#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part:-17
অভ্রের কাছ থেকে ছাড়িয়ে তরু বের হয়ে দেখে আকাশ অভ্রকে খুজতে এদিকেই আসছে,,,
তরুকে দেখে যে ই না অভ্রের কথা জিজ্ঞেস করতে যাবে অমনি তরুর পিছনে অভ্রকে দেখে আকাশ আর কিছু বলল না,,
তরু একবার আকাশের দিকে তাকিয়ে নিচে চলে যায়,,
যাবার আগে পিছন ফিরে অভ্রের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেই,,
বেচারা অভ্র এইটুকু হাসিতেই কপোকাত,
আকাশ ঃ– কি মামা!কি চলে?
অভ্রঃ- কি চলবে? দেখোস না মিয়া প্রেম করছি!
আকাশ ঃ– তাই তো দেখছি,, তো ট্রিট কবে দিচ্ছেন?
অভ্রঃ– শা*লা এখনো তো প্রপোজ ই করলাম না তুই আছোছ তোর ট্রিট নিয়া,
,যাক কিছু দিন,,
আকাশঃ– বেচারি তরু তো মামা প্রেমে পরে গেছে,, I dam sure!
অভ্রঃ- দোস্ত তুই হাছা কইতাছোস? (খুশি হয়ে)
আকাশঃ– হুম,,তরুর চোখে তোর জন্য ভালোলাগা দেখেছি,, সেই ভালোলাগা কেই ভালোবাসা রুপে সৃষ্টি করতে হবে। বুঝছোছ?
অভ্রঃ- হবে হবে খুওওওব তাড়াতাড়ি ই হবে!এবার চল নিচে যায়,,
অভ্র আর আকাশ নিচে চলে যায়,,
তরু বাগানের দোলনায় বসে বসে ভাবছে,,
তার ভাবনার পুরো টা জুরেই বসবাস অভ্রের,
, কেন জানি অভ্রকে তার খুব ভালো লাগে,,
অভ্রের কথা ভাবতে তার ভালো লাগে,,
অভ্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে তার ভালো লাগে মানে অভ্রের সবকিছু ই তার ভালোলাগে,,
কিন্তু এটা কি শুধুই ভালোলাগা নাকি অন্য কিছু,,
যদি অন্য কিছু হয় তবে সেটা কি?
তরুর তো এখন আবেগের বয়স নয় সে যথেষ্ট এডাল্ট,, ১৮ তো সে কবেই পেরিয়ে এসেছে,,
তবে?
তবে কি সে কিশোরীর মতো প্রেমে পরেছে?
এটা কি ঠিক?
এমন হাজারো প্রশ্ন তরুর মনে আনাগোনা করছে,, কিন্তু উত্তর মিলছেনা,,
প্রশ্ন গুলো কেমন জানি জটলা পাকিয়ে যাচ্ছে,,,
তরুর এই ভাবনার মধ্যে ই পাশে কারো উপস্থিতি টের পাচ্ছে,,কেউ একজন গভীর মন দিয়ে তাঁকেই দেখছে,,
তরুর তাকাতেও ইচ্ছে করছে না,কারন মানুষ টার উপস্থিতি ই জানান দিচ্ছে সে কে,,
তরু সামনে র দিকে তাকিয়ে ই বলে উঠলো,,
তরুঃ– আপনি? আপনি এখানে কি?
অভ্রঃ– আমার পার্বতি যেখানে সেখানেই তো দেবদাস থাকবে? তাই না সুন্দরী?
তরুঃ– মানে?( অভ্রের দিকে তাকিয়ে)
অভ্রঃ- মানে টা খুব সিম্পল,, তুমি যেখানে আমি সেখানে,, ( অনেকটা গানের স্বরে)
তরুঃ– অসভ্য ( নিচু স্বরে)
অভ্রঃ- কিছু কি বললে?না মানে আমি কিন্তু শুনতে পেয়েছি?
তরুঃ– কিছু না,,
অভ্রঃ- আজ কোথাও যাবে,,না মানে ঘুরতে যাবে?
তরুঃ– হ্যা,,দেখা যাক কোথায় যায়..
অভ্রঃ– আমরা পাহাড় দেখতে বের হবো চাইলে আসতে পারো,,
তরুঃ– দেখি,,
বলেই তরু উঠে চলে আসে…
_______________________
বিকেলে….
সবাই ঘুরতে যাবার প্ল্যান করেছে,,
যে যার যার রুমে চলে গেলো রেডি হতে,,
যেহেতু শুভ্র দের রুমে ওয়াসরুম একটা তাই আর সেখানে অভ্র গেছে আর দরজায় পাহারা মানে সিরিয়ালে আছে আকাশ,,
দুই টার কাজ সারতে মিনিমাম ১ ঘন্টা অগত্যা শুভ্র কে পাশের রুমে যেতে হলো,,
সেটা গেস্ট রুম,,
দরজা খানিকটা চাপানো ছিলো,,
শুভ্র দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে সামনে তাকিয়ে স্ট্যাচু হয়ে গেছে,,
কারন সামনে আরু ব্লাউজ আর পেটিকোট পরে সাড়ি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে সারি দেখছে কোন দিক দিয়ে পড়া শুরু করবে,,
আরু তখন ও শুভ্র কে দেখেনি,,
আরু সামনে র দিকে না তাকিয়ে ই বলতে শুরু করলো
আরুঃ- ইসু আপু দেখো না সাড়ি টা পরতে পারছি না,,কোন দিক থেকে শুরু করবো বুঝতেই পারছি না,, তুমি একটু প্লিজ দয়া করে সাড়ি টা পরিয়ে দাও,,
বলেই সামনে তাকিয়ে দেখে ইসু এর জায়গায় শুভ দাড়িয়ে,,
আরু একবার শুভ্রের দিকে আরেকবার নিজের দিকে তাকিয়ে যেই না চিৎকার দিতে যাবে অমনি শুভ্র দৌড়ে আরুর মুখ চেপে ধরে,,
এখন চিৎকার দিলে মানসম্মান সব কাবাব হয়ে যাবে,,
শুভ্রঃ– এই পিচ্চি,, চুপ একদম চুপ,,চিৎকার দিচ্ছো কেন?
