Three Gangsters💕,Part-6

Three Gangsters💕,Part-6
Sumaiya Moni”

ঠকক…ঠকক…

মিশু: দাঁড়া আমি দেখছি…..।

মিশু দরজা খুলে যা দেখলো,তাতে ওর মাথা পুরাই গরম হয়ে গেল।

দরজার উপর পাশে সেই বখাটে ছেলে জুয়েল,রাহাত,রেজবি ওরা তিন জন দাঁড়িয়ে‌ আছে মাতাল অবস্থায়। ওদের শরীর থেকে মদের বিশ্রী গন্ধ আসছিল। মিশু ওর নাক হাত দিয়ে চেপে ধরে বললো…..

মিশু: ওই তোরা এখানে? তাও আবার এতো রাতে?…..[ রাগি কন্ঠে ]

রাহাত: আমরা তোমাদের একটা কথা বলতে এসেছি….নিশু ও কথা কে ডাক দেও…[ মাতাল কন্ঠে বললো ]

মিশু: ডাক দেবো না…এখান যা তাড়াতারি…. [ ঝাড়ি দিয়ে বললো ]

রাহাত: যাবার জন্য আসি নি….আজকে আমরা বলেই তারপর পর যাবো…।[ মাতাল কন্ঠে ]

রেজবি: হ্যাঁ বলেই তারপর যাবো। [ মাতাল কন্ঠে ]

নিশু: মিশু কে এসেছে রে……হেই তোরা??……[ গেটের সামনে এসে বললো ]

কথা: ওই তোদের সাহস তো কম না। এতো রাতে আমাদের রুমের সামনে এসে মাতলামি করছিস‌…..[ বেশ রেগে ]

রাহাত: আমাদের কাছে এখন দিন মনে হচ্ছে। তাই আমরা তোমাদেরকে আমাদের মনের কথা বলতে এসেছি…….[ মাতাল কন্ঠে ]

রেজবি: ঠিক..ঠিক..।

কথা: ছিঃ কি বিশ্রী গন্ধ আসছে….[ নাক ধরে ]

নিশু: ওই তোরা যা এখান থেকে। না হলে কিন্তু বাড়িওয়ালা আন্টি কে ডাক দেবো।

জুয়েল: যাকে মন চায় তাকে ডাক দেও,,,কিন্তু আমরা আজ যাবো না না না……।

রাহাত: হ্যাঁ যাবো না।

মিশু: নিশু,কথা ভিতরে চল ওরা এখানেই দাঁড়িয়ে থাকুক……[ এটা বলে ওরা ভিতরে গিয়ে ধুম করে ওদের মুখের উপর গেট লাগিয়ে দিল ]

রাহাত: তেজ দেখাচ্ছে….ওই গেট খোল বলছি। গেট খোল….[ দরজায় কড়া নেড়ে ]

রেজবি: গেট খোল বলছি….।

মিশু: মন চাচ্ছে খুন করে ফেলি …….[ রেগে ]

নিশু: দাঁড়া….. [ গেট খুলে রাগি মুড নিয়ে ওদের সামনে দাঁড়ালো ]

মিশু,কথাও রাগী মুড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

জুয়েল: শোনো ! আমরা একটা কথা বলবো তোমরা শুধু শুনবে ওকে….। এই বল তোরা।….[ মাতাল কন্ঠে ]

জুয়েল,রাহাত, রেজবি: আমি তোমাকে………

বাকি টা শুনার আগেই ওরা ভিতরে গিয়ে আবারও ধুম করে গেট লাগিয়ে দিল।

জুয়েল: যাহ্…শুনলই না।

রাহাত: ওই গেট খোল বলছি।

রেজবি: ভেঙে ফেলবো কিন্ত….।

জুয়েল: কিহ?

