চারুর সংসার,পর্ব_১১,১২
Written by Nowshin
পর্ব_১১
🍂
.
এভাবে দুইদিন চলে যায়,,,,,,দেখতে দেখতে সেইদিন চলে আসে।এতদিন নীলিমা চারুর সাথে অনেক ভালো আচরণ করে।একদম নিজের আপন বোনের মতো।চারুও মনেকরে হয়তো ভালো হয়ে গেছে নীলিমা!!
রাত ১২ টায়,সবাই সব আয়োজন করে ফেলে চারুর বার্থডে র।এখন ১২ টা বাজার অপেক্ষায়!শবনম চোখ বেধে চারুকে নিয়ে আসে!১২ টা বাজতেই চারুর চোখ খুলে দেয় শবনম♥।সে সামনে তাকিয়ে দেখে আনাফ,নীলিমা,মা আছেন দাড়িয়ে।আর চারিদিকে বেলুন আর বেলুন।আর টেবিলে একটি বড় চকলেট কেক রাখা।সবাই চিৎকার করে বলল—-
__ Happy Birthday To You Charu❤❤
চারু অবাক হয়ে মুখে হাত দিয়ে কান্না করে দেয়।এরপর চারু সবাইকে জড়িয়ে ধরে।সবাই মিলে কেক কাটে।চারু সবাইকে খাওয়ায়।সবাই তাকে শুভকামনা করে!ফোন করে অরু,মামা,মামী চারুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়।চারুর আজ নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে❤।
সবাই চারুকে ছোট খাটো গিফট দেয়।নীলিমা চারুকে একটি বড় সুন্দর ডল উপহার দেয়,শবনম চারুকে অনেকগুলো চকোলেট দেয়।মা দেন একটি অত্যাধিক সুন্দর শাড়ি এবং কয়েকটি ড্রেস।আনাফ কিছু দিচ্ছে না দেখে শবনম বলে….
শবনমঃকীরে ভাইয়া তুই আপুকে কিছু দিবিনা?
আনাফঃহুম দিবো কিন্তু এজন্য চারুকে আমার সাথে যেতে হবে।
চারুঃআচ্ছা আমি আসছি!
আনাফ ও চারু হেটে সামনের দিকে যায়।কিছুক্ষন হাটতে হাটতে চারু সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে।বিচের মধ্যখানে স্টেজের মতো করে বানানো হয়েছে আর চারিদিকে কেন্ডেল আর কেন্ডেল।বালির মাঝে ব্লাংকেট রাখা হয়েছে, আর চারিদিকে বালিশ রয়েছে।আর সামনে লিখা———Happy Birthday To U Charu🎉.
চারু হা হয়ে দাড়িয়ে আছে।মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না ওর!
চারুঃএগুলো আমার জন্য?
আনাফঃহ্যা তোমার পছন্দ হয়নি?
চারুঃখুবববব পছন্দ হয়েছে! অনেক সুন্দর!আমার অনেক ভালোলেগেছে।
দুজন সামনের দিকে আগাতে থাকে।মধখানে ব্লাংকেট দিয়ে যে স্টেজ টি বানানো হয়েছে সেখানে গিয়ে দাড়ায় দুজন।একদম কাছাকাছি দাড়িয়ে আছে দুজন।কোনো দুরত্ব নেই।হঠাৎ আনাফ হাটু গেড়ে বসে একটা রিং হাতে নিয়ে বলল….
___আই লাভ ইউ চারু।আই লাভ ইউ সো মাচ!
___আপনি কেনো?আই মিন অবশ্যই আপনি মানে এটা তো আমার করার কথা ছিলো।আমার প্লান ছিলো আমার জন্মদিনে আমি আপনাকে ভালোবাসি কথাটা বলবো।
___না এবার তো আমার পালা।
___(চারু কান্না করার মতো করে)
____কী ভালোবাসো না????
____না না না, অবশ্যই ভালোবাসি।ভালোবাসবো না কেনো??
____অহহহ অকেই।
আনাফ চারুর হাতে রিং পড়িয়ে দেয় আর চারু মুখে হাত দিয়ে হেসে বলে____Thankyou So Much.I’m So Happy😍.
