হৃদপিন্ড,পর্ব-১৬
জান্নাতুল নাঈমা
সেদিনই নদী এসে বাড়িতে ঝড় তুলে ফেলে।
ইমন একা স্কুল যায় কেনো? আমাদের বাড়ির ছেলে গাড়ি ছাড়া বের হয় কেনো?
একরামুল কে জোর গলায় বলে ইমনের জন্য হলেও তোকে দ্বিতীয় বার বিয়ের কথা ভাবতে হবে।
আমরা সবাই চাই ইমন মা,বাবার ভালোবাসায়, মা বাবার ছায়ায় বড় হয়ে ওঠুক।
নদীর কথা শুনে আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নেই দ্বিতীয় বার বিয়ে করনোর প্রথমে একরা রাজি না হলেও ইমনের কথা ভেবে পরে রাজি হয়।
একদম গরীব পরিবার থেকে সাজিয়াকে নিয়ে আসি আমরা। যাতে সে বড় পরিবারে এসে কোন প্রকার হিংসা,অহংকারে বশীভূত না হয়।
সাজিয়া এ বাড়ি আসার পর প্রথম কয়েক বছর বেশ ভালোই ছিলো। ইমনও তাকে নিজের মায়ের চোখে দেখতো। সব সময় মা মা করতো বাবার থেকে মায়ের দিকেই ওর টান বেশী ছিলো।
সব ভালোই চলছিলো কিন্তু কখনো ভাবতে পারিনি যে ভয়ে সাজিয়াকে এ বাড়ি বউ করে নিয়ে এলাম সেই ভয় টাই আমাদের চেপে ধরবে।
সাজিয়ার তখন তিনমাস চলছে। বাচ্চা পেটে আসার পর থেকে সে কেমন পাল্টে যায়। মেজাজ দেখানো,খিটখিটে স্বভাব ইমনকে ধমকা,ধমকি চলতেই থাকতো। আমরা প্রথমে ব্যাপারটা স্বাভাবিক নিলেও পরে ধীরে ধীরে বুঝতে পারি সাজিয়া সত্যি বদলে যাচ্ছে। আসলে বদলে যাচ্ছে না বরং ওর ভিতরের সত্তা টা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে।
ভুল টা আমাদেরই হয়েছিলো আমরা ভেবেছিলাম দারিদ্র্য পরিবারের মেয়ে নিয়ে আসলে হয়তো সে আমাদের মেনে চলবে। বিলাসীতা পাবে আগের জীবন থেকে অনেক ভালো জীবন কাটাতে পারবে। এগুলোর বিনিময়ে হলেও এ পরিবারটা কে মন থেকে ভালোবাসবে ইমনকে নিজের করে নিবে।
কিন্তু ভুল ছিলাম আসলে ধনী,গরিব দিয়ে মানুষের মন বিচার করাটাই ভুল হয়েছে।
ধনী পরিবারের অনেক ছেলে, মেয়ে আছে যারা মনের দিক দিয়ে অনেক ভালো হয়। আবার অনেক ছেলে, মেয়ে আছে যারা উচ্চবিত্ত হলেও মনটা নিম্নই থেকে যায়। গরীব পরিবারের খাঁটি সোনা জন্মায় আবার গরীব পরিবারে তামাও জন্মায়।
“সমাজে এক শ্রেনীর মানুষ আছে যারা উপরে ওঠতে ওঠতে এতোটাই উপরে ওঠে যায় যে নিচের দিকে তাকানোর প্রয়োজন মনে করে না। কিন্তু তাদের একবার নিচে চেয়ে ভাবা উচিত একবার ফসকে পড়ে গেলেই শেষ ”
