রংধনুর_রঙ_কালো,৩
অরিনের চোখের পাতাগুলো ভার লাগছে। সম্পূর্ণ শরীর ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে। মনে হলো, সে কোনো জায়গা থেকে নিচে লুটিয়ে পড়ছে। হঠাৎ হড়বড়িয়ে জেগে উঠলো অরিন। চোখও খুলে গেল স্বয়ংক্রিয়। দেখলো সে একটা অপরিচিত রুমে শুয়ে আছে। ধবধবে ফরসা, সোনালী চুলের সুন্দরী একটি মেয়ে তার সামনে দাঁড়ানো। মেয়েটা মিষ্টি করে হেসে অরিনকে হ্যালো বললো। ডানপাশে ইলহান বসে ছিল। সে অরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে নরম গলায় জিজ্ঞেস করলো,
” তোমার কি হয়েছিল অরিন? হঠাৎ করে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলে। শরীর কি খুব দূর্বল?খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম করেছো তাই না? নিজের প্রতি একদম যত্ন নাও না। এতো কেয়ারলেস কেনো তুমি?”
অরিন ভ্রু কুচকে একবার মেয়েটার দিকে তো আরেকবার ইলহানের দিকে তাকালো। মেয়েটা ইংরেজী ভাষায় অরিনকে কিছু জিজ্ঞেস করলো। কিন্তু অরিন তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারলো না। অচেতন হওয়ার পূর্বের ঘটনাগুলো মনে করতে তার মস্তিষ্ক সময় নিচ্ছে। কয়েক মিনিট পর যখন তার হঠাৎ সব মনে পড়লো তখনি চেহারায় অগ্নিবলয় সৃষ্টি হয়ে গেল। চোখ,মুখ,দাঁত সব একসাথে শক্ত হয়ে আসলো। বুকের ভেতরটা ভরে গেল বিতৃষ্ণায়! তীব্র ঘৃণায়! ইলহান বললো,
” এখন এভাবেই একটু শুয়ে থাকো। রেস্ট করো। যোয়ী তোমার জন্য স্পেশাল একটা কফি বানাবে। ইফেক্টিভ। কফির পর ব্রেকফাস্ট করে নিলেই শরীর ঠিক হয়ে যাবে। ওকে?”
অরিন মেয়েটির দিকে তাকিয়ে রইল। এই মেয়ের নাম তাহলে যোয়ী? সে কি হয় ইলহানের? তার জিনিসপত্রই কি এই ঘরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে? সে কি ইলহানের গার্লফ্রেন্ড নাকি বউ?যোয়ী তার নিজস্ব ভাষায় বললো,
” হেই অরিন, আপনি খুব লাকি ওয়াইফ। কারণ ইলহান ভাইয়া আপনার অনেক কেয়ার করে। সে একজন আদর্শবান স্বামী। সে যেভাবে আপনাকে ভালোবাসে সেটা আমার খুবই ভালো লাগে। আপনার জন্য অনেক টেনশন করছিল ভাইয়া। এখন আপনি চোখ খুলেছেন আর ভাইয়া যেনো প্রাণ ফিরে পেয়েছেন।”
ইংরেজি ভাষা অরিন ভালোই বুঝে। তাছাড়া অনেক ইংলিশ মুভি-সিরিজ দেখার অভ্যাস থাকায় যোয়ীর ইংরেজী বুঝতেও অরিনের অসুবিধা হলো না। কিন্তু যোয়ীর কথাগুলো শুনে রাগের মাত্রা দ্বিগুণ বেড়ে গেল। সেই রাগ প্রকাশ করতে অরিন উঠে বসেই হাত শক্ত করে ইলহানের গাল বরাবর ফটাস একটা চড় মেরে দিল। ইলহান আর যোয়ী দু’জনে চমকে উঠলো। অরিনের মুখ ভরে আসছিল একদলা থুতু। ইচ্ছে করলো ইলহানের চেহারায় থুতু মেরে দিতে। কিন্তু অপরিচিত মেয়েটির সামনে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলো সে।এই মেয়েটা না থাকলে অরিন অবশ্যই ইলহানকে থুতু দিতো। ইলহান চড় গালে নিয়ে হা করে কিছু সময় নির্ণিমেষ তাকিয়ে থাকলো অরিনের দিকে। তারপর হঠাৎ উঠে চলে গেল। দরজার সামনে যেতেই একটা লাল চুলের বিদেশী ছেলে ইলহানকে হাত ধরে আটকালো। পুনরায় ভেতরে নিয়ে আসতে চাইলো। কিন্তু ইলহান আসলো না।ওদের মধ্যে একটু তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হলো। এরপর ইলহান রাগান্বিত ভঙ্গিতে স্থান ত্যাগ করলো৷ লাল চুলের ছেলেটা ভেতরে এসে বললো,
” যোয়ী, কি হয়েছিল?”