এরপর আনাফ চারুর একদম কাছে চলে আসে।চারু চোখ বন্ধ করে ফেলে।আনাফ হুট করেই চারুর ঠোঁটে কিস করে বসে।চারু আরো শক্ত করে চোখ বন্ধ করে ফেলে।আনাফ চারুর কোমড় জড়িয়ে ধরে চারুকে কিস করতে থাকে।
(ভাই এত্ত শখ কেন মানুষের রোমান্স দেখার,যান ভাগেন😒😒)
এরপর দুজনে সবার কাছে যায়।আনাফকে চারুর হাত ধরে থাকতে দেখে তো নীলিমা জ্বলে উঠে। সে চুপচাপ সব সহ্য করে!
নীলিমাঃসব সত্য জানিয়ে দিবো আমি চারুকে!দেখে নিবো চারু কিভাবে ভালোবাসে তোমাকে আনাফ।(শয়তানি হেসে)
এভাবে কক্সবাজারের দিনগুলি কেটে যায় সবাই ঢাকায় ফিরে যায়।
চারু ও আনাফের ভালোবাসা আরো গভির হতে থাকে।মান-অভিমান,ঝগড়া-ঝাটি,ভালোবাসা-খুনসুটির মধ্য দিয়ে ১ মাস কেটে যায়।।
১ মাস পর…..
চারুঃওই শুনেন না?
আনাফঃহু বলো!
চারুঃকী করেন?
আনাফঃকিছু করছি না তবে এখন তোমার সাথে দুস্টামি করবো!😁😁
চারুঃএই মোটেও না। আমি গেলাম(রেগে)
আনাফ আর কিছু বলে না হাসতে থাকে!আর চারু রান্না ঘরে চলে যায়।চারু রান্না করছিলো।সেখানে আনাফ গেলো।গিয়ে পিছন থেকে চারুকে জড়িয়ে ধরে।
চারুঃক্কে….কে!
চারুঃউফফফ আপনি আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।আচ্ছা আপনি উঠে আসতে গেলেন কেনো?আমাকে বলতেন আমি নিয়ে আসতাম।যদি পড়ে যেতেন?
আনাফঃউহুউউউউ!পড়তাম না পাখি!তুমি আছো না?
চারুঃহুহহহহ ঢং!!!!
আনাফ চারুর কাধে মুখ গুজে দেয়!চারু বলে–
চারুঃআচ্ছা আপনি না দেখে এগুলো কিভাবে পারেন??আমার তো মাঝেমধ্যে সন্দেহ হয়!
আনাফঃজানিনা!
আনাফ চারুর ঘাড়ে কিস করতে থাকে। চারুর কোমড় পর্যন্ত লম্বা চুল ছেড়ে দেয়।চারুর চুলে নাক ডুবিয়ে দেয় আনাফ।আর চারু তো অসস্থি ফিল করছে!
চারুঃছাড়ুন বলছি।দেখছেন না রান্না করছি।মা -শবনম হঠাৎ যদি এসে পড়ে তখন কী হবে ভাবছেন???
আনাফঃউহু কেউ আসবে না!
চারুঃহ্যা আপনাকে বলেছে!(হালকা রেগে)
আনাফঃআচ্ছা তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
চারুঃওকে।
আনাফঃআচ্ছা কখনো কী তুমি আমাকে ভুল বুঝে ছেড়ে চলে যাবে চারু?
চারুঃনা কক্ষনই না।তবে আমি জানি আপনি এমন কিছু করবেন না যাতে আমি আপনাকে ঘৃণা করি!
আনাফঃআমি যে এমন কিছু করে ফেলেছি চারু(মনেমনে)
হঠাৎ শবনম আসে সেখানে।
শবনমঃউহু,উহু(কেশে)
শবনম কে দেখে আনাফ চারুকে ছেড়ে দেয়।এবং দূরে সড়ে দাড়ায়।
শবনমঃকী কিচেন রোমান্স হচ্ছে?(চোখ টিপ দিয়ে)
আনাফঃএই পাকনি এসব কইথেক্কে শিখেছিস?
শবনমঃহিহিহিহিহিহিহিহিহি😁😁।
।
।
।
সবাই মিলে গল্প করে কিছুক্ষন। এরপর আনাফ নিজের রুমে চলে যায়।হঠাৎ বাসার কলিংবেল বাজে। চারু গিয়ে দরজা খুলে দেয়। দেখে নীলিমা এসেছে।নীলিমা চারুকে জড়িয়ে ধরে কুশল বিনিময় করে।
দুজনে কিছুক্ষণ গল্প করে।
নীলিমাঃচারু আমি তোমাকে অতি জরুরি কিছু কথা বলতে এসেছি।যা তুমি জানো না এবং তুমাকে জানতেই হবে।
চারুঃহুম বলো দেখি তুমার জরুরি কথা।(শাড়ির আচলে ঘাম মুছতে মুছতে)
।
।
।
।
।
।
নীলিমা যা বলল তা শুনে চারু ধপ করে মাটিতে বসে পড়লো।সে অঝড়ো কাদতে লাগলো।এরপর চোখের পানি মুছে শবনমদের কাছে যায় তাদের সাথে কথা বলে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে সে আনাফের রুমে যায়।আর চারুর পিছু পিছু শবনম,মা যান উনারা অনেক ভয়ে আছেন!!!!!!
রুমে যেতেই আনাফ চারুকে বলে——-
আনাফঃচারু আমাকে ধরে নিয়ে একটু বারান্দায় দিয়ে আসো তো।
চারুঃআমি সব জেনে গেছি!আপনার খেল খতম আহান চৌধুরী (রেগে)
আনাফঃমানে কী বলছো চারু কিছুইতো বুঝতে পারছিনা–(মা ও শবনমের দিকে তাকিয়ে)
চারুঃপ্রচুরনাটক হয়েছে আর না।আপনার সিনেমায় অংশগ্রহণ করা উচিত।আপনার সবকিছু আমিজেনে গেছি!!!
চলবে……..
চারুর সংসার
Written by Nowshin
পর্ব_১২
.
🍂
.
আনাফঃচারু আমাকে ধরে নিয়ে একটু বারান্দায় দিয়ে আসো তো।
চারুঃআমি সব জেনে গেছি!আপনার খেল খতম আহান চৌধুরী (রেগে)
আনাফঃমানে কী বলছো চারু কিছুইতো বুঝতে পারছিনা–(মা ও শবনমের দিকে তাকিয়ে)
চারুঃপ্রচুরনাটক হয়েছে আর না।আপনার সিনেমায় অংশগ্রহণ করা উচিত।আপনার সবকিছু আমিজেনে গেছি!!!
আনাফঃ(কিছু বলছে না)
চারুঃকেনো করলেন এমন?কেনো?এই নাটকের মানে কী?
আনাফঃআমার পুরো কথা তো শুনো চারু…….
চারুঃআমি কিচ্ছু শুনতে চাই না…..
বলে চারু রুমে গিয়ে জুতা পড়ে হ্যান্ড ব্যাগ নিয়ে বাইরে চলেযায়।সে সিদ্ধান্ত নেয় এখানে আর থাকবে না।সে বের হয়ে আসে বাসা থেকে।শবনম আটকাতে গেলে হাত দিয়ে মানা করে দেয় চারু।কান্না করতে করতে বের হয়ে যায়।সে জানে না এখন কোথায় যাবে তবে বাসার সীমানা এখনো পেরোয় নি।
ফ্লাশব্যাক💔💔………….
নীলিমাঃচারু আমি যে কথাটি বলবো সেটা হয়তো তুমি বিশ্বাস করবে না তবে এটাই সত্য!আমি তুমায় সব প্রমান দিবো!
চারুঃআচ্ছা বলো..
নীলিমাঃতুমি কী জানো আনাফ চোখে দেখে!ও তোমার সামনে অভিনয় করছি।এমনকি ওর নাম আহান।আনাফ ওর নাম নয়।সব অভিনয়,সব মিথ্যা,তুমার প্রতি ভালোবাসাটাও মিথ্যা!!!!