রেজবি: গেট..।

রাহাত কিছু বলতে যাবে এর মধ্যে ওরা দেখলো মিশু,নিশু,কথা গেট খুলে ঝাড়ু,লাঠি,খুনতি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা এটা দেখে দৌড়…. ।

মিশু: ওই দাঁড়া কই যাস…

নিশু: দাঁড়া না একটু,এগুলা দিয়ে আদর করে দেই তোদের।

কথা: কুত্তার হাড্ডি গুলা। আবার আসলে ঠেং ভেঙে দেবো।…..[ জোরে চিল্লিয়ে বললো ]

মিশু: শালারা ভয় পাইছে হুহহহ….।

ওরা ভিতরে চলে গেল। ঘুমাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক সেই সময় আবার ও ওদের দরজায় কড়া নেড়ে উঠলো।

মিশু: ওরাই হবে হয়তো। দাঁড়া ওদের আজকে উচিত শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো।

নিশু: কি করবি??

মিশু: আমি গেট খুলার সাথে সাথেই বাহিরের লাইট অফ করে দিবি,তারপর আমি এই চাদরটা ওদের মুখের উপর দিয়ে ডেকে ধরবো,,,আমি যখন তোদের ডাক দেবো তখন তোরা এসেই ওদের কে মারতে শুরু করবি। ঠিক আছে…. ।

কথা,নিশু: ওকে ওকে।

মিশু: আচ্ছা ঠিক আছে। আমি যাচ্ছি তাহলে।

এর মধ্যে কড়া নেড়েই যাচ্ছে। মিশু হাতে চাঁদর নিয়ে আস্তে করে গেট খুলার সাথে সাথে ভিতর থেকে লাইট অফ করে দেয়,এই শুজুগে মিশু চাঁদর দিয়ে ওদের মুখ ডেকে দেয়…..।

মিশু: নিশু,কথা তাড়াতারি আয়…..।

নিশু,কথা ওরা এসেই ওদের হাতের ঝাড়ু,লাঠি দিয়ে উরা-ধুরা মারতে শুরু করলো। আর মিশু গুশি,লাথি মেরেই যাচ্ছে । ওদের মুখ দিয়ে শুধু আম্মা গো,,বাবা গো শব্দ বের হচ্ছে ।

কিছুক্ষন পর ওরা থেমে গেল। মারতে মারতে ওরা তিন জন হয়রান হয়ে গেছে। জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো।

মিশু: অনেক মেরেছি…এই মারের কথা যেনো মনে থাকে। এখন তো রাম ধোলাই দিছি পরের বার আসলে গনো ধোলাই দেবো হুহহহ…..[ চিল্লিয়ে বললো ]

কথা: কথা একটু কথা শুনে যাও না….জনোমের কথা শুনাইয়া দিছি আজকে….[ বেংঙিয়ে বললো ]

নিশু: মনে যা চাইতাছে আরো কয়ডা দেই…।[ লাথি দিয়ে ]

মিশু: না থাক আর দেবার দরকার নেই । মরে যাবে। চল ভিতরের যায়।

কথা: হ চল…

নিশু,কথা,মিশু ভিতরে যাবার আগে একটা একটা লাথি মেরে আসলো ওদের গায়ে। মিশু চাঁদরটা টান দিয়ে নিয়ে ভিতরে চলে গেল। ভিতরে গিয়ে বাহিরের লাইট জ্বালিয়ে দিল । নিচে চিত ও কাত হয়ে শুয়ে আছে সাব্বির ও ফাহিম। হ্যাঁ! ওদের কেই মেরেছে মিশু,নিশু,কথা। লাইট অফ ছিল তাই মিশু দেখে নি সামনে কারা ছিল। তাই ওই তিন জন ভেবে এই দুই জন কে রাম ধোলাই দিছে ওরা ।

সাব্বির: আমার পা,হাত সব শেষ…..[ ব্যাথায় কুকড়িয়ে ]

ফাহিম কিছু বলছে না চিত হয়ে পরে আছে…..।

সাব্বির তাকিয়ে দেখে ফাহিম চিত হয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে।