যোয়ী উত্তর দিল,” আমার মনে হয় আমরা যেটা ভয় পেয়েছিলাম সেটাই হয়েছে। অরিন ইলহান ভাইকে ভুল বুঝে চড় মেরেছে।”
” ওহ শিট। অরিন, তুমি কিছু মনে কোরো না প্লিজ। আমাদের জন্যই কি তোমাদের মধ্যে ঝামেলাটা হয়েছে?”
অরিন ভ্রু কুঞ্চিত রেখেই বললো,” কারা আপনারা?”
লাল চুলের ছেলেটা মৃদু হেসে বললো,” আমি ক্লিফোর্ড। আর এটা আমার ওয়াইফ যোয়ী। আমরা এই বাড়ির মালিক। ইলহান আমাদের এখানে পেয়িং গেস্ট থাকে। যখন তুমি বাড়িতে এসেছিলে তখন আমরা যোগিং এ ছিলাম সেজন্য দেখা হয়নি। ইলহান বললো, তুমি নাকি আমাদের বেডরুমে এসেই অজ্ঞান হয়ে পড়েছো। আমাদের বেডরুম এতোটাও অগোছালো ছিল না যে তুমি দেখেই অজ্ঞান হয়ে যাবে।”
ক্লিফোর্ড এই কথা বলে হাসলো। তারপর আবার বললো,” এইখানে একটা বিরাট বড় মিস আন্ডারট্যান্ডিং হয়ে গেছে।” অরিন অবাক হয়ে চেয়ে রইল। বিভ্রান্তিতে প্রশ্ন করলো,
” এই বাড়িটা কি তাহলে ইলহানের না?”
ক্লিফোর্ড বললো,” না অরিন। সে শুধু আমাদের সাথে এইখানে থাকে। কেনো? ইলহান কি তোমাকে কিছু বলেনি? নাকি বলেছে এইটা তার নিজের বাড়ি?”
অরিন দ্বিধান্বীত হলো। ইলহান একবারও বলেনি এটা তার নিজের বাড়ি। এই কথা অন্বয় বলেছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে মিথ্যে বলেছে? অন্বয় নাকি ইলহান? যোয়ী বললো,
” তুমি সেন্সলেস হওয়ার পর ইলহান ভাই অনেক ঘাবড়ে গেছিলো। তুমি যে ওকে ভুল বুঝবে এটা ও নিজেই একবার বলেছিল। কিন্তু আমরা তখন ওর কথা মানিনি। কারণ সবসময় সে আমাদের কাছে তোমার নামে এমনসব গল্প করে তাতে আমাদের কিন্তু একবারও মনে হয়নি যে তুমি এতো সেন্সিটিভ মাইন্ডের হবে। তোমাদের ভালোবাসার গল্প শুনতে আমাদের অনেক ভালো লাগে। এখন আমাদের জন্যই যদি তোমাদের মধ্যে ঝগড়া হয় সেটা দেখতে আমাদের খুবই খারাপ লাগবে। অরিন, তুমি বরং গিয়ে ইলহান ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চাও। লাইফ পার্টনারকে এতো সন্দেহ করা উচিৎ না। তোমাদের তো লং ডিস্টেন্স রিলেশনশীপ। এই ধরণের সম্পর্কের প্রাণই হচ্ছে বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসই যদি না থাকে, সম্পর্ক টিকবে কি করে বলো?”
