হৃদপিন্ড,পর্ব-৩৩,৩৪

হৃদপিন্ড,পর্ব-৩৩,৩৪
জান্নাতুল নাঈমা
পর্ব-৩৩

সাজিয়া বেগম সমানে ইভানকে ফোন করছে।
ইভান তা দেখে পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছে।
না ফোন রিসিভ করছে আর না ফোন কাঁটছে।
,
মদের নেশায় মত্ত হয়ে গেলেও মানুষ এতোটা পাগলামো করে না, যেমনটা আজ ইমন করছে।
তাহলে কি তাঁর থেকেও কঠিন নেশায় পড়ে গেছে সে??
ইমনের এই রূপ কখনো দেখেনি মুসকান।
তাহলে কি আজ সত্যি তাঁর মরন হবে??
আগুন ছোঁয়া ভালোবাসায় সে কি ভষ্ম হয়ে যাবে??

গলা থেকে মুখ ওঠিয়ে এক হাত নিয়ে নিলো পিঠে।
ব্লাউজের ফিতায় টান পড়তেই মুসকান ভয়,লজ্জায় শিউরে ওঠলো। একহাতে ইমনের হাত ধরে ফেললো।
ইমন গাড় চোখে মুসকানের দিকে চাইতেই মুসকান চোখ দিয়ে না করলো।
ইমন তাঁর চোখে চোখ রেখেই পিঠে আলতো করে আঁকড়ে ধরলো। সাথে সাথে মুসকান চোখ বুজে ফেললো।
গলাটা যেনো কেউ চেপে ধরেছে একটু আওয়াজও বের হচ্ছে না। আর না ইমন তাঁর কোন বাঁধা মানছে।
নিজের শার্টের বোতামগুলো খুলে শার্ট টা ছুঁড়ে ফেললো। শাড়ির আঁচল সরাতেই মুসকান ইমনের হাতটা শক্ত করে চেপে কাঁপা গলায় বললো,,,
— প্লিজ,,, আমার খুব ভয় করছে।
এমন লজ্জায় ফেললে আমি মরেই যাবো।
ইমন এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মুসকানের দুহাত বিছানায় চেপে ধরে নিজের সম্পূর্ণ শরীর ওর ওপর ছেড়ে দিয়ে মুখের কাছে মুখ নিয়ে বললো,,,
— কেনো বাঁধা দিচ্ছো,,,

যখন কান্না করে অভিযোগ করতে আমি তোমায় ভালোবাসিনা আমি তোমায় একটু ছুঁই না তখন আমার কেমন লাগতো বলো।

আমি তো শুধু দিন গুনেছি সঠিক একটা সময়ের।
এতোদিন তোমার মন খারাপ হতো, ভাবতে তুমি ওদের মতো স্মার্ট না, সুন্দরী না তাই আমি তোমায় কাছে টানি না কিন্তু এটাতো ভুল ধারনা তোমার।
আমার কাছে তোমার চেয়ে অপরূপ সৌন্দর্য্যের অধিকারী আর কেউ নেই। আমি তোমার মতো অসাধারণ নারী আর জীবনে দুটো দেখিনি ইটস ট্রু।
“আমি ভালোবাসি হয়তো কখনো বলিনি”
“বলাবলিতে আমার ভালোবাসা নির্ভর করেনা”
“আমি অনুভূতি তে, দায়িত্বে,সম্মানে বিশ্বাসী”
“কাছে না আসলে আহাজারি করো
কাছে গেলে পালাতে চাও”
এরপর যদি আর কাছে না আসি আর আমি যদি বুঝতে পারি তুমি আমায় কাছে পাওয়ার জন্য ছটফট করছো তাহলে সেদিন দেখবে আমি কি জিনিস।

ইমন বেশ রাগ নিয়েই ওঠে পড়তে নিলো।
মুসকান ভয় পেয়ে গেলো, বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে ওঠলো। সব জড়তা কাটিয়ে ইমনের একহাত আঁকড়ে ধরলো।
ইমন বাঁকা হাসলো সে জানতো রাগ দেখালে মুসকান তাঁকে হারানোর ভয় পাবে। চোখে দুষ্টু হাসি নিয়ে তাঁর দিকে ঘুরতেই শক্ত করে জরিয়ে হুহু করে কেঁদে ওঠলো।
ইমনের বেশ রাগ হলো এবার সময়টাকে এভাবে নষ্ট করার কোন মানে হয়??
প্রথম বাসর যে কারনে সবার আড়ালে পুরো একটা বাড়ি ফাঁকা রেখে এতো সব আয়োজন করলাম।
এতোগুলো ভাইবোন যাতে কোন ভাবে এন্ট্রি না নিতে পারে কোন প্রকার বদমাইশির সুযোগ না নিতে পারে সেভাবে ব্যবস্থা করলাম। কি লাভ হলো,,,
নিজের বউই বদমাইশি শুরু করেছে।
নাহ এভাবে হবে না,,, যতো মায়া দেখাবো ততো নিজের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবো, মুচকি হেসে মুসকানের দুগালে আলতো করে চেপে ধরে কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিলো।
গালে, থুতনিতে গলায়,সমানে কিস করতে থাকলো।
মুখের কাছে এসে ঠোঁট দিয়ে গালে বয়ে চলা পানি গুলো শুষে নিলো।
কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,,,
সেধে আদর দিতে এসেছি গ্রহন করো মিসেস।
ইমন চৌধুরীর আদর পাওয়ার জন্য কতো মেয়ে কাঙাল হয়ে আছে তা কি তুমি জানো।
মুসকান চোখ দুটো খুললো রাগি চোখে ইমনের দিকে তাকাতেই ইমন টপ করে ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়িয়ে দিলো।
আবারো কপালে, নাকে, গালে চুমু একে ঠোঁটে ঠোঁট দিতে নিতেই মুসকান এক হাতে বাঁধা দিয়ে মুখ সরিয়ে নিয়ে বললো,,,

