Three Gangsters💕,Part-3+4

Three Gangsters💕,Part-3+4
Sumaiya Moni”.
Part-3

শুরু হলো কথার Emotional blackmail.অনেক ভাবে বুঝিয়ে শুজিয়ে ওদের দুই জন কে রাজি করিয়েছে।মিশু ও নিশুর দিন টাই মাটি করে দিল কথা।ওরা রেডি হয়ে 3.G.H এ পৌছে গেল। বেচারিরা জানেও না ওরা কাদের বাসায় এসেছে।

রিক্সা থেকে নেমে বাড়ির ঠিকানা মিলাতে লাগলো কথা।

কথা: হ্যাঁ! এটাই সেই 3.G.H…মিশু, নিশু আয় তোরা…।
[ পিছনে তাকিয়ে দেখে ওরা দু জন নেই ] আরে গেল কই??

বামে তাকিয়ে দেখে ওরা দুই জন সিসি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে উপরে তাকিয়ে ইচ্ছা মত মুখ বেকিয়ে বেংঙ্গাচ্ছে….

কথা মাথায় হাত দিল ওদের কান্ড দেখে…

কথা ওদের কাছে গিয়ে বললো।

কথা: তোরা ভালো হবি না কোনো দিন ও….।

মিশু: আরে আয় না তুই ও আমাদের সাথে বেংঙ্গা…ছোট কালে কত করেছি তাই না….।

নিশু: হ রে…। আর কত দৌড়ানি খাইচ্ছি…[ বলেই হেসে দিল ]

কথা: এখন তোরা ছোট না…বেংঙ্গানো বন্ধ কর। আর আয় আমার সাথে।

মিশু: হুমম চল… [ মুখ বেকিয়ে ]

নিশু: দিল না ঠিক মত বেংঙ্গাতে…..।

সিসি টিভিতে ওদের এই বেংঙ্গানোর দৃশ্য দুই জন বডিগার্ড দেখেছে। ওরা আহম্মক হয়ে গেছে। আজকাল এগুলা বড় রাও করে সেটা ওদের জানা ছিল না।

কথা: এই বাড়িতে এসেছি আমরা । বাড়ির ভিতরে চল..।

মিশু: আমি যাবো না…।

নিশু:আমিও যাবো না!

কথা: কেন??…..[ ভ্রু কুঁচকে ]

মিশু: আরে এই বাড়ির সিসি ক্যামেরায় এতোক্ষন আমার বেংঙ্গাইছি। ভিতরে গেলে যদি বকা দেয়।

নিশু: বা যদি মারে….।

কথা: ও তাই নাকি। যা তোরা আরেকটু বেংঙ্গিয়ে আয়….।

মিশু : মজা করছিস কুত্তি… ।

নিশু:……😤

কথা: না আমি ঠিক বলছি… ।

মিশু: চুপ কর..।

কথা: ও মাই গড,,,দেরি হয়ে যাচ্ছে । ভিতরে চল তাড়াতারি…. [ ওদের হাত ধরে টেনে ভিতরে নিয়ে গেল ]

ভিতরে প্রবেশ করার আগেই বডিগার্ড রা ওদের বাঁধা দেয়….।

বডিগার্ড: আপনারা কারা??

কথা: আমরা এনামুল হক স্যারের লোক ডেকোরেশনের কাজের জন্য এসেছি।

বডিগার্ড: আচ্ছা ভিতরে যান আপনারা ।

কথা: আয় চল।

মিশু: এই আমাদের কোথায় নিয়ে আসলি রে….এটা বাড়ি নাকি রাজ প্রাশাদ।……[ অবাক হয়ে বাংলোর দিয়ে তাকিয়ে ]

নিশু: ……[ হা করে তাকিয়ে আছে ]

কথা: আমিও তো বুঝতে পারছি না! ঠিক জাগায় এসেছি তো নাকি।…..[অবাক হয়ে ]

মিশু: আচ্ছা এই 3.G.H এর মানেটা কি রে….।

নিশু: কেমনে কমু?

কথা: আমিও জানি না… দাঁড়া স্যারের কাছে কল দেই ।দেখি স্যার কোথায় আছে……।

কল দেবার আগেই এনামুল হক ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো ।

এনামুল হক: তুমি আসতে এতো দেরি করলে কেন??
কত কাজ পরে আছে যানো?