আমাদের আশে পাশে এমন অনেক নিম্নবিত্ত মানুষ রয়েছে যাদের অভাব,অনটন ভোগ করতে করতে মনটাও একদম নিচু হয়ে গেছে আর এরা যখন হুট করে বড় কিছু পেয়ে যায় তখন এদের মাঝে অহংকার জন্মাতে থাকে। পিছনের দিনগুলোর কথা একবারো ভাবে না। বরং কিভাবে আরো পাবে, আরো চাই, আরো চাই করে করে মনটা বিষিয়ে তুলে।
সাজিয়ারও হয়েছিলো সেই অবস্থা এখন পর্যন্তও সে সেই নীতিই মেনে চলে আসছে। কিন্তু মন থেকে ওঠে গেছে সকলের। আসলে আমরা যদি বাইরে থেকে মানুষ টাকে চিনতে পারতাম তাহলে হয়তো এতো বড় ভুল কেউ করতাম না।
“দুনিয়াটা যেমন বিচিএ দুনিয়ার মানুষ গুলো তাঁর থেকেও বেশী বিচিএ ”
মানুষ গুলোর ভিতরে ঢুকে তো আর তাঁদের চিনতে পারিনা সব সময়। একরাও পারেনি না প্রথম বার পেরেছে না দ্বিতীয় বার তবুও মানিয়ে নিয়ে সংসার করে যাচ্ছে কি করবে বার বার সংসার ভাঙার মনটাও ওর আর নেই।
ইভান জন্মানোর পর থেকে সাজিয়ার নিত্য নতুন রূপ দেখতে থাকি সকলে মিলে। ততোদিনে ইমনও বুঝতে শিখে যায় সবটা। যেই ইমন নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে বলে আমরা সাজিয়াকে নিয়ে এলাম এ বাড়িতে সেই ইমনই সাজিয়ার জন্য সব কিছু থেকে নিজেকে আবারো গুটিয়ে নিলো।
আপন,পর, কাছের দূরের বুঝতে শিখে গেলো।
নিজেকে নিজের নিয়মে তৈরী করে ফেললো।
আর তাঁর প্রথম ধাপ ছিলো বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া।
আমাকে আর একরা কে পড়াশোনার দোহাই দিয়ে দূরে থাকা শুরু করলো। ধীরে ধীরে বাড়ি আসাও বাদ দিয়ে দিলো। নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পাশাপাশি নিজের কর্মস্থল সহ নিজের বাসস্থান নিজেই খুঁজে বের করলো। এই যে বাড়িটায় আমি আর তুই আছি একসময় সেটা ছিলো টিনের ইমন তাঁর নিজের রোজগারে নিজের সামর্থ্যে দিয়েছিলো সেই ছোট্ট ঘরটা। জায়গাটা ওর দাদুরই ছিলো,,,
নিজেই নিজের রাজ্য তৈরী করতে থাকলো ধীরে ধীরে।
আলাদা জগৎ, আলাদা রাজ্য নিয়ে বেশ ভালোই ছিলো। কিন্তু তাঁর এই সাদামাটা জীবনে রঙের ছিটে দিতে চলে এলো রিতিশা নামক সেই ভয়াবহ নারীটা।
ওই যে বললাম মানুষ চেনা বড়ই কঠিন।
“মানুষ শুধু মানুষ না।
নাটক সিনেমায় কৃএিম মুখোশ পড়ে অভিনয় করে মানুষ।
আর বাস্তবে চামড়ার মুখোশ পড়ে ছলনা করে বেড়ায়”
