গল্প:রঙহীন জীবনের রঙ,পর্ব ৬,৭

গল্প:রঙহীন জীবনের রঙ,পর্ব ৬,৭
লেখনীতে:স্বর্ণা সাহা
পর্ব ৬

নির্ঝর উত্তর দিলো,,
—আমি আজকেই উকিলের সাথে কথা বলবো তুমি টেনশন কোরোনা।

—আচ্ছা কথা বল,কিন্তু তাড়াতাড়ি একে বিদায় করে দে আমার বাড়ি থেকে, ও আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে আমি তোর জন্য মেয়ে দেখা শুরু করবো,আমি তোর আবার বিয়ে দেবো।

—আরো ক’টা দিন তো সহ্য করতেই হবে ওকে,, কারণ ডিভোর্স তো মুখের কথা নয় কত প্রকারের নিয়ম আছে বলোতো।

নিরা নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে বললো,,
—দাদা তুই আমাকে কোনো হোস্টেলে দিয়ে দে, এভাবে আমার পক্ষে এতো কথা হজম করা সম্ভব না, আমি বিনা অপরাধে দোষী হতে পারবো না, অযথা দোষ ঘাড়ে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

নির্ঝর নিরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,,
—খবরদার এইসব কথা বলবি না বলে দিলাম, তুই কেনো নিজের বাড়ি ছেড়ে যাবি, যার যাওয়ার দরকার সে যাবে, তুই কেনো নিজের বাড়ি থাকতে হোস্টেলে গিয়ে থাকবি, এসব কথা চিন্তাতেও আনবি না, বুঝেছিস?

নিরা হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ালো।

———————-
নির্ঝর ব্রেকফাস্ট শেষ করে ঘরে এসে দেখে দিশানী কাঁদছে। নির্ঝর দিশানী কে জিজ্ঞেস করলো,,
—কি হলো নেকামি করে আবার কাঁদছো কেনো?
দিশানী এই কথায় নির্ঝরের দিকে করুণ চোখে তাকালো। কিছুক্ষন ওভাবেই তাকিয়ে থেকে বললো,,
—-নির্ঝর সত্যিই কি আমার প্রতি তোমার এক চুল পরিমাণও মায়া-দয়া নেই? ভালোবাসা নাই থাকলো কিন্তু এতদিনে কি আমার প্রতি তোমার একটুও মায়া জন্মাইনি? একটুও বিশ্বাস জন্ম নেয়নি? এতো সহজে তুমি আমাকে ভুল বুঝলে, আমাকে চেনোনা তুমি, আমি কি কোনো কারণ ছাড়া নিরা কে ওই কথাগুলো বলবো?

—-হতেও পারে কারণ ছাড়াই বলেছো,আসলে তুমি নিরা কে হয়তো সহ্য করতে পারো না তাই এমন করে কথাগুলো বলেছো।

দিশানী তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,,
—তোমার কাছে এসব বলাই ভুল আমার, যে বুঝতে চায়না তাকে বোঝানো বড্ড কঠিন, তুমি তোমার বুঝ নিয়েই থাকো আর আমি আমার বুঝ নিয়েই থাকি, তবে দেখো কোনোদিন যেনো আবার নিজের কর্মের জন্য পস্তাতে না হয়, আসলে উপরে একজন আছেন তো,তিনি সবই দেখছেন,সে তো কখনো অবিচার মেনে নেন না, তোমাদের বিচার না হয় সে-ই করবে।

নির্ঝর জবাব দিলো,
—সে দেখা যাবে, যে কথাটা বলতে এসেছিলাম সেটা আগে শোনো, ভাবছিলাম আজকে উকিলের সাথে কথা বলতে যাবো ডিভোর্সের ব্যাপারে, আমি তোমাকে ডিভোর্স দেবো আর কিছুদিন অপেক্ষা করো।

——————
দিশানী রান্নাঘরে রান্না করছে তখনি নিরা দিশানীর কাছে এলো, দিশানী একবার নিরার দিকে তাকিয়ে আবার রান্নায় মনোযোগ দিলো। নিরা দিশানী কে উদ্দেশ্য করে বললো,,
—দেখলে বৌদি তোমার কথা কিন্তু কেউ বিশ্বাস করলো না, আমার কথা-ই বিশ্বাস করলো,, আর দাদা কিছুদিনের মধ্যেই তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে তাই এই কয়েকদিন আর তুমি আমার সাথে লাগতে এসো না ঠিকাছে?