কথা: স্যরি স্যার একটু লেট হয়ে গেল….।

এনামুল হক: যাই হোক..ওরা কে?…..[ মিশু ও নিশুর উদ্দেশ্যে বললো ]

কথা: স্যার ওদের এক দিনের পাটনার হিসাবে এনেছি। আপনি না বলেছিলেন তাই ওদের নিয়ে আসলাম।

এনামুল হক: যাক ভালো করেছো।টাকা নিয়ে টেনশন করার দরকার নেই ।টাকা পেয়ে যাবে তোমরা । এখন উপরে যাও আর সাথে করে এই তিনটি বাক্স নিয়ে যাও। বাংলোর উপরের অংশ এখনো সাজানো হয় নি। উপরে লিমন রা আছে । ওদের কাছে বাক্স গুলো দিয়ে আসো।

কথা: ওকে স্যার…. ।

এনামুল হক: আর হ্যাঁ! তাড়াতারি করে সাজাতে বলবে। কাজে গাফলতি করলে কিন্তু কারো নিস্তার নেই। এরা কারা তোমরা তো জানোই!!

কথা: স্যার আমরা জানি না এখন আমরা কাধের বাড়িতে এসেছি, আর এই 3.G.H এটার মানে কি স্যার???

এনামুল হক: কোন জগৎ এ থাকো 3.G.H এর মানে জানো না…?……[ কিছুটা ধমকের স্বুরে ]

কথা: না মানে স্যার…..

এনামুল হক: Three Gangsters এর নাম শুনেছো???

কথা: জ্বী স্যার শুনেছি….।

এনামুল হক: আমরা এখন তাদের বাড়ি আছি।

কথা,মিশু, নিশু চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। ভয়তে রিতিমতো ওদের হাত-পা কাঁপছে। কারন এরা যে খুব বড় মাপের গ্যাংস্টার সেটা ওরা জানে।

এনামুল হক:আর 3.G.H এর মানে হচ্ছে….Three Gangsters House…বুঝতে পেরেছো। ভয় পেও না। যাও এবার কাজে লেগে পড়ো তোমরা….. [ বলেই সেখান থেকে চলে যায় ]

মিশু: কথা কুত্তি আমাদের জমের বাড়ি নিয়ে এছিস।

নিশু: হ …আর কোন জাগা পেলি না। মারার জন্য এখানেই নিয়ে আসলি আমাদের…..।

কথা: ওই‌ বক বক কম কর আমি জানতাম নাকি এটা 3.G দের বাড়ি। স্যার কি বললো শুনিস নি তাড়াতারি কাজে লেগে পর। না হলে মরা ছাড়া উপায় নেই….।

মিশু: কুত্তি….. আমি অভিশাপ দিলাম কথার বাচ্চা তোর কঁপালে যেনো এদের মত একটা গ্যাংস্টার স্বামী ঝুটে। তারপর তোরে যেনো থাবরাইয়া কননাইয়া সোজা করে হুহহহ…..।

নিশু: আমিও একি অভিশাপ দিলাম কথার বাচ্চারে….।

কথা: তোরা কি মনে করিস আমি তোদের ছেড়ে দেবো! আমিও অভিশাপ দিলাম এদের চেয়েও বড়টা যেনো তোদের কঁপালে ঝুটে হুমমম।

এটা বলে মুখ বেকিয়ে বক্স নিয়ে যে যার মত উপরে যেতে লাগলো ।
.
.
.
.
মিশু: ওহ কি বারি….আর নিতে পারছি না। কোথায় যে এসে ফাশলাম। বক্সের জন্য সমানে কে আছে সেটাও দেখতে পারছি না।………[ হাঁটসে আর বলছে ]

মিশুর সামনে থেকে নীল হেঁটে আসছে ফোন টিপতে টিপতে…..।

মিশু:মনে হয় সামনে থেকে কেউ আসছে। তাকেই বলি বক্সটা একটু ধরতে….। এই যে ভাই বক্সটা একটু দরুন না……

নীল: হোয়াট! আমি বক্স ধরবো???…….[ কিছুটা অবাক হয়ে ]

মিশু: কেন ধরলে কি জাত-পাত চলে যাবে নাকি??

নীল: What is it জাত-পাত??……[ অবাক হয়ে ]

মিশু: জাত-পাত চিনে না কোন জাতের লোক আপনি ??

নীল: দেখো তুমি কিন্তু বেশি কথা বলছো….?

