3 Star,১৪ শেষ_পর্ব
Ariyana Nur
সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।মানুষ বলে সুখের সময় নাকি তাড়াতাড়ি চলে যায় আর দুঃখের সময় নাকি ফুরোতেই চায় না।আসলেই কি তাই??সেই যাই হোক আজ মি:খান আর মিসেস খানের ২৫তম বিবাহ বার্ষিকী।জীবনের ২৫টা বছর এক সাথে তারা পার করেছে।কখনো সুখ কখনো দুঃখ।জীবন থেকে তাদের অনেক কিছু হারিয়ে গেছে আবার অনেক কিছু পেয়েছে। কিন্তু এই সবের মধ্যে তারা একে অপরের হাত কখনো ছাড়েনি।সব সময় একে অপরকে ভরসা দিয়ে আগলে রেখেছেন।
সিথির বিয়ের ডেট ঠিক করা হয়েছে ২মাস পরে।সিথির ফাইনাল পরিক্ষার পরে তার বিয়ের ডেট ঠিক করা হয়েছে ।এই কয়দিনে মান আর সিথির সম্পর্ক সাভাবিক হয়ে গেছে।আর নুর তো আছে কার পিছে লাগবে সেই চিন্তায়।কতক্ষন সিথি সাথে অবার কতক্ষন মানের সাথে আবার রাহার সাথে।
আজ খান বাড়ির মেয়েরা তাদের বাবা মার জন্য ছোট খাট করে একটা পার্টির আয়োজন করেছে।যদিও পার্টিতে সুধু ফেমিলির মানুষজন থাকবে।ওরা বড় করে করতে চাইলে মি: খান সাফ মানা করে দেয়।পরে মেয়েদের জোরাজোরি রাজি হয়।আর পার্টির সব কাজের দেখাশুনা করছে মান, রাহা আর তারাভ।আর সিথি আর নুর আছে কিভাবে সাজবে।কোন ড্রেস পরবে তা নিয়ে।
নুহা:আম্মু….আম্মু…..(চিৎকার করে)
রাহা:কি হয়েছে এভাবে চিৎকার করছিস কেন?
নুর:মনি আমার সব চকলেট খেয়ে ফেলেছে।(কাদো কাদো হয়ে)
রাহা:ঐ তুই গেলি এখান থেকে।আমি কাজের জন্য চোখে দেখি না আর সে আসছে বিচার নিয়ে।যা ভাগ…
মান: আরে আপু তুমি আমাদের পরিকে বকছো কেন।পরি তুমি এদিকে আস আমি তোমাকে চকলেট কিনে দিব।
–একদম ওকে চকলেট কিনে দিবে না।ও আমার নামে মিথ্যে বলছে।আমি ওর চকলেট খাই নি।
নুর কথা বলতে বলতে ওদের সামনে আসল।
নুহা:তুমি মিথ্যে বলছ।তুমিই আমার চকলেট খেয়েছ।
নুর: ঐ ছেমরি ঐ আমি তোর চকলেট খেয়েছি না কি ইন্দুর মামাজি খাইছে।
নুহা:না তুমিই খেয়েছ।
নুর:তুই গেলি আমার কি ঠেকা পরছে নিজেকে ইন্দুর বানানোর।
নুহা:তুমি তোমার পেটে দিয়ে ইদুরের নাম দিচ্ছ।
নুর:দাড়া তুই তরে তো….
মান:থাক আর ঝগড়া করতে হবে না।তারাভ আসার সময় অনেকগুলো চকলেট এনেছে।সেগুলো দুজনে ভাগ করে নিও।
নুর:না আমি ঐ চকলেট খাব না।তালা ভাইয়ার চকলেট খেলে যদি আমার মুখে তালা লেগে যায়।তাহলে আমি কথা বলব কিভাবে??🙄
নুরের কথা শুনে সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল।
তারাভ:তাহলেতো ভালই হবে কাউকেতো তাহনে এমনি এমনি হাইজেকার বানাতে পারবে না।
তারাভের কথা শুনে নুর কাশতে লাগল।সিথি এক গ্লাস পানি ওর হাতে দিতেই ও ঠক ঠক করে খেতে লাগল।
সিথি:পানিতো খাওয়া হয়েছে এবার বল কাহিনী কী???
নুর:ঐ…দিন আ..পনি ছিলেন??(চোখ বড় বড় করে)
তারাভ বিনিময়ে মুচকি হাসলো।
নুর:সরি আমি সেদিন বুঝতে পারিনি।তার জন্যতো আমি সেদিন সরি বলেছি।সরি আ….
