হৃদপিন্ড,সূচনা পর্ব

হৃদপিন্ড,সূচনা পর্ব
জান্নাতুল নাঈমা

রক্তাক্ত হাতের দিকে বড় বড় করে তাকিয়ে কাঁপতে কাঁপতে দিলো এক দৌড়। ছুরিটা এখনো ডানহাতের শক্ত বাঁধনে রয়েছে। মেয়েটা প্রানপনে ছুটে চলেছে রাতের আঁধারে শুনশান নীরবতার রাস্তায়। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ওড়নাটা রাস্তায়ই পড়ে গেছে সেদিকে কোন খেয়াল নেই। মন,আর মাথায় শুধু একটাই চিন্তা তাকে পালাতে হবে। নয়তো মানুষরূপি জানোয়ার গুলো তাকে খুবলে খাবে। একবার পিছনে আবার সামনে তাকিয়ে দৌড়াচ্ছে আবারো পিছনে চেয়ে সামনে আগাতেই খেলো এক ধাক্কা। সাথে সাথে রাস্তায় হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেলো। হাত থেকে ছুড়িটা ফসকে গেলো। ছিটকে পড়লো খানিকটা দূরে। ভয়ে তার অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠলো পুরুষ লোকটিকে দেখে। হাঁপাতে হাঁপাতে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো ছুড়ির দিকে ঝড়ের বেগে ওঠে ছুড়িটা নিয়েই পুরুষ লোকটির দিকে ধরলো।
কাঁপতে কাঁপতে চিৎকার করে বললো খবরদার একদম এগোবেন না। খুন করে ফেলবো বলেই ছুরিটা বুক বরাবর লাগাতে নিতেই পুরুষ লোকটি হাত চেপে ধরে দিলো এক ধমক।
এই মেয়ে কে তুমি, কি সমস্যা এতো রাতে কোথায় থেকে এলে। বলেই আশে পাশে তাকাতে লাগলো না কেউ নেই।
মেয়েটি কেমন হিংস্র বাঘিনির মতো চেষ্টা করতে লাগলো ছেলেটির গায়ে ছুড়ির আঘাত করার।
বেশ ধস্তাধস্তি ও শুরু হয়ে গেলো দুজনের মধ্যে।
এক পর্যায়ে ছেলেটি আর না পেরে মেয়েটিকে কষিয়ে এক চড় বসিয়ে দিলো গালে।
সাথে সাথে মেয়েটি ছিটকে পড়ে গেলো নিচে।

একি এক চড়েই জ্ঞান হারালো। এ আবার আমাকে খুন করতে এসেছে, এই ইমন চৌধুরী কে বলেই বাঁকা হাসলো।

মেয়েটার পুরে শরীরে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো।
এক ঢোক গিলে গলাটা ভিজিয়ে নিলো।। হঠাৎ এমন গলা শুকিয়ে গেলো কেনো? গলা শুকিয়ে গেলো অথচ বুকের ভিতর এমন শীতল হয়ে ওঠলো কেনো?
এই পুচকে মেয়েটাকে দেখে এমন হলো কেনো? আমি কি তবে সত্যি ভয় পেয়ে গেলাম? জাগ্রত বাঘিনীকে থামিয়ে শেষমেষ ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে ভয় পেলাম ?
বিরবির করে কথা গুলো বলে মেয়েটির পাশে এক হাঁটু ভাজ করে বোসলো। এতো একেবারেই পুচকে, পনেরো হয়েছে কিনা সন্দেহ, যা ফিগার দেখে তো মনে হয় না এর পনেরো পড়েছে বলেই বাঁকা হাসলো।
আরেকবার আশে পাশে চোখ বুলিয়ে নিলো।
কেমন যেনো ভয় ভয় করছে তার এটা ভয় নাকি অন্য কিছু? ইমন চৌধুরী কি সত্যি কোন কিছুতে ভয় পায়? মেয়েটা আবার ভূত না তো?
ধূর কি যে ভাবিনা ভূত টূত আছে নাকি, ভূত কে এক চড়েই দমানো যায় নাকি।
এতো পাক্কা বাঘিনী, বাঘিনী তো বাঘের কাছে হার মানবেই বাঁকা হাসলো ইমন।

মেয়েটা কে পাজাকোল করে নিয়ে গাড়িতে শুইয়িয়ে দিলো। ড্রাইভিং সিটে বসে রওনা দিলো নিজের গন্তব্য স্থলে।

মেয়েটা কে?
কেনো তাকে নিজের সঙ্গে নিলো ইমন?
এসবের কোন উত্তর ই ইমনের জানা নেই
শুধু একটা জিনিস ই সে জানে এই মেয়েটাকে দেখে তার কেমন একটা লেগেছে,সেটা ভয় না কি সে বিষয়ে সে সিওর নয়, বিকজ ইমন চৌধরী কখনো কাউকে ভয় পায় না।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here