— সব আলো নিভিয়ে দিন,আপনি এভাবে আমাকে দেখতে থাকলে আমি বাঁচবো না।
কথাটা বলা শেষ হতে না হতেই ইমন শাড়িটা কৌশলে হাতে পেঁচিয়ে একটানে খুলে ছুঁড়ে ফেললো।
মুসকান আঁতকে ওঠে দুহাতে নিজের মুখটা ঢেকে ফেললো।
— কিভাবে তুমি মরো সেটাই তো দেখতে চাই।
তোমার সব লজ্জা বিসর্জন দেওয়ার পালা আজ।
বলেই বুকে মুখ গুজে দিলো।
মুসকান সাপের মতো মোড়ামুড়ি শুরু করে দিলো।
ইমনের চুলগুলো খামচে ধরলো।
ইমন ধীরে ধীরে মুখ নামিয়ে নিলো পেটের দিকে পরপর চুমু দিতে দিতে তলপেটের কাছে পৌঁছাতেই মুসকান কেঁপে কেঁপে কাঁদতে শুরু করলো।

ইমন চোখ তুলে একবার চেয়ে মুসকান কে দেখে নিলো। সুখের সাগরে ভাসতে ইচ্ছে হলো খুব করে।
তাই আর এক মূহর্ত দেরী করলো না।
মুসকানের সম্পূর্ণ শরীর নিজের আয়ত্তে করে নিলো।
কপালে আলতো করে চুমু খেলো। দুহাতে তাঁর দুহাত রেখে আঙুলের ফাঁকে আঙুল ঢুকিয়ে আঁকড়ে ধরলো তাঁর হাতজোরা।
“পূর্ণতা পেলো দুটো হৃদয়ের অসীম ভালোবাসার”
“আদরে আদরে ভরিয়ে দিলো ইমন মুসকানকে ”
“ভালোবাসার অন্য এক রূপ চেনালো আজ ইমন মুসকান কে ”
“সেই সাথে উজার করে দিলো তাঁর বুকে জমানো অজস্র প্রেমকে”
তাঁর মতো প্রেমিক পুরুষের ভালোবাসায় উন্মাদনায় মত্ত হয়ে রইলো মুসকান।
,
ফজরের আজান কানে ভাসতেই মুসকান নড়ে চড়ে ওঠলো। ইমন এখনো তাঁর পুরো শরীর নিজের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছে। তাঁর ভারী শ্বাস পড়ছে ঘাড়ে।
ঘুমিয়েছে বুঝতে পারলো।
তাঁর সাথে কি সব ঘটে গেছে ভাবতেই লজ্জায় মিইয়ে গেলো কেমন।
“মানুষ টা চোখ বুজে আছে চোখ খুললেই আমার মরন ” “ইশ কিভাবে সামনে থাকবো আমি ”
“ওনি এমন পাগলামি কেনো করলেন”
“ওনি কি ছোট বাচ্চা হয়ে গেছিলেন”
“ওনার চাহনী,ওনার ছোঁয়ায় এতো নেশা কেনো ছিলো”
“নিজের শরীরটাকে আর নিজের মনে হচ্ছে না তাঁর”
“সবটাই যে ইমনের দখলে চলে গেছে”
“এতো আদর এতো ভালোবাসা কোথায় রেখেছিলেন ওনি” ইমনের দিকে তাকালো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে কে বলবে এই লোকটা তাঁর সাথে সারারাত কি অসভ্যতামিগুলো না করেছে???
জ্বিভে কামড় দিলো মুসকান।
“ভাগ্যিস শুনে নেয় নি শুনে নিলে আর রক্ষে থাকতো না ” ভেবেই লজ্জায় চোখ দুটো বন্ধ করে নিয়ে গভীর এক শ্বাস ছাড়লো।
তাঁর সকল ভাবনায় ছেদ পড়লো কলিং বেলের আওয়াজে।
মুসকান ভয়ে চুপসে গেলো। এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজ কি করে??
এমন ভাবে বাজাচ্ছে কান যেনো এবার ফেটে পড়বে।
মুসকান ভয়ে ভয়ে ইমনের মাথায় হাত রেখে ডাকলো,,,
— শুনুন,,,এই যে শুনছেন,,,

