গল্পের নাম: হটাৎ এক বৃষ্টির দিনে,পর্বঃ১০ মান অভিমান,পর্বঃ১১ kiss
নবনী নীলা
পর্বঃ১০ মান অভিমান
“আমি কারোর উপর রাগ করিনি। আমি কেনো রাগ করতে যাবো?”,বলেই নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম।
“সত্যিই রাগ করোনি?”, প্রশ্ন করলো অভি।
আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়লাম।
অভি বিস্ময় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,” এতো কথা শুনার পরও রিয়েক্ট করছো না। তোমার এসবের পর রাগ হচ্ছে না।”
” আমি রাগ করে কি করবো। আপনার জীবন আপনি যা ইচ্ছে করুন।”, নিচু স্বরে বললাম আমি।
” ওকে done। সেটাই করবো।”বলে অভি উঠে চলে গেলো। অভি রেগে গেছে। হটাৎ আমি কি এমন বললাম যে রাগ করলো।এভাবে রাগ দেখিয়ে গেলো কেন?
সকালে আমি ভার্সিটির জন্যে তৈরী হয়ে রওনা দিলাম। অভি সকালেও দরকারের বাহিরে একটাও কথা বললো না। ভার্সিটিতে গিয়ে ক্লাস করতেও ভাল্লাগছে না। দুইটা ক্লাস করে আমি বাসায় চলে আসি।
আমি অনেক সময় ধরে রান্না করলাম। তাও সময় কাটছে না।
সারাদিন অভির জন্য অপেক্ষা করলাম অভি এলো অনেক রাতে তার নাকি ইম্পর্ট্যান্ট কাজ ছিলো।
আমি আর কিছু বললাম না। সারাদিনে একবার আমাকে ফোনও দেয়নি হটাৎ এমন পরিবর্তন। মন মরা করে আমি পড়ার রুমে এসে বই নিয়ে ঘাটাঘাটি করলাম।
এই রুমটায় একটা সিঙ্গেল খাট, পড়ার টেবিল বিশাল এক বুকশেলফ। বুকশেলফ এ এতো বই যে আমার চুল পেকে যাবে সবগুলো বই পড়ে শেষ করতে।
আগে প্রথম প্রথম আমি এই রুমে থাকতাম। একদিন ঘুমের মাঝে একটা বাজে স্বপ্ন দেখে ঘুমের মাঝে চিৎকার করেছিলাম। অভি ছুটে নিজের রুম থেকে চলে এসেছিল। ভাগ্যিস সেদিন সে জেগে ছিলো। সারারাত কান্না করে কাটিয়েছিলাম আমি। স্বপ্নটা ভুতের স্বপ্ন ছিলো। পুরো ফ্ল্যাট এ বাতি জ্বালানোর পর আমি একটু শান্ত হয়েছিলাম।
আমি রুমের খাটে শরীর ছড়িয়ে শুয়ে পড়লাম। কালকে থেকে আমি ঐ রুমে কম যাচ্ছি। হয়তো সোফার রুমে নয়তো এখানে আসি।
এই রুমটায় অনেক সুন্দর একটা গাছের পেইন্টিং আছে। গাছটার পাতাগুলো নীল এজন্যই পাইন্টিংটা আমার ভালো লাগে।
অভির রাগ কখন ভাঙবে? আমার কি উচিত ওর রাগ কমানোর চেষ্টা করা, জড়িয়ে ধরবো গিয়ে?যদি আমার হাত সরিয়ে দেয় অভি।
কি করেছি সেটাই বুঝতে পারছি না রাগ ভাঙ্গবো কিভাবে? আমি কি রেগে কথা বলেছি? না আমিতো শান্ত ছিলাম। তাহলে……..?