সেদিন ছিলো ইমনের অফিস জয়েন করার প্রথম দিন। এত বড় ইন্ডাস্ট্রির মালিকের প্রথম সন্তান ছিলো ইমন। সে সময় দায়িত্ব নেওয়ার মতো ওই ছিলো। শুধু সে সময় না ইভান, অভ্র বড় হলেও ইমনের মতো করে সবটা ওরা এখনো সামলাতে পারবে না। আমার ছোট ছেলেটা তো কখনো এই সম্পত্তি ব্যবসার দিকে নজর দেয় নি। সে আজীবন বার মুখী হয়েই থেকেছে। একরার পর ইমনই সেই ব্যাক্তি যে কিনা আমার স্বামীর রেখে যাওয়া ধনগুলোর যথার্থ মর্যাদা দিয়েছে। নিজের সবটা দিয়ে রক্ষা করেছে। বাপ,দাদার থেকেও বেশী সফলতা লাভ করেছে সে। আর তাঁর এই অল্প সময়ে এতো বড় সাফল্য দেখে সবার নজর পড়ে যায় তাঁর দিকে।
সাজিয়ার বোনের মেয়ে সেদিন প্রথম আমাদের বাড়িতে আসে। নাম রিতিশা,,
বাবা,মা ইংল্যান্ড থাকে সেও তাদের সাথে থাকতো।
সেখান থেকেই খবড় পাঠায় দেশে ফিরবে তাঁর বাবা কয়েক বছর পর ফিরবে। সাজিয়াও জানিয়ে দেয় কোন সমস্যা নেই রিতিশা আমার কাছেই থাকবে।
লম্বা,চওড়া, ফর্সা গড়নের মেয়ে, আধুনিকতার ছোঁয়া চালচলন,কথাবার্তায় স্পষ্ট ,,
হঠাৎ একরা এসে বললো মা রিতিশা মেয়ে টা কে তোমার কেমন লাগে।
আমি বললাম কেনো কেমন লাগার কি হলো আবার।
আসলে আমি ইমনের বিয়ের ব্যাপারে ভাবছিলাম।
এতে যদি ছেলেটা এ বাড়ি আসে বিয়ে করে বউ বাচ্চা নিয়ে সংসার শুরু করুক। বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
মেয়েটার চেহেরা ভালো কিন্তু চালচলন তো ঠিক লাগেনা।
আরে মা মর্ডান মেয়ে দেশের বাইরে থাকতো।
ইমনের জন্য তো এমন মেয়েই পারফেক্ট। ইমনের ঠিক পছন্দ হবে ওকে। এছাড়া মেয়েটা উচ্চশিক্ষিত ইমনের সাথে বেশ মিলবে। আর মেয়েটা তো কাজের জন্যই এদেশে এসেছে ইমনের পার্সোনাল এসিস্টেন্ট হিসেবে আমাদের অফিস জয়েন করিয়ে দেই দুজন দুজনকে চিনবে, জানবে তারপর বিয়ে।
দাদু ভাইয়ের জন্য যা ভালো হয় তাই কর।
দাদু ভাই সুখে থাকলেই আমি সুখি।
আচ্ছা। দেখো সবটা ভালো হবে,,
অফিসে মিটিং শেষ করে সেদিন ইমন ও বাড়ি ফিরে।
ডিনারের সময় একরামুল তাঁর সিদ্ধান্ত জানায়।
ইমন চুপচাপ সব শুনে কিছু বলে না তারপর উপরে ওঠে যায়।
ছেলেটা তো এমনই তাই কেউ কিছু মনে করেনি।
কিন্তু রিতিশা যেনো এক নজর দেখেই পাগল হয়ে যায়। চোখ দিয়ে কেমন গিলে খাচ্ছিলো ইমনকে। তা কারো নজর এড়ালো না । সবাই বেশ খুশি হলো সব থেকে বেশী খুশি হলো সাজিয়া।
রাত প্রায় এগারোটা বাজে, ইমন বেলকুনিতে বসে কফি খাচ্ছিলো আর অফিসের কিছু কাগজপএ ঘাটাঘাটি করছিলো এমন সময় রুমে ঢুকে রিতিশা।
ইমনের সামনের চেয়ারে বসতেই ইমন এক নজর দেখে চোখ ফিরিয়ে নিজের কাজে মনোযোগ দেয়।
রিতিশা বললো হায় আমি রিতিশা,,
ইমন হালকা কেশে বললো সো,,
রিতিশা বেশ অপমান বোধ করলো।
You are ignoring me??