মিশু: আচ্ছা আর বলবো না আপনি একটু বাক্সটা ধরুন…….[ মিশু বাক্সটা নীলের হাতে ধরিয়ে দিল]

নীল বাক্সটা হাতে নিয়ে নিচে নামিয়ে রাখলো…..।

মিশু: ওহ ভাই আর বইলেন না আসার পর থেকে কত যে কাজ করলাম……[ ওড়না দিয়ে বাতাস করছে আর বলছে ] [ডাহা মিথ্যা কথা ]

নীল রাগি মুড নিয়ে তাকিয়ে আছে।কেননা মিশু কে দেখে ঠিক চিনতে পেরেছে।

মিশু: আচ্ছা ভাই আপনি কি এই বাড়ির চাকোর…কিন্তু দেখে তো মনে হচ্ছে না। ওয়েট ওয়েট আপনার চেহারা কেমন যেনো চেনা চেনা লাগছে কোথায় যেনো দেখেছি…..[ গালে আঙুল দিয়ে ভাবতে লাগলো ]

নীল: আমি মনে করিয়ে দেই…….???

মিশু: দেন না আপনিই মনে করিয়ে দিন….!!

নীল: হাতে মাইক নিয়ে হারানো বিগপ্তি…!

মিশু: ও হ্যাঁ মনে পড়েছে মনে পড়েছে…..তাহলে আপনিই সেই চান্দু।…..[ মুখ চেপে হাসতে হাসতে বললো ] তা আপমাদের পরিচয় জানতে পেরেছেন তো??

নীল:……..[ রাগে ফায়ার হয়ে যাচ্ছে ]

মিশু: আরে এতো রাগ করেন কেন?? আমি তো মজা করছিলাম। আচ্ছা ভাই শুনুন এই বাড়িতে নাকি তিনটা 3G থাকে তাদের কে দেখেছেন। ও ও আপনি হয়তো তাদেরকে দেখেছেন। যাই হোক এদের একটার সাথে আমার সাথে একটু সেটিং করিয়ে দিন না।মানে একটু প্রেম-টেপ করতাম আর কি…….[ নীলের কাঁধের উপর হাত রেখে কথা গুলো বললো ]

নীল: [ বলে কি এই মেয়েটা । একটা শিক্ষ দিতে হবে ওকে-মনে মনে] সত্যিই তাদের এক জনের সাথে প্রেম করবে?

মিশু: আরে হ সত্যি কথা বলতেছি….।

নীল: তাদের নাম জানো? দেখেছো তাদের?

মিশু: নাহ্…

নীল: নীল,ওমর,রাফি তাদের নাম।আর আসো আমার সাথে তাদের ছবি দেখাচ্ছি।

মিশু: হুম হুম চলেন চলেন……[ খুশি হয়ে ]

নীল বড় একটা রুমে মিশুকে নিয়ে গেল।

নীল: ওইযে পর্দাটা দেখতে পাচ্ছো ওই খানে তাদের ছবি আছে….তুমি দাঁড়াও আমি পর্দাটা সরিয়ে দিচ্ছি।

মিশু: ওকে….।

নীল ওর হাত দিয়ে পর্দার কাঁপড় টা সরিয়ে দিল। বেরিয়ে এলো বড় ফ্রেমে বাঁধানো তিনটি যুবকের ছবি।

মিশু দুইটা ছবি দেখে তিন নাম্বার ছবির দিকে তাকাতেই ওর চোখ আটকে যায়। একবার ওই ছবির দিকে তাকাচ্ছে আরেক বার নীলের দিকে তাকাচ্ছে।

মিশু: আপনি ওই ছবির মধ্যে আছেন……[ অবাক হয়ে আঙুল জাগিয়ে বললো ]

নীল: হ্যাঁ! নীল আমার মান!…..[ গম্ভীর কন্ঠে]

মিশুর চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। ভয়তে কাঁপা কাঁপি করছে ওর হাত পা।

নীল ওর কাছে আসার আগেই মিশু বললো।

মিশু: মিশু তুই তো টিশু হয়ে যাবি রে……ভাগ তাড়াতারি…. [ বলেই দৌড়]

নীল: আরে যাহ পালিয়ে গেল….পালিয়ে কোথায় যাবে?…… [ বাঁকা হেসে ]
.
.
.
.
কথা: ওরে আল্লাহ্ আর কত দূর যেতে হবে কে যানে….[ হঠাৎ করেই দরজার সাথে কথার চুলের কাঠিটা আটকে গিয়ে সেখানেই পড়ে যায়।কথা সেটা টের ও পায় নি ] এই নেও এই বাক্সে যেই ফুল ও ছোট বাতি গুলো আছে সেগুলো এই খানটাই আর ওই খানটাই লাগিয়ে দেও…..[ হাত দিয়ে দেখিয়ে বললো ]