“নওরীন! নওরীন!”অভির গলা, অভি ডাকছে। আমি লাফ মেরে উঠে বসি। তাহলে কি রাগ কমেছে। যাই হোক আমাকে ডেকেছে এই ভেবেই আনন্দ লাগছে। আমার কথা মনে পড়েছে তাহলে।
আমি গিয়ে দেখি অভি পানির জগ থেকে গ্লাস এ পানি ঢালছে। আমি গিয়ে ডায়নিং টেবিলের একটা চেয়ার ধরে দাঁড়ালাম।
অভি ইশারায় জগের পাশে আমার ফোন দেখিয়ে বললো,” তোমার ফোন বাজছে।” আমি ফোনটা এইখানে রেখে হয়তো ভুলে গেছি।
ভাইব্রেশনের কারণে শুনতেও পাইনি। অভি আমাকে ফোনের জন্যে ডেকেছে ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। ফোনটা বেজে না উঠলে কি ডাকতো না আমাকে। আমি ফোনটা নিয়ে আগের জায়গায় চলে এলাম।
ভেবেছিলাম অভি কিছু বলবে কিন্তু সে আর কিছুই বলেনি।
অভি নওরীনকে খুঁজতেই এসেছিলো। কারন বাসায় আসার পর থেকে নওরীন অভির আসে পাশে নেই।
অন্যদিন সোফায় বসে টিভি দেখতো আজ তাও করছেনা। রান্না ঘরে আছে কিনা দেখতে এসে দেখে নওরীনের মোবাইল ভাইব্রেট করছে।
নওরীনকে ডাকার ভালো একটা অজুহাত পাওয়া গেছে।
অভি কথা বলছেনা কারণ অভিমান হয়েছে। অথৈ নওরীনকে কম কিছু বলেনি এরপরও নওরীন শান্ত ছিলো।অন্য মেয়ে হলে হয়তো অভিকে নাকানি চুবানি দেওয়াত। অভি নওরীনকে ভালোবেসে ফেলেছে হয়তো কিন্তু নওরীন কি পেরেছে।
অভির একটু অভিমান হয়েছে। কারন সারাদিনে নওরীন তার আসে পাশে ঘুরেনি। টিভির সাউন্ড বাড়িয়ে দিয়ে অভিকে বিরক্ত করেনি। উল্টা পাল্টা কান্ড কারখানা কিছুই সে করেনি। শান্ত হয়ে আছে।
অভি ফোনটার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর হয়ে গেলো। ইমন ফোন করেছে। একবার না ৭টা মিসড কল উঠে আছে।
নওরীনের ফ্রেন্ড রচনা বলেছিলো ইমন নামের এই ছেলের নওরীনের প্রতি দুর্বলতা আছে, নওরীন ওর ভালো ফেন্ড তাই সে প্রকাশ করেনি। রচনা অভিকে প্রায়
এমন কথা জ্বালানোর জন্যে বলে।
অভি নওরীনকে এতক্ষনে ডেকেও ফেলেছে আগে এই নাম দেখলে সেটা হয়তো করতো না। নওরীনকে আসতে দেখে পানির জগ হাতে নেয়।
নওরীনকে ফোন হাতে অন্য রুমে যেতে দেখে অভির রাগ লাগলো। দুই গ্লাস পানি খেয়ে অভি রুমে চলে যাচ্ছিলো। যাওয়ার আগে নওরীনের রুমে যেতে ইচ্ছে হলো। কি এমন কথা যার জন্য ফোন রুমে নিয়ে যেতে হলো।
আমি রুমে বসে বিরক্তি নিয়ে ইমনকে ফোন দিলাম। ইমন সঙ্গে সঙ্গে ফোন ধরলো।
” কিরে ফোন ধরিসনি কেনো এতক্ষন?”, ওপাশ থেকে বললো ইমন।
” কি জন্য ফোন দিয়েছিস সেটা বল।”
” ৩দিন পর আমাদের একটা অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। তুই তো ক্লাস না করে চলে গেছিস তাই জানানোর জন্য ফোন দিয়েছি। তোর ইমেইল চেক করলে পেয়ে যাবি সব।”
” আচ্ছা ঠিক আছে।”, নিচের ঠোঁট উল্টে বললাম।
