#মনের_অরণ্যে_এলে_তুমি
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_২০ ( শেষাংশ )
” তুমি এখানে! ”
ইনায়ার কণ্ঠে ঝড়ে পড়ছে বিস্ময়! হেলমেটের কাঁচ নামিয়ে ওর দিকে তাকালো রাহিদ।
” হাঁ আমি। এমন ভাব করছিস যেন মহাকাশ থেকে এলিয়েন টপকে পড়েছে। ”
সহসা কিছু মনে পড়ার ভঙ্গিমায় রাহিদ জিজ্ঞেস করলো,
” হাঁ রে! তোর চোখ ঠিক আছে তো? তুই কি আমার বদলে সত্যিই এলিয়েন দেখতে পাচ্ছিস? ”
একে ক্লান্ত শরীর। এর ওপর অহেতুক কথাবার্তা। মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে মেয়েটার। দাঁতে দাঁত চেপে সে বললো,
” রাহি ভাইয়া! আমি সম্পূর্ণ ঠিক আছি। আপাদমস্তক। ওকে? এবার বলে ফেলো তুমি এখানে কি করছো? বাড়ির গাড়ি কোথায়? ”
” চিকিৎসালয়ে। ” নির্লিপ্ত জবাব।
চমকালো ইনায়া, ” কিহ্! ”
রাহিদ বাম হাতে কান চেপে ধরে মৃদু আর্তনাদ করে উঠলো,
” আহ্! এত চেঁচামেচি করছিস কেন? কানের পর্দা ফাটিয়ে দিবি নাকি? ”
” প্রয়োজন পড়লে দেবো। ভরদুপুরে এমনিতেই আমি টায়ার্ড। এরমধ্যে তুমি রসিকতা শুরু করেছো। গাড়ি কোথায়? ”
” বললাম না চিকিৎসালয়ে। ওটার পেট খারাপ হয়েছে। তাই চিকিৎসা চলছে। ”
ওষ্ঠাধর গোলাকার করে তপ্ত শ্বাস ফেললো ইনায়া। স্বেদজল উপস্থিত মুখশ্রী, গলদেশে। লালাভ রঙ ধারণ করেছে মুখ। তা লক্ষ্য করে রাহিদ বললো,
” বোস আমার পেছনে। ফুপি দায়িত্ব দিলো তোকে বগলদাবা করে নিয়ে যাওয়ার। আয় আয়। বস। ”
বাইকে একসাথে ভ্রমণ! বিষয়টি মস্তিষ্কে কড়া নাড়তেই চরম আশ্চর্যান্বিত হলো ইনায়া! একবার রাহিদ আরেকবার বাইকের পেছনাংশে তাকাচ্ছে। ওর কাণ্ড দেখে রাহিদ দিলো এক ধমক,
” ব য় রা হয়ে গেছিস নাকি? কথা কানে ঢোকে না? বস।”
বেজার মুখে কাঁধের ব্যাগ সামলিয়ে বাইকের পেছনাংশে বসলো ইনায়া। দু’জনের মধ্যে বাঁধাস্বরূপ ব্যাগটি রাখা। হেলমেটের কাঁচ উঠিয়ে ফেললো রাহিদ। পেছনে থাকা কিশোরীকে উদ্দেশ্য করে বললো,
” ঠিকমতো ধরে বস। পড়ে যাবি তো। তখন আবার ফুপাজান বাংলা সিনেমার চৌধুরী সাহেবের মতো তেড়েফুঁড়ে আসবেন। ”
ইনায়া বেজার মুখে বিড়বিড় করে আওড়ালো,
” যতসব ফাউল কথাবার্তা! ”
এমনিতেই অস্বস্তিতে গাঁট অবস্থা! তন্মধ্যে এত নিকটে এ পুরুষের উপস্থিতি। হিমশীতল শিহরণ বয়ে যাচ্ছে তনুমন জুড়ে। স্বেদজলের সরু রেখা গড়িয়ে পড়ছে দু কপোল ছুঁয়ে। অবশেষে বাইক চলতে আরম্ভ করলে মিললো স্বস্তি! শহরের পথ ধরে এগিয়ে চলেছে বাইক। সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত সঙ্গী। বুকের ধারে ব্যাগটি এক হাতে আঁকড়ে ধরে ইনায়া। উপভোগ করছে এ ভ্রমণ। ডানে বাঁয়ে রাস্তাঘাট, দোকানপাট সবই চেনাজানা। তবুও আজ অনুভূত হচ্ছে নতুনত্ব। লাগছে বেশ ভালো। চেনা সড়কের যানজট, কোলাহল সবই ভালো লাগছে। শ্রবণেন্দ্রিয়ে বেজে চলেছে,
‘ এই পথ যদি না শেষ হয়… ‘
.