দিশানী নিরার দিকে না তাকিয়েই বললো,,
—কি করবো বলো তোমাদের রক্ত তো একই, পুরোই অমানুষের রক্ত বয়ে চলেছে তোমাদের শরীরে সেজন্যই তো সবাই আমার কথা না বিশ্বাস করে তোমার কথা বিশ্বাস করলো।

—তোমার মুখ আর চুপ হবে না তাইনা বৌদি,তোমার কথা তো কেউ বিশ্বাসই করে না তাহলে এমনি এমনি কেনো মুখের শব্দ গুলো নষ্ট করো বলোতো?

দিশানী এবার রান্না বাদ দিয়ে নিরার মুখের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলো,,
—এ বাড়িতে তো আমার আর জায়গা হবেই না, তাই ভাবলাম থাকবোই না যখন তখন মুখ বুঝে তো আর তোমাদের মতো অমানুষের কথা সহ্য করা যায় না তাইনা, তাই ভাবলাম আর কিছু না করতে পারি, প্রতিউত্তর তো করতে পারবো, প্রতিবাদ তো করতে পারবো তাতে লাভ হোক আর না হোক।

—বাই দ্য ওয়ে তোমার এতো সাহস কি ওইদিন নীলাদ্রি কে দেখার পর থেকে এসেছে নাকি?

দিশানী হেসে ফেললো। দিশানী কে হাসতে দেখে নিরা বললো,,
—এভাবে হাসছো কেনো, আমি কি কোনো হাসির কথা বলেছি?

—-না না, তুমি কেনো হাসির কথা বলতে যাবে তোমার মুখ দিয়ে আবার হাসির কথা বের হয় নাকি তোমার মুখ দিয়ে তো শুধু তেতো তেতো কথা বের হয়। তবে নিরা একটা কথা কিন্তু তুমি একদম ঠিক বলেছো,ওইদিন নীলাদ্রি কে দেখার পর থেকেই আমার সাহস বেড়ে গেছে। কেনো জানো?

নিরা দিশানীর কথায় ভ্রু কুঁচকে দিশানীর দিকে তাকিয়ে বললো,,
—কেনো বলোতো?

-কারণ নীলাদ্রি কে দেখার পর অনেক পুরোনো কথা মনে পড়ে গেছে আমার, পুরোনো কথা গুলো মনে পড়ে গেছে তো তাই সেই পুরোনো দিশানী কেও মনে পড়ে গেছে সেই প্রতিবাদী আমিটাকে মনে পড়ে গেছে, সেইজন্যই তো সাহস টা বেড়ে গেছে, আর তোমাদের কথার প্রতিবাদ করতে পারছি।

—করে নাও,করে নাও, যত ইচ্ছা প্রতিবাদ করে নাও আর তো ক’টা দিন, তারপর তো তোমার আর দাদার ডিভোর্সই হয়ে যাবে তুমি শুধু দেখে যাবে কিন্তু কিচ্ছু করতে পারবে না?

—-তুমি কি বোকা নিরা,সত্যিই কি আমার কিছুই করার নেই? আমি যদি চাই তোমাদের নামে পুলিশের কাছে,আদালতে অনেক কিছুই বলতে পারবো, কিন্তু তোমরা কিছু বলতে পারবে না কারণ আদালত প্রমাণ চাইবে যা তোমাদের কাছে নেই,তবে চিন্তা কোরোনা আমি তোমাদের নামে আদালতে কিচ্ছু বলবো না, ডিভোর্স চাই তো তোমাদের, দিয়ে দেবো। আমি তোমাদের কোনো শাস্তি দেবো না,তাই বলে ভেবোনা যে তোমরা কেউই শাস্তি পাবেনা, তোমরা সবাই তিলে তিলে শাস্তি পাবে। আমি তোমাদের শাস্তি দেবো না কারণ সৃষ্টিকর্তা তোমাদের শাস্তি দেবে,প্রকৃতি তোমাদের শাস্তি দেবে।

—-সে দেখা যাবে আমি ঘরে যাচ্ছি।

নিরা রান্নাঘর থেকে বেরোতে নেবে তখনি দিশানী নিরা কে ডাক দিয়ে বললো,,

—নিরা তোমার জন্য একটা স্পেশাল জিনিস রান্না করেছি আজকে!