ইমন আরো গভীর ভাবে জরিয়ে বললো,,,
— ডেকোনা দু’ঘন্টা পর জাগিয়ে দেবে।

— কলিং বেল বাজছে ওঠুন না,,,ভয় করছে আমার।

ইমন একটু নড়ে চড়ে ওঠতেই মুসকানের দিকে চেয়ে একহাত ডানপাশে দিয়ে শাড়িটা হাতে নিয়ে মুসকানের দিকে দিয়ে বললো,,,
— শাওয়ার নিয়ে নাও ফার্স্ট।

মুসকান লজ্জায় শেষ,,, দ্রুত শাড়ি নিয়ে নিজেকে ঢেকে বিছানা ছেড়ে ওঠে পড়লো।
ইমন ভ্রু কুঁচকে ভাবলো,,,
— এই সময় কে এলো।
নাহ একসাথেই শাওয়ার নিয়ে নেই দ্রুত হবে।

মুসকান সোঁজা হয়ে দাঁড়াতেই তাঁর মাথাটা ঝিম ধরে গেলো। বুঝলো না ঘুমানোর জন্য এমন লাগছে।
দ্রুত কয়েক পা ফেলতে নিতেই তাঁর পা সহ কোমড় অবদি ব্যাথায় টনটন করে ওঠলো।
ভয়ে এক ঢোক গিলে চোখ পিটপিট করে কাবার্ডের দিকে এগিয়ে গেলো।
ইমন ওঠে গিয়ে তয়ালে গলায় পেঁচিয়ে বাথরুম পা দিতে নিয়েও থেমে গেলো।

ভ্রু কুঁচকে মুসকানের দিকে তাকালো,
ধীর পায়ে হাঁটছে,,, ওর কি কষ্ট হচ্ছে??
হলেই কি মুখ ফুটে তো বলবে না।
আর এই কষ্ট আমি দিয়েছি তাহলে তো কথাই নেই।
এতো ভাবার সময় না নিয়ে মুসকানের কাছে গিয়ে পাজাকোল করে নিয়ে বাথরুম দাঁড় করিয়ে দুজন একসাথেই শাওয়ার নিয়ে নিলো।

দুজন একসাথে ফজরের নামাজটাও আদায় করে নিলো। মুসকান লজ্জায় একটা কথাও বলছে না বেশ চুপচাপ।
নামাজ শেষে ইমন ওঠে পড়লো।
কিন্তু মুসকান ওঠছে না।
ইমন কিছু সময় ওয়েট করলো।
মুসকানের মুখটা কেমন ফ্যাঁকাশে।
সে আস্তে করে ওঠার চেষ্টা করছে পারছেনা।
ইমন বেশ বুঝতে পারছে ওর ওঠতে সমস্যা হচ্ছে।
হওয়ারই কথা ৪৫কেজি ওজনের লেডি হয়ে সারারাত ৭৫কেজির ভাড় বহন করা সত্যি মশকিলের। কিন্তু কি করা যাবে কিচ্ছু করার নেই।
এটুকু তো সহ্য করতেই হবে ভেবেই মৃদু হাসলো।

মুসকানের দিকে একহাত এগিয়ে দিতেই মুসকান চোখ তুলে তাকালো। ইমন অমন চাহনী দেখে তাঁকে
পাজাকোল করে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে আরেকটা তয়ালে এগিয়ে বললো,,,
এটা দিয়ে মাথা মুছে নাও, আমি গিয়ে দেখি কে এসেছে।

দরজা খুলতেই অভ্র কান্না করে ইমনকে জরিয়ে ধরলো। হাউমাউ করে কাঁদছে অভ্র।
— ব্রো তোকে এতো ফোন করছি সুইচ স্টপ।
ল্যান্ড লাইনে শতশত ফোন করেছি বাধ্য হয়ে এখানেই এলাম দু’ঘন্টা যাবৎ কলিং বেল বাজাচ্ছি।
ব্রো সব শেষ, সব শেষ।

ইমন স্তব্ধ হয়ে গেলো। অভ্রর এমন আর্তনাদ তাঁর অন্তর টা কাঁপিয়ে তুললো।
গম্ভীর গলায় বললো খুলে বল কি হয়েছে??