চারুঃনা আমি বিস্বাস করিনা।আনাফ কখনই এমন করতে পারেনা!(মুখে হাত দিয়ে)
নীলিমাঃজানতাম বিশ্বাস করবে না। মনে নেই সেদিন আন্টি আহান বললেন?তারপর দেখো এই ভিডিওটি দেখো!আর হ্যা তুমি ছাদের স্টোর রুমে যাবে সেখানে গেলেই সব বুঝতে পারবে এবং অখানে একটা ডায়রি আছে ওটা পড়লেই সব বুঝতে পারবে!!
নীলিমা একটি ভিডিও দেখায় যেখানে আনাফ নীলিমার সাথে হেসে হেসে হেটে আসছে।দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে দেখতে পারিছে।চারু এটা দেখে কান্না করে দেয়।সে নীলিমাকে কিছু না বলেই শবনমদের কাছে যায়——
চারুঃমা আনাফ দেখতে পান তাইনা?
মাঃকী বলো।
চারুঃআর লুকাতে হবে না মা!আমি সব জেনে গেছি।কেনো করেছিলেন আপনারা এমন।মিথ্যা দিয়ে একটি সম্পর্ক গড়তে চেয়েছিলেন?শবনম?কী ভুল ছিলো আমার?বলো?উনার নাম আনাফ তাই না?আমি চলে যাচ্ছি ভালো থাকবেন।(কান্না করতে করতে)
মাঃচা….চারু,শুনো।শুনো!!!
শবনমঃআপু,আপু,প্লিজ্জজ না জেনে,না শুনে ভুল করনা।সব শুনে যাও।আপুউউউ!
চারু চলে যায়।এরপর আনাফের সাথে কী হলো উপরেই তো দেখলেন💔।
বর্তমানে……
আনাফ মাটিতে বসে কান্না করছে বাচ্চাদের মতো করে—
আনাফঃচারু তুমিও আমাকে ভুল বুঝে চলে গেলে?কেনো পুরোটা না শুনে চলে গেলে?তুমার জন্যই তো আমি এসব করেছি।আমার কিছু করার ছিলো না।(কান্না করতে করতে)
শবনমঃযা হওয়ার হয়ে গেছে। যখন সব জানতে পারবে তখন এমনিই ফিরে আসবে।
অন্যদিকে চারু……
চারুঃআমি এখন কই যাবো?বাড়িতে তো যাওয়া সম্ভব না? তারচেয়ে যেয়ে উনাদেরকে বলি আমাকে বাড়ি পৌছে দিতে।
চারু আর কিছু না বলে বাসার দিকে যায়।সে আনাফের কাছে যায়—-
আনাফঃআমি জানতাম চারু তুমি আসবে!তুমি বসো আমি সব বলছি তোমাকে(কান্না মুছতে মুছতে)
চারুকে ধরতে গেলে চারু একপা পিছিয়ে গিয়ে বলে…
চারুঃডোন্ট টাচ মি!!!!!আমাকে আজই এই মুহুর্তে বাড়িতে দিয়ে আসবেন।এন্ড আই নিড ডিভোর্স। আমি মুক্তি চাই🙏।মিথ্যা দিয়ে একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যায় না।
আনাফঃচারুউউউ…..