নিরা পেছন ঘুরে উত্তর দিলো,,
—কি রান্না করেছো?

দিশানী এক গাল হেসে জবাব দিলো,
—নিমপাতা ভাজা!

নিরা অবাক হয়ে বললো,,
—কি? নিমপাতা ভাজা তাও আবার আমার জন্য?

—ভালো না বলো? তোমার জন্য স্পেশাল ভাবে রান্না করেছি কারণ তুমি যে তেতো তেতো কথাগুলো বলো তা দিয়ে তো তোমার কোনো উপকারই হয়না তাই ভাবলাম তোমার জন্য একটু তেতো তেতো নিমপাতা ভাজি তা খেয়ে যদি তোমার কোনো উপকার হয়।

নিরা এসব শুনে রাগে গজগজ করতে করতে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে গেলো।

চলবে

গল্প:রঙহীন জীবনের রঙ
পর্ব ৭
লেখনীতে: স্বর্ণা সাহা

নীলাদ্রি চেম্বার থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠলো। এখন নীলাদ্রি ওর বন্ধুর বাড়িতে যাবে ডিনারের জন্য। নীলাদ্রি কিছুক্ষন পর ওর বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছলো। অনেক পর বন্ধুর সাথে দেখা হলো, নীলাদ্রির বন্ধুর নাম সৌম্য। ইন্টার থেকে ওদের পরিচয়, তখন থেকেই ওরা একসাথে পড়ালেখা করেছে। মূলত সৌম্যর কিছুদিন আগেই বিয়ে হয়েছে কিন্তু নীলাদ্রি বিয়েতে আসতে পারেনি তাই এই ডিনারের আয়োজন। নীলাদ্রি সৌম্য কে জিজ্ঞেস করলো,,
—কিরে বিয়ে করে দেখছি মোটা হয়ে গেছিস, বউয়ের হাতের রান্না খেয়ে মোটা হচ্ছিস,বুঝি?

—তা বলতেই পারিস, আমার বউ কিন্তু দারুণ রান্না করে, তুই খেয়ে আঙ্গুল চাটবি।

—তাই নাকি, তো তোর বউ কই, আলাপ টা তো করা আগে।

—হ্যাঁ অবশ্যই, আলাপ তো আগেই আছে, এখন বন্ধুর বউ হিসেবেও আলাপ করে নে, ও রান্নাঘরে আছে,কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবে।

সৌম্যর বউ ড্রইংরুমে এসে নীলাদ্রি কে বললো,,
—কি গো নীলাদ্রি দা কেমন আছো?

নীলাদ্রি সৌম্যর বউকে দেখে বললো,,
—আরে এইতো মেঘা উপস সরি মেঘা বৌদি এসে গেছে, ভালো আছি গো, তুমি কেমন আছো? অনেক দিন পর তোমাকে দেখলাম কিন্তু

মেঘা জবাব দিলো,,
—ভালোই আছি।আমিও তো অনেক দিন পর দেখলাম তোমাকে, তোমার চেহারার মধ্যে কিন্তু অনেক পরিবর্তন এসে গেছে।

—ওই আরকি, সৌম্য বলছিলো তুমি নাকি দারুণ রান্না করো, আমি নাকি খেয়ে আঙ্গুল চাটবো তো কখন খাওয়াবে তোমার রান্না, শুনি?