অভি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এদিকে জানালার দিকে তাকিয়ে ফোন হাতে নওরীন বসে আছে। ইমন কথা বলছে, ইমন মাঝে মাঝে মজার কথা বলে।
কথাগুলো সত্যি না মিথ্যা নওরীন জানে না কিন্তু শুনে হাসি থামানো যায় না।
ইমন বলছে,” জানিস আজকে কি হয়েছে? আজকে রিক্সাওয়ালার টায়ার গেলো ফুটো হয়ে। বাধ্য হয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরছিলাম জানিসই তো আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাটি। ইটের সাথে ঊষ্ঠা খেয়ে একটা মহিলা কুকুরের লেজে একটু পারা পরে। বিশ্বাস করবি না বউ জামাই মিলে আমাকে তাড়া করেছে। ১০ মিনিটের রাস্তা ৪মিনিটে এসেছি। বউয়ের প্রতি কুকুরের ভালোবাসা দেখে আমি বিমোহিত।”
নওরীন হাসতে হাসতে বিছানায় শুয়ে পড়লো। শুয়ে পড়তেই তার চোখ গেলো দরজার দিকে অভি বুকের কাছে হাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে আছে।
নওরীন হাসি থামিয়ে উঠে বসলো। অভির চোখ মুখ শক্ত।
অভির কথায় নওরীনকে সে এভাবে কখনো হাসতে দেখেনি। অভির রাগ হচ্ছে কিন্তু রাগ সে দেখাতে পারছে না বলে আরো রাগ হচ্ছে। নওরীন ফোন কেটে দিয়ে উঠে দাড়ালো।
নওরীন বুঝতে পারছেনা অভি কখন থেকে এখানে এসে দাঁড়িয়ে আছে।
অভি ভারী গলায় বললো,” কালকে রাতের বাসে আমরা বাড়ি যাচ্ছি। জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখো অফিস থেকে ফিরে তোমাকে নিয়ে যাবো।”
নওরীন ক্ষীণ গলায় বললো,” হটাৎ কালকে!”
” জানি না মা যেতে বলেছে।”
” কয়দিনের জন্য যাচ্ছি?”
” দুইদিন “, বলেই অভি মুখ ঘুরিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
নওরীন কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না কারণ অভি নিজের রুমের দিকে চলে গেলো। নওরীনের কান্না পাচ্ছে। তার ইচ্ছে করছে অভির সামনে বসে কাদতেঁ তখনও কি সে রাগ করে থাকবে?
[চলবে]
গল্পের নাম:হটাৎ এক বৃষ্টির দিনে
পর্বঃ১১ kiss
নবনী নীলা
“তোমার আর অভির মাঝে কিছু কি হয়েছে?” অর্পা আপুর কথায় আমি না সূচক মাথা নাড়লাম। অভি এখনও আমার উপর রেগে আছে তবে আপুকে বলার সাহস হয়ে উঠলো না। আজ রাতে আসার কথা ছিলো সে দুপুরে বাসায় এসে বলে এক্ষনি যাবে। ২ঘণ্টার রাস্তা আসতে আসতে বিকেল হলো। এতক্ষণে আপু সমস্যার আন্দাজ করে ফেলেছেন।
অভির বড়ো বোন অভির মতন না সে পুরো বিপরীত হাসি, খুশি, প্রাণ উজ্জ্বল তবে অসম্ভম সুন্দরী।
বাসার কাজের মহিলা এসে বললো,” আফা, দুলাভাই, ভাইজান আর মামাজান ঐডি খাইতাসে ছাদে বইসা।”
আমি আপুর দিকে তাকালাম। আপু কঠিন গলায় মতিনের মাকে বললো,” কি খাচ্ছে?”
আমি আর আপু ছাদে গিয়ে দেখি তিনটা বেতের চেয়ারে দোতলার ছাদে বসে wine টাইপ কিছু খাচ্ছে তারা। অভি মাথায় হাত দিয়ে গ্লাস হাতে বসে আছে। ব্যাপারটায় আমি অবাক হ়ইনি কারণ এদের বংশের মানুষদের অভ্যাস আছে।
অর্পা আপু দুলাভাইকে টেনে তুলতে তুলতে বললো,” মামা তুমি খাচ্ছো খাবে ওদের না খাওয়ালেই পারতে। অভি নিজেকে একটু হলেও সামলাতে পারবে। আমারটাকে আমি কি করবো? বাবা, মা,ফুফু আছে কি ভাববে যদি এ অবস্থায় এদের দেখে।”
অভির মামা বিয়ে করেনি মদ, উইসকি এইগুলো সে চায়ের মতন খায়।তাকে নেশায় খুব কম ধরে। তিনি হাসতে হাসতে বললেন,” তোর বাবা একটু আগে খেয়ে গেলো, প্রথমে না বললো শেষে ২গ্লাস খেয়ে নিলো।”
অর্পা আপু মামাকে আর কিছু না বলে আমায় অভিকে রুমে নিয়ে যেতে বললেন।আমি অভির হাত ধরে কাধে হাতটা রেখে উঠালাম।মামা আমাকে ডেকে বললেন,” একটু লেবুর শরবত দিও অভিকে বেশ ভালই খেয়ে নিয়েছে।”
আমি কোনো রকমে অভিকে রুমে নিয়ে এলাম। রুমে সে ভালো ভাবেই এলো। মুভিতে যেমন মাতাল দেখেছি ঢুলে ঢুলে যায় তেমন কিছুই করছে না। দরজার সামনে হটাৎ দাড়িয়ে পড়লো।
এবার সে দাড়িয়ে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে। এমন মাতাল তো আমি কোনো মুভিতেও দেখিনি!
আমি বললাম,” কি দেখছেন আপনি?”
অভি ফ্লোর এ বসে পড়লো।
মনে হচ্ছে তার মাথা ব্যাথা করছে। মাথায় হাত দিয়ে আছেন।
” উঠুন আমি আপনাকে বিছানায় নিয়ে যাচ্ছি। আপনার মাথায় ম্যাসেজ করে দিবো।”
অভিকে নিয়ে আমি খাটে বসাতে চাইলাম যাতে তার মাথা ম্যাসেজ করতে পারি। সে খাটে শুয়ে পড়ল দুলতে দুলতে।
ব্যাথায় অভি নড়াচড়া শুরু করেছে। সহ্য করতে না পারলে খেতে কে বলেছে।
আমি অভির মাথা তুলে আমার কোলে রেখে ভালো ভাবে ম্যাসেজ করে দিচ্ছি। অভি চুপ করে চোখ বন্ধ করে আছে।
আমিতো শুনেছি এইগুলো খেলে মানুষ আরো বেশি কথা বলে উল্টা পাল্টা কথা। এর দেখি কথা বন্ধ হয়েগেছে।
অভি হটাৎ আমার হাত ধরে হাতটা বুকের কাছে নিয়ে ধরে রাখলো।
” আচ্ছা আপনি কি আমার উপর রাগ করেছেন?”আমি প্রশ্ন করলাম।
অভি চোখ খুলে বাচ্চাদের মতন মাথা নাড়িয়ে হা বললো।বলেই সে উঠে বসার চেষ্টা করছে কিন্ত ঠিকমতো ব্যালেন্স করতে পারছে না। আমি অভিকে ধরে অভির পিঠের নীচে একটা বালিশ দিয়ে বসলাম।
অভি শক্ত করে আমার দুই বাহু ধরে বললো,” তুমি অন্য ছেলেদের সাথে হেসে হেসে কথা বলবে কেনো? আমার সাথে কখনো হেসে কথা বলেছো।”
আমার বুকের ভিতরটা ধক করে উঠল।
বলেই অভি আমাকে আরো শক্ত করে ধরলো। আমার ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছিলো পরে মনে হলো উনিতো একটা ঘোরের মধ্যে আছে এখন। মাতলামি করছে এগুলো ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
আমি হেসে বললাম,”আচ্ছা আর কোনো ছেলের সাথে হেসে কথা বলবেনা শুধু আপনার সাথে হেসে কথা বলবো। এবার ছাড়ুন আমার হাত দুইটা খসে পড়বে নইলে।”
অভি আমাকে ছেড়ে আমার গাল টেনে বললো,” গুড গার্ল।” বলে আমার হাত ধরে বালিশে হেলান দিলো।
ওমা গো কথায় কাজ হইছে। একবার বললাম বুইঝ্যা গেসে এই জিনিস আগে কই ছিলো। এইটা তো আরো আগে খাওয়ানো উচিৎ ছিলো। অভি হাসছে প্রাণ খুলে হাসছে। মুখ থেকে হাসি সরছে না। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি। অভিকে রোজ এই ছাই পাশ খাওয়ানো দরকার এভাবে হাসবে তাহলে।
আচ্ছা আমি যতদুর জানি এইগুলো খেলে কিছু মনে থাকে না মানুষ সত্যি কথা বলে। পরীক্ষা করে দেখলে কেমন হয়।
আমি বললাম,” আচ্ছা আপনি কি অথৈকে এখনো ভালোবাসেন?”