চারুঃআপনি দিবেন নে পৌছিয়ে? বেশ!আমি একাই বের হচ্ছি।
আনাফঃঅকে তুমি যখন চাচ্ছো আমি নিয়ে যাবো। চলো।আর হ্যা চিন্তা করো না ডিভোর্স দিয়ে দিবো।(শক্ত হয়ে)
চারুর হঠাৎ মনে পড়ে নীলিমা তাকে ডায়েরি র কথা বলেছিলো।হয়তো সেই ডায়েরিতে কোনো না কোনো রহস্য থাকবে তাই সে দৌড়ে চাবি নিয়ে ছাদে গিয়ে ডায়েরি টা নিয়ে আসে।এরপর ব্যাগে ঢুকিয়ে নে।
আনাফ চারুকে পৌছিয়ে দেয় চারুর বাড়িতে।গাড়িতে দুজন একটাও কথা বলেনি।আনাফ নিজেকে শান্ত রাখলেও ভিতরে ভিতরে কস্টের স্রোত বইছে।আনাফ গাড়িতেই থাকে ভিতরে যায়না।যাওয়ার সময় চারু একবারও পিছনে ফিরে তাকায়নি।আনাফও গাড়ি নিয়ে বাসায় ফিরে যায়।
চারু না জানিয়ে না বলে হঠাৎ চলে আসছে দেখে সবাই-ই ওকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করে।সবার একটাই কথা আনাফ চলে গেলো কেনো?বাসার ভিতরে আসলোনা কেনো?চারু কিছুই বলেনি!প্রশ্নগুলোকে এড়িয়ে নিজের রুমে সে চলে যায়।
অন্যদিকে আনাফ কান্না করতে করতে,ড্রিংক করে গাড়ি চালাচ্ছিলো!চোখে ঝাপসা দেখছিলো।হঠাৎ সে এক্সিডেন্ট করে।কেউ একজন হাসপাতালে ভর্তি করে ওর মা কে ফোন করে।উনারা দ্রুত হাসপাতালে যান। যদিও বেশি কিছু হয়নি একটু আধটু আঘাত পেয়েছে।শবনম চারুকে ফোন করে জানায় এক্সিডেন্ট করেছে আনাফ।চারু এটা মাথায় ই নেয়নি।সে অহহহ আচ্ছা বলে ফোন রেখে দেয়।কোনো দয়া-মায়া দেখায় না সে।অন্যদিকে আনাফ চারুর অপেক্ষা করে যে ওকে অসুস্থ শুনে আসবে।কিন্তু চারু তো আর আসে না!
দুইদিকে দুজনেই কান্না করছে।চারুর সবচেয়ে বেশি কস্ট হচ্ছে যাকে ভালোবাসলো সে ই অভিনয় করলো,মিথ্যা বলল!!!আনাফ ও চারু দুজনের আগের স্পেশাল মুহুর্ত গুলো মনে করতে থাকে।
দুইদিন পর………..
চারুর সেই ডায়েরির কথা মনে পড়ে সে ভাবে ডায়েরিটা পড়বে…..তাই ব্যাগ থেকে ডায়েরিটা বের করে।ডায়েরিটা পড়তে নিলেই কলিংবেল বাজে।চারু দরজা খুলে দেখে আনাফ ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছে।মন শক্ত করে ডিভোর্স পেপারে সাইন করতে যাবে তখনি মনে হয় ওর ডায়েরি টা পড়ে নেয়।
সে ডায়রিটা খুলে,,,প্রথম পাথায় লিখা…..
♥আমার চারু♥
এরপরের মাথায় আনাফের সাথে কয়েকটি ছবি যেগুলো চারুর মতে কখনই তারা তুলেনি!!চারু অবাক হয়ে যায়।এরপরে আরো অনেক অনেক কিছুলেখা!একদম শেষ পাতায় লিখা —-আমি জানি চারু যখন তুমি এই ডায়েরিটা পাবে তখন আমি তোমার থেকে অনেক দূরে অনেক!যেখান থেকে চাইলেও ফিরে আসা সম্ভব না!আমি আহানের কাছে রেখে গেলাম তোমাকে।আনাফ তুমাকে ভালো রাখবে।এই মোটেও কান্না করবে না!আহানের মাঝে তুমি আমাকে খুজে পাবে।ভালো থেকো।
সব চারু পড়ে এবং কান্না করে দেয়।সে মাটিতে বসে পড়ে।
চারুঃআ…..আনাফ?আমার সব মনে পড়ে গেছে।আনাফ কখনই মরতে পারে না।সব মিথ্যা সব।আনাফের ক্যান্সার হয়নি।সব মিথ্যা।আমি প্রমাণ করবো।(কান্না করে)
১ বছর আগে……….