হঠাৎ করেই ওর চুলের কোপা খুলে গেল।

কথা: আরে চুলের কাঠিটা কোথায় গেল। কেমডা লাগে এখন। বাহিরে মনে হয় পড়েছে খুঁজে দেখি……।

কথা ওর চুলের কাঠিটা খুঁজতে লাগলো। কিন্তু কোথাও দেখছে না। হঠাৎ একটা রুমের সামনে থেকে গিয়ে এবার পিছনের দিকে ব্যাক করলো।

কথা: ওয়াও রুমটা তো বেশ সুন্দর…. ভিতরে যাবো নাকি। মনে হয় ভিতরে কেউ নেই, রুমটার ভিতরে গিয়ে একটু দেখে আসি। বাহ্ কি সুন্দর,ওয়াও বারান্দাও আছে দেখছি। বারান্দায় গিয়ে দেখি একটু…..[ কথা বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখতে লাগলো। সেখান থেকে বাংলোটার নিচের সব কিছু সুন্দর মত দেখা যায়।কথার মন ফুরফুরা হয়ে গেল মাঝে মাঝে সকালের শীতল বাতাস কথাকে ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে।বাতাসে কথার চুল গুলো এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে। কথা চোখ বন্ধ করে এই সুন্দর মুহূর্তটা উপভোগ করতে লাগলো ]

ওমর বাথরুমে শাওয়ার নিচ্ছিলো। শাওয়ার নিয়ে বের হয়,মাথার পানি আধো মুছা থাকায় বিন্দু বিন্দু পানি জল কনার মত বেয়ে বেয়ে ওর বুকের উপর পড়ছে।হাত দিয়ে চুল নাড়া-চাড়া করতে করতে ড্রেসিং টেবিলের সামনে যেতে লাগলো। হঠাৎ কি যেনো মনে করে বারান্দায় চোখ যায়। সামনের পা আর আগে ভাড়াতে পারলো না সেখানেই দাঁড়িয়ে পিছন থেকে এক কেশোবতী কন্যা কে দেখতে লাগলো।ক্ষনে ক্ষনে ঝিরিঝিরি বাতাস এসে লম্বা চুল গুলো ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে।ওমর হারিয়ে গেলো সেই কেশোবতীর লম্বা চুলের গহীনে। হুট করেই ওমর এর ধ্যান ভাঙলো। ও পিছন থেকে সেই মেয়েটিকে ডাক দিল….?

ওমর: হেই মেয়ে তুমি কে??

কারো ডাকে কথা চোখ মেলে পিছনে ফিরে তাকায়।পিছনে তাকিয়ে টাওয়াল পড়া একটি ছেলেকে দেখতে পায়,কথা সাথে সাথে আবার সামনের দিয়ে ফিরে তাকালো ।

কথা: ছিঃ ছিঃ এটা কি দেখলাম?….[ বিড়বিড় করে ]

ওমর: আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি তোমাকে??

কথা: আগে আপনি জামা-কাঁপড় পরে নিন।

ওমর বিছানার উপরে থাকা একটা হাফ হাতার গেঞ্জি পড়ে নিল।

ওমর: এবার এদিকে তাকাও…?

কথা: জ্বী বলুন…. [ পিছনের দিকে তাকিয়ে ]

ওমর: তুমি সেই মেয়েটি না। আমাদের গাড়ির লাইট ভেঙ্গে দিয়েছিলে?

কথা: হ্যাঁ! আর আপনি সেই ঝগরুটে লোকটা?……[ অবাক হয়ে ]

ওমর: এই মেয়ে আমি ঝগরুটে নয়…..[ কিছুটা রাগী গলায় ]

কথা: আপনিই ঝগরুটে…ঝগড়া করার জন্য এখানেও চলে এসেছেন।

ওমর: হোয়াট!!! স্টুপিড মেয়ে এটা আমার বাড়ি। তুমি এখন আমার বাড়িতে দাঁড়িয়ে কথা বলছো।…….[ রাগী গলায় ]

কথা:…….[ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ]

ওমর: কি হাওয়া বেরিয়ে গেল…..!

