গল্পঃ অভিশাপ,পর্বঃ ১০,১১
Writer:- (নষ্ট জীবন) Sohanur Rohoman Sohan
১০
-শুধু বুকে মাথা রেখে ঘুমাবেন তার বেশি কিছু না..(মাধবীলতা)
বিছানায় শুয়ে চাদর জোরিয়ে বলে…
-একটু জোরিয়ে ধরি।নয়তো শীত করবে (সোহান)
°
মাধবীলতা অপেক্ষায় আছে কখন সোহান অফিসে চলে যাবে।বুকের ভেতর একটা ভয় কাজ করছে।যদি ধরা পরে যায় কায়েসের সাথে অবৈধ সম্পর্ক করার সময়, যা করতে হবে গোপনেই কাজটা শেষ করে দিতে হবে।
‘
আয়নার সামনে দাড়িয়ে সোহান টাই বাঁধার চেষ্টা করছে, না হচ্ছে টাই বাঁধা।পায়ের পাতায় ভর করে টাই হাতের নাগালে আনার চেষ্টা করছে।সোহানের বুকের নিচে পরে থাকে মেয়েটা (মাধবীলতা)।
হাত ঝটকানি দিয়ে সরিয়ে নিলো টাই।রাগে গিয়ে বলে…
-বাহ্! বাহ্! রাতে জোরিয়ে ধরে ঘুমানো দিনের আলোয় অবহেলা।এসবের মানে কি? (মাধবীলতা)
.
-মানে একদম ক্লিয়ার।আমার কোনো স্বামীর অধিকার চাইনা (সোহান)
.
-তার মানে কি সব ব্যবহারের জন্য ছিলো।কাল রাতে যে গুলো হয়েছিলো।সাধারণ ভাবেই ছেড়ে দিব!? (মাধবীলতা)
.
-কাল রাতের কথা ভুলে যাও।অজান্তেই হয়ে গেছে।আর হঠাৎ এত ভালোবাসা দেখানোর মানে কি বুঝিনা।কাজের বুয়া আসলে সব কাজ বুঝিয়ে দেবে.. (সোহান)
।
টাই ঠিক করতে করতে চলে যাচ্ছে সোহান।দরজার কাছ থেকে না যেতেই আবারও কলিংবেল বেজে উঠলো।
মাধবীলতার রাগ হচ্ছে অনেক।কে আবার আসলো? কায়েস আসলো নাতো।
কিন্তু এত তারাতারি তো আসতে বলিনি আমি! দরজা খুলে দিলো একটা বস্তির মেয়ে দাড়িয়ে আছে।
টসটসা লাল ঠোঁটে পান চিবুচ্ছে।পান চিবুতে চিবুতে মৃদু হেসে বলে….
-আপা, আপনে কি সোহান সাহেবের বউ? (বুয়া)
.
-হুমম, কিন্তু আপনার পরিচয়? (মাধবীলতা)
(ভূরু বাঁকা তরে তাকিয়ে বলে)
.
-আমি নতুন কাজের বুয়া।সাহেব আজ থেইকাই কাজ শুরু করার কথা বলছে..(বুয়া)
.
-তা কি কি কাজ পারো? (মাধবীলতা)
.
-ঘড় মোছা থেকে কাপড়-চপড় ধোয়া সব পারি (বুয়া)
.
-শোন, ভদ্রতার সাথে কাজ করবা।কোনো ক্ষতি হলে বেতন থেকে কাট করবো।আমার অনুমিত ছাড়া রুমে আসবে না।দরকার পরলে নিজেই রুম পরিষ্কার করব কিন্তু তোমার আসতে হবে না (মাধবীলতা)
.
-কেন আপা?? (বুয়া)
.