বাড়ি নয় বরং ভিন্ন গন্তব্যে এসে থামলো বাইক। রাহিদ হেলমেট খুলতে খুলতে আদেশ প্রদান করলো,
” নাম। ”
” হাঁ! এখানে কেন? বাড়ি যাবো না? ”
” না রে। তোকে এখানে মে রে বালুচাপা দেবো। নাম বলছি। ”
শেষোক্ত ধমকে সুড়সুড় করে নেমে গেল মেয়েটি। রাহিদ বিরক্তিসূচক শব্দ করে বাইক হতে নেমে এলো। যথাযথ ভাবে স্ট্যান্ড করলো বাইকটি। ইনায়া ব্যাগ কাঁধে আশপাশে তাকাচ্ছিল। অনুধাবন করতে পারলো কোথায় এসেছে তারা। কিন্তু হঠাৎ এখানে কেন?
” চল। ”
রাহিদের পিছুপিছু রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলো ইনায়া। রাহিদ একটি ফাঁকা টেবিল দেখে সেদিকে অগ্রসর হলো। বসলো সোফায়। ইনায়া ব্যাগ নামিয়ে বিপরীত দিকের সোফায় বসলো। রাহিদ ওকে শুধালো,
” বল কি খাবি? ”
” খেতে ইচ্ছে করছে না ভাইয়া। এখানে না থেমে বাড়ির পথে যেতে। আম্মু চিন্তা করবে তো। ”
” ফাও বকিস না তো। আমি থাকতে কিসের চিন্তা? এখন কিছু খেয়ে নে। সে-ই কোন বেলায় খেয়েছিস। পরে রাস্তাঘাটে ফিট খেলে সামলাবে কে? ”
” কেন? তুমি! ”
মুখ ফসকে কথাটি বলে নিজেই চমকালো ইনায়া! এসব কি বলছে সে! দ্রুত নিজেকে ধাতস্থ করে নিলো। রাহিদ বিদ্রুপের স্বরে বললো,
” মাথা নষ্ট? আমি কোনো ঝামেলায় নেই। পিওর নির্ঝঞ্ঝাট মানুষ আমি। ”
প্রত্যাশিত জবাব পেয়েও মনোক্ষুণ্ন হলো মেয়েটির। আস্তে করে দৃষ্টি নত করে নিলো। রাহিদ টেবিলের ওপর রাখা মেনু কার্ডে দৃষ্টি বুলাতে বুলাতে প্রশ্ন করলো,
” এখন কি খাবি বল? লাঞ্চ টাইম। সে-ই মোতাবেক বল। কি খাবি? ”
” তোমার যা ইচ্ছা। ”
” ওকে। ”
রাহিদ ওয়েটার ডেকে নিজের পছন্দমতো অর্ডার প্লেস করলো। আর নীরবে শান্ত রূপে বসে রইলো ইনায়া। শূন্য দৃষ্টি নিবদ্ধ রেস্টুরেন্টের জানালা গলিয়ে বাহিরে।
•
রৌদ্রোজ্জ্বল এক দিন। দেশজুড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে পুরোদমে। আর মাত্র দু সপ্তাহ। এরপর ‘ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘. এ বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বছরের মাঝামাঝি সময়ে। গরমের মধ্যে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন মনোনীত প্রার্থীরা। তেমনই এক ব্যস্ত দিন আজ।