কথা: বিশ্বাস করিনা এটা আপনার বাড়ি।……[ মুড নিয়ে বললো ]

ওমর: পিছনে তাকিয়ে দেখো……[ হাত দিয়ে পিছনের দিকে দেখিয়ে বললো ]

কথা:…….[ সামনে বড় ফ্রেমে বাঁধানো তিনটি যুবকের ছবি দেখতে পাচ্ছে। তাদের মধ্যে ওমের ছবিও ছিল]

ওমর: নীল,রাফি ওরা দুই জন আমার বন্ধু….ওদের পাশেরটা আমি..ওমর! ওমর আমার নাম।………[ গম্ভীর কন্ঠে ]

কথা এবার ভয় পেয়ে যায়।ওর বুঝতে আর বাকি নেই ‌ এরাই তিন গ্যাংস্টার।যদের কথা এনামুল স্যার বলেছিল। মুখ দিয়ে কোন কথায় বের হচ্ছে না ওর।

ওমর: তুমি এখানে কেন সেটা বল?? পারমিশন ছাড়া আমার রুমে কেন প্রবেশ করেছো। এর শাস্তি তোমাকে পেতে হবে……..[ গম্ভীর কন্ঠে ]

কথা: স….স..স্যরি আ..আমি আসলে…. হাই হাই আমার টাওয়াল খুলে গেছে……….[ অবাক হয়ে জোরে বললো ]

ওমর এটা শুনে নিচে তাকিয়ে দেখে না ওর টাওয়াল ঠিক-ঠাক আছে।এর মধ্যে কথা ওমরকে জোরে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

ওমর: স্টুপিড মেয়ে আমার সাথে চলাকি…..এর শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।………[ রাগী গলায় ]
.
.
Continue To……😁.

Three_Gangsters__ 💕.
Sumaiya_Moni”
Part-4

ওমর এটা শুনে নিচে তাকিয়ে দেখে না ওর টাওয়াল ঠিক-ঠাক আছে।এর মধ্যে কথা ওমরকে জোরে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

ওমর: স্টুপিড মেয়ে আমার সাথে চলাকি…..এর শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।………[ রাগী গলায় ]
.
.
.
.
.
নিশু হাঁটছে আর গান খাচ্ছে….

হাই আল্লাহ্ হাই আল্লাহ্ করবো কি যে হায়….
এই ছেলের মনটা চুরি করবো কি উপায়……
হাই আল্লাহ্ হাই আল্লাহ্……….

নিশু: ওয়েট…সুন্দর একটা মিউজিকের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। বাট কোথায়…….[ আশে পাশে তাকিয়ে ] ওই রুমটা দিয়ে আসছে। যায় দেখি ওই রুমটায় বসে কে এই মিউজিকটা শুনছে।

নিশু রুমের সামনে এসে উকি দিয়ে দেখতে লাগলো ।

নিশু: রুমে তো কাউকে দেখছি না। ওহ বক্সে পিয়ানোর স্বুর বাজচ্ছে । পিয়ানোর স্বুরটা অনেক সুন্দর ।……[ নিশু চোখ বন্ধ করে পিয়ানোর স্বুর উপভোগ করতে লাগলো ]

রাফি বারান্দা থেকে এসে বিছানায় বসতে যাবে ঠিক সেই সময় দরজার দিকে চোখ যায়।ও দেখতে পাচ্ছে একটা মেয়ে রুমে উকি মেরে চোখ বন্ধ করে আছে। রাফি কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে।

রাফি: এটা তো সেই মেয়েটি। বাট এখানে কি করছে???[ মনে মনে ]. এই মেয়ে…..!??

নিশু:…………..[ এতটা মনযোগ দিয়ে শুনছে যে রাফির ডাক ওর কানে যাচ্ছে না ]

রাফি: এই মেয়ে???

নিশু:…………..

রাফি: এই মেয়ে…….[ জোরে চিল্লিয়ে ]

নিশুর ধ্যান ভেঙে যায়,ধড়ফড়িয়ে উঠলো মাথা শরাতেই জোরে বারি খেলো দেয়ালের সাথে ।

নিশু: অহহহ!!! কোন হারামজাদায় রে এবাবে ডাকছে….[ বলেই উপরে তাকিয়ে দেখে রাগি চোখে একটা ছেলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে ] ওই‌ মিয়া গরুর মতো চিল্লান কেন।আপনার জন্যই আমি মাথায় অহহ! ব্যাথা পাইছি।……[ কিছুটা ধমকের স্বুরে ]

রাফি: ভালো হয়েছে। অন্য লোকদের ঘরে চুরি করে দেকতে গেলে এরোকমি হয়।…….[ হেসে ]

