক…. আর সবার আগে উরুক আপনার বাবার মাথা।
নীড়:সাহস থাকলে করে দেখাও….
মেরিন : কেন খামোখা বয়স্ক বাবার রক্ত ঝরাতে চাইছেন? তবুও…. আপনি যখন চাইছেন তখন….

ওরনার নিচে থাকা গানটা মেরিন নিহালের দিকে তাক করলো। just shoot করবে তখন নীড় মেরিনের হাত ওপরে উঠিয়ে দিলো।
নীড়: ঠিক করছো না…
মেরিন গানটা হাতে নিয়েই আবার নীড়ের গলা জরিয়ে ধরলো।
বলল : আমি কখনোই কারো জন্য কিছু ঠিক করতে পারিনা ….
বলেই নীড়ের গালে কিস করলো। আর আবারও হাওয়ায় গুলি বর্ষিত হলো। বুলেটগুলো মিউজিকের মতো করেই যেন বাজতে লাগলো।

.

চৌধুরী বাড়িতে….
নীলিমা নতুন বউ বরন করবে বলে বরন ডালা নিয়ে দারিয়ে আছে। নিহাল, নীড়-মেরিন গাড়ি থেকে নামলো। নীড় হনহন করে ঘরে ঢুকতে নিলে নীলিমা বাধা দিলো।

নীলিমা : আমার বউমাকে ফেলে তুমি একা ভেতরে ঢুকতে পারোনা।
নিহাল: এটা নীরা মা না.. এটা….
নীলিমা: মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী। আমার বউমা… উহু…. আমার মেয়ে ।
নিহাল: তোমার কন্ঠ বলছো তুমি খুশি….
নীলিমা: অবশ্যই…
নিহাল: ও…. তাহলে নিজের best friend এর মেয়ের জন্য খুশিতে আত্মহারা…?
নীলিমা: হামম।
নিহাল: এমন মেয়েকে বউমা হিসেবে পেয়ে তোমার আনন্দ দেখে আমি শিহরিত… অবশ্য আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে এই মেয়ে এমন কেন। দেখতে হবে না কার মেয়ে? চরিত্রহীন মায়ের অসভ্য মেয়ে।

.

“চরিত্রহীন মা”- কথাটা শুনে মেরিন চোখ গরম করে নিহালের দিকে তাকালো।
নিহাল : আমাকে চোখ রাঙিয়ে লাভ নেই। সারা দুনিয়ে জানে যে কনিকা কবির খান uffs not কনিকা কবির খান জানিনা কি sirname হতে পারে তার। whatever … সবাই জানে যে কনিকা চরিত্রহীনা….
মেরিন আর ১মিনিটও দেরি না করে দরজার পাশে জ্বলতে থাকা লাইটের সারি থেকে ১টা লাইন ১টানে ছিরে নিয়ে মেরিন ওটা দিয়ে নিহালের গলায় পেচিয়ে দাতে দাত চেপে
বলল : যদি তুমি নীড়ের বাবা না হতে তবে তোমার এই জিহ্বাটা টেনে ছিরে কুকুরদের খাওয়াতাম।
নিহালের চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। ঘটনা টা এতো তারাতারি ঘটলো যে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটে গেলো। নীড় তারাতারি মেরিনকে সরিয়ে নিলো।
নীড় : বাবা তুমি ঠিক আছো? এই মেয়ে তোমাকে…
নিহাল : ছারো তো নীড়।

.

রাত ১টা….
নীড় রুমে ঢুকলো। দেখলো সারাঘর ফুলে সাজানো। আর দেয়ালে ওর আর মেরিনের ছবি দিয়ে ভরা। নীড় বেডের সামনে গেলো। ১টানে ফুলগুলো ছিরে ফেলল।
নীড়: বিয়ে হয়েছে বলেই তুমি আমার ভালোবাসা হয়ে যাওনি। আমি তোমাকে ঘৃণা করি এবং ঘৃণা করবো। বুঝেছো,,, ঘৃণা।
মেরিন বসা থেকে উঠতে উঠতে
বলল : আপনার ঘৃণাই আমার জন্য অনেক কিছু। আপনার ঘৃণাই আমার বেচে থাকার জন্য যথেষ্ট।