অরিনের খুব ইচ্ছে করছে কথাগুলো বিশ্বাস করতে।খুশি হয়ে দৌড়ে যেতে। উচ্ছ্বসিত মন নিয়ে ইলহানের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে। ভয়ংকর সেই অনুভূতির ভার ভেতর থেকে মুছে হাউমাউ করে কিছুক্ষণ কেঁদে নিজেকে হালকা করতে। কিন্তু অরিন এসব কিছুই করলো না। তার মনটা পাথর বনে গেছে। একটু আগে যেই সাংঘাতিক পরিস্থিতির সম্মুখীন সে হয়েছিল তাতে মনের ভিতর গভীর হয়ে যাওয়া ক্ষতের ছাপ মন থেকে খুব সহজে মুছে ফেলা সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। তাছাড়া সম্পূর্ণ বিষয়টাই অরিনের কাছে খাপছাড়া লাগছে। ইলহান তো তাকে কোনোদিন বলেনি যে সে কারো বাড়িতে পেয়িং গেস্ট থাকে। তাছাড়া যোয়ী আর ক্লিফোর্ডের ব্যাপারেও তো অরিন কখনও ইলহানের কাছে শোনেনি। অথচ যোয়ী বলছে তারা নাকি অরিনের গল্প ইলহানের থেকে অনেকবার শুনেছে। এই বিষয়টা অদ্ভুত এবং অবিশ্বাস্য। অরিনের অবচেতন মন বার-বার বলছে, ” সামথিং ইজ ফিশি।” তাছাড়া অরিনের জ্ঞান হারানোর বিষয়টাই বা কি? কিভাবে জ্ঞান হারিয়েছিল সে? কিছু তো মনে পড়ছে না। যোয়ী আর ক্লিফোর্ড অরিনকে নিচে আসতে বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। তখন অরিন বিছানায় নিজের ভ্যানিটি ব্যাগটা দেখে দ্রুত ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করলো। অন্বয় সাহেব পঞ্চাশবার মিসড কল দিয়েছেন। তিনি অরিনের ব্যাপারে সবসময় এতো বেশি কনসিয়াস থাকেন কেনো? অরিন কি তাকে একবার কল ব্যাক করবে? যে-কোনো মুহুর্তে এই রুমে কেউ চলে আসতে পারে। তখন কথা বলতে ঝামেলা হবে। তাই অরিন কল ব্যাক করলো না। পরে সুযোগ পেলে কল ব্যাক করবে। সে রুম থেকে বের হতে নিয়ে দেখলো দেয়ালে ক্লিফোর্ড আর যোয়ীর একটা কাপল ছবি। ছবিটা লাইটের সুইচের ঠিক ডানপাশে। অরিন যখন এই অন্ধকার রুমে ঢুকেছিল তখন সুইচ খুঁজে পাচ্ছিল না দেখে কিছুক্ষণ দেয়াল হাতড়েছিল। তখন এই ছবি তার নজরে পড়েনি কেনো? অরিন নিশ্চিত, তখন এই ছবিটা এখানে ছিল না। এইখানে অবশ্যই কোনো গন্ডগোল আছে। অরিনের বুক বিঁধে আসছে নিঃশ্বাস নিতে গেলেও। সে না পারছে বিশ্বাস করতে আর না পারছে অবিশ্বাস করতে! এই অনুভূতি ভয়ংকর! নিচে এসে অরিন দেখলো ইলহান সোফায় মাথা নিচু করে বসে আছে। দুইহাত মাথায় আবদ্ধ। অরিন ইলহানের সামনে গিয়ে দ্বিধা ভরা গলায় বললো,
” তখনের ব্যবহারের জন্য স্যরি।”
স্যরিটা সে মন থেকে বলেনি। কারণ মন থেকে এখনও তার সন্দেহ দূর হয়নি। এদিকে অরিন স্যরি বলার সাথে সাথেই ইলহান মাথা তুলে অরিনের দুই হাত ধরে বললো,
” আই এম স্যরি অরিন, আই এম স্যরি! আমার তোমাকে প্রথমেই এসব বলে দেওয়া উচিৎ ছিল। তাহলে আজকে এই সমস্যাটা হতো না। শুধু শুধুই তুমি কষ্ট পেয়েছো।”
অরিন ইলহানের পাশে বসে বললো,” ইটস ওকে।”
” আসলে আমার বলতে লজ্জা লেগেছিল। ক্লিফোর্ড আর যোয়ী দুজনই আমার ভার্সিটি ফ্রেন্ড বুঝেছো?ওরা নিউলি ম্যারিড। আর ওদের বিয়েতেও আমরা ফ্রেন্ডরা মিলে অনেক হেল্প করেছিলাম। যখন ওরা জানলো আমি একা থাকি তখন আমাকে ওদের সাথে এই বাড়িতে চলে আসার জন্য অফার করলো। তখন আমি রিজেক্ট করতে পারিনি। আসলে ওরা তো খুব ফ্রেন্ডলি। আমি রিজেক্ট করলে হয়তো ওদের কাছে খারাপ লাগতো। আর মা-বাবা যদি জানতে পারে আমি মানুষের বাসায় পেয়িং গেস্টের মতো থাকছি তাহলে কি টেনশন করতো না বলো? ভাবতো না আমি এইখানে অনেক কষ্টে আছি? এজন্য ওদের বলিনি। তাই তোমাকেও বলিনি। তুমি আবার কি-না-কি মনে করো। বাংলাদেশে তো ফ্রেন্ডরা এতো ফ্রী হয় না। কিন্তু এই দেশে এইসব কোনো ব্যাপার না। ”
অরিন গম্ভীরমুখে বললো, ” হুম বুঝেছি।”
” অরিন, আমি আর এই বাড়িতে থাকবো না। আজকে লাঞ্চের পর আমরা চলে যাচ্ছি।”
” কোথায় যাবো?”