রিমঝিম এক বৃষ্টির দিনে দেখা হয় আনাফের চারুর সাথে,প্রথম দেখাই ই চারুকে ভালোবেসে ফেলে আনাফ।এরপর কথা হয়,মারামারি -ঝগড়া।তারপর প্রেম শুরু হয় দুজনের।আনাফ রা ছিলো দুই ভাই। একজন আহান, একজন আনাফ।আনাফ সবার বড়।আনাফ ও আহান যমজ ভাই।আনাফ চোখে দেখতো না।সে-ই আনাফকেই ভালোবেসেছিলো চারু।এতদিম আনাফ নামে এবং অন্ধ হয়ে যে অভিনয় করেছে সে হচ্ছে আহান।পরিবারের সবাই-ই আনাফ ও চারুর সম্পর্কে জানতো!
তাদের মধ্যে রকি নামের ছেলেটি চারুকে ভালোবাসতো।তাদের প্রেম দেখে সে সিদ্ধান্ত নেয় আনাফকে মেরে ফেলবে কিন্তু কিভাবে???ভাবতে ভাবতে সে ষড়যন্ত্র করে।খুবই জটিল ভাবে।আনাফের একটা সমস্যা ছিলো মাথায় সেজন্য সে প্রতিমাসে ডক্টরের কাছে যেতো।সেবারও গিয়েছিলো আর রকি ডক্টরকে টাকার লোভ দেখিয়ে ফেইক রিপোর্ট বানিয়ে বলে যে ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে।আনাফ এসব শুনে কান্না
করে দেয়।সে সবাইকে জানায় শুধু চারু বাদে কারণ চারু এসব শুনলে কাদতে কাদতে মরেই যাবে।সবাইকেও নিষেধ করে যাতে চারুকে না জানায়।
এভাবে ইঞ্জেকশন মেরে আনাফকে অসুস্থ রাখে ডক্টর। কয়েকমাস পর বিষাক্ত ইঞ্জেকশন মেরে আনাফকে মেরে ফেলে তারা।আর জানিয়ে দেয় ক্যান্সারে মারা যায়।সবাই কান্নাগ ভেংগে পড়ে।আর সবাই জানতো এমনটাই হবে।আনাফের মৃত্যুর পর চারুকে জানানো হয়।চারু শুনে কান্না করতে করতে অনেকবার বেহুশ হয়ে।শেষ মেশ কেউই আটকাতে পারেনি চারুকে!চারু দ্রুত আনাফদের বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। আর যাওয়ার পথে এক্সিডেন্ট করে।মাথায় বড়সড় আঘাত পায় ফলেআগের সব স্মৃতি হারিয়ে ফেলে। অতীতের কিছুই মনে ছিলোনা তার।১ মাস পর সুস্থ হয় চারু।।তখন এসব কিছুই মনে নেই তার। নতুন করে সব শুরু করে চারু।
মৃত্যুর আগে আনাফ আহানের হাত ধরে বলে যে—–সে যেনো চারুকে বিয়ে করে।চারুকে ভালোবাসে।চারুকে কস্ট না দেয়।চারু যেনো আহানের মাঝে আনাফকে খুজে পায়।সে তার নামটাই যেনো ব্যাবহার করে,এবং অন্ধ হওয়ার অভিনয় করে।
প্রথমে আহান মানা করলেও আহানের শেষ ইচ্ছা ভেবে সবকিছু ভুলে রাজি হয়।চারুকে আনাফ কখনই বলেনি যে ওর ভাই যমজ।চারু শুধু এটা জানতো যে আনাফের ভাই আছেএবং ১টি বোন। যমজ কি না সেটা জানতো না!!
আনাফের মৃত্যুর পর পুরো পরিবার স্তব্ধ হয়েছিলো!!তারাকিছুতেই মানতে পারছিলো না।প্রায় ২মাস লাগে সবকিছু স্বাভাবিক হতে।
আহান সন্দেহ করেছিলো রকিকে কিন্ত পরে সবকিছু ভুলে যায়।।।
(চারুর সাথে যার বিয়ে হয়েছে সে হচ্ছে আহান।)
বর্তমানে……..
চলবে……..