3 Star,পর্ব-১২
Ariyana Nur
মানদের পরিবারের লোকজন সিথিদের বাসায় এসেছে অনেকক্ষন ধরে।সবাই মি:খান আর মিসেস খানের সাথে গল্প করছে আর খাওয়া দাওয়া করছে।সিথিকে এখনো আনা হয়নি।মান চুপ চাপ এক কোনে বসে আছে আর একটু পর পর তালাভকে ফোন দিচ্ছে।তালাভ একটা ইমারজেন্সি তে আটকা পরে গেছে।তাই এখনো পৌচ্ছয় নি।মানও আর কিছু বলেনি।কেননা তাদের কাজই অসুস্থ মানুষের সেবা করা।সবার আগে তাদের দায়িত্ব তার পরে অন্য কিছু।তালাভ মান কে কল করে জানিয়ে দিয়েছে কাজ শেষ করে এখানে চলে আসবে।
এদিকে সিথিকে নুর আর রাহা সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছে।সিথি একটি মেরুন কালারের শাড়ি পরেছে।সাথে হালকা সাজ আর গহনা।তাতেই সিথিকে অনেক সুন্দর লাগছে।
নুর রাহাকে বলল…..
আপু একটা এম্বুলেন্স খবর দাও তো।
রাহা ঘাবড়ে গিয়ে বলল….
—কার কি হয়েছে??তুই আমাকে এম্বুলেন্স খবর দিতে বলছিস কেন??
— এখনো হয় নি।একটু পর হবে। ডাক্তার সাহেব আপুকে দেখে সাথে সাথেই জ্ঞান হারাবে।তাই আগেই তোমাকে এম্বুলেন্স খবর দিতে বললাম।
সিথি:ঐ আমি না তোর বড় বোন??
নুর:তাতে কি হয়েছে আমিওতো বড় হয়ে গেছি।আল্লাহ আমার যায়গায় তোমাকে পাঠিয়ে দিয়েছে।তাই দেখনা সবাই আমাকে বড় বলে।(ভাব নিয়ে )
সিথি:তুই কিন্তু বেশি বেশি করছিস।আমি কিছু বলছিনা বলে মনে কর না আমি কিছু দেখিনি।সেদিন কিন্তু……
সিথিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে নুর বলল….
–এবার চল নিচে দেরি হয়ে যাচ্ছে।
রাহা:এক মিনিট,এক মিনিট আমার কেন যেন মনে হচ্ছে তোরা কিছু লুকাচ্ছিস আমার কাছ থেকে??কি লুকাচ্ছিস তারাতারি বল….
নুর:কি লুকাবো তোমার থেকে। দেখনা তাকে আজ দেখতে এসেছে তার পরেও আমার সাথে ঝগড়া করছে।তুমি কিছু বল আপু…….
রাহা:নুর তুই যে দিন দিন বদমাশ হচ্ছিস তা কি তুই জানিস??
সিথি:ওতো বদমাশ আগের থেকেই নতুন করে আর কি হবে।
নুর:ঠিক আছে আমি আর তোমাদের সাথে কথাই বলব না।এই বলে নুর রাগ করে সেখান থেকে চলে গেল।
সিথি আর রাহা তা দেখে হাসছে।কেননা নুর এমন রাগ সারাদিনে হাজার বার করে। একটু পরে নিজেই কথার ঝুলি নিয়ে বসে পরে।
_________________________
সিথিকে মানদের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে আনেকক্ষন ধরে।একেক জন একেক প্রশ্ন করছে আর সিথি হাসি মুখে সবার প্রশ্নের উওর দিচ্ছে।
মান তালাভের সাথে কথা বলছে আর আর চোখে সিথি কে দেখছে।তালাভ কিছুক্ষণ আগেই এসেছে।তালাভ মানকে কনু দিয়ে গুতো দিয়ে ফিসফিস করে বলল…..
—–এভাবে দেখার কি আছে।সরাসরিই তো দেখতে পরিস।আমরা কিছু মনে করবো না।
মান রাগি চোখে তালাভের দিকে তাকিয়ে বলল….
—তোর মুখটা বন্ধ করবি।
—-আরে আমি তো ভালোর জন্যই বললাম।এজন্যই লোকে বলে,ভালো করলে ভালো নাই।
—তোর আর ভালো করতে হবে না।
ওদের কথার মাঝেই তালাভের বাবা তালাভের হাতে একটি আংটি ধরিয়ে দিয়ে বলল…
বৌমার হাতে পরিয়ে দে।
একথা শুনে সিথি যেন আকাশ থেকে পড়ল।ও এদিক সেদিক তাকিয়ে বাড়ির মানুষের চেহারা দেখতে লাগন।
কিন্তু তাদের চেহারার কোন পরিবর্তন নেই।এমন ভাবে বসে আছে যেন এমনটা হওয়ারি ছিল।
মান হাসি মুখে আংটিটা পরিয়ে দিয়ে সিথির দিকে তাকিয়ে একটা শুকনো ঢোক গিলল।কেননা সিথি চোখ মুখ লাল করে মানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
মান তালাভকে ফিসফিস করে বলল…..
—-ভাই বাচা আমায় দেখ কিভাবে তাকিয়ে আছে।
—-তুই না বলেছিলি এই মান খান কউকে ভয় পায় না।এখন ভয় পাচ্ছিস কেন??
—-ঐ বেশি কথা না বলে এখন বাচা আমায়।
হঠাৎ করে তালাভ মানের বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলল….
—মামা ওদেরকে একটু আলাদা কথা বলতে দিলে ভালো হত না।না মানে ওদের তো মতামতের দরকার আছে।
মানের বাবা বলল…
—আংটি পরানো হয়ে গেছে এখন আবার কি কথা বলবে!!।তারপরেও তুমি যখন বলছো তাহলে আমার কোন সমস্যা নেই।আপনি কি বলেন ভাই।(কথাটা তিনি নুরের বাবাকে উদ্দেশ্য করে বললেন)
—-আমার কোন সমস্যা নেই।সিথি তুই মান বাবাকে নিয়ে উপরে যা।
সিথি আর মান উপরে যাওয়ার সময় মান তালাভকে বলল….
—-তুই ওখানে বসে আসিস কেন??এদিকে আয় তোর সাথে আমার একটু দরকারি কথা আছে।
—-তালাভ সবাইকে একটা হাসি দিয়ে ওদের সাথে চলে গেল।
_______________________
নুর সাদে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে।আর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।নুর আগের থেকেই জানতো আর সিথিকে আংটি পড়াতে আসছে।রাহা অনেক বার ডাকার পরেও নুর নিচে যায় নি।
হঠাৎ নুর সাদে কারো পায়ের শব্দ শুনতে পেল।নুর আকাশের দিকে তাকিয়েই বলল…..
—-তারা কি চলে গেছে??আজ থেকে আপুও পর হয়ে গেল তাই না।সবার আগে তার ঐ পরিবারের কথা ভাবতে হবে।আমাদের সাথেও টাইম মত কথা বলবে।বেশি কথা বলতে পারবে না।বেশি আসতে পারবে না থাকতে পারবে না তাহলেই মানুষ কথা শুনাবে।তুমি তো অমাদের ছেড়ে চলে গেছই আপুও কিছুদিন পর চলে যাবে।আমি একা হয়ে যাব তাই না।নুর চোখের পানি মুছে পিছনে ঘুরে বড়সড় একটা শকড খেল।নুর কাপা কাপা গলায় বলল……
—–আ…পনি…….
চলবে,
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আচ্ছা নুর কাকে দেখে চমকে গেল কি মনে হয় আপনাদের।)