মেঘা নীলাদ্রির দিকে এক গ্লাস শরবত এগিয়ে দিয়ে বললো,,
—আরে আগে এই শরবত তো খেয়ে নাও।
—এই একদম এখন শরবত-টরবত খাবো না, নয়তো ঠিকভাবে ডিনার করতে পারবো না, আফটার অল তুমি নাকি দারুণ রান্না করো কব্জি ডুবিয়ে খেতে হবে তো নাকি, এখন যদি শরবত খেয়ে নেই তাহলে তো আর সেইভাবে খেতে পারবো না।

—-আচ্ছা তাহলে একবারে ডিনার টাই করে নাও রাতও হয়ে গেছে। তুমি নিশ্চই চেম্বার থেকে সরাসরি এখানেই চলে এসেছো, ক্লান্ত হয়ে আছো নিশ্চই,যাও, আগে ফ্রেশ হয়ে এসো।
মেঘা সৌম্যকে বললো,
—নীলাদ্রি দা কে ওয়াশরুমটা দেখিয়ে দাও, ফ্রেশ হয়ে আসুক।

——————
খাবার টেবিলে,,
নীলাদ্রি খাচ্ছে আর মেঘার তারিফ করছে,
—সৌম্য তো তাহলে ঠিকই বলছিলো মেঘা, অনেক ভালো রান্না করো দেখছি তুমি, সেই পিচ্চি-পাচ্চি মেয়েটা এখন কত্ত বড় হয়ে গেছে রান্নাও শিখে গেছে।আর প্রেম করে বিয়েটাও করে নিয়েছে।

মেঘা হেসে ফেললো।সৌম্য নীলাদ্রি কে বললো,,
—কিরে, এখন তো তুই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছিস, বিয়েটা কর, দেখ আমি কিন্তু এখন বিয়ে করে মিঙ্গেল হয়ে গেছি, সিঙ্গেলদের দেখলে বড্ড কষ্ট হয় আর আমাদের ফ্রেন্ডদের মধ্যে এখন শুধু তুই-ই সিঙ্গেল আছিস, দেখ আমাদের কষ্টটাও একটু বোঝ, বিয়ে টা করে নে, নাকি আমাদের তোর বিয়ে খাওয়াতে চাচ্ছিস না, হুম?

নীলাদ্রির মুখ মলিন হয়ে গেলো, নীলাদ্রি বললো,,
—বিয়ে?
—হ্যাঁ বিয়ে, কবে করবি বল, মেয়ে দেখা শুরু করে দেবো নাকি তুই কাউকে ঠিক করে রেখেছিস?
নীলাদ্রি নির্লিপ্ত কণ্ঠে জবাব দিলো,
—এসব বিয়ে-টিয়ে আর আমার দ্বারা হবে না,তাই বিয়ে খাওয়ার আশাটা তুই ছেড়ে দে।আর পছন্দের কথা বলছিস তুই?এ জীবনে আর অন্য কাউকে পছন্দ হবে বলে আমার আর মনে হয়না।পছন্দের জায়গাটা সেই একজনই নিয়ে আছে, শুধু পছন্দের জায়গাটা কেনো ভালোবাসার জায়গাটাও এখনো শুধুই তার আর ভবিষ্যতেও থাকবে।

মেঘা নীলাদ্রি কে বললো,,
—এখনো তুমি দিশানী কে খুব ভালোবাসো তাইনা নীলাদ্রি দা?

নীলাদ্রি মুচকি হেসে জবাব দিলো,
—তা বাসি, আর সারাজীবন বেসে যাবো,ও আমার নাই বা হলো, ভালোবেসে যেতে তো ক্ষতি নেই।

সৌম্য নীলাদ্রি কে বললো,,
—কিন্তু ওর তো বিয়ে গেছে তুইও বিয়ে করে নে না।

—দরকার কি বিয়ে করার, অন্য কাউকে বিয়ে করে যে সুখী হবো তার গ্যারান্টি কি?আর তোর আর মেঘার মতো সবার ভালোবাসা তো আর পূর্ণতা পায়না তাইনা?আর আমার পরিবারেও তো কেউ নেই যে আমাকে বিয়ে করতে জোর করবে, তাই আমি বিয়ে না করলেও খুব একটা সমস্যা হবে না।দিশানী বিয়ে করেছে তো কি হয়েছে ও যদি খুশি থাকে,সুখী হয়, তাহলে আমিও ওতেই খুশি।

মেঘা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,,
—সুখী? দিশানী আর সুখী তাও নির্ঝর দা কে বিয়ে করে,তাহলেই হয়েছে।

নীলাদ্রি মেঘার কথায় ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মেঘার দিকে তাকালো। মেঘা নীলাদ্রির অবস্থা বুঝতে পেরে নীলাদ্রি কে বললো,,
—দিশানী মোটেই সুখী নেই নীলাদ্রি দা,ওর খুশি তো সেই এক বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে।

নীলাদ্রি অবুঝ কণ্ঠে জবাব দিলো,,
—আমাকে একটু পরিষ্কার করে সবকিছু বলবে মেঘা, প্লিজ?

মেঘা নীলাদ্রি কে সব খুলে বললো।সব শুনে নীলাদ্রি অবাক হয়ে গেছে। অবাকের থেকেও বেশি করে দিশানীর জন্য নীলাদ্রির কষ্ট হচ্ছে, নীলাদ্রির বুকের ভেতর টা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে,নীলাদ্রি এবার বুঝতে পারলো, এসবের জন্যই দিশানীর মুখটা ওইরকম শুকনো লাগছিলো সেইদিন।সৌম্য মেঘা কে জিজ্ঞেস করলো,,
—মেঘা তুমি এসব কিছু জানলে কি করে?

মেঘা সৌম্যর কথার উত্তরে বললো,,
—কি বলছো তুমি, দিশানী আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়, এসব আমি জানবো না?আমার পক্ষে এসব জানা কি স্বাভাবিক না?তবে গত একমাস হলো ওর সাথে আর কথা হয়নি আমার।হয়তো খুব ব্যস্ত থাকে।সব কাজ তো ওকেই করতে হয়, দিশানী কে কাজের মেয়ের মতো খাটিয়ে নেয় ওরা ।

দিশানী আর মেঘা বেস্ট ফ্রেন্ড হয়। আর সৌম্য নীলাদ্রির বন্ধু। একই স্কুলে থাকার সময় সৌম্য আর মেঘার প্রেম হয় অতঃপর ২ মাস আগে বিয়ে হয় ওদের।তাই এরা আগে থেকেই একে অপরকে চেনে।

নীলাদ্রি আর সৌম্য মেঘাকে বললো,,
—ও এসব সহ্য করছে কেনো, আমরা যতদূর ওকে চিনি ও ছোটো থেকেই খুব প্রতিবাদী মেয়ে, তাহলে?

মেঘা জবাব দিলো,,
—আগের দিশানী আর এখনকার দিশানীর মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। কোথায় আগের দিশানী আর কোথায় এখনকার দিশানী।

নীলাদ্রি কণ্ঠ নিচু করে বললো,,
—মেঘা আমাকে দিশানীর ফোন নাম্বার টা দেবে?

মেঘা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,,
—তুমি দিশানীর নাম্বার নেবে, কিন্তু কেনো?

—ওই যে বললাম না ও যদি খুশি থাকে তাহলে আমিও খুশি, দেখি না ওর খুশির জন্য কি করতে পারি?

—-আচ্ছা আমি নাম্বার দিচ্ছি, এক মিনিট।
মেঘা ওর মোবাইলটা বের করে দিশানীর ফোন নাম্বার টা বললো আর নীলাদ্রি দিশানীর ফোন নাম্বার টা নিজের মোবাইলে সেভ করে করে নিলো।

মেঘা নীলাদ্রি কে আবার জিজ্ঞেস করলো,,
—তুমি ঠিক কি করতে চাইছো বলোতো?

নীলাদ্রি রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো,,
—দেখি না কি করা যায়।
মেঘা আর সৌম্য নীলাদ্রির এই কথা বা হাসির অর্থ কিছুই বুঝলো না।

——————
রাত ১.০০ টার দিকে দিশানীর ফোনে একটা আননৌন নাম্বার থেকে কল আসলো। দিশানী ফোন হাতে নিয়ে ভাবলো,,
—এতো রাতে আমাকে আবার কে ফোন করলো?তাও অচেনা নাম্বার থেকে।কারো কিছু হয়েছে নাকি? দিশানী একবার নির্ঝরের দিকে তাকালো। নির্ঝর একবার ঘুমোলে ওর আর কোনোদিকে হুশ থাকে না। দিশানী কলটা রিসিভ করলো।দিশানী ফোন ধরতেই ফোনের ওপাশ থেকে একটা পুরুষ কণ্ঠ ভেসে এলো।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here