গল্পঃ বউ এর প্যারা,পর্বঃ ৭
লেখকঃ_রোহান
ডাক্তার বললো রোগীর রক্তের প্রয়োজন, যত তারাতারি পারেন রক্ত যোগাল করেন,,
মেঘাকে ফোন দিয়ে আসতে বললাম,মেঘার গ্রুপ আর রিমঝিমের রক্তের গ্রুপ এক,,মেঘা আসতেই ডাক্তার তাকে একটি রুমে নিয়ে গেলো,,একটু পর মেঘা আর ডাক্তার বেরিয়ে আসে।।
আমিঃ রক্ত কি নেওয়া হয়ে গেছে,
ডাক্তারঃ না,
আমিঃ কেনও,,
ডাক্তারঃ এক ব্যাগের উপর নেওয়া যাবে না,,কিন্তু আমাদের দুই ব্যাগ রক্ত লাগবে,
আমিঃ কি করবো এখন, আপনেরা কি যোগাল করতে পারবেন না,
ডাক্তারঃ আচ্ছা দেখছি,তবে এই মেয়ের কাছ থেকে এক ব্যাগ রক্ত নেই,তারপর দেখা যাক কি হয়।
আমিঃ আচ্ছা,
তারপর মেঘাকে নিয়ে চলে যায় ডাক্তার,একটু পর মেঘা বেরিয়ে আসে,তাকে রেস্ট করানোর জন্য একটি বেডে শুয়ে দিলাম,আর বোনকে বললাম তার পাশে থাকতে,
অনেকক্ষন হয়ে যাচ্ছে তবে ডাক্তার বের হচ্ছে না,শুধু ডাক্তার না, নার্স রাও বের হচ্ছে না,,আমার খুব টেনশন হচ্ছে,আম্মু আমাকে ২ মিনিট পর পর ফোন দিচ্ছে,আম্মু আসতে পারেনি, আল্লাহকে মনে মনে ডাকছি…
নার্সঃ আপনের মেয়ে হয়ছে,,
আমিঃ কে….ও হা বলেন,,
নার্সঃ বলতেছি আপনের মেয়ে হয়ছে,
আমিঃ আমার বউ কেমন আছে,,
নার্সঃ ভালো আছে,ডাক্তার আপনেক ডাকছে,দেখা করে আসেন।।
আমিঃ আচ্ছা,,
তারপর বোনকে আম্মুকে খবরটা দিলাম,তারপর ডাক্তার এর কাছে গেলাম।।
আমিঃ আসতে পারি স্যার,
ডাক্তারঃ আরে বাবা রোহান আসো আসো,তুমি রায়হান স্যারের জামাই আগে বলবে তো,
আমিঃ ঠিক বুঝলাম না,,
ডাক্তারঃ তোমার শশুরের জন্য আজ আমি ডাক্তার হতে পারছি,সে যদি আমাকে Help না করতো,তাহলে আমি লেখাপড়া করতে পারতাম না মনে হয়,,
আমিঃ আমার বউ আর বাচ্চা কেমন আছে,
ডাক্তারঃ সবাই ভালো আছে,
আমিঃ রক্তের কি আর দরকার ছিলো,,
ডাক্তারঃ আমরা সব ব্যবস্থা করছি,তোমার আর চিন্তা করতে হবে না,,
আমিঃ ধন্যবাদ স্যার,,আর হা আমার শশুরকে কেমন করে চিনেন,,
ডাক্তারঃ অনেক বড় কাহিনী, পরে তোমার বউ এর কাছ থেকে শুনো,,
আমিঃ আচ্ছা,,
তারপর ডাক্তার এর কাছ থেকে বাইরে আসলাম,বাইরে আসতেই দেখি আমার শশুর শাশুরি শালী সবাই দাড়ায়ে আছে,,
আমিঃ বাবা তোমরা,,
শশুরঃ এতোবড় একটি ঘটণা হয়ে গেলো,তাও আমাকে জানাতে প্রয়োজন মনে করলে না,,
