মেঘসন্ধি,পর্ব-১৪ শেষ পর্ব

মেঘসন্ধি,পর্ব-১৪ শেষ পর্ব
লেখনীতে:সারা মেহেক

লোক দুটো মৌ এর দিকে এগিয়ে আসছে। মৌ হাত বাঁধা থাকা অবস্থাতেও হাতজোড় করে বাঁচার আকুতি করছে। কিন্তু লোক দুটোর উপর এর কোনো প্রভাবই পড়ছে না। তারা এগিয়ে মৌ এর উপর ঝুঁকে দাঁড়ালো। এরপর মৌ এর হিজাবটা ধীরধীরে খুলে ফেললো। এতে মৌ এর মুখমণ্ডল, চুল উন্মুক্ত হয়ে পরলো। তাদের মধ্যে একজন মৌ এর মুখ, গলা এবং ঠোঁটের কাছে বাজেভাবে স্পর্শ করে বললো,
” আজকে তো তোর সব শ্যাষ হয়ে যাইবো তাই না?” এই বলে লোকটি পৈশাচিক হাসি দিলো। অপর লোকটি মৌ এর বোরকা উঠিয়ে পায়ে বাজে স্পর্শ করে বললো,
” আজকে তুই এই গলি দিয়ে না গেলে আমাগোর দিনটাই খারাপ যাইতো।”

এদিকে মৌ আর সহ্য করতে পারছে না। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে তার। মস্তিষ্ক পুরোপুরি শূন্য অনুভূত হচ্ছে। তার মনে শুধু একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে, “আজ আমার ইজ্জত রক্ষা পাবে তো?”
সে মনেপ্রাণে আল্লাহকে ডাকছে। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইছে। এদিকে লোক দুটো মৌ এর শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খুব বাজেভাবে স্পর্শ করছে। চোখ বন্ধ করে, হাত দুটো শক্ত মুঠো করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সবটা সহ্য করছে মৌ। আর পারছে না সে। মরণ যন্ত্রণার মতো যন্ত্রণা হচ্ছে তার। আর কতো সহ্য করবে সে? কেউ তার শেষ রক্ষা করতে আসবে তো? আয়ান কোথায়? এখনো আসছে না কেনো? তার অফিস তো এই এলাকার কাছাকাছিই। তাহলে এতো দেরি হচ্ছে কেনো আসতে?
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না মৌ। চোখের পাতা বন্ধ রেখে জল ফেলতে ফেলতে আল্লাহর কাছে বাঁচার আকুতি করছে সে।

হঠাৎ একজনের আর্তনাদের শব্দে মৌ চট করে চোখ মেলে তাকালো। চোখের সামনে মাহতাব আর আয়ানকে দেখতে পেয়ে সে যেনো প্রাণ ফিরে পেলো৷ হৃদয়ে বয়ে গেলো প্রশান্তির এক শীতল স্রোত৷
মাহতাব নিজের হাতে থাকা কাঠের তক্তা দ্বারা লোক দুটোর একজনকে ইচ্ছামতো মারছে। অপরজন তার সহযোগীকে রক্ষা করতে হাতের কাছে থাকা ইটের টুকরা মাহতাবের দিকে ছুঁড়ে দিলো। সেটা আঘাত হানলো মাহতাবের কাঁধ বরাবর৷ এতে সে সামান্য ব্যাথা পেলেও থমকালো না। বরং পূর্ণ উদ্যমে সামনে পরে থাকা লোকটাকে পেটাতে লাগলো। লোকটা এদিক ওদিক করে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মাহতাবের হাতের মার থেকে সে কিছুতেই বাঁচতে পারছে না।
এদিকে আয়ান একনজর ক্রন্দনরত মৌ এর দিকে চেয়ে অপর লোকটিকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে মারতে লাগলো। যতটুকু সে পারছে ততটুকুই মারছে লোকটিকে। এক পর্যায়ে লোকটি দূর্বল হয়ে পরলে আয়ান তাকে ছেড়ে মৌ এর কাছে চলে আসে। মৌ এর হাতের এবং মুখের বাঁধন খুলে পাশে পরে থাকা হিজাব দিয়ে তাকে জড়িয়ে নিজের মধ্যে আগলে নিলো আয়ান। এতক্ষণ পর আয়ানকে পেয়ে মৌ তাকে জাপটে ধরে দ্বিগুণ গতিতে কান্না শুরু করে দিলো। আয়ান মৌ এর মাথায় হাত বুলিয়েও মৌ এর কান্না থামাতে পারছে না।
এদিকে মৌ এর এ অবস্থা দেখে মাহতাবের রাগ আগের চেয়েও বহুগুণে বেড়ে গেলো। সে নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কাঠের মোটা তক্তা দিয়ে লোক দুটোকে মেরে চলছে৷ সাথে পা দিয়ে লাথিও দিচ্ছে। একপর্যায়ে সে ক্লান্ত হয়ে পরলে মারা বন্ধ করে দেয়৷ লোক দুটোর অবস্থাও এতক্ষণে নাজেহাল হয়ে পরেছে। তাদের মধ্যে নূন্যতম শক্তিটুকুও অবশিষ্ট নেই যাকে আশ্রয় করে তারা এ জায়গা হতে পালিয়ে যেতে পারে।

