অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা পার্ট:৩ Written By Ayat Mushtarih আয়ান

#অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা
পার্ট:৩
Written By Ayat Mushtarih আয়ান
[লেখকের সম্পূর্ণ নাম ব্যতিত গল্প কপি করা নিষিদ্ধ ]
.
.
একটা মেয়ে রাত ১টার দিকে কবরের মাঝে একা।তাও কবরের ভিতরে।এর থেকেও ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে সেই কবরে থাকা একটা মৃত্য লাশ তার হাত ধরেছে আর চেচিয়ে বলছে সে বেচে আছে।কতটা সাহস থাকলে সেই পরিস্থিতি তেও কোন মানুষ জ্ঞান ঠিক রাখতে পারে?
.
মিম এর জ্ঞান হারায় নি।সে এক ঝটকায় লাশ এর হাত সরিয়ে দেয় আর তার লক্ষ্যে এগোতে থাকে।সে জানে হয়তো কোন ভালো জ্বিন বাচ্চার শরীরে ভর করেছে তাই এমন করছিলো।সে যখন ই বাচ্চার মাথায় চাদের মতো চিহ্ন আকতে সক্ষম হয় তখন সব বাতাশ শেষ।বাচ্চাও চুপ।সে হাসতে শুরু করে।অনেক জোরে হাসতে শুরু করে।সে তার কাজে সক্ষম হয়েছে।সে আবার তার শয়তানী শক্তির আবির্ভাব ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।এবার মূল কার্যক্রম,
মিম পাশে থাকা পলিথিন থেকে কালো তরল বাচ্চার শরীরে দিচ্ছে। ফুটফুটে বাচ্চাটি কালো আবরণ ধারণ করতেছে।মিম সব কাজ আস্তে ধীরে করতেছে যাতে কোন ভূল না হয়।
.
মিম এর কাজ সম্পন্ন করেই কবর থেকে উঠে আসে।সে জানে এখন কি হতে যাচ্ছে।শয়তান এখন ইয়ামিন এর শরীরে প্রবেশ করবে।মিম এর শরীর কাপছে,হঠাৎ চারিদিক এ কোলাহল হলে যেমন হয় তেমন আওয়াজ হচ্ছে।মনে হচ্ছে অনেক মানুষ আসছে এদিকে৷ শুধু আসছে না তারা ধেয়ে আসছে মিম কে মারতে।না তারা মিমকে মারতে আসছে না।তারা আসছে ইয়ামিনকে মারতে মিম কি করবে বুঝে উঠার আগেই কবর থেকে ইয়ামিন এর লাশ শূন্যে ভেসে উঠে।তার শরীর থেকে অনেক আলো ভেসে আসছে।সেই আলোর জন্য কেউ কাছে আসতে পারছে না মিম এর। একটা বিকট শব্দ হলো আর মিম এর চারিদিক নিরব।ইয়ামিন পরে গেলো নিচের দিকে।
.
আকাশের মাঝে একটা অবয়ব ভেসে উঠে,সে মিম এর উদ্দেশ্যে বলে দেয়,
-আজ থেকে এর দায়িত্ব তোর।আর হে তোর সাথী আমি দিয়ে দিয়েছি।এবার তোকে ৪ জনকে মারতে হবে তাহলেই তোরা এই পৃথিবীতে রাজত্ব করতে পারবি।
-কে সেই ৪ জন?
-আয়ান, আয়েশা,সাব্বির আর রুহি।
-এই চারজন কে মারা তো আমার জন্য তুরি মারার ব্যাপার।
-না এখন পারবি না।কারণ তোর অনেক শক্তি চলে গেছে ইয়ামিন এর মাঝে।আর ওদের চারিপাশে অনেক ভালো শক্তি বিদ্যমান।
-তাহলে আমি কি করবো?
-তোকে এখন কিছুই করতে হবে না।যা করার ইয়ামিন করবে।ও স্বাভাবিক বাচ্চাদের থেকে দ্রুত বড় হবে এবং সেই সব শেষ করবে।
-আচ্ছা।
.
.
আয়েশাদের বাসার সবাই অনেক খুশি।তাদের বাচ্চা এখন স্বাভাবিক।কোন সমস্যা নেই।কিন্তু আয়ান এর মনে এখন অনেক চিন্তা।মিম যদি তার উদ্দেশ্যে সফল হয়েও যায় তাহলে কি হবে?সে কি অনেক বড় কিছু করে ফেলবে?সাব্বির আবার ভুয়া কাহিনি বলতেছে না তো?এর তো আবার অভ্যাস ভুয়া গল্প শোনানো।
সাব্বিরের সব কথা ভুয়া ভেবে আয়ান তার মাকে নিয়ে বাসায় ফিরে আসে পরের দিন।
.
.
২দিন পরের কথা,আয়েশা গোসল করতেছে।হঠাৎ মনে হচ্ছে কেউ তার দিকে তাকিয়ে আছে।সে দুইটা চোখ মনে হয় স্পষ্ট দেখেছিলো।সে ভয় পেয়ে যায়।সে তারাতারি ঘর থেকে বের হয়ে এসে ফারহানকে সব বলে।কিন্তু ফারহান তা হেসে উড়িয়ে দেয় মনের ভুল বলে।আয়েশা ও তাই ভাবে।এই কয়েকদিন এ যা ঘটে গেছে তার সাথে মনের ভূল হতেই পারে।
.
বিকাল বেলা আয়েশার ননদ মানে রুহি ছাদে বসেছিলো।একটু পর আয়েশা সেখানে আসে।এসে বসে।রুহি ও হেসে জিজ্ঞেস করে,
-ভাবি আরাভ কই?