ইমন বললো No,,I don’t know you, so there is no question of neglect।
রিতিশা বাকা হেসে বললো আমাকে চিনতে হলে জানতে হলে অবশ্যই পরিচিত হতে হবে।
আমি রিতিশা। আমার বাবার ইংল্যান্ডে বাড়ি আছে,নিজের বিজনেস আছে এদেশেও আছে।
আমি পড়াশোনা শেষ করে এদেশে এসেছি নিজের করিয়ারের জন্য।
ইমন বাঁকা হাসলো,,,
কাগজগুলো গুছিয়ে নিয়ে ওঠে পড়লো।
রিতিশাও ওঠে দাঁড়ালো,, আশ্চর্য তো এতো সুন্দর সাজানো গোছানো আইটেম রয়েছে সামনে অথচ কোন নজরই নেই এদিকে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু তোমার মতো পার্সোনালিটির মানুষ কে তো ছাড়ার পাএী আমি নই মি.ইমন চৌধুরী।
ইমন রুমে যেতেই রিতিশা ইমনের বিছানায় বসলো।
সাথে সাথে ইমন বেশ জোরে ধমকে ওঠলো।
রিতিশা ভয় পেয়ে ওঠে দাঁড়ালো।
সভ্যতা, ভদ্রতা কোন কিছুই নেই দেখছি।
কারো রুমে ঢুকার আগে তাঁর থেকে পারমিশন নিতে হয় জানেন না। কারো সাথে ফার্স্ট মিট করলে তাঁকে তুমি বলে সম্বোধন করাটা কোন ধরনের ভদ্রতার মধ্যে পড়ে। আর এতো রাতে একজন ভিন্ন পুরুষের রুমে এসব ড্রেসআপে আসতে লজ্জা করে না।
এসব ড্রেসআপ পড়ে ভিন্ন কারো সামনে গেলে এদেশের ভাষায় কি বলে জানেন তো অর্ধনগ্ন হয়ে আসা।
বলেই রুম ছেড়ে বেরিয়ে যেতে নিতেই রিতিশা সামনে এসে দাঁড়ালো।
ইউ নো হোয়াট,, তোমার সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে। হবু স্বামীর ঘরে আসতে আমি অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনা। হবু স্বামীকে আপনি বলে পর করে দিতেও চাইনা।
I really like your personality,,
I just want you,,
বরাবরই এদেশের প্রতি অনীহা ছিলো তবে এদেশে যে এমন একটা জিনিস আছে সত্যি জানা ছিলো না।
আগে জানলে আরো আগে চলে আসতাম।
বলেই ইমনের ফুল বডিতে চোখ বুলালো।
ইমন বললো ইউ নো হোয়াট ইমন চৌধুরীর বউ হওয়া এতোটা সহজ নয়,,
আর আপনার বিহেইভ দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনি কতো বড় মাপের বেয়াদব, আর বড় মাপের ফাজিল। সো এমন বেয়াদব,ফাজিল লাজ,লজ্জাহীন নারী ইমন চৌধুরীর মনে ঢুকতে পারবে না।
,
আমি বেয়াদব, ফাজিল,লাজ লজ্জাহীন এতো বড় সাহস ইমন চৌধুরীর আমাকে,এই রিতিশা কে অপমান করে। যার জন্য কিনা এতো এতো ছেলেরা পাগল। এতো এতো ছেলেকে ভিনদেশে মুরগী বানিয়েছি আর এই ইমন চৌধুরী কিনা আমাকে অপমান করে দিলো। আমার রূপ দেখে সে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে থাকলো। বলেই রাগে ফুঁসতে শুরু করলো।
সাজিয়া বেগম বললেন মামনি শান্ত হও। শান্ত হও মামনি একটা বার ইমনকে পটিয়ে বিয়েটা করে ফেলো। তারপর লাটাই তোমার হাতে বুঝলা।