অভ্র কান্নার বেগ থামিয়ে ইমন কে সব খুলে বলতেই ইমন তাঁর হাত দুটো শক্ত মুঠ করে ফেললো।
দাঁতে দাঁত চেপে বললো চল আমার সাথে।
অভ্র হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে পড়লো।
ইমন থেমে গেলো,,,

— গাড়িতে বোস আমি দুমিনিটে আসছি।
দৌড়ে উপরে চলে গেলো ইমন। মুসকান চুলমুছে তয়ালেটা রশিতে মেলেছে সবে।
ইমন দুম করে এসে মুসকানকে জরিয়ে ধরলো।
রাগে ফুঁসছে সে।
মুসকান ভয় পেয়ে গেলো।
মিনমিনে স্বরে বললো কি হয়েছে,,,

ইমন মুসকানকে ছেড়ে কপালে কিস করে নিয়ে বললো,,,
সায়রী আসবে কিছুক্ষন পর বাড়ির বাইরে এক পা ও রাখবেনা । আমি যতোক্ষন না আসবো এ বাড়ি থেকে কোথাও বের হবে না তুমি। “ইটস মাই অরডার” পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাক আমার আদেশ তুমি অমান্য করবে না।
ফ্রিজে হালকা খাবাড় আছে খেয়ে ড্রয়ার থেকে শরীর ব্যাথার ওষুধ টা খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে নাও কেমন। কপাকে আবারো চুমু খেয়ে মুসকান কে ছেড়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে চলে গেলো ইমন।
,
জনি সহ সাত জন কে বেঁধে পা থেকে মাথা অবধি ক্রমাগত আঘাত করছে ইমন সহ ইমনের বাকি লোক গুলো। সাইটে পুলিশ ঘেরাও করে আছে।
সাতজনকেই গোপনাঙ্গে এমন আঘাত করা হলো যে সাত জনই সেন্সলেস হয়ে গেলো।
ইমন চিৎকার করে বললো ইভান কুত্তার বাচ্চা কে আমার সামনে নিয়ে আয়।
এই পুলিশ যা একরামুল চৌধুরীর কুসন্তান কে ধরে নিয়ে আয় আমার সামনে।

— স্যার ওনি পাগলের মতো ছটফট করছে।
আপনার মা ওনাকে মারতে মারতে আধ মরা করে ফেলেছে। আপনার বোনের অবস্থা ভালো না। আপনাকে এখুনি যেতে বলা হয়েছে সেখানে।
আপনার দূরসম্পর্কের বোনকে ইভান ছুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে সে এখন হসপিটালে ভর্তি।

চলবে……

হৃদপিন্ড
জান্নাতুল নাঈমা
পর্ব-৩৪

প্রথমে পুরো এলাকা,সমাজের মানুষ জন তারপর পুরো শহড় দিয়ে ছেয়ে গেলো।
“নিজের ভাইয়ের করা ষড়যন্ত্রের শীকার হয়ে ধর্ষিত হয়েছে নিজেরই বোন”
এতো বড় বাড়ির মেয়ে হয়ে এতো সিকিউরিটি থাকা সত্বেও ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে।
নিজ ভায়ের করা ষড়যন্ত্রেই। পাড়া – প্রতিবেশী সহ পুরো শহড়ের লোক যেখানে চৌধুরী বাড়ির কাজের লোক দেখেও ভয়ে থাকে চোখ তুলে কথা বলার সাহস পর্যন্ত দেখায় না কখনো সেখানে তাঁদের বাড়ির মেয়ের সাথে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটে গেলো।
নিজের লোকেই ছুড়ির আঘাত দিলো বুকে।
চৌধুরী বাড়ির সদস্য বলেই বোধহয় এমন নির্মম ঘটনা ঘটাতে পেরেছে। সব দিক খেয়াল করে বিচার বিশ্লেষণ করে কারো আর বুঝতে বাকি রইলো না কি থেকে ঠিক কি ঘটে গেছে।
“চোরের মতো দেশের বাইরে থেকে কুকুড়-বিড়াল ধরে এনেছিলো অন্যের ক্ষতি করার জন্য”
শেষে নিজেরই চরম ক্ষতি হয়ে গেলো।
বলা যায় নিজের হাতেই নিজ বোনকে ধর্ষনের মুখে ঠেলে দেওয়া। চেয়েছিলো নিজের ফুপাতো বোন নিজের বড় ভাইয়ের বউ এর সম্মানে আঘাত করতে।
উপরওয়ালার বোধ হয় সেটা সহ্য হলো না।
তাই যে জঘন্য ঘটনা ঘটাতে গিয়েছিলো অন্যের প্রিয়জনকে নিয়ে সেই ঘটনাটাই ঘটে গেলো তারই এক প্রিয় মানুষের সাথে।
“মানুষের দ্বারা সংগঠিত জঘন্য অপরাধগুলোর মধ্যে জঘন্যতম হলো ধর্ষণ” আর সেই ঘটনার স্বীকার যখন নিজ বোন নিজের কলিজার টুকরোর সাথে ঘটে যায় সে কি ঠিক থাকতে পারে???
না পারে নি রাগে,ক্ষোপে, ঘৃনায় রিতিশাকে এট্যাক করে যার ফলশ্রুতিতে সে এখন হসপিটালে।
চৌধুরী পরিবারের সবাই মর্মাহত। সাজিয়া গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে যাচ্ছে।
একরামুল চৌধুরী সব ঘটনার সম্মুখীন হয়ে ইভানকে গায়ের শক্তি খাটিয়ে কয়েকটা থাপ্পড় দিয়েই বুকে হাত চেপে বসে পড়েছেন।
ওনিও চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ইভান যন্ত্রণায় ছটফট করছে শারিরীক আঘাতে নয়।
তাঁর বোনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা সহ্য করতে না পেরে। পুলিশ সহ মিডিয়ার লোকজন বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে সকলেই বাকরুদ্ধ।
এমন ঘটনা দুনিয়ার বুকে বোধহয় এই প্রথম ঘটলো।
সাজিয়া বেগম ছুটে ইভানের বুক বরাবর থাপরাতে থাপরাতে বললো,,,
“কিরে মেরে ফেললি না কেনো?
এতো কিছু করতে পারলি আর এটা করতে পারলি না ”