সাব্বির: ওই ফাহিম তুই ঠিক আছিস…..[ ফাহিম কে ধাক্কা দিয়ে ]

ফাহিম হুট করেই কেঁদে ফেললো।

ফাহিম: বাবা গো আমি জন্মেও এমন মার খাই নাই…যেই মাইরডা হেরা আমারে মারছে। আমরা কি চুরি করতে আইছিলাম নাকি…..ওও মা গো….।

সাব্বির: আগেই বলছিলাম আমি যাবো না যাবো না। এখন কি হলো…. রাম ধোলাই খাইলাম। এখান থেকে চল,কেউ যদি আমাদের দেখে ফেলে তাহলে আবারও ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে।

ফাহিম: হু চল মোরা যায় এহান থেকা। কিন্তু এই চুড়ি।…….[ হাত দিয়ে চুড়ি দেখিয়ে ]

সাব্বির: রাখ তোর চুড়ি…মারের চোড়ে চুড়িও ভেঙে ফেলসে। তুই চল এখান থেকে ।

ফাহিম: কিন্তু ভাই মোগো মারলো ক্যা। হেইডা জিজ্ঞাইতে চাই মুই।

সাব্বির: তোর কি আরো মার খাবার শখ আছে। থাকলে তুই জিজ্ঞা আমি যাই।

ফাহিম: না ভাই থাক আমি আর মাইর খাইবার চাই না।চল যাই গা।

সাব্বির উঠে দাঁড়িয়ে ফাহিম কে টেনে তুললো। ওরা বাহিরে গিয়ে গাড়িতে বসে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল।ওরা যেতে যেতে বলে দেয় এখানে কেন এসেছিল।

মেলাতে ওদের তিন জন উপর নজর রেখে ছিল ওমরদের বডিগার্ড তিন জন।ওরাই বলে ছিল ওদের উপর নজর রাখতে। ওরা যখন চুড়ির দোকান থেকে মন খারাপ করে বের হয়ে গেল তখন বডিগার্ড রা জিজ্ঞেস করে সেই চুড়ির দোকানে গিয়ে । সেখানে গিয়ে বডিগার্ড রা জানতে পারে চুড়ি কিনতে পারে নি টাকা কম থাকায়। এই খবর ওমর,নীল,রাফি দের ফোন করে বলে। ওরাই তখন বডিগার্ড দের ওইখান থেকে নীল,লাল,খয়েরী রঙের চুড়ি কিনে নিয়ে আসতে বলে। চুড়ি কিনে নিয়ে আসে ঠিকি কিন্তু কাকে দিয়ে এই চুড়ি পাঠাবে এই টেনশন পরে যায় ওরা। রাফি বলে সাব্বির ও ফাহিমের কথা। ওমর,নীল,রাফি সাব্বির কে এই কথা বলাতে সাব্বির অনেক বার না করে ছিল। কিন্তু পরে ভাইদের কথায় যাবার জন্য রাজি হয়ে যায়। তারপর চুড়ি দিতে গিয়ে ওরা দুই জন রাম ধোয়াই খেয়ে কাহিল হয়ে আসে আর কি 😁।

ওরা বাসায় পৌঁছে গেল । ফাহিম কোমড়ে আর সাব্বির খোড়াতে খোড়াতে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে ওমর,নীল,রাফির কাছে যায়।

ওমর: কিরে তোদের এই অবস্থা কি করে হলো??

রাফি: কেউ কি তোদের মেরেছে?

নীল: মুখের এই অবস্থা কেন?

সাব্বির: ভাই আপনে গো চুড়ি দেওয়ার চক্করে আমি তাদের হাতে কেলানি খাইছি…..[ করুন স্বুরে বললো]

ফাহিম: শালা তোরড়া কও মোরডা কও না। মুইও যে উধুম কেলানি খাইছি।

সাব্বির: হ ভাই আমার সাথে ফাহিম ও কেলানি খাইছে।

ওমন: আচ্ছা তোরা কেলানি খেলি কি করে সেটা তো বল।

সাব্বির সব ঘটনা খুলে বললো।

নীল: কি! ওরা তোদের মেরেছে?……[ কিছুটা রেগে ]

ওমর: ওদের সাহস তো কম না।..