কি করে পটাবো খালামুনি। আমার দিকে একটা বার চেয়ে দেখেছে,,,
একটা মানুষ যদি নাই তাকায় তাহলে তাকে কি করে কব্জা করবো। পুরুষ মানুষ কে তো রূপের আগুনেই জ্বালাতে পুরাতে হয়, কিন্তু এই পুরুষ তো সেই রূপ চেয়েও দেখছে না।
সাজিয়া বেগম বললেন দেখাতে হবে।
পুরুষ মানুষ ঘায়েল করার মন্ত্র জানতে হবে।
যতোই সাধু সাজুক না কেনো যখন তোর রূপ,যৌবন ওকে সমর্পণ করতে চাইবি ও কোনভাবেই নিজেকে আটকাতে পারবে না। মর্ডান মেয়ে তুই আশা করি তোকে বোঝাতে হবে না সবটা।
সাজিয়া সেদিন এসে বলে মা আপনার নাতি কে বোঝান। রিতিশা কিন্তু ওকে খুব পছন্দ করেছে। সে ইমনের সাথে সারাজীবন কাটাতে চায়। যেভাবেই হোক ইমনকে সে পেতে চায়। খুব মনে ধরেছে তাঁর ।
এই দেখুন না ইমনের জন্য মর্ডান ড্রেস ছেড়ে সেলোয়ার পড়া শুরু করেছে। ইমন যেভাবে চায়,যা পছন্দ করে সারাক্ষন আমার থেকে তাই তাই শুনে নিয়ে সেসবই করার চেষ্টা করছে।
আমি সাজিয়ার কথা আর রিতিশার আচরন দেখে ইমনকে সেদিন বোঝাই। আমার কসম ও দেই যে তুমি রিতিশাকে বিয়ে করো দাদু ভাই এটাই শেষ ইচ্ছা আমার।
ইমন এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো শুধু। আমি জানতাম ইমন যদি এই পৃথিবীতে কারো কথা শুনে কারো কথা রাখে সেটা হলো আমি। ঠিক তাই ই ঘটলো।
ইমন রাজিও হয়ে গেলো।
আর বললো আপাতত তিনামসের আগে সে বিয়ে করতে পারবে না। তবে রিতিশা চাইলে অফিস জয়েন করতে পারে।
রিতিশা অফিস জয়েন করলো। ইমনের মন জয় করার জন্য স্বভাব টাও বেশ পালটে গেলো।
সবসময় ইমনের সাথে সাথে থাকার চেষ্টা গায়ে গা ঘেষে থাকাটা ওর নিত্যদিনের স্বভাব ছিলো।
ইমন বিরক্ত হলেও এই মেয়েকে বিয়ে করবে ভেবেই মানিয়ে নিতে শুরু করে।
রাতের আকাশে তাঁরা রা ওকি দিচ্ছে,,, জ্বকজ্বকে আকাশের দিকে চেয়ে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ছে ইমন।
এমন সময় রিতিশা গিয়ে পাশে দাঁড়ায় ।
ইমন সিগারেটের ধোঁয়া রিতিশার দিকে ছাড়তেই রিতিশা কাশতো শুরু করে, চোখ, মুখ লাল হয়ে আসে তাঁর । ইমনের ওপর চেঁচিয়ে ওঠে ইমন সিগারেট টা ফেলে পায়ে পিষে চলে যেতে নিতেই রিতিশা হাত আটকে ধরে,,,
কেমন পুরুষ তুমি, একটা মেয়েকে এই অবস্থায় ফেলে যাচ্ছো হবু বউ তোমার আমি।একটু আলাদা সময় আমরা কাটাতেই পারি।আমাদের সাথে শুধু কাজের সম্পর্ক নয় আমাদের মধ্যে একটা বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরী হতে যাচ্ছে ।
ইমন চুপ রইলো রিতিশা ইমনের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বললো আই লাভ ইউ সো মাচ।
ডু ইউ লাভ মি???