-মুখের উপর কথা বলো কেন।আমি যা যা বলব তাই করতে হবে।যাও এখন থেকেই কাজে লেগে যাও।বাসি থালাবাসন গুলো ধুয়ে রাখো তারপর সব রুম মুছে দেবে..(মাধবীলতা)
‘
মাধবীলতার রুমে এসে দরজা চেপে দিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে কায়েসের নাম্বারে একটা ম্যাসেজ করলো “এখন আসতে পারো ফ্রি আছি।সোহান চলে গেছে, তবে সাবধানে আসবে নতুন কাজের বুয়া রাখছে।মেয়েটা এবটু চতুর টাইপের”
“ওকে”
“পিছনের দরজা দিয়ে আসবা, আমি কোনো রিক্স নিতে চাইনা”
কায়েস বাইকে বসে যাচ্ছে।আর সহ্য হচ্ছেনা অপেক্ষা।
এরকম একটা নাদুস-নুদুস দেহের প্রেমিকা কি সবার কপালে জোটে।আহ্’হ্ কখন যে পৌছাবো।
‘
পিছনের দরজায় নক পরতে খুলে দিলো।
মাধবীলতা কায়েস’কে বলে জুতো ভেতরে নিয়ে আসতে, দেখে ফেললে সমস্যা হয়ে যাবে।জুতো না খুলেই কায়েস ঝাপিয়ে পরে।
থামিয়ে দিয়ে বলে…
-না, কায়েস থামো।ভিডিও ডিলিট করে তারপরে যা খুশি করতে পারো।আমি বাধা দেব না (মাধবীলতা)
.
-প্লীজ আমাকে আর থামিও না।আমি তোমাকে ভালোবাসার রঙ্গে রাঙ্গিয়ে দিতে চাই… (কায়েস)
(নাক, গালে, ঠোঁটে অসংখ্যা চুমু দিয়ে)
.
-আগে ভিডি…(মাধবীলতা)
কথা বলা শেষ করার আগেই থামিয়ে দিয়ে গোলাপি ঠোঁটের সাথে নরম ঠোঁট লাগিয়ে দেয়।ভালোবাসার টানে দুজনেই সারা দিচ্ছে।
মাধবীলতা মাতাল হয়ে যাচ্ছে কায়েসের ভালোবাসায়।নিজেকে একটু একটু করে কায়েসের কাছে সপে দিচ্ছে।যদি এটা অবৈধ না হতো তাহলে হয়তো অনন্তকালের জন্য ভালোবাসতো।
‘
বুকের ভেতর ভেতর আগলে ধরে, পিঠ খামছে ধরে কায়েসের।
এদিকে কায়েসের কোনো ভুরুক্ষেপ নেই তার পিঠ বেয়ে রক্ত পরছে কিনা।চুল গুলো মুঠিতে ধরে ঠোঁট কামরে ধরে আছে।কাজল কালো রেশমি চুলের খোঁপা খুলে দিতেই কোমর ছুঁয়ে গেলো লম্বা চুলে।পিঠের উপর থেকে চুল সরিয়ে দিয়ে চুমুতে ভড়িয়ে দিচ্ছে।
ঠোঁটের শিতল পর্শে মাধবীলতা বার বার কেঁপে উঠছে।
‘
কাজের বুয়া রুম মুছতে মুছতে হঠাৎ মাধবীলতার রুমে উকি দেয়।ছিঃ ছিঃ মেম সাহেব এসব কি করছে।
ফেরেশতার মতো ভালো একটা স্বামী থাকতে অন্য একটা ছেলের সাথে পরকীয়া করছে?
হঠাৎ করেই দরজায় পা পিছলে পরে যায়।দরজাটা সম্পূর্ণ খুলে গেলো।
‘
দুজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
বিছানায় এলোমেলো হয়ে থাকা চাঁদর দিয়ে নিজের দেহ ঢাকছে মাধবীলতা।তোঁতলাতে তোঁতলাতে বলে…
-তো-তোমাকে না বলছিই্ আমার রুমে অনুমিত ছাড়া আসবা না।জানো আমি চাইলে তোমার চাকরি বাতিল করে দিতে পারি? (মাধবীলতা)
.
মাধবীলতা ঘাবড়ে গিয়েছে, কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে।
(To be Continue)= চলবে কি??
গল্পঃ অভিশাপ
(পর্বঃ ১১)
Writer:- (নষ্ট জীবন) Sohanur Rohoman Sohan
.