মৌ কাঁদতে কাঁদতে আয়ানের বুকে লুটিয়ে পরলো। মাহতাব কাঠের তক্তাটা ছুঁড়ে ফেলে মৌ এর দিকে এগিয়ে আসতেই আয়ান বললো,
” তুই তাড়াতাড়ি একটা এম্বুলেন্স বা সিএনজি ডাক।”

আয়ানের কথা শুনে মাহতাব তড়িঘড়ি করে পকেট থেকে ফোন বের করে এম্বুলেন্সের লোকদের ফোন দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু এম্বুলেন্স আসতে বেশ দেরি হবে বলে সে ফোন পকেটে ঢুকিয়ে মেইন রোড হতে সিএনজি আনতে চলে গেলো। মাহতাব চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই পুলিশের জিপ এসে লোক দুটোকে এরেস্ট করলো। এখানে আসার আগেই মাহতাব তার বন্ধুকে কল করে, যে এ এরিয়ার অন্তর্ভুক্ত থানায় কর্মরত আছে। মাহতাবের কল পেয়ে তার বন্ধু অতিদ্রুত দুজন কনস্টেবল নিয়ে মাহতাবের পাঠানো ঠিকানায় চলে আসে৷

মাহতাবের বন্ধুকে দেখে আয়ান ক্লান্ত গলায় বললো,
” আমি পরে থানায় এসে রিপোর্ট লেখাবো। আপনি আপাতত ওদের নিয়ে যান।”

লোকটি কোনোরূপ প্রত্যুত্তর না দিয়ে আসামীদের নিয়ে চলে গেলো। তারা চলে যেতেই আয়ান নিজের বুকের উপর থেকে মৌ কে সরিয়ে নিজের বাহুর উপর তার মাথা নামালো। মৌ এর চেহারা দেখে তার বুকের ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। সে কিছুতেই মৌ এর এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছে না। সে কখন চিন্তাও করেনি মৌ এমন পরিস্থিতির শিকার হবে৷
আয়ান ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে মৌ এর দিকে তাকালো। কি মায়া এই ঘুমন্ত চেহারায়! কি নিদারুণ কষ্ট এই ঘুমন্ত চেহারায়! আজ সে সময়মতো না আসলে কি হতো তার সামনে থাকা এ মানুষটার! যদি কোনো অঘটন ঘটে যেতো তাহলে কি সে সহ্য করতে পারতো? পারতো না। ভালোবাসার মানুষকে এতো কষ্টে দেখে কেউই ভালো থাকে না৷ কেউই তার ভালোবাসার মানুষটার কষ্ট সহ্য করতে পারে না। আয়ানও সহ্য করতে পারতো না। সে যে মৌ কে ভালোবেসে ফেলেছে!

আয়ান আলতো হাতে মৌ এর শুষ্ক ঠোঁটজোড়া ছুঁয়ে দিলো। শুকিয়ে আসা পুরো মুখমণ্ডলে হাতের ছোঁয়ায় ভরিয়ে দিলো। খানিক বাদে মৌ এর পুরো মুখমণ্ডল সে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিলো আর বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,
” তোকে ভালোবাসি মৌ। খুব ভালোবাসি।”

.

মৌ এর জ্ঞান ফিরেছে কিছুক্ষণ আগে। দু বাড়ির সবাই তার আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চুপচাপ বসে আছে। মৌ মাথা নিচু করে নিরবে কেঁদে চলছে। জান্নাত এবং অহনা নিচু স্বরে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে তারা সফল হচ্ছে না। মৌ এর কান্না কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না।

জহির ইসলাম নির্বাক বসে থেকে খানিক সময় মৌ কে পর্যবেক্ষণ করলেন। এরপর ঠাণ্ডা স্বরে জিজ্ঞাস করলেন,
” ঐ পথ দিয়ে আসা যাওয়া করো রোজ রোজ?”

মৌ কান্নার দমকে কিছু বলে উঠতে পারছিলো না। তবুও বেশ কষ্টেসৃষ্টে চেষ্টা করে সে বললো,
” না আব্বু। ভার্সিটি থেকে বের হওয়ার পর অনেকক্ষণ যাবত রিকশার জন্য অপেক্ষা করেও রিকশা পাচ্ছিলাম না। এজন্য হাঁটা শুরু করি। মেইন রোডে হাঁটতে বিরক্ত লাগছিলো বলে গলি ধরে হাঁটা শুরু করি। অন্যান্য দিন ঐ গলি এতো সুনসান থাকে না। কিন্তু আজকে…..” এই বলে সে কান্নায় ভেঙে পরলো। আয়ান তার কান্না দেখে এগিয়ে এলে সে বসে থাকা অবস্থাতেই আয়ানকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়। এবার নিরবে নয় বরং প্রবল শব্দে কান্না শুরু করে দেয়।

মৌ এর কান্না দেখে আয়ান সবাইকে ইশারায় চলে যেতে বললো। অহনা, মৌ এর কাছে থেকে যেতে চাইলেও আয়ান তাকেও চলে যেতে বলে। ফলে সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সবার সাথে চলে যায়।

বেশ কিছুক্ষণ পর মৌ এর কান্না থেমে এলে আয়ান তাকে ছেড়ে তার সামনে বসে পরলো। কাতর গলায় সে মৌ কে বললো,
” এতো কান্না করিস না মৌ। অসুস্থ হয়ে পড়বি তো।”

মৌ প্রত্যুত্তরে কিছু বললো না। কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর হঠাৎ ক্ষীণ গলায় বলে উঠলো,
” ওরা আমার শরীরের প্রতিটা অংশ ছুঁয়ে দেখেছে। ” এই বলে সে নিজের গলা, পেট, হাত, পায়ের দিকে ইশারা করে করে বলতে লাগলো,
” এই যে, এখানে ওরা ছুঁয়েছে আমাকে। এখানে এখানে…..” বলতে বলতে সে আবারো কান্নায় ভেঙে পরলো। বারবার তার চোখের সামনে আজকের ঘটনা ভেসে উঠছে।

মৌ কে এতো কাঁদতে দেখে আয়ান এগিয়ে তাকে নিজের বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরলো। তার এ কান্না দেখে আয়ানের বুক যে কষ্টে চিঁড়ে যাচ্ছে তা হয়তো মৌ বুঝতে পারছে না। বুঝবেই বা কি করে। সে তো এখনও সে দুঃসহ স্মৃতিকে ভুলে যেতে পারছে না।
আয়ান, মৌ এর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
” এতো কান্না করছিস কেনো? আমি তো আছি তোর সাথে। আমি থাকতে ভয় কিসের?”