ইমন হাতটা ছাড়াতে যেতেই রিতিশা হাতটা আরো শক্ত করে চেপে বললো মি.ইমন চৌধুরী আজ তোমায় ছাড়ছি না। বলো ডু ইউ লাভ মি??
ইমন বললো নো,,,
রিতিশা ফুঁসে ওঠলো প্রবলেমটা কি। আমাকে ভালোবাসতে সমস্যা কোথায়, যথেষ্ট সুন্দরী আমি?
কি নেই আমার তোমার সাথে খাপে খাপ সব ঠিক আছে তো তোমার এই বিহেইভের মানে কি।
ইমন কিছু বললো না বড্ড অস্বস্তি তে ভুগছে সে।
কেনো জানি মেয়েটার স্পর্শ বড্ড বিশ্রি লাগছে তাঁর।
কিন্তু এমনটা তো হওয়া উচিত নয়।
যার সাথে সারাজীবন থাকতে হবে তাঁর স্পর্শ কেনো এমন লাগবে।
রিতিশা হঠাৎ ই ইমনকে জরিয়ে ধরলো।
ইমনের বিরক্ত লাগলেও নিজেকে মানানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু নিজে থেকে ধরলো না।
রিতিশা চোখ বুজে ইমনের বুকে রইলো বেশ কিছু সময়।
সেদিনটাই ছিলো ইমনের কাছে যাওয়ার প্রথম ধাপ।
,
সেদিন রাতে আমরা বাড়ি কেউ ছিলাম না। ইমন ছিলো রিতিশা কে কখন সাজিয়া পাঠিয়ে দেয় আমরা কেউ জানতাম না।
ইমন নিজের রুমে ঘুমাচ্ছিলো এমন সময় রিতিশা রুমে গিয়ে ইমনের বুকে মাথা রেখে আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে শুয়ে পড়ে।
,
বুকের ভিতর টা ধক করে ওঠলো মুসকানের চোখ বেয়ে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
নিজেকে শক্ত রেখে বসে রইলো।
দাদী মুসকানের হাতটা চেপে ধরে চোখ বুজে ভরসা দিলো।
,
ইমনের ঘুম আলগা হতেই রিতিশা ইমনকে আরো শক্ত করে জরিয়ে নিলো মুখ ওঠিয়ে ইমনের ঘাড়ে ঠোঁট ঘষতে লাগলো। ইমন এক ধাক্কায় সরিয়ে বললো হাউ ডেয়ার ইউ,,,
রিতিশা তাঁর শরীরের কাপড় ঠিক করতে করতে বললো এমন করছো কেনো জান,,
সারারাত এতো আদর করে এখন দূরে ঠেলে দিচ্ছো,,,
হোয়াট!
আর ইউ মেড??
রিতিশা এক ঢোক গিলে ইমনের কাছে গিয়ে ইমনকে জরিয়ে বললো জান এতো সুখ আমি কোন দিনও ভুলবো না বিশ্বাস করো।
ইমন এক ঝটকায় ছাড়িয়ে দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো হেই মাথা খারাপ হয়ে গেছে কি সব বলছো।
রিতিশা আরেক ঢোক গিলে বললো কি বলছি মানে তোমার শরীরে আর আমার শরীরে একবার চেয়ে দেখো তাহলেই বুঝবে সবটা।
ইমন থমকে যায় নিজের দিকে একবার রিতিশার দিকে একবার তাকায়।
শার্টে লিপস্টিকের দাগ,মেয়েলি স্মেল, রিতিশার পড়নে নাইট ড্রেস চেহেরায় অন্যরকম ছাপ, ঘারের দিকে ঠোঁটের দিকে অস্বাভাবিক দাগ স্পষ্ট।
চলবে……