নিশুর রাগ উঠে গেল এই কথাটা শুনে। আসে পাশে তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজতে লাগলো,হঠাৎ বাক্সের দিকে চোখ যায়। বাক্সটা খুলে ওটার ভিতরে একটা বড় কসটিপ ও কেচি দেখতে পায়। কসটিপটা হাতে নিয়ে কিছু অংক বের করে কেচি দিয়ে কেঁটে কসটিপ ও কেচি জায়গা মত রেখে রাফির মুখে উপর মেরে দেয়।
রাফি এতোক্ষন ভ্রু কুঁচকে মেয়েটির কান্ড দেখছিল। ওর মুখে কসটিপ লাগিয়ে দেওয়াতে রাফি একেবারে অবাক হয়ে যায়।

নিশু: যারা গরুর মতো চিল্লায় তাদের মুখে কসটিপ মেরে দিতে হয়………।

রাফি মুখের কসটিপ খুলে রাগি গলায় বললো।

রাফি: এই মেয়ে তোমার সাহস কি করে হয় আমার মুখে কসটিপ লাগিয়ে দেবার? তুমি কার সাথে ফাজলামো করছো জানো? ………..[ রেগে ]

নিশু: এই ছেলে তুমি কার সাথে ফাজমালো করছো জানো???…….[ কোমড়ে হাত দিয়ে ]

রাফি: You……..

নিশু: You……..

রাফি: এখন কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে??…….. [ রাগি কন্ঠে ]

নিশু: এখন কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে…..।

রাফি: আমাকে তুমি চিনো না……[ রেগে ]

নিশু: আমাকে তুমি চিনো না।

রাফি: আচ্ছা কে তুমি????

নিশু: আচ্ছা কে তুমি???

রাফি: আমি Three Gangsters দের মধ্যে একজন।……..[ রেগে ]

নিশু: আমি Three Gang…………..[ বাকিটা বলার আগেই থেমে যায় ] আ…আপনি তাদের মধ্যে একজন……[ কাঁপা কাঁপা স্বুরে ]

রাফি: হুমমম…….[ বারি মুড নিয়ে ]

নিশু: ন..ন..নাম কি আপনার??……[ ভয় জাড়ানো কন্ঠে ]

রাফি: রাফি……।

নিশু: টফির বাচ্চা আগে কবি না তুই গ্যাংস্টার দের মধ্যে একজন………[ ঝাড়ি দিয়ে বলেই দিল বৌ দৌড় ]

রাফি রাগবে না হাসবে কিছুই বুঝতে পারছে না। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ওর যাবার দিকে……।
.
.
.
.
মিশু দৌড়িয়ে নিচে নামার সময় কারো সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যায় ফ্লোড়ে।

মিশু: ওরে মা আমার মাঝাডা গেল রে…….[ এটা বলে যার সাথে ধাক্কা খেয়েছে তার দিকে তাকাতেই মিশু জোরে জোরে হাসতে লাগলো ]

কেননা যার সাথে ধাক্কা লেগেছে সেই বেচারায় নিচের সিঁড়িতে পা উপরে মাথা নিচের দিকে উপর হয়ে পড়ে আছে। একটা দেখার মতো দৃশ্য। বেচারা উঠতেও পারছে না। ছেলেটি আর কেউ না আমাগো সাব্বির ছিল 😁। ফাহিম ওকে টেনে উঠাচ্ছে।

মিশু এখনো হেসেই যাচ্ছে । সাব্বির উঠে দাঁড়িয়ে দেখে সেদিনের সেই মেয়েটা যেই মেয়েটা ওকে থাপ্পর মেরে ছিল।

সাব্বির: আপনি এখানে??…..[ রাগি গলায় ]

মিশু কিছু বলতে যাবে ঠিক সেই সময় কথা এমন ভাবে দৌড়িয়ে আসে সাব্বিরের সাথে অনেক জোরে ধাক্কা লাগে,সাব্বির আবারও ধুপাশ করে উপুর হয়ে ফ্লোড়ে পড়ে যায়।

মিশু এটা দেখে আবার ও হাসতে শুরু করে।কথা ছেলেটিকে ধরতে যাবে তার আগেই ফাহিম ওকে টেনে তুলে । সাব্বির রাগি মুড নিয়ে উঠে আঙুল জাগিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিশু দৌড়ে আসে।আর নিশুর পায়ের সাথে সাব্বিরের পায়ে এমন ভাবে লাগে সাব্বির লেঙ খেয়ে দুই পা দুই দিকে দিয়ে বসে পড়ে । এবার সাব্বির ব্যাথাটা একটু বেশিই পেয়েছে 😉। মুখ দিয়ে টু শব্দও বের হচ্ছে না সাব্বিরের। মিশু,কথা,নিশু এবার হাসিতে ফেটে পড়লো।সাব্বির না পারছে কিছু বলতে না পারছে শইতে। ফাহিম কোর মতে সাব্বির কে টেনে উঠায়। ফাহিম বলতে লাগলো।