রাফি: ওদের খবর আছে ।

সাব্বির: ভাই এমন মাইর মারছে,চেহারার নকশা পাল্টাইয়া দিয়েছে আমার।

ফাহিম: মোর শরীরের হগোল জাগায় ব্যাথা বানাইয়া দিছে অহহহ…..।

নীল: আচ্ছা তোরা যা..রুমে গিয়ে রেস্ট নে…আমরা দেখছি কি করা যায়।

রাফি: হ্যাঁ! রুমে যা তোরা ।

সাব্বির: আচ্ছা ভাই। ফাহিম আয়…..[ বলেই ফাহিম কে নিয়ে চলে যায় ]

সাব্বির, ফাহিম চলে যাবার সাথে সাথে ওরা তিন জন হাসিতে ফেটে পড়লো। এতোক্ষন হাসিটা অনেক কষ্টে আটকে রেখেছে।

নীল: ওরা তিন জন পারেও বটে…[ হাসতে হাসতে বললো ]

রাফি: কিভাবে মেরেছে ওদের….[ হেসে ]

ওমর: চোর মনে করে ওদের কেলিয়ে দিছে মেবি…..[ বলেই হেসে দেয় ]

নীল: হ্যাঁ!

রাফি: কেন মেরেছে সেটা কালকে জিজ্ঞেস করবো নিশুকে। আমি ঘুমাতে গেলাম।

ওমর: ওকে গুড নাইট….।
.
.
.
.
সকালে….

ওরা তিন জন যে যান কাজে চলে এলো। মিশু,নিশু কাস্টমার দের খাবারের অডার লিখছিল। হুট করেই নিশুর ফোন বেজে উঠলো।

নিশু: হ্যালো কথা বল।

কথা: আজ রাতে একটা পার্টি আছে। এনামুল স্যার তোদের পার্টিতে ইনভাইট করেছে। তোরা তাড়াতারি বাসায় চলে আসিস কিন্তু।

নিশু: যাবো না তোর সাথে পার্টিতে। আগের বার জমের বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলি। এখন না আবার জাহান্নামে নিয়ে যাস।

কথা: তার মানে যাবি না।

নিশু: যাবো।

কথা: ঢং কম করে তাড়াতারি বাসায় এসে পরিস,রাখছি।

নিশু: আরে কথা শোন…..কুত্তা কেঁটে দিছে।

নিশু,মিশু কে নিয়ে বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে দেখে ওদের বাসায় রাফি,ওমর,নীল রা সোফায় বসে আছে। ওদের কে দেখে নিশু ও মিশুর ভয়তে কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে যায়। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে ওরা।

ওমর: কথা কোথায়??…….[ গম্ভীর কন্ঠে ]

নিশু:…………….

মিশু: …………….

ওমর: কথা কোথায়……[ ঝাড়ি দিয়ে বললো ]

নিশু বলার আগেই কথা গান গাইতে গাইতে রুমে ঢুকে………।

কথা: পাশের বাড়ির চেংড়া পোলা প্রেম করিতে চায়…হিন্দি হিন্দি….[ ওদের উপর চোখ পড়ার সাথে সাথে ] আল্লাহ্…… [ বলেই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ]

ওমর: কোন ছেলেটি প্রেম করতে চায়??……[ রাগী কন্ঠে ]

কথা ভয় পেয়ে যায়।এখন তাকে কিভাবে বুঝাবে এটা একটা গান ছিল ।
.
.
.
.
.
.
Continue To……😁.

[ অনেকেই বলেছে গ্যাংস্টার রা প্রেম করবে আর ইজ্জত যাবে সাব্বিরের,আসলেই ঠিক তাই 😂 ]