বিছানায় এলোমেলো হয়ে থাকা চাঁদর দিয়ে নিজের দেহ ঢাকছে মাধবীলতা।তোঁতলাতে তোঁতলাতে বলে…
-তো-তোমাকে না বলছিই্ আমার রুমে অনুমিত ছাড়া আসবা না।জানো আমি চাইলে তোমার চাকরি বাতিল করে দিতে পারি? (মাধবীলতা)
মাধবীলতা ঘাবড়ে গিয়েছে, কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে।
°
কাজের বুয়া ভয়ে ভয়ে ফ্লোরে অসাভাবি ভাবে বসে আছে।যদি কোন ক্ষতি করে তার…
-(মাধবীলতা হাত জোর করে বলে)
আপনার দুটি পায়ে পরি এসব কথা কাউকে বলবেন না।আপনি তো আমার বড় বোনের মতো (মাধবীলতা)
.
-আমার বোন হলে গালের নিচে দুইটা থাপ্পর দিয়ে দিতাম (বুয়া)
.
-কত টাকা লাগবে আপনার? আপনার নাকি একটা পিচ্চি ছেলে আছে? তার পড়ালেখার খরচ আমি দেব (মাধবীলতা)
.
-গরিব হতে পারি কিন্তু লোভী নয় (বুয়া)
.
-বিশ্বাস করুন আমি বাধ্য হয়ে করছি।কায়েস আমাকে ব্লাকমেই (মাধবীলতা)
.
-ঠিক আছে আমি এই বিষয়ে সাহেবকে কোনো কথা বলমু না।আপনারা বড় লোক মানুষ অনেক কিছুই করতে পারেন।তবে আমাকে এর মাঝে জড়াইয়েন না (বুয়া)
কাজের বুয়া নিজের কাজে আবারও ব্যস্ত হয়ে গেলো।মাধবীলতা ছিটকেরি লাগিয়ে দিয়ে বলে…
-কায়েস এখন তো ভিডিওটা ডিলিট করে দাও (মাধবীলতা)
.
-কিছুই করতে পারলাম না।ডিলিট কিভাবে করি।তুমি বরং আরেকটি বার সময় খোঁজও (কায়েস)
.
-আমার ভয় করছে, সোহান যদি বুঝে ফেলে (মাধবীলতা)
.
-যে ছেলে তার বউয়ের শরীরে হাত দিতে ভয় করে, তার দাড়া এসব সম্ভবনা (কায়েস)
.
-তোমার মনের মতো একটা মানুষ আছেই আমাকে ব্যবহার করে কি লাভ (মাধবীলতা)
‘
কায়েস কিছু না বলে শুধু মাধবীলতাকে বুকে টেনে নিয়ে ঠোঁটে লম্বা একটা চুমু দিয়ে।ছেড়ে দিয়ে শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে চলে যায়।
এবার পিছনের দরজা দিয়ে নয় সামনের দরজা দিয়েই চলে যায়।দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে মাধবীলতা কাজের বুয়ার কাছে দাড়িয়ে বলে…
-আপনার নামটা যেন কি? (মাধবীলতা)
.
-ছোকিনা, কেন বলেন তো? (বুয়া)
(অন্য রকম চোখে তাকিয়ে বলে)
.
-না, এমনেই জিগ্গাসা করলাম আর কি? আপনার হাতের কাজ গুলো অনেক ভালো দেখছি।থালাবাসনে মুখটা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে (মাধবীলতা)
.
-মালকিন! এটা টিভির এড না।মিছা (মিথ্যা) কথা না বলে কি বলবেন বলেন!! (বুয়া)
.
-(এহেম! এহেম! গলা ছেড়ে কেঁশে বলে) আপনি সত্যিই বলবেন না তো? (মাধবীলতা)
.
-বিশ্বাস রাখতে পারেন। (বুয়া)
.
-আচ্ছা আপনি কাজ করুন।আমি গোলসটা সেরে আসি।কেমন যেন ঘাম ঘাম গন্ধ বের হচ্ছে (মাধবীলতা)
.
-আচ্ছা আপনে যান, আমি সব কাজ করে দিচ্ছি।আর মালকিন আমার আজ একটু আগেই ছুটি লাগবে….(বুয়া)
.
-প্রথম দিনেইইই্ ছু….(বলতে গিয়েও আটকে যায়) আচ্ছা যখন লাগবে আমাকে বলে চলে যেও..(মাধবীলতা)
.