ফাহিল: ওই তোমরা তো মানু(মানুষ) ভালা না। মোর ভাই ডারে কয় বার ধাক্কা মেরে ফেলে দিছো….।

মিশু,নিশু,কথা: স্যরি আসলে আমরা দেখিনি।

ফাহিল: ওয়া কও বও কি,এতো বড় টাগরার নাহান ছেরাডারে দেহেন নাই আপনেরা।

কথা: ভাইয়া আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না।

সাব্বির: ওর কথা বুঝার দরকার নেই,আপনারা এখানে কেন সেটা আগে বলেন…….[ বেশ রেগে ]

মিশু: ওই তুই সেই ছ্যাচড়া না।যাকে থাপ্পর মেরে ছিলাম।

কথা: হ হ এটা তো সেই ছেলেটি.. ।

নিশু: তা তুই এখানে কি করছিস??তোর তো‌ এখানে থাকার কথা না?

সাব্বির: এটা আমার বাসা।এখানে থাকবো না তো গাছ তলায় থাকবো।……..[ রেগে ]

মিশু: গাছ তলায় তোকে শুট করে এখানে নয়।

সাব্বির:😠….

ফাহিম: আপনারা কিন্তু বেশি কথা কইতাছেন। মোর ভাইরে চিনেন। she is a gangster of brother of limited……[ সাব্বির কে দেখিয়ে বললো ]

ফাহিমের ইংলিশ শুনে মিশু,কথা,নিশু হাসতে হাসতে লুটপুটি খাচ্ছে……

সাব্বির: চড়াইয়া দাঁত ফেলে দিব…..ইংলিশ পারিস না তাহলে ইংলিশ বলিস কেন।……..[ বেশ রেগে ]

ফাহিম: ও মোর ইংলিশ হয় নাই তাইলে…।

মিশু: ওই gangster of brother of limited তা আপনে কেমন আছেন…….[ বলেই আরো জোরে জোরে হাসতে লাগলো ]

সাব্বির: [ ইজ্জতের ফালুদা করে দিল ফাহিমের বাচ্চায় ]

ফাহিম: হাসবার কি আছে মুই না হয় একটু ভুল কইয়া হালাইছি।

নিশু: আচ্ছা অনেক হাসি হইছে,এবার কাজের কথায় আসি। আমরা এইখানে ডেকোরেশনের কাজে মানে বাড়িটা সাজাবার দায়িত্ব নিয়ে এসেছি। এবার বল তুই এখানে কেন??

সাব্বির: আমি এই বাড়িতে থাকি। ওমর,নীল,রাফি এটা আমার বড় ভাই। এদের পরিচয় আপনারা জানেন নাকি দিতে হবে।

মিশু: জানি আর বলতে হবে না।

সাব্বির: গুড….

কথা: তোর নাম কি রে??

সাব্বির: সাব্বির আমার নাম।

মিশু: সেবরা….[ বিড়বিড় করে ]

সাব্বির: কি??

মিশু: কিছু না।

কথা: আর এটার নাম।…..[ ফাহিমের উদ্দেশ্য বললো ]

ফাহিম: My number in fahim……[ সব কয়টা দাঁত বের করে ]

মিশু,কথা,নিশু আবারও হাসিতে ফেটে পড়লো……।

সাব্বির রাগি চোখে ফাহিমের দিকে তাকায়।

ফাহিম বুঝতে পেরেছে এবার ও ভুল ইংলিশ বলেছে।

সাব্বির: গাধা কোথাকার….।

কথা: ওইযে নাম্বার ফাহিম তুমি এতো সুন্দর করে ইংলিশ কার কাছ থেকে শিখেছো??