আমিঃ সরি বাবা,,কি করবো বুঝতেছিলাম না,তাই হয়তো জানাতে ভুলে গেছি,
শশুরঃ এখন কেমন আছে আমার মেয়ে আর নাতনী
আমিঃ ভালো আছে,,
শশুরঃ তোমার মা কে দেখছি না,সে কি আসেনি,
আমিঃ আম্মু অসুস্থ।।
শশুরঃ চলো আমার নাতনীকে দেখে আসি,
আমিঃ বাবা এখনও তো বেডে দেই নি,তবে একজন করে দেখে আসা যাবে,
শশুরঃ তাহলে আমি আগে যাচ্ছি,
একে একে সবাই দেখে আসলো,মেয়েটি নাকি রিমঝিমের মতো জয়ছে,সেও নাকি ছোট বেলাই এমন ছিলো,তবে আমার মতো ঠোঁটে একটি তীল আছে,দেখতে খুব কিউট লাগতেছে,এখন হসপিটালে আমিই থাকি,তবে রিমঝিমের মনটা খুব খারাপ,
আমিঃ মন খারাপ কেনও তোমার,,
রিমঝিমঃ সরি রোহান,তোমাকে ছেলে সন্তান দিতে পারলাম না,
আমিঃ এবার হয়নি তো কি জয়ছে,Next এ হবে,
রিমঝিমঃ হুম,তবে আমি অনেক খুশি।।
আমিঃ কেনও,,
রিমঝিমঃ মা মেয়ে এখন তোমাকে জ্বালাইয়া মারবো চান্দু,,
আমিঃ চান্দু কে,,
রিমঝিমঃ তুমি,
আমিঃ এখানেও শুরু করবে কি,
রিমঝিমঃ না,বাসায় যায় আগে,অনেক ঝগড়া জুমে রাখছি,
আমিঃ ঝগড়া জুমেও রাখা যায়,,
রিমঝিমঃ হুম আমি পারি জুমে রাখতে,,,,,,
আমিঃ হয়ছে এখন কিছু খাবার খাও,,
রিমঝিমঃ খাবো না,,,
আমিঃ একটু খাও,,
তারপর রিমঝিমকে খাবার খাওয়ালাম,কিন্তু মনে জয় তাকে খুব ঝাল লাগছে,তাই দিয়ে দিলাম একটি,
হঠাৎ নার্স চলে আসে,,
নার্সঃ এটা আপনের বাসা না যে সব কিছু এখানেই করবেন,,
আমিঃ সরি ম্যাম,
নার্সঃ ঠিক আছে,
রিমঝিমঃ আমরা যা খুশি করি,আপনের কি হা।।
নার্সঃ তাই বলে হসপিটালেও আপনেরা এসব করবেন,,
রিমঝিমঃ কেন রে তোকে কি কিস করতে গেছে নাকি আমার স্বামী,,
নার্সঃ বাজে কথা বলবেন না মিস,
রিমঝিমঃ রাখ তোর বাজে কথা,চাকরি রাখতে চাইতে এখান থেকে বের হ,,না হয় তোর চাকরি গেছে আজ,,
(বলতেই হঠাৎ ডাক্তার আসে)
ডাক্তারঃ কি হয়ছে রিমঝিম মামুনির
রিমঝিমঃ আংকেল এই পচা মেয়েটা আমাকে বকা দিছে,,
ডাক্তারঃ আচ্ছা মা আমি দেখছি,,
রিমঝিমঃ হা ওক যেনো আর না দেখি আমার সামনে,,
ডাক্তারঃ আর দেখতে হবে না মামুনি,আজ তোমার ছুটি,
রিমঝিমঃ সত্যি,,
ডাক্তারঃ হা।।
তারপর সব কিছু ঠিক করে বাসায় চলে আমলাম,আসার আগে নার্ম এর কাছে গেছিলাম
আমিঃ সরি ম্যাম,,
নার্সঃ ঠিক আছে যান,এমন মেয়ে আমি জীবনেও দেখিনি
আমিঃ মেয়েটি একটু জেদি, কখন কি করে ঠিক নেই,আপনে তাকে মাফ করেন ম্যাম,,