ইভান নিচে বসে পড়লো মায়ের দুপা আঁকড়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো।
“মা গো বিশ্বাস করো আমি জানতাম না ”
আমি তো ভেবেছিলাম ঐ মুসকান,,
কিন্তু যখন আমি নিজ চোখে আমার বোনের আর্তনাদ ছটফট দেখলাম আমার কলিজাটা একদম ঝাজরা হয়ে গেছে মা।
সাজিয়া বেগম পা ছুটিয়ে মাটিতে বসে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
ইমন শেষের কথাগুলো শোনা মাএই ঝড়ের বেগে এসে ইভানের বুক বরাবর এক লাথি দিলো।
বুকে পা পিসতে পিসতে বললো,,,
— এই কুলাংগার তুই কি বললি কি বললি তুই।
নিজের মাথা দিয়ে ইভানের মাথায় এক বাড়ি দিলো।
তোকে আমি নিজের হাতে খুন করবো।
এতো নিচু জঘন্য মনের মানুষদের দুনিয়াতে বেঁচে থাকার অধিকার নেই।
“তুই আমার হৃদপিন্ডে আঘাত করতে চেয়েছিস”
“আমার হৃদপিন্ডে আঘাতের পরিকল্পনা করেছিস”
“তোর জন্য আজ আমার নিজের বোনের সম্মান হানি হয়েছে”
“তোর জন্য আমার কলিজার বোনের গায়ে কলঙ্কের দাগ লেগেছে তোর বেঁচে থাকার অধিকার নেই বলেই গলা চিপে ধরলো ”
পাঁচজন পুলিশ এসেও ছাড়াতে পারছিলো না।
প্রচন্ড ধস্তাধস্তি করে পুলিশরা ছাড়ালো ইমনকে।

— মি. চৌধুরী আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।
ওনার কৃতকর্মের জন্য চরম শাস্তি পাবেন ওনি।
ভুলে যাবেন না “বর্তমানে দেশে ধর্ষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে প্রতিটি মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। দেশের প্রতিটা মানুষেরই এর শাস্তি সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আমাদের দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আইন ২০০৩ সেকশন ৯ অনুসারে ধর্ষণের শাস্তি হলো, ধর্ষণের কারণে বা ধর্ষণের পর ভিক্টিমের কোনো ক্ষতি হলে বা ভিক্টিম র্ধষণের পর মারা গেলে ধর্ষণকারীকে মৃত্যুদন্ড দিতে হবে এবং এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হবে।

কোন নারী বা শিশুকে একাধিক ব্যক্তি মিলে ধর্ষণ করলে এবং সেই মহিলা বা শিশু মারা গেলে বা আহত হলে প্রত্যেক ব্যক্তির মৃত্যুদন্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হবে।

যেকোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণের পর মৃত্যু বা আঘাত করার চেষ্টা করলে, তাকে কঠোর কারাদণ্ড এবং জরিমানা করা হবে।তবে ধর্ষণের বর্ণনা যথাযথভাবে দিয়ে দোষ স্বীকার করলে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে, যা পরবর্তীতে কমে ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে কিন্তুএর কম মেয়াদ নয় এবং জরিমানাও হতে পারে।