-জ্বী আচ্ছা মালকিন! (বুয়া)
মাধবীলতা লম্বা একটা শাওয়ার নেয়।শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ভাবে “আমার জন্য কত গুলো জীবন নষ্ট হচ্ছে।শুধু একটা প্রেমের জন্য সব কিছুই হারাচ্ছি।তবুও কেন বার বার কায়েসের জন্য ভালোবাসা জাগে? হয়তো প্রথম প্রেম তাই ভুলতে পারছিনা”
‘
“ছোকিনা ছোকিনা এই ছোকিনা”
সামনে এসে দাড়াতেই মাধবীলতা বলে…
-আপনাকে না দুপুরের খাওয়াটা টেবিলে রেডি করতে বলছি!! (মাধবীলতা)
.
-কখন বললেন মালকিন?আমার যত টুকু মনে পড়ে আপনি কখনোই বলেন নাই… (বুয়া)
.
-সরি, মনে ছিলো না।কিছু মনে করবেন (মাধবীলতা)
.
-বাংলাতে কথা বললেই খুশি হয়।সরি ফরি বুঝিনা।আমরা মুখ্য মানুষ ওসব বুঝি না (বুয়া)
.
-হুম তারাতারি খেতে দাও..(মাধবীলতা)
.
-আচ্ছা মালকিন, আপনার ওসব করতে লজ্জা করলো না।আপনার তো স্বামী আছে? (বুয়া)
.
-চুপ করো! (মাধবীলতা)
.
-কেন মালকিন? (বুয়া)
.
-ছুটি লাগলে নিয়ে নাও।কিন্তু একি কথা বার বার বলবেনা..(মাধবীলতা)
কাজের বুয়া টোপলা ভর্তি করে নিয়ে গেলো ছেলের জন্য।মাধবীলতা নিজের রুমে এসে ভর দুপুরে ঘুমালো।যখন ঘুম থেকে উঠলো তখন রাত অনেক বেজে গেছে।প্রায় ১২টার কাছাকাছি একাধারে কলিংবেলের শব্দ শুনে মনে পরলো “সোহান এখনো ফিরেনি, সোহান কি তাহলে কলিংবেল বাজাচ্ছে?”
দরজাটা খুলে দিতেই সোহান রাগ দেখিয়ে টাই টেনে টুনে খুলে বলে….
-একটা দরজা খুলতে এতো সময় লাগে? আধা ঘন্টা ধরে শুধু কলিংবেল বেজে যাচ্ছি!(সোহান)
.
-ঘুমিয়ে পরেছিলাম (মাধবীলতা)
(মাথা ঝুকে বলে)
.
-ভর সন্ধ্যায় কিসের ঘুম।মরার ঘুম ঘুমাও।যত্তসব”! (সোহান)
.
-খাবেন না আজ? (মাধবীলতা)
.
-নাহ্, ক্ষুধা নাই।নতুন কাজের বুয়া কি চলে গেছে?? (সোহান)
.
-দুপুরেই ছুটি দিয়ে দিছি (মাধবীলতা)
.
-বাহ্! প্রথম দিনেই ছুটি দিয়ে লোভ ধরে দিচ্ছো।কাজের বুয়া পছন্দ না হলে নিজেই কাজ করতে পারিসনা! তোর আব্বু কল করে ছিলো কি? (সোহান)
.
-নাহ্, কেন? আব্বুর কি হয়েছে।তারা ঠিক আছে তো? (মাধবীলতা)
.
-জানিনা, শুনলাম ছাঁদ থেকে নাকি পড়ে গিয়ে মাথা গুরুতরো ভাবে ফেঁটে গেছে..(সোহান)
.
-কিইইই্ এখন বলছেন।একটা তো কল দিতে পারতেন? (মাধবীলতা)
.
-মহারানী তো ঘুমাচ্ছিলেন কিভাবে বলি।দরজাটা খুললে তো বলব হুম..(সোহান)
নেশার ঘোড়ে সোহান মাতালের মতো হাঁটতে হাঁটতে রুমে গিয়ে গা এলিয়ে দিয়ে শুয়ে পরে।
চলবে???