নার্সঃ আচ্ছা,তবে মনে হয় মেয়েটি আপনেক খুব ভালোবাসে,
আমিঃ হুম ম্যাম,,ম্যাম একটি কথা রাখবেন,
নার্সঃ হা বলেন,,
আমিঃ সময় হলে বলবো,,আপনে ঠিক প্রস্তুত থাকেন,,
বাসায় আমার পর থেকে আবার শুরু আমার যুদ্ধ,
এখন একজনের সাথে নই,দুজনের সাথে করতে হয়।
তবে আদরও কম পাইনা,মেয়েটি আসতে আসতে বড় হচ্ছে,আর বউ আসতে আসতে ছোট হচ্ছে,কেনও বললাম,গল্প পড়েন তাহলে বুঝবেন
আমিঃ আচ্ছা তুমি কি পাগলী নাকি হা,,
রিমঝিমঃ কেনও,,
আমিঃ বাবুর খাবার তুমিও খাও কেনও,,
রিমঝিমঃ আমার ইচ্ছে,তোমার কি হা।।
আমিঃ না আমার কিছু না,তবে আমার মেয়ের খাবার আমি খেতে দিবো না,
রিমঝিমঃ আমার মেয়ের খাবার আমি খাবো,তোমার কি,,
এই বলেই আবার শুরু,মারামারি করতে করতে কখন যে বোর আসছে বলতেই পারবো না,,বোনকে দেখেই নালিশ করা শুরু হলো,আমি রিমঝিমের দোষ দিচ্ছি,আর রিমঝিম আমার,,
বোনঃ তোরা কি শুরু করলি রে,,
আমিঃ আমার বেবির খাবার সে খাবে কেনও হা,,
রিমঝিমঃ আমার বেবির খাবার আমি খাবো, তোমার কি হা।।
বোনঃ আচ্ছা আমার কথা শুন তোরা,,
(আচ্ছা বল,দুজনেই বললাম)
বোনঃ বেবিটা তোদেরই,তাই আমার আমার কেন করিস হা,আর এখনই যদি এমন হয়, তাহলে বাবু যখন কথা বলতে শিখবে তখন তো খুন হয়ে যাবি তোরা,,
আমিঃ ঠিক তো,
রিমঝিমঃ তাই তো,,
বোনঃ তাই আর ঝগড়া না করে,একটু রোমান্স করতে পারিস না,,,
আমিঃ কি বললি,দাড়া
বোন মারছে দৌড়,
রিমঝিমঃ রোহান আমাকে বাবার বাড়ি নিয়ে যাবে,কয়েক দিন থেকে চলে আসবো,তুমি না চাইলে যাবো না,, কি হলো কথা বলছো না কেনও,,
আমিঃ কবে যাবে,,
রিমঝিমঃ কালকে।।
আমিঃ আচ্ছা, এখন ঘুমাও তাহলে।।
রিমঝিমঃ না,
আমিঃ কেনও,,
রিমঝিমঃ বাবুর আম্মু বাবুর আব্বুর কাছ থেকে আদর নিতে চাই,,
আমিঃ এতো প্যাচায়ে বলতে হবে কেন হা,সরাসরি বললেই তো পারতে,,
রিমঝিমঃ যা দুষ্টু,আমার মনে হয় সরম করে না,,
আমিঃ হসপিটালে কোথাই ছিলো তোমার সরম,,
তারপর শুরু আবার ঝগড়া,ঝগড়া করতে করতে রিমঝিমের ঘুম চলে আসে,তাই আমিও আর কিছু বলিনি,তাকে ঘুমায়ে দেই।
সকালে উঠে তাকে শশুর বাড়ি নেমে দিয়ে আমি অফিসে যায়,সারাদিন অফিস করে বাসায় আসতেই শশুর বাড়ি থেকে ফোন,ফোন দিয়ে শাশুরি যা বললো তা শুনে আমি হাসবো নাকি কাঁদবো বুঝতেছি না,মেয়েটি এমন কান্ড করবে ভাবতেই পারিনি
চলবে