” আমার সেই আগের ফ্ল্যাটে।”
” কেনো?”
” আমার এইখানে থাকতে ভালো লাগছে না। তাছাড়া তুমি চলে এসেছো, আমি তো এখন আর একা নেই। যতদিন তুমি থাকবে, তোমাকে নিয়ে আমি আমার আগের ফ্ল্যাটেই থাকবো।”
অরিন হ্যাঁ বা না কিছুই বললো না। ইলহান মিষ্টি করে হেসে আবার বললো,” একটা জিনিস ভেবে আমার খুব ভালো লাগছে যে আমার প্রতি তোমার বিশ্বাসটা অনেক শক্ত। এজন্যই তো সেই বিশ্বাস ভাঙার সম্ভাবনা দেখে তুমি সহ্য করতে পারোনি। একদম সেন্সলেস হয়ে গেছো। আমাকে খুব ভালোবাসো তাই না?”
অরিন মনে মনে বললো,” আমি তো অনেক ভালোবাসি। কিন্তু তুমিও কি একইভাবে ভালোবেসেছো কখনও? ”
যোয়ী আর ক্লিফোর্ডের সাথে ইলহান আর অরিন অনেকক্ষণ সময় কাটালো। যোয়ী অরিনকে ইলহান সম্বন্ধে অনেক ভালো ভালো কথা শোনালো। এককথায় ইলহানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ যোয়ী। লাঞ্চের পর যখন ওরা চলে আসবে তখন ইলহান অরিনের সামনেই ক্লিফোর্ডকে বাড়ি ভাড়া হিসেবে ডলার দিল। যাতে অরিনের মনে এই নিয়ে একদম সন্দেহ না থাকে। ক্লিফোর্ড আর যোয়ী ইলহানের ভার্সিটি ফ্রেন্ড এই কথা সত্যি। কিন্তু ওদের বিয়ে হয়নি। ওরা শুধুই রিলেশনশীপে আছে। আর একসাথে থাকার জন্য ওরা একটা উপযুক্ত বাড়ি খুঁজছিল। ইলহান ওদের নিজের বাড়ি দিয়ে সাহায্য করেছে। বিনিময়ে ওরাও সঠিক সময়ে এসে ইলহানকে সাহায্য করেছে। এখন অরিন যতদিন থাকবে ততদিন ইলহান নতুন ফ্ল্যাটে থাকবে। সেখানে অরিনের কাছে ধরা পড়ার ভয়ও থাকবে না। তাছাড়া এইবার অরিনকে ম্যানেজ করা গেলেও বার-বার নিশ্চয়ই এটা সম্ভব হবে না। কিন্তু ইলহানের এতো চেষ্টার পরেও অরিনের মনে সন্দেহের বীজ রয়ে গেছে। গাড়িতে উঠার পর অরিন সন্দেহপ্রবন হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
” আচ্ছা ইলহান, আমি কিভাবে সেন্সলেস হয়েছিলাম বুঝতে পারছি না। আমার কিছু মনে আসছে না কেনো?”
” এইটা শক থেকে হয়েছে অরিন। তুমি খুব শকড ছিলে। ভুলটা অবশ্য আমারই। আমি তোমাকে প্রথমে বুঝিয়ে বললে এমন কিছুই হতো না।”
অরিন গাড়ির সিটে মাথা ঠেকালো। ইলহানের কোনো কথাই বিশ্বাস করতে মন চাইছে না আর। যদি আসলেই ইলহান নির্দোষ হতো তাহলে অরিন বাড়িতে প্রবেশের সাথে সাথে তাকে নিচের ঘরে নিয়ে দরজা আটকে দিয়েছিল কেনো? অরিন যখন বলেছিল, ‘তোমার শরীর থেকে শ্যাম্পুর ঘ্রাণ আসছে’ তখন ইলহানের মুখ চুপসে গেল কেনো? ইলহানের প্রতি হঠাৎ করেই যে ঘৃণা, অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে তা এতো সহজে অরিনের মন থেকে যাবে বলে মনে হয় না। ইলহানের উপর এখন থেকে কড়া নজর রাখতে হবে। যদি সত্যিই ইলহান নির্দোষ হয় তাহলে অরিনের চেয়ে সুখী আর ভালোমানুষ এই পৃথিবীতে কেউ হবে না। কিন্তু যদি ইলহান আসলেই প্রতারক হয় তাহলে অরিনও দেখিয়ে দিবে সে কতটা খারাপ হতে পারে।
চলবে
– Sidratul Muntaz