অভি চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে চিন্তায় আমার অবস্থা খারাপ।যদি হা বলে তখন তোর কি হবে নওরীন।
অভি মুখ গম্ভীর করে বললো,” না।”
বাহ্ এইটাই তো শুনতে চাচ্ছিলাম।” খুব ভালো খুবই ভালো। ওর চেহারাও কোনোদিন দেখবেন না ।”রাগী স্বরে বললাম।
অভি ভদ্র বাচ্চার মতন সম্মতি জানিয়ে দুলতে দুলতে মাথা নাড়ল। বাহ্ এমন একটা জিনিস উনি এর আগে খায় নি কেনো। আমিও একদিন খেয়ে দেখবো যে এইটা আবিষ্কার করেছে তাকে অস্কার দেওয়া উচিৎ।
তাহলে কি সেফুদা ঠিক বলতেন ” মদ খাও মানুষ হও।”
অভির পেট থেকে আরেকটা কথা বের করতে হবে।
আমি বললাম,” তাহলে বিয়ের আগে যে বললেন সে আপনাকে ছেড়ে গেছে কিন্তু আপনি ভুলেননি। ওইসব কি ছিলো।”
” ওইগুলো বলেছি জাতে আমাকে কোনো মেয়ে বিয়ে না করে। আমি কেনো ওই চিটারকে ভালোবাসবো।”অভি বলে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে।
আমার ইচ্ছে করছে চিৎকার করে সবার কানের পর্দা ফাটিয়ে দেই। খুশিতে আমি অভিকে জড়িয়ে ধরি। জড়িয়ে ধরে বুঝতে পরলাম অভির শরীর গরম। আমি মাথায় হাত দিয়ে দেখলাম কিন্তু জ্বর নেই। তাহলে শরীর এমন গরম কেনো?
অভি নিজের শার্টের বোতাম বিরক্তি নিয়ে খুলে ফেলছে।
” আরে আরে করছেন কি?” বলে আমি অভির হাত ধরে ফেললাম।
” গরম লাগছে। শার্ট খুলবো”,বলে আমার হাত ছাড়িয়ে নিলো।
” এসি চলছে তারপরও আপনার গরম লাগছে? আমি এসি বাড়িয়ে দিচ্ছে শার্ট খুলবেন না।” ,বলে শেষ না করতে অভি শার্ট খুলে ফেলেছে।
এবার আমার অসস্তি লাগছে। মামার কথা মতন লেবুর শরবত খাওয়াতে হবে। আরো মারাত্বক কিছু করার আগে থামাতে হবে।
” আচ্ছা আমি একটু আসছি আপনি বসুন।”,বলে যেই আমি উঠতে নিয়েছি অভি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমাকে কাছে নিয়ে এলো।
আমার শরীরের লোম খাড়া হয়ে গেছে। অভির দিকে আমি তাকাতেও পারছিনা, অভির গায়ে শার্ট নেই। একটু আগে বাচ্চাদের মতন করছিলো এখন আবার কি হলো? হটাৎ করে বড়ো হয়ে গেলো কিভাবে।
” তুমি এখানে থাকবে”,বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমি একটা ঢোক গিললাম। নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে আমার। মনে হচ্ছে আমি বরফ হয়ে গেছি।
” আচ্ছা থাকবো, আমাকে ছাড়ুন।”, গলা শুকিয়ে গেছে আওয়াজও বের হচ্ছে না। অভি আমার কাধ থেকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকালো।আমি অভির চোখের দিকে তাকাতে পারছি না।
অভি আমার ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। কিছু সেকেন্ড আমি বুঝতেই পারিনি কি হলো।
মদ খেয়ে বউ পিটানোর কথা শুনেছি কিন্তু এটা কি হলো? জিনিসটা যত ভালো ভেবেছিলাম এতো ভালো না।
[ চলবে ]