ছোটোখাটো এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইরহাম চৌধুরী। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন। সম্মুখে দাঁড়িয়ে অসংখ্য জনগণ। তন্মধ্যে রয়েছে দলীয় নেতা-কর্মী প্রমুখ। সাংবাদিকরা গোটা বিষয়টি কভার করছে। উপস্থিত জনগণের ভীড়ে লুকায়িত তিন দেশদ্রো-হী। বিভীষণ। এ তিন তরুণ ভীড়ের মধ্যে আনাচে কানাচে ছড়িয়ে। ইরহামের দলীয় কর্মী ব্যতিত তাদের রয়েছে ভিন্ন এক পরিচয়। ঘরের শ ত্রু বিভীষণ তারা। যাদের অন্তরে লুকায়িত কুটিল পরিকল্পনা। পরিকল্পনা মোতাবেক কাছে পিঠেই আজগর সাহেবের দল প্রচারণায় ব্যস্ত। মধ্যকার দূরত্ব অতি সামান্য। ইরহাম যখন ভাষণ প্রদানে লিপ্ত তখনই কুটিল কর্মে নিযুক্ত হলো এক তরুণ। উপস্থিত জনগণের দৃষ্টি বাঁচিয়ে সে আস্তে ধীরে সরে গেল নিরালায়। দেয়ালে সেঁটে থাকা এক পোস্টারে তাকিয়ে বক্র হাসলো।
অতঃপর অতিবাহিত হলো কিছু মুহূর্ত। আকস্মিক শুরু হলো স-হিংসতা! ইরহামের দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর ধেয়ে এলো অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাত। আজগর সাহেবের দলবল অনবরত আঘাতের ওপর আঘাত করছে এদের। সবটার মূল হেতু মাটিতে পড়ে থাকা আজগর সাহেবের কিছু ছেঁড়া পোস্টার। অগ্নিশিখায় জ্বলছে যা। সামান্য এ ঘটনাকে ইস্যু করে অরা*জকতায় লিপ্ত হলো বিরোধী দল। লাঠিসোঁ*টা নিয়ে আ*ক্রমণ করলো তারা। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখে ইরহাম দ্রুত মঞ্চ হতে নেমে এলো। ফাঁকা এক স্থানে দাঁড়িয়ে ফোন করলো বন্ধু তাঈফকে। দু পক্ষই লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে। একপক্ষ মেটাচ্ছে ব্যক্তিগত আ*ক্রোশ তো আরেকপক্ষ প্রতিরোধে লিপ্ত। লাঠির আঘাত পেরিয়ে হাত-পাও চলতে লাগলো। ঘু*ষি, লা-থ পড়লো না বাদ। আহত হতে লাগলো ইরহামের দলীয় কর্মীরা। ইরহাম দ্রুত ফোনালাপ সেরে নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলো। প্রতিরোধ করতে লাগলো এ সহিং*সতা। অনবরত নিজ দলীয় কর্মীদের নিষেধ করতে লাগলো আ**ক্রমণাত্মক না হতে। শুনলো না কেউই। সাংবাদিকরা নিরাপদ অবস্থানে দাঁড়িয়ে সকল দৃশ্যই ক্যামেরা বন্দী করছে। চলছে দু পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। সং*ঘর্ষ।
কিছুক্ষণ পর উপস্থিত হলো স্থানীয় পুলিশ। লাঠিপে*টা করে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। ছুঁড়ছে টিয়ারগ্যাস। গোটা পরিস্থিতি হাতের বাহিরে চলে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে কঠোরতম রূপে আবির্ভূত হলো পুলিশের সদস্যরা।
.