আর হ্যা,,, ভালোবাসার চেয়ে ঘৃণা অনেক দামী… ভালোবাসা তবুও ভোলা যায় কিন্তু ঘৃণা কখনো ভোলা যায়না। কারন ভালোবাসা থাকে হৃদয়ে আর ঘৃণা থাকে হৃদয়ের গভীরে। মেরিন তো নীড়েরই। ভালোবাসার নাই বা হোক,,, হোক না সে
#ঘৃণারমেরিন …
বলেই মেরিন নীড়ের পা ধরে সালাম করতে গেলো। কিন্তু নীড় সরে গেলো।
নীড় : আমিও দেখবো তুমি আমার ঘৃণা নিয়ে কতোদিন টিকতে পারো…..
বলেই নীড় washroom এ চলে গেলো। বেরিয়ে এসে দেখে মেরিন লেহেঙ্গাটা পাল্টে ১টা শাড়ি পরে আছে। নীড় কোনোকথা না বলে কপালে হাত দিয়ে সোফায় শুয়ে পরলো। মেরিনকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে সেই সাথে কোথাও কোনো বাধাও অনুভব করছে। তাই শুয়ে পরলো। পরমুহুর্তেই বুঝতে পারলো যে মেরিন ওর বুুকের ওপর মাথা রেখে ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।

.

নীড় মেরিনকে ১টা ঝারা দিয়ে ফেলে দিলো।মেরিন পরে গেলো। যথেষ্ট ব্যাথা পেলো।
নীড় : খবরদার আমাকে ছোবেনা। কোনো অধিকার নেই তোমার । বুঝেছো? তোমাকে কখনোই আমি নিজের বউ বলে মেনে নিবোনা। আর না বউয়ের অধিকার … ছুতে আসলে জানে মেরে দিবো।
মেরিন : মানেন না মানেন বউ তো আপনারই…. আর হ্যা আপনার কাছে বউয়ের অধিকার চাইওনি। শুধু একটু ঘুমাতে চাই আপনার বুকে ….
নীড় : কল্পনাও করবে না ….
মেরিন : আপনি কি কোনো কথাই ভালোভাবে শুনতে পারেন না?
নীড় কোনো কথা না বলে শুয়ে পরলো।
মেরিন : ভালোমতো জিজ্ঞেস করছি… আপনার বুকে আজকে আর আগামী প্রতিদিন আপনার বুকে ঘুমাতে দিবেন কি না?
নীড়: …..
মেরিন : কি হলো…. বলুন….
নীড় : ….
মেরিন : নীড়….
নীড় : না…. শুনেছো?
মেরিন : হামমম।

.

৫মিনিটপর….
মেরিনের কোনো সারাশব্দ না পেয়ে নীড় পেছনে ঘুরলো । দেখলো মেরিন নেই । নীড় উঠে বসলো।
নীড় : গেলো কোথায়?
মেরিন : আমি এখানে…
নীড় বারান্দার দরজার দিকে তাকালো। দেখলো মেরিন ১টা বড় সরো মদের বোতল হাতে নিয়ে দারিয়ে আছে দরজায় হেলান দিয়ে।
নীড় : তুমি আসলেই ১টা বাজে মেয়ে।
মেরিন বরাবরের মতো সেই রহস্যময় মুচকি হাসি দিলো। এরপর বোতলে ১বার চুমুক দিলো। মেরিন বারান্দার দরজাটা লক করে বোতল টা হাতে নিয়ে বেডে গিয়ে বসলো।
মেরিন : বুকে নিয়ে ঘুমাবেন?
নীড় : ….
মেরিন বেডের চারদিকে মদটা ছিটিয়ে দিলো। এরপর বাকী মদটুকু চুমুক দিয়ে শেষ করলো।
মেরিন : শেষবারের মতো জিজ্ঞেস করছি….
নীড় : no….
মেরিন আর কিছু না বলে চোখের পলকে আগুন লাগিয়ে দিলো। দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে লাগলো।

.

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here