ইমন প্রচন্ড রেগে গেলো তেড়ে গিয়ে পুলিশের কলার টেনে ধরে বললো,,,
— তোর আইন তোর কাছে রাখ। তোর আইন এই ইমন চৌধুরী মানে না। আমার বোনের গায়ে যেখানে ফুলের টোকা দেওয়ার সাহস কেউ রাখে না সেখানে আমার বোনের সাথে কি ঘটে গেছে ধারনা আছে তোর।
আঙুল তুলে,,,এই পুলিশ সরকারি খাশ কামলা।
আজ জেলে পুড়বি শাস্তির মেয়াদ শেষ না হতেই মোটা অংকের টাকা নিয়ে কোর্টে ভুলভাল বুঝিয়ে ছাড়া করিয়ে দিবি।
কিন্তু শাস্তি, শাস্তি ভোগ করালি কোথায়।
এদের শাস্তি আমি দেবো নিজ হাতে।
যা এই জানোয়ার কে তোর হাতে তুলে দিলাম।
তোদের হেফাজতে ছেড়ে দিলাম।
মনে রাখিস দশ, বিশ বছর বুঝিনা,এক লাখ,পাঁচ লাখ বুঝিনা। মৃত্যু দন্ড চাই ইয়েস সবকটার মৃত্যু দন্ড চাই যতো টাকা লাগে আমি দিবো তবুও সঠিক বিচার,সঠিক শাস্তি চাই। কোনভাবে যদি একটা কুকুর,-বিড়ালও ছাড়া পায় তোর মৃত্যু আমার হাতে।
আর মনে রাখিস মেয়ে বলে ঐ পিশাচিনী যেনো ছাড় না পায়। হসপিটালে আছে বলে ওর পাপের বোঝা কমে যায় নি।
পুলিশ যখন ইভান কে তুলতে নিলো তখনি ইমন আবারো ইভানের গলা চেপে ধরলো।

“আমি আগেই বলেছিলাম আমার নিষ্পাপ মুসকানের দিকে কলঙ্কের দাগ দিতে এসো না তোমরা”

“ভাগ্যের লিখন না যায় খন্ডন ”
“আমি বলেছিলাম না আমার আর ওর মাঝে কেউ আসতে পারবে না” “আর না কেউ আমার থেকে ওকে আলাদা করতে পারবে”
চাঁদের ও কলঙ্ক থাকে কিন্তু আমার “মুগ্ধময়ী” কে তোরা কেউ কলঙ্কিত করতে পারিসনি, আর না পারবি।
” আমি বলেছিলাম আমার থেকে ওকে যারা ছিন্ন করতে চাইবে তাঁরা নিজেই নিঃশ্বেস হয়ে যাবে”
“হয় আমার হাতে নয় তো নিয়তির হাতে”
আজ থেকে তোদের নিঃশ্বেস হওয়ার পালা।

ইভানকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে হসপিটালের দিকে ছুটে গেলো ইমন।

সাজিয়া বেগম নির্বাক হয়ে গেলো।
এতোদিন যাকে পর ভেবে দূরে ঠেলে দিয়েছে আজ সেই তাঁর মেয়ের জন্য এতো কষ্ট পাচ্ছে।
তাঁর মেয়ে তাঁর কলিজা অথচ কখনো বুঝতে দেয়নি।
আজ এতোবড় বিপদের সময় পাগলের মতো ছুটে এসেছে। তাঁর লোভ,হিংসা ছেলে মেয়েদের ওপর স্থাপন করতে গিয়ে আজ পুরো পরিবারটাকেই বিপর্যয়ে ফেলে দিয়েছে।
,
ইয়ানা, নিপ্রা, নিলয়, অভ্র হসপিটালের এক কোনে বসে আছে। নদী,নদীর হাজব্যান্ড অভ্রের বাবা এনামুল চৌধুরী, দাদী সহ সকলেই উপস্থিত রয়েছে।
ইমন আসতেই দাদী ইমনে জরিয়ে ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো।
ইমন দাদীকে জরিয়ে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,,,
— কেঁদো না দাদী সব ঠিক হয়ে যাবে।
অভ্র,,,

ইমনের ডাকে অভ্র চলে এলো।

— অখিলের সাথে কথা হয়েছে

— হুম।

— কোথায় আছে??
অভ্র কেবিন দেখিয়ে দিতেই ইমন দাদীকে ছেড়ে সেদিকে গেলো।
কেবিন থেকে বেরুতেই শুনতে পেলো সাজিয়া বেগম কাঁদছেন আর বলছেন,,,
“আমার ছেলে মেয়ে গুলোর জীবন এভাবে ধ্বংস হয়ে গেলো” আমার মেয়েটার কি হবে এখন।
মুখ দেখাবো কি করে আমরা??
আমার মেয়েটা বাঁচবে তো??
আর বাঁচলে এই সমাজে মুখ দেখাবে কি করে??
সবাই তো ছিঃ ছিঃ করবে।
ডুকরে কেঁদে ওঠলো সাজিয়া বেগম।