নিশুতি রাত। কলিংবেলের আওয়াজ কর্ণপাত হচ্ছে। দ্বার উন্মুক্ত করলেন এক পরিচারিকা। হতভম্ব হলেন আগত ব্যক্তিদের দেখে! তাঈফ সালাম দিয়ে বন্ধুর হাত ধরে ধরে মন্থর গতিতে ভেতরে প্রবেশ করলো। লিভিংরুম পেরিয়ে দোতলায় উঠলো সিঁড়ি বেয়ে। করিডোরে উপস্থিত হতেই দেখা মিললো ইরহাম পত্নীর। হৃদি পুলিশের পোশাক পরিহিত তাঈফকে লক্ষ্য করে হাসিমুখে সালাম দিলো,
” আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। কে ম ন.. ”
আর বলা হলো না হৃদির। হতবিহ্বল মেয়েটির মুখনিঃসৃত হলো মৃদু আর্ত।
” ই-রহাম! ”
টলমল করে উঠলো নেত্রযুগল। দ্রুত পায়ে ছুটে এলো হৃদি। ধরলো স্বামীর বাঁ হাত। অস্ফুট স্বরে শুধালো,
” এ কি হয়েছে আপনার? ”
তাঈফ পরিস্থিতি অনুধাবন করে স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো,
” ভাবী ভেতরে চলেন আগে। তারপর না হয়.. ”
হাঁ সূচক মাথা নাড়ল হৃদি। কপোল ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়লো এক ফোঁটা নোনাজল। স্বামীর বাম হাতটি দৃঢ়রূপে আঁকড়ে ধরলো মেয়েটি। অগ্রসর হতে লাগলো কক্ষের পানে। তাঈফ বন্ধুর হাতটি আগেই ছেড়ে দিয়েছে। সে ধীরপায়ে পিছুপিছু এগোতে লাগলো। তবে কক্ষের দ্বারে পৌঁছে থেমে গেল। ভাবলো কিছু। ভাবনা শেষে ভেতরে আর প্রবেশ করলো না। পিছু হটে সেথা হতে সরে গেল।
আহত স্বামীর হাত ধরে তাকে বিছানায় বসালো হৃদি। নোনাজলে ভরপুর আঁখি জোড়া ঝাপসা হয়ে আসছে। লালিমা লেপে চোখেমুখে। এ কি হাল হয়েছে মানুষটির! শ্বেত শুভ্র পাঞ্জাবির কাঁধের অংশে লাল লাল র-ক্তের ছোপ। মাথায় মোড়ানো সরু সাদা ব্যান্ডেজ। সেখানেও র-ক্তের ছোপ ছোপ দাগ। চশমা অনুপস্থিত। ভেঙে গিয়েছে কি? আবেগপ্রবণ রমণী আলতো হাতে স্বামীর চুলে হাত বুলিয়ে দিলো। ওর পানে ব্যথাতুর চাহনিতে তাকালো ইরহাম। বেদনা মিশ্রিত হাসার চেষ্টা করলো। মৃদু স্বরে আশ্বস্ত করতে বললো,
” আ মি ঠিক আছি হৃদি। কেঁদো না। ”
” আমি তো সকালে আমার সুস্থসবল মানুষটিকে বিদায় জানিয়েছিলাম। এ কি রূপে ফিরে এলেন আপনি? আমার যে অন্তরে জ্বা’লা করছে। আপনাকে এমন র*ক্তাক্ত রূপে দেখতে পারছি না। ”
ফুঁপিয়ে ক্রন্দনে ভেঙে পড়লো হৃদি। কি থেকে কি করবে, কেমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে জানা নেই। দিশেহারা অবস্থা। প্রথমবারের মতো তো। ওর মনোভাব উপলব্ধি করতে পারছে ইরহাম। সে দুঃখময় চোখে তাকিয়ে আলতো হাসলো। ক্রন্দনরত সহধর্মিণীর হাতটি ধরে ঠেকালো নিজের ডান কপোলে। চক্ষু বুজে লম্বা শ্বাস প্রশ্বাস ছাড়ল। মিহি কণ্ঠে বললো,
” আলহামদুলিল্লাহ্ আ’ম ফাইন। কেঁদো না মেয়ে। ”
নাক টেনে ওষ্ঠাধর গোলাকার করে তপ্ত শ্বাস ফেললো হৃদি। হাতের উল্টো পিঠে অশ্রু কণা মুছে নিলো। স্বামীর কপোল হতে হাত সরিয়ে ভেজা কণ্ঠে বললো,
” আপনি বসুন। আমি জামা নিয়ে আসছি। চেঞ্জ করতে হবে। ”
মানুষটিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কাবার্ডের ধারে এগিয়ে গেল হৃদি। বের করলো ঘরের পোশাক। পিছু ঘুরে তাকাতেই চমকালো! আবেগতাড়িত মালিহা দাঁড়িয়ে দরজায়।
” মা! ”
মালিহা ভেতরে প্রবেশ করে ছেলের কাছে এলেন। শাড়ির আঁচলে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে লাগলেন। ইরহামের অবস্থা করুণ। মা কাঁদে, বউ কাঁদে। কারে রেখে কারে সামলাবে? মা’কে সামলানোর পন্থা নাহয় পুরনো, পরিচিত। কিন্তু বউ? একে সামলাবে কি করে? ছেলের কাঁধ আঁকড়ে ধরে ক্রন্দনে লিপ্ত মালিহা। ইরহাম কোনোমতে মা’কে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। ঝাপসা চোখে তা অবলোকন করতে লাগলো হৃদি।
.