মৌ কোনো প্রকার জবাব দিলো। তার কান অব্দি আয়ানের কথা পোঁছাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু তা কোনো কাজ করছে না৷ আয়ান আবারো বললো,
” কিছুই হয়নি তো তোর। আমি আর মাহতাব তো সময়মতো পৌঁছে গিয়েছিলাম তাইনা? ”

মৌ নিশ্চুপ। আয়ান কিছুক্ষণ পর ক্ষীণ গলায় বললো,
” তোকে অনেক ভালোবাসি মৌ৷ প্লিজ আর কাঁদিস না৷ তোর কান্না আমি সহ্য করতে পারছি না৷ কান্না থামাতে তুই যা করবি আমি তাই মেনে নিবো। কিন্তু দয়া করে কান্না থামা।”

আয়ানের কথাগুলো মৌ এর কানে এলেও তা ঠিকঠাক বুঝতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগলো তার। কিন্তু যখন সে আয়ানের বলা কথাগুলোর অর্থ উদ্ধার করতে পারলো, তখন সে আয়ানকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো এবং দ্বিগুণ স্বরে কান্না করতে করতে বললো,
” আমিও আপনাকে ভালোবাসি৷ অনেক অনেক ভালোবাসি আপনাকে।”

.

ঐ ঘটনার পর প্রায় দুই মাস কেটে গিয়েছে। এখন মৌ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মাঝেমাঝে অতীতের কালো ছায়ার মতো সেই ঘটনা তাকে হানা দেয়। সে-সব মনে পরলেই সে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে থাকে। তবে আয়ান বাসায় না থাকলে সে অহনার রুমে গিয়ে অহনার সাথে কথাবার্তা বলে সেসব ভুলে যেতে চেষ্টা করে। সেদিনের পর থেকে প্রথম প্রথম আয়ানের স্পর্শতেও ভয়ে শিউরে উঠতো মৌ। কিন্তু দিন যেতে যেতে নিজেকে শক্ত করে সবটা সামলে নিয়েছে সে। তার এ কাজে আয়ান যতটুকু পেরেছে ততটুকু সাহায্য করেছে। তাদের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা এ সময়গুলোতে আর গাঢ় এবং মজবুত হয়েছে।

সন্ধ্যার দিকে অফিস শেষে বাসায় ফিরেই মৌ এর হাসিমাখা মুখখানি দেখে আয়ানের সারাদিনের ক্লান্তি, কর্মব্যস্ততা সব যেনো নিমিষেই দূর হয়ে গেলো। সে মৌ এর দিকে তাকিয়ে ফিরতি হাসি দিয়ে কাপড়চোপড় আর তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

পাঁচ মিনিট পর আয়ান ফ্রেশ হয়ে এলে মৌ তাকে জিজ্ঞাস করলো,
” কফি খাবেন?”

” হুম। দু মগ কফি নিয়ে আয়। ব্যালকনিতে বসে খাবো আর গল্প করবো।”

মৌ হালকা হাসি দিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো কফি বানাতে। প্রথমে সে তার শ্বশুর শাশুড়ীর জন্য দু কাপ চা বানিয়ে তাদের রুমে দিয়ে আসলো। পরে তিন মগ কফি বানিয়ে এক মগ অহনাকে দিয়ে এসে বাকি দু মগ নিজেদের জন্য নিয়ে রুমে চলে এলো সে।

আয়ান চুপচাপ ব্যালকনিতে বসে আছে। তার দৃষ্টিজোড়া সন্ধ্যার আকাশের দিকে। মৌ কখন এসে তার পাশে বসেছে, সে খেয়াল করেনি৷ মৌ যখন তার হাতে কফি দিলো তখন সে টের পেলো। তার এমন আনমনা ভাব দেখে মৌ হালকা হেসে বললো,
” কি দেখছিলেন?”

আয়ান স্মিত হেসে কফির মগে অল্প চুমুক দিয়ে বললো,
” মেঘ দেখছিলাম। ”

মৌও এবার আকাশের দিকে তাকালো। সন্ধ্যার আকাশ দেখতে বড্ড সুন্দর লাগছে! লাল, কমলা, নীল, কালোসহ আরো কয়েকটা রঙের মিশ্রণে সন্ধ্যার আকাশটা মোহময় রূপে পরিনত হয়েছে। এ দৃশ্য হাজারবার দেখলেও চোখজোড়া ক্লান্ত হবে না৷ বরং বারংবার নতুনভাবে এ আকাশের সৌন্দর্য চোখে এসে ধরা দিবে। প্রকৃতিপ্রেমীরা চাওয়া সত্ত্বেও এ দৃশ্য হতে চোখ ফিরিয়ে নিতে পারবে না৷

মৌ আকাশের দিকেই তাকিয়ে আছে৷ আয়ান নিজের হাত থেকে কফির মগটা পাশের ছোট্ট টেবিলে রেখে দিলো। এরপর অতি সন্তর্পণে মৌ এর হাত থেকেও কফির মগটা নিয়ে টেবিলে রেখে দিলো। কিছুক্ষণ থেমে একদম হুট করে সে মৌ এর অপর পাশের বাহু ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে। মৌ আকাশের সৌন্দর্যে এতোটাই বিভোর হয়ে আছে যে কোন মূহুর্তে আয়ান তার হাত থেকে কফির মগ নিয়েছে তা সে টের পায়নি৷ আয়ানের স্পর্শ পেয়ে সে ধ্যান ফিরে পেয়ে বললো,
” কি হয়েছে?”

আয়ান হালকা হেসে বললো,
” কিছু হয়নি৷ তোকে এভাবে পাশে ধরে রাখতে মন চাইলো তাই এমনটা করলাম।”

মৌ প্রত্যুত্তরে কিছুই বললো না৷ বরং আয়ানের দিকে তাকিয়ে স্মিত হেসে দিলো। কিছুক্ষণ পর আয়ান আকাশের দিকে তাকিয়ে আঙ্গুল উঁচিয়ে বললো,
” ঐ যে, দুটো মেঘের আবছায়া দেখা যাচ্ছে। দেখতে পারছিস?”

আয়ানের ইশারা মোতাবেক মৌ সামনে তাকাতেই সেই মেঘের আবছায়া দেখতে পেলো। বললো,
” হুম, দেখতে পাচ্ছি।”

আয়ান বিস্তৃত হেসে বললো,
” এই মেঘ দুটোর মধ্যে একটা তুই, আরেকটা আমি৷ দেখিস….আর কিছুক্ষণ পর মেঘ দুটোর সন্ধি ঘটবে। কোনো কথাবার্তা না বলে ঐ দিকেই তাকিয়ে থাক।”

মৌ সেদিকেই তাকিয়ে রইলো। এদিকে সন্ধ্যার আকাশ ধীরেধীরে নিকষ কালো আঁধারে ছেয়ে যাচ্ছে এবং অপরদিকে মেঘ দুটোর সন্ধি ঘটছে। আরো কিছুক্ষণ পর দুটো মেঘ যখন মিলে একাকার হয়ে গেলো তখন আয়ান ঝলমলে গলায় বললো,
” দেখেছিস? দুটো মেঘের সন্ধি ঘটেছে। যেমনটা আমাদের ঘটেছিলো…..”

মৌ হালকা হেসে আয়ানের কাঁধে মাথা রেখে বললো,
” হুম….আয়ান এবং মৌ এর মেঘসন্ধি ঘটেছে। রাগ, কষ্ট, মান-অভিমান শেষে তাদের মেঘসন্ধি ঘটেছে।

❤️❤️❤️ সমাপ্ত ❤️❤️❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here