স্যাট আপ,,,
— আপনি আর একটা কোথাও বলবেন না।
খুব খারাপ লাগছে তাইনা,,,খুব খারাপ লাগছে নিজের মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর, অভিশপ্ত ঘটনাগুলো দেখে। আর কে করেছে কে করেছে??
কে দায়ী এসবের জন্য আপনারই আরেক সন্তান।
আপনারই নিজের বোনের মেয়ে যাকে কিনা আপনি নিজের সন্তান দের থেকেও বেশী প্রাধান্য দিতেন।
আজ নিজের মেয়ের সম্মান, নিজের ছেলের কূকীর্তি চেপে রাখার জন্য চুপচাপ থাকতে বলছেন কিসের ভয়ে সমাজের ভয়ে??
কিসের সমাজ??
আপনি ভুলে যাবেন না মিসেস সাজিয়া চৌধুরী।
ইয়াশফা ইমন চৌধুরীর বাবার সন্তান, ইয়াশফা আমার নিজের বোন। আমার বোনের সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ আমি করবোই কঠোর থেকে কঠোর শাস্তি দিবো ঐসব কুলাংগারদের।
কারো সাধ্য নেই আমাকে আটকানোর।
ভয় পাচ্ছেন সমাজকে? ভয় পাচ্ছেন নিজের সন্তান দের জীবনে কলঙ্কের দাগ দেখে।
হায় খোদা এই তোমার মানবজাতি। শ্রেষ্ঠ জীব।
এটাও দেখার বাকি ছিলো,,,
হায় আল্লাহ আমার মুসকান কে তুমি এতো বড় অভিশাপ থেকে রক্ষা করলে আর আমার বোন টাকে
রক্ষা করতে পারলে না। কার পাপের শাস্তি তুমি কাকে দিলে।
নিজের মাথার চুল টেনে ধরলো ইমন।
চোখে তাঁর বিন্দু জলকনা এসে ভর করেছে।

সাজিয়া বেগম অবাক হয়ে চেয়ে আছে যাকে এতোদিন শত্রু ভেবে এসেছে, সৎ ছেলে বলে কোনদিন মায়ের স্নেহ দেয়নি। সব সময় নিজের ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভেবেছেন। ইমন কে ঠকিয়ে নিজের সন্তান দের জীবনকে সুখময় করতে চেয়েছেন আজ কিনা তাঁর মেয়ের জন্য ছেলেটা এইভাবে কষ্ট পাচ্ছে। নিজের পেটের ছেলে এতোবড় জঘন্য একটা অপরাধ করেছে। আর সৎ ছেলে হয়েও ইমন এমন নির্মম পরিস্থিতি তে তাঁর মেয়ের পাশে রয়েছে বড় ভাই হয়ে।
সাজিয়া বেগম নিজের দুহাত কামড়ে ধরে মেঝেতে হাটুগেরে বসে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো।
ইয়ানা গিয়ে সাজিয়াকে ধরলেন।

— হায় আল্লাহ আমার পাপের শাস্তি কেনো আমার মেয়েটা কে দিলে।
ইমন বাবা তুমি ইভানকে খুন করে ওর রক্ত এনে দাও আমার কাছে সেই রক্তে গোসল করে আমার বুকটা হালকা করতে চাই। এমন কুলাংগার সন্তান যেনো কারো ঘরে না জন্মায় গো আল্লাহ বলেই জ্ঞান হারালো সাজিয়া বেগম।
,
জ্ঞান ফিরতেই হুহু করে কেঁদে ওঠলেন।
ইয়াশফার কাছে যাওয়ার জন্য পাগলের মতো ছটফট করতে লাগলো। হাজার হলেও সে যে মা,
মা হয়ে মেয়ের এতো বড় অসম্মান, এতো বড় ক্ষতি কি করে সহ্য করবে। সবাই মিলে সাজিয়াকে সামলাতে লাগলো।
সাজিয়া বুকে থাপ্পড় দিতে আবারো বলতে লাগলো সমান তালে।
— আমার মেয়েটার কি হবে গো,আমার মেয়েটা কি করে লোকচোখে মুখ দেখাবে। আমার মেয়ের যে মরে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
কে বিয়ে করবে আমার মেয়েকে বলেই হাউ মাউ করে কাঁদতে শুরু করলো। তাঁর এই পাগলামো ইমনের সহ্য হচ্ছে না।
মাথাটা এমনিতেই খারাপ হয়ে আছে।
ইয়াশফার জ্ঞান না ফেরা অবদি সে কোথাও যাবে না।