আরুঃ- উমমমমম..
শুভ্র ঃ– কি উমমম? দরজাটা ভালো ভাবে লাগাতে পারো না,,বেয়াদব মেয়ে,,সাধে কি তোমাকে পিচ্চি ডাকি,,তুমি আসলেই একটা পিচ্চি,,
আরুঃ- উমমম..
শুভ্র ঃ– উমম কি,,আবার উমমম( হঠাৎ খেয়াল হলো সে আরুর মুখ চেপে দাঁড়িয়ে আছে)
সরি…বলেই সে আরুকে ছেড়ে দিলো,,
আরুঃ- আপনার কি কমন সেন্স নাই? হ্যা?নক ছাড়াই একটা মেয়ের রুমে ঢুকে পরেন?
শুভ্র ঃ– আমি কি জানতাম নাকি,, তুমি এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে? বাই দা ওয়ে,,( আরুকে ভালো করে দেখে) তোমাকে এভাবে ও খারাপ লাগছে না ( ভিলেন মার্কা হাসি দিয়ে)
হঠাৎ আরুর মনে হয় সে এখনো এভাবেই দাঁড়িয়ে আছে,,
তাই সে কোন ভাবে সাড়ি টা পেঁচিয়ে,, দারায়,,
আরুঃ- আপনি এখন ও দাঁড়িয়ে আছেন,,যান বের হন( রেগে)
শুভ্র ঃ– সোওওও হঅঅটট
বলেই শুভ্র রুম থেকে বেরিয়ে যায়,,
শুভ্র বের হবার সাথে সাথে ই আরু ডোর লক করে বিছানায় বসে..
আরুঃ- ছিইইই,,কি বলে গেলো!!
অমনি দরজায় কেউ নক করে,,
আরুঃ- কে?
তরুঃ– আমি! দরজা খুল,,
আরু গিয়ে দরজাটা খুলে দেই,,
তরুঃ– কি হলো ডাকছিলি কেন?
আরুঃ- কখন?
তরুঃ– শুভ্র ভাই যে বলল তুই ডাকছিস!
আরুঃ- ওহ হ্যা,,আমার সাড়ি টা পরিয়ে দে,,
তরুঃ– আয় কাছে আয়,,
তরু আরুকে সারি পরিয়ে হালকা সাজিয়ে দেই,,
তরু নিজেও সাড়ি পরেছে,,
তরু পরেছে কলাপাতা রঙের সাড়ি আর আরু নীল,,
সবাই মিলে একসাথে ঘুরতে বের হলো তরু আর অভ্রের খুনসুটি আর আরু আর শুভ্রের ঝগড়া চলতেই লাগলো,,
এভাবে প্রায় সপ্তাহ খানেক চলল,,
এতদিনে তরু বুঝতে পারলো,,মিস্টার অভদ্র মানে অভ্রকে সে সত্যি ই ভালো বাসে,,
__________________________
হঠাৎ,,
গায়ে বৃষ্টির ফোটা পরায় তরু অতীত থেকে ফিরে এলো,,
সে তাকিয়ে দেখে সে একটা পার্কের বেঞ্চে বসে আছে,,
অভ্রের সাথে দেখা করে হাটতে হাটতে কখন যে পার্কে চলে এসেছে সেই খেয়াল ই নেই তার,,
সে অনুভব করলো তার চোখেী কোনে বিন্দু বিন্দু পানির স্পর্শ,,
সেটা বৃষ্টির নয় তারই চোখের জল,,
ঠিক তখনই আকাশ ভেঙে অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়তে লাগলো,,
বৃষ্টির ঝাপটা এসে তরুর চোখে মুখে লাগলো,,
তবুও সে চুপটি করে বেঞ্চে বসে আছে,,
নরার ইচ্ছে টুকুও হচ্ছে না তার,,
কেন জানি আজ খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে, তার,,
সে হাটু ভেঙে মাটিতে বসে পড়ে,
, চিৎকার করে কাঁদছে আজ সে,,
এতদিনের জমানো সকল অভিযোগ সে চোখের পানির মাধ্যমে ব্যক্ত করছে,,
তার চোখের জল আর বৃষ্টির ফোটা মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে,,
সে বুঝতে পারছে তার বুকের মধ্যে রক্ত ক্ষরন হচ্ছে,, ভিষণ কষ্ট হচ্ছে আজ তার,,বারবার মনে হচ্ছে,,
“বেশ তো ভালো ছিলাম,,আবার কেন এলো সে? আবার নতুন করে কি ভাঙার আছে,,ভাঙা জিনিস আর কত ভাঙবে?””
দুর থেকে কেউ একজন তরুকে লক্ষ্য করে যাচ্ছে,, কিন্তু কাছে আসার সাহস সে পাচ্ছে না,,,
তরু হঠাৎ খেয়াল করলো তার মাথায় আর বৃষ্টি পড়ছে না,,
সে উপরে তাকিয়ে দেখে…
চলবে…..