ফাহিম: মগো শিমু আফার কাছ থেকা….হে খুব ভালা ইংলিশ শিখায়।

মিশু: হ্যাঁ! সেটা শুনেই বুঝা যাচ্ছে সে কত ভালো ইংলিশ শিখায়।

ফাহিম: হ হে ভালো ইংলিস শিখায়। দুই চারটা কমু হুনবেন…।

সাব্বির: না তোর ইংলিশ বলার দরকার নেই। তুই আমার সাথে চল।….[ টেনে নিয়ে যাচ্ছে ]

ফাহিম: আফা পরে হুনামুনে আপনাগো ইংলিশ….। [ চিল্লিয়ে বললো ]

কথা: আচ্ছা….. বাহ্ সেই ইংলিশ শিখাই ওর শিমু আফায়।

মিশু: এই সব ছাড় আমার সাথে কি হয়েছে সেটা শোন আগে।

নিশু: আগে আমারটা শোন।

কথা: না আগে আমারটা শোন।

মিশু: আচ্ছা একজন এক জন করে বল।

ওদের সাথে যা যা হয়েছে ওরা সব খুলে বললো ওদের কে।

মিশু: কথা কাজ শেষ হলে এখান থেকে তাড়াতারি করে কেঁটে পড়তে হবে। আর না হলে‌ ওরা আমাদের ১২টা বাজিয়ে ছাড়বে।

কথা: হ্যাঁ ঠিক বলেছিস ।

নিশু: হুমমম।

কথা: চল কাজে লেগে পড়ি।

নিশু: হুম চল ।

ওরা ওদের মতো কাজ করতে শুরু করলো।
.
.
.
নীল: ওমর, রাফি কি হয়েছে জানিস।ওই মেয়ে গুলো এই খানে এসেছে।

ওমর: জানি..

রাফি: ওরা ডেকোরেশনের কাজে এসেছে। সাব্বিরের কাছ থেকে জানতে পারলাম।

ওদের সাথে কিভাবে দেখা হয়েছে সেটা ওরা একে অপরকে বললো।

ওমর: লম্বা চুলয়ালা মেয়েটাকে আমার ভালো লাগছে । ওকে চাই আমার।

নীল: আর আমার ঠোঁটের তিলয়ালা মেয়েটাকে ভালো লাগছে। ওকে আমি চাই।

রাফি: আরে ব্যাস আমার ভাইয়েরা দেখি মেয়ে পছন্দ করে ফেলেছে।

ওমর: তুই ও একজন কে পছন্দ করে নে!

নীল: হ্যাঁ! তাহলেই তো হয়ে যায়।

রাফি: পছন্দ তো হয়েছে ওই মেয়েটা কেই!

ওমর: বাহ্ তাহলে তো হয়েই গেল।

নীল: হুমম। আচ্ছা নিচে চল।কাজ কত দূর কমপ্লিট হয়েছে দেখি।

ওমর: হ্যাঁ চল যাই।

সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল। সব কিছুর আয়োজন করা শেষ। খুব সুন্দর করে বাংলোটা সাজানো হয়েছে ।একে একে মানুষের আনা গোনা বাড়তে লাগলো। ওমনদের সাথে কথাদের অনেক বার দেখা হয়েছে । ওরা ওদের কাছ থেকে দূর দূরে থেকেছে।

মিশু: ওহ আল্লাহ্ আজকে কত কাজ করলাম…[ চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে ]

নিশু: আমিও রে…..।

কথা: দেখ তাহলে আমি কত কাজ করি।

মিশু: বালের কাজ কর তুমি।

কথা: মিশু…..[ রেগে ]

নিশু: ওই তুই চিল্লাবি না।
.
.
.
.
সাব্বির মন খারাপ করে এক কোনায় বসে আছে।আর ফাহিম খাবার একধা রস্তি খিলচ্ছে।

ওমর: সাব্বির এখানে আয়??

সাব্বির: হ্যাঁ বলেন ভাই।….[ওমরের কাছে গিয়ে ]

ওমর: এই শপিং ব্যাগটা ধর। এটার মধ্যে কিছু জামা কাঁপড় আছে যেটা তোর কাছে ভালো লাগে সেটা পরে আয় যা।

সাব্বির: কিন্তু ভাই কেন?

ওমর: বেশি কথা বলা পছন্দ করি না। যেটা বলেছি সেটা কর যা।

সাব্বির শপিং ব্যাগটা হাতে নিয়ে সোজা ওর রুমে চলে গেল। কালো রঙের মাঝে গোন্ডেন শুতোর কারুকাজ করা শট পান্জাবী ও ধুতি পায়জামা পড়ে রুম থেকে বেরিয়ে হল রুমে এলো।ও হল রুমে আসার সাথে সাথে বস লাইট অফ হয়ে যায়।
.
.
.
.
.
Continue To……😁