-আরাভ শুধু কাদে রে বোন।ওকে মেরে ফেলছি।
কথাটা শুনে রুহির ভেতরটা কেপে উঠে।সে মজা ভাবতে চাচ্ছে এটাকে কিন্তু কোন মা কিভাবে এটা বলতে পারে?সে এগুলা ভাবছে আর হঠাৎ দেখে আয়েশা সামনে নেই।সে আরো ঘাবড়ে যায়।সে দৌড়ে নিচে আসে।এসে দেখে আয়েশা কিচেনে।সে আয়েশাকে জিজ্ঞেস করে,
-ভাবি এতো জলদি ছাদের থেকে নিচে কিভাবে নামলা?
-কি বলছো?আমি ছাদে কখন গেলাম।আমি তো এখানেই ছিলাম।
-আরে ভাবি মজা করো না। কেবল তুমি আমাকে বললে,
এর মাঝেই আরাভ এর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে।তারা দুইজন ই দৌড়ে রুম এ যায়।গিয়ে দেখে ফারহান আরাভ এর গলায় হাত দিয়ে টিপছে।আয়েশা এসে জোড়ে ধাক্কা দেয় ফারহানকে। সে ফ্লোরে পড়ে যায়।আয়েশা আরাভ কে কোলে তুলে নেয় আর চেচিয়ে বলতে থাকে,
-কি হয়েছে?ওকে মারতে কেনো চাচ্ছিলে?কি করছে ও তোমার?
-মারতে তো ওকে চাইনা রে।মারতে চাই তোকে।তোর রক্ত আমার খেতে হবে।দিবি খেতে?
-কি বলছিশ এগুলা ভাইয়া?মাথা ঠিকাছে তোর?নাকি গেছে?
-আমার মাথা ঠিক আছে কিন্তু তোদের থাকবে না।সে এসে গেছে।সে এসে গেছে।এবার রাজত্ব হবে আমাদের।
.
এমন প্রলাপ বকতে বকতে ফারহান জ্ঞান হারায়।
.
.
সাব্বির বাসায় ঝগড়া করছে আজকে।সন্ধ্যা হলেই মা বাবা যা শুরু করে।উফফ ভাল্লাগে না আর।এই সব বলতে বলতে বাড়ি থেকে বের হয় সে।তার নিয়ত আস সে বাড়ি ফিরবে না রাত এ।সে আয়ানকে ফোন দেয়।
-হে সাব্বির বল।
-বাসায় রাগ করছি।তোর বাসায় থাকবো আজকে।
-আচ্ছা চলে আয়।
.
সাব্বির আয়ানের বাসার দিকে রউনা হয়। সে একটা রিকশা ঠিক করে। রাতের বেলা।একা একা যাচ্ছে।যদিও সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হইছে কিন্তু কিছু কাজ করতে করতে রাত হয়ে গেলো।সে আয়ানদের বাসার রোড এ যখন ঢুকে তখনই রিকশা ওয়ালা মামা বলে উঠে,
আচ্ছা মামা,কখনো কি মানুষের রক্ত খাইছেন?
সাব্বির প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে যায়।কি রে।এগুলা কি বলে।মানুষের রক্ত খাবো মানে?
-আরে মামা এগুলা কি বলেন?মানুষের রক্ত কেনো খাবো?
-মামা আজ আপনার বন্ধুর বাসায় যাবেন না?রাত এ দুইজন এ মিলে খায়া দেইখেন।সেই স্বাদ।
-সাব্বির এবার ভয় পেতে শুরু করে।সাব্বির বন্ধুর বাসায় যাচ্ছে তা রিকশা ওয়ালা জানলো কিভাবে?
সাব্বির কিছু বলার আগেই রিকশা ওয়ালা বলে উঠে,
-আমি সব জানি মামা আপনি কি ভাবছেন।এই নেন এই বোতলটা রাখেন।এতে রক্ত আছে।
সাব্বির দেখে একটা কাটা হাত তার দিকে এসে তাকে বোতল দিচ্ছে।সে আর কিছু না ভেবেই দৌড় দেয় রিকশা ছেড়ে।সে দৌড়াতে দৌড়াতে আয়ানদের বাসায় এসে পড়ে।সে হাপিয়ে হাপিয়ে আয়ানদের বাসায় এসে চেচাতে থাকে।আয়ান কি হইছে জিজ্ঞেস করলে সে সব খুলে বলে।আয়ান উত্তর না দিয়ে ভিতরে নিয়ে আসে তাকে।আয়ান তাকে কিছু বলে না।কারণ আয়ান এর সাথে একটা অস্বাভাবিক ঘটনা এর মাঝে ঘটে গেছে
.
.
রাত ২টার দিকে রুহির ঘুম ভাংগে।তার মনে হচ্ছিলো কেউ রুম এ আছে।কিন্তু তার রুমে সে একাই ঘুমায়।দরজা দিয়ে।কারোর আসার তো কথা না।রুহির হঠাৎ বিকেলের কথা মনে পড়ে যায় সে উঠে লাইট জ্বালাতে যাবে যেই না খাটের থেকে নিচে পা রাখে তার পায়ে হ্যাচকা একটা টান অনুভব করে।একটানে তাকে খাটের নিচে নিয়ে যায়।আর তাকে বলতে থাকে,
-আজকে তুই শেষ রুহি আজকে তুই শেষ।
.
.
#চলবে।
.
.
কেমন লাগলো জানাবেন।সাড়া পেলে নেক্সট জলদি হবে ইনশাল্লাহ।

গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here