— থামুন আপনি আপনি একটা কথাও বলবেন না।
যেমন আপনি তেমন আপনার সমাজ।
আপনার ছেলে, ভাগ্নি মিলে একটা নিষ্পাপ প্রানকে মেরে ফেলার, ভয়াবহ অবস্থা করার চিন্তা করেছিলো। তাঁরা হয়তো কল্পনাও করতে পারেনি তাঁরা যে গর্ত খুঁড়েছে সে গর্তে নিজেরাই পড়বে।
ইভান কখনোই কল্পনা করেনি যে গর্ত সে মুসকানের জন্য খুঁড়েছে সেই গর্তে তাঁর কলিজার টুকরো টা গিয়ে পড়বে। পাগলের মতো করাগারে ছটফট করছে এখন সে।
আমি অবাক হয়ে যাই ওরা কতোটা জঘন্য মনের মানুষ। কি এমন করেছে মুসকান ওদের।
এতটা রাগ এতোটা হিংসা যে এতো জঘন্য একটা প্ল্যান করেছে ওরা। কিন্তু ওরা জানেনা প্ল্যান ওরা করলেই ওদের ভাবনা অনুযায়ীই সেটা সাকসেসফুল হয় না। এই গোটা বিশ্ব যার প্ল্যান মাফিক চলছে তাঁর ওপর কারো হাত নেই।
যা হয়েছে খুব খারাপ হয়েছে,,, তাই বলে ইয়াশফার জীবন শেষ হয়ে যায় নি। যারা অপরাধ করেছে জীবন তো তাঁদের শেষ হবে। আর সমাজের মানুষ কি বললো না বললো তাতে আমার জায় আসে না।
আপনি আপনার সন্তান দের মানুষ করতে পারেননি।
নিজের এক সন্তান আরেক সন্তানের জীবনটা বিষিয়ে দিয়েছে সেই বিষ তোলার জন্য ইমন চৌধুরী একাই যথেষ্ট।
সমাজ কি বললো তাতে আমার কিছু জায় আসেনা।
আমার বোনের জন্য আর কাউকে ভাবতে হবে না।
আমি,,, এই ইমন চৌধুরী একাই যথেষ্ট।
আপনার কষ্ট হচ্ছে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে কারন আপনার নিজ কন্যা ভয়াবহ পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছে।
একটু ভেবে দেখুন তো আজকে যদি মুসকানের জায়গায় ইয়াশফা না গিয়ে মুসকান ই থাকতো তাহলে ঘটনা টা মুসকানের সাথেই ঘটতো।
নিজের জিনিসের ক্ষতি হয়ে গেলে কতোটা যন্ত্রণা হয় বুঝতে পেরেছেন। হ্যাঁ ইভান আমার ক্ষতি করেছে ইয়াশফাও আমার,,, আমারি বোন, কিন্তু আমার থেকেও ইয়াশফা ইভানের বেশী প্রিয়।
আর এই পৃথিবীতে মুসকান আমার সব থেকে বেশী প্রিয়।
ইভান আমার প্রিয় জিনিসে আঘাত করতে এসে অজান্তেই নিজেই নিজের জিনিসে আঘাত করে ফেলেছে।
আর এটা ইভান সহ আপনার জন্য উপরওয়ালার দেওয়া শাস্তি।
কি দোষ ঐ মেয়েটার, সে তাঁর কর্ম দিয়ে গুন দিয়ে, স্বভাব, দিয়ে আমাকে জয় করে নিয়েছে।
ঐ মেয়েটা কেনো বার বার এসবের সম্মুখীন হবে বলতে পারেন?? জন্মের পর থেকে শুরু করে এ বাড়ি বউ হওয়ার পর থেকে তো কম অপমান, অসম্মান সহ্য করেনি। ইভান ও তাঁকে অসম্মানের চেষ্টা করেছে, জীবনের প্রতিটা পদে সে অসম্মানের মুখোমুখি হয়েছে।

“আমাদের পরিবারে যখন একজন কন্যা সন্তান বেড়ে ওঠে। তখন সেই কন্যা সন্তান টি বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা বুঝে ওঠার আগেই সমাজের কিছু লোকরা বুঝে যায় সেই কন্যা সন্তান টি নারী।
সমাজে, পরিবারে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তেই কারো ঘরে কন্যা সন্তান জন্মালে আশে পাশের মানুষ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সে নারী।
ছোট্ট নিষ্পাপ কন্যা শিশুটি তাঁর শরীরের বিশেষ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাহাত্ম্য বোঝার আগেই সমাজের কিছু জন্তু-জানোয়াররা বুঝে যায় সেই অঙ্গপ্রতঙ্গের মাহাত্ম্য”
হায় সমাজ, হায় মানব জাতি।
যেই সমাজের ভয় আপনি করছেন সেই সমাজ কতোটা সম্মানিত। আমাদের সমাজে বহু অপ্রকাশিত ধর্ষক রয়েছে, বহু অপ্রকাশিত রয়েছে ধর্ষিত হওয়া নারীরা।
সমাজের ভয়ে চুপ করে থাকা যাবে না।
বরং অভিশপ্ত সমাজের রূপ রেখা তুলে ধরে এসব জানোয়ারদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে।
তবেই সমাজ থেকে এসব অন্যায়, খারাপ কাজ বিলুপ্ত হবে।

চলবে…

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here