.
‘ আনন্দাঙ্গন ‘ এ ছড়িয়ে পড়েছে ইরহামের আহত হবার খবর। কি ঘটেছিল আসলে?
সহিং*সতা চলাকালীন সময়ে কেউ একজন কাপুরুষের ন্যায় আড়াল হতে ইটের টুকরো ছুঁড়ে মে-রেছে। সে টুকরো সরাসরি আঘাত করেছে ইরহামের কপালের ডান অংশে। চশমাও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আঘাতপ্রাপ্ত স্থান হতে মুহূর্তের মধ্যেই র*ক্তপাত হতে লাগলো। ডান হাতে আহত স্থান চেপে ধরলো মানুষটি। তা লক্ষ্য করে সাহিল আঁতকে উঠলো,
” ভাই! ”
সাহিল এবং দলীয় দু’জন কর্মী ছুটে এলো। ইরহামের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যথাসম্ভব দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করলো তারা। ততক্ষণে সেথায় উপস্থিত পুলিশের এসপি তাঈফ। বন্ধুর অবস্থা অনুধাবন করে এগিয়ে এলো সে। প্রাথমিক চিকিৎসা সমাপ্ত হলে দলের আহত নেতা-কর্মীদের নিয়ে ছোটাছুটি আরম্ভ হলো। শরীরের অবস্থা অবজ্ঞা করে নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো চৌধুরী। স্থানীয় হাসপাতালে আহত সঙ্গীদের ভর্তি করলো। নিশ্চিত করলো সুচিকিৎসা। যাদের র ক্ত দরকার চেনা পরিচিত ডোনার হতে র”ক্তের ব্যবস্থা করলো।
র ক্ত দেওয়া বৈধ তবে এর বিনিময় নেওয়া অবৈধ। কিন্তু যে শর্তের ভিত্তিতে র ক্ত দেওয়া জায়েজ, ওই অবস্থায় যদি র’ক্ত বিনামূল্যে পাওয়া না যায়, তখন তার জন্য মূল্য দিয়ে র’ক্ত ক্রয় করা জায়েজ। তবে যে র-ক্ত দেবে তার জন্য র-ক্তের মূল্য নেওয়া জায়েজ নয়। র ক্ত কেনা কিংবা বেচা উভয়ই মানব জীবননা’শের আ*শঙ্কা তৈরি করে। (আল বাহরুর রায়েক : ৬/১১৫; জাওয়াহিরুল ফিকহ : ২/৩৮)
এভাবেই দিন পেরিয়ে রাতের আগমন। ইরহামের শরীর দুর্বল হয়ে উঠলো। আর সইছে না শরীর। টলমল করছে পদযুগল। দাঁড়াতে অপারগ। অতঃপর ওকে সহায়তা করে বাড়ি অবধি এলো তাঈফ।
.
আঁধারে তলিয়ে ধরিত্রী। বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আহত ইরহাম। কর্ণে ঠেকানো মোবাইল। ফোনালাপে ব্যস্ত মানুষটি। তখনই..
চলবে.
[ কেমন লাগলো আজকের পর্বটি? গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। ]