তারাভ নুরের ফেস আর কথা বলে দেখে হাসতে হাসতে বলল…
—আরে সরি বলতে হবে না।আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম তুমি এটা জানার পর তোমার চেহারার অবস্থা কেমন হয়।আমি তো তোমাকে দেখেছিলাম কিন্তু তুমি তো আমাকে দেখ নি।আর সত্যি বলতে তোমাকে সেদিন রেষ্টুরেন্টে দেখার পর আমার অবস্থাও এমন হয়ে ছিল।
নুর:আপনি আমাকে মাফ করে দিয়েছেন???
তারাভ:আরে রাগ করলে তো মাফ করব।
_________________
খান বাড়ির ডয়িং রুম অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।সবাই নিচে বসে আছে। কিন্তু রাহা,সিথি আর নুরের আসার খবর নেই।একটু পর ওদের সিড়ি দিয়ে নামতে দেখে নুহা বলল দেখো আম্মুরা আসছে।নুহার কথা শুনে সবাই সিড়ির দিকে তাকিয়ে হা করে রইল। আজ তিন বোন এক রকম গাউন পরেছে।এক রকম সেজেছে।মনে হচ্ছে তিনটি পরি নেমে আসছে।আজ সবাইকে অনেক সুন্দর লাগছে।ওদের দেখে মিসেস খানের চোখে পানি এসে পড়ল। তার মনে হচ্ছেনা তার ছোট পরিরা এতো বড় হয়ে গেছে। তিন বোন মি:আর মিসেস খানের সামনে এসে দাড়াল।
নুর:বাবা বললেনা আমাদের কেমন লাগছে??
মি:খান তিন মেয়েকে আদর দিয়ে বলল….
—আমার স্টার দের সব সময়ই স্টার লাগে।
রাহা:কি হয়েছে মা!!তুমি কাদছো কেন??
মিসেস খান:কই কাদছি!!আমিতো দেখছি আমার পরিরা সেই ছোট্ট পরিই আছে।তোদের এই বন্ডিং যেন কখনো না ভাংগে।
সিথি:আমরা সব সময় তোমাদের ছোট্ট পরিই থাকবো।আর
তোমরা দোয়া কর আমরা যেমন আছি তেমন যেন থাকতে পারি।
মি:খান:আল্লাহ আমায় সব থেকে বড় উপহার হিসেবে তোদের দিয়েছে।আমি প্রতি নিয়োত আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি আর দোয়া করি তোরা যেন মিলে মিসে সারা জীবন থাকতে পারিস।
মান:আপনারা কি কথাই বলবেন??প্লিজ তারাতারি কেক কাটেন।আমার আর তর সইছে না।
মানের কথা শুনে সবাই হেসে দিল।তারপর কেক কেটে সবাইকে খাইয়ে দিল।তারপর ফটোগ্রাফি,নাচ,গান তো আছেই।সবাই অনেক জোর করে মি:আর মিসেস খান কে দিয়ে কাপল ডানছ্ করিয়েছে।
রাত ১টা বাজে সাদে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে আছে তিন বোন। না না শুধু বসে রয়নি আকাশের তারা গুনছে।
এমন অনেক কাজই তারা করে।
রাহা:দেক ঐ তারা তিনটা আজো একসাথেই আছে।
সিথি:মনে হয় ওরাও আমাদের মত একে অপরকে ছাড়া চলতে পারে না।
নুর:আল্লাহ যেন আমাদের ওদের মত সবসময় এক সাথেই রাখে।
রাহা:আল্লাহ যেন তোর দোয়া কবুল করে।
সিথি:আমিন।ছুম্মা আমিন।
এই বলে ওরা হেসে দিল আর একে অপরকে জরিয়ে ধরল।
আসলেই বোন আল্লাহর দেওয়া বড় নেয়ামত।মায়ের পর যদি কেউ মায়ের মত করে ভালোবাসে সেটা হল বোন।যাদের বোন আছে তারা মনে হয় বোন আর বেষ্ট ফ্রেন্ড দুটোই একসাথে পেয়ে যায়।তাদের আর কি লাগে।ওদের খুনসুটি আর ভালোবাসা এভাবেই চলতে থাকুক। আর আপনারাও আপনাদের বোনদের সাথে চুলাচুলি করতে থাকেন।
_____________________সমাপ্ত_____________________
জানি না গল্পটা কেমন হয়েছে।এটা আমার লেখা প্রথম গল্প।গল্পের মধ্যে যদি কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।যারা প্রথম থেকে গল্পটার